যিশাইয়
৫৯ দেখো! যিহোবার হাত এতটা ছোটো নয় যে, তিনি রক্ষা করতে পারেন না
কিংবা তাঁর কানও এতটা দুর্বল নয় যে, তিনি শুনতে পান না।
২ বরং তোমরা নিজেদের ভুলগুলোর কারণেই তোমাদের ঈশ্বরের কাছ থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছ।
তোমাদের পাপগুলোর কারণে তিনি তোমাদের কাছ থেকে তাঁর মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন
আর তিনি তোমাদের কথা শুনতে চান না।
৩ কারণ তোমাদের হাতের তালু রক্তের কারণে
এবং তোমাদের আঙুলগুলো তোমাদের ভুলের কারণে কলুষিত হয়ে গিয়েছে।
তোমাদের ঠোঁট মিথ্যা কথা বলে আর তোমাদের জিভ বিড়বিড় করে মন্দ কথা বলে।
৪ কেউই যা সঠিক, সেটার পক্ষে কথা বলে না
আর কেউই আদালতে গিয়ে সত্য কথা বলে না।
তারা অবাস্তব বিষয়ের উপর আস্থা রাখে এবং মূল্যহীন কথা বলে।
তারা গর্ভে সমস্যা ধারণ করে এবং ক্ষতিকর বিষয়ের জন্ম দেয়।
৫ তারা বিষধর সাপের ডিম ফোটায়,
সেই ডিম ভেঙে সেটার মধ্য থেকে বিষধর সাপ বের হয়ে আসে।
যে-কেউ তাদের ডিম খাবে, সে মারা যাবে,
তারা মাকড়সার জালও বোনে।
৬ কিন্তু, সেই মাকড়সার জালগুলো পোশাক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না,
তারা যা বোনে, সেটা দিয়ে তারা নিজেদের শরীর ঢাকতে পারবে না।
তাদের কাজগুলো ক্ষতিকর
আর তারা তাদের হাত দিয়ে দৌরাত্ম্যপূর্ণ কাজ করে।
৭ তাদের পা মন্দ কাজ করার জন্য দৌড়োয়
আর তারা নির্দোষ ব্যক্তিদের খুন করার জন্য উৎসুক হয়ে থাকে।
তাদের চিন্তাভাবনাগুলো ক্ষতিকর,
লোকদের বিনষ্ট করা এবং কষ্ট দেওয়াই তাদের কাজ।
৮ তারা শান্তির পথ সম্বন্ধে জানে না
আর তাদের পথে কোনো ন্যায়বিচার নেই।
তারা তাদের রাস্তাগুলো আঁকাবাঁকা করে তোলে,
যারা সেই রাস্তাগুলো দিয়ে যায়, তারা কেউই শান্তি পাবে না।
৯ এইজন্য ন্যায়বিচার আমাদের কাছ থেকে অনেক দূরে রয়েছে
আর যা সঠিক, তা আমাদের কাছে এসে পৌঁছোয় না।
আমরা আলোর জন্য অপেক্ষা করতে থাকি, কিন্তু দেখো! শুধু গাঢ় অন্ধকার রয়েছে।
আমরা উজ্জ্বল আলোর জন্য অপেক্ষা করতে থাকি, কিন্তু আমরা অন্ধকারের মধ্য দিয়ে হাঁটতে থাকি।
১০ আমরা অন্ধ লোকদের মতো দেওয়াল হাঁতড়াই,
যাদের চোখ নেই, তাদের মতো হাঁতড়াতে থাকি।
ভরদুপুরে আমরা এমনভাবে হোঁচট খাই, যেন সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে এসেছে।
শক্তিশালী ব্যক্তিদের মাঝে আমরা ঠিক মৃত ব্যক্তিদের মতো।
১১ আমরা সবাই ভল্লুকের মতো গর্জন করতে থাকি
আর ঘুঘুর মতো দুঃখে ডাকতে থাকি।
আমরা ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা করি, কিন্তু কোথাও তা পাই না,
আমরা পরিত্রাণ পাওয়ার আশা করি, কিন্তু সেটা আমাদের কাছ থেকে অনেক দূরে রয়েছে।
১২ কারণ তোমার সামনে আমাদের বিদ্রোহগুলো অনেক,
আমাদের প্রতিটা পাপ আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়।
আমরা আমাদের বিদ্রোহগুলো সম্বন্ধে জানি,
আমরা আমাদের ভুলগুলো সম্বন্ধে ভালোভাবে জানি।
১৩ আমরা অপরাধ করেছি এবং যিহোবাকে অস্বীকার করেছি,
আমরা আমাদের ঈশ্বরের কাছ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছি।
আমরা অত্যাচার ও বিদ্রোহের কথা বলেছি,
আমরা মিথ্যা কথা বলব বলে চিন্তা করেছি আর তারপর বিড়বিড় করে সেগুলো বলেছি।
১৪ ন্যায়বিচারকে পিছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে
আর যা সঠিক, তা দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে
কারণ নগরের খোলা জায়গায় সত্য* হোঁচট খেয়েছে
আর সততা প্রবেশ করতে পারছে না।
১৫ সত্য* অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে
আর যে-কেউ মন্দতা থেকে দূরে সরে যায়, তাকে লুট করা হয়।
যিহোবা এটা দেখেছেন এবং অসন্তুষ্ট হয়েছেন*
কারণ কোথাও ন্যায়বিচার নেই।
১৬ তিনি দেখলেন যে, কোনো পুরুষ নেই
আর তিনি আশ্চর্য হয়ে গেলেন যে, কেউ বাধা দিল না।
তাই, তিনি নিজের হাতের শক্তির দ্বারা পরিত্রাণ করলেন*
আর তাঁর নিজের ন্যায়বিচার তাঁকে শক্তি দিল।
তিনি প্রতিশোধের পোশাক পরলেন
এবং জামা* পরার মতোই উদ্যোগকে নিজের শরীরে জড়ালেন।
১৮ তিনি তাদের কাজের ফল তাদের দেবেন:
তিনি তাঁর বিরোধীদের উপর নিজের রাগ ঢেলে দেবেন, তাঁর শত্রুদের শাস্তি দেবেন।
আর তিনি দ্বীপগুলোকে তাদের প্রাপ্য ফল দেবেন।
১৯ পশ্চিম দিকের* লোকেরা যিহোবার নামকে ভয় করবে
আর পূর্ব দিকের* লোকেরা তাঁর গৌরবকে ভয় করবে
কারণ তিনি দ্রুত বয়ে আসা নদীর মতো আসবেন,
যেটা যিহোবার শক্তির দ্বারা চালিত হয়।
২০ যিহোবা এই কথা ঘোষণা করেন: “মুক্তিকর্তা সিয়োনে আসবেন,
যাকোবের সেই বংশধরদের কাছে আসবেন, যারা অপরাধ থেকে সরে আসে।”
২১ যিহোবা বলেন: “তাদের সঙ্গে আমি এই চুক্তি করি।” যিহোবা বলেন: “আমার পবিত্র শক্তি, যেটা তোমার উপর রয়েছে আর আমি তোমার মুখে যে-কথাগুলো দিয়েছি, সেগুলো এখন থেকে চিরকাল, তোমার মুখ থেকে, তোমার সন্তানদের মুখ থেকে এবং তোমার নাতি-নাতনিদের মুখ থেকে কখনো সরানো হবে না।”