ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • g৯৫ ১০/৮ পৃষ্ঠা ১৫-১৮
  • প্রচরণশীলতার রহস্যের অনুসন্ধান করা

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • প্রচরণশীলতার রহস্যের অনুসন্ধান করা
  • ১৯৯৫ সচেতন থাক!
  • উপশিরোনাম
  • “দোয়েল, কেন তুমি তোমার বাসা ছেড়ে চলে যাও?”
  • কয়েকটি উত্তর
  • “পক্ষী সম্বন্ধীয় মানচিত্রের” রহস্য
  • রহস্যের পিছনে যে মস্তিষ্ক
১৯৯৫ সচেতন থাক!
g৯৫ ১০/৮ পৃষ্ঠা ১৫-১৮

প্রচরণশীলতার রহস্যের অনুসন্ধান করা

স্পেনের সচেতন থাক! প্রতিনিধি কর্তৃক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যালিফোর্নিয়ার সান জুয়ান ক্যাপিস্ট্রানোতে পুরনো উদ্দেশ্য নিয়ে সান জুয়ান ক্যাপিস্ট্রানোতে ফিরে আসা দোয়েল পাখিদের কেন্দ্র করে একটি প্রাচীন গানের প্রচলন আছে। এটা বলা হয়ে থাকে যে প্রতি বছর ১৯শে মার্চ তারা সেখানে তাদের বাসায় ফিরে আসে।

ইউরোপের দোয়েল পাখিরাও ঠিক একই সময়সূচী মেনে চলে। স্প্যানীয় ভাষার একটি প্রবাদ জানায় যে ১৫ই মার্চের মধ্যে দোয়েলের গান আবার শোনা যাবে।

উত্তর গোলার্ধের পল্লীবাসীরা, বসন্তের অগ্রদূত হিসাবে সবসময় দোয়েল পাখির প্রত্যাবর্তনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এসেছে। কিন্তু অনেক কৌতুহলী ব্যক্তিরা চিন্তা করে থাকে যে শীতের মরশুমে এরা কোথায় থাকে। কিছু লোক ভেবেছিল যে তারা শীতযাপন করছিল। আর বাদবাকিরা প্রস্তাব দেয় যে তারা চাঁদে গিয়েছিল​—⁠একজন এও গণনা করেছিল যে তাদের পক্ষে দুই মাসের মধ্যে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব। ষোড়শ-শতাব্দীর সুইডেনের আর্চবিশপ দাবি করেন যে দোয়েলরা শীতের সময় জলের তলায়, হ্রদ ও বিলের মধ্যে একসাথে সময় কাটায়। তার লেখা প্রবন্ধের মধ্যে এমনকি একটি চিত্রও রয়েছে যা দেখায় যে জেলেরা জাল ভরতি দোয়েল পাখি সবলে টেনে তুলছে। এই ধারণাগুলি যতই অস্বাভাবিক বলে মনে হোক না কেন, কিন্তু প্রকৃত সত্যটি বলতে গেলে গল্পের চাইতেও অনেক বেশি আশ্চর্যকর।

এই শতাব্দীতে পক্ষীবিজ্ঞানীরা হাজার হাজার দোয়েলদের চালচলন পরীক্ষা করার জন্য তাদের পায়ে যন্ত্র বেঁধেছে। এই শিকল বাঁধা পাখিদের মধ্যে খুব অল্প অথচ তাৎপর্যময় সংখ্যাকে তাদের শীতকালীন বাসায় দেখতে পাওয়া যায়। এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয় যে, ব্রিটেন ও রাশিয়ার দোয়েলরা তাদের ঘর আফ্রিকার একেবারে দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের প্রান্ত ছেড়ে শীত কাটাতে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে উড়ে যায়​—⁠উত্তর আমেরিকায় অবস্থিত তাদের সাথীদের মধ্যে অনেকে একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে অর্থাৎ আর্জ্জেন্টিনা অথবা চিলির দিকে চলে যায়। দোয়েলরাই একমাত্র পাখি নয় যারা এইধরনের যাত্রা করে থাকে। উত্তর গোলার্ধের কোটি কোটি পাখি শীত কাটাতে দক্ষিণ গোলার্ধে উড়ে যায়।

পক্ষীবিজ্ঞানীরা এটা আবিষ্কার করতে পেরে অবাক হয় যে, দোয়েলের মত ছোট পাখি ২২,৫০০ কিলোমিটার দূরে উড়ে যাওয়ার পর আবার পরবর্তী বসন্তকালে সেই একই বাসায় ফিরে আসে। এই দোয়েলরা কোথায় যায় তা জানা আরও বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের সৃষ্টি করে।

“দোয়েল, কেন তুমি তোমার বাসা ছেড়ে চলে যাও?”

পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে একটি পাখি কেন উড়ে যায়? অথবা একটি স্প্যানীয় ভাষার প্রবাদ যেমন বলে, “দোয়েল, কেন তুমি তোমার বাসা ছেড়ে চলে যাও?” শীতের জন্য না কি খাদ্য সংগ্রহ করার জন্য? শীতের আবহাওয়ার চাইতে, নির্ভরযোগ্য খাদ্য সরবরাহের বিষয়টিই হল এর কারণ, যেহেতু অনেক ছোট পাখিরা আছে যারা শীতকালে কোথাও প্রচরণ করে না। কিন্তু পাখিদের এই প্রচরণশীলতার কারণ কেবল মাত্র খাদ্য সংগ্রহের জন্যই হয়ে থাকে না। মানুষেরা যেমন দুর্দিন না আসা অবধি নিজেদের বসতি ছেড়ে কোথাও যায় না, কিন্তু পাখিরা এর জন্য অপেক্ষা করে না।

বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছে যে দিনের স্বল্পতাই প্রচরণশীলতার স্পৃহাকে জাগিয়ে তোলে। শরৎকালে আটকে থাকা পাখিগুলি দিনের হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে অস্থির হয়ে ওঠে। এটা প্রতীয়মান হয় এমনকি যখন কৃত্রিম উপায়ে এইধরনের প্রভাব সৃষ্টি করা হয় আর যখন অনুসন্ধানকারীরা পাখিগুলিকে পুষে রাখে। খাঁচায় আবদ্ধ পাখিরা সেই দিকের প্রতি মুখ করে থাকে যা তারা তাদের সহজাত প্রবৃত্তির মধ্যে দিয়ে বুঝতে পারে যে এটাই হল প্রচরণ করার সঠিক দিক। অতএব এটাই বলা যায় যে, বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় ও একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রচরণ করার প্রবৃত্তি হল সহজাত।

কিভাবে এই পাখিরা সফলতার সাথে এতটা পথ উড়তে পারে? অনেকে, দিন ও রাত ধরে সীমাহীন সমুদ্র ও মরুভূমির উপর দিয়ে উড়ে চলে। কয়েকটি প্রজাতির মধ্যে দেখা যায় যে ছোট পাখিরা বড়দের সাহায্য ব্যতিরেকে একলা যাত্রা করতে পারে। ঝড় ও বাতাস থাকা সত্ত্বেও তারা যে কোনভাবেই হোক না কেন সঠিক পথে উড়তে পারে।

সঠিক পথে উড়ে চলা​—⁠বিশেষকরে বিশাল সমুদ্র অথবা মরুভূমির উপর দিয়ে​—⁠এটা একেবারেই সহজ কাজ নয়। এটিকে আয়ত্বের মধ্যে আনার জন্য মানুষকে হাজার হাজার বছর চেষ্টা করতে হয়েছে। নিঃসন্দেহে, ক্রিস্টোফার কলম্বাস সমুদ্র পার হয়ে এতটা পথ অতিক্রম করার সাহস পেতেন না যদি না তিনি নৌবিজ্ঞানের সাহায্য না পেতেন যেমন অ্যাস্ট্রোলেব ও চুম্বকের তৈরি কম্পাস।a কিন্তু তবুও, তার প্রথম জলভ্রমণের শেষের দিকে, এই পাখিরাই তাকে বাহামাসের পথ দেখিয়ে দেয়। প্রাচীন নাবিকদের পন্থা অনুসারে, তিনি দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের দিকে তার দিক পরিবর্তন করেন যখন তিনি দেখতে পান প্রচরণশীল পাখিরা সেই দিকে উড়ে চলেছে।

