ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • g০৪ ১০/৮ পৃষ্ঠা ৩-৫
  • কুসংস্কারের বৈশিষ্ট্য

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • কুসংস্কারের বৈশিষ্ট্য
  • ২০০৪ সচেতন থাক!
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কুসংস্কার
  • কুসংস্কারের মূল
    ২০০৪ সচেতন থাক!
  • বৈষম্য—আপনি কি এর দ্বারা সংক্রামিত হয়েছেন?
    ২০২০ সজাগ হোন!
  • কুসংস্কারের শেষ
    ২০০৪ সচেতন থাক!
  • কুসংস্কার আপনি কি এর শিকার?
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৪ সচেতন থাক!
g০৪ ১০/৮ পৃষ্ঠা ৩-৫

কুসংস্কারের বৈশিষ্ট্য

“কুসংস্কারগুলোকে দরজা দিয়ে তাড়িয়ে দিন, সেগুলো আবার জানালা দিয়ে ফিরে আসবে।” —মহান ফ্রেডরিক, প্রাশার রাজা।

রাজেশ ভারতের একটা গ্রাম, পালিয়াদে বাস করে। অন্যান্য অচ্ছুত জাতের লোকেদের মতো তাকেও ১৫ মিনিটের পথ হেঁটে তার পরিবারের জন্য জল নিয়ে আসতে হয়। “আমাদেরকে গ্রামের কল ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না, যা উঁচুজাতের লোকেরা ব্যবহার করে থাকে,” তিনি ব্যাখ্যা করেন। তিনি যখন স্কুলে পড়তেন, তখন রাজেশ ও তার বন্ধুরা এমনকি ফুটবল স্পর্শ করতে পারত না, যেটা দিয়ে অন্য ছেলেরা খেলা করত। “এর পরিবর্তে আমরা পাথর দিয়ে খেলতাম,” তিনি বলেন।

“আমি বুঝতে পারি যে, লোকেরা আমাকে ঘৃণা করে কিন্তু জানি না কেন করে,” ক্রিস্টিনা নামে এশিয়ার এক কিশোরী বলে, যে ইউরোপে বাস করে। “এটা অত্যন্ত হতাশাজনক,” সে আরও বলে। “এর ফলে আমি সাধারণত একা একা থাকি কিন্তু এতেও কোনো লাভ হয় না।”

“আমি প্রথম ১৬ বছর বয়সে কুসংস্কার সম্বন্ধে বুঝতে পারি,” পশ্চিম আফ্রিকার স্ট্যানলি বলেন। “একেবারে অপরিচিত ব্যক্তিরা আমাকে তাদের শহর ছেড়ে চলে যেতে বলেছিল। আমার উপজাতির কিছু লোকের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমার বাবার ব্যাঙ্ক আ্যকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে আমি সেই উপজাতিকে ঘৃণা করতে শুরু করেছিলাম, যারা আমাদের ছোট করে দেখেছিল।”

রাজেশ, ক্রিস্টিনা এবং স্ট্যানলি কুসংস্কারের শিকার আর শুধু তারাই নয়। “আজকে কোটি কোটি মানুষ জাতিবিদ্বেষ, শ্রেণীবৈষম্য, অজ্ঞাতজনভীতি এবং বহিষ্করণের কারণে ক্রমাগত কষ্টভোগ করছে,” ইউনাইটেড নেশনস এডুকেশনাল সায়েন্টিফিক আ্যন্ড কালচারাল অরগ্যানাইজেশন (ইউনেস্কো) এর মহাপরিচালক কোয়িচিরো মাতসুয়ুরা ব্যাখ্যা করেন। “অজ্ঞতা এবং কুসংস্কারের দ্বারা উদ্ভাবিত এই ধরনের অমানবিক কার্যকলাপ, অনেক দেশে আভ্যন্তরীণ লড়াইয়ের সূত্রপাত করেছে এবং মানুষের জন্য প্রচণ্ড দুঃখকষ্ট নিয়ে এসেছে।”

আপনি যদি কখনও কুসংস্কারের শিকার না হয়ে থাকেন, তা হলে আপনার পক্ষে হয়তো বোঝা কঠিন হতে পারে যে, এটা কত বেদনাদায়ক। “কেউ কেউ নীরবে সহ্য করে। অন্যেরা কুসংস্কারের পরিশোধে আরও কুসংস্কার প্রদর্শন করে,” কুসংস্কারের মুখোমুখি হওয়া (ইংরেজি) বই মন্তব্য করে। কোন কোন উপায়ে কুসংস্কার জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে?

আপনি যদি সংখ্যালঘু দলের সদস্য হন, তা হলে হয়তো দেখতে পান যে লোকেরা আপনাকে এড়িয়ে চলে, আপনার দিকে বিদ্বেষীভাব নিয়ে এক পলক তাকায় অথবা আপনার সংস্কৃতি সম্বন্ধে আজেবাজে মন্তব্য করে। চাকরি পাওয়ার সুযোগ দুষ্প্রাপ্য হতে পারে যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি কেউই করতে চায় না, এমন হীনকাজ গ্রহণ করেন। উপযুক্ত বাসস্থান পাওয়া হয়তো কঠিন হয়ে পড়ে। আপনার ছেলেমেয়েরা হয়তো নিঃসঙ্গ এবং স্কুলে সহপাঠীদের দ্বারা পরিত্যাক্ত বোধ করতে পারে।

এর চেয়েও খারাপ বিষয় হল, কুসংস্কার লোকেদের দৌরাত্ম্য অথবা এমনকি হত্যা করার জন্য উসকে দেয়। বস্তুত, ইতিহাসের পাতা এমন হৃদয়বিদারক দৌরাত্ম্যমূলক উদাহরণগুলো দিয়ে পরিপূর্ণ, যেগুলো কুসংস্কারের জন্য ঘটতে পারে—যেগুলোর অন্তর্ভুক্ত হত্যাকাণ্ড, গণহত্যা এবং তথাকথিত সাম্প্রদায়িক বিলোপসাধান।

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কুসংস্কার

একসময় খ্রিস্টানরা কুসংস্কারের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল। উদাহরণস্বরূপ, যিশুর মৃত্যুর কিছু পরেই তাদের ওপর দিয়ে নিষ্ঠুর তাড়নার ঢেউ বয়ে গিয়েছিল। (প্রেরিত ৮:৩; ৯:১, ২; ২৬:১০, ১১) দুই শতাব্দী পরে, নিজেদের খ্রিস্টান বলে দাবি করত এমন ব্যক্তিরা নিষ্ঠুর দুর্ব্যবহারের মুখোমুখি হয়েছিল। “যদি কোনো মহামারী হতো,” তৃতীয় শতাব্দীর লেখক টারটুলিয়ান লিখেছিলেন, “তা হলে, সঙ্গে সঙ্গে এই চিৎকার শোনা যেত, ‘খ্রিস্টানদের সিংহদের সামনে ফেলে দাও।’”

কিন্তু, একাদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে যখন ধর্মযুদ্ধ দেখা দিয়েছিল, তখন ইউরোপে যিহুদিরা অখ্যাত সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছিল। সেই মহাদেশের ওপর দিয়ে যখন বুবানিক মহামারী বয়ে গিয়েছিল, যা মাত্র কয়েক বছরে এক চতুর্থাংশ জনগণের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল, তখন যিহুদিদের ওপর সহজেই দোষ চাপানো হয়েছিল, যেহেতু ইতিমধ্যেই অনেকে তাদেরকে ঘৃণা করত। “মহামারী এই ঘৃণার এক অজুহাত ছিল আর এই ঘৃণা মহামারী সম্বন্ধে লোকেদের ভয়ের কেন্দ্রবিন্দুকে তুলে ধরেছিল,” জেনেট ফারেল তার অদৃশ্য শত্রু (ইংরেজি) বইয়ে লেখেন।

অবশেষে, ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের এক যিহুদি ব্যক্তি অত্যাচারের মুখে “স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন” যে, যিহুদিরা কুয়োগুলো বিষাক্ত করার মাধ্যমে এই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। অবশ্য, তার স্বীকারোক্তি মিথ্যা ছিল কিন্তু সেই তথ্য সত্য হিসেবে প্রচারিত হয়েছিল। শীঘ্রই স্পেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির পুরো যিহুদি সমাজকে ব্যাপকভাবে হত্যা করা হয়েছিল। দেখা যায় যে, প্রকৃত দোষীদের—সেই ইদুরের—দিকে কেউই দৃষ্টি দেয়নি। আর খুব কম লোকই লক্ষ করেছিল যে, অন্যদের মতো যিহুদিরাও সেই মহামারীতে মারা গিয়েছিল!

একবার কুসংস্কারের আগুন জ্বলে উঠলে, তা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিদ্যমান থাকতে পারে। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, এডল্ফ হিটলার ১ম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের জন্য যিহুদিদের দোষারোপ করার দ্বারা যিহুদি-বিদ্বেষ মনোভাবকে উসকে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে, রাডল্ফ হোস্‌—আউশভিটস্‌ কনসেনট্রশন ক্যাম্পের নাৎসি সেনাপতি—স্বীকার করেছিলেন: “আমাদের সামরিক এবং ভাবাদর্শিক প্রশিক্ষণ এই বিষয়টাকে অবধারিত বলে মেনে নিয়েছিল যে, যিহুদিদের কাছ থেকে জার্মানিকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।” “জার্মানিকে রক্ষা” করার জন্য হোস্‌ প্রায় ২০,০০,০০০ লোককে হত্যা করায় পরিচালনা দিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল যিহুদি।

দুঃখের বিষয় যে, আরও কয়েক দশক পার হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বর্বরতা শেষ হয়ে যায়নি। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯৪ সালে পূর্ব আফ্রিকায় টুটসি এবং হুটু জাতির মধ্যে উপজাতিগত ঘৃণা দেখা দিয়েছিল, যার ফলে কমপক্ষে পাঁচ লক্ষ লোক মারা গিয়েছিল। “সেখানে কোনো আশ্রয়স্থান ছিল না,” টাইম পত্রিকা রিপোর্ট করেছিল। “গির্জাঘরের বারান্দাগুলো রক্তে মাখামাখি হয়ে গিয়েছিল, যেখানে অনেকে আশ্রয় খুঁজেছিল। . . . সেই লড়াই ছিল হাতাহাতি, ইচ্ছেখুশিমতো, অকথ্য এবং এমন এক ধরনের রক্তলোলুপতা, যার ফলে এর থেকে কোনোমতে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা আবেগহীন এবং নির্বাক হয়ে পড়েছিল।” এমনকি ছোট ছেলেমেয়েরাও এই আতঙ্কিত দৌরাত্ম্য থেকে রেহাই পায়নি। “রুয়ান্ডা এক ক্ষুদ্র জায়গা,” একজন নাগরিক মন্তব্য করেছিলেন। “কিন্তু, বিশ্বের যত ঘৃণা এখানেই রয়েছে।”

প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ার ভাঙনকে ঘিরে যে-দ্বন্দ্বগুলো হয়েছিল, সেগুলোর কারণে ২,০০,০০০রও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছিল। যে-প্রতিবেশীরা বছরের পর বছর ধরে একত্রে শান্তিতে বাস করত, তারা একে অপরকে হত্যা করেছিল। হাজার হাজার মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক বিলোপসাধনের এক নিষ্ঠুর নীতির অধীনে লক্ষ লক্ষ লোককে তাদের বাড়িঘর থেকে জোর করে নির্বাসিত করা হয়েছিল।

যদিও বেশির ভাগ কুসংস্কার হত্যার দিকে পরিচালিত করে না কিন্তু এটা অবিকার্যভাবে লোকেদের বিভক্ত করে এবং বিরক্তি জাগিয়ে তোলে। বিশ্বায়ন সত্ত্বেও জাতিবিদ্বেষ এবং জাতিবৈষম্য “পৃথিবীর বেশির ভাগ জায়গায় বেড়ে চলছে বলে মনে হয়,” ইউনেস্কোর সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট বলে।

কুসংস্কার দূর করার জন্য কি কোনোকিছু করা যেতে পারে? সেই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আমাদের নির্ধারণ করতে হবে যে, কীভাবে কুসংস্কার লোকেদের মনে ও হৃদয়ে শিকড় গাড়ে। (g০৪ ৯/৮)

[৫ পৃষ্ঠার বাক্স]

কুসংস্কারের বৈশিষ্ট্য

গর্ডন ডাব্‌লিউ. আলপর্ট তার কুসংস্কারের প্রকৃতি (ইংরেজি) বইয়ে কুসংস্কারের দ্বারা উদ্ভূত পাঁচ ধরনের আচরণ সম্বন্ধে তুলে ধরেন। একজন কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যক্তি সাধারণত এগুলোর একটা বা এরও বেশি প্রদর্শন করে থাকেন।

১. নেতিবাচক মন্তব্য। একজন ব্যক্তি যে-দলকে পছন্দ করেন না সেই দলের বিষয়ে তিনি আজেবাজে কথা বলেন।

২. এড়িয়ে চলা। সেই দলের অন্তর্ভুক্ত এমন যেকাউকে তিনি পরিহার করেন।

৩. শ্রেণীবৈষম্য। তিনি ক্ষতিকর বলে মনে করেন এমন দলের সদস্যদের নির্দিষ্ট ধরনের চাকরি, আবাসস্থান অথবা সামাজিক সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত করেন।

৪. দৈহিক আক্রমণ। তিনি দৌরাত্ম্যে জড়িয়ে পড়েন, যা তিনি যাদের ঘৃণা করেন তাদের ভয় দেখানোর জন্য করা হয়।

৫. বিলোপসাধন। তিনি বিনা বিচারে হত্যা করা, হত্যাকাণ্ড অথবা বিলোপসাধন করার কার্যক্রমগুলোতে অংশ নেন।

[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

বিনাকো শরণার্থী শিবির, তানজানিয়া, মে ১১, ১৯৯৪

একজন মহিলা তার জল রাখার পাত্রের পাশে বিশ্রাম নিচ্ছেন। ৩,০০,০০০রও ওপরে শরণার্থীর বেশির ভাগই রুয়ান্ডার হুটু জাতির, যারা পার হয়ে তানজানিয়াতে এসেছে

[সৌজন্যে]

Photo by Paula Bronstein/Liaison

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার