এই ধর্মগুলির কাছে
কি উত্তর আছে?
গর্ভপাত নিয়ে এই নৈতিক উভয়সঙ্কট সম্বন্ধে, অনেকে তাদের আধ্যাত্মিক নেতাদের কাছে নির্দেশ খোঁজে। এই নেতারা কী উত্তর দেন?
ক্যাথলিক গির্জা গর্ভপাতের বিরুদ্ধে গোঁড়া মনোভাব রাখে এবং শিক্ষা দেয় যে গর্ভসঞ্চারের সময় থেকেই জীবন শুরু হয়। কিছু পাদ্রীরা রাজনীতিতে জড়িত থাকেন এবং পোপের কাছে আবেদন জানান যে ক্যাথলিক রাজনীতিবিদেরা যদি গর্ভপাতের স্বপক্ষে ভোট দেন তাহলে তাদের যেন বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু বহু ক্যাথলিকেরা গর্ভপাতকে সমর্থন করে এবং চায় যে এই সম্বন্ধে নিয়ম শিথিল করা হোক।
প্রেস্বিটেরিয়ান চার্চ (যুক্তরাষ্ট্র) জানায় যে ধর্মযাজকদের মধ্যে ৪৬ শতাংশ “মনে করেন না যে গর্ভপাত অন্যায় বলে বাইবেল শিক্ষা দেয়।” গির্জার অধ্যক্ষেরা গর্ভপাতকে সমর্থন করেন।
ইউনাইটেড চার্চ অফ্ ক্রাইস্টের ষষ্ঠদশ সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে ‘পুরুষ এবং নারীর পরিবার পরিকল্পনা করতে দেওয়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং নিরাপদ আইনসম্মত গর্ভপাত হল তার একটি পদ্ধতি।’
ইভান্জেলিকাল লুথেরান চার্চের নীতি হল “গর্ভপাত হবে একেবারে শেষ বিকল্প ব্যবস্থা”; তবুও গর্ভপাতকে “পাপ” বলতে অথবা “জীবন যে গর্ভসঞ্চারের সময়ে শুরু হয়” তা মানতে তারা অস্বীকার করে।
সাদার্ন ব্যাপ্টিস্ট কন্ভেনশন সম্পূর্ণরূপে গর্ভপাতের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছে। কিন্তু আমেরিকান ব্যাপ্টিস্ট চার্চ জানায়: “গর্ভপাত সম্বন্ধে রাষ্ট্রের প্রতি গির্জার মতামত সম্বন্ধে আমরা বিভক্ত। সুতরাং, প্রত্যেক ব্যক্তির বিশ্বাস অনুযায়ী, গর্ভপাত সম্বন্ধে তাদের নিজেদের নীতি অনুসরণ করার স্বাধীনতা যে তাদের আছে, তা আমরা স্বীকার করি।”
জুডাইজম্-এর মধ্যে মতের অমিল আছে। অর্থোডক্স গির্জা প্রধানত গর্ভপাতের বিরুদ্ধে, কিন্তু রিফর্ম এবং কন্সারভেটিভ্ যিহূদীরা সাধারণত গর্ভপাতকে সমর্থন করে।
ইস্লাম ধর্মে, যে কোন কারণের জন্য জীবন শুরু হওয়ার প্রথম ৪০ দিনের মধ্যে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দেওয়া হয়, কিন্তু তারপরে শুধুমাত্র যদি মায়ের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে তাহলেই গর্ভপাত করানো যেতে পারে। হাদিথ্-এ বলা আছে যে ভ্রুণটি ৪০ দিন পর্যন্ত বীজ অবস্থায় থাকে, তারপর এই একই সময়ের জন্য সেটি একটি রক্তের পিণ্ড হিসাবে থাকে, তারপরে একই সময়ের জন্য সেটি একটি মাংসপিণ্ড হিসাবে থাকে . . . তারপর তার কাছে একজন স্বর্গদূত পাঠানো হয় যে জীবনের নিঃশ্বাস তার মধ্যে সঞ্চার করে।”
শিন্টো ধর্মে কোন সরকারি নীতি নেই এবং গর্ভপাতকে ব্যক্তিগত মনোভাবের উপরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
হিন্দু, বৌদ্ধ এবং শিখেরা সাধারণত জীবনের প্রতি সম্মান রাখতে শিক্ষা দেয়। কিন্তু তারা গর্ভপাত সম্বন্ধে বিতর্কে জড়িত হয়নি, কারণ তারা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে; গর্ভপাত শুধুমাত্র অজাত শিশুটিকে আরেকটি জীবনে নিয়ে যায়। (g93 5/22)