যে সরকার পরমদেশ নিয়ে আসবে
যীশু যখন এই পৃথিবীতে ছিলেন তিনি তার শিষ্যদের ঈশ্বরের রাজ্যর জন্য প্রার্থনা করতে বলেন: “তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতে হউক।” (মথি ৬:৯,১০) তিনি অবিরত “রাজ্যের সুসমাচার” সম্বন্ধে কথা বলেন। (মথি ৪:২৩) বাস্তবিক তিনি অন্য বিযয়ের চাইতে রাজ্যের বিষয় সবচাইতে বেশি কথা বলেছিলেন। কেন? কারণ রাজ্যই হল একটি উপায় যা ঈশ্বর ব্যবহার করবেন সেই সব সমস্যার সমাধান করতে যা বর্ত্তমান জীবনকে করে তুলেছে দুর্ব্বিসহ। এই রাজ্যের মাধ্যমে ঈশ্বর অতি শীঘ্রই যুদ্ধ, ব্যাধি, ক্ষুধা ও অপরাধের অবসান ঘটাবেন এবং তার পারিবর্তে নিয়ে আসবেন একতা ও শান্তি। আপানি কি সেই ধরনের পৃথিবীতে বাস করতে চান? তাহলে আপনাকে ছবি দিয়ে সাজানো এই পুস্তকটি পড়তে হবে। এটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন যে এই রাজ্যটি হল একটি সরকার কিন্ত এটি মানুষের উপর শাসনাধীন যে কোন সরকার চাইতে অনেক বেশি উন্নত। আপনি আরও দেখবেন যে, কিভাবে ঈশ্বর ক্রমশ তাঁর দাসেদের কাছে রাজ্যের উদ্দেব্য সম্বন্ধে ব্যাক্ত করেন। তাছাড়া আপনি উপলব্ধি করবেন যে এই রাজ্য বর্ত্তমানে আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারে।
কার্য্যতঃ, এখনি আপনি ঈশ্বরের রাজ্যের সদস্য হতে পারেন। কিন্ত তার আগে আপনাকে এর সমন্ধে আরও অনেক কিছু জানতে হবে। তাই আমরা আপনাকে উৎসাহ দিচ্ছি এই ছবি সহ পুস্তকটির পরীক্ষা করে দেখতে। এর মধ্যে আপনি রাজ্য সমন্ধে যা কিছু জানতে পারবেন তা সবই বাইবেল থেকে নেওয়া। প্রথমে আসুন দেখি কেন আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যের এতো প্রয়োজন।
মানব ইতিহাসের আরম্ভে, ঈশ্বর মানুষকে সিদ্ধভাবে এক পরমদেশে বাস করতে দেন। সেই সময়ে রাজ্যের কোন প্রয়োজন ছিল না।
কিন্তু আমাদের প্রথম পিতামাতা, আদম ও হবা বিদ্রোহী দূত শয়তানের কথা শোনে। সে তাদেরকে ঈশ্বরের সমন্ধে মিথ্যা কথা বলে এবং তাদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নিয়ে যায়। তাই মৃত্যুই তাদের পাওনা হয় কারণ, “পাপের বেতন মৃত্যু।”—রোমীয় ৬:২৩.
অসিদ্ধ ও পাপী মানুষের কখনও সিদ্ধ সন্তান হতে পারেনা। তাই আদমের সকল সন্তানেরাও হয় অসিদ্ধ, পাপী ও মরণশীল।—রোমীয় ৫:১২.
সেই সময় থেকে, মানুষের প্রয়োজন হয়ে পড়ে ঈশ্বরের রাজ্য যা তাদেরকে সাহায্য করবে পাপ ও মৃত্যুর অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে। ঈশ্বরের নামের বিরুদ্ধে শয়তান যে মিথ্যা কথা বলেছিল, তাহাও এই রাজ্যই মুছে দেবে।
যিহোবা ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে এমন একটি বিশেষ “বীজের” (বংশের) জন্ম হবে যার দ্বারা সমস্ত মানবজাতি পাপের হাত থেকে রেহাই পাবে। (আদিপুস্তক ৩:১৫) এই “বীজই” হবেন ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা।
কে সেই ব্যক্তি?
আদম পাপ করার প্রায় ২,০০০ বৎসর পরে অব্রাহাম নামে এক বিশ্বস্ত ব্যাক্তি বেঁচে ছিলেন। যিহোবা অব্রাহামকে নিজের দেশ ছেড়ে পলস্টিয়দের দেশে যেতে বলেন এবং সেখানে তাঁবু খাটি য়ে বসবাস করতে বলেন।
যিহোবার আদেশ অনুসারে অব্রাহাম সবকিছু করেন এমনকি একটি অত্যন্ত কঠিন কাজও তিনি করেন। যিহোবা তাঁকে তাঁর পুত্র ইসহাক্ কে এক যোগ্য বেদীর উপরে বলি দিতে নির্দেশ দেন।
যিহোবা কখনও নরবলি চাইতে পারেন না। কিন্ত তিনি দেখতে চেয়েছিলেন যে তাঁর প্রতি অব্রাহামের প্রেম কতখানি গভীর। তাই যখন অব্রাহাম ইসহাক্কে বলি দিতে যাবেন সেই মুহুর্ত্তে যিহোবা তাকে সেই কাজ করা থেকে বিরত করেন।
অব্রাহামের এই অটল বিশ্বাসের জন্যই যিহোবা তাকে প্রতীজ্ঞা করেন যে তিনি এই পলেস্টিয় নগর তাঁর সন্তানদের দেবেন এবং তাঁর ও তাঁর পুত্র ইসহাকের বংশে প্রতিজ্ঞাত বীজ আসবে।—আদিপুস্তক ২২:১৭,১৮; ২৬:৪,৫.
