ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৪ ৬/১ পৃষ্ঠা ১৯-২৪
  • অসিদ্ধ মাংসিক দেহের উপর পাপের প্রভাবের সাথে সংগ্রাম করা

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • অসিদ্ধ মাংসিক দেহের উপর পাপের প্রভাবের সাথে সংগ্রাম করা
  • ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • অসিদ্ধ মাংসিক দেহের উপর পাপের প্রভাব
  • মাংসের ভাব
  • আত্মার ভাব
  • জীবন ও শান্তির প্রতিজ্ঞা
  • আত্মার ভাব বজায় রাখুন এবং বেঁচে থাকুন!
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • জীবন ও শান্তির জন্য আত্মার বশে চলুন
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “শান্তির চেষ্টা করুক ও তাহার অনুধাবন করুক”
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি”
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৪ ৬/১ পৃষ্ঠা ১৯-২৪

অসিদ্ধ মাংসিক দেহের উপর পাপের প্রভাবের সাথে সংগ্রাম করা

“মাংসের ভাব মৃত্যু, কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি।”—রোমীয় ৮:৬.

১. মানুষকে কী উদ্দেশ্য সৃষ্টি করা হয়েছিল?

“ঈশ্বর আপনার প্রতিমূর্ত্তিতে মনুষ্যকে সৃষ্টি করিলেন; ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তিতেই তাহাকে সৃষ্টি করিলেন, পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে সৃষ্টি করিলেন।” (আদিপুস্তক ১:২৭) প্রতিমূর্তি হল বস্তু অথবা উৎসের প্রতিফলন। সুতরাং, ঈশ্বরের গৌরব প্রতিফলিত করতে মানুষকে সৃষ্টি করা হয়। ঈশ্বরীয় গুণাবলী​—⁠যেমন প্রেম, মঙ্গলভাব, ন্যায়পরায়ণতা এবং আধ্যাত্মিকতা​—⁠তাদের সকল প্রচেষ্টায় প্রদর্শনের দ্বারা তারা সৃষ্টিকর্তার প্রতি প্রশংসা ও সম্মান আনে যা তাদের নিজেদের জন্যও সুখ ও পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে।​—⁠১ করিন্থীয় ১১:৭; ১ পিতর ২:১২.

২. প্রথম মানব দম্পতি কিভাবে লক্ষভ্রষ্ট হয়?

২ প্রথম মানব দম্পতিকে সিদ্ধরূপে সৃষ্টি করা হয়েছিল। পালিশ করা আয়নার মত উজ্জ্বল ও অবিকলভাবে ঈশ্বরের গৌরব প্রতিফলনে তারা দক্ষ ছিল। কিন্তু তাদের সৃষ্টিকর্তা এবং ঈশ্বরের প্রতি অবাধ্য হওয়াকে স্বাধীনভাবে বেছে নিয়ে তারা তাদের ঔজ্জ্বল্যকে ম্লান করে দিয়েছিল। (আদিপুস্তক ৩:⁠৬) তারপরে, তারা আর ঈশ্বরের গৌরবকে সিদ্ধরূপে প্রতিফলিত করতে পারেনি। তারা ঈশ্বরের গৌরবের মাত্রা বজায় রাখতে পারে না আর যে উদ্দেশ্যে তাদের ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করা হয়েছিল, তা হারায়। আর এক কথায় তারা পাপ করে।a

৩. পাপের বাস্তবিক প্রকৃতি কী?

৩ এটি আমাদের পাপের বাস্তবিক প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করে, যা ঈশ্বরের সাদৃশ্য এবং গৌরব প্রতিফলন করতে দেয় না। পাপ মানুষকে অপবিত্র করে অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ও নৈতিক অর্থে অশুদ্ধ এবং কলুষিত করে। সমগ্র মানবজাতি আদম ও হবার বংশধর বলে, সকলেই সেই কলুষিত ও অশুদ্ধ অবস্থায় জন্মায়, তাঁর সন্তান হিসাবে তারা ঈশ্বরের প্রত্যাশা পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়। আর ফলাফল? বাইবেল বর্ণনা করে: “যেমন এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।”​—⁠রোমীয় ৫:১২; তুলনা করুন যিশাইয় ৬৪:৬.

অসিদ্ধ মাংসিক দেহের উপর পাপের প্রভাব

৪-৬. (ক) পাপ সম্বন্ধে আজকের দিনে বেশির ভাগ লোকের দৃষ্টিভঙ্গি কী? (খ) আধুনিক দিনের পাপের দৃষ্টিভঙ্গির পরিণাম কী?

৪ আজকের বেশির ভাগ লোকেই নিজেদের অশুদ্ধ, কলুষিত অথবা পাপী বলে মনে করে না। প্রকৃতপক্ষে, মানুষের শব্দতালিকা থেকে পাপ বলে শব্দটি অদৃশ্য হয়ে গেছে। তারা হয়ত ভুলভ্রান্তি অসাবধানতা এবং ভুল বোঝা সম্বন্ধে কথা বলবে। কিন্তু পাপ সম্বন্ধে? কদাচিৎ! সমাজ-বিজ্ঞানের এক অধ্যাপক, অ্যালান উল্ফ লক্ষ্য করেন, এমনকি যারা এখনও পর্যন্ত ঈশ্বরে বিশ্বাস করে বলে দাবি করে তাদের কাছে “ঈশ্বরের শিক্ষাগুলি, নীতিবাদী আইন অপেক্ষা নৈতিক বিশ্বাস বলে মনে হয়, দশ আজ্ঞার চাইতে ‘দশটি পরামর্শ।”

৫ এই চিন্তাধারার ফল কী হয়? পাপের বাস্তবতাকে অস্বীকার অথবা অন্ততপক্ষে উপেক্ষা করা হয়। এটি ভাল মন্দের বিষয়ে বিকৃত মনোভাবসমেত এক বংশের জন্ম দিয়েছে, যারা আচার-ব্যবহার তাদের নিজস্ব মান স্থাপন করতে নিজেদের স্বাধীন মনে করে এবং তারা তাদের খুশিমত কাজ করার জন্য কারও কাছে দায়ী বলে মনে করে না। এই ধরনের লোকেদের কাছে, ভাল বোধ করা হল একমাত্র ভিত্তি যার দ্বারা কোন কাজ সঠিক বা ভুল তা নির্ণয় করা যায়।​—⁠হিতোপদেশ ৩০:​১২, ১৩; তুলনা করুন দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:​৫, ১০.

৬ উদাহরণস্বরূপ, এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তথাকথিত সাতটি মারাত্মক পাপ সম্বন্ধে তাদের মতামত প্রকাশ করতে যুবকদের ডাকা হয়েছিল।b একজন অংশগ্রহণকারী বলে, “অহঙ্কার পাপ নয়।” “নিজের সম্বন্ধে ভাল মনে করা উচিত।” অলসতা সম্পর্কে আর একজন বলে: “কখনও কখনও এইরূপ হওয়া ভাল। . . . কখনও কখনও আরাম করা ও নিজেকে ব্যক্তিগত সময় দেওয়া ভাল।” এমনকি পরিচালক এই সংক্ষিপ্ত মন্তব্যটি করেন: ‘সাতটি মারাত্মক পাপ কিন্তু মন্দ কাজ নয়, বরং সমস্ত বিশ্বের মানুষের ইচ্ছা যা বিরক্তিকর কিন্তু খুবই উপভোগ্য হতে পারে।’ হ্যাঁ, পাপের সঙ্গে সঙ্গে দোষী মনে করার অনুভূতি, ভাল বোধ করার বিপরীত।​—⁠ইফিষীয় ৪:​১৭-১৯.

৭. বাইবেলের বর্ণনানুসারে কিভাবে মানুষ পাপের দ্বারা প্রভাবিত হয়?

৭ এগুলির বিপরীতে বাইবেল সহজভাবে বলে “সকলেই পাপ করিয়াছে এবং ঈশ্বরের গৌরব-বিহীন হইয়াছে।” (রোমীয় ৩:​২৩, ২৪) এমনকি প্রেরিত পৌল স্বীকার করেন: “আমি জানি যে আমাতে, অর্থাৎ আমার মাংসে, উত্তম কিছুই বাস করে না; আমার ইচ্ছা উপস্থিত বটে, কিন্তু উত্তম ক্রিয়া সাধন উপস্থিত নয়। কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি।” (রোমীয় ৭:​১৮, ১৯) পৌল এখানে নিজের প্রতি করুণা দেখাচ্ছিলেন না। বরং, কিভাবে মানবজাতি ঈশ্বরের গৌরববিহীন হয়েছে তা পূর্ণরূপে উপলব্ধি করায়, তিনি অসিদ্ধ মাংসিক দেহের উপর পাপের প্রভাবের বিষয়ে গভীরভাবে সতর্কতা অনুভব করেন। “দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি!” তিনি বলেন, “এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে?​—⁠রোমীয় ৭:২৪.

