নূতন জগৎ আগতপ্রায়!
জগতের দুরবস্থা দূর করার জন্য অনেকে অনেক মতামত দিয়েছে। সাধারণত, তারা সচেতন হওয়া ও সহযোগিতার কথা বলে, এবং তার সঙ্গে প্রয়োজন বিশাল আকারে পৃথিবীব্যাপী সর্ব জাতির দ্বারা এক ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা। এখন মনে করা হয় যে যত পরিস্থিতি খারাপ হবে পারস্পরিক বেঁচে থাকার চিন্তা জাতিগুলিকে বাধ্য করবে তাদের কাজের গুরুত্ব পুনর্বিবেচনা করে দেখতে ও একসঙ্গে কাজ করে একটি নূতন ও স্থায়ী পৃথিবী গড়ে তুলতে। আশা করা হয় যে সামরিক ব্যয় ভালরকম ভাবে কমিয়ে পরিবেশ দূষন রোধ করতে সেই অর্থ প্রয়োগ করা হবে এবং, যেমন স্টেট অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড ১৯৯০ জানায়, “তাদের নিজেদের বিশাল রক্ষণব্যবস্থা বজায় রাখার পরিবর্তে, জাতিগুলি তাদের আস্থা রাখতে পারে অনেক অধিকতর আকারের ও শক্তিশালী ইউ. এন. শান্তিরক্ষা বাহিনীর ওপর, যার যোগ্যতা ও ক্ষমতা থাকবে যে কোন সদস্য দেশকে আক্রমণকারীর হাত থেকে রক্ষা করতে।”
কিন্তু এই সমস্ত চিন্তাধারা কোনভাবেই প্রথম পৃষ্ঠায় উল্লিখিত পরিস্থিতি নিয়ে আসতে পারবে না। সাধারণ মানুষের পরিকল্পনা পাপ থেকে মুক্তি ও লোভের অবসান ঘটাতে পারবে না; তারা পক্ষপাতিত্ব ও জাতিগত কলহ দূর করতে পারবে না; সকল মানবজাতির মধ্যে তারা নিঃসার্থ প্রেম নিয়ে আসতে পারবে না; রোগব্যাধি ও মৃত্যু থেকেও মুক্তির নিশ্চয়তা তারা দিতে পারবে না। অপরাধের প্রতি কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়া অথবা ধর্ম-ঘটিত মতভেদ বা বিদ্বেষ দূর করার কোন উল্লেখ তাতে নেই। আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধ করার কথা তো চিন্তার বাইরে। জাতিয়তাবাদ, ও তার থেকে সম্ভাব্য বিপদও থাকতে দেওয়া হয়েছে। দুঃখজনক হলেও, আমাদের বলতে হবে যে মানুষ একটি কার্য্যকারী সমাধান আবিষ্কার করতে অসফল হয়েছে।
কিন্তু, একটি সমাধান রয়েছে! বস্তুতপক্ষে, মানুষের কাম্য এই সমস্ত পরিস্থিতি আসবে প্রতিজ্ঞা করা হয়েছে, এবং এই প্রতিজ্ঞা করেছেন ঈশ্বর যিনি “মিথ্যাকথনে অসমর্থ।” (তীত ১:২) তিনি জানেন প্রকৃতপক্ষে কি করতে হবে, এবং যা তিনি করতে চান তা করার প্রজ্ঞা, শক্তি, ও ক্ষমতা তাঁর আছে।—প্রকাশিত বাক্য ৭:১২; ১৯:১।
ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেন: “আর ক্ষণকাল, পরে দুষ্ট লোক আর নাই, তুমি তাহার স্থান তত্ত্ব করিবে, কিন্তু সে আর নাই। কিন্তু মৃদুশীলেরা দেশের অধিকারী হইবে, এবং শান্তির বাহুল্যে আমোদ করিবে।”—গীতসংহিতা ৩৭:১০, ১১।
ইহা কিভাবে সম্পাদন করা হবে? যিশাইয় ১১:৯ উত্তর দেয়: “সে সকল আমার পবিত্র পর্ব্বতের কোন স্থানে হিংসা কিম্বা বিনাশ করিবে না; কারণ সমুদ্র যেমন জলে আচ্ছন্ন, তেমনি পৃথিবী যিহোবা-বিষয়ক জ্ঞানে পরিপূর্ণ হইবে।” হ্যাঁ, সমস্ত মানবজাতি “যিহোবা-বিষয়ক জ্ঞানে শিক্ষিত হবে, এবং যে কোন ব্যক্তি তা করতে সম্মত হবে না তাকে সেখানে থেকে অন্যদের শান্তিভঙ্গ করতে দেওয়া হবে না। আমাদের সুন্দর পৃথিবীকে আর ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না।
“যিহোবার কার্য্যকলাপ সন্দর্শন কর . . . তিনি পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত যুদ্ধ নিবৃত্ত করেন,” গীতসংহিতা ৪৬:৮, ৯ প্রতিজ্ঞা করে। (মীখা ৪:৩, ৪ পদও দেখুন।) বিশ্বব্যাপী শান্তি নিয়ে আসার পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ জাতিভেদ দূর করা। সহযোগিতা আসতে বাধ্য কারণ সারা পৃথিবীতে তখন একটি মাত্র সরকার থাকবে—ঈশ্বরের সরকার। আর তাঁর সরকার এমন একটি রাজ্য যা “কখনও বিনষ্ট হইবে না।” (দানিয়েল ২:৪৪) উপরন্তু, ইহার রাজা পুনরুত্থিত, অমর যীশু খ্রীষ্ট, যিনি ধার্মিকতা ও ন্যায়ের সাথে শাসন করবেন।—যিশাইয় ৯:৬, ৭; ৩২:১।
কিন্তু তা কি মানুষের জন্মগত অসিদ্ধতা ও রোগব্যাধি, দুঃখ, বেদনা ও মৃত্যুর দ্বারা কলুসিত হবে? না, কারণ এগুলিও অতীতের বিষয় হবে। প্রকাশিত বাক্য আমাদের আশ্বাস দেয়: “আর তিনি তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না; কারণ প্রথম বিষয় সকল লুপ্ত হইল।” জন্মগত পাপ যীশুর প্রায়শ্চিত্তমূলক বলিদানের ভিত্তিতে ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে, এবং মানবজাতিকে সিদ্ধ অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে। (রোমীয় ৬:২৩; ইফিষীয় ১:৭) আর ঈশ্বরের চেয়ে ভাল আর কে প্রাকৃতিক গোলোযোগকে আয়ত্ত্বে রেখে মানুষের ক্ষতি করা থেকে বাধা দিতে পারে?—গীতসংহিতা ১৪৮:৫-৮; যিশাইয় ৩০:৩০।
যে পরিস্থিতি সম্বন্ধে মানুষ শুধুমাত্র আশা করতে ও স্বপ্ন দেখতে পারে, তা ঈশ্বর বাস্তবে পরিণত করতে পারেন। কিন্তু কখন? বাইবেলের ভবিষ্যদ্বানী ইঙ্গিত করে যে পরিবর্তন আসবে যখন জাতিগণ “ক্রুদ্ধ” হবে ও মানুষ “পৃথিবী নাশ” করার চেষ্টা করবে। (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮) পুরানো জগতের শেষ কাল চিহ্নিত হবে “বিষম সময়ের” দ্বারা—যার পরিণতি হবে অধঃপতনরত যে অবস্থা আমরা চারিপাশে দেখতে পাই। (২ তীমথিয় ৩:১-৫, ১৩) আর যীশু ভবিষ্যদ্বানী করেন যে বংশ এই সমস্ত কিছু দেখবে সেই বংশই ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার পূর্ণতা প্রত্যক্ষ করবে।—মথি ২৪:৩-১৪, ৩২-৩৪।
বাইবেলে লিপিবদ্ধ এই প্রতিজ্ঞাসকলের পরীক্ষা করতে কিছু সময় করে নিন। কারণ এই বিষয়ে জ্ঞানী লোকেরা এবং ঈশ্বর একমত: নূতন জগতের জন্য এখনই সময়! (w90 10/1)