সফলতার সাথে নির্দেশক কৌশলের জন্য প্রয়োজন সঠিক দিকটি বজায় রাখা এবং স্থান সম্বন্ধে সজাগ থাকা। সহজভাবে বলতে গেলে এটাই বলা যায় যে, আপনাকে জানতে হবে যে আপনার গন্তব্য স্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আপনি এখন কোথায় আছেন আর সেখানে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে কোন্‌ পথটি নিতে হবে। সাহায্যকারী যন্ত্র ছাড়া আমরা মানুষেরা এই কাজ সাধন করতে পারি না​—⁠কিন্তু পাখিরা তা পারে। ধৈর্যের সাথে, বিজ্ঞানীরা অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছে যা এই বিষয়ের উপর আলোকপাত করে যে কিভাবে পাখিরা সঠিক দিক নির্ধারণ করতে পারে যে পথ দিয়ে তাদের উড়তে হবে।

কয়েকটি উত্তর

পাখিদের অভিযান রহস্য উদ্ঘাটন করার জন্য গৃহগামী পায়রা হল বিজ্ঞানীদের পছন্দ করা “গিনিপিগ।” দীর্ঘসহিষ্ণু পায়রাদের চোখে এক ধরনের ঘসা কাঁচের “চশমা” পরিয়ে দেওয়া হয় যাতে করে তারা কোন ভূমিচিহ্ন দেখতে না পায়। অন্যদের আবার তাদের পিঠের উপর এক ধরনের চুম্বকীয় থলি বেঁধে দেওয়া হয় যাতে করে পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র থেকে তারা কোন দিক সম্বন্ধীয় সাহায্য না পেতে পারে। যেখানে তাদের অভিযানের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে সেই স্থান পর্যন্ত কয়েকটি পাখিকে নেশার ওষুধ খাইয়ে দেওয়া হয় যাতে করে কোন রকমভাবেই তারা বাইরের পথ সম্বন্ধে জানতে না পারে। উপায়াদি উদ্ভাবনে দক্ষ এই পায়রাগুলি এক এক করে আলাদাভাবে বাধাগুলির মোকাবিলা করে, যদিও কিছু ধরনের বাধার সংমিশ্রণ তাদের সফলতার সাথে ঘরে ফিরে আসতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। এটা স্পষ্ট যে, পাখিরা এক ধরনের দিক নির্দেশক কৌশল পদ্ধতির উপর নির্ভরশীল নয়। কিধরনের পদ্ধতিগুলি তারা ব্যবহার করে থাকে?

কৃত্রিম সূর্য অথবা রাত্রের আকাশ ব্যবহার করার দ্বারা দেখা গেছে যে এই পাখিরা দিনের বেলায় সূর্য ও রাত্রে তারার আলোয় দিক নির্দেশক কৌশল পদ্ধতির ব্যবহার করতে পারে। আকাশ যদি মেঘলা থাকে তাহলে? পাখিরা পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্রকে ব্যবহার করার দ্বারা এক ধরনের রাস্তা ঠিক করে নিতে পারে, ঠিক যেন তাদের কাছে একটা কম্পাস রয়েছে। নিজেদের নীড়ে বা বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য তাদের অবশ্যই পরিচিত ভূমি­চিহ্নগুলিকে চিনতে হবে। এছাড়াও, গবেষকেরা দেখেছে যে মানুষের চাইতে পাখিরা শব্দ ও ঘ্রাণের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সংবেদনশীল​—⁠যদিও তারা জানে না যে এই ক্ষমতা কতখানি অভিযানের ক্ষেত্রে কাজে লাগে।

“পক্ষী সম্বন্ধীয় মানচিত্রের” রহস্য

যদিও এই গবেষণা এটা জানতে অনেকটাই সাহায্য করেছে যে কিভাবে পাখিরা একটি নির্দিষ্ট পথে উড়ে চলতে পারে তবুও একটি বড় সমস্যা থেকেই গেছে। নির্ভরযোগ্য একটি কম্পাস থাকা হল একটা বিষয়, কিন্তু ঘরে ফিরে আসার জন্য আপনার একটা মানচিত্রের প্রযোজন হবে​—⁠প্রথমে এটা নির্ধারণ করার জন্য যে আপনি কোথায় আছেন আর তারপর সঠিক পথ সম্বন্ধে আপনাকে চিন্তা করতে হবে।

কোন্‌ “পক্ষী সম্বন্ধীয় মানচিত্রগুলি” পাখিরা ব্যবহার করে? ঘর থেকে প্রায় শতাধিক কিলোমিটার দূরে অজানা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পরও তারা কিভাবে বুঝতে পারে যে তারা কোথায় রয়েছে? সাহায্য করার জন্য কোন মানচিত্র বা চিহ্ন না থাকা সত্ত্বেও তারা কিভাবে গণনা করতে পারে যে এটাই হল সবচাইতে উত্তম দিক?

