ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৬ ৫/১৫ পৃষ্ঠা ২১-২৫
  • আপনি কি রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রস্তুত?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আপনি কি রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রস্তুত?
  • ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • নোহের দিনের সঙ্গে আধুনিক দিনের সাদৃশ্য
  • রক্ষা পাওয়ার জন্য বিশ্বাসের প্রয়োজন
  • অগ্রগতিশীল রদবদলগুলো আমাদের প্রস্তুত করে
  • রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন
  • অপনি কি আপনার বিশ্বাস দ্বারা জগতকে দোষী সাব্যস্ত করেন?
    ১৯৯১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • তিনি “ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিতেন”
    তাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
  • তিনি ‘আর সাত জনের সহিত রক্ষা’ পেয়েছিলেন
    ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • নোহের বিশ্বাস জগৎকে দোষী করে
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৬ ৫/১৫ পৃষ্ঠা ২১-২৫

আপনি কি রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রস্তুত?

“তুমি সপরিবারে জাহাজে প্রবেশ কর, কেননা এই কালের লোকদের মধ্যে আমার সাক্ষাতে তোমাকেই ধার্ম্মিক দেখিয়াছি।”—আদিপুস্তক ৭:১.

১. নোহের দিনে রক্ষা পাওয়ার জন্য যিহোবা কোন ব্যবস্থা করেছিলেন?

নোহের দিনে যিহোবা ‘ভক্তিহীনদের জগতে জলপ্লাবন আনিয়াছিলেন’ কিন্তু সেইসঙ্গে তিনি রক্ষা পাওয়ার ব্যবস্থাও করেছিলেন। (২ পিতর ২:৫) সত্য ঈশ্বর নোহকে এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন যে, পৃথিবীব্যাপী জলপ্লাবন থেকে জীবন রক্ষার জন্য কীভাবে একটা জাহাজ তৈরি করতে হবে। (আদিপুস্তক ৬:১৪-১৬) যিহোবার একজন বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন দাস যা করবে বলে আমরা আশা করতে পারি, সেই অনুযায়ী “নোহ . . . ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারেই সকল কর্ম্ম করিলেন।” বাস্তবিকপক্ষেই, তিনি “সেইরূপ করিলেন।” আজকে আমরা যে বেঁচে আছি, তার আংশিক কারণ হল নোহের বাধ্যতা।—আদিপুস্তক ৬:২২.

২, ৩. (ক) নোহের দিনের লোকেরা নোহের কার্যকলাপের প্রতি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল? (খ) কোন আস্থা নিয়ে নোহ জাহাজে প্রবেশ করেছিলেন?

২ সেই জাহাজটা তৈরি করা কোনো সহজ কাজ ছিল না। খুব সম্ভবত, নোহ এবং তার পরিবার যা করছিল, তা দেখে অনেক লোক বিস্মিত হয়েছিল। কিন্তু, জাহাজের মধ্যে প্রবেশ করার ওপরই যে তাদের পরিত্রাণ নির্ভর করছিল, সেই বিষয়ে তাদেরকে দৃঢ়প্রত্যয়ী করার জন্য এটা যথেষ্ট ছিল না। অবশেষে, সেই দুষ্ট জগতের প্রতি ঈশ্বরের দীর্ঘসহিষ্ণুতা বা ধৈর্য চরমে পৌঁছেছিল।—আদিপুস্তক ৬:৩; ১ পিতর ৩:২০.

