অন্যেরা কি আপনার পরামর্শ শোনেন?
উপযুক্ত পরামর্শ সঠিকভাবে দেওয়া হলে সবসময় এর ফল ভাল হয়। এটা কি ঠিক? না এটা একেবারেই ঠিক নয়! এমনকি যোগ্য পরামর্শদাতার চমৎকার পরামর্শও প্রায়ই অগ্রাহ্য বা অমান্য করা হয়।—হিতোপদেশ ২৯:১৯.
এটা ঘটেছিল যখন যিহোবা কয়িনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, যিনি তার ভাই হেবলের প্রতি ঘৃণা গড়ে তুলেছিলেন। (আদিপুস্তক ৪:৩-৫) কয়িনের এই মনোভাবের কুফল জেনে, ঈশ্বর তাকে বলেছিলেন: “তুমি কেন ক্রোধ করিয়াছ? তোমার মুখ কেন বিষণ্ণ হইয়াছে? যদি সদাচরণ কর, তবে কি গ্রাহ্য হইবে না? আর যদি সদাচরণ না কর, তবে পাপ দ্বারে গুঁড়ি মারিয়া রহিয়াছে। তোমার প্রতি তাহার বাসনা থাকিবে, এবং তুমি তাহার উপরে কর্ত্তৃত্ব করিবে।”—আদিপুস্তক ৪:৬, ৭.
এইজন্য যিহোবা পাপকে একজন শিকারীর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন যে কয়িনকে ছোঁ মারার জন্য অপেক্ষা করেছিল কারণ তিনি তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ঈর্ষা পোষণ করেই চলেছিলেন। (যাকোব ১:১৪, ১৫ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) দুর্দশাজনক পথে যাওয়ার পরিবর্তে তার মনোভাব পরিবর্তন করে “সদাচরণ” করার জন্য কয়িনের তখনও সময় ছিল। দুঃখের বিষয় যে কয়িন উপদেশ মেনে নেননি। নির্মম পরিণতি সহ তিনি যিহোবার পরামর্শকে অগ্রাহ্য করেছিলেন।
কেউ কেউ যে কোন পরামর্শের প্রতি বিরক্ত হন ও তা অমান্য করেন। (হিতোপদেশ ১:২২-৩০) এটা কি হতে পারে যে পরামর্শদাতার দোষের জন্যই সেই পরামর্শ অমান্য করা হয়েছে? (ইয়োব ৩৮:২) পরামর্শ দেওয়ার সময় আপনি এমন কিছু কি করেন যাতে অন্যদের পক্ষে তা মেনে নেওয়া অসাধ্য হয়? এরকম হতে পারে কারণ আমরা সবাই অসিদ্ধ। কিন্তু আপনি বাইবেলের নীতিগুলো সযত্নে মেনে চলার মাধ্যমে এগুলো ঘটার সম্ভাবনাকে কমাতে পারেন। আসুন আমরা এগুলোর কয়েকটার উপর নজর দিই।
“মৃদুতার আত্মায় সুস্থ কর [পুনরায় ফিরিয়ে আনো]”
“ভ্রাতৃগণ, যদি কেহ কোন অপরাধে ধরাও পড়ে তবে আত্মিক [আধ্যাত্মিক বিষয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন] যে তোমরা, তোমরা সেই প্রকার ব্যক্তিকে মৃদুতার আত্মায় সুস্থ কর [পুনরায় ফিরিয়ে আনো], আপনাকে দেখ, পাছে তুমিও পরীক্ষাতে পড়।” (গালাতীয় ৬:১) তাই প্রেরিত পৌল তুলে ধরেন যে যারা “আধ্যাত্মিক বিষয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন” তাদের সেই খ্রীষ্টানকে আবার ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করা উচিত যিনি ‘অপরাধে ধরা পড়েছেন।’ কখনও কখনও দেখা যায় যে যাদের যোগ্যতা কম, তাদেরই পরামর্শ দেওয়ার প্রবণতা বেশি। তাই অন্যদের পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি তৎপর হবেন না। (হিতোপদেশ ১০:১৯; যাকোব ১:১৯; ৩:১) এটা মূলত মন্ডলীর প্রাচীনেরা করবেন যারা আধ্যাত্মিকভাবে যোগ্য। অবশ্য কোন পরিপক্ব খ্রীষ্টান যদি দেখেন যে একজন ভাইয়ের বিপদ হতে পারে তাহলে তার তাকে সতর্ক করে দেওয়া উচিত।
আপনি যদি উপদেশ কিংবা পরামর্শ দেন, সেই ক্ষেত্রে নিশ্চিত হোন যে আপনি যা বলেন তা যেন কোন মানুষের মতবাদ ও দর্শনের উপর নয় বরং ঈশ্বরীয় প্রজ্ঞার উপর ভিত্তি করে হয়। (কলসীয় ২:৮) একজন সতর্ক বাবুর্চির মতো হোন যিনি নিশ্চিত হয়ে নেন যে খাদ্যে যে সমস্ত উপকরণ দেওয়া হয়েছে তা স্বাস্থ্যসম্মত ও সম্পূর্ণ বিষক্রিয়া মুক্ত। নিশ্চিত হোন যে আপনার পরামর্শ নিছক কোন ব্যক্তিগত মতামতের উপর নয় বরং তা দৃঢ়ভাবে বাইবেলের বাক্যের উপর ভিত্তি করা। (২ তীমথিয় ৩:১৬, ১৭) এটা করে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে আপনার পরামর্শ কারও ক্ষতি করবে না।
পরামর্শের উদ্দেশ্য হল একজন বিপথগামীকে ‘পুনরায় ফিরিয়ে আনা’ কিন্তু তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে তাকে বদলানো নয়। ‘পুনরায় ফিরিয়ে আনা’ একটি গ্রীক শব্দের অনুবাদ। গ্রীক ভাষায় এই শব্দ কোন অঙ্গের ভেঙে যাওয়া হাড়কে আবার জোড়া লাগানোর কাজকে বোঝাতে ব্যবহৃত হতো যাতে সেখানে আর কোন ক্ষতি না হতে পারে। আভিধানিক ডব্লু. ই. ভাইন এর মতে, এই শব্দ থেকে এটাও বাঝা যায় যে “এই কাজ ধৈর্য ধরে ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে করা দরকার।” চিন্তা করুন যে শুধু শুধু দৈহিক ব্যথা যাতে আরও বেড়ে না যায় তারজন্য কতখানি কোমলতা ও দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে। ঠিক একইভাবে, একজন পরামর্শদাতার খুব সাবধানে পরামর্শ দেওয়া প্রয়োজন যাতে করে যাকে পরামর্শ দেওয়া হয় তিনি যেন মনোব্যথা না পান। যখন কেউ পরামর্শ চান তখনই তাকে তা দেওয়া বেশ কঠিন কাজ কিন্তু যখন পরামর্শ চাওয়াই হয়নি অথচ আপনাকে পরামর্শ দিতে হচ্ছে তখন আপনার আরও বেশি দক্ষ ও কৌশলী হওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
আপনি নিশ্চয়ই একজনকে ‘পুনরায় ফিরিয়ে আনতে’ পারবেন না যদি আপনি বন্ধুত্বপূর্ণ না হন। যদি আপনি কাউকে সাহায্য করতে চান তাহলে তারজন্য আপনাকে “করুণার চিত্ত, মধুর ভাব, নম্রতা, মৃদুতা, সহিষ্ণুতা” দেখাতে হবে। (কলসীয় ৩:১২) একজন ডাক্তার যদি অধৈর্য হন ও রোগীর সঙ্গে অযথা রূঢ় ব্যবহার করেন তবে রোগী হয়ত তার উপদেশ মানবেন না এবং চিকিৎসার দরকার হলেও আর কখনও ফিরে আসবেন না।
এটা বোঝায় না যে পরামর্শে দৃঢ়তার অভাব থাকবে। যীশু দৃঢ় ছিলেন যখন তিনি এশিয়ায় স্থিত সপ্ত মন্ডলীকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। (প্রকাশিত বাক্য ১:৪; ৩:১-২২) তিনি তাদের সরাসরি কিছু পরামর্শ দিয়েছিলেন যা তাদের শোনা ও কাজে লাগানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু দৃঢ়তার সঙ্গে পরামর্শ দেওয়ার সময় যীশু করুণা ও দয়ার মতো গুণগুলো দেখিয়েছিলেন আর তিনি সবসময় তাঁর স্বর্গীয় পিতার প্রেমপূর্ণ মনোভাবকে প্রতিফলিত করেছিলেন।—গীতসংহিতা ২৩:১-৬; যোহন ১০:৭-১৫.
অনুগ্রহযুক্ত বাক্যে পরামর্শ দিন
“তোমাদের বাক্য সর্ব্বদা অনুগ্রহ সহযুক্ত হউক, লবণে আস্বাদযুক্ত হউক, কাহাকে কেমন উত্তর দিতে হয়, তাহা যেন তোমরা জানিতে পার।” (কলসীয় ৪:৬) লবণ খাদ্যের স্বাদ বাড়াতে ও মুখোরচক করে তুলতে পারে। আপনার পরামর্শ রুচিপূর্ণ করতে চাইলে তা অবশ্যই “অনুগ্রহ সহযুক্ত . . . লবণে আস্বাদযুক্ত” করে দিতে হবে। কিন্তু, এমনকি সবচেয়ে ভাল উপকরণ দিয়েও খাবার বিশ্রীভাবে তৈরি করা যেতে পারে অথবা অরুচিকর করে প্লেটে সাজানো যেতে পারে। এতে কারও রুচিই বাড়ে না। সত্যি কথা বলতে কী তখন একগ্রাস খাবার গেলাও হয়তো কষ্টকর হতে পারে।
পরামর্শ দেওয়ার সময় সঠিক কথা বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ। জ্ঞানী ব্যক্তি শলোমন বলেছিলেন: “উপযুক্ত সময়ে কথিত বাক্য রৌপ্যের ডালিতে সুবর্ণ নাগরঙ্গ ফলের তুল্য।” (হিতোপদেশ ২৫:১১) তার মনে হয়তো সুনিপুণ কারুকার্য খচিত একটা রুপোর পাত্রে নিখুঁতভাবে তৈরি করা সোনার আপেলের কথাটা ছিল। তা দেখতে যেমন সুন্দর লাগে, সেইসঙ্গে এইরকম একটা উপহার পেলে আপনি কতখানি আনন্দই না পাবেন! একইভাবে, আপনি যাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছেন সেই ব্যক্তির কাছে ভেবে চিন্তে বলা কথা ও অনুগ্রহযুক্ত বাক্য খুবই মনোপুত হতে পারে।—উপদেশক ১২:৯, ১০.
বিপরীতে, “কটুবাক্য কোপ উত্তেজিত করে।” (হিতোপদেশ ১৫:১) অপ্রীতিকর কথায় কৃতজ্ঞ হওয়ার বদলে ব্যক্তি সহজেই কষ্ট পেতে পারেন ও রেগেও যেতে করেন। প্রকৃতপক্ষে, কেবল অপ্রীতিকর কথাই নয় বরং সেইসঙ্গে অনুপযুক্ত কণ্ঠস্বরে তা বলার কারণেও হয়তো একজন ব্যক্তি আমাদের পরামর্শ অমান্য করতে পারেন তা সে আমাদের পরামর্শ যত ভালই হোক না কেন। না ভেবেচিন্তে, অবিবেচনাপূর্ণ পরামর্শ দেওয়া একজনকে অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করার মতো ক্ষতিকারক হতে পারে। হিতোপদেশ ১২:১৮ পদ বলে “কেহ কেহ অবিবেচনার কথা বলে, খড়্গাঘাতের মত।” আমরা কেন অবিবেচনার কথা বলব যাতে করে আমাদের পরামর্শ শোনা একজনের জন্য একেবারে অসাধ্য হয়ে ওঠে?—হিতোপদেশ ১২:১৫.
শলোমন যেভাবে বলেছিলেন, পরামর্শের কথা ‘উপযুক্ত সময়ে কথিত বাক্যের’ মতো হওয়া উচিত। পরামর্শ সার্থক করে তুলতে হলে সময়ের বিষয়টা ভাবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ! এটা স্পষ্ট যে একজন ব্যক্তির যদি রুচিই না থাকে তাহলে তার খাবারের ইচ্ছাও থাকবে না। সম্ভবত তিনি এইমাত্র পেট ভরে খেয়েছেন অথবা তিনি হয়তো অসুস্থ থাকতে পারেন। যিনি খেতে চান না এমন কাউকে জোর করে খাওয়ালে তা বুদ্ধির কাজ হবে না বা এটা ঠিকও নয়।
নম্রভাবে পরামর্শ
“তবে তোমরা আমার আনন্দ পূর্ণ কর . . . প্রতিযোগিতার কিম্বা অনর্থক দর্পের বশে কিছুই করিও না, বরং নম্রভাবে প্রত্যেক জন আপনা হইতে অন্যকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞান কর; এবং প্রত্যেক জন আপনার বিষয়ে [ব্যক্তিগত আগ্রহ] নয়, কিন্তু পরের [ব্যক্তিগত আগ্রহের] বিষয়েও লক্ষ্য রাখ।” (ফিলিপীয় ২:২-৪) আপনি যদি একজন ভালো পরামর্শদাতা হন তাহলে আপনি অপরের মঙ্গলের জন্য ‘ব্যক্তিগত আগ্রহ রাখতে’ উদ্বুদ্ধ হবেন। এছাড়াও আপনি আধ্যাত্মিক ভাই ও বোনদের সঙ্গে ওঠা-বসা এবং অন্যকে আপনার চেয়ে শ্রেষ্ঠ জ্ঞান করার সময় ‘নম্রভাব’ দেখাবেন। এটার অর্থ কী?
নম্রতার মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ মনোভাব গড়ে তোলা ও সেরকমভাবে কথা বলা থেকে আপনি নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন। আমাদের খ্রীষ্টান ভাইদের চেয়ে নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করার কোন কারণ আমাদের নেই। আমরা প্রত্যেকেই সময় সময় ভুল করে থাকি। আপনি যেহেতু অন্তর্যামী নন তাই এটা আরও জরুরি হয়ে ওঠে যে আপনি যাকে পরামর্শ দেন তার মনোভাব আপনি বিচার করবেন না। হয়তো তার কোন খারাপ মনোভাব নেই এবং তিনি হয়ত কোন্টা ভুল আচরণ বা কাজ সেই সম্বন্ধে জানেন না। কিন্তু যদি তিনি কিছুটা বুঝতে পারেন যে তিনি ঈশ্বরের চাওয়ার সঙ্গে মিল রেখে চলছেন না, নিঃসন্দেহে তিনি সেই পরামর্শ সহজেই মেনে নিতে চাইবেন যদি তা তার আধ্যাত্মিক কল্যাণের জন্য আসল উদ্দেশ্য নিয়ে নম্রভাবে দেওয়া হয়।
ধরুন, আপনাকে একটা ভোজে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে আর আপনার নিমন্ত্রণকর্তা যদি আপনার সঙ্গে অনাদর ও তাচ্ছিল্যপূর্বক ব্যবহার করেন তখন আপনার কেমন লাগবে! সেখানে খাওয়াদাওয়া করতে আপনার নিশ্চয়ই ভাল লাগবে না। এটা সত্যি যে “প্রণয়ভাবের সহিত শাক ভক্ষণ ভাল, তবু দ্বেষভাবের সহিত পুষ্ট গোরু ভাল নয়।” (হিতোপদেশ ১৫:১৭) একইভাবে, পরামর্শদাতা যাকে পরামর্শ দেন তার প্রতি যদি বিরূপ মনোভাব দেখান অথবা তাকে নিচু করেন ও মুশকিলে ফেলেন তাহলে সর্বোত্তম পরামর্শও মেনে নেওয়া কঠিন হতে পারে। কিন্তু, প্রেম, পরস্পরের প্রতি সম্মান ও আস্থাই পরামর্শ দেওয়া ও নেওয়াকে সহজ করে তোলে।—কলসীয় ৩:১৪.
যে পরামর্শ মেনে নেওয়া হয়েছিল
ভাববাদী নাথন রাজা দায়ূদকে পরামর্শ দেওয়ার সময় নম্রভাব দেখিয়েছিলেন। নাথন যা বলেছিলেন ও করেছিলেন তার মাধ্যমে দায়ূদের প্রতি তার প্রেম ও সম্মান দেখা গিয়েছিল। প্রথমেই নাথন একটা দৃষ্টান্ত দিয়েছিলেন যার ফলে দায়ুদের পক্ষে পরামর্শ শোনা কঠিন হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কমে গিয়েছিল। (২ শমূয়েল ১২:১-৪) দায়ূদ ন্যায় ও ধার্মিকতাপ্রেমী ব্যক্তি ছিলেন আর ভাববাদী তার দৃষ্টান্তের দ্বারা দায়ূদের এই গুণগুলোকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, যদিও বৎশেবার সঙ্গে জড়িত ঘটনায় তার এই গুণ দেখা যায়নি। (২ শমূয়েল ১১:২-২৭) যখন সেই দৃষ্টান্তের মর্ম তুলে ধরা হয়েছিল তখন দায়ূদের আন্তরিক প্রতিক্রিয়া ছিল: “আমি সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছি।” (২ শমূয়েল ১২:৭-১৩) যিনি যিহোবার কথা শোনেননি সেই কয়িনের মতো না হয়ে, দায়ূদ নম্রভাবে ভুল শুধরেছিলেন।
নিঃসন্দেহে যিহোবা নাথনকে জানিয়েছিলেন যে দায়ূদ অসিদ্ধ এবং তিনি হয়তো নাও সাড়া দিতে পারেন। নাথন খুব কৌশলের সঙ্গে কাজ করেছিলেন এবং স্পষ্টতই যিহোবার নিযুক্ত রাজারূপে দায়ূদের অবস্থানের কারণে তাকে শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচনা করেছিলেন। আপনি যদি কোন অধিকারসম্পন্ন অবস্থানে থাকেন তবে আপনি উপযুক্ত পরামর্শ দিতে পারেন কিন্তু আপনি যদি তা নম্রভাবে না দেন তখন মেনে নেওয়া কঠিন হতে পারে।
নাথন দায়ূদকে মৃদুতার আত্মায় ফিরিয়ে এনেছিলেন। ভাববাদী অনুগ্রহ ও সতর্কতার সঙ্গে কথাগুলো বলেছিলেন যাতে করে দায়ূদ সম্পূর্ণভাবে নিজে থেকে আগ্রহ নিয়ে সাড়া দিতে পারেন। নাথন ব্যক্তিগত আগ্রহের দ্বারা পরিচালিত হননি বা তিনি নৈতিক বা আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে দায়ূদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ তা দেখাবারও চেষ্টা করেননি। উপযুক্তভাবে সঠিক কথা বলার জন্য এটা কী এক উত্তম উদাহরণ! আপনি যদি একই মনোভাব দেখান তাহলে খুব সম্ভবত অন্যেরা আরও বেশি করে আপনার পরামর্শ শুনবেন।
[২২ পৃষ্ঠার চিত্র]
পুষ্টিকর খাদ্যের মতো আপনার পরামর্শ স্বাস্থ্যকর হওয়া উচিত
[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]
আপনি কি আপনার পরামর্শ কারুকার্য খচিত রুপোর পাত্রে সোনার আপেলের মতো আকর্ষণীয় করে তোলেন?
[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
ভাববাদী নাথন নম্রতার সঙ্গে দায়ূদের ন্যায় ও ধার্মিকতার প্রতি প্রেমের মতো গুণগুলোকে জাগিয়েছিলেন