রাজাবলির প্রথম খণ্ড
৪ রাজা শলোমন পুরো ইজরায়েলের উপর রাজত্ব করতেন। ২ এরা ছিলেন তার উচ্চপদস্থ কর্মচারী:* সাদোকের ছেলে অসরিয় যাজক ছিলেন, ৩ শীশার ছেলে ইলীহোরফ ও অহিয় সচিব ছিলেন, অহীলূদের ছেলে যিহোশাফট ঘটনার নথি রাখতেন, ৪ যিহোয়াদার ছেলে বনায় সেনাপতি ছিলেন, সাদোক ও অবিয়াথর যাজক ছিলেন, ৫ নাথনের ছেলে অসরিয় অধ্যক্ষদের প্রধান ছিলেন, নাথনের ছেলে সাবূদ একজন যাজক ও সেইসঙ্গে রাজার বন্ধুও ছিলেন, ৬ অহীশার রাজপ্রাসাদের দেখাশোনা করতেন আর যাদের দিয়ে জোর করে দাসের কাজ করানো হত, তাদের অধ্যক্ষ ছিলেন অব্দের ছেলে অদোনীরাম।
৭ শলোমন পুরো ইজরায়েলের উপর ১২ জন অধ্যক্ষকে নিযুক্ত করেছিলেন, যারা রাজা এবং তার পুরো পরিবারের জন্য খাবারদাবারের আয়োজন করতেন। প্রত্যেক অধ্যক্ষের বছরে এক মাসের জন্য খাবারদাবার জোগানোর দায়িত্ব ছিল। ৮ সেই অধ্যক্ষেরা ছিলেন: হূরের ছেলে, যার অধীনে ইফ্রয়িমের পার্বত্য এলাকা ছিল; ৯ দেকরের ছেলে, যার অধীনে মাকস, শাল্বীম, বৈৎ-শেমশ ও এলোন-বৈৎ-হানন ছিল; ১০ অরুব্বোতে হেষদের ছেলে (যার অধীনে সোখো ও হেফরের পুরো এলাকা ছিল); ১১ অবীনাদবের ছেলে, যার অধীনে দোরের সমস্ত ঢালু অংশ ছিল (অবীনাদবের এই ছেলের স্ত্রী টাফৎ শলোমনের মেয়ে ছিল); ১২ অহীলূদের ছেলে বানা, যার অধীনে তানক, মগিদ্দো, বৈৎ-শানের পুরো এলাকা (যেটা সর্তনের পাশে এবং যিষ্রিয়েলের নীচে অবস্থিত) আর বৈৎ-শান থেকে আবেল-মহোলা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে যক্মিয়ামের এলাকা পর্যন্ত পুরো অঞ্চল ছিল; ১৩ রামোৎ-গিলিয়দে গেবরের ছেলে (যার অধীনে মনঃশির ছেলে যায়ীরের সমস্ত গ্রাম* ছিল, যেগুলো গিলিয়দে অবস্থিত আর সেইসঙ্গে অর্গোবের এলাকা ছিল, যেটা বাশনে অবস্থিত। অর্গোবে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ৬০টা বড়ো বড়ো নগর রয়েছে, যেগুলোর দরজায় তামার হুড়কো রয়েছে); ১৪ ইদ্দোর ছেলে অহীনাদব, যার অধীনে মহনয়িম ছিল; ১৫ অহীমাস, যার অধীনে নপ্তালির এলাকা ছিল (তার স্ত্রী বাসমৎও শলোমনের মেয়ে ছিল); ১৬ হূশয়ের ছেলে বানা, যার অধীনে আশের ও বালোতের এলাকা ছিল; ১৭ পারূহের ছেলে যিহোশাফট, যার অধীনে ইষাখরের এলাকা ছিল; ১৮ এলার ছেলে শিমিয়ি, যার অধীনে বিন্যামীনের এলাকা ছিল; ১৯ ঊরির ছেলে গেবর, যার অধীনে গিলিয়দের এলাকা ছিল। গিলিয়দ আগে ইমোরীয়দের রাজা সীহোন এবং বাশনের রাজা ওগের অধীনে ছিল। ইজরায়েলের এই সমস্ত অধ্যক্ষের উপরও আরেকজন অধ্যক্ষ ছিলেন।
২০ যিহূদা ও ইজরায়েলের লোকেরা সমুদ্রের তীরের বালির কণার মতো অসংখ্য ছিল। তাদের খাবারদাবারের কোনো অভাব ছিল না আর তারা আনন্দে জীবনযাপন করছিল।
২১ শলোমন নদী* থেকে শুরু করে পলেষ্টীয়দের দেশ এবং মিশরের সীমানা পর্যন্ত সমস্ত রাজ্যের উপর রাজত্ব করতেন। এই রাজ্যগুলো শলোমনকে কর* দিত আর তারা শলোমনের পুরো জীবনকালে তার অধীনে থাকল।
২২ শলোমনের প্রাসাদে খাওয়া-দাওয়ার জন্য প্রত্যেক দিন এইসমস্ত কিছু লাগত: ৩০ কোর* ময়দা, ৬০ কোর আটা, ২৩ ১০টা মোটাসোটা গরু ও ষাঁড়, চারণভূমিতে* চরে এমন ২০টা গরু ও ষাঁড় এবং ১০০টা মেষ। এ ছাড়া, কয়েকটা হরিণ, চিংকারা, ছোটো হরিণ এবং মোটাসোটা কোকিলের মাংসও রান্না করা হত। ২৪ শলোমনের অধীনে নদীর* পশ্চিম দিকের পুরো এলাকা ছিল অর্থাৎ তিপ্সহ থেকে শুরু করে গাজা পর্যন্ত বিস্তৃত পুরো এলাকা। সেখানকার সমস্ত রাজা শলোমনের অধীনে ছিলেন। তার পুরো রাজ্যে সমস্ত জায়গায় শান্তি ছিল। ২৫ শলোমনের সময়ে যিহূদা ও ইজরায়েলের লোকেরা নিরাপদে বাস করত। দান থেকে বের্-শেবা পর্যন্ত প্রত্যেকে নিজের আঙুর গাছ এবং ডুমুর গাছের নীচে নির্ভয়ে বাস করত।
২৬ শলোমনের রথের ঘোড়ার জন্য ৪,০০০টা* আস্তাবল ছিল আর তার ১২,০০০টা ঘোড়া* ছিল।
২৭ রাজা শলোমনের অধ্যক্ষেরা তার জন্য এবং তার টেবিলে যারা খেত, তাদের সবার জন্য খাবারদাবার জোগাতেন। প্রত্যেক অধ্যক্ষের দায়িত্ব ছিল যেন তিনি তার নির্ধারিত মাসে খাবারদাবার জোগান এবং খেয়াল রাখেন যেন কোনো কিছুর অভাব না হয়। ২৮ এ ছাড়া, তারা তাদের নির্ধারিত পরিমাণ অনুযায়ী ঘোড়া এবং যে-ঘোড়াগুলো রথ টানে, সেগুলোর জন্য যেখানে যতটা প্রয়োজন, সেখানে ততটা যব ও খড় জোগাতেন।
২৯ আর ঈশ্বর শলোমনকে প্রচুর প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতা দিলেন আর সমুদ্রতীরের বালির মতো প্রচুর বোঝার ক্ষমতা রয়েছে, এমন এক হৃদয় দিলেন। ৩০ শলোমন পূর্ব দিকের দেশগুলোর এবং মিশরের সমস্ত বিজ্ঞ ব্যক্তির চেয়ে অনেক বেশি বিজ্ঞ ছিলেন। ৩১ কোনো মানুষই তার চেয়ে বেশি বিজ্ঞ ছিল না। তিনি ইষ্রাহীয় এথনের চেয়ে এবং মাহোলের ছেলেদের অর্থাৎ হেমন, কল্কোল ও দর্দার চেয়েও অনেক বেশি বিজ্ঞ ছিলেন। তার খ্যাতি আশেপাশের সমস্ত দেশেও ছড়িয়ে পড়েছিল। ৩২ তিনি ৩,০০০টা প্রবাদ বাক্য রচনা করেছিলেন* আর ১,০০৫টা গানও লিখেছিলেন। ৩৩ তিনি বিভিন্ন ধরনের গাছের বিষয়ে কথা বলতেন, লেবাননের দেবদারু গাছ থেকে শুরু করে দেওয়ালে বেড়ে ওঠা এসোবের বিষয়ে কথা বলতেন। তিনি পশু, পাখি,* সরীসৃপ* এবং মাছের বিষয়েও কথা বলতেন। ৩৪ সমস্ত দেশ থেকে লোকেরা শলোমনের প্রজ্ঞার কথা শুনতে আসত। এমনকী, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজারাও আসতেন, যারা তার প্রজ্ঞার বিষয়ে শুনেছিলেন।