৩ নোহ এবং তার পরিবার কয়েক দশক ধরে কঠোর পরিশ্রম করার পর, যিহোবা নোহকে বলেছিলেন: “তুমি সপরিবারে জাহাজে প্রবেশ কর, কেননা এই কালের লোকদের মধ্যে আমার সাক্ষাতে তোমাকেই ধার্ম্মিক দেখিয়াছি।” যিহোবার বাক্যের ওপর বিশ্বাস এবং আস্থা রেখে, “নোহ ও তাঁহার পুত্ত্রগণ এবং তাঁহার স্ত্রী ও পুত্ত্রবধূগণ জাহাজে প্রবেশ করিলেন।” যিহোবা তাঁর উপাসকদের সুরক্ষা করার জন্য দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পৃথিবীর ওপর যখন জলপ্লাবন এসেছিল, তখন সেই জাহাজ রক্ষা পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল।—আদিপুস্তক ৭:১, ৭, ১০, ১৬.

নোহের দিনের সঙ্গে আধুনিক দিনের সাদৃশ্য

৪, ৫. (ক) যিশু তাঁর উপস্থিতির সময়কে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন? (খ) নোহের দিন এবং আমাদের দিনের মধ্যে কোন কোন সাদৃশ্য রয়েছে?

৪ “নোহের সময়ে যেরূপ হইয়াছিল, মনুষ্যপুত্ত্রের আগমনও তদ্রূপ হইবে।” (মথি ২৪:৩৭) এই কথাগুলোর মাধ্যমে যিশু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তাঁর অদৃশ্য আগমন বা উপস্থিতির সময়টা নোহের দিনের মতোই হবে আর ঠিক তা-ই হয়েছিল। মূলত, ১৯১৯ সাল থেকে সমস্ত জাতির লোকের কাছে নোহের দেওয়া সতর্কবাণীর অনুরূপ এক সতর্কবাণী ঘোষণা করা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, তারা নোহের দিনের লোকেদের মতো একই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

৫ জলপ্লাবনের মাধ্যমে যিহোবা “দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ” এক জগতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। (আদিপুস্তক ৬:১৩) নোহ এবং তার পরিবার যে এই ধরনের দৌরাত্ম্যে যোগ না দিয়ে বরং শান্তিপূর্ণভাবে জাহাজ তৈরির কাজ করে গিয়েছিল, তা যারা তাদের দেখেছিল, তাদের সকলের কাছে স্পষ্ট ছিল। এই ক্ষেত্রেও, আমরা আমাদের দিনের সঙ্গে একটা সাদৃশ্য দেখতে পাই। আন্তরিক লোকেরা এখন ‘ধার্ম্মিক ও দুষ্টের মধ্যে, যে ঈশ্বরের সেবা করে, ও যে তাঁহার সেবা না করে, উভয়ের মধ্যে প্রভেদ দেখিতে’ পারে। (মালাখি ৩:১৮) যিহোবার সাক্ষিরা যে-সততা, দয়া, শান্তি এবং অধ্যবসায় প্রদর্শন করে, তা দেখে পক্ষপাতশূন্য ব্যক্তিরা প্রশংসা করে আর এই গুণগুলো ঈশ্বরের লোকেদেরকে সমস্ত জগৎ থেকে পৃথক করে। সাক্ষিরা সমস্ত ধরনের দৌরাত্ম্য প্রত্যাখ্যান করে এবং নিজেদেরকে যিহোবার আত্মার দ্বারা পরিচালিত হতে দেয়। এই কারণেই তাদের মধ্যে শান্তি রয়েছে এবং তারা এক ধার্মিক পথ অনুধাবন করে।—যিশাইয় ৬০:১৭.

৬, ৭. (ক) নোহের দিনের লোকেরা কোন বিষয়টা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিল এবং কীভাবে আজকেও লোকেরা একইরকম? (খ) কোন উদাহরণগুলো দেখায় যে, যিহোবার সাক্ষিদের সাধারণত আলাদা বলে স্বীকার করা হয়?

৬ নোহের দিনের লোকেরা এই বিষয়টা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিল যে, নোহের প্রতি ঈশ্বরের সমর্থন রয়েছে এবং তিনি ঈশ্বরের নির্দেশনা অনুযায়ীই কাজ করছিলেন। তাই, তারা তার প্রচারকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি এবং তার সতর্কবাণী অনুযায়ী কাজ করেনি। আজকের দিন সম্বন্ধে কী বলা যায়? যদিও যিহোবার সাক্ষিদের কাজ এবং আচরণ অনেকের ওপর ছাপ ফেলে কিন্তু অধিকাংশ লোকই সুসমাচার এবং বাইবেলের সতর্কবাণীকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয় না। প্রতিবেশী, নিয়োগকর্তা অথবা আত্মীয়স্বজন হয়তো সত্য খ্রিস্টানদের উত্তম গুণাবলি সম্বন্ধে প্রশংসা করে কিন্তু এরপর তারা দুঃখ করে বলে, “তারা যদি কেবল যিহোবার সাক্ষি না হতো!” এই ব্যক্তিরা যে-বিষয়টা উপেক্ষা করে সেটা হল যে, সাক্ষিরা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয় বলেই প্রেম, শান্তি, মাধুর্য বা দয়া, মঙ্গলভাব, মৃদুতা এবং ইন্দ্রিয়দমনের মতো গুণগুলো দেখিয়ে থাকে। (গালাতীয় ৫:২২-২৫) এর দ্বারা তাদের বার্তা আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠা উচিত।

৭ উদাহরণস্বরূপ, রাশিয়ায় যিহোবার সাক্ষিরা একটা কিংডম হল তৈরি করছিল। এক ব্যক্তি একজন কর্মীর সঙ্গে কথা বলার জন্য থামেন এবং বলেন: “কী অস্বাভাবিক এক নির্মাণস্থল—কোনো ধূমপান নেই, কোনো আজেবাজে কথাবার্তা নেই এবং প্রত্যেকে সংযমী! আপনারা যিহোবার সাক্ষি নন তো?” সেই কর্মী জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আমি যদি বলি না, তা হলে কি আপনি তা বিশ্বাস করবেন?” তখন ওই ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিয়েছিলেন, “সত্যি বলতে কী, না।” রাশিয়ার আরেকটা শহরে, একজন মেয়র যখন যিহোবার সাক্ষিদেরকে তাদের নতুন কিংডম হল তৈরি করতে দেখেছিলেন, তখন তা তার ওপর বিরাট ছাপ ফেলেছিল। তিনি বলেছিলেন যে, যদিও আগে তিনি সমস্ত ধর্মীয় দলকে একইরকম বলে মনে করতেন কিন্তু যিহোবার সাক্ষিদের অকপট নিঃস্বার্থপরতাকে কাজের মাধ্যমে প্রকাশ পেতে দেখে তিনি এখন আর তা মনে করেন না। এগুলো হল মাত্র দুটো উদাহরণ, যা দেখায় যে যিহোবার লোকেরা সেইসমস্ত ব্যক্তিদের থেকে আলাদা, যারা বাইবেলের মানগুলো মেনে চলে না।

৮. এই দুষ্ট জগতের ধ্বংস থেকে আমাদের রক্ষা পাওয়া কীসের ওপর নির্ভর করে?

৮ জলপ্লাবনের দ্বারা ধ্বংস হয়ে যাওয়া “পুরাতন জগতের” শেষ সময়ে, নোহ “ধার্ম্মিকতার” বিশ্বস্ত “প্রচারক” ছিলেন। (২ পিতর ২:৫) বর্তমান বিধিব্যবস্থার এই শেষকালে, যিহোবার লোকেরা ঈশ্বরের ধার্মিক মানগুলো সম্বন্ধে জানাচ্ছে এবং নতুন জগতে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা সম্বন্ধে সুসমাচার ঘোষণা করছে। (২ পিতর ৩:৯-১৩) নোহ এবং তার ঈশ্বরভয়শীল পরিবার যেমন জাহাজে রক্ষা পেয়েছিল, তেমনই আজকে প্রত্যেকের রক্ষা পাওয়া তাদের বিশ্বাস এবং যিহোবার সর্বজনীন সংগঠনের পার্থিব অংশের সঙ্গে অনুগতভাবে মেলামেশা করার ওপর নির্ভর করে।

রক্ষা পাওয়ার জন্য বিশ্বাসের প্রয়োজন

৯, ১০. শয়তানের বিধিব্যবস্থার ধ্বংস থেকে আমরা যদি রক্ষা পেতে চাই, তা হলে কেন বিশ্বাস অপরিহার্য?

