যিরমিয়
৫১ যিহোবা এই কথা বলেন:
“দেখো, আমি ব্যাবিলনের বিরুদ্ধে এবং লেব-কামাইয়ের* বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে
এক ধ্বংসাত্মক ঝড় তুলছি।
২ আমি শস্য ঝাড়ার লোকদের ব্যাবিলনে পাঠাব
আর তারা তাকে ঝাড়বে এবং তার দেশ খালি করে দেবে।
বিপর্যয়ের দিনে তারা সমস্ত দিক থেকে তার বিরুদ্ধে আসবে।
৩ তিরন্দাজ যেন নিজের ধনুক প্রস্তুত না করে।
কেউ যেন নিজের বর্ম* পরে না দাঁড়ায়।
তার যুবকদের প্রতি একটুও সমবেদনা দেখিয়ো না।
তার পুরো সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে দাও।
৪ আর তারা কল্দীয়দের দেশে মারা পড়বে,
তার রাস্তাগুলোতে তারা বিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকবে।
৫ কারণ ইজরায়েল ও যিহূদার ঈশ্বর, স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা তাদের ছেড়ে দেননি, তারা বিধবার মতো নয়।
কিন্তু, ইজরায়েলের পবিত্র ঈশ্বরের চোখে তাদের দেশ* দোষে পরিপূর্ণ।
৬ ব্যাবিলনের মধ্য থেকে পালিয়ে যাও,
তোমাদের জীবন বাঁচিয়ে পালাও।
তার ভুলের কারণে তোমরা ধ্বংস হয়ে যেয়ো না।
কারণ এটা যিহোবার প্রতিশোধের সময়।
সে যা করেছে, সেটার প্রতিফল তিনি তাকে দিচ্ছেন।
৭ ব্যাবিলন যিহোবার হাতে এক সোনার পেয়ালার মতো ছিল,
সে পুরো পৃথিবীকে মাতাল করে তুলেছিল।
জাতিগুলো তার দ্রাক্ষারস* পান করেছে,
তাই জাতিগুলো পাগল হয়ে গিয়েছে।
৮ ব্যাবিলন হঠাৎই পড়ে গেল, সে ভেঙে গিয়েছে।
তার কারণে জোরে জোরে কাঁদো!
তার যন্ত্রণার জন্য বালসাম* নিয়ে আসো, হয়তো সে সুস্থ হয়ে উঠবে।”
৯ “আমরা ব্যাবিলনকে সুস্থ করার চেষ্টা করলাম, কিন্তু তাকে সুস্থ করা গেল না।
তাকে ছেড়ে দাও, চলো আমরা প্রত্যেকে নিজের নিজের দেশে চলে যাই।
কারণ তার অপরাধ আকাশ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে,
সেটা মেঘ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে।
১০ যিহোবা আমাদের জন্য ন্যায়বিচার করেছেন।
চলো, আমরা সিয়োনে আমাদের ঈশ্বর যিহোবার কাজের বিষয়ে জানাই।”
১১ “তিরগুলোতে ধার দাও, গোলাকার ঢালগুলো তুলে নাও।*
যিহোবা মাদীয়দের রাজাদের অনুপ্রাণিত করেছেন
কারণ তিনি ব্যাবিলনকে ধ্বংস করে ফেলতে চান।
কারণ এটা যিহোবার প্রতিশোধ, তাঁর মন্দিরের জন্য নেওয়া তাঁর প্রতিশোধ।
১২ ব্যাবিলনের প্রাচীরগুলোর বিরুদ্ধে পতাকা তোলো।
পাহারা জোরদার করো, পাহারাদারদের মোতায়েন করো।
যারা ওত পেতে থাকবে, তাদের প্রস্তুত করো।
কারণ যিহোবা একটা পরিকল্পনা করেছেন,
তিনি ব্যাবিলনের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে যা করার প্রতিজ্ঞা করেছেন, তা করবেন।”
১৩ “হে মহিলা, তুমি, যে অনেক জলের উপর বাস কর,
যার কাছে প্রচুর ধনসম্পদ রয়েছে,
তোমার শেষ এসে গিয়েছে, তুমি তোমার লাভের শেষ সীমায় গিয়ে পৌঁছেছ।
১৪ স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা নিজের নামের দিব্য করে বলেছেন,
‘আমি তোমাকে পুরুষদের দ্বারা ভরতি করে দেব, যারা পঙ্গপালের মতোই অসংখ্য হবে,
তারা তোমাকে পরাজিত করে চিৎকার করবে।’
১৫ তিনি নিজের শক্তিতে পৃথিবীকে তৈরি করেছেন,
তিনি নিজের প্রজ্ঞায় উর্বর জমিকে স্থাপন করেছেন
এবং নিজের বোঝার ক্ষমতায় আকাশকে বিছিয়েছেন।
১৬ তিনি যখন তাঁর গলার আওয়াজ শোনান,
তখন আকাশের জল উথালপাথাল হয়
আর তিনি পৃথিবীর প্রান্ত থেকে মেঘকে* উপরে ওঠান।
তিনি বৃষ্টির জন্য বিদ্যুৎ* তৈরি করেন
আর নিজের ভাণ্ডারগুলো থেকে বাতাস বওয়ান।
১৭ প্রত্যেক মানুষ অবিবেচক ও নির্বোধের মতো কাজ করে।
প্রত্যেক স্বর্ণকারকে তার খোদাই-করা মূর্তির কারণে লজ্জিত করা হবে
কারণ তার ধাতব* মূর্তি ভ্রান্তিজনক
আর সেগুলোর মধ্যে প্রাণ* নেই।
১৮ সেগুলো অর্থহীন* এবং উপহাসের পাত্র।
যখন সেগুলোকে বিচার করার দিন আসবে, তখন সেগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।
১৯ যিনি যাকোবের অধিকার, তিনি এই জিনিসগুলোর মতো নন
কারণ তিনিই সমস্ত কিছু তৈরি করেছেন
আর তিনি তাঁর উত্তরাধিকারের লাঠি।*
তাঁর নাম স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা।”
২০ “তুমি আমার জন্য যুদ্ধের অস্ত্র, যুদ্ধের লাঠি
কারণ তোমার মাধ্যমে আমি জাতিগুলোকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব।
তোমার মাধ্যমে আমি রাজ্যগুলোকে ধ্বংস করে দেব।
২১ তোমার মাধ্যমে আমি ঘোড়া এবং তার আরোহীকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব।
তোমার মাধ্যমে আমি যুদ্ধরথ এবং সেটার আরোহীকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব।
২২ তোমার মাধ্যমে আমি পুরুষকে ও মহিলাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব।
তোমার মাধ্যমে আমি বয়স্ক ব্যক্তিকে এবং ছোটো ছেলেকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব।
তোমার মাধ্যমে আমি যুবককে ও যুবতীকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব।
২৩ তোমার মাধ্যমে আমি মেষপালককে এবং তার পালকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব।
তোমার মাধ্যমে আমি কৃষককে এবং লাঙল টানার জন্য ব্যবহৃত পশুদের চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব।
তোমার মাধ্যমে আমি রাজ্যপালদের ও আধিকারিকদের* চূর্ণবিচূর্ণ করে দেব।
২৪ আর ব্যাবিলন এবং কল্দিয়ার সমস্ত বাসিন্দা সিয়োনে তোমাদের চোখের সামনে যে-সমস্ত মন্দ কাজ করেছে,
সেগুলোর জন্য আমি তাদের প্রতিফল দেব।” যিহোবা এই কথা ঘোষণা করেছেন।
২৫ যিহোবা ঘোষণা করেন: “হে ধ্বংসাত্মক পর্বত,
তুমি, যে পুরো পৃথিবীকে ধ্বংস করছ, আমি তোমার বিরুদ্ধে রয়েছি।
আমি আমার হাত বাড়াব আর তোমাকে শৈল থেকে গড়িয়ে ফেলে দেব,
আমি তোমাকে একটা পুড়ে যাওয়া পর্বতে পরিণত করব।”
২৬ যিহোবা ঘোষণা করেন: “লোকেরা তোমার কাছ থেকে কোণের পাথর অথবা ভিত্তির পাথর নেবে না
কারণ তুমি চিরকাল ধরে ধ্বংস হয়ে পড়ে থাকবে।”
২৭ “দেশে পতাকা তোলো।
জাতিগুলোর মাঝে শিঙা বাজাও।
তার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য জাতিগুলোকে প্রস্তুত করো।
তার বিরুদ্ধে অরারট, মিন্নি ও অস্কিনস রাজ্যকে ডেকে পাঠাও।
তার বিরুদ্ধে এমন নিয়োগকর্তাকে নিযুক্ত করো, যে সৈন্যদের ভর্তি করে।
কিলবিল করতে থাকা পঙ্গপালের মতোই তার বিরুদ্ধে ঘোড়াদের নিয়ে এসো।
২৮ তার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য জাতিগুলোকে,
মাদিয়ার রাজাদের, রাজ্যপালদের এবং সমস্ত আধিকারিককে*
আর তারা যে-সমস্ত দেশের উপর রাজত্ব করে, সেগুলোকে প্রস্তুত করো।
২৯ পৃথিবী কাঁপবে ও দুলবে
কারণ যিহোবা ব্যাবিলনের প্রতি যা করার পরিকল্পনা করেছেন, তিনি তা পূর্ণ করবেন।
তিনি ব্যাবিলনের এমন অবস্থা করবেন যে, লোকেরা সেটাকে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়বে
আর সেখানে কোনো বাসিন্দা থাকবে না।
৩০ ব্যাবিলনের যোদ্ধারা যুদ্ধ করা ছেড়ে দিয়েছে।
তারা নিজেদের দৃঢ় দুর্গগুলোতে বসে আছে।
তারা শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
তারা মহিলাদের মতো হয়ে গিয়েছে।
ব্যাবিলনের বাড়িগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তার হুড়কোগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
৩১ একজন খবর দেওয়ার লোক দৌড়ে আরেকজন খবর দেওয়ার লোকের সঙ্গে দেখা করে,
একজন বার্তাবাহক আরেকজন বার্তাবাহকের সঙ্গে দেখা করে,
যাতে তারা ব্যাবিলনের রাজাকে এই খবর দিতে পারে যে, তার নগর চারিদিক থেকে দখল করে নেওয়া হয়েছে,
৩২ নদীর যে-জায়গাগুলো দিয়ে হেঁটে পার হওয়া যায়, সেই জায়গাগুলো দখল করে নেওয়া হয়েছে,
নলখাগড়ার নৌকাগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে
আর সৈন্যেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।”
৩৩ কারণ স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক এবং ইজরায়েলের ঈশ্বর যিহোবা এই কথা বলেন:
“ব্যাবিলনের মেয়ে শস্য মাড়াই করার জায়গার মতো।
তাকে মাড়িয়ে মাড়িয়ে শক্ত করার সময় চলে এসেছে।
খুব তাড়াতাড়ি তার শস্য কাটার সময় উপস্থিত হবে।”
৩৪ “ব্যাবিলনের রাজা নবূখদ্নিৎসর* আমাকে খেয়ে ফেলেছেন,
তিনি আমাকে বিভ্রান্ত করে দিয়েছেন।
তিনি খালি বাসনের মতো আমাকে রেখে দিয়েছেন।
তিনি একটা বড়ো সাপের মতো আমাকে গিলে ফেলেছেন,
তিনি আমার ভালো ভালো জিনিস দিয়ে নিজের পেট ভরতি করেছেন।
তিনি আমাকে দূর করে দিয়েছেন।*
৩৫ সিয়োনের বাসিন্দা বলে: ‘আমার প্রতি এবং আমার শরীরের প্রতি যে-অত্যাচার করা হয়েছে, ব্যাবিলনের প্রতিও যেন তেমনটাই করা হয়!’
জেরুসালেম বলে: ‘আমার রক্তপাতের দোষ যেন কল্দিয়ার বাসিন্দাদের উপর গিয়ে পড়ে!’”
৩৬ তাই, যিহোবা এই কথা বলেন:
“দেখো, আমি তোমার হয়ে তোমার মামলা লড়ছি
আর আমি তোমার হয়ে প্রতিশোধ নেব।
আমি তার সমুদ্র ও কুয়োগুলো শুকিয়ে দেব।
৩৭ ব্যাবিলন পাথরের ঢিবিতে
এবং শিয়ালের ডেরায় পরিণত হবে।
তার এমন অবস্থা হবে যে, লোকেরা তাকে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়বে এবং তাকে নিয়ে ঠাট্টা করে শিস দেবে,
তার মধ্যে কোনো বাসিন্দা থাকবে না।
৩৮ তারা সবাই মিলে যুবসিংহের মতো গর্জন করবে।
তারা বাচ্চা সিংহের মতো ডাকবে।”
৩৯ যিহোবা ঘোষণা করেন: “যখন তাদের আকাঙ্ক্ষা প্রবল হবে,
তখন আমি তাদের জন্য ভোজের ব্যবস্থা করব আর তাদের মাতাল করে তুলব,
যাতে তারা আনন্দ করে।
তারা চিরকালের জন্য ঘুমিয়ে পড়বে,
তারা আর উঠবে না।”
৪০ “আমি তাদের মেষের মতো,
পুংমেষ ও ছাগলের মতো হত্যা করার জন্য নিয়ে যাব।”
৪১ “দেখো! শেশককে* কীভাবে দখল করে নেওয়া হয়েছে,
সারা পৃথিবীতে যার প্রশংসা করা হয়, তাকে কীভাবে ধরে ফেলা হয়েছে!
জাতিগুলোর মাঝে ব্যাবিলনের এমন অবস্থা হয়েছে যে, লোকেরা তা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে!
৪২ সমুদ্র ব্যাবিলনের উপর এসে পড়েছে।
অসংখ্য ঢেউ তাকে ঢেকে ফেলেছে।
৪৩ তার নগরগুলোর এমন অবস্থা হয়েছে যে, লোকেরা তা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে,
সেগুলো শুকনো দেশে এবং মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।
সেগুলো এমন জায়গায় পরিণত হয়ে গিয়েছে, যেখানে কেউ বাস করবে না, যেটার মধ্য দিয়ে কোনো মানুষ যাবে না।
৪৪ আমি ব্যাবিলনে বেলকে শাস্তি দেব,
সে যা গিলে নিয়েছে, আমি তার মুখ থেকে তা বের করব।
জাতিগুলো আর তার দিকে স্রোতের মতো বয়ে যাবে না।
আর ব্যাবিলনের প্রাচীর পড়ে যাবে।
৪৫ হে আমার লোকেরা, তোমরা তার মধ্য থেকে বের হয়ে এসো!
যিহোবার ক্রোধের আগুন জ্বলছে, তোমরা সেটা থেকে নিজেদের জীবন বাঁচিয়ে পালাও!
৪৬ দেশে যে-খবর শোনা যাবে, সেটার কারণে তোমার হৃদয় যেন দুর্বল না হয় এবং তুমি যেন ভয় না পাও।
এক বছরে একটা খবর আসবে
আর পরের বছরে আরেকটা খবর আসবে যে,
দেশে দৌরাত্ম্য ছেয়ে রয়েছে এবং একজন শাসক অন্য শাসকের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়িয়েছে।
৪৭ তাই দেখো! এমন সময় আসছে,
যখন আমি ব্যাবিলনের খোদাই-করা মূর্তিগুলোকে ধ্বংস করে দেব।
তার পুরো দেশকে লজ্জিত করা হবে
আর তার সমস্ত নিহত লোক তার মাঝে পড়বে।
৪৮ আকাশ, পৃথিবী এবং সেগুলোর মধ্যে থাকা সমস্ত কিছু
ব্যাবিলনের পরিণতি দেখে আনন্দে চিৎকার করবে
কারণ উত্তর দিক থেকে বিনাশকেরা তার কাছে আসবে।” যিহোবা এই কথা ঘোষণা করেছেন।
৪৯ “ব্যাবিলন যে কেবল ইজরায়েলের লোকদের মেরে ফেলেছে এমন নয়,
ব্যাবিলনে পুরো পৃথিবীর লোকদেরও মেরে ফেলা হয়েছে।
৫০ তোমরা যারা তলোয়ার থেকে রক্ষা পাও, তোমরা চলতে থাকো, দাঁড়িয়ে থেকো না!
দূর থেকে যিহোবাকে স্মরণ করো
আর তোমাদের যেন জেরুসালেমের কথা মনে পড়ে।”
৫১ “আমাদের লজ্জিত করা হয়েছে কারণ আমাদের নিয়ে যে-ঠাট্টা করা হয়েছে, আমার তা শুনেছি।
অপমান আমাদের মুখ ঢেকে দিয়েছে
কারণ বিদেশিরা* যিহোবার গৃহের পবিত্র জায়গাগুলোকে আক্রমণ করেছে।”
৫২ যিহোবা ঘোষণা করেন: “তাই দেখো!
এমন দিন আসছে, যখন আমি তার খোদাই-করা মূর্তিগুলোকে ধ্বংস করে দেব
আর তার পুরো দেশে আহত লোকেরা আর্তনাদ করবে।”
৫৩ যিহোবা ঘোষণা করেন: “ব্যাবিলন যদি এমনকী আকাশ পর্যন্ত উঠে যায়,
সে যদি তার উঁচু উঁচু দৃঢ় দুর্গগুলোকে আরও মজবুত করে,
তারপরও আমার কাছ থেকে তার বিনাশকেরা আসবে।”
৫৪ “শোনো! ব্যাবিলন থেকে চিৎকারের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে,
কল্দীয়দের দেশ থেকে মহাবিপর্যয়ের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।
৫৫ কারণ যিহোবা ব্যাবিলনকে ধ্বংস করছেন,
তিনি তার জোরালো আওয়াজ থামিয়ে দেবেন
আর তার শত্রুরা সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো গর্জন করবে।
তাদের গলার আওয়াজ শোনা যাবে।
৫৬ কারণ বিনাশক ব্যাবিলনের বিরুদ্ধে উঠে আসবে,
তার যোদ্ধাদের ধরে ফেলা হবে,
তাদের ধনুকগুলো ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেওয়া হবে
কারণ যিহোবা এমন ঈশ্বর, যিনি উপযুক্ত শাস্তি দেন।
তিনি অবশ্যই প্রতিফল দেবেন।
৫৭ আমি তার অধ্যক্ষদের, তার বিজ্ঞ ব্যক্তিদের,
তার রাজ্যপালদের, তার আধিকারিকদের* এবং তার যোদ্ধাদের মাতাল করে তুলব
আর তারা চিরকালের জন্য ঘুমিয়ে পড়বে, তারা আর জেগে উঠবে না।”
সেই রাজা, যাঁর নাম স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা, তিনি এই ঘোষণা করেছেন।
৫৮ স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা এই কথা বলেন:
“যদিও ব্যাবিলনের প্রাচীর চওড়া, তারপরও সেটাকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হবে
আর যদিও তার দরজাগুলো উঁচু, তারপরও সেগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হবে।
লোকেরা বৃথাই পরিশ্রম করবে,
জাতিগুলো যেটার জন্য অনেক পরিশ্রম করবে, সেটাকে আগুনে ছুড়ে ফেলা হবে।”
৫৯ ভাববাদী যিরমিয় মহসেয়ের ছেলে নেরিয়ের ছেলে সরায়কে একটা আজ্ঞা দিলেন, যখন তিনি যিহূদার রাজা সিদিকিয়ের রাজত্বের চতুর্থ বছরে সেই রাজার সঙ্গে ব্যাবিলনে গেলেন। সরায় রাজার জিনিসপত্রের দেখাশোনা করতেন। ৬০ ব্যাবিলনের উপর যে-সমস্ত বিপর্যয় আসবে, সেগুলোর বিষয়ে যিরমিয় একটা বইয়ে লিখলেন, এই সমস্ত কথা ব্যাবিলনের বিরুদ্ধে লেখা হল। ৬১ আর যিরমিয় সরায়কে বললেন: “তুমি যখন ব্যাবিলনে যাবে এবং সেই নগরীকে দেখবে, তখন তুমি এই সমস্ত কথা জোরে জোরে পড়ে শোনাবে। ৬২ তারপর তুমি বলবে, ‘হে যিহোবা, তুমি এই জায়গার বিষয়ে বলেছ যে, এটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে, এখানে মানুষ কিংবা পশু, কেউই থাকবে না আর সে চিরকালের জন্য ধ্বংস হয়ে পড়ে থাকবে।’ ৬৩ আর তুমি এই বইটা পড়ে শেষ করার পর, এটার সঙ্গে একটা পাথর বাঁধবে আর এটাকে ইউফ্রেটিস নদীর মাঝখানে ছুড়ে ফেলবে। ৬৪ তারপর তুমি বলবে, ‘এভাবেই ব্যাবিলন ডুবে যাবে, সে আর কখনো উঠবে না কারণ আমি তার উপর বিপর্যয় আনতে চলেছি, তার বাসিন্দারা ক্লান্ত হয়ে পড়বে।’”
যিরমিয়ের কথা এই পর্যন্তই।