একটি স্বাচ্ছন্দপূর্ণ দেশে যাওয়ার মূল্য হিসাব করা
পৃথিবীব্যাপী সমস্ত দূতাবাসে এটি একটি পরিচিত দৃশ্য: প্রতিক্ষালয় উত্তেজিত জনতার দ্বারা পূর্ণ যারা তাদের সাক্ষাৎকারের অপেক্ষা করছে। সেই সংক্ষিপ্ত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে তারা পশ্চিমে একটি প্রযুক্তবিদ্যায় উন্নত দেশে যাওয়ার ভিসা পাবে কিনা। অনেকে বিশ্বাস করে যে এটি হল সমৃদ্ধির উদ্দেশ্যে তাদের টিকেট। “আমি চার বছর ধরে পরিশ্রম করে চলেছি, কিন্তু এখনও একটি রেডিও কিনবার সামর্থ্য আমার হয়নি,” একজন অল্পবয়স্ক পশ্চিম আফ্রিকাবাসী অভিযোগ করে। “যদি আমি ইংল্যাণ্ড অথবা আমেরিকায় থাকতাম এতদিনে আমার একটি গাড়ি ও নিজের থাকার জায়গা থাকত।”
কেন দরিদ্র, উন্নতিশীল দেশগুলিতে অনেকে এইরূপ মনোভাব রাখে তা অনুমান করা দুঃসাধ্য নয়। তাদের জন্য চাকুরী পাওয়া দুষ্কর, বেতন যৎসামান্য। মুদ্রাস্ফিতি তাদের সঞ্চয় নিঃশেষ করে দেয়। গৃহ খুঁজে পাওয়া সমস্যা এবং তাও অতিরিক্ত ভিড়াচ্ছন্ন। লোকে যে জামাকাপড় ধনী দেশগুলিতে লোকেরা পরিত্যাগ করেছে সেগুলি পরে। অনেকে মনে করে তারা অর্থনৈতিক চোরাবালির দ্বারা আক্রান্ত রয়েছে।
আর স্বাচ্ছন্দপূর্ণ পাশ্চাত্য দেশগুলি কিরকম হাতছানি দেয়! সিয়েরা লিয়োনে একজন যুবক বলে: “যারা বিদেশে গেছে তারা ফিরে এসে সেখানকার গল্প বলে যার দ্বারা আমরা সাহস পাই নিজে গিয়ে উন্নত দেশগুলি দেখতে। তারা বলে যে পরিশ্রম করতে হবে কিন্তু উপযুক্ত টাকাও পাওয়া যায় যাতে নিজের প্রয়োজন ছাড়াও কিছু বিলাসিতার বস্তু, যেমন গাড়ি কিনতে পারা যায়। আর দু হাজার ডলার নিয়ে এখানে ফিরে এসে কোন ব্যবসা শুরু করা যায় ও বিবাহ করা যায়।”
আশ্চর্য্যজনক নয়, যে কিছু ঈশ্বরের সেবকরাও এইরূপ মনে করেন। একজন আফ্রিকান ভগ্নী বলেন: “ঈশ্বরের সংগঠনে আমরা, অল্পবয়স্করা শুনতে পাই অন্যরা যারা বিদেশে গেছে তারা কত স্বাচ্ছন্দ্যে রয়েছে। কখনও কখনও আমি নিজেকে জিজ্ঞাসা করি, ‘আমার সম্বন্ধে কি? কেন আমি এখানে কষ্ট পাচ্ছি? আমি কি যাব না থাকব?’”
যদি আপনি একটি দরিদ্র দেশে থাকেন, আপনিও হয়তো চিন্তা করতে পারেন বিদেশে গেলে আপনার জীবনে উন্নতি আসবে কিনা। যাইহোক, বাস করার জন্য বিদেশে যাওয়া এক বিশাল সিদ্ধান্ত, একটি ব্যয়সাপেক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর সঙ্গে একটি নতুন ভাষা শেখা, নতুন কর্মদক্ষতা শেখা, এক নতুন সমাজের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া, অনেকে বিদেশীদের প্রতি যে সংস্কারাচ্ছন্ন মনোভাব রাখে তা সহ্য করা, এবং এক সম্পূর্ণ নতুন ধরনের জীবনধারা শেখা জড়িত থাকতে পারে। তবুও, বহু খ্রীষ্টান সাফল্যের সাথে তা করেছে ও তাদের নতুন দেশের মন্ডলীতে সত্যই আশীর্বাদস্বরূপ হয়েছে, অনুকরণযোগ্য প্রকাশক, অগ্রগামী, প্রাচীণ, ও পরিচারক দাস হিসাবে কাজ করে।
সকলে, যদিও, সেরকম ভাল করতে পারেনি। অন্য দেশে যাওয়ার মানসিক চাপ ও পরিশ্রম কয়েকজনের জন্য আত্মিক পতন নিয়ে এসেছে। স্পষ্টতই, তাই, এই পদক্ষেপ প্রার্থনাসহকারে, গভীর চিন্তা ছাড়া নেওয়া উচিৎ নয়। হিতোপদেশ ৩:৫, ৬ পদে বাইবেল উপদেশ দেয়: “তুমি সমস্ত চিত্তে যিহোবাতে বিশ্বাস কর; তোমার নিজ বিবেচনায় নির্ভর করিও না; তোমার সমস্ত পথে তাঁহাকে স্বীকার কর; তাহাত তিনি তোমার পথ সকল সরল করিবেন।” হ্যাঁ, আপনি নিশ্চিত হতে চাইবেন যে আপনি যিহোবার ইচ্ছানুযায়ী কাজ করছেন। (যাকোব ৪:১৩-১৫) আর যীশু এই বিষয়ে আপনাকে সাহায্য করার জন্য কিছু ব্যবহারিক উপদেশ দিয়েছিলেন যখন তিনি তার শ্রোতাদের উৎসাহ দেন ‘মূল্য হিসাব’ করতে। (লূক ১৪:২৮) শুধুমাত্র আর্থিক বিবেচনা এর সঙ্গে জড়িত নেই। এর অর্থ বিদেশে যাওয়ার সম্ভাব্য আত্মিক ব্যয় নির্ধারণ করা।
বিদেশে জীবনযাপনের বাস্তবসত্য
কোথাও যাওয়ার আগে, আপনি সেখানে গিয়ে কিসের সম্মুখীন হবেন সে বিষয়ে ভালভাবে বাস্তবধর্মী দৃষ্টি দিতে হবে। যদি সম্ভব হয় আগে একবার ঘুরে আসুন ও লক্ষ্য করুন সেখানে পরিস্থিতি কিরকম। অন্যথা, আপনাকে অন্যের কাছে শোনা তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হবে। বাইবেল সতর্ক করে দেয়: “যে অবোধ, সে সকল কথায় বিশ্বাস করে, কিন্তু সতর্ক লোক নিজ পদক্ষেপের প্রতি লক্ষ্য রাখে।”—হিতোপদেশ ১৪:১৫।
কয়েকজন পাশ্চাত্য দেশে জীবন সম্বন্ধে তাদের সমস্ত অভিজ্ঞতা জোগাড় করেছে সিনেমা ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান থেকে। তাই তারা মনে করে সেখানে সকলে ধনবান, নতুন গাড়ী চালায়, ও বিলাসিতাপূর্ণ বাড়িতে বাস করে। বাস্তব, কিন্তু, অনেক পৃথক। অনেক স্বচ্ছল দেশে দারিদ্রতা, গৃহহীনতা, ও বেকারত্বের হার উদ্বেগজনক। আর দরিদ্রতম বসবাসকারীদের মধ্যে অনেকেই হচ্ছে নতুন অভিবাসীরা। একটি দরিদ্র দেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের একজন আধিকারিক ব্যাখ্যা করেন: “লোকে কিছুতেই বোঝে না যে আমেরিকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা কতটা দুঃসাধ্য। কয়েকজন বাড়িতে চিঠি লিখে জানায় তারা কত উন্নতি করেছে—কিভাবে তারা দুটি গাড়ি ও একটি বাড়ি কিনেছে—কিন্তু আসলে হয়তো তাদের কষ্ট করতে হচ্ছে।”
অন্য জায়গাতেও পরিস্থিতি একই রকম। মিঃ সাহর সোরি একজন পশ্চিম আফ্রিকার শিক্ষাবিদ যিনি ইংল্যাণ্ডে থেকে পড়াশোনা করেছেন। তিনি মন্তব্য করেন: “আফ্রিকা ছেড়ে ইংল্যাণ্ডে বসবাস করা সহজ নয়। অনেক অভিবাসীরা খুব দারিদ্রে বাস করে। তাদের মুখে আপনি পরিশ্রমের ছাপ দেখতে পাবেন। অনেকের জন্য একটি ফোন করার জন্য ২০ পেন্স জোগাড় করাও কষ্টকর। প্রায়ই তারা অন্য অনেকের সঙ্গে একটিমাত্র ঘর ব্যবহার করে, শুধু একটি ছোট হীটার তাদের তাপ যোগায়। তারা শুধুমাত্র সাধারণ কাজ যোগাড় করতে পারে, তাও তাদের বিল পরিশোধ করার জন্য যথেষ্ট নয়। দারিদ্র এড়াতে যারা আফ্রিকা ছেড়ে যায় প্রায়ই ইউরোপের বস্তিতে আরও খারাপ অবস্থায় গিয়ে পড়ে।”
একটি নতুন দেশে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে যে চাপের সম্মুখীন হতে হয় তা সহজেই একজনের আত্মিকতাকে মুছে দিতে পারে। (মথি ১৩:২২) সত্য, কঠোর প্ররিশ্রমকে বাইবেলে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। (হিতোপদেশ ১০:৪; ১৩:৪) কিন্তু অনেকে যারা বিদেশ যায় বাধ্য হয়ে তাদের দুটি অথবা তিনটি কাজ নিতে হয় আর্থিক চাহিদা মেটাবার জন্য—বা সাধারণ জীবনধারনের জন্য। ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য অল্প অথবা কোন সময়ই বাকি থাকে না। খ্রীষ্টিয় সভা, বাইবেল অধ্যয়ন, ও অন্যদের কাছে বাইবেলের সত্য জানানো অবহেলিত হয়। যীশু খ্রীষ্টের বাক্য দুঃখজনকভাবে সত্য হয়: “তোমরা ঈশ্বর এবং ধন উভয়ের দাসত্ব করিতে পার না।”—মথি ৬:২৪।
নৈতিক চাপ
আপনার সম্ভাব্য নতুন দেশের নৈতিক আবহাওয়ার প্রতিও আপনার নজর রাখা উচিৎ। বাইবেল আমাদের বলে যে লোট যর্দ্দন অঞ্চলে থাকতে বেছে নেয়। জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তার সিদ্ধান্ত বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে হবে, কারণ “ইহার সমস্ত অঞ্চল উর্বর . . . যিহোবার উদ্যানের মত।” (আদিপুস্তক ১৩:১০) কিন্তু, লোটের নতুন প্রতিবেশীরা “যিহোবার বিরুদ্ধে অতি পাপিষ্ঠ ছিল”—যৌন বিকৃতি-প্রিয়! (আদিপুস্তক ১৩:১৩) ফলস্বরূপ, সেই ধার্ম্মিক ব্যক্তি আহাদের মধ্যে বাস করিতে করিতে, দেখিয়া শুনিয়া তাহাদের অধর্ম্মকার্য্য প্রযুক্ত দিন দিন আপন ধর্ম্মশীল প্রাণকে যাতনা দিতেন।”—২ পিতর ২:৮।
একই ভাবে, আজ পাশ্চাত্য দেশে বাস করার জন্য আসলে আপনি ও আপনার পরিবার হয়তো আপনার নিজের দেশের চেয়ে অধিক নৈতিক চাপ ও প্রলোভনের সম্মুখীন হতে পারেন। উপরন্তু, বয়স্ক লোকেরা আপনার দেশের মত সম্মান নাও পেতে পারে। পিতামাতার প্রতি সম্মান দেখানো নাও হতে পারে। প্রতিবেশীরা একে অপরের প্রতি আগ্রহ নাও দেখাতে পারে। এইসমস্ত চাপ আপনাকে ও আপনার পরিবারকে কিভাবে প্রভাবিত করবে? এই বিষয়ে প্রার্থনাসহকারে চিন্তা করা উচিৎ।
অনুপস্থিত পিতামাতা
কিছু পিতামাতা তাদের পরিবারকে রেখে নিজেরা বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের ইচ্ছা গুছিয়ে নিয়ে তাদের পরিবারকে ডেকে পাঠানো অথবা প্রচুর টাকা অর্জন করে নিজের দেশে ফিরে আসা। এইরকম ব্যবস্থা কি বিজ্ঞের কাজ?
শাস্ত্র জানায় যে পিতামাতার দায়িত্ব তাদের সন্তানদের জাগতিক প্রয়োজনগুলি মেটানো, আর হয়তো কোন চরম ক্ষেত্রে পিতাকে সেই ব্যবস্থা করার জন্য বিদেশে কাজ করতে হতে পারে। (১ তীমথিয় ৫:৮) তবুও, পিতামাতার দায়িত্ব তাদের সন্তানদের আত্মিক প্রয়োজনের যত্ন নেওয়া। ঈশ্বরের বাক্য বলে: “পিতারা, তোমরা আপন আপন সন্তানদিগকে ক্রুদ্ধ করিও না, বরং প্রভুর শাসনে ও চেতনা প্রদানে তাহাদিগকে মানুষ করিয়া তুল।”—ইফিষীয় ৬:৪।
একজন পিতা কি তা করতে পারবে যদি সে তার পরিবারের থেকে কয়েক মাস বা কয়েক বছরের জন্য দূরে থাকে। তা সম্ভব নয়। তাই আপনাকে বিবেচনা করতে হবে কিছু আর্থিক সুবিধা অর্জন, আপনার অনুপস্থিতি আপনার ছেলেমেয়েদের ওপর যে প্রভাব ফেলবে, তার উপযুক্ত কিনা। তাছাড়া, অভিবাসীরা প্রায়ই দেখতে পায় যে তাদের “ঐশ্বর্য্য” অর্জন করা যতটা সহজ তারা ভেবেছিল মোটেই সেরকম নয়। যদি পরিবারকে নিয়ে আসার খরচ সে না দিতে পারে, তাহলে এই বিচ্ছেদ বহু বছর চলতে পারে। ফলত, গুরুতর নৈতিক বিপদ ঘটতে পারে। (১ করিন্থীয় ৭:১-৫ তুলনা করুন।) দুঃখের বিষয়, এইরকম পরিস্থিতিতে কিছু লোক যৌন অনৈতিকতার শিকার হয়েছে।
ঈশ্বরের ব্যবস্থার প্রতি সুনিশ্চিত
জগতের অর্থনৈতিক অবস্থার যত অধঃপতন ঘটবে, ইহা মনে রাখা ভাল যে ঈশ্বরের লোকেরা পরিতক্ত হবে না। যীশু বলেন: “ইহা বলিয়া ভাবিত হইও না যে, ‘কি ভোজন করিব?’ বা ‘কি পান করিব?’ বা ‘কি পরিব?’ কেননা পরজাতীয়েরাই এই সকল বিষয় চেষ্টা করিয়া থাকে; তোমাদের স্বর্গীয় পিতা ত জানেন যে, এই সকল দ্রব্যে তোমাদের প্রয়োজন আছে। কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তাহা হইলে ঐ সকল দ্রব্যও তোমাদিগকে দেওয়া হইবে।”—মথি ৬:৩১-৩৩।
আজ যিহোবার সাক্ষীরা ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য প্রচেষ্টা করে উদ্যোগ সহকারে সুসমাচার প্রচার করার দ্বারা। (মথি ২৪:১৪; ২৮:১৯, ২০) অনেক দরিদ্র দেশে প্রচারকের অত্যন্ত প্রয়োজন আছে। বিশেষ ভাবে পরিণত প্রাচীণ ও পরিচারক দাসদের প্রয়োজন আছে। কোন অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল দেশে যাওয়ার পরিবর্তে, যেখানে প্রয়োজন ততটা নেই, অনেকে তাদের স্বদেশে থাকা বেছে নিয়েছে। তারা কিরকম উন্নতি করেছে?
এথেলিয়া, একজন পশ্চিম আফ্রিকাবাসী যিনি তার স্বদেশে ৩০ বছর ধরে পূর্ণ সময় পরিচর্য্যায় আছেন, তিনি বলেন: “বিদেশে থাকার সুযোগ আমার হয়েছে। কেন আমি থাকিনি তার কারণ আমার নিজের আত্মিয় ও লোকেদের সঙ্গে থাকতে আমি ভালবাসি। তাদের সত্য শিখতে সাহায্য করতে আমার ভাল লাগে যাতে আমরা একসঙ্গে যিহোবাকে সেবা করতে পারি। এখানে থেকে যাওয়ায় আমি কোন কিছুই হারাইনি, এবং আমার কোন আক্ষেপ নেই।”
একইভাবে উইনিফ্রেড একটি আফ্রিকান দেশে বাস করে। সেখানে জীবনযাত্রার মান পৃথিবীতে সর্বনিম্নের মধ্যে অন্যতম বলে ধরা হয়। কিন্তু ৪২ বছর পূর্ণ সময় অগ্রগামীর কাজের পর, তিনি বলেন: “অল্প খরচে চালানো সব সময় সহজ নয়। শয়তান জীবনধারণ কষ্টকর করে তুলতে চেষ্টা করে, কিন্তু যিহোবা সবসময় আমার প্রয়োজনের দেখাশোনা করেছেন।”
অতীতকালে অব্রাহাম নিশ্চিত ছিলেন যে “[ঈশ্বর] যাহা প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, তাহা সফল করিতে সমর্থও আছেন।” (রোমীয় ৪:২১) আপনিও কি নিশ্চিত যে আপনাকে দেখাশোনা করার প্রতিজ্ঞা যিহোবা পূর্ণ করতে সমর্থ যদি আপনি রাজ্যের কাজকে আপনার জীবনে প্রথম স্থান দেন? আপনি কি গীতরচকের সঙ্গে একমত যিনি লেখেন: “[ঈশ্বরের] মুখের ব্যবস্থা আমার পক্ষে উত্তম, সহস্র সহস্র স্বর্ণ ও রৌপ্যমুদ্রা অপেক্ষা উত্তম”? (গীতসংহিতা ১১৯:৭২) অথবা কি প্রেরিত পৌলের উপদেশ আপনার ক্ষেত্রে আরও অধিক প্রয়োগের প্রয়োজন আছে? ১ তীমথিয় ৬:৮ পদে তিনি লেখেন: গ্রাসাচ্ছাদন পাইলে আমরা তাহাতই সন্তুষ্ট থাকিব।” এমন কি হতে পারে যে নতুন পরিবেশ খোঁজার চেষ্টা না করে আপনার বর্তমান পরিস্থিতি থেকে যতটা সম্ভব লাভবান হওয়া যায় তার চেষ্টা করা বিজ্ঞতার কাজ হবে?
বহু দেশে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খ্রীষ্টিয় ব্যক্তিদের জীবনে কষ্টকর বিষয় হতে পারে। তাই, সমস্ত কিছু বিবেচনা করার পর যদি কোন পরিবার বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, অন্যদের সমালোচনার চোখে দেখার কোন কারণ নেই। (গালাতীয় ৬:৫) যারা থেকে যাচ্ছেন তারা যিহোবার সাহায্য চাইতে পারেন এই বিধিব্যবস্থার কষ্ট সহ্য করার জন্য, ও ঈশ্বর যে আত্মিক আশীর্বাদ তাদের দেন সেই বিষয়ে তারা আনন্দ করতে পারে। মনে রাখবেন, শীঘ্রই এই জগতের অন্যায় ও অসমতা ঈশ্বরের রাজ্যের অধীনে সংশোধন হবে। তখন গীতরচক যা লিখেছিলেন তা পূর্ণ হবে: “তুমিই [যিহোবা] আপন হস্ত মুক্ত করিয়া থাক, সমুদয় প্রাণীর বাঞ্ছা পূর্ণ করিয়া থাক।”—গীতসংহিতা ১৪৫:১৬। (w91 4/1)