৯ শয়তানের ক্ষমতার অধীনে শুয়ে থাকা এই জগতের আসন্ন ধ্বংস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একজন ব্যক্তিকে কী করতে হবে? (১ যোহন ৫:১৯) প্রথমে তাকে সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে বুঝতে হবে। এরপর তাকে সেই সুরক্ষা থেকে উপকার লাভ করতে হবে। নোহের দিনের লোকেরা স্বাভাবিকভাবে তাদের রোজকার জীবনযাপন চালিয়ে গিয়েছিল এবং আসন্ন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তাই তারা উপলব্ধি করেনি। তাদের মধ্যে আরও একটা বিষয়ের অভাব ছিল আর সেটা হল, ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস।

১০ অন্যদিকে, নোহ এবং তার পরিবার নিজেদের সুরক্ষা ও উদ্ধারের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে বুঝতে পেরেছিল। এ ছাড়া, তারা নিখিলবিশ্বের সার্বভৌম যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস দেখিয়েছিল। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন, “বিনা বিশ্বাসে [ঈশ্বরের] প্রীতির পাত্র হওয়া কাহারও সাধ্য নয়; কারণ যে ব্যক্তি ঈশ্বরের নিকটে উপস্থিত হয়, তাহার ইহা বিশ্বাস করা আবশ্যক যে ঈশ্বর আছেন, এবং যাহারা তাঁহার অন্বেষণ করে, তিনি তাহাদের পুরস্কারদাতা।” পৌল আরও বলেছিলেন: “বিশ্বাসে নোহ, যাহা যাহা তখন দেখা যাইতেছিল না, এমন বিষয়ে আদেশ পাইয়া ভক্তিযুক্ত ভয়ে আবিষ্ট হইয়া আপন পরিবারের ত্রাণার্থে এক জাহাজ নির্ম্মাণ করিলেন, এবং তদ্দ্বারা জগৎকে দোষী করিলেন ও আপনি বিশ্বাসানুরূপ ধার্ম্মিকতার অধিকারী হইলেন।”—ইব্রীয় ১১:৬, ৭.

১১. অতীতে যিহোবা যেভাবে সুরক্ষা জুগিয়েছিলেন, তা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

১১ বর্তমান দুষ্ট বিধিব্যবস্থার ধ্বংস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের শুধু এই কথা বিশ্বাস করার চেয়ে আরও বেশি কিছু করতে হবে যে, এটা ধ্বংস হবে। আমাদের বিশ্বাস দেখিয়ে চলতে হবে এবং রক্ষা পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের ব্যবস্থাগুলো থেকে পূর্ণ উপকার লাভ করতে হবে। অবশ্যই, ঈশ্বরের পুত্র যিশু খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যের প্রতি আমাদের বিশ্বাস দেখাতে হবে। (যোহন ৩:১৬, ৩৬) কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত যে, যারা আসলেই নোহের জাহাজের মধ্যে ছিল, কেবল তারাই জলপ্লাবন থেকে রক্ষা পেয়েছিল। একইভাবে, প্রাচীন ইস্রায়েলে আশ্রয় নগরগুলো একমাত্র তখনই অনিচ্ছাকৃত নরঘাতকের জন্য সুরক্ষা জোগাতো, যদি তিনি প্রথমে এইরকম একটা নগরে পালিয়ে যেতেন এবং এরপর মহাযাজকের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকতেন। (গণনাপুস্তক ৩৫:১১-৩২) মোশির দিনে মিশরের ওপর আসা দশম আঘাতের সময় মিশরীয়দের প্রথমজাত সন্তানকে হত্যা করা হয়েছিল কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের সন্তানরা রক্ষা পেয়েছিল। কেন? যিহোবা মোশিকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন: “তাহারা [ইস্রায়েলীয়রা] তাহার [নিস্তারপর্বের মেষশাবকের] কিঞ্চিৎ রক্ত লইবে এবং যে যে গৃহমধ্যে মেষশাবক ভোজন করিবে, সেই সেই গৃহের দ্বারের দুই বাজুতে ও কপালীতে তাহা লেপিয়া দিবে। . . . এবং প্রভাত পর্য্যন্ত তোমরা কেহই গৃহদ্বারের বাহিরে যাইবে না।” (যাত্রাপুস্তক ১২:৭, ২২) ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে প্রথমজাত কোন সন্তানই বা দরজার দুই বাজুতে ও কপালীতে রক্ত দিয়ে চিহ্নিত কোনো বাড়ির বাইরে গিয়ে ঈশ্বরদত্ত এই নির্দেশনা অগ্রাহ্য করার দুঃসাহস দেখাতে পারত?

১২. আমাদের প্রত্যেকের নিজেকে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা উচিত এবং কেন?

১২ তাই, আমাদের ব্যক্তিগত পরিস্থিতি নিয়ে মনোযোগের সঙ্গে চিন্তা করার কারণ রয়েছে। আমরা কি আসলেই যিহোবার আধ্যাত্মিক সুরক্ষার ব্যবস্থার মধ্যে আছি? যখন মহাক্লেশ আসবে, তখন সেই ব্যক্তিদের দুচোখ দিয়ে আনন্দ ও কৃতজ্ঞতার অশ্রু গড়িয়ে পড়বে, যারা এই ধরনের সুরক্ষা লাভের চেষ্টা করেছে। অন্যদের চোখে কেবল দুঃখ এবং শোকের অশ্রুই থাকবে।

অগ্রগতিশীল রদবদলগুলো আমাদের প্রস্তুত করে

১৩. (ক) সাংগঠনিক রদবদলগুলো কোন উদ্দেশ্য সম্পাদন করেছে? (খ) কিছু অগ্রগতিশীল রদবদল সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করুন।

১৩ যিহোবা তাঁর সংগঠনের পার্থিব অংশে বিভিন্ন অগ্রগতিশীল রদবদল নিয়ে এসেছেন। এগুলো আমাদের আধ্যাত্মিক সুরক্ষার জন্য তাঁর ব্যবস্থাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত, দৃঢ় এবং শক্তিশালী করেছে। ১৮৭০ এর দশক থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত, প্রাচীন এবং ডিকনদের মণ্ডলীর সদস্যরা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করত। ১৯৩২ সালে, নির্বাচিত প্রাচীনদের জায়গায় মণ্ডলীর দ্বারা এক পরিচর্যা কমিটি নির্বাচন করা হয়, যাতে এই কমিটি নিযুক্ত পরিচর্যা পরিচালককে সাহায্য করতে পারে। ১৯৩৮ সালে, মণ্ডলীর সমস্ত দাসকে ঈশতান্ত্রিকভাবে নিযুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়। যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালক গোষ্ঠীর নির্দেশনার অধীনে, ১৯৭২ সাল থেকে সুপারিশ করার ব্যবস্থা করা হয় এবং সেগুলোর অনুমোদন পাওয়া গেলে, অধ্যক্ষ ও পরিচারক দাসদের ঈশতান্ত্রিকভাবে নিযুক্ত করার জন্য মণ্ডলীগুলো চিঠি পেয়ে থাকে। বছরের পর বছর ধরে, পরিচালক গোষ্ঠীর ভূমিকাকে আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং এর কাজকে সহজতর করার জন্য বিভিন্ন পরিবর্তন করা হয়েছে।

১৪. উনিশশো উনষাট সালে কোন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল?

১৪ উনিশশো পঞ্চাশ সালে, গীতসংহিতা ৪৫:১৬ পদ মনোযোগের সঙ্গে বিবেচনা করায় ক্রমাগত প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের এক ব্যবস্থা করা হয়। সেই পদে লেখা আছে: “তোমার পিতৃগণের পরিবর্ত্তে তোমার পুত্ত্রেরা থাকিবে; তুমি তাহাদিগকে সমস্ত পৃথিবীতে অধ্যক্ষ করিবে।” যে-প্রাচীনরা এখন মণ্ডলীতে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তারা বর্তমানে এবং হর্‌মাগিদোনের পরে ঈশতান্ত্রিক দায়িত্বগুলোর জন্য প্রশিক্ষিত হচ্ছে। (প্রকাশিত বাক্য ১৬:১৪, ১৬) ১৯৫৯ সালে কিংডম মিনিস্ট্রি স্কুল শুরু হয়। সেই সময় পরিচালক অধ্যক্ষদের মণ্ডলীর দাস বলে ডাকা হতো আর মূলত তাদের জন্য এক মাসের শিক্ষামূলক কোর্সের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এখন এই বিদ্যালয়ের মাধ্যমে সমস্ত অধ্যক্ষ এবং পরিচারক দাসকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর ফলে, এই ভাইয়েরা তাদের নিজ নিজ মণ্ডলীতে প্রত্যেক যিহোবার সাক্ষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজে নেতৃত্ব নেয়। এভাবে, সকলকে আধ্যাত্মিকভাবে সহযোগিতা করা হয় এবং রাজ্যের সুসমাচার প্রচারক হিসেবে তাদের পরিচর্যার কার্যকারিতাকে আরও বাড়ানোর জন্য সাহায্য করা হয়।—মার্ক ১৩:১০.

১৫. দুটো উপায় কী, যার মাধ্যমে খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর শুদ্ধতাকে রক্ষা করা যায়?

১৫ খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর অংশ হতে চান এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু চাহিদা পূরণ করতে হবে। যুক্তিযুক্ত কারণেই, মণ্ডলীতে আধুনিক দিনের উপহাসকদের কোনো স্থান দেওয়া হয় না, ঠিক যেমন নোহের জাহাজেও তাদের মতো ব্যক্তিদের কোনো স্থান ছিল না। (২ পিতর ৩:৩-৭) মূলত ১৯৫২ সাল থেকে, যিহোবার সাক্ষিরা এমন এক ব্যবস্থাকে ক্রমাগত সমর্থন করে এসেছে, যা মণ্ডলীকে সুরক্ষা করতে সাহায্য করে আর তা হল, অনুতাপহীন পাপীদের সমাজচ্যুত করা। অবশ্য, প্রকৃত অনুতপ্ত অপরাধীদের ‘আপন আপন চরণের জন্য সরল পথ প্রস্তুত করিতে’ প্রেমের সঙ্গে সাহায্য করা হয়।—ইব্রীয় ১২:১২, ১৩; হিতোপদেশ ২৮:১৩; গালাতীয় ৬:১.

১৬. যিহোবার লোকেদের আধ্যাত্মিক অবস্থা কেমন?

১৬ যিহোবার লোকেদের আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধশালী অবস্থা কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা বা আকস্মিক বিষয় নয়। ভাববাদী যিশাইয়ের মাধ্যমে যিহোবা বলেছিলেন: “দেখ, আমার দাসেরা ভোজন করিবে, কিন্তু তোমরা ক্ষুধার্ত্ত থাকিবে; দেখ, আমার দাসেরা পান করিবে, কিন্তু তোমরা তৃষ্ণার্ত্ত থাকিবে; দেখ, আমার দাসেরা আনন্দ করিবে, কিন্তু তোমরা লজ্জিত হইবে; দেখ, আমার দাসেরা চিত্তের সুখে আনন্দরব করিবে, কিন্তু তোমরা চিত্তের দুঃখে ক্রন্দন করিবে, এবং আত্মার ক্ষোভে হাহাকার করিবে।” (যিশাইয় ৬৫:১৩, ১৪) যিহোবা ক্রমাগত আমাদের জন্য প্রচুর সময়োপযোগী এবং স্বাস্থ্যকর খাবার জুগিয়ে থাকেন, যা আমাদের আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে দৃঢ় রাখে।—মথি ২৪:৪৫.

রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন

১৭. কী আমাদেরকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে সাহায্য করবে?

১৭ আগের চেয়ে এখনই ‘পরস্পর মনোযোগ করিবার’ সময় “যেন প্রেম ও সৎক্রিয়ার সম্বন্ধে পরস্পরকে উদ্দীপিত করিয়া তুলিতে পারি; এবং আপনারা সমাজে সভাস্থ হওয়া পরিত্যাগ না করি—যেমন কাহারও কাহারও অভ্যাস—বরং পরস্পরকে চেতনা দিই।” (ইব্রীয় ১০:২৩-২৫) যিহোবার সাক্ষিদের ৯৮,০০০রেরও বেশি মণ্ডলীর যেকোনো একটার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করা এবং এর সঙ্গে সক্রিয় থাকা, আমাদেরকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে সাহায্য করবে। ‘নূতন মনুষ্য’ বা ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করতে প্রচেষ্টা করার এবং পূর্ণহৃদয়ে অন্যদেরকে যিহোবার পরিত্রাণের ব্যবস্থা সম্বন্ধে জানাতে প্রাণপণ করার সময় আমাদের প্রতি সহবিশ্বাসীদের সমর্থন থাকবে।—ইফিষীয় ৪:২২-২৪; কলসীয় ৩:৯, ১০; ১ তীমথিয় ৪:১৬.

১৮. কেন আপনি খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর সান্নিধ্যে থাকার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ?

১৮ শয়তান এবং তার মন্দ জগৎ আমাদেরকে প্রলোভনে ফেলে খ্রিস্টীয় মণ্ডলী থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য অত্যন্ত আগ্রহী। কিন্তু, আমরা খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর একটা অংশ হিসেবে থাকতে পারি এবং বর্তমান দুষ্ট বিধিব্যবস্থার ধ্বংস থেকে রক্ষা পেতে পারি। যিহোবার প্রতি ভালবাসা এবং তাঁর প্রেমময় ব্যবস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা যেন আমাদেরকে শয়তানের প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করার জন্য আগের চেয়ে আরও বেশি দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হতে পরিচালিত করে। আমাদের বর্তমান দিনের আশীর্বাদগুলো নিয়ে ধ্যান করা আমাদের সংকল্পকে শক্তিশালী করবে। এইরকম কিছু আশীর্বাদ সম্বন্ধে পরের প্রবন্ধে আলোচনা করা হবে।

আপনার উত্তর কী?

• আমাদের দিন কীভাবে নোহের দিনের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ?

• রক্ষা পাওয়ার জন্য কোন গুণ অপরিহার্য?

• অগ্রগতিশীল কোন রদবদল আমাদের সুরক্ষার জন্য যিহোবার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে?

• কীভাবে আমরা রক্ষা পাওয়ার জন্য ব্যক্তিগতভাবে প্রস্তুত থাকতে পারি?

[২২ পৃষ্ঠার চিত্র]

নোহের দিনের লোকেরা নোহকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

ঈশ্বরের সতর্কবাণীকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উপযুক্ত

[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

কিংডম মিনিস্ট্রি স্কুল কোন উদ্দেশ্য সাধন করে?

[২৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর সান্নিধ্যে থাকার সময় এখনই

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার