যিরমিয়
৩৩ যিরমিয় পাহারাদারদের প্রাঙ্গণে বন্দি থাকার সময় দ্বিতীয় বার যিহোবার বার্তা তার কাছে এল। ঈশ্বর তাকে বললেন: ২ “এটা পৃথিবীর নির্মাতা যিহোবার বার্তা, যিহোবার বার্তা, যিনি পৃথিবী গঠন করেছেন এবং দৃঢ়ভাবে সেটাকে স্থাপন করেছেন। হ্যাঁ, যাঁর নাম যিহোবা, তিনি এই কথা বলেন, ৩ ‘আমাকে ডাকো, আমি তোমাকে উত্তর দেব, আমি তোমাকে ইচ্ছুক মনে এমন বিষয়গুলো জানাব, যেগুলো মহৎ এবং যেগুলো তোমার বোঝার ক্ষমতার বাইরে, যেগুলো তুমি জান না।’”
৪ “ইজরায়েলের ঈশ্বর যিহোবার এই বার্তা এই নগরের সেই বাড়িগুলোর বিষয়ে এবং যিহূদার রাজাদের সেই বাড়িগুলোর বিষয়ে, যেগুলোকে ভেঙে ফেলা হয়েছে, যাতে সেগুলোকে আক্রমণ করার ঢালু ঢিবি এবং তলোয়ারের প্রতিরোধ করার জন্য ব্যবহার করা যায়। ৫ এই বার্তা সেই লোকদের বিষয়েও, যারা কল্দীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আসছে এবং সেই জায়গাগুলোর বিষয়েও, যেগুলো সেই লোকদের মৃতদেহে পূর্ণ, যাদের আমি আমার রাগের কারণে, আমার প্রচণ্ড রাগের কারণে আঘাত করেছিলাম। তারা এতটাই মন্দ ছিল যে, তাদের কারণে আমি এই নগর থেকে আমার মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলাম। ৬ ঈশ্বরের বার্তা এই: ‘আমি এই নগরীকে সুস্থ করে তুলব, যাতে সে আবারও নিজের স্বাস্থ্য ফিরে পায়। আমি তাদের সুস্থ করব আর তাদের প্রচুর পরিমাণে শান্তি ও নিরাপত্তা দেব। ৭ আমি যিহূদা ও ইজরায়েলের লোকদের বন্দিত্ব থেকে ফিরিয়ে আনব আর আমি আবারও তাদের গড়ে তুলব, ঠিক যেমনটা আমি প্রথমে করেছিলাম। ৮ আর তারা আমার বিরুদ্ধে যে-সমস্ত পাপ করেছে, সেগুলোর অপরাধ থেকে আমি তাদের শুচি করব। আর তারা আমার বিরুদ্ধে যে-সমস্ত পাপ ও অপরাধ করেছে, সেগুলো আমি ক্ষমা করে দেব। ৯ এই নগরীর নাম আমাকে আনন্দিত করে তুলবে আর আমি তাদের জন্য যে-সমস্ত ভালো বিষয় করেছি, সেগুলোর বিষয়ে পৃথিবীর সমস্ত জাতি জানতে পারবে এবং আমার প্রশংসা ও গৌরব করবে। আর আমি এই নগরীর প্রতি যে-সমস্ত ভালো বিষয় করব এবং একে যে-শান্তি দেব, সেটার কারণে সমস্ত জাতি আতঙ্কিত হয়ে পড়বে এবং ভয়ে কাঁপবে।’”
১০ “যিহোবা এই কথা বলেন: ‘এই যে-জায়গা, যেটার বিষয়ে তোমরা বলবে, এটা পরিত্যক্ত জমি, এখানে কোনো মানুষ কিংবা পশু নেই, যিহূদার এই যে-নগরগুলো এবং জেরুসালেমের এই যে-রাস্তাগুলো, যেগুলো জনশূন্য, যেখানে কেউ বাস করে না, যেখানে কোনো মানুষ কিংবা পশু নেই, সেখানে আবারও ১১ আনন্দ ও উল্লাসের শব্দ এবং বর ও কনের শব্দ শোনা যাবে আর সেই লোকদের শব্দও শোনা যাবে, যারা বলবে: “স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবাকে ধন্যবাদ দাও কারণ যিহোবা ভালো। তাঁর অটল প্রেম চিরস্থায়ী!”’
“যিহোবা বলেন: ‘তারা ধন্যবাদ জানানোর বলি নিয়ে যিহোবার গৃহে আসবে কারণ আমি তাদের দেশের সেইসমস্ত লোককে ফিরিয়ে আনব, যারা বন্দিত্বে রয়েছে এবং তাদের অবস্থা আবারও আগের মতো করে তুলব।’”
১২ “স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা এই কথা বলেন: ‘এই পরিত্যক্ত জায়গা, যেখানে কোনো মানুষ কিংবা পশু নেই, এখানে এবং এটার সমস্ত নগরে আবারও চারণভূমি* দেখা যাবে আর মেষপালকেরা তাদের পশুপালকে বিশ্রাম করাবে।’
১৩ “যিহোবা বলেন: ‘পার্বত্য এলাকার নগরগুলোতে, নীচু এলাকার নগরগুলোতে, দক্ষিণ দিকের নগরগুলোতে, বিন্যামীনের এলাকায়, জেরুসালেমের আশেপাশের এলাকায় এবং যিহূদার নগরগুলোতে আবারও মেষপালকের হাতের নীচ দিয়ে মেষেরা যাবে আর সে তাদের গুনবে।’”
১৪ “যিহোবা ঘোষণা করেন: ‘দেখো! এমন সময় আসছে, যখন আমি ইজরায়েলের পরিবার এবং যিহূদার পরিবারের প্রতি যে-ভালো বিষয়গুলো করার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, সেটা পূর্ণ করব। ১৫ সেই দিনে এবং সেই সময়ে আমি দায়ূদের বংশে এক ন্যায্য চারাগাছ* উৎপন্ন করব আর তিনি দেশে ন্যায়বিচার এবং যা সঠিক, তা করবেন। ১৬ সেই সময় যিহূদাকে রক্ষা করা হবে এবং জেরুসালেম নিরাপদে বাস করবে আর তাকে এই নামে ডাকা হবে: যিহোবা আমাদের ন্যায়বিচার।’”
১৭ “কারণ যিহোবা এই কথা বলেন: ‘ইজরায়েলের পরিবারের সিংহাসনে বসার জন্য দায়ূদের বংশে কখনো লোকের অভাব হবে না ১৮ কিংবা আমার সামনে উপস্থিত হয়ে হোমবলি উৎসর্গ করার, শস্য নৈবেদ্য* পোড়ানোর এবং অন্যান্য বলি উৎসর্গ করার জন্য কখনো লেবীয় যাজকদের অভাব হবে না।’”
১৯ যিহোবার বার্তা আবারও যিরমিয়ের কাছে এল। তিনি যিরমিয়কে বললেন: ২০ “যিহোবা এই কথা বলেন, ‘আমি দিন ও রাত সম্বন্ধে যে-চুক্তি করেছি, তোমরা যদি সেই চুক্তি ভাঙতে পার, যাতে দিন ও রাত সঠিক সময়ে না হয়, ২১ একমাত্র তা হলেই আমার দাস দায়ূদের সঙ্গে করা আমার চুক্তি ভাঙা সম্ভব হবে, যাতে তার সিংহাসনে রাজত্ব করার জন্য তার কোনো ছেলে না থাকে আর লেবীয় যাজকদের সঙ্গে করা আমার চুক্তিও ভাঙা সম্ভব হবে, যারা আমার দাস। ২২ ঠিক যেভাবে আকাশের বাহিনী গোনা যায় না এবং সমুদ্রের বালি পরিমাপ করা যায় না, সেভাবেই আমি আমার দাস দায়ূদের বংশকে এবং যে-লেবীয়েরা আমার সেবা করছে, তাদের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলব।’”
২৩ যিহোবার বার্তা আবারও যিরমিয়ের কাছে এল। তিনি যিরমিয়কে বললেন: ২৪ “তুমি কি লক্ষ করেছ, এই লোকেরা কী বলছে? তারা বলছে, ‘যিহোবা এই যে-দুই পরিবারকে বেছে নিয়েছিলেন, তাদের তিনি প্রত্যাখ্যান করবেন।’ শত্রুরা আমার নিজের লোকদের অপমান করে এবং তারা তাদের আর একটা জাতি বলে মনে করে না।
২৫ “যিহোবা এই কথা বলেন: ‘ঠিক যেভাবে আমি দিন ও রাত সম্বন্ধে আমার চুক্তি স্থাপন করেছি এবং আকাশ ও পৃথিবী সম্বন্ধে আমার নিয়ম স্থাপন করেছি, ২৬ সেভাবেই আমি যাকোবের বংশকে এবং আমার দাস দায়ূদের বংশকে কখনো প্রত্যাখ্যান করব না। আমি তার বংশ থেকে আসা রাজাদের অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের বংশধরদের উপর রাজত্ব করতে দেব কারণ আমি বন্দিত্বে থাকা তাদের লোকদের ফিরিয়ে আনব এবং তাদের প্রতি করুণা দেখাব।’”