ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • g ১/০৭ পৃষ্ঠা ৫-৯
  • কেন ঈশ্বর দুঃখকষ্ট থাকতে অনুমতি দিয়েছেন?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • কেন ঈশ্বর দুঃখকষ্ট থাকতে অনুমতি দিয়েছেন?
  • ২০০৭ সচেতন থাক!
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • কে জগৎকে শাসন করছে?
  • এদনে উত্থাপিত এক বিচার্য বিষয়
  • কেন ঈশ্বর হস্তক্ষেপ করেননি?
  • ‘আমার পিতা কার্য্য করিতেছেন’
  • ঈশ্বরের শাসনের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিন!
  • কেন ঈশ্বর কষ্টভোগের অনুমতি দিয়েছেন?
    জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে
  • পৃথিবীর জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য কী?
    বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়?
  • যেকারণে এখনও দুষ্টতা রয়েছে
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আত্মিক স্তরের শাসকেরা
    ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৭ সচেতন থাক!
g ১/০৭ পৃষ্ঠা ৫-৯

কেন ঈশ্বর দুঃখকষ্ট থাকতে অনুমতি দিয়েছেন?

মাঝে মাঝে একজন ব্যক্তি “কেন?” প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করার মাধ্যমে সান্ত্বনা ও সেইসঙ্গে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে কারণ চরম ক্ষতি হওয়ার ফলে প্রশ্নটা যখন উত্থাপিত হয়, তখন সান্ত্বনার অনেক প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বাইবেল কি এই ধরনের সান্ত্বনা প্রদান করে? এই বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বাইবেলের তিনটে গুরুত্বপূর্ণ সত্য বিবেচনা করুন।

প্রথমত, এটা জিজ্ঞেস করা ভুল নয় যে, কেন ঈশ্বর দুঃখকষ্ট থাকতে দিয়েছেন। কেউ কেউ এই দুশ্চিন্তা করে যে, এই ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা, ঈশ্বরের প্রতি তাদের বিশ্বাসের অভাব অথবা তাঁর প্রতি অসম্মান দেখানোর ইঙ্গিত দেয়। এর বৈসাদৃশ্যে, অনেক সম্মানীয় ব্যক্তি আন্তরিকভাবে এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছে। বিশ্বস্ত ভাববাদী হবক্‌কূক ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করেছিলেন: “কেন তুমি আমাকে এইরকম প্রচণ্ড অবিচার দেখাচ্ছ? কেন তুমি দৌরাত্ম্য, অরাজকতা, অপরাধ ও নিষ্ঠুরতা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে দিচ্ছ?” (হবক্‌কূক ১:৩, কনটেমপোরারি ইংলিশ ভারসন) যিহোবা ঈশ্বর হবক্‌কূককে তিরস্কার করেননি। বরং, তিনি সেই বিশ্বস্ত ব্যক্তির প্রশ্নকে আমাদের সবার পড়ার জন্য বাইবেলে লিপিবদ্ধ করিয়েছেন।—রোমীয় ১৫:৪.

দ্বিতীয়ত, আপনি যখন কঠিন পরিস্থিতি ভোগ করেন, তখন ঈশ্বর যে আপনার জন্য চিন্তা করেন, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উদাসীন এবং রহস্যময় নন; তিনি “ন্যায়বিচার ভালবাসেন,” এবং তিনি দুষ্টতাকে ও এটা যে-দুঃখকষ্ট নিয়ে আসে, তা ঘৃণা করেন। (গীতসংহিতা ৩৭:২৮; হিতোপদেশ ৬:১৬-১৯) নোহের দিনে পৃথিবী দৌরাত্ম্যে ছেয়ে গিয়েছিল বলে ঈশ্বর “মনঃপীড়া” পেয়েছিলেন। (আদিপুস্তক ৬:৫, ৬) ঈশ্বর পরিবর্তিত হননি; আজকে যা ঘটছে, সেই সম্বন্ধে তিনি একই বোধ করেন।—মালাখি ৩:৬.

তৃতীয়ত, ঈশ্বর কখনো দুষ্টতার উৎস নন। বাইবেল এই বিষয়টা একেবারে স্পষ্টভাবে বলে। হত্যা অথবা সন্ত্রাসের মতো বিষয়গুলোর জন্য যারা ঈশ্বরকে দোষারোপ করে, তারা তাঁকে অপবাদ দেয়। ইয়োব ৩৪:১০ কী বলে, তা লক্ষ করুন: “ইহা দূরে থাকুক যে, ঈশ্বর দুষ্কার্য্য করিবেন, সর্ব্বশক্তিমান্‌ অন্যায় করিবেন।” একইভাবে যাকোব ১:১৩ পদ বলে: “পরীক্ষার সময়ে কেহ না বলুক, ঈশ্বর হইতে আমার পরীক্ষা হইতেছে; কেননা মন্দ বিষয়ের দ্বারা ঈশ্বরের পরীক্ষা করা যাইতে পারে না, আর তিনি কাহারও পরীক্ষা করেন না।” তাই, আপনি যদি মন্দ বিষয় ভোগ করে থাকেন, তা হলে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, ঈশ্বর এর উৎস নন।

কে জগৎকে শাসন করছে?

উপরে আলোচিত বিষয়গুলো সত্ত্বেও এখনও প্রশ্ন থেকে যায় যে, ঈশ্বর যদি প্রেমময়, ন্যায়পরায়ণ এবং শক্তিমান হয়ে থাকেন, তা হলে কেন আমাদের চারপাশে মন্দতা রয়েছে? প্রথমে একটা সাধারণ ভুল ধারণা স্পষ্ট করতে হবে। অনেক লোক সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে এই জগতের শাসক বলে মনে করে, যিনি সমস্তকিছুকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করেন। “নিখিলবিশ্বের একটা পরমাণু অথবা অণু তাঁর নিয়ন্ত্রণ ছাড়া এক পা-ও নড়ে না,” ঈশ্বরতত্ত্বীয় এক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বলেছিলেন। বাইবেল কি প্রকৃতপক্ষে তা-ই শিক্ষা দেয়?

কখনোই না। কে জগৎকে শাসন করছে, সেই সম্বন্ধে বাইবেল আসলে কী বলে, তা জেনে অনেকে অবাক হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১ যোহন ৫:১৯ পদ বলে: “সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে।” সেই পাপাত্মা কে? যিশু খ্রিস্ট তাকে শয়তান দিয়াবল হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন, যাকে তিনি “জগতের অধিপতি” বলে অভিহিত করেছিলেন। (যোহন ১৪:৩০) তা হলে, এখন বিষয়টা কি স্পষ্ট? শয়তান হল নিষ্ঠুর, প্রতারক এবং ঘৃণ্য—যে-বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য লোকেরা দুঃখকষ্ট ভোগ করছে। কিন্তু, কেন ঈশ্বর শয়তানকে শাসন করতে দিয়েছেন?

এদনে উত্থাপিত এক বিচার্য বিষয়

একজন প্রেমময় ও দক্ষ বাবা অথবা মা কেমন বোধ করবেন, যদি তাকে জনসমক্ষে এই বলে অভিযোগ করা হয় যে, তিনি তার সন্তানদের কাছে মিথ্যা কথা বলেছেন, তাদের ওপর তার কর্তৃত্বের অপব্যবহার করেছেন এবং উত্তম বিষয়গুলো থেকে তাদের বঞ্চিত করে রেখেছেন? তার অভিযোগকারীকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করার দ্বারা তিনি কি সেই অপবাদমূলক অভিযোগগুলোকে মিথ্যা বলে খণ্ডন করবেন? অবশ্যই না! বস্তুতপক্ষে, এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানোর মাধ্যমে তিনি হয়তো অভিযোগগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতাকে বাড়িয়ে তুলতে পারেন।

এই উদাহরণ, মানব ইতিহাসের একেবারে শুরুতেই এদন নামক এক স্থানে যিহোবা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে উত্থাপিত এক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে মীমাংসা করার বিষয়ে তাঁর উপায় সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে। সেখানে ঈশ্বর প্রথম দুজন মানুষ আদম ও হবার কাছে তাঁর পার্থিব সন্তানদের জন্য এক চমৎকার কাজ সম্বন্ধে ঘোষণা করেছিলেন। তাদের পৃথিবীকে পরিপূর্ণ ও বশীভূত করার এবং এটাকে বিশ্বব্যাপী এক পরমদেশে পরিণত করার কথা ছিল। (আদিপুস্তক ১:২৮) এ ছাড়া, ঈশ্বরের কোটি কোটি আত্মিক পুত্র এই রোমাঞ্চকর কাজ সম্বন্ধে অত্যন্ত আগ্রহী ছিল।—ইয়োব ৩৮:৪, ৭; দানিয়েল ৭:১০.

একজন উদার ঈশ্বর হওয়ায় যিহোবা আদম ও হবাকে সমস্ত ধরনের সুস্বাদু ফলের এক সুন্দর উদ্যান গৃহ দিয়েছিলেন। শুধুমাত্র একটা গাছ তাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল—‘সদসদ্‌-জ্ঞানদায়ক বৃক্ষ।’ এই গাছ থেকে না খাওয়ার দ্বারা আদম ও হবা তাদের পিতার প্রতি পূর্ণ নির্ভরতা দেখাতে এবং এটা স্বীকার করতে পারত যে, তাঁর সন্তানদের জন্য কোনটা ভাল ও কোনটা মন্দ, তা নির্ধারণ করার অধিকার তাঁর রয়েছে।—আদিপুস্তক ২:১৬, ১৭.

কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, ঈশ্বরের আত্মিক পুত্রদের মধ্যে একজন, উপাসনা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষার দ্বারা পরিচালিত হয়ে হবাকে বলেছিল যে, সে যদি নিষিদ্ধ ফল খায়, তা হলে সে মারা যাবে না। (আদিপুস্তক ২:১৭; ৩:১-৫) এভাবে দুষ্ট দূত শয়তান নির্লজ্জভাবে ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করেছিল, মূলত তাঁকে মিথ্যাবাদী বলে অভিহিত করেছিল! এ ছাড়া, শয়তান ঈশ্বরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগও এনেছিল যে, তিনি আদম ও হবাকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান থেকে বঞ্চিত করছেন। শয়তান ইঙ্গিত দিয়েছিল যে, কোনটা ভাল ও কোনটা মন্দ, তা মানুষের নিজেদেরই নির্ধারণ করতে সমর্থ হওয়া উচিত। সহজভাবে বললে, শয়তান ঈশ্বরকে একজন অযোগ্য শাসক ও পিতা হিসেবে অভিযোগ করেছিল এবং ইঙ্গিত দিয়েছিল যে, সে অর্থাৎ শয়তান এই ব্যাপারে যোগ্য।

এই ধরনের চাতুরীপূর্ণ ও বিদ্বেষপরায়ণ মিথ্যা কথার মাধ্যমে, সেই দূত নিজেকে শয়তান দিয়াবলে পরিণত করেছিল। এই নামগুলোর অর্থ “বিপক্ষ” ও “অপবাদক।” আদম ও হবা কী করেছিল? তারা শয়তানের পক্ষ নিয়েছিল, ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।—আদিপুস্তক ৩:৬.

যিহোবা সেই মুহূর্তেই বিদ্রোহীদের ধ্বংস করে দিতে পারতেন। কিন্তু, আমাদের দৃষ্টান্তে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই বিচার্য বিষয়গুলো দৌরাত্ম্যমূলকভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার দ্বারা সমাধান করা যেতে পারে না। এ ছাড়া এও মনে রাখবেন যে, শয়তান যখন ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল, তখন লক্ষ লক্ষ দূত তা শুনছিল। বস্তুতপক্ষে, অজানা কিন্তু বিরাট সংখ্যক দূত পরবর্তী সময়ে শয়তানের বিদ্রোহে তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল আর এর ফলে তারা নিজেদের ভূত বা মন্দ দূতে পরিণত করেছিল।—মার্ক ১:৩৪; ২ পিতর ২:৪; যিহূদা ৬.

কেন ঈশ্বর হস্তক্ষেপ করেননি?

বস্তুতপক্ষে, আদম ও হবাকে তাদের সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার বিষয়টা বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের প্রতারিত করার মাধ্যমে শয়তান এমন এক পরিবার গঠন করেছিল, যা প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন ছিল না বরং তাঁর কর্তৃত্বাধীনে ছিল। জেনেশুনেই হোক বা অজান্তেই হোক, তাদের “পিতা” দিয়াবলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এই পরিবার নিজস্ব লক্ষ্য ও আচরণের মানগুলো নিজেরাই বেছে নিতে শুরু করেছিল। (যোহন ৮:৪৪) কিন্তু, এই ধরনের জীবনধারা কি তাদের জন্য প্রকৃত স্বাধীনতা ও স্থায়ী সুখ নিয়ে আসত? যিহোবা খুব ভাল করেই জানতেন যে, তা নিয়ে আসবে না। তা সত্ত্বেও, তিনি এই বিদ্রোহীদের তাদের স্বাধীন পথে চলতে দিয়েছিলেন কারণ একমাত্র এভাবেই এদনে উত্থাপিত বিচার্য বিষয়গুলো পুরোপুরিভাবে মীমাংসা করা যাবে।

এখন থেকে ৬,০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মানবজাতি এক জগৎব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, সমস্ত ধরনের শাসনব্যবস্থা এবং আচরণবিধি চেষ্টা করে দেখেছে। আপনি কি এর ফলাফল নিয়ে আনন্দিত? মানবজাতি কি সত্যিই সুখী, শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ? স্পষ্টভাবেই এর উত্তর হল, না! এর পরিবর্তে, যুদ্ধবিগ্রহ, দুর্ভিক্ষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অসুস্থতা এবং মৃত্যু মানবজাতিকে জর্জরিত করে রেখেছে, ‘অসারতা,’ “ব্যথা” ও “আর্ত্তস্বর” নিয়ে এসেছে, ঠিক যেমনটা বাইবেলে বলা হয়েছে।—রোমীয় ৮:১৯-২২; উপদেশক ৮:৯.

তা সত্ত্বেও, কেউ কেউ হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারে, ‘কেন ঈশ্বর দুঃখজনক ঘটনাগুলো ঘটা রোধ করেন না?’ আসলে, তা করা অন্যায্য হবে এবং তা বিচার্য বিষয়কে অস্পষ্ট করে তুলবে এটা দেখিয়ে যে, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে এর কোনো পরিণতিই নেই। তাই, সরাসরি হোক বা পরোক্ষভাবে হোক ঈশ্বরের অবাধ্য হওয়ার ফলে যেসমস্ত অপরাধ ও দুঃখজনক ঘটনাগুলো ঘটে, সেগুলো যিহোবা পরদার আড়ালে থেকে রোধ করছেন না।a যিহোবা কখনোই এই ক্ষতিকর মিথ্যা কথাকে সমর্থন করবেন না যে, শয়তানের ব্যবস্থা সফল হতে পারে এবং তা সুখের চাবিকাঠি খুঁজে পেয়েছে! তবে, যিহোবা এই ঘটনাগুলোর ব্যাপারে উদাসীনও নন। বস্তুতপক্ষে, তিনি অত্যন্ত সক্রিয় আছেন, যা এখন আমরা দেখতে পাব।

‘আমার পিতা কার্য্য করিতেছেন’

যিশুর এই কথাগুলো দেখায় যে, ঈশ্বর ঘটনাগুলো যেভাবে ঘটছে, সেগুলো চুপচাপ বসে দেখছেন না। (যোহন ৫:১৭) এর পরিবর্তে, এদনে বিদ্রোহের সময় থেকে তিনি খুবই ব্যস্ত আছেন। উদাহরণস্বরূপ, তিনি বাইবেল লেখকদের তাঁর এই প্রতিজ্ঞা লিপিবদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করেছেন যে, এক ভাবী ‘বংশ’ শয়তান ও তার অনুচরদের ধ্বংস করবে। (আদিপুস্তক ৩:১৫) অধিকন্তু, সেই বংশের মাধ্যমে ঈশ্বর এক সরকার অর্থাৎ এক স্বর্গীয় রাজ্য গঠন করবেন, যা বাধ্য মানবজাতিকে আশীর্বাদ করবে এবং দুঃখকষ্টের সমস্ত কারণ ও এমনকি মৃত্যুকেও শেষ করে দেবে।—আদিপুস্তক ২২:১৮; গীতসংহিতা ৪৬:৯; ৭২:১৬; যিশাইয় ২৫:৮; ৩৩:২৪; দানিয়েল ৭:১৩, ১৪.

সেই চমৎকার প্রতিজ্ঞাগুলো পরিপূর্ণ করার একটা পদক্ষেপ হিসেবে যিহোবা সেই ব্যক্তিকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন, যিনি সেই রাজ্যের প্রধান শাসক হবেন। তিনি ঈশ্বরের পুত্র যিশু খ্রিস্ট ছাড়া আর কেউই নন। (গালাতীয় ৩:১৬) তাঁর জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যর সঙ্গে মিল রেখে, যিশু ঈশ্বরের রাজ্যের ওপর তাঁর শিক্ষাকে কেন্দ্রীভূত রেখেছিলেন। (লূক ৪:৪৩) বস্তুতপক্ষে, সেই রাজ্যের রাজা হিসেবে তিনি কী সম্পাদন করবেন, সেই সম্বন্ধে খ্রিস্ট এক জীবন্ত পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তিনি হাজার হাজার ক্ষুধার্তকে খাইয়েছিলেন, অসুস্থদের সুস্থ করেছিলেন, মৃতদের পুনরুত্থিত করেছিলেন আর এমনকি এক ভারী ঝড়কে শান্ত করার দ্বারা প্রাকৃতিক শক্তির ওপর তাঁর ক্ষমতা প্রদর্শন করেছিলেন। (মথি ১৪:১৪-২১; মার্ক ৪:৩৭-৩৯; যোহন ১১:৪৩, ৪৪) যিশু সম্বন্ধে বাইবেল বলে: “ঈশ্বরের যত প্রতিজ্ঞা, তাঁহাতেই সে সকলের ‘হাঁ’ হয়।”—২ করিন্থীয় ১:২০.

যারা যিশুর কথা শোনে এবং “জগতের”—ঈশ্বর থেকে বিচ্ছিন্ন এবং শয়তানের দ্বারা শাসিত বিধিব্যবস্থার—“মধ্য হইতে” বের হয়ে আসে, তারা যিহোবার পরিবারে আমন্ত্রিত। (যোহন ১৫:১৯) সত্য খ্রিস্টানদের বিশ্বব্যাপী এই পরিবার প্রেমের দ্বারা চালিত, শান্তির প্রতি নিয়োজিত এবং এর মধ্যে যেকোনো ধরনের গোঁড়ামি ও বর্ণবৈষম্য দূর করার দৃঢ়সংকল্পের দ্বারা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত।—মালাখি ৩:১৭, ১৮; যোহন ১৩:৩৪, ৩৫.

বর্তমান জগৎকে সমর্থন করার পরিবর্তে, সত্য খ্রিস্টানরা মথি ২৪:১৪ পদে লিপিবদ্ধ যিশুর আদেশের প্রতি বাধ্য হয়ে ঈশ্বরের রাজ্যকে সমর্থন করে ও এই সম্বন্ধে ঘোষণা করে। একটু ভেবে দেখুন: কারা বিশ্বব্যাপী “রাজ্যের এই সুসমাচার” প্রচার করছে? বিশ্বব্যাপী এক আধ্যাত্মিক পরিবার হিসেবে কারা যুদ্ধে এবং বিভেদ সৃষ্টিকারী জাতীয় ও উপজাতিগত দ্বন্দ্বে রত হওয়া প্রত্যাখ্যান করেছে? আর ঈশ্বরের বাক্যের উচ্চ মানগুলো জনপ্রিয় হোক বা না হোক, কারা সেগুলো অনুযায়ী তাদের আচরণকে পরিচালিত হতে দিয়েছে? (১ যোহন ৫:৩) অনেকে যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যগুলো দেখতে পায়। দয়া করে আপনি নিজেই প্রমাণ যাচাই করে দেখুন।

ঈশ্বরের শাসনের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিন!

ঈশ্বরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং শয়তানের দ্বারা বিপথে পরিচালিত মানবজাতি এমন এক জগৎব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যা আরও বেশি দুর্দশা ও নৈরাশ্য নিয়ে এসেছে। এমনকি পৃথিবীও ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে! অন্যদিকে, যিহোবা এক স্বর্গীয় সরকার স্থাপন করেছেন, যা লক্ষ লক্ষ লোকের জীবনকে উন্নত করেছে এবং তাদের প্রত্যেককে এক নিশ্চিত প্রত্যাশা দিয়েছে। (১ তীমথিয় ৪:১০) আপনি কোনটা বেছে নেবেন?

এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কারণ ঈশ্বর শয়তান ও তার দুষ্ট জগৎকে চিরকালের জন্য থাকতে দেবেন না। এই পৃথিবীকে পরমদেশ করে তোলার বিষয়ে ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্য কখনো পরিবর্তিত হয়নি। এই জন্য, তাঁর রাজ্য ও এর সমর্থকরা দিন দিন আরও সমৃদ্ধ হবে আর অন্যদিকে ঈশ্বর শয়তানের নিয়ন্ত্রণের অধীনস্ত জগতের শেষ না নিয়ে আসা পর্যন্ত দিন দিন এটা ‘যাতনা’ ভোগ করবে। (মথি ২৪:৩, ৭, ৮) তাই, আপনি যদি আন্তরিকভাবে ঈশ্বরের কাছে আর্তনাদ করে বলেন, “কেন?” তা হলে বাইবেলের সান্ত্বনার ও আশার বার্তা হৃদয়ে গ্রহণ করার মাধ্যমে তাঁর কথা শুনুন। এমনকি এখনো আপনার দুঃখের অশ্রু আনন্দাশ্রুতে পরিণত হতে পারে।—মথি ৫:৪; প্রকাশিত বাক্য ২১:৩, ৪. (g ১১/০৬)

[পাদটীকা]

a যদিও মাঝে মাঝে ঈশ্বর মানুষের বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করেছেন কিন্তু তাঁর কাজগুলো বর্তমান বিধিব্যবস্থার পক্ষে নয়। বরং, সেগুলো তাঁর উদ্দেশ্য সম্পাদনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।—লূক ১৭:২৬-৩০; রোমীয় ৯:১৭-২৪.

[৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

আপনি কি মানব শাসনের ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট?

[সৌজন্যে]

শিশু: © J. B. Russell/Panos Pictures; ক্রন্দনরত মহিলা: © Paul Lowe/Panos Pictures

[৮, ৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিশু পরমদেশ পুনর্স্থাপন করবেন—আর এমনকি মৃতদের জীবনে ফিরিয়ে আনবেন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার