পাঠ ২১
দশম আঘাত
মোশি ফরৌণের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, তিনি আর কখনো ফরৌণের সামনে আসবেন না। কিন্তু, মোশি যাওয়ার আগে ফরৌণকে বলেন: ‘আজ মাঝরাতে, মিশরের সমস্ত পরিবারের প্রথম ছেলেসন্তান মারা যাবে অর্থাৎ ফরৌণ থেকে শুরু করে সমস্ত দাস-দাসীর সন্তান মারা যাবে।’
যিহোবা ইজরায়েলীয়দের এক বিশেষ ধরনের খাবার খেতে বলেন। তিনি বলেন: ‘এক বছরের একটা পুংমেষ অথবা পুংছাগল মেরে এর কিছু রক্ত নিয়ে দরজার চৌকাঠে লাগিয়ে দিয়ো। আর এটির মাংস আগুনে ঝলসে তা খামিরবিহীন রুটির সঙ্গে খেয়ো। তোমরা কাপড় ও জুতো পরে থেকো, যাতে তোমরা যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে পার। আজ রাতে আমি তোমাদের মুক্ত করব।’ তোমরা কি কল্পনা করতে পার, ইজরায়েলীয়েরা কতটা আনন্দিত হয়েছিল?
মাঝরাতে যিহোবার স্বর্গদূত মিশরের প্রতিটা বাড়ির কাছ দিয়ে যান। যে-বাড়ির দরজায় রক্ত লাগানো ছিল না, সেই বাড়ির প্রথম সন্তান মারা যায়। কিন্তু, যে-বাড়ির দরজায় রক্ত লাগানো ছিল, স্বর্গদূত সেই বাড়ি ছেড়ে এগিয়ে যান। প্রত্যেক মিশরীয় পরিবার, ধনী ও গরিব সকলে, তাদের একজন সন্তান হারায়। কিন্তু, ইজরায়েলীয়দের একটি সন্তানও মারা যায় না।
এমনকী ফরৌণের নিজের ছেলেও মারা যায়। ফরৌণ আর সহ্য করতে পারেন না। তিনি সঙ্গেসঙ্গে মোশি ও হারোণকে বলেন: ‘তোমরা এখান থেকে বের হয়ে যাও। তোমরা গিয়ে তোমাদের ঈশ্বরের উপাসনা করো। তোমাদের পশুপালও সঙ্গে নিয়ে যাও!’
পূর্ণিমার রাতে ইজরায়েলীয়েরা পরিবার, গোষ্ঠী ও বংশ অনুসারে সুসংগঠিতভাবে মিশর থেকে বের হয়ে যায়। সবমিলিয়ে ৬,০০,০০০ পুরুষ আর সেইসঙ্গে অসংখ্য নারী ও ছেলে-মেয়েও ছিল। এ ছাড়া, তাদের সঙ্গে আরও অনেক লোক বের হয়ে আসে, যাতে তারাও যিহোবার উপাসনা করতে পারে। অবশেষে, ইজরায়েলীয়েরা মুক্ত হয়!
যিহোবা কীভাবে তাদের উদ্ধার করেছেন, তা মনে করার জন্য তাদের প্রতি বছর এই বিশেষ খাবার খেতে হবে। এটাকে বলা হত নিস্তারপর্ব।
“আমি তোমাকে এইজন্য থাকতে দিয়েছি, যেন তোমাকে ব্যবহার করে আমি আমার শক্তি দেখাই এবং যেন সমস্ত পৃথিবীতে আমার নাম ঘোষিত হয়।”—রোমীয় ৯:১৭