ভবিষ্যৎ আপনি জানতে পারেন!
সাধারণত লোকেরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই ভাবনা চিন্তা করে থাকে। তারা ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করে, টাকাপয়সার ব্যাপারে খুবই বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নেয় আর মনে করে যে তারা নিরাপদ। কিন্তু কাল কী হবে তা কি সত্যিই কেউ বলতে পারে?
ভবিষ্যৎকে জানার জন্য লোকেরা কিই-না করেনি। একদিকে সমাজবিজ্ঞানীরা যাদেরকে ভবিষ্যৎ কথন বিজ্ঞানী বলা হয়, আজকের চলতি ঘটনাগুলো নিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার ওপর ভিত্তি করেই বলতে চেষ্টা করেন যে সামনে কী ঘটতে চলেছে আর অন্যদিকে অর্থনীতিবিদরাও ভবিষ্যতে কী রয়েছে তা জানার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যান। জ্যোতিষী এবং গণৎকাররা কোষ্ঠী ও ক্রিস্টাল বল দেখেন আর তন্ত্রমন্ত্রের সাহায্যে ভবিষ্যৎ বলেন আর তাই অনেক লোকেরা তাদের পিছনে ছোটে। যেমন ফরাসী জ্যোতিষী নসট্রাদামাসের কথাই ধরুন। তিনি মারা গেছেন প্রায় কয়েকশ বছর হয়ে গেছে কিন্তু তবু আজও তিনি ততখানিই জনপ্রিয় যতখানি কিনা তিনি আগে ছিলেন।
কিন্তু এই সমস্ত ভবিষ্যদ্বক্তাদের সকলেই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে আর তারা মানুষকে হতাশ করেছে। কেন? কারণ তারা যিহোবা ঈশ্বর ও তাঁর বাক্য, বাইবেলকে অগ্রাহ্য করেছে। এই কারণে তারা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারে না যা লোকেদের মনে আসে, যেমন: ‘আমি কেন বিশ্বাস করতে পারি যে বাইবেলে যা বলা হয়েছে সেগুলো সত্যিই ঘটতে চলেছে? সেগুলো ঘটলে মানুষের জন্য ঈশ্বরের যে উদ্দেশ্য আছে তা কীভাবে পূর্ণ হবে? এগুলো ঘটলে আমি ও আমার পরিবার কীভাবে উপকার পেতে পারি?’ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর শুধু বাইবেলই দেয়।
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া ছাড়াও বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী আরও অন্যান্য দিক দিয়েও শ্রেষ্ঠ। সেগুলো জ্যোতিষীদের ভবিষ্যদ্বাণীর মতো নয় বরং বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী যা বলে তাতে একজন মানুষ তার ভবিষ্যৎ নিজে বেছে নিতে পারেন। তাই, কারোরই জীবন ভাগ্যের হাতে বাঁধা পড়ে না। (দ্বিতীয় বিবরণ ৩০:১৯) শুধু তাই নয়, নসট্রাদামাসের মতো ভবিষ্যদ্বক্তাদের লেখা বইগুলো কাউকে জীবনে ঠিক পথে চলতে শেখাতে পারে না আর এই অভাবকে দূর করার জন্য এগুলো রহস্য এবং কৌতূহলজনক বিষয়ে ভরা। কিন্তু, বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীতে ঠিক-ঠিক বলা হয়েছে যে ভবিষ্যতে কী ঘটতে চলেছে। বাইবেল শুধু বলে না যে ভবিষ্যতে ঈশ্বর কী করবেন কিন্তু ঈশ্বর কেন তা করবেন এটা তাও বলে। (২ বংশাবলি ৩৬:১৫) আর যিহোবার ভবিষ্যদ্বাণী কখনও বিফল হয় না কারণ ‘ঈশ্বর মিথ্যাকথনে অসমর্থ।’ (তীত ১:২) এইজন্য, যে লোকেরা ঈশ্বরের বাক্য বাইবেলের কথা মেনে চলেন তারা সবসময় ঠিক পথে চলেন, তাদের জীবনে উদ্দেশ্য আছে বলে তারা সুখী। তারা তাদের মূল্যবান সময় ও শক্তিকে অযথা নষ্ট করেন না।—গীতসংহিতা ২৫:১২, ১৩.
এই বিষয়গুলোই ১৯৯৯/২০০০ সালে সারা পৃথিবীতে যিহোবার সাক্ষিদের “ঈশ্বরের ভবিষ্যদ্বাণীর বাক্য” জেলা সম্মেলনগুলোতে আলোচনা করা হয়েছে। এই সম্মেলনে বিভিন্ন বক্তৃতা, সাক্ষাৎকার, নমুনা ও বাইবেল ভিত্তিক একটা নাটক দেখানো হয়েছিল। পুরো কার্যক্রমে সম্মেলনে আসা লোকেদের দেখানো হয়েছে যে যারা ঈশ্বরের ভবিষ্যদ্বাণীর বাক্য অধ্যয়ন করেন ও জীবনে তা কাজে লাগান তারা আধ্যাত্মিকভাবে কত আশীর্বাদ ভোগ করেন। পরের প্রবন্ধে সম্মেলনের কিছু বিশেষ বিষয় আমরা আবার আমাদের স্মৃতিতে নিয়ে আসব।