ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯১ ১২/১ পৃষ্ঠা ২৬-৩১
  • যিহোবার স্বর্গীয় রথ এগিয়ে চলিতেছে

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিহোবার স্বর্গীয় রথ এগিয়ে চলিতেছে
  • ১৯৯১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • চারি জীবিত প্রাণী
  • চক্রের মধ্যস্থিত চক্র
  • মহিমান্বিত রথচালক
  • রথটি কি চিত্রিত করে
  • প্রহরীরূপে নিযুক্ত
  • স্বর্গীয় রথের সাথে গমন করা
  • যিহোবার স্বর্গীয় রথের সাথে তাল রেখে চলুন
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘যাহা যাহা শ্রেয়ঃ, তাহা পরীক্ষা করিয়া চিন’
    ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার সাহায্যে আমরা ভালোভাবে প্রচার করতে পারি!
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
১৯৯১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯১ ১২/১ পৃষ্ঠা ২৬-৩১

যিহোবার স্বর্গীয় রথ এগিয়ে চলিতেছে

“আমি শুনিলাম, সেই চক্রগুলিকে কেহ উচ্চৈস্বরে কহিল, ‘হে ঘূর্ণমান চক্র!’”—যিহিষ্কেল ১০:১৩.

১. যিহোবার কি ধরনের পরিবহন আছে?

আজকের এই মসৃণ ও চকচকে জেটপ্লেনের দিনে, জগতের নেতাগণ মনে করতে পারেন তারা যাত্রার সক্ষমতার চূড়ান্ত নিদর্শন উপভোগ করছেন। তবুও, ২,৬০০ বছর পূর্বে, যিহোবা ঈশ্বর প্রকাশ করেন যে তার কাছে সর্বোচ্চ উন্নতপ্রকৃতির এক পরিবহন ব্যবস্থা আছে, যা কোন ইঞ্জিনীয়ার কখনও দেখেননি। ইহা এক বিশাল, বিস্ময়কর রথ! ইহা কি আশ্চর্য্য প্রতীয়মান হয় যে বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা রথরূপ যানে যাত্রা করেন? না, কেননা যিহোবার স্বর্গীয় যানের সাথে মানুষের বোধগম্য হয় এমন কিছুর মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।

২. যিহিষ্কেল ১ অধ্যায় যিহোবার স্বর্গীয় রথটিকে কিরূপে বর্ণনা করে ও ভাববাদী কাহাদের প্রতি প্রথমে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন?

২ যিহিষ্কেলের ভাববানীর ১ অধ্যায়ে যিহোবাকে চিত্রিত করা হয়েছে যেন তিনি এক বিশাল স্বর্গীয় রথে যাত্রা করছেন। এই ভয়ঙ্কর চার-চক্রের যানটি স্বীয় চলমান ও আশ্চর্য্যজনক কাজ করতে সক্ষম। যিহিষ্কেল ৬১৩ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে স্বর্গীয় রথটিকে দর্শনে দেখেন, যখন তিনি প্রাচীন বাবিলনের একটি খালের নিকটে ছিলেন। যিহোবার স্বর্গীয় রথের যারা পরিচর্য্যা করছে তাদের প্রতি ভাববাদী প্রথমে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। আসুন আমরা পড়ার দ্বারা, যিহিষ্কেল যা দেখেছিলেন দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করি।

চারি জীবিত প্রাণী

৩. চারটি করূবের, প্রত্যেকটির চারটি মুখ কি চিহ্নিত করে?

৩ যিহিষ্কেল বিবরণ দেন: “আমি দৃষ্টি করিলাম, আর দেখ! উত্তর দিক হইতে ঘূর্ণ্যবায়ু, বৃহৎ মেঘ ও জজ্বিল্যমান অগ্নি আসিল ও তাহার চারিদিকে তেজ ছিল . . . আর তাহার মধ্য হইতে চারি প্রাণীর মূর্ত্তি প্রকাশ পাইল।” (যিহিষ্কেল ১:৪, ৫) এই চারটি জীবিত প্রাণীর, অথবা করূবদের, প্রত্যেকের চারটি পক্ষ ও চারটি মুখ ছিল। তাদের সিংহের মুখ ছিল, যিহোবার ন্যায়কে চিহ্নিত করে; বৃষের মুখ, ঈশ্বরের শক্তিকে চিত্রিত করে; এবং ঈগল পক্ষীর মুখ, তাঁর প্রজ্ঞাকে চিত্রিত করে। তাদের মানুষের মুখও ছিল, যিহোবার প্রেমকে প্রতিনিধিত্ব করে।—দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৪; ইয়োব ১২:১৩; যিশাইয় ৪০:২৬; যিহিষ্কেল ১:১০; ১ যোহন ৪:⁠৮.

৪. করূবদের কেন চারটি মুখ ছিল ও গতি সম্বন্ধে করূবেরা কেমন ছিল?

৪ প্রতিটি করূব চারিটি মুখের দ্বারা এক একটি প্রত্যেক দিকে দেখতে পারত। সেইজন্য, করূবেরা তৎক্ষণাৎ দিক পরিবর্তন করতে পারে এবং বাঞ্ছনীয় দিকে সেই পাশের মুখটিকে রেখে চলতে পারে। কিন্তু করূবদের গতি সম্বন্ধে কি? কেন, তারা বিদ্যুতের সমগতিতে চলতে পারে। (যিহিষ্কেল ১:১৪) কোন মনুষ্যনির্ম্মিত যান এখনও ঐ প্রকার গতি অর্জ্জন করতে সক্ষম হয়নি।

৫. যিহিষ্কেল রথের চক্র ও নেমি সম্বন্ধে কিরূপে বর্ণনা করেন?

৫ হঠাৎ রথের চক্রগুলি দেখতে পাওয়া যায়। সেগুলিও কি অস্বাভাবিক! ১৬ ও ১৮ পদ বলে: “চারি চক্রের রূপ একই, এবং তাহাদের আভা ও রচনা চক্রের মধ্যস্থিত চক্রের ন্যায় ছিল। আর তাহাদের নেমি উচ্চ ও ভয়ঙ্কর, এবং সেই চারিটি নেমির চারিদিক চক্ষুতে পরিপূর্ণ ছিল।” প্রতিটি করূবের পাশে একটি করে চক্রের অর্থ চারটি চক্র চারটি স্থানে। চক্রগুলি বৈদুর্য্যমণির মতো জ্বলছিলো যা স্বচ্ছ অথবা ঈষদ হলুদ বা সবুজ পাথর। মহিমাপূর্ণ দর্শনে ইহা আলো ও সৌন্দর্য্য যুক্ত করে। যেহেতু চক্রের নেমিগুলি “চক্ষুতে পরিপূর্ণ ছিল,” তারা অন্ধের মত যে কোন দিকে যেত না। আর চক্রগুলি অতি উচ্চ ছিল তাই তারা একবার ঘুরলেই অনেকটা দূর যেতে পারত। চারটি করূবের মত সেগুলিও, আলোর গতিতে দ্রুত যেতে পারত।

চক্রের মধ্যস্থিত চক্র

৬. (ক) কিরূপে রথের চক্রের মধ্যে চক্র ছিল? (খ) এই চারটি চক্র কিসের অনুরূপে চলত?

৬ আর একটি অস্বাভাবিক জিনিস ছিল। প্রতিটি চক্রের মধ্যে আর একটি চক্র ছিল—প্রত্যেকটি একই ব্যসের যা মূল চক্রের মধ্যে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত ছিল। একমাত্র এই উপায় বলা যেতে পারে যে “ঐ চারি চক্র চারি পার্শ্বে গমন করিত।” (পদ ১৭) তৎক্ষণাৎ, চক্রগুলি দিক পরিবর্তন করতে পারত কারণ প্রতিটি দিকে চক্রগুলি ছিল। চারিটি করূবের অনুরূপে একই অভিমুখে এই চক্রগুলি চলত। এই চারি চক্রের অদৃশ্য অবলম্বনের উপর স্থাপিত হয়ে ঈশ্বরের রথ চলত ঠিক যেমন হাওয়ার আবরণ এক শক্তিশালী যানকে জলের উপরে ধরে রাখে যখন উহা জলের উপরিভাগে গড়িয়ে চলে।

৭. চক্রের শক্তির উৎসটি কি ছিল?

৭ চারটি করূবের মত গতি সম্পন্ন এই চক্রগুলি কোথায় শক্তি পায়? সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা থেকে। ২০ পদ বলে: “যে কোন স্থানে আত্মার ইচ্ছা হইত সেই স্থানে তাহারা যাইত . . . সেই প্রাণীর আত্মা সেই চক্রগণে ছিল।” ঈশ্বরের একই অদৃশ্য সক্রিয় শক্তি যা করূবদের ছিল সেই একই শক্তি চক্রেতে ছিল।

৮. চক্রগুলির কি নাম দেওয়া হয় ও কেন?

৮ চক্রগুলিকে উল্লিখিত করা হয় “ঘূর্ণ্যমান চক্র” রূপে। (যিহিষ্কেল ১০:১৩) প্রতিটি চক্র যা করে থাকে সেই অনুসারে স্পষ্টতই ইহা বলা হয়েছে। ইহা ঘুরে বা আবর্তন করে। স্বর্গীয় রথের এই অংশকে এইরূপ বলার দ্বারা স্বর্গীয় রথটির চলার গতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। যদিও বা ইহার চক্রগুলি এত দ্রুত আবর্তন করে, তারা তাদের পথ দেখতে পেত, কারণ চক্ষুতে পরিপূর্ণ ছিল।

৯. রথটির দ্রুত-চলমান চারটি চক্রের উপরে যা ছিল যিহিষ্কেল কিরূপে বর্ণনা করেন?

৯ কিন্তু এখন আসুন আমরা দেখি ভয়ঙ্কর উচ্চ, দ্রুতগতিসম্পন্ন চারটি চক্রের উপরে কি আছে। যিহিষ্কেল ১ অধ্যায়ের ২২ পদ বলে: “আর সেই প্রাণীর মস্তকের উপরে এক বিতানের আকৃতি ছিল, তাহা ভয়ঙ্কর স্ফটিকের আভার ন্যায় তাহাদের মস্তকের উপরে বিস্তারিত ছিল।” বিতানটি, যদিও বা ঘন, উহার মধ্যে দিয়ে আলো প্রবেশ করতে পারে, “প্রকাণ্ড বরফ খণ্ডের ন্যায়।” হাজার হাজার হীরেতে সূর্য্যের আলো পড়লে যেমন ঝলক দেয় ঠিক তেমন জ্বলছিল। সত্যই ভয়ঙ্কর!

মহিমান্বিত রথচালক

১০. (ক) সিংহাসনটি কিরূপ ছিল ও সিংহাসনের উপরে উপবিষ্ট জন কিরূপ ছিলেন বর্ণনা করা হয়? (খ) রথচালক মহিমাপূর্ণ হন এর দ্বারা কি চিত্রিত হয়?

১০ স্পষ্টতই, রথটি থামে যেন তার চালক যিহিষ্কেলের সাথে কথা বলতে পারেন। বিতানের উপরে, সিংহাসনের মত ছিল, নীলকান্ত মণির মত অথবা গাঢ় নীল রং-এর। সিংহাসনে, এক ব্যক্তি ছিলেন যিনি মনুষ্যআকৃতিবৎ। এই ঐশিক প্রকাশকে উপলব্ধি করতে যিহিষ্কেলকে এই মনুষ্য আকৃতিই সবথেকে বেশী সাহায্য করতে পারে। কিন্তু ঐ মনুষ্যআকৃতিবৎ জন মহিমায় পরিপূর্ণ ছিলেন, তাই তাতে প্রতপ্ত ধাতুর ন্যায় আভা ছিল, সোনা ও রূপার মিশ্রিত এক উজ্জ্বল রূপ। শিহরিত হবার যোগ্য এই সৌন্দর্য্য! এই মনুষ্যআকৃতিবিশিষ্ট জনের কটির উপরে ও কটির নীচে অগ্নিবৎ আভা ছিল। সমস্ত রূপটি তাই মহিমাপূর্ণ। ইহা দেখায় যে যিহোবা অবর্নণীয়ভাবে মহিমাপূর্ণ। তাছাড়া, রথচালকের সাথে এক সুন্দর মেঘধনু ছিল। ঝড়ের পরে এক মেঘধনু কতই না শান্ত ও স্থিরতা প্রকাশ করে! এই শান্ত মনোভাব নিয়ে যিহোবা তার প্রজ্ঞা, ন্যায়, শক্তি এবং প্রেম এই গুণগুলি পূর্ণ সমতায় রাখেন।

১১. যিহোবার রথ ও সিংহাসনের দর্শন দ্বারা যিহিষ্কেল কিভাবে প্রভাবিত হন?

১১ যিহোবার রথ ও সিংহাসন আলো ও সুন্দর রং-এর দ্বারা পরিবেষ্টিত। শয়তানের থেকে কতই বিপরীত, যে অন্ধকার ও যাদুবিদ্যার রাজা! এই সমস্তের দ্বারা যিহিষ্কেল কিরূপে প্রভাবিত হন? “আমি তাহা দেখিবামাত্র” তিনি বলেন, “উপুড় হইয়া পড়িলাম, এবং বাক্যবাদী এক ব্যক্তির রব শুনিতে পাইলাম।”—যিহিষ্কেল ১:২৮.

রথটি কি চিত্রিত করে

১২. যিহোবার স্বর্গীয় রথটির দ্বারা কি চিত্রিত হয়?

১২ এই অপূর্ব রথটির দ্বারা কি চিত্রিত হয়? যিহোবা ঈশ্বরের ঊর্ধ্বস্থ, অথবা স্বর্গীয়, সংস্থা। অদৃশ্য স্থানে তার সমস্ত পবিত্র আত্মিক প্রাণীদের দ্বারা ইহা গঠিত—সরাফগণ, করূবগণ ও দূতগণ। যেহেতু যিহোবা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তাঁর সমস্ত আত্মিক প্রাণীরা তাঁর অধীনে, এবং তাদের চালনা করার অর্থ তিনি তাদের উপর সদয়তার সাথে কর্তৃত্ব করেন এবং তাঁর উদ্দেশ্য অনুযায়ী তাদের ব্যবহার করেন।—গীতসংহিতা ১০৩:২০.

১৩. (ক) কেন বলা যেতে পারে যে যিহোবা তার সংস্থাকে পরিচালনা করেন? (খ) যিহোবার চারি-চক্রের রথটি অগ্রেগমন করছে এই দর্শনটি আপনাকে কিভাবে প্রভাবিত করে?

১৩ যিহোবা এই সংস্থাকে রথারোহনের মত চালনা করেন, ইহাকে তাঁর আত্মা যেখানে চালনা করতে প্রেরণা দান করে সেখানে তিনি চালনা করেন। এটি অসংযতরূপে, অনিয়ন্ত্রিতরূপে অথবা বুদ্ধিবিশিষ্ট তত্ত্বাবধান ব্যতীত গমন করছে না। ঈশ্বর এই সংস্থাকে যেদিকে ইচ্ছা সেইদিকে যেতে দেননা। পরিবর্তে, ইহা তাঁর পরিচালনা অনুযায়ী চলে। ঈশ্বরের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ করতে সকলে সম্মিলিতভাবে অগ্রেগমন করছে। এই দর্শনের মাধ্যমে কি অপূর্ব স্বর্গীয় সংস্থা প্রকাশ পায় যিহোবার চলমান চার-চক্রের রথটির দ্বারা! এর সাথে সঙ্গতি রেখে, যিহোবার সংস্থা সমচতুষ্কোণরূপে প্রদর্শিত হয়, পূর্ণ সমতায়।

প্রহরীরূপে নিযুক্ত

১৪. ভাববাদী যিহিষ্কেল কাহাকে চিত্রিত করে?

১৪ কিন্তু ভাববাদী যিহিষ্কেলের দ্বারা কে চিত্রিত হন? ইতিহাসের ঘটনাবলী থেকে, ইহা প্রকাশ পায় যে স্বর্গীয় রথের সাথে আত্মা-অভিষিক্ত যিহোবার সাক্ষীদের দল সংযুক্ত আছে। তাই, যিহিষ্কেল প্রকৃতরূপে চিত্রিত করেন ১৯১৯ সাল থেকে যিহোবার সাক্ষীদের অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশদের। আত্মিকরূপে, ঐ বছরে ঈশ্বরের স্বর্গীয় সংস্থা, অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশদের সংস্পর্শে আসে, সারা জগতে তাদের যিহোবার সাক্ষীরূপে পুনরুজ্জীবিত করতে। (তুলনা করুন প্রকাশিত বাক্য ১১:১-১২) সেই রথরূপ সংস্থা তখন থেকে অগ্রেগমন করছে, এমনকি এখনও করছে। বস্তুতপক্ষে, অগ্রসরশীল চক্রগুলি আরও দ্রুত ঘুরছে। যিহোবা দ্রুত অগ্রে চালনা করছেন!

১৫. স্বর্গীয় রথের চালকের স্বর কি বলে ও যিহিষ্কেলকে কোন কার্য্যভার দেওয়া হয়?

১৫ যিহিষ্কেল জানতে চাইলেন কেন স্বর্গীয় রথটিকে তার সামনে নিয়ে এসে থামানো হয়। রথে বসে থাকা ব্যক্তির কাছ থেকে এক স্বর তার কাছে এলে তিনি জানতে পারলেন। এই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে অভিভূত হয়ে যিহিষ্কেল উপুড় হয়ে পড়েন। স্বর্গীয় রথের চালকের স্বর কি বলছে শুনুন: “হে মনুষ্যসন্তান, তুমি পায়ে ভর দিয়া দাঁড়াও, আমি তোমার সহিত আলাপ করিব।” (যিহিষ্কেল ২:১) যিহোবা যিহিষ্কেলকে প্রহরীর কার্য্যভার দেন, বিদ্রোহী ইস্রায়েলকুলকে সাবধান করতে। এমন কি তাকে ঐশিক নাম সম্বন্ধে বলতেও কর্মভার দেওয়া হয়। যিহিষ্কেল নামের অর্থ “ঈশ্বর শক্তিশালী করেন।” তাই ঈশ্বর এই যিহিষ্কেল শ্রেণীকে শক্তি দান করেন ও প্রেরণ করেন, খ্রীষ্টিয় জগতের প্রতি প্রহরীরূপে।

১৬, ১৭. (ক) স্বর্গীয় রথের দর্শনটি যিহিষ্কেলকে কিরূপে সাহায্য করে? (খ) আমাদের দিনে, স্বর্গীয় রথের দর্শনটির অর্থ কিরূপে যিহিষ্কেল শ্রেণী ও বিরাট জনতাকে প্রভাবিত করে?

১৬ যিহিষ্কেলের কাছে স্বর্গীয় রথের দর্শনটি ছিল চাঞ্চল্যপূর্ণ ও আশ্চর্য্যজনক, কিন্তু উহা তাকে যিরূশালেমের প্রতি আগত ধ্বংস সম্বন্ধে সাবধানবাণী ঘোষণা করার প্রহরীরূপে কার্য্যভারের জন্যও প্রস্তুত করে। বর্তমানে প্রহরীশ্রেণীর ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই। যিহোবার স্বর্গীয় রথটি অগ্রেগমন করছে এই দর্শনটির অর্থ প্রকাশ অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশদের প্রতি অতি প্রভাব বিস্তার করে। ১৯৩১ সালে তারা যিহিষ্কেলের দর্শন সম্বন্ধে আরও জানতে পারেন, যেমন ভিণ্ডিকেশন, প্রথম বইয়ে প্রকাশিত হয়। তারা তখন এমন গভীর উপলব্ধিতে পরিপূর্ণ হন যে ১৫ই অক্টোবর ১৯৩১ সালের সংখ্যা থেকে ১লা আগষ্ট ১৯৫০ সালের সংখ্যা পর্য্যন্ত ওয়াচটাওয়ার-এর সামনের পৃষ্ঠার উপরের ডানদিকের কোণায় যিহিষ্কেলের দর্শনের স্বর্গীয় রথের এক শিল্পীর কল্পনার চিত্র প্রকাশিত হয়। এইভাবে, যিহিষ্কেল শ্রেণী তাদের প্রতি অর্পিত ভার অনুসারে কার্য্য করেন, তারা প্রহরীরূপে কাজ করে চলেছেন, ঐশিক সাবধানবাণী ঘোষনা করে। স্বর্গীয় রথে উপবিষ্ট যিহোবার কাছ থেকে খ্রীষ্টিয় জগতের প্রতি অগ্নিপূর্ণ ধ্বংসের সময় পূর্বে আর এত নিকটে ছিল না!

১৭ বর্তমানে, মেষতুল্য ব্যক্তির “বিরাট জনতা” অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশদের সাথে সম্বন্ধযুক্ত। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯) তারা একত্রে খ্রীষ্টিয় জগতের এবং দিয়াবলের এই সমগ্র বিধিব্যবস্থার প্রতি আগত ধ্বংসের সাবধানবাণী ঘোষণা করছেন। ঐ সতর্ককরণের কাজ ক্ষিপ্রগতিতে চলছে, ও প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬, ৭ পদে যেমন ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে দূতগণও সমর্থন করছে।

স্বর্গীয় রথের সাথে গমন করা

১৮. দূতগণের ক্রমাগত সমর্থনের জন্য কি করা দরকার ও কিসের প্রতি আমরা অনুভবশীল হব?

১৮ বশীভূত দূতগণ ঈশ্বরের স্বর্গীয় সংস্থার অংশরূপে ঐক্য রেখে এগিয়ে যাওয়ার সময় যিহোবার পার্থিব দাসদের এই ঐশিক বিচারের সতর্কতা ঘোষণা করার কর্মভারটি পূর্ণ করতে সাহায্য করে। ঈশ্বরের এই শক্তিসম্পন্ন দূতগণ যাহারা ঈশ্বরের দাস তাহাদের কাছ থেকে যদি আমরা ক্রমাগত সুরক্ষা ও পরিচালনা পেতে চাই, আমাদেরও ঐক্য রেখে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ও রূপক ঘূর্ণ্যমান চক্রের সাথে পদক্ষেপ রাখার প্রয়োজন। তাছাড়া, যিহোবার দৃশ্যত সংস্থার অংশরূপে তার স্বর্গীয় রথের সমান্তরালে অগ্রসর হতে হলে, আমাদের ঈশ্বরের আত্মার পরিচালনার প্রতি অনুভবশীল হওয়া উচিৎ। (তুলনা করুন ফিলিপীয় ২:১৩) আমরা যদি যিহোবার সাক্ষী হই, স্বর্গীয় রথ যেদিকে যায় আমাদের সেইদিকে গমন করা আবশ্যক। আমরা নিশ্চই তার বিপরীত উদ্দেশ্যে কাজ করব না। যে পথে আমাদের যেতে নির্দ্দেশ দেওয়া হয়, সেইরূপে আমাদের অনুসরণ করা দরকার। ফলে, মণ্ডলী বিভক্ত হয় না।—১ করিন্থীয় ১:১০.

১৯. (ক) ঠিক যেমন স্বর্গীয় রথের চক্রগুলিতে চারিদিকে চক্ষু আছে, সেইভাবে যিহোবার লোকদের কিসের প্রতি সতর্ক থাকার প্রয়োজন? (খ) এই অশান্ত সময়ে আমাদের করণীয় কি আছে?

১৯ ঈশ্বরের রথের চক্র চক্ষুতে পরিপূর্ণ হওয়ার অর্থ সতর্কতা। ঠিক যেমন স্বর্গীয় সংস্থা সতর্ক, আমরা সেই প্রকার যিহোবার পার্থিব সংস্থাকে সমর্থন করতে সতর্ক থাকি। মণ্ডলীর ক্ষেত্রে, স্থানীয় প্রাচীণদের সঙ্গে সহযোগিতা করে, আমরা ঐ সমর্থন দেখাতে পারি। (ইব্রীয় ১৩:১৭) আর এই অশান্ত সময়ে, খীষ্টানদের যিহোবার সংস্থার অতি নিকটে থাকার প্রয়োজন। ঘটনাবলীর নিজস্ব অর্থ আমরা আরোপ করতে চাই না কারণ তাহলে আমরা যিহোবার স্বর্গীয় রথের সাথে চলতে পারব না। আসুন আমরা ক্রমাগত আমাদের জিজ্ঞাসা করি, ‘কোন দিকে স্বর্গীয় রথটি গমন করছে?’ যদি আমরা ঈশ্বরের দৃশ্যত সংস্থার সাথে অগ্রেগমন করি, আমরা অদৃশ্য সংস্থার সাথেও গমন করব।

২০. ফিলিপীয় ৩:১৩-১৬ পদে প্রেরিত পৌল কি উত্তম পরামর্শ দেন?

২০ এই সম্বন্ধে, পৌল লেখেন: “ভ্রাতৃগণ, আমি যে তা ধরিয়াছি, আপনার বিষয়ে এমন বিচার করি না, কিন্তু একটি কাজ করি, পশ্চাৎ স্থিত বিষয় সকল ভুলিয়া গিয়া সম্মুখস্থ বিষয়ের চেষ্টায় একাগ্র হইয়া লক্ষ্যের অভিমুখে দৌড়িতে দৌড়িতে আমি খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের কৃত উর্দ্ধদিকস্থ আহ্বানের পণ পাইবার জন্য যত্ন করিতেছি। অতএব আইস, আমরা যতলোক সিদ্ধ, সকলে এই বিষয় ভাবি, আর যদি কোন বিষয়ে তোমাদের অন্যবিধ ভাব থাকে, তবে ঈশ্বর তোমাদের কাছে তাহারও প্রকাশ করিবেন। পরন্তু আইস, আমরা যে পর্য্যন্ত পঁহুছিয়াছি, সেই একই ধারায় চলি।—ফিলিপীয় ৩:১৩-১৬.

২১. কোন ধারা অনুসরণ করে ঈশ্বরের সংস্থায় আত্মিক উন্নতি করতে পারা যায়?

২১ এখানে “ধারা” শব্দটির অর্থ একঘেয়ে নিয়ম নয় যার থেকে নিজেদের মুক্ত করা যায় না। যিহোবার সাক্ষীদের এক উত্তম ধারা আছে, যার মাধ্যমে তারা আত্মিক উন্নতি করে। এই ধারাটি হল ব্যক্তিগত বাইবেল অধ্যয়ণ, মণ্ডলীর সভাগুলিতে উপস্থিত হওয়া, নিয়মিত রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করা, ঈশ্বরের স্বর্গীয় সংস্থার গুণগুলি প্রদর্শন করা। এই ধারা তাদের যিহোবার রথস্বরূপ সংস্থার পরিচালনা অনুসরণ করতে সক্ষম করে। এইরূপে অধ্যবসায়ী হওয়ার মাধ্যমে, আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি, স্বর্গে অমর জীবনের পুরস্কার অথবা পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্ত জীবন।

২২. (ক) অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশ ও অপর মেষের বিরাট জনতার সম্মিলিতরূপে সংগঠিত হওয়ার জন্য কি করার প্রয়োজন আছে? (খ) যিহোবার দৃষ্টি থেকে কি এড়ায় না?

২২ যোহন ১০:১৬ পদ যেমন ইঙ্গিত করে, “অপর মেষ” ও যিহিষ্কেল শ্রেণী সম্মিলিতরূপে সংগঠিত হবে। তাই, যিহোবার সংস্থার সকলকে যিহিষ্কেল ১ অধ্যায়ের দর্শনের সম্পূর্ণ অর্থ ও তাৎপর্য্য বুঝবার প্রয়োজন আছে যদি তারা ঈশ্বরের স্বর্গীয় রথের সাথে ঐক্যবদ্ধরূপে চলতে চায়। এই দর্শনটি আমাদের এটি উপলব্ধি করতে সাহায্য করে যে আমাদের উচিৎ ঈশ্বরের দৃশ্যত ও অদৃশ্য সংস্থার সাথে মিল রেখে চলা। ইহাও মনে রাখবেন, যে যিহোবার চক্ষু “পৃথিবীর সর্বত্র ভ্রমণ করে, ঈশ্বরের প্রতি যাহাদের অন্তঃকরণ একাগ্র তাহাদের পক্ষে আপনাকে বলবান দেখাইবার জন্য।” (২ বংশাবলি ১৬:৯) যিহোবার দৃষ্টি থেকে একটি বিষয়ও এড়ায় না, বিশেষ করে সার্বভৌমরূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তাঁর যে কোন বিষয়।

২৩. যিহোবার স্বর্গীয় রথ অগ্রেগমন করার সাথে সাথে, আমাদের কি করা দরকার?

২৩ যিহোবার স্বর্গীয় রথটি বর্তমানে নিশ্চই অগ্রেগমন করছে। শীঘ্রই মহিমান্বিত জনের যিনি এই রথ চালনা করছেন তাঁর সাথে মিল রেখে সমস্ত কিছুকে মহিমায় নিয়ে আসা হবে—সব কিছু তাঁকে বিশ্বের সার্বভৌম প্রভুরূপে প্রতিষ্ঠিত করতে। তাঁর সরাফ, করূব ও দূতগণ আমাদের বিরাট জগত্ব্যাপী প্রচার কার্য্যে সমর্থন করছে। আসুন আমরা যিহোবার স্বর্গীয় সংস্থার সাথে অগ্রেগমন করি। কিন্তু কি করে আমরা এই দ্রুত-চালিত স্বর্গীয় রথের সাথে পদক্ষেপ রেখে চলতে পারি? এই পত্রিকার পরের সংখ্যাটি সেই সম্বন্ধে আলোচনা করবে। (W91 3/15)

আপনি কিভাবে উত্তর দেবেন?

▫ চারটি প্রাণী কি গুণাবলী প্রদর্শন করে যা যিহিষ্কেল দেখেছিলেন?

▫ যিহোবার স্বর্গীয় রথটি কি চিত্রিত করে?

▫ ঈশ্বরের ভাববাদী যিহিষ্কেলের দ্বারা কে চিত্রিত হচ্ছেন?

▫ যিহোবার স্বর্গীয় রথের অর্থ যিহিষ্কেল শ্রেণী ও বিরাট জনতাকে কিরূপে প্রভাবিত করেছে?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার