রাজ্যের ঘোষনাকারীদের রিপোর্ট
২৫ বছর যাবৎ নান থাকার পরে একজন সত্য শেখে
বাইবেল ভবিষ্যদ্বানী করে যে সর্ব জাতির মধ্য থেকে “এক বিরাট জনতা” যিহোবার আত্মিক মন্দিরে উপাসনা করার জন্য বেরিয়ে আসবে। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯) ইহা আজ ঘটছে, আর আমরা আনন্দিত যে অনেকে, ঈশ্বরের সত্যের সাহায্যে, মিথ্যা ধর্মের বন্ধন ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারছে। নিম্নোক্ত অভিজ্ঞতাগুলি ইহা চিত্রিত করে।
◻ রোম, ইটালী থেকে একজন মহিলা লেখেন: “ছোটবেলা থেকে আমার একান্ত ইচ্ছা ছিল একজন নান অথবা মঠবাসিনী হওয়া, যেহেতু সর্বান্তকরণে আমি ঈশ্বরকে সেবা করতে চেয়েছিলাম। আমার আকাঙ্খা ৩২ বছর বয়সে আমি পূর্ণ করতে সক্ষম হই, যখন আমি ডিসেম্বর ৮, ১৯৬০ সালে বাধ্যতা, দারিদ্র এবং সতীত্বের জন্য প্রথম শপৎ গ্রহণ করি। আমার কাজ ছিল দিবারাত্রি প্রায় ৩০ জন দরিদ্র ও পরিত্তক্ত ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করা যারা হয় অনাৎ নয়তো কয়েদীদের সন্তান ছিল। আমার কাজে আমি পরিতৃপ্তি পাই।
আমার বিশ্বাসে আঘাৎ লাগে যখন সংস্থার মধ্যে বিবাদ দেখা দেয়। আমি চিন্তা করি, যদি ঈশ্বর আমাদের চালনা করেন, তাহলে কেন তিনি এইরকম কলহ এবং বিশৃঙ্খলা তাঁর নিজের গৃহে থাকতে দেবেন।”
সেই নানের একজন ভগ্নী যিনি ফ্রান্সে থাকতেন, একজন যিহোবার সাক্ষী ছিলেন। তিনি চিঠি লিখে এই নানকে সাক্ষ্য দিতেন এবং তাকে নিউ ওয়ার্ল্ড ট্রান্সলেশন অফ দ্যা হোলী স্কিপচার্স পাঠান। সেই নান বর্ণনা করেন: “২৩ বছর পরে, প্রথমবার ঈশ্বরের বাক্যের সান্নিধ্যে এলাম।” তখন তিনি যিহোবার সাক্ষীদের সাথে বাইবেল অধ্যয়ন করতে সম্মত হন। তিনি বলেন: “অধ্যয়নে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে আমি যিহোবা ঈশ্বর ও তাঁর চাহিদা সম্বন্ধে জানলাম এবং তাঁর অপূর্ব গুণাবলী সম্বন্ধেও শিখলাম। আমার খুব খারাপ লাগে যখন জানলাম যে মূর্তির ব্যবহার তিনি সমর্থন করেন না, কারণ সেই সংস্থা সব রকমের ও আকারের মূর্তিতে পরিপূর্ণ ছিল। আমি বুঝতে পারলাম যে যদি যিহোবাকে খুশী করতে চাই তাহলে সেখানে থাকা চলবে না। ২৫ বছর নান হিসাবে একাগ্র সেবা করার পর আমি সত্য খুঁজে পেয়েছি। তাই, অক্টোবর ১, ১৯৮৫ সালে, আমি চলে আসার দরখাস্ত করি, যদিও আমার উর্ধ্বতন ব্যক্তিরা অসন্তুষ্ট হয়।
“আমার প্রেমময় ভাই-বোনেরা আত্মিকভাবে এবং আর্থিকভাবে আমাকে সাহায্য করে। যিহোবা এবং তাঁর সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞ হয়ে, আগস্ট ৩০, ১৯৮৬ সালে আমি বাপ্তিস্ম গ্রহণ করি, এবং অনন্ত জীবনের পথে চলতে শুরু করি।”
যিহোবা একজন কিশোরীর ঈশ্বরকে সেবা করার ইচ্ছাকে আশীর্বাদ করেন
◻ ব্রাজিলে একজন স্কুলের শিক্ষক যিনি একজন যিহোবার সাক্ষী ছিলেন, পরীক্ষার খাতা সংশোধন করার সময় লক্ষ্য করেন যে একজন ১৪-বছর বয়স্ক ছাত্রী ঈশ্বর সম্বন্ধে আরও জানতে তার ইচ্ছা সম্বন্ধে লিখেছে। তিনি সেই ছাত্রীর সাথে বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেন, কিন্তু যখন সে উন্নতি করতে থাকে, তার ক্যাথোলিক পরিবার অধ্যয়ন করতে নিষেধ করে ও তার বইপত্র ছিড়ে ফেলে। সেই কিশোরী ছাত্রটি স্কুলে বিরতির সময় বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করে কিন্তু ধরা পড়ে যায়। তাই, চিঠি লেখার মাধ্যমে অধ্যয়ন চলতে থাকে। শীঘ্রই, যদিও, তার পরিবার চিঠিগুলি খুঁজে পায় ও পুড়িয়ে দেয়। তার পিতা তাকে জোর করে প্রভুর ভোজে যাওয়ার জন্য। সে যায় কিন্তু সঙ্গে একটি ওয়াচটাওয়ার নিয়ে যায় যেটি সে চার্চের বইয়ের পাতার মধ্যে লুকিয়ে সভা চলাকালীন পড়ে। ছয় মাস এই রকম ভাবে চলে, তারপর একদিন কিংডম হলে যাওয়ার জন্য সে বাড়ি থেকে লুকিয়ে বেরিয়ে পড়ে। সভা চলার সময় তার বাবা এসে দরজায় দাঁড়িয়ে ভাইদের বলে তার মেয়েকে জানাতে যে বাড়ি গেলে তাকে প্রহার করা হবে। তাকে যুক্তিপূর্বক বোঝানোর চেষ্টায় ভাইরা ব্যর্থ হয়।
পরের দিন, খুশী মনে ও হাসি মুখে সে ভাইদের দেখতে আসে। তার দেহে বহু দাগ সে তাদের দেখায় যেখানে তার বাবা তাকে মেরেছে। তাহলে, কেন সে খুশী ছিল? কিংডম হল থেকে যাওয়ার পর তার বাবা শহরের বিভিন্ন লোককে, এমনকি মেয়রকেও জিজ্ঞাসা করেছে যে তার মেয়ে যিহোবার সাক্ষী হলে কি সুবিধা বা অসুবিধা উপস্থিত হতে পারে। মেয়র জানায় যে সাক্ষীরা সৎ, বিশ্বাসযোগ্য লোক। তিনি আরও যোগ দেন যে তাদের নৈতিক চরিত্র অতি উত্তম এবং এইরূপ মান বজায় রাখে এমন ছেলেমেয়ে থাকা দারুণ ব্যাপার, যারা অন্য সাধারণ যুবক-যুবতীদের থেকে অনেক উর্ধ্বে।
তা সত্ত্বেও মেয়েটিকে মার খেতে হয়েছিল। কিন্তু তার বাবা তাকে বলে যে তাকে মারা হচ্ছে কারণ অনুমতি না নিয়ে সে বাড়ির বাইরে গেছে। তার সে বলে যে তাকে আবার মারা হবে যদি কখনও সে বাইবেল অধ্যয়ন করা বা যিহোবার সাক্ষীদের সভায় যাওয়া ছেড়ে দেয়! সেই মেয়েটি এখন একজন উদ্যোগী প্রকাশক এবং তার পরিবারের কেউ কেউ সত্যের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
সত্যই, যিহোবা অল্পবয়স্ক কিশোর-কিশোরীদের আশীর্বাদ করেন যাদের তাঁকে সেবা করার একান্ত ইচ্ছা থাকে, যেমন এই অভিজ্ঞতাটি দেখায়।—গীতসংহিতা ১৪৮:১২, ১৩. (w91 2/1)