ইসহাকের দুই যমজ পুত্র ছিল, এষৌ ও যাকোব। যিহোবা বলেছিলেন যে যাকোবের মাধ্যমে প্রতিজ্ঞাত বীজ আসবে।—আদিপুস্তক ২৮:১৩-১৫.
যাকোব, যার নাম যিহোবা ইস্রায়েল রেখেছিলেন, তার ১২টি সন্তানাদি হয়। এই ভাবে আব্রাহামের সন্তানের সংখ্যা ক্রমশই বৃদ্ধি পায়।—আদিপুস্তক ৪৬:৮-২৭.
সেই অঞ্চলে যখন ভয়াভহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় তখন যাকোব ও তার পরিবার মিশরের শাসক ফরোনের আমন্ত্রণে মিশরে গিয়ে উপস্তিত হন।—আদিপুস্তক ৪৫:১৬-২০.
মিশরে প্রকাশিত হয় যে সেই প্রতিজ্ঞাত বীজ হবেন যাকোবের পুত্র যিহূদার বংশধর।—আদিপুস্তক ৪৯:১০.
কালক্রমে যাকোবের মৃত্যু হয়, তার সন্তানদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে থাকে যতক্ষন না তারা একটি জাতিতে পরিণত হয়। তাতে মিশরীয়রা অত্যন্ত ভীত হয়ে পড়ে এবং তাদেরকে দাসে পরিণত করে।—যাত্রাপুস্তক ১:৭-১৪.
অবশেষে যিহোবা মোশি নামে এক বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে পাঠালেন, ফরৌণকে বলবার জন্য যে সে যেন ইস্রায়েল সন্তানদের মুক্তি দেয়।—যাত্রাপুস্তক ৬:১০-১১.
ফরৌণ মুক্তি দিতে অস্বীকার করাতে যিহোবা মিশরীয়দের উপরে দশটি আঘাত আনেন। শেষ আঘাতে তিনি এক মৃত্যু দূত পাঠান মিশরের সমস্ত প্রথমজাত সন্তানদের হত্যা করবার জন্য।—যাত্রাপুস্তক, ৭ থেকে ১২ অধ্যায়.
ঈশ্বর ইস্রায়েলীদের জানালেন যে যদি তারা তাদের সান্ধ্যভোজনের জন্য একটি মেষ বধ করে যদি তার রক্ত ঘরের সদর দ্বারে লেপে দেয় তাহলে মৃত্যু দুত সেই ঘর অতিক্রম করে যাবে। এই ভাবে ইস্রায়েলীদের প্রথমজাত সন্তানরা রক্ষা পাবে।—যাত্রাপুস্তক১২:১-৩৫.
এর ফলে ফরৌণ আদেশ দেয় যে ইস্রায়েলীয়রা যেন মিশর দেশ ছেড়ে চলে যায়, কিন্ত পরে সে তার মন পরিবর্ত্তন করে এবং তাদেরকে ফিরিয়ে আনবার জন্য পিছু ধাওয়া করে।
যিহোবা লোহিত সাগরের মধ্যে দিয়ে পথ খুলে দেন, এবং যখন ফরৌণ ও তার সৈন্যরা তাদেরকে ধাওয়া করতে আসে তখন তারা সেই জলের তলায় নিমজ্জিত হয়।—যাত্রাপুস্তক ১৫:৫-২১.
যিহোবা ইস্রায়েল সন্তানদের প্রান্তরে অবস্থিত সীনয় পর্ব্বতের কাছে নিয়ে গেলেন। সেখানে তিনি তাঁদের আইন প্রদান করেন এবং বলেন যে, যদি তারা তা মেনে চলে তাহলে তারা রাজ্যের পুরোহিত এবং পবিত্র জাতি হিসাবে পরিগনিত হবে। তাই কালক্রমে ঈশ্বরের রাজ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান গ্রহন করার সুযোগ ইস্রায়েলীয়দের ছিল।—যাত্রাপুস্তক ১৯:৬; ২৪:৩-৮.
সীনয়ের পার্ব্বত্য অঞ্চলে প্রায় এক বছর থাকার পর, যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের নিয়ে গেলেন প্যালেস্টাইনের দেশের অভিমুখে যা তিনি তাদের পূর্ব্বপুরুষ আব্রাহামকে দেবেন বলে প্রতীজ্ঞা করেছিলেন। পরে ঈশ্বর প্যালেস্টাইন দেশে ঈস্রায়েলীদেরকে রাজ শাসনাধীনে আসতে অনুমতি দেন। সেই সময়, পৃথিবীতে ঈশ্বরের এক রাজ্য ছিল।
ইস্রায়েলের দ্বিতীয় রাজা ছিলেন দায়ূদ এবং তিনি ছিলেন যিহূদার বংশধর। দায়ূদ ইস্রায়েলদের সমস্ত শক্রকে পরাজিত করেন এবং যিরুশালেমকে করেন ইস্রায়েলের রাজধানী।
দায়ূদের রাজত্বের ঘটনাগুলি প্রমান করে যিহোবা যখন কোন রাজাকে সাহায্য করেন তখন কোন পার্থিব শাসক তাকে পরাজিত করতে পারে না।
যিহোবা বলেন যে প্রতিজ্ঞাত বীজ হবে দায়ূদের একজন বংশধর।—১ বংশাবলী ১৭:৭,১১,১৪.
সলোমন, দায়ূদের পরে সিংহাসনে বসেন, ও রাজ্যত্ব করেন। তিনি এক অত্যন্ত বিচক্ষণ রাজা ছিলেন এবং তাঁর রাজত্বকালে ইস্রায়েলীয়রা খুবই সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠে।
সলোমন যিহোবার জন্য যিরুশালেমে এক অপূর্ব্ব মন্দির নির্ম্মান করেন। সলোমনের রাজত্ব কালে ইস্রায়েলের পরিস্তিতি দেখায় যে ঈশ্বরের রাজ্য মানবজাতির জন্য কি ধরণের আশীর্বাদ নিয়ে আসবে।—১ রাজাবলী ৪:২৪,২৫.
কিন্ত, সলোমনের পরে অনেক রাজারা শাসনে এসেছেন যারা একেবারে বিশ্বস্ত ছিলেন না।
কিন্ত দায়ূদের বংশধরেরা যখন যিরুশালেমে রাজত্ব করছিলেন তখন যিহোবা ভাববাদী যিশাইয় দ্বারা বলেছিলেন যে দায়ূদের এক ভবিষ্যৎ পুত্র সমস্ত পৃথিবী বিশ্বস্ততায় শাসন করবেন। সেই হবে প্রতিজ্ঞাত বীজ।—যিশাইয় ৯:৬,৭.
যিশাইয় ভাববাদী বলেছিলেন যে তাঁর রাজত্ব হবে শলোমনের চাইতেও অনেক বেশি মহিমান্বিত।—যিশাইয় ১১ ও ৬৫ অধ্যায়।
কে সেই বীজ হতে পারে, তা জানবার জন্য ঈশ্বরের দাসেরা অধীর হয়ে পড়েন।
কিন্ত সেই বীজের আগমন হওয়ার আগেই ইস্রায়েলের রাজারা এতোই অবিশ্বস্ত হয়ে পড়ে যে ৬০৭ খ্রী.পুঃ যিহোবা বাবিলনীয়দের দ্বারা সেই জাতিকে পরাজিত করেন এবং অধিকাংশ লোকই বাবিলনে নির্বাসিত হয়। কিন্ত ঈশ্বর তাঁর প্রতিজ্ঞাকে ভুলে জাননি। দায়ূদের বংশ থেকে বীজের আবির্ভাব হবে।—যিহিস্কেল ২১:২৫-২৭.
ইস্রায়েলে যা ঘটেছিল তার থেকে প্রমানিত হয় যে যদিও বিচক্ষন ও বিশ্বস্ত মানব রাজা কিছু উপকার আনতে পারে কিন্ত তা সীমিত। বিশ্বস্ত লোকেরা মারা যান এবং তাদের উত্তরাধিকারীরা বিশ্বস্ত নাও থাকতে পারে। এর সমাধান কি? প্রতিজ্ঞাত বীজ।
কালক্রমে হাজার বছরেরও পরে, সেই বীজের আগমন ঘটে, সে কে?
ঈশ্বরের এক দূত এই উত্তর দেন এক ইস্রায়লীয় কুমারী মরীয়মকে। তিনি বলেন যে তাঁর একটি পুত্র সন্তান হবে যার নাম হবে যীশু। দূত মরিয়মকে এই কথাগুলি বলেন: “তিনি মহান হইবেন আর তাঁহাকে পরাৎপরের পুত্র বলা যাইবে; আর যিহোবা ঈশ্বর তাঁহার পিতা দায়ুদের সিংহাসন তাঁহাকে দিবেন; আর তিনিই রাজত্ব করিবেন।”—লূক ১:৩২,৩৩.
তাই যীশু হলেন সেই প্রতিজ্ঞাত বীজ এবং ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা। কিন্ত পূর্বে যে সব বিশ্বস্ত লোকেরা ছিলেন তাঁদের তুলনায় যীশু কোন অর্থে আলাদা?
যীশুর জন্ম হয়েছিল অলৌকিক ভাবে। তাঁর মা, ছিলেন কুমারী এবং তাঁর কোন পার্থিব পিতা ছিল না। যীশুর পূর্বে অস্তিত্ব ছিল স্বর্গে এবং ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা বা কার্য্যকারী শক্তি, যীশুর জীবনকে স্বর্গ থেকে মরীয়মের গর্ভে স্থানান্তরিত করে। তাই আদমের সেই পাপকে উত্তরাধিকারী সূত্রে পাননি। যীশু জীবনে কখনো পাপ করেননি।—১ পিতর ২:২২.
যখন তার ৩০ বৎসর বয়স, তখন যীশু বাপ্তিস্ম গ্রহন করেন।
তিনি লোকেদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে বলেন এবং কালক্রমে সেই রাজ্যের রাজা হিসাবে নিজের পরিচয় দেন।—মথি ৪:২৩; ২১:৪-১১.
তিনি অনেক অলৌকিক কাজও করেছিলেন।
তিনি অসুস্থকে সুস্থ করে তুলেছিলেন।—মথি ৯:৩৫.
তিনি অলৌকিক ভাবে ক্ষুদিতদের খাইয়েছিলেন।—মথি ৯:১৪-২২.
এমনকি মৃতদের তুলেছিলেন।—মথি ৯:১৮,২৩-২৬.
এই অলৌকিক কাজগুলি দেখায় যে ঈশ্বরের রাজা হিসাবে যীশু মানুষের জন্য কি করবেন।
আপনার কি মনে আছে রাজা দায়ুদ, কিরুপে যিরুশালেমকে তাঁর রাজধাণী করেছিলেন? যীশু ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন যে ঈশ্বরের রাজ্য পৃথিবীতে থাকবে না, থাকবে স্বর্গে। (যোহন ১৮:৩৬) এই জন্যই সেই রাজ্যকে বলা হয়ে থাকে “স্বর্গীয় যিরুশালেম।”—ইব্রীয় ১২:২২,২৮.
যীশু কয়েকটী আইনের কথা উল্লেখ করেন যা, রাজ্যের সদস্য যারা হতে চান তাদেরকে মেনে চলতে হবে। সেই আইনগুলি এখন বাইবেলে পাওয়া যায়। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন হল ঈশ্বরকে ও পরস্পরকে প্রেম করা।—মথি ২২:৩৭-৩৯.
যীশু আরও বলেন যে তিনি একা রাজত্ব করবেন না। কিছু মানুষকে বেছে নেওয়া হবে তাঁর সাথে স্বর্গে রাজত্ব করবার জন্য। (লূক ১২:৩২; যোহন ১৪:৩) এঁদের সংখ্যা কতজন? প্রকাশিতবাক্য ১৪:১ পদ উত্তর দেয় ১৪৪,০০০।
যদি মাত্র ১৪৪,০০০ জন যীশুর সাথে রাজত্ব করবার জন্য স্বর্গে যান তাহলে বাদবাকী মানুষেরা কিসের আশায় থাকবে?
বাইবেল জানায় “ধার্ম্মিকেরা দেশের অধিকারী হইবে, তাহারা নিয়ত তথায় বাস করিবে।”—গীতসংহিতা ৩৭:২৯.
যারা পৃথিবীতে অনন্তকাল বাস করিবে তাদের বলা হয়ে থাকে “অপর মেষ।”—যোহন ১০:২৬.
তাই দুটি আশা রয়েছে। যিহোবা ঈশ্বর ১৪৪,০০০ জনকে আমন্ত্রন জানিয়েছেন যীশু খ্রীষ্টের সাথে স্বর্গে রাজত্ব করতে। কিন্ত লক্ষ লক্ষ মানুষের আশা হল এই পৃথিবীতে তাঁর রাজ্যের সদস্য হিসাবে চিরকাল বেঁচে থাকা।—প্রকাশিতবাক্য ৫:১০.
শয়তান যীশুকে ঘৃণা করত এবং তাঁর বিরোধীতা করে। সাড়ে তিন বৎসর প্রচার করার পর শয়তান, যীশুকে গ্রেপ্তার করায় এবং গাছে টাঙ্গিঁয়ে বধ করায়। ঈশ্বর কেন তা করতে অনুমতি দিলেন?
মনে রাখবেন যে আদমের বংশধর হিসাবে আমরা সকলেই পাপ করি এবং মৃত্যুও বরণ করি।—রোমীয় ৬:২৩.
ইহাও মনে রাখবেন যে যীশু অলৌকীক ভাবে জন্মে ছিলেন, তিনি সিদ্ধ ছিলেন এবং তার মরার কোন প্রয়োজন ছিল না। যাইহোক, ঈশ্বর অনুমতি দিয়েছিলেন যে “শয়তান যেন তার পাদমূল চূর্ণ করে ও তাঁকে মেরে ফেলে। কিন্ত ঈশ্বর তাঁকে আত্মিক ভাবে জীবিত করেন এবং অমরজীবন দেন। যেহেতু তাঁর তখনও সিদ্ধ মানব জীবনের অধিকার ছিল তাই তিনি তা ব্যবহার করতে পারেন মনুষ্যকে পাপ থেকে মুক্তি করতে।—আদিপুস্তক ৩:১৫; রোমীয় ৫:১২,২১; মথি ২০:২৮.
যাতে আমরা গভীরভাবে যীশুর আত্মবলিদান উপলব্ধি করতে পারি, তাই বাইবেল ভাববানী মূলক নমুনার মাধ্যমে এই সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করে।
উদাহরন স্বরুপ আপনার কি মনে আছে যিহোবা আব্রহামের প্রেমকে পরীক্ষা করার উদ্দেব্যে কি ভাবে তাঁকে তাঁর পুত্রকে, বলিদান দিতে বলেছিলেন?
ইহা এক ভাববানী মূলক নমুনা ছিল যীশুর বলিদানের। এটি দেখায় যে মানবজাতির প্রতি যিহোবার প্রেম এতো গভীর যে তিনি তাঁর পুত্র যীশুকে আমাদের জন্য মৃত্যু বরণ করতে অনুমতি দেন যাতে আমরা জীবন পাই।—যোহন ৩:১৬.
আপনার কি মনে আছে যিহোবা কি ভাবে মিশর দেশ থেকে ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করেন এবং মৃত্যু দূতের হাত থেকে তাদের প্রথম জাতদের বাঁচিয়ে রাখেন?—যাত্রাপুস্তক ১২:১২,১৩.
ইহাও ভাববানী মূলক নমুনা। ঠিক তেমনি যীশুর রক্ত তাদেরকেই জীবন দেবে যারা তাঁকে বিশ্বাস করবে। যেহেতু সেই রাত্রি ছিল ইস্রায়েলদের মুক্তির রাত্রি ঠিক তেমনি যীশুর মৃত্যু হল পাপ ও মৃত্যু থেকে মানবজাতির মুক্তি।
সেই জন্য যীশুকে বলা হয়ে থাকে “ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।”—যোহন ১:২৯.
যাহাহোক, যখন যীশু পৃথিবীতে ছিলেন তিনি শিষ্যদের একত্র করেন এবং তাদের শিক্ষা দেন সুসমাচার প্রচার করতে, এমনকি তার মৃত্যুর পরেও।—মথি ১০:৫; লূক ১০:১.
এরাই হছেন প্রথম মানব শ্রেণী যাঁদের ঈশ্বর বেছে নিয়েছিলেন যীশুর সাথে তাঁর রাজ্যে রাজত্ব করার জন্য।—লূক ১২:৩২.
আপনার কি মনে আছে যে ঈশ্বর প্রতীজ্ঞা করেছিলেন যিহূদীদের কাছে যে যদি তারা তাঁর আইন মেনে চলে তাহলে তারা “রাজ্যের পুরোহিতের” সম্মান পাবে? বর্ত্তমানে তাদের ঈশ্বরের রাজ্যের অংশ হওয়া এবং স্বর্গীয় পুরোহিত হিসাবে সেবা করার সুযোগ আসে যদি অবশ্য তারা যীশুকে গ্রহণ করে। কিন্ত অধিকাংশই যীশুকে অগ্রাহ্য করে। তাই সেই সময় থেকে যিহূদীরা আর ঈশ্বরের মনোনীত দাস নয় প্যালেস্টাইন আর প্রতিজ্ঞাত দেশ নয়।—মথি ২১:৪৩; ২৩:৩৭, ৩৮.
যীশুর সময় থেকে আমাদের দিন পর্য্যন্ত, যিহোবা সেই সব লোকেদেরকে একত্রীত করছেন যাঁরা স্বর্গে যীশুর সাথে রাজত্ব করবেন। আজও এই পৃথিবীতে তাঁদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক রয়েছেন। আমরা তাদেরকে মনোনীত অবশিষ্টাংশ বলে থাকি।—প্রকাশিতবাক্য ১২:১৭.
এখন আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে আরম্ভ করেছেন যে ঈশ্বরের রাজ্য কি? এটি হচ্ছে একটি স্বর্গীয় সরকার, এর রাজা হলেন যীশু খ্রীষ্ট এবং তাঁর সাথে রয়েছেন পৃথিবী থেকে কৃত ১৪৪,০০০। মানুষজাতির উপরে যারা বিশ্বস্ত তাদের উপরে শাসন করবে এবং সমস্ত মানবজাতির উপরে শান্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা রাখবেন।
তার মৃত্যু পর যীশু পুনরুত্থিত হন এবং স্বর্গে গমন করেন। সেখানে তাঁকে অপেক্ষা করতে হয় যতক্ষন না ঈশ্বর তাঁকে বলেন, যে কোন সময় তিনি ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা হিসাবে শাসন ভার গ্রহণ করবেন। (গীতসংহিতা ১১০:১) সেই সময়টি কখন?
অনেক সময় যিহোবা তাঁর লোকেদেরকে স্বপ্নের মাধ্যমে তাঁর রাজ্য সম্বন্ধে অনেক তথ্য প্রকাশ করেছেন।
দানিয়েলের সময় যিহোবা এই ধরণের স্বপ্ন দেখান বাবিলনের রাজা নবুখদ্নিৎসরকে। এটি ছিল একটি খুব বড় বৃক্ষের স্বপ্ন।—দানিয়েল ৪:১০-৩৭.
এই গাছটি কে কেটে ফেলা হয় এবং তার কান্ডটিকে বা গুড়িকে বেঁধে রাখা হয় সাত বৎসরের জন্য।
এই গাছটি নবুখদ্নিৎসরকে চিত্রিত করে। ঠিক যেমন সাত বছরের জন্য গুড়িটিকে বেঁধে রাখা হয় ঠিক তেমনি সাত বছরের জন্য নবুখদ্নিৎসর পাগল হয়ে যায়। তারপর তার মানসিক পরিস্থিতি আবার সুস্থ হয়।
এই সমস্তই হল ভাববানি মূলক নমুনা। নবুখদ্নিৎসর চিত্রিত করে যিহোবার সর্ব্বভৌমত্বকে। প্রথমে, এটি পালিত হয় যিরুশালেমে রাজা দায়ুদের বংশধরের মাধ্যমে। ৬০৭ খৃ.পূ. যখন বাবিলন, যিরুশালেমকে পরাজিত করে তখন রাজাদের দ্বারা এই শাসন বাধাপ্রাপ্ত হয়। তখন থেকে দায়ূদের বংশের আর কোন রাজা থাকবে না যতক্ষন না, “তিনি না আইসেন যাঁহার অধিকার।” (যিহিষ্কেল ২১:২৭) তিনি হলেন যীশু খ্রীষ্ট।
কত সময় অতিবাহিত ৬০৭ খৃ.পূ. থেকে যখন যীশু রাজত্ব করতে আরম্ভ করবেন? ভাববানী মূলক সাত বৎসর। তাহল, ২,৫২০ বৎসর। (প্রকাশিতবাক্য ১২:৬,১৪) আর ৬০৭ খৃ.পূ. থেকে যদি আমরা ২,৫২০ বৎসর গুনি তা আমাদের নিয়ে আসবে ১৯১৪ সালে।
তাই যীশু ১৯১৪ সালে স্বর্গেতে শাসন করতে আরম্ভ করেন। এর অর্থ কি?
বাইবেল এই সম্বন্ধে প্রেরিত যোহনের দেখা একটি দর্শন সম্বন্ধে উল্লেখ করে।
তিনি দেখান যে স্বর্গেতে এক নারী পুত্র সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন।—প্রকাশিতবাক্য ১২:১-১২.
সেই নারীটি চিত্রিত করে ঈশ্বরের স্বর্গীয় সংগঠনকে, যার অন্ত্রভুক্ত হল ঈশ্বরের দাস স্বর্গীয় দূতেরা। আর সেই পুত্র সন্তান চিত্রিত করে ঈশ্বরের রাজ্যকে, এর “জন্ম” হয় ১৯১৪ সালে।
এর পরে কি হয়? রাজা হিসাবে প্রথমেই যীশু শয়তান ও সেই দূতেদেরকে যারা তাঁর সাথে বিদ্রোহীতা করেছে তাদেরকে স্বর্গ থেকে বিতারিত করে, পৃথিবীতে ফেলে দেন।—প্রকাশিতবাক্য ১২:৭.
এর ফলাফল সম্বন্ধে বাইবেল জানায়:“ অতএব, হে স্বর্গ ও তন্নিবাসিগন, আনন্দ কর, পৃথিবীও সমুদ্রের সন্তাপ হইবে; কেননা দিয়াবল তোমাদের নিকটে নামিয়া গিয়াছে; সে অতিশয় রাগাপন্ন, সে জানে তাহার কাল সংক্ষিপত।”—প্রকাশিতবাক্য ১২:১২.
তাই যীশু যখন স্বর্গেতে রাজত্ব শুরু করেন তখন তাঁর শত্রুরা পৃথিবীতে হয়ে ওঠে খুবিই তৎপর। যেমন বাইবেল ভবিষ্যৎবাণী করেছিল যে তিনি শত্রুদের মধ্যে রাজত্ব শুরু করবেন।—গীতসংহিতা ১১০:১,২.
এটি মানুষের জন্য কি বোঝায়?
যীশু আমাদেরকে যুদ্ধ, খাদ্যাভাব, ব্যাধি এবং ভূমিকম্প সম্বন্ধে বলেছিলেন।—মথি ২৪:৭,৮ লূক ২১:১০,১১.
আমরা দেখছি এইগুলি ঘটছে ১৯১৪ সাল থেকে, ইহা হচ্ছে আর একটি কারন কেন আমরা জানি যে রাজ্য তার শাসন শুরু করেছে।
তাছাড়া “জাতিগনের ক্লেশ হইবে. . . আশঙ্কায় মানুষের প্রান উড়িয়া যাইবে।” (লূক ২১:২৫,২৬) এও আমরা ১৯১৪ সাল থেকে দেখছি।
প্রেরিত পৌল আরও বলেন যে লোকেরা হবে “আত্মপ্রিয়,. . .পিতামাতার অবাধ্য, ক্ষমাহীন, অপবাদক, অজিতেন্দ্রিয়।”—২ তিমথিয় ৩:২-৫.
এখন আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে বর্ত্তমান জীবন কেন এত কস্টকর। কিন্ত ঈশ্বরের রাজ্যও সমান তৎপর।
১৯১৪ সালের ঠিক পৃথিবী থেকে, যীশুর সাথে যারা স্বর্গে রাজত্ব করবেন তাঁদের অবশিস্টাংশরা রাজ্যের প্রতিষ্ঠার সুসমাচার বলতে থাকেন। যীশুর কথা অনুসারে এই কাজে এখন পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।—মথি ২৪:১৪.
এই প্রচার কাজের উদ্দেব্য কি?
প্রথমত, ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে লোককে জানানো।
দ্বিতীয়, মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করা, যে তারা এই রাজ্যের প্রজা হতে চায় কি না।
যীশু বলেছিলেন যে আমাদের সময় সমস্ত মানবজাতি মেষ তূল্য ও ছাগতূল্য ব্যক্তি হিসাবে বিভক্ত হবে।—মথি ২৫:৩১-৪৬.
তারাই হল মেষ যারা তাঁকে ও তাঁর ভাইদেরকে প্রেম করে। এবং ছাগেরা হল তারাই যারা তা করে না।
“মেষেরা” অনন্তজীবন পাবে, “ছাগেরা” পাবে না।
এই বিভক্তি করণের কাজে রাজ্যের সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমে করা হচ্ছে।
এখানে ভাববাদী যিশাইয় এক ভাববানী বলে।
“শেষকালে এইরুপ ঘটিবে, যিহোবার গৃহ পর্ব্বত পর্ব্বতগনের মস্তকরুপে স্থাপিত হইবে, উপর্ব্বতগনের মস্তকরুপে স্থাপিত হইবে; এবং সমস্ত জাতি তাহার দিকে স্রোতের ন্যায় প্রবাহিত হইবে।”—যিশাইয় ২:২.
মানুষ এখন “শেষ কালের” মুখোমুখি।
যিহোবার “গৃহ” যা হচ্ছে উপাসনা তা মিথ্যা ধর্ম্মের “উপরে” স্থাপিত হয়েছে।
“আর অনেক দেশের লোক যাইবে, বলিবে, চল, আমরা যিহোবার পর্ব্বতে যাকোরের ঈশ্বরের গৃহে গিয়া উঠি, তিনি আমাদিগকে আপন পথের বিষয়ে শিক্ষা দিবেন, আর আমরা তাঁহার মার্গে গমন করিব।”—যিশাইয় ২:৩.
তাই বিভিন্ন জাতি থেকে লোকেরা আসছে যিহোবার উপাসনা করতে এবং তাদের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য অপরকেও আমন্ত্রন জানাচ্ছে। তারা শিখছে কি ভাবে যিহোবার ইচ্ছা অনুসারে কাজ করতে হয়।
“আর তাহারা আপন আপন খড়গ ভঙ্গিয়া লাঙ্গলের ফাল গড়িবে; ও আপন আপন বড়শা ভাঙ্গিয়া কাস্তা গড়িবে; এক জাতি অন্য জাতির বিপরীতে আর খড়গ তুলিবে না, তাহারা আর যুদ্ধ শিখিবে না।”—যিশাইয় ২:৪.
আর যাহারা যিহোবাকে উপাসনা করে একতাবদ্ধ ও শান্তিপ্রিয় হইবে।
ঈশ্বরের রাজ্যের এই তৎপরতার ফলে আজকে প্রায় ত্রিশ লক্ষ মানুষ বিশ্বব্যাপী নিজেদেরকে রাজ্যের প্রজা হিসাবে পরিচয় দিয়ে চলেছে।
তারা অবশিস্টাংশদেরকে ঘিরে রয়েছে, সেই অবশিস্টাংশ যাঁদের আশা খ্রীষ্টের সাথে স্বর্গে রাজত্ব করা।
তাঁরা ঈশ্বরের সংগঠন থেকে আত্মিক খাদ্য পেয়ে থাকেন।—মথি ২৪:৪৫-৪৭.
তারা হচ্ছে আন্তর্জাতিক খ্রীষ্টের ভ্রাতৃসমাজ যারা একে অপরকে ভালবাসে।—যোহন ১৩:৩৫.
তারা মানসিক শান্তি উপলদ্ধি করে এবং আশা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে থাকে।—ফিলিপীয় ৪:৭.
যত শীঘ্র সুসমাচার প্রচারিত হবে, “মেষদেরকে” একত্রিত করা হবে। তারপর রাজ্য কি করবে?
আপনার কি মনে আছে যে বিশ্বস্ত রাজা দায়ূদ, ঈশ্বরের লোকের, সমস্ত শত্রুকে পরাজিত করেন? রাজা যীশু ঠিক তাই করবেন।
রাজা নবুখদ্নিৎসর একটি বিশাল মূর্ত্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন যা তাঁর সময়ের থেকে আরম্ভ করে আমাদের দিন অবধি সমস্ত পৃথিবীর সাম্রাজ্যকে চিত্রিত করে।
এরপর তিনি দেখেন যে পর্ব্বত থেকে একটি খোদিত পাথর এসে মূর্ত্তিটিকে ভেঙ্গে চূরমার করে দেয়। সেই পাথরটি ঈশ্বরের রাজ্যকে চিত্রিত করে।
এর অর্থ হল বর্ত্তমান দুষ্ট বিধিব্যাবস্থার ধংশ।—দানিয়েল ২:৪৪.
এখানে কয়েকটি জিনিষের কথা উল্লেখিত হয়েছে যা রাজ্যের দ্বারা বিনস্ট হতে চলেছে।
মিথ্যা ধর্ম্ম অদৃশ্য হবে, ঠিক যেমন একপাট যাঁতার তূল একখানা প্রস্তর সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয়।—প্রকাশিতবাক্য ১৮:২১.
এই জন্য ঈশ্বরের প্রিয় লোকেদেরকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে এখনই মিথ্যা ধর্ম্ম থেকে বেরিয়ে আসতে।—প্রকাশিতবাক্য ১৮:৪.
এরপরে রাজা যীশু “জাতিগনকে আঘাত করবেন. . .আর লৌহ দন্ড দ্বারা তাহাদিগকে শাসন করিবেন।”—প্রকাশিতবাক্য ১৯:১৫.
যদিও যিহোবার সাক্ষীরা কর দিয়ে থাকে এবং দেশের আইন মেনে চলে কিন্ত তারা কখনও রাজনীতিতে যোগ দেয় না।
পরিশেষে শয়তান অর্থাৎ সেই নাগকে অগাধলোকে নিক্ষেপ করা হয়।—প্রকাশিতবাক্য ২০:২,৩.
কেবলমাত্র “মেষ” যারা রাজা যীশুকে সমর্থন করে তারা মহাক্লেশের মধ্য দিয়ে বেঁচে যাবে।—মথি ২৫:৩১-৩৪;৪১, ৪৬.
প্রেরিত যোহন সেই “মেষেদের” স্বপ্ন দেখেন যারা মহাক্লেশের মধ্য দিয়ে বেঁচে যায়।
“ইহার পরে আমি দৃষ্টি করিলাম আর দেখ, প্রত্যেক জাতির ও বংশের ও প্রজাবৃন্দের ও ভাষার বিস্তর লোক, তাহা গননা করিতে সমর্থ কেহ ছিল না; তাহারা সিংহাসনের সম্মুখে ও মেশশাবকের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছে; তাহারা শুক্লবস্ত্র পরিহিত, ও তাহাদের হস্তে খেজুর পত্র।”—প্রকাশিতবাক্য ৭:৯.
সুসমাচারের প্রতি যারা সাড়া দেয় তারাই হচ্ছে “বিস্তর জনতা”।
তারা মহাক্লেশের “মধ্য হইতে আসিয়াছে।”—প্রকাশিতবাক্য ৭:১৪.
“খেজুর পত্র” দেখায় যে তারা যীশু খ্রীষ্টকে রাজা হিসাবে আমন্ত্রন জানাচ্ছে।
তাদের পরণে “শুক্ল বস্ত্র” প্রমান করে যে যীশুর বলিদানে তাদের বিশ্বাস রয়েছে।
“মেষ” হচ্ছেন যীশু খ্রীষ্ট।
এর পরে তারা কি ধরণের আশীর্ব্বাদ উপভোগ করবেন? আপনার কি মনে আছে যে শলোমনের রাজত্বের সময় ইস্রায়েলে কি ধরণের আনন্দ বিরাজ করেছিল? ইহা রাজা যীশুর আধীনে একটি ছোট নমুনা ছিল।
মনুষ্যদের মধ্যে এবং মানুষ ও পশুদের মধ্যে থাকবে বাস্তবিক শান্তি, যেমন যিশাইয় ভাববাদি ভবিষৎবাণী করেন।—গীতসংহিতা ৪৬:৯; যিশাইয় ১১:৬-৯.
যীশু অসুস্থ ব্যক্তিদের আরোগ্য করেন যখন তিনি পৃথিবীতে ছিলেন, সেইকারণে তিনি মানুষের মধ্যে থেকে ব্যাধিকে সরিয়ে দেবেন।—যিশাইয় ৩৩:২৪.
ঠিক যেমন ভাবে তিনি বিস্তর লোককে খাইয়েছিলেন ঠিক তেমনি করে তিনি মানুষের খাদ্যাভাব মোচন করবেন।—গীতাংহিতা ৭২:২৬.
যেমন করে তিনি মৃতদেরকে বাঁচিয়ে ছিলেন ঠিক তেমনি ভাবে তিনি আবার মৃতদেরকে বাঁচিয়ে তুলবেন যারা ঈশ্বরের রাজ্যের বশ্যতা গ্রহনে পূর্ণ সুযোগ পায়নি।—যোহন ৫:২৮,২৯.
পর্য্যায়ক্রমে মানবজাতিকে সিদ্ধতায় নিয়ে আসবেন যা আদম হারিয়েছিল।
ইহা সত্যই কি একটি অপূর্ব্ব ভবিষ্যৎ নয়? আপনি কি তা দেখতে চান? তাহলে এথনই তৎপর হোন, ঈশ্বরের রাজ্যের বশীভূত হন এবং একজন “মেষতূল্য” ব্যক্তি হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলুন।
বাইবেল পড়ুন এবং যিহোবা ঈশ্বর ও যীশু খ্রীষ্টকে জানুন।—যোহন ১৭:৩.
তাদের সাথে মেলামেশা করুন যারা ঈশ্বরের রাজ্যের প্রজা।—ইব্রীয় ১০:২৫.
রাজ্যের আইন শিখুন এবং তা পালন করুন।—যিশাইয় ২:৩,৪.
যিহোবাকে সেবা করবার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করুন এরং বাপ্তিষ্ম নিন।—মথি ২৮:১৯,২০.
খারাপ জিনিষ পরিত্যাগ করুন যেমন চুরি, মিথ্যাকথা, মাতলামী কারণ এগুলি যিহোবা ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করে।—১ করিন্থিয় ৬:৯-১১.
রাজ্যের সুসমাচার প্রচারে অংশ নিন।—মথি ২৪:১৪.
তখন আপনি ঈশ্বরের সাহায্যে দেখতে পাবেন সেই পরমদেশকে যা আদম হারিয়েছিল এবং আপনি এই প্রতীজ্ঞার পরিপূর্ণতা দেখতে পাবেন: “পরে আমি সিংহাসন হইতে এক উচ্চবানী শুনিলাম, ‘দেখ, মনুষ্যদের সহিত ঈশ্বরের আবাস, তিনি তাহাদের সহিত বাস করিবেন, এরং তাহারা তাঁহার প্রজা হইবে, এরং ঈশ্বর আপনি তাহাদের সঙ্গে থাকিবেন ও তাহাদের ঈশ্বর হইবেন। আর তিনি তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যাথাও আর হইবে না, কারণ প্রথম বিষয় সকল লুপ্ত হইল।’”—প্রকাশিতবাক্য ২১:৩,৪.
[২০ পৃষ্ঠার তালিকা]
(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)
৬০৭ খৃ.পূ. ১৯১৪ খৃ.স্টা.
খৃ.পূ. খৃ.স্টা
৫০০ ১,০০০ ১,৫০০ ২,০০০ ২,৫২০
[১১ পৃষ্ঠার চিত্র]
অব্রাহাম
ইস্হাক
যাকোব
যিহুদা
দায়ূদ
[১৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
১৪৪,০০০
[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]
যীশু
আদম