৮. আমাদের নিজেদের কী প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা উচিত? কেন?

৮ এই বিষয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী? আপনি হয়ত স্বীকার করেন যে আদমের বংশধর হিসাবে প্রত্যেকের মত, আপনিও অসিদ্ধ। কিন্তু সেই জ্ঞান আপনার চিন্তাধারা ও আপনার জীবনের পথকে কিভাবে প্রভাবিত করে? আপনি কি এটিকে জীবনের এক বিষয় বলে গ্রহণ করেন এবং স্বাভাবিকভাবে যা করতে ইচ্ছা হয়, আপনি কি তাই করে যাবেন? অথবা যতটা সম্ভব ঈশ্বরের গৌরবকে উজ্জ্বলভাবে প্রতিফলিত করতে আপনি কি অসিদ্ধ মাংসিক দেহের উপর পাপের প্রভাবের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন? পৌলের দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে এটি আমাদের প্রত্যেকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত: “কেননা যাহারা মাংসের বশে আছে, তাহারা মাংসিক বিষয় ভাবে; কিন্তু যাহারা আত্মার বশে আছে, তাহারা আত্মিক বিষয় ভাবে। কারণ মাংসের ভাব মৃত্যু, কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি।”​—⁠রোমীয় ৮:​৫, ৬.

মাংসের ভাব

৯. কেন “মাংসের ভাব মৃত্যু”?

৯ পৌল কী বুঝাতে চেয়েছিলেন যখন তিনি বলেন যে “মাংসের ভাব মৃত্যু”? বাইবেলে প্রায়ই “মাংস” কথাটি মানুষের অসিদ্ধ অবস্থা, বিদ্রোহী আদমের এক বংশধর হিসাবে ‘পাপে ধারণকে’ নির্দেশ করে। (গীতসংহিতা ৫১:৫; ইয়োব ১৪:⁠৪) এইভাবে, পৌল খ্রীষ্টানদের উপদেশ দিচ্ছিলেন তাদের মন অসিদ্ধ, পতিত মাংসিক দেহের পাপপূর্ণ প্রবণতা, প্রেরণা ও ইচ্ছার উপর স্থাপন না করতে। কেন না করতে? অন্য জায়গায় পৌল আমাদের মাংসের কাজের বিষয় বলেন এবং তারপর আরও সতর্ক করেন: “যাহারা এই প্রকার আচরণ করে, তাহারা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাইবে না।”​—⁠গালাতীয় ৫:​১৯-২১.

১০. ভাব বলতে কী বুঝায়?

১০ কিন্তু কিছু ভাবা এবং অভ্যাস করার মধ্যে কি বড় একটা পার্থক্য নেই? সত্য, কোন বিষয়ে চিন্তা সবসময়ে তা করতে পরিচালিত করে না। যাইহোক, শুধুমাত্র একটু চিন্তা করার চাইতে মনের ভাব আরও বেশি কিছু। পৌল গ্রীক শব্দ ফ্র’নি·মা ব্যবহার করেন এবং এটি নির্দেশ করে “চিন্তাধারা, মনের (-ভাব), . . . লক্ষ্য, আকাঙ্ক্ষা, প্রচেষ্টা।” সেইজন্য, “মাংসের ভাব” এর অর্থ মাংসের অভিলাষের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, বশপ্রাপ্ত, কর্তৃত্বাধীন এবং পরিচালিত হওয়া।​—⁠১ যোহন ২:১৬.

১১. কয়িনের মাংসিক চিন্তাধারা কেমন ছিল এবং তার ফল কী হয়েছিল?

১১ কয়িন যা অনুসরণ করেছিল তার দ্বারা বিষয়টি ভালভাবে চিত্রিত করা হয়েছে। কয়িনের হৃদয়ে যখন ঈর্ষা ও রাগ পুঞ্জীভূত হতে থাকে, তখন যিহোবা ঈশ্বর তাকে সাবধান করেন: “তুমি কেন ক্রোধ করিয়াছ? তোমার মুখ কেন বিষণ্ণ হইয়াছে? যদি সদাচরণ কর, তবে কি গ্রাহ্য হইবে না? আর যদি সদাচরণ না কর, তবে পাপ দ্বারে গুঁড়ি মারিয়া রহিয়াছে। তোমার প্রতি তাহার বাসনা থাকিবে, এবং তুমি তাহার উপরে কর্ত্তৃত্ব করিবে।” (আদিপুস্তক ৪:​৬, ৭) কয়িনের সামনে বেছে নেওয়ার জন্য একটি বিষয় ছিল। সে কি ‘সদাচরণ করবে’ অর্থাৎ, ভাল কিছুর উপরে তার মন, লক্ষ্য এবং আকাঙ্ক্ষা স্থাপন করবে? অথবা সে কি ক্রমাগত মাংসিক চিন্তা করবে আর হৃদয়ের গুপ্ত মন্দ প্রবণতাগুলির দিকে মন চালিত করবে? যেমন যিহোবা বর্ণনা করেছিলেন, কয়িনকে ঝাঁপিয়ে পড়ে গ্রাস করতে “পাপ দ্বারে গুঁড়ি মারিয়া আছে” যদি সে পাপকে প্রশ্রয় দেয়। সংগ্রাম করার পরিবর্তে এবং তার মাংসিক অভিলাষের উপর কর্তৃত্ব করতে দিয়ে, কয়িন পাপকে তার উপর কর্তৃত্ব করতে দেয়​—⁠এবং এর পরিণতি শোচনীয় হয়।

১২. “কয়িনের পথে” যাতে আমরা না যাই তার জন্য আমাদের কী করা উচিত

১২ আমাদের বর্তমান দিন সম্বন্ধে কী? অবশ্যই আমরা চাই না ‘কয়িনের পথে” যেতে, যেমন প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টানদের মধ্যে কিছু জনের সম্পর্কে যিহূদা দুঃখ করে বলেছিলেন। (যিহূদা ১১) আমাদের কখনও যুক্তি করা ও মনে করা উচিত নয় যে সামান্য আকাঙ্ক্ষাকে প্রশ্রয় দেওয়া, হালকাভাবে আইনভঙ্গ করা ক্ষতিকর নয়। এর পরিবর্তে, আমাদের যে কোন অনৈশ্বরিক ও কলুষিত প্রভাবকে শনাক্ত করতে সতর্ক থাকা উচিত যা আমাদের হৃদয় ও মনের মধ্যে আসতে পারে এবং শিকড় গাড়ার আগেই তা উপড়ে ফেলা উচিত। অসিদ্ধ মাংসিক দেহের উপর পাপের প্রভাবের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অন্তর থেকেই শুরু হয়।

১৩. একজন ব্যক্তি কিভাবে “তার নিজের ইচ্ছা দ্বারা বিপথে পরিচালিত” হতে পারে?

১৩ উদাহরণস্বরূপ, আপনি হয়ত হঠাৎ জঘন্য বা ভয়ঙ্কর অথবা অশ্লীল বা যৌন উত্তেজক ছবি দেখে ফেলেন। এটি বইয়ের মধ্যে একটি ছবি অথবা একটি পত্রিকা, চলচ্চিত্র অথবা টেলিভিশন পর্দার উপর একটি দৃশ্য, বিলবোর্ডের উপর একটি বিজ্ঞাপন অথবা এমনকি বাস্তব জীবন পরিস্থিতি হতে পারে। সেটির বিষয়ে চিন্তার করার প্রয়োজন নেই, যেহেতু এটি হতে পারে​—⁠এবং হয়েছে। কিন্তু, এই ছবি অথবা দৃশ্য, যদিও কয়েক মুহূর্তের জন্য দেখেছেন, তবুও তা মনের মধ্যে থাকতে পারে, সময়ে সময়ে ফিরে আসতে পারে। যখন এটি ঘটে আপনি কী করবেন? আপনি কি তৎক্ষণাৎ সেই চিন্তাধারার বিরুদ্ধে লড়াই করেন এবং সেটিকে মন থেকে বার করে ফেলেন? অথবা আপনি কি সেটিকে মনের মধ্যে থাকতে দেন, হয়ত যাতে করে পুনরায় প্রতিবার অনুভব করতে পারেন যখন তা মনে আসে। পরেরটা করার দ্বারা একটি ধারাবাহিক ঘটনা শুরু হতে পারে যা যাকোব বর্ণনা করেন: “প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কামনা দ্বারা আকর্ষিত ও প্ররোচিত হইয়া পরীক্ষিত হয়। পরে কামনা সগর্ভা হইয়া পাপ প্রসব করে, এবং পাপ পরিপক্ব হইয়া মৃত্যুকে জন্ম দেয়।” সেই কারণে পৌল বলেন: “মনের ভাব মৃত্যু।”​—⁠যাকোব ১:​১৪, ১৫; রোমীয় ৮:৬.

১৪. কিসের সাথে আমাদের নিয়মিত সংগ্রাম করতে হয় এবং আমাদের প্রতিক্রিয়া কিরূপ হওয়া উচিত?

১৪ আমরা এমন এক জগতে বাস করছি যেখানে যৌন অনৈতিকতা, অপরাধ এবং বস্তুবাদিতাকে​—⁠খোলাখুলিভাবে ও প্রচুরভাবে​—⁠পুস্তকপুস্তিকা, পত্রিকা, চলচ্চিত্র, টেলিভিশন অনুষ্ঠান এবং জনপ্রিয় সঙ্গীতের মধ্যে তুলে ধরে গৌরবান্বিত করা হয়, আমরা আক্ষরিকভাবে প্রতিদিন ভুল চিন্তাধারা ও ধারণার দ্বারা বিধ্বস্ত হই। আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আপনি কি এগুলিতে মজা বা আনন্দ পান? অথবা আপনি কি ধার্মিক লোট যেমন মনে করতেন সেইরূপ মনে করেন, “যিনি ধর্ম্মহীনদের স্বৈরাচারে ক্লিষ্ট হইতেন। . . . তাহাদের অধর্ম্ম কার্য্য প্রযুক্ত দিন দিন আপন ধর্ম্মশীল প্রাণকে যাতনা দিতেন”? (২ পিতর ২:​৭, ৮) অসিদ্ধ মাংসিক দেহের পাপের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সফল হতে, আমাদের গীতরচকের মতে স্থিরসঙ্কল্প হওয়া প্রয়োজন: “আমি কোন জঘন্য পদার্থ চক্ষের সম্মুখে রাখিব না, আমি বিপথগামীদের ক্রিয়া ঘৃণা করি, তাহা আমাতে লিপ্ত হইবে না।”​—⁠গীতসংহিতা ১০১:⁠৩.

আত্মার ভাব

১৫. পাপের প্রভাবের উপর সংগ্রাম করতে আমাদের কী সাহায্য আছে?

১৫ অসিদ্ধ মাংসিক দেহের পাপের বিরুদ্ধে সংগ্রামে যা আমাদের সাহায্য করতে পারে, সেই সম্বন্ধে পৌল বলেন: “আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি।” (রোমীয় ৮:⁠৬) তাই, মাংসের দ্বারা কর্তৃত্ব করতে দেওয়ার পরিবর্তে, আমাদের মনকে আত্মার সান্নিধ্যে আনতে হবে এবং আত্মার বিষয়গুলি দিয়ে ভরে দেওয়া উচিত। সেগুলি কী কী? ফিলিপীয় ৪:৮ পদে পৌল এগুলির একটি তালিকা করেন: “অবশেষে, হে ভ্রাতৃগণ, যাহা যাহা সত্য, যাহা যাহা আদরণীয়, যাহা যাহা ন্যায্য, যাহা যাহা বিশুদ্ধ, যাহা যাহা প্রীতিজনক, যাহা যাহা সুখ্যাতিযুক্ত, যে কোন সদ্‌গুণ ও যে কোন কীর্ত্তি হউক, সেই সকল আলোচনা কর। আসুন এগুলির প্রতি গভীরভাবে মনোযোগ দিই এবং আমাদের যা ক্রমাগত বিবেচনা করা উচিত তা আরও ভাল করে বুঝি।

১৬. কোন গুণাবলী “সকল আলোচনা” করতে পৌল আমাদের উৎসাহ দেন, আর প্রত্যেকটির সাথে কী জড়িত আছে?

১৬ প্রথমেই পৌল আটটি নৈতিক গুণাবলীর তালিকা দেন এবং প্রত্যেকটি শব্দের পূর্বে “যাহা যাহা” উল্লেখ করেন। এই অভিব্যক্তিটি নির্দেশ করে যে খ্রীষ্টানদের চিন্তাধারা সবসময়েতে কেবলমাত্র শাস্ত্রীয় বিষয় অথবা প্রসঙ্গ আছে যার উপর আমরা আমাদের চিন্তাধারাকে স্থাপন করতে পারি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে তাদের অবশ্যই পৌলের দেওয়া নির্দিষ্ট নৈতিক গুণাবলির মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। পৌলের দ্বারা উল্লিখিত “বিষয়গুলির” প্রত্যেকটি ভাগই আমাদের মনোযোগের জন্য উপযুক্ত। আসুন আমরা এগুলিকে বিবেচনা করে দেখি।

▫ “সত্যের” সঙ্গে শুধুমাত্র সত্য অথবা মিথ্যার চাইতে আরও কিছু জড়িত। এর অর্থ সত্যবাদী, ধার্মিক, বিশ্বস্ত হওয়া যা বাস্তবে শুধুমাত্র উপর উপর দেখান উচিত নয়।​—⁠১ তীমথিয় ৬:২০.

▫ “আদরনীয়” সেই বিষয়গুলিকে ইঙ্গিত করে যা মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানীয়। যা শ্রদ্ধা দেখাতে উদ্বুদ্ধ করে এমন কিছু যা উচ্চমানের, মহান আর মাননীয়, অশ্লীল ও নিচু মানের নয়।

▫ “ন্যায্য” কথাটির অর্থ ঈশ্বরের মান অনুযায়ী চলা, মানুষের মান অনুযায়ী নয়। জাগতিকভাবে লোকেরা তাদের চিন্তাধারাকে অন্যায়ের দ্বারা পূর্ণ করে, কিন্তু আমরা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যেগুলি ন্যায্য সেগুলি চিন্তা করি ও সেগুলিকে সানন্দে গ্রহণ করি।​—⁠গীতসংহিতা ২৬:​৪, আমোষ ৮:​৪-৬.

▫ “বিশুদ্ধ” শব্দটির অর্থ শুধুমাত্র আচরণে (যৌন অথবা অন্যথা) নয়, কিন্তু চিন্তায় ও কাজেও শুদ্ধ ও পবিত্র হওয়া। “যে জ্ঞান উপর হইতে আইসে, তাহা প্রথমে শুচি” যাকোব বলে। যীশু, যিনি হলেন “বিশুদ্ধ,” তিনি আমাদের বিবেচনা করার জন্য সিদ্ধ উদাহরণ।​—⁠যাকোব ৩:১৭; ১ যোহন ৩:⁠৩.

▫ “প্রীতিজনক” বিষয় অন্যদের প্রেম করতে উদ্দীপ্ত ও অনুপ্রাণিত করে। যা ঘৃণা, তিক্ততা ও বিবাদ জাগায়, আমরা আমাদের চিন্তাধারা সেই বিষয়গুলির প্রতি স্থাপন না করে “যেন প্রেম ও সৎক্রিয়ার সম্বন্ধে পরস্পরকে উদ্দীপিত করিয়া” তুলি। ইব্রীয় ১০:২৪.

▫ “সুখ্যাতিযুক্ত” মানে “সুনামজনক” বা “ভাল পরিগণিত” শুধু নয় কিন্তু, কার্যকারীরূপে, গঠনমূলক ও প্রশংসাজনক হওয়া। আমরা আমাদের মনকে স্বাস্থ্যকর ও উৎসাহজনক জিনিসের উপর রাখব, হীনকর ও অসন্তোষজনক জিনিসের উপর নয়।​—⁠ইফিষীয় ৪:২৯.

▫ “সদ্‌গুণ” কথার প্রকৃত অর্থ হল “সততা” বা “নৈতিক উৎকর্ষতা” কিন্তু এর অর্থ যে কোন দিক দিয়ে উৎকর্ষতা হতে পারে। ফলতঃ, অপরের মূল্যবান গুণ, যোগ্যতা, আর যা কিছু তারা ঈশ্বরের মান অনুযায়ী করে, তার প্রশংসা আমাদের করা উচিত।

▫ “প্রশংসনীয়” (NW) বিষয়গুলি সত্যিই প্রশংসার যোগ্য হয়, যদি ঈশ্বর বা তাঁর দ্বারা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আসে।​—⁠১ করিন্থীয় ৪:৫; ১ পিতর ২:১৪.

জীবন ও শান্তির প্রতিজ্ঞা

১৭. “আত্মার ভাব” থেকে কী আশীর্বাদজনক ফল আসে?

১৭ যখন আমরা পৌলের উপদেশ মেনে চলি এবং “সেই সকল আলোচনা,” করি আমরা “আত্মার ভাব” বজায় রাখতে সফল হই। এর ফল কেবলমাত্র জীবনে আশীর্বাদ নয়, অর্থাৎ, প্রতিজ্ঞাত নতুন জগতে অনন্ত জীবন নয়, কিন্তু শান্তিও। (রোমীয় ৮:⁠৬) কেন? কারণ আমাদের চিন্তাধারা মাংসিক বিষয়গুলির মন্দ প্রভাব থেকে সুরক্ষিত থাকে এবং আমরা পৌলের দ্বারা বর্ণিত মাংস ও আত্মার মধ্যে তীব্র সংগ্রামের দ্বারা খুব বেশি প্রভাবিত হইনা। মাংসের প্রভাবকে প্রতিরোধ করার দ্বারা আমরা ঈশ্বরের শান্তিও লাভ করি “কেননা মাংসের ভাব ঈশ্বরের প্রতি শত্রুতা।”​—⁠রোমীয় ৭:​২১-২৪; ৮:⁠৭.

১৮. কী যুদ্ধে শয়তান রত এবং কিভাবে আমরা জয়ী হতে পারি?

১৮ শয়তান ও তার প্রতিনিধিরা সব কিছু করছে যাতে তারা আমাদের ঈশ্বরের গৌরবের প্রতিমূর্তিকে কলুষিত করতে পারে। তারা মাংসিক অভিলাষগুলির দ্বারা বিধ্বস্ত করে আমাদের চিন্তাধারা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে, কারণ তারা জানে যে এটি স্বভাবতই ঈশ্বরের সঙ্গে শত্রুতা ও মৃত্যুতে পরিচালিত করবে। কিন্তু আমরা এই যুদ্ধে জয়ী হতে পারি। পৌলের মত, আমরাও ঘোষণা করতে পারি: “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি,” অসিদ্ধ মাংসিক দেহের পাপের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সাহায্য করার জন্য।​—⁠রোমীয় ৭:২৫.

[পাদটীকাগুলো]

a সাধারণভাবে বাইবেলে, ইব্রীয় ক্রিয়াপদ চে·টাʺ এবং গ্রীক ক্রিয়াপদ হে·মার·টা’নো “পাপ” কথাটিকে নির্দেশ করে। দুটি শব্দেরই অর্থ “হারানো,” হারানো এই অর্থে কে কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য, সীমা বা উদ্দেশ্যে না পৌঁছানো।

b প্রথানুসারে, সাতটি মারাত্মক পাপ হল অহঙ্কার, লোভ, কাম, ঈর্ষা, পেটুকতা, রাগ এবং অলসতা।

আপনি কি ব্যাখ্যা করতে পারেন?

▫ পাপ কী এবং কিভাবে এটি অসিদ্ধ মাংসিক দেহের উপর প্রভাব ফেলতে পারে?

▫ “মাংসিক ভাবের” বিরুদ্ধে আমরা কিভাবে সংগ্রাম করতে পারি?

▫ কিভাবে আমরা “আত্মার ভাবকে” আরও বাড়িয়ে তুলতে পারি?

▫ কিভাবে “আত্মার ভাব” জীবন ও শান্তি আনতে পারে?

[Pictures on page 22]

কয়িন মাংসিক প্রবণতাগুলিকে তার উপর কর্তৃত্ব করতে দিয়েছিল যার ফলে সে ধ্বংস হয়

[Pictures on page 23]

আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার