তিনি দয়া ভালবাসতেন
মিলটন জি. হেনশেল, যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালক গোষ্ঠীর একজন দীর্ঘসময়ের সদস্য, ২০০৩ সালের ২২শে মার্চ, শনিবার তার পার্থিব জীবন শেষ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
মিলটন হেনশেল যুবকাবস্থায় যিহোবার সাক্ষিদের প্রধান কার্যালয়ে একজন কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন এবং ৬০ বছরেরও বেশি সময় বিশ্বস্তভাবে সেবা করেছিলেন। শীঘ্রই তিনি তার সূক্ষ্ম বিচারশক্তি এবং রাজ্য প্রচার কাজের প্রতি আন্তরিক আগ্রহের জন্য পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৩৯ সালে এন. এইচ. নরের সচিব হয়েছিলেন, যিনি সেই সময়ে যিহোবার সাক্ষিদের ব্রুকলিন ছাপাখানার অধ্যক্ষ ছিলেন। যখন ভাই নর ১৯৪২ সালে পৃথিবীব্যাপী সাক্ষিদের মধ্যে নেতৃত্ব নিতে শুরু করেছিলেন, তখন তিনি ভাই হেনশেলকে তার সহকারী করেছিলেন। ভাই হেনশেল ১৯৫৬ সালে লুসিল বেনেটকে বিয়ে করেছিলেন এবং তারা দুজনে একসঙ্গে জীবনের আনন্দ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো ভাগ করে নিয়েছিল।
ভাই নরের ১৯৭৭ সালে মৃত্যুর সময় পর্যন্ত ভাই হেনশেল তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন। প্রায়ই ভাই নরের সঙ্গে থেকে ভাই হেনশেল ১৫০টারও বেশি দেশে ভ্রমণ করেছিলেন, পৃথিবীব্যাপী যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন ও উৎসাহ দিয়েছিলেন, বিশেষ করে মিশনারিদের এবং যারা শাখা দপ্তরগুলোতে রয়েছে। এই যাত্রাগুলো কখনও কখনও খুব ক্লান্তিকর ও এমনকি বিপদজনকও ছিল। ১৯৬৩ সালে লাইবেরিয়াতে একটা সম্মেলন পরিদর্শন করার সময় ভাই হেনশেল একটা দেশাত্মবোধক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে অস্বীকার করায় প্রচণ্ড তাড়নার শিকার হয়েছিলেন।a ভয় পেয়ে পিছিয়ে না গিয়ে ভাই হেনশেল লাইবেরিয়ার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে ও সেই দেশের যিহোবার সাক্ষিদের জন্য উপাসনার ক্ষেত্রে আরও বেশি স্বাধীনতা লাভ করার জন্য অনুমতি চাইতে অল্প কয়েক মাস পরেই আবার লাইবেরিয়াতে ফিরে গিয়েছিলেন।
কঠিন সমস্যা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো মোকাবিলা করার ব্যাপারে ভাই হেনশেলের ব্যবহারিক, নমনীয় ও যুক্তিবাদী হিসেবে সুনাম ছিল। তার সহকর্মীরা বিশেষ করে তার সুশৃঙ্খলা, তার বিনয় ও তার কৌতুকরসবোধকে মূল্য দিত। উল্লেখযোগ্য স্মরণশক্তি থাকায় তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার মিশনারিদের নাম সঙ্গে সঙ্গে বলে দিয়ে, স্থানীয় ভাষায় দুএক কথা বলে এবং মজার মজার কথা—যা তিনি তার চোখ মেরে বলতেন—তাদের আনন্দিত করেছিলেন।
মীখা ৬:৮ (NW) পদ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, যিহোবা ঈশ্বর চান আমরা যেন ‘দয়া ভালবাসি’। মিলটন হেনশেল সেই বিষয়ে একটা উদাহরণ রাখার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার গুরুতর দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও, তিনি বন্ধুত্বপূর্ণ, শান্ত ও দয়ালু ছিলেন। তিনি এই কথা বলতে ভালবাসতেন, “যখন অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকবেন, তখন মনে রাখবেন যে দয়ার কাজই হল সঠিক কাজ।” এই প্রিয় ভাইয়ের মৃত্যুতে শোক করার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আনন্দিত যে তিনি শেষ পর্যন্ত বিশ্বস্তভাবে স্থির ছিলেন, “জীবন-মুকুট” পুরস্কার পাওয়ার আশায় নিশ্চিত ছিলেন।—প্রকাশিত বাক্য ২:১০.
[পাদটীকা]
a যিহোবার সাক্ষিদের বর্ষপুস্তক ১৯৭৭ (ইংরেজি) এর ১৭১-৭ পৃষ্ঠা দেখুন।
[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]
এন. এইচ. নরের সঙ্গে এম. জি. হেনশেল
[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]
তার স্ত্রী লুসিলের সঙ্গে