জীববিজ্ঞানী জেমস্‌ এল. গুড বলেন যে পাখিদের “মানচিত্র সম্বন্ধে যে জ্ঞান তা আজও পশু আচরণের ক্ষেত্রে এক বিভ্রান্তিকর ও গভীর রহস্য রয়ে গেছে।”

রহস্যের পিছনে যে মস্তিষ্ক

একটা বিষয় যা যথেষ্ট স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে তা হল এই যে প্রচরণশীলতা হল এক সহজাত প্রবৃত্তিমূলক আচরণ। পাখিদের অনেক প্রজাতি রয়েছে যারা জন্ম থেকেই বছরের এক নির্দিষ্ট সময় প্রচরণশীলতার প্রবণতা নিয়ে আর সফলতার সাথে অভিযান করার জন্য যে কৌশলতা ও অনুভূতির প্রয়োজন হয় তা নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। এই সহজাত কর্ম ক্ষমতা কোথা থেকে আসে?

এটা যথাযথ যে, এই সহজাত প্রজ্ঞা একমাত্র বুদ্ধিমান সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকেই আসতে পারে, যিনি পাখিদের জেনেটিক কোডের “কর্মসূচী” তৈরি করতে পারেন। আদিপুরুষ ইয়োবকে ঈশ্বর সরাসরি জিজ্ঞাসা করেছিলেন: “তোমারই বুদ্ধিতে কি বাজপক্ষী উড়ে, দক্ষিণ দিকে আপন পক্ষ বিস্তার করে?”​—⁠ইয়োব ৩৯:​২৬.

একশো বছর ধরে পাখিদের প্রচরণশীলতার সম্বন্ধে গভীর গবেষণা করার পর, বিজ্ঞানীরা পাখিদের ছোট মস্তিষ্কের মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেছে। প্রচরণের প্রধান পথটিকে বিবেচনা করার পর, বিজ্ঞানীরা অবাক হয়েছে এটা জানতে পেরে যে পাখিরা কত বিশাল দূরত্ব অতিক্রম করে। বংশের পর বংশ ধরে, বসন্ত ও শরৎকালে কোটি কোটি প্রচরণশীল পাখিরা সারা পৃথিবী পরিভ্রমণ করে। দিনের বেলায় তারা সূর্যের আলোয় আর রাতের বেলা নক্ষত্রের জ্যোতির সাহায্যে দিক নির্দেশক কৌশল ব্যবহার করে। মেঘলা দিনে তারা পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্রের ব্যবহার করে আর খুবই সহজে তারা পরিচিত ভূমিচিহ্নগুলি শিখে যায়। সম্ভবত তারা এমনকি গন্ধ অথবা শব্দ তরঙ্গের সাথেও নিজেদের পরিচয় করিয়ে নেয়।

কিভাবে তারা তাদের এই ভ্রমণের “মানচিত্র” তৈরি করে তা রহস্যই থেকে গেছে। আমরা জানি দোয়েল পাখিরা কোথায় যায়; আমরা জানি না যে কিভাবে তারা সেখানে গিয়ে পৌঁছায়। যাইহোক না কেন, যখন আমরা দোয়েলের একটি দলকে একসাথে আসতে দেখি, তখন আমরা ঈশ্বরের প্রজ্ঞার কথা অবাক হয়ে চিন্তা করি যিনি তাদের এই প্রচরণশীলতার ক্ষমতা দিয়েছেন।

[পাদটীকাগুলো]

a অক্ষাংশের পরিমাপ করার জন্য অ্যাস্ট্রোলেব ব্যবহার করা হত।

[১৮ পৃষ্ঠার বাক্স]

প্রচরণশীলতার এক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান

দূরত্ব। ১৯৬৬ সালে, উত্তরীয় গ্রীষ্মের সময়, একটি সুমেরুবাসী শঙ্খচিলকে গ্রেট ব্রিটেনের, উত্তর ওয়েলসে যন্ত্র লাগানো হয়। সেই একই বছরের ডিসেম্বর মাসে এটিকে​—⁠সঠিক অবস্থায়​—⁠অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে দেখা যায়। ছয় মাসের মধ্যে এটি ১৮,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি দুরত্ব অতিক্রম করে। মেরুদেশীয় শঙ্খ চিলের পক্ষে এইধরনের কার্য সাধন হয়ত একটা সাধারণ ব্যাপার। এক বছরের মধ্যে এই পাখিদের মধ্যে কয়েকটি নিয়মিতভাবে পৃথিবী পরিভ্রমণ করে থাকে।

গতি। আমেরিকার গোল্ডেন প্লোভার্স হয়ত সম্ভবত সবচাইতে দ্রুতগতি সম্পন্ন প্রচরণকারী পাখি। এইধরনের কিছু পাখি ৩,২০০ কিলোমিটার দূরত্বের সমুদ্র যা আলাস্কার অলেসিয়ান দ্বীপপুঞ্জগুলিকে হাওয়াই দেশটির থেকে আলাদা করেছে, সেটি মাত্র ৩৫ ঘন্টার মধ্যে পার করেছে​—⁠গড়ে প্রতি ঘন্টায় ৯১ কিলোমিটার গতিতে!

সহিষ্ণুতা। উত্তর আমেরিকার ব্ল্যাকপোল ওয়ার্বলার্স, যার ওজন মাত্র ২০ গ্রাম, সবচাইতে বেশি সময় ধরে উড়তে পারে। দক্ষিণ আমেরিকায় যাওয়ার পথে তারা অবিরাম গতিতে ৩,৭০০ কিলোমিটারের দূরত্ব অতলান্তিকের উপর দিয়ে মাত্র সাড়ে তিনদিনের মধ্যে অতিক্রম করে। এই অসাধারণ সহনশক্তিকে তুলনা করা হয়েছে একটি ছুটন্ত ব্যক্তির সাথে যে একবারও না থেমে ১,৯০০ বার, চার মিনিটে এক কিলোমিটার অতিক্রম করেছে। যারা ওজন সম্পর্কে সচেতন তাদের কাছে এই গতি হল একটা স্বপ্নের মত​—⁠ওয়ার্বলার তার দেহের ওজনের প্রায় অর্ধভাগই ঝেড়ে ফেলে।

সময়ানুবর্তিতা। দোয়েল পাখি ছাড়াও, সারস পাখিরাও যাদের উপরে দেখানো হয়েছে, তাদের সময়ানুবর্তিতার জন্য সুপরিচিত। সারসের বর্ণনা দিতে গিয়ে ভাববাদী যিরমিয় বলেন যে এটি এমন এক পাখি যে “আপনার সময় জানে” আর যে তার “আগমনের” কাল জানে। (যিরমিয় ৮:⁠৭) প্রায় পাঁচ লক্ষ সারস প্রতি বসন্তকালে ইস্রায়েলের উপর দিয়ে উড়ে যায়।

দিক নির্দেশক কৌশল। ম্যাংক্স সিয়ারওয়াটার্সদের কাছে নিজেদের বাসা ছাড়া আর কোন জায়গা নেই। গ্রেট ব্রিটেনে একটি মেয়ে পাখিকে তার বাসা থেকে তুলে এনে ৫,০০০ কিলোমিটার দূরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে ছেড়ে দেওয়া হয়। পাখিটিকে ছেড়ে দেওয়া সম্বন্ধে তথ্য চিঠির মারফতে পৌঁছানোর আগেই, সে ১২ ১/২ দিনের মধ্যে অতলান্তিক পার হয়ে নিজের ঘরে ফিরে আসে। এই কার্যসাধন বিশেষকরে আশ্চর্যজনক কারণ এই পাখিরা কখনই প্রচরণ যাত্রায় যাওয়ার সময় উত্তর অতলান্তিক পার করে না।

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

সারস প্রতি বছর সঠিক সময় তার বাসায় ফিরে আসে

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

প্রচরণরত সারসগুলি একটি V–আকারে উড়ে চলছে

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্য]

Photo: Caja Salamanca y Soria

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার