যিহোবার নির্দেশিত পথে চলা
“হে যিহোবা, তোমার পথ আমাকে শিক্ষা দেও, আমি তোমার সত্যে চলিব। তোমার নাম ভয় করিতে আমার চিত্তকে একাগ্র কর।”—গীতসংহিতা ৮৬:১১, NW.
১, ২. কি যিহোবার সাক্ষীদের পরিচালিত করে যাতে তারা রক্ত নেওয়া প্রত্যাখ্যান করে?
“যিহোবার সাক্ষীরা রক্ত প্রত্যাখ্যান করে সঠিক কাজ করছে, কারণ এটা সত্য যে গুরুত্বপূর্ণ অনেক রোগউৎপাদক বস্তু প্রেরণসাধ্য রক্ত দেওয়ার মাধ্যমে।”—ফ্রেন্চ মেডিকেল ডেলি লে কোটিডিয়ান ডু মেডিসিন, ডিসেম্বর ১৫, ১৯৮৭.
২ অনেকে যারা এই উক্তিটি পড়েছে হয়ত মনে করবে যে যিহোবার সাক্ষীরা কেবল আকস্মিকভাবে রক্ত নেওয়া প্রত্যাখ্যান করে সাধারণে এই বিষয় জ্ঞাত হওয়ার অনেক পূর্বে যে ইহা বিপদজনক, এবং প্রাণনাশক হতে পারে। কিন্তু যিহোবার সাক্ষীরা যে মান অনুধাবন করে তা কোন আকস্মিক কারণে নয়, বা কোন অদ্ভুত সম্প্রদায়ের উদ্ভাবিত নিয়ম নয়, যার উৎস হচ্ছে যে রক্ত নিরাপদ নয় তার ভয়। বরঞ্চ, সাক্ষীরা এই জন্য রক্তকে প্রত্যাখ্যান করে কারণ তারা দৃঢ়মনস্থ যে তাদের মহান্ শিক্ষকের বাধ্যতায় তারা চলবে—যিনি ঈশ্বর।
৩. (ক) যিহোবার উপর নির্ভরতা সম্বন্ধে দায়ূদ কিরূপ বোধ করেন? (খ) দায়ূদ ঈশ্বরের উপর নির্ভর করে কোন পরিণতির দিকে তাকান?
৩ রাজা দায়ূদ, যিনি তার নির্ভরতা সব সময় ঈশ্বরের উপর রাখেন, তিনি দৃঢ়সংকল্প ছিলেন যেন তাঁর দ্বারা শিক্ষিত হন ও ‘তাঁর সত্যে চলেন।’ (গীতসংহিতা ৮৬:১১) দায়ূদকে একবার পরামর্শ দেওয়া হয় যে সে যদি ঈশ্বরের চোখে রক্তপাতকারী না হয়, তাহলে ‘তার প্রাণ যিহোবার কাছে যেন জীবনের বোচকাতে বদ্ধ থাকবে।’ (১ শমূয়েল ২৫:২১, ২২, ২৫, ২৯) যেমন লোকে মূল্যবান সামগ্রী বেঁধে রাখে যাতে তা রক্ষিত ও অক্ষুণ্ণ থাকে, ঠিক তেমন দায়ূদের জীবন ঈশ্বর রক্ষিত ও অক্ষুণ্ণ রাখবেন। এই বিজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণ করে, দায়ূদ তার জীবন রক্ষা করার জন্য তার নিজের ক্ষমতার উপর নির্ভর না করে তাঁর উপর নির্ভর করে যাঁর কাছে তার জীবন ঋণী ছিল: “তুমি আমাকে জীবনের পথ জ্ঞাত করিবে, তোমার সম্মুখে তৃপ্তিকর আনন্দ, তোমার দক্ষিণ হস্তে নিত্য সুখভোগ।”—গীতসংহিতা ১৬:১১.
৪. কেন দায়ূদ চেয়েছিলেন যিহোবার দ্বারা শিক্ষিত হতে?
৪ এই মনোভাব নিয়ে, দায়ূদ মনে করেনি যে সে ব্যক্তিগতভাবে বেছে নিতে পারবে কোন ঐশিক আইন বৈধ অথবা পালন করা উচিত। তার মনোভাব ছিল: “যিহোবা, তোমার পথ আমাকে শিখাও, ও ন্যায়পরায়ণতার পথে আমাকে গমন করাও।” “হে যিহোবা, তোমার পথ আমাকে শিক্ষা দেও, আমি তোমার সত্যে চলিব; তোমার নাম ভয় করিতে আমার চিত্তকে একাগ্র কর। হে যিহোবা আমার ঈশ্বর, আমি সর্বান্তঃকরণে তোমার স্তব করিব।” (গীতসংহিতা ২৭:১১; ৮৬:১১, ১২, NW) এক এক সময়ে সত্যে ঈশ্বরের সাক্ষাতে চলা অসুবিধাজনক বোধ হতে পারে অথবা তার অর্থ হতে পারে অনেক ত্যাগস্বীকার, কিন্তু দায়ূদ চেয়েছিলেন সেই সঠিক পথে শিক্ষিত হতে ও তাতে চলতে।
রক্ত সম্বন্ধে নির্দেশ
৫. দায়ূদ রক্ত সম্বন্ধে ঈশ্বরের মান কি সেই সম্বন্ধে কি জানতেন?
৫ এই বিষয় লক্ষ্য করা আমাদের জন্য মূল্যবান যে বাল্যকাল থেকে, দায়ূদকে রক্ত সম্বন্ধে ঈশ্বরের চিন্তাধারা শিক্ষা দেওয়া হয়, যে ধারণা কোন ধর্ম্মীয় গুপ্ত মতবাদ ছিল না। যখন লোকেদের কাছে আইন পড়ে শোনান হত, দায়ূদ তা নিশ্চয় শুনেছিলেন: “কেননা রক্তের মধ্যেই শরীরের প্রাণ থাকে, এবং তোমাদের প্রাণের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করণার্থ আমি তাহা বেদির উপর তোমাদিগকে দিয়াছি; কারণ প্রাণের গুণে রক্তই প্রায়শ্চিত্তসাধক। এই জন্য আমি ইস্রায়েল সন্তানগণকে কহিলাম: ‘তোমাদের মধ্যে কেহ রক্ত ভোজন করিবে না, ও তোমাদের মধ্যে প্রবাসকারী কোন বিদেশীও রক্ত ভোজন করিবে না।’”—লেবীয় পুস্তক ১৭:১১, ১২; দ্বিতীয় বিবরণ ৪:১০; ৩১:১১.
৬. কেন রক্ত সম্বন্ধে ঈশ্বরের লোকদের রক্ত সম্বন্ধে শিক্ষা দেবার ক্রমাগত প্রয়োজন হয়েছে?
৬ যত দিন পর্য্যন্ত ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের তার সমবেত লোক হিসাবে ব্যবহার করেন, যারা তাকে খুশী করতে চেয়েছিল তাদের প্রয়োজন ছিল রক্ত সম্বন্ধে পরামর্শের। সেইজন্য ইস্রায়েলীয়দের ছেলেদের এবং মেয়েদের বংশপরম্পরায় শিক্ষা দেওয়া হয়। কিন্তু এইরূপ পরামর্শ কি চলতে থাকবে ঈশ্বর খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীকে গ্রহণ করার পরেও, যাদের তিনি গঠন করেছেন, “ঈশ্বরের ইস্রায়েল” করে? (গালাতীয় ৬:১৬) হ্যাঁ, অবশ্যই। ঈশ্বরের যে চিন্তাধারা রক্ত সম্বন্ধে তার পরিবর্তন হয়নি। (মালাখি ৩:৬) রক্ত সম্বন্ধে তাঁর যে মান তা কার্য্যকর হয় আইন চুক্তি দেবার পূর্বে, এবং তা বহাল থাকে আইন শেষ হয়ে যাবার পরও।—আদিপুস্তক ৯:৩, ৪; প্রেরিত ১৫:২৮, ২৯.
৭. কেন ঈশ্বরের দ্বারা শিক্ষিত হওয়া আমাদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ?
৭ রক্তের প্রতি সম্মান হল খ্রীষ্টতত্ত্বের মূল। ‘এটা কি অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে না?’ অনেকে হয়ত প্রশ্ন করবে। তবুও, যীশুর বলিদান ছাড়া খ্রীষ্টতত্ত্বের মূলে আর কি আছে? আর প্রেরিত পৌল লেখেন: “যাঁহাতে আমরা তাহার [যীশুর] রক্ত দ্বারা মুক্তি, অর্থাৎ অপরাধ সকলের মোচন পাইয়াছি; ইহা তাঁহার সেই অনুগ্রহ-ধন অনুসারে হইয়াছে।” (ইফিষীয় ১:৭) দ্যা ইন্সপায়ার্ড লেটারস, যা অনুবাদ করেছেন ফ্র্যাঙ্ক সি. লোবাক, তিনি এই পদগুলি এইভাবে বর্ণনা করেন: “খ্রীষ্টের রক্ত আমাদের জন্য মূল্যরূপে দেওয়া হয়েছে এবং এখন আমরা তার অধিকারভুক্ত।”
৮. কি ভাবে “বিরাট জনতা” জীবন রক্তের উপর নির্ভর করছে?
৮ সকলে যারা আশা রাখে আসন্ন “মহাক্লেশ” থেকে বেঁচে যেতে ও পরমদেশরূপ পৃথিবীতে ঈশ্বরের আশীর্বাদ উপভোগ করতে তারা যীশুর পাতিত রক্তের উপর নির্ভর করে। প্রকাশিত বাক্য ৭:৯-১৪ তাদেরকে এইভাবে বর্ণনা করে ও তাদের অতীতের ঘটনা বর্ণনা করে বলে: “ইহারা সেই লোক যাহারা মহাক্লেশের মধ্যে হইতে আসিয়াছে, এবং মেষশাবকের রক্তে আপন আপন বস্ত্র ধৌত করিয়াছে ও শুক্লবর্ণ করিয়াছে।” এখানে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা লক্ষ্য করুন। এখানে এইরূপ বলে না যে যারা এই মহাক্লেশ থেকে বেরিয়ে এসেছে তারা ‘যীশুকে গ্রহণ করেছে’ অথবা ‘তার উপরে বিশ্বাস দেখিয়েছে,’ যদিও এইগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ দিক। ইহা আরও এক ধাপ এগিয়ে যায় ও বলে যে তারা “মেষশাবকের [যীশুর] রক্তে আপন আপন বস্ত্র ধৌত করিয়াছে।” এর কারণ হল যে তার রক্তে মুক্তির মূল্য আছে।
৯. কেন রক্তের ব্যাপারে যিহোবার বাধ্য হওয়া এত গুরুত্বপূর্ণ?
৯ এই মূল্যের প্রতি উপলব্ধি যিহোবার সাক্ষীদের সাহায্য করে রক্তের অপব্যবহারের প্রতি স্থিরসঙ্কল্প গ্রহণ করতে, এমনকি তখন যখন চিকিৎসকেরা মনে করে যে রক্ত নেওয়া আবশ্যক। সে হয়ত বিশ্বাস করে যে সম্ভাবনাময় উপকার তা আনবে তার তুলনায় রক্ত দেওয়ায় যে বিপদগুলি আছে তা কিছু না। কিন্তু খ্রীষ্টানেরা আরও কিছু গুরুতর ঝুকি উপেক্ষা করতে পারে না, সেই ঝুকি হল রক্তের অপব্যবহার করে ঈশ্বরের অনুগ্রহ হারানো। পৌল একবার তাদের কথা বলেন যারা “সত্যের তত্ত্বজ্ঞান পাইলে পর স্বেচ্ছাপূর্বক পাপ করে।” কেন এই ধরনের কোন পাপ খুব গুরুতর? কারণ এই ধরনের ব্যক্তি “ঈশ্বরের পুত্রকে পদতলে দলিত করিয়াছে এবং . . . নিয়মের যে রক্তে সে পবিত্রীকৃত হইয়াছিল, তাহা সামান্য জ্ঞান করিয়াছে।”—ইব্রীয় ৯:১৬-২৪; ১০:২৬-২৯.
অন্যদের সাহায্য করুন নির্দেশিত হতে
১০. রক্ত থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে আমাদের দৃঢ়সঙ্কল্প হওয়ার পেছনে কারণ কি?
১০ আমরা যারা যীশুর মুক্তির মূল্যরূপী যে প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করি যত্ন নিই যেন ক্রমাগত পাপ না করি, এবং তার রক্তের জীবনদায়ী যে মূল্য তা প্রত্যাখ্যান না করি। বিষয়টিকে ভাল করে ভেবে, আমরা উপলব্ধি করি যে কেবলমাত্র জীবনের জন্য ঈশ্বরের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা বোধ আমাদের পরিচালিত করবে যাতে আমরা তাঁর ধার্ম্মিক আইনের সাথে কোন আপোস না করি, যেগুলি আমরা নিশ্চিত যে হৃদয়ে আমাদের মঙ্গল কামনা করে দেওয়া হয়েছিল—আমাদের অনেক-কালের মঙ্গল চিন্তা করে। (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:২৪; হিতোপদেশ ১৪:২৭; উপদেশক ৮:১২) কিন্তু, আমাদের ছেলেমেয়েদের সম্বন্ধে কি বলা যেতে পারে?
১১-১৩. কিছু খ্রীষ্টীয় পিতামাতা তাদের ছেলেমেয়ে এবং রক্ত সম্পর্কে কি ভুল চিন্তাধারা নেয়, এবং কেন?
১১ যতক্ষণ আমাদের ছেলেমেয়েরা শিশু ও ছোট থাকে বোঝার ব্যাপারে, যিহোবা তাদের শুচি এবং গ্রহণযোগ্য হিসাবে দেখেন আমাদের ভক্তির কারণে। (১ করিন্থীয় ৭:১৪) সেইকারণে হয়ত ইহা সত্য যে খ্রীষ্টীয় পরিবারে কোন শিশু হয়ত এখন বোঝে না এবং রক্ত সম্বন্ধে ঈশ্বরের আইন পালন করার ব্যাপারে কোন মনোনয়ন করেনি। কিন্তু, আমরা কি, আমাদের সব থেকে ভাল প্রচেষ্টা করছি এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে তাদের শিক্ষা দেবার? খ্রীষ্টীয় পিতামাতাদের এই বিষয় গুরুত্বপূর্ণভাবে চিন্তা করা দরকার, কারণ কোন কোন পিতামাতা তাদের ছেলেমেয়ে ও রক্ত সম্বন্ধে ভুল চিন্তাধারা পোষণ করেন। এমন বোধ হয় যে অনেকে মনে করেন যে তাদের শিশুদের রক্ত দেওয়া হবে কিনা সেই সম্বন্ধে তাদের বাস্তবপক্ষে খুব বেশী কিছু করার নেই। কেন এই ভুল চিন্তাধারা?
১২ অনেক দেশে আইন আছে অথবা সরকারের প্রতিনিধিরা রয়েছেন যারা অবহেলিত ও যে বাচ্চারা অপব্যবহার পায় তাদের রক্ষা করে। যিহোবার সাক্ষীদের প্রিয় ছেলে বা মেয়েকে রক্ত দেওয়ার বিপরীতে যখন পিতামাতা সিদ্ধান্ত করে তখন তারা তাদের সন্তানদের অবহেলা করছে না, একই সময় তারা অনুরোধ করছে যেন তাদের ছেলেমেয়েকে বিকল্প চিকিৎসা দেওয়া হয় যা চিকিৎসাবিদ্যাগত আধুণিক ঔষধ দিতে পারে। এমনকি চিকিৎসাবিদ্যার দৃষ্টিকোণ থেকে, ইহা কোন অবহেলা অথবা অপব্যবহার নয়, যখন আমরা রক্ত নেওয়ার যে বিপদগুলি স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে তা চিন্তা করি। এটা হল যে ঝুকিগুলি আছে তা বিবেচনা করা এবং তারপর বেছে নেওয়া যে কোন চিকিৎসা গ্রহণ করা হবে।a তবুও, কিছু চিকিৎসকেরা আইনের দারস্থ হয়ে কর্তৃপক্ষকে পরিচালিত করেছে জোর করতে যাতে ইচ্ছার বিপরীতে রক্ত দেওয়া হয়।
১৩ কিছু পিতামাতা, এই বিষয় সচেতন যে নাবালকদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা রক্ত দেওয়ার ব্যাপারে আদালতের আদেশ সহজে পেতে পারে, সেই জন্য তারা মনে করতে পারে যে বিষয়টি তাদের হাতের বাইরে, যে এমন কিছুই নেই যা পিতামাতা করতে পারে বা তাদের করা দরকার। সেইরকম দৃষ্টিকোণ রাখা কত ভুল!—হিতোপদেশ ২২:৩.
১৪. দায়ূদ ও তীমথিয়কে কি ভাবে তাদের তরুণ অবস্থায় শিক্ষা দেওয়া হয়?
১৪ আমরা জানি যে দায়ূদ যৌবনকাল থেকে ঈশ্বরের পথে শিক্ষিত হয়েছিলেন। তাহাই তাকে সাহায্য করেছিল জীবনকে ঈশ্বরের কাছ থেকে দানস্বরূপ দেখতে এবং জানতে যে রক্তই জীবনকে চিত্রিত করে। (তুলনা করুন ২ শমূয়েল ২৩:১৪-১৭) তীমথিয়কে ঈশ্বরের চিন্তাধারায় শিক্ষিত করে তোলা হয় “শিশুকাল অবধি।” (২ তীমথিয় ৩:১৪, ১৫) আপনি কি একমত হবেন না যে দায়ূদ এবং তীমথি যখন তারা আজ যা প্রাপ্তবয়স্কদের আইনত বয়স তার নিচে ছিলেন, তারা নিশ্চয় নিজেদের ভালভাবে ব্যক্ত করতে পারতেন ঈশ্বর সম্বন্ধীয় বিষয়গুলিতে? তদ্রুপ, আজ, ছোটরা প্রাপ্তবয়স্ক হবার অনেক আগে, তাদের ঈশ্বরীয় পথে শিক্ষা দেওয়া উচিত।
১৫, ১৬. (ক) কোন কোন স্থানে অল্পবয়স্কদের অধিকার সম্বন্ধে কি দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছে? (খ) কি পরিচালিত করে এক অল্পবয়স্ককে রক্ত দিতে?
১৫ কোন কোন স্থানে যাদের তথাকথিত-পরিপক্ক অল্পবয়স্ক বলা হয় তাদের সেই সব অধিকার দেওয়া হয় যা প্রাপ্তবয়স্কদের দেওয়া হয়। ইহা নির্ভর করে তাদের বয়সের উপর অথবা তাদের পরিপক্ক চিন্তাভাবনার উপর, অথবা উভয়ের উপর, একজন যুবককে হয়ত বেশ পরিপক্ক ভাবা যেতে পারে যখন কিনা সে তার চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ণয় করতে পারে। যেখানে এমন আইন নেই, বিচারকগণ ও কর্তৃস্থানীয় ব্যক্তিরা সেই অল্পবয়স্কদের ইচ্ছায় বেশী মনোযোগ দেবে যারা রক্ত সম্বন্ধে তাদের দৃঢ় চিন্তাধারা ব্যক্ত করতে পারে। বিপরীত চিন্তাধারা দেবার সময়, যখন একজন অল্পবয়স্ক ব্যক্তি তার বিশ্বাস পরিপক্কতার সাথে বোঝাতে পারে না, তখন বিচারালয় মনে করে যে তাদের নির্ণয় করতে হবে যে তার জন্য কোনটা ভাল, যেমন করতে হয় এক শিশুর ক্ষেত্রে।
১৬ একজন যুবক ব্যক্তি যে অনেক বৎসর ধরে মাঝে, মাঝে, বাইবেল অধ্যয়ন করত কিন্তু বাপ্তাইজিত হয়নি। যদিও সে কেবল সাত সপ্তাহ দূরে ছিল সেই বয়স থেকে যখন সে “অধিকার পাবে বেছে নেবার কোন চিকিৎসা সে তার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে দেবে,” একটি হাসপাতাল যেখানে তার ক্যান্সারের চিকিৎসা চলছিল তাকে রক্ত দেওয়ার জন্য তারা আদালতের আদেশ নেয় তার ও তার পিতামাতার ইচ্ছার বিপরীতে। সেই চেতনাবোধসম্পন্ন বিচারপতি তাকে রক্ত সম্বন্ধে ও তার বিশ্বাস সম্বন্ধে কিছু মৌলিক প্রশ্ন করেন তার সাধারণজ্ঞানের পরীক্ষা করার জন্য, যেমন বাইবেলের প্রথম পাঁচটা বইয়ের নাম কি। সেই যুবক ব্যক্তি বইগুলির নাম করতে অসমর্থ হয় এবং যুক্তিসম্পন্ন সাক্ষ্য দিতেও ব্যর্থ হয় যা দেখায় সে বোঝে কেন সে রক্ত নেবে না। দুঃখের সাথে, সেই বিচারক আদেশ দেন যে তাকে রক্ত দেওয়া হোক, তার উক্তিতে তিনি বলেন: “তার রক্ত না নেওয়ার যে কারণ তার ভিত্তি তার নিজের কোন পরিপক্ক ধর্ম্মীয় বিশ্বাসের জন্য নয়।”
১৭. রক্ত দেওয়ার ব্যাপারে এক ১৪ বৎসরের মেয়ে কি মান গ্রহণ করে, তার ফল কি হয়?
১৭ যে অল্পবয়স্করা উত্তমভাবে শিক্ষিত হচ্ছে ঈশ্বরীয় পথে এবং সক্রিয়ভাবে সেই সত্যের পথে চলছে তাদের জন্য পরিস্থিতি অন্যরূপ হতে পারে। একজন অল্পবয়স্ক খ্রীষ্টীয় ভগ্নির এই খুব বিরল ধরনের ক্যান্সার হয়। সেই মেয়েটি ও তার পিতামাতা পরিবর্তিত কেমোথেরাপি এক বিশিষ্ট হাসপাতালের স্পেশালিস্টের কাছ থেকে বোঝে এবং গ্রহণ করে। তবুও সেই কেস আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিচারপতি লেখেন: “ডি. পি. সাক্ষ্য দেয় যে রক্ত দেওয়া সে, যে কোন প্রকারে রোধ করবে। সে রক্ত দেওয়াকে তার শরীরে প্রবেশ করা বলে এবং তা সে তুলনা করে ধর্ষণের সাথে। সে আদালতকে বলে তার নির্ণয়কে সম্মান করতে এবং যেন তাকে [সেই হাসপাতালে] থাকার অনুমতি দেওয়া হয় রক্ত দেওয়ার আদেশ না দিয়ে।” যে খ্রীষ্টীয় শিক্ষা সে পেয়েছিল তা এই কঠিন সময় তার সাহায্যে আসে।—বাক্সে দেখুন।
১৮. (ক) একজন মেয়ে যে উৎপীড়িত হয় রক্ত নেওয়া সম্বন্ধে কি দৃঢ় মান গ্রহণ করে? (খ) বিচারপতি তার চিকিৎসা সম্বন্ধে কি মীমাংসা করে?
১৮ এক ১২ বৎসরের বালিকাকে লুকিমীয়ার জন্য চিকিৎসা করা হচ্ছিল। এক চাইল্ড-ওয়েলফেয়ার এজেন্সি ব্যাপারটি আদালতে নিয়ে যায় যাতে জোর করে সেই বালিকাকে রক্ত দেওয়া যায়। বিচারপতি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান: “এল. পরিষ্কারভাবে এবং দৃঢ়তার সাথে এই আদালতকে বলেছে, যে যদি তাকে রক্ত দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, সে তার বিরুদ্ধে লড়বে তার সব শক্তি দিয়ে যা সে জাগিয়ে তুলতে পারবে। সে তা বলেছে, এবং আমি তা বিশ্বাস করি, সে চিৎকার করবে এবং লড়াই করবে এবং যে ডিভাইজ দিয়ে তাকে রক্ত দেওয়ার চেষ্টা করা হবে তা সে তার বাহু থেকে খুলে ফেলে দেবে এবং সব রকম চেষ্টা করবে তার বিছানার উপর যে রক্তের ব্যাগ আছে তা নষ্ট করতে। আমি এমন কিছু আদেশ করতে অসম্মত যা এই বাচ্চাটিকে সেই কঠোর পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাবে . . . এই রোগীর জন্য যে চিকিৎসা হাসপাতাল প্রস্তাব করেছে তা কেবল শারীরিক দিক দিয়ে রোগের চিকিৎসা। কিন্তু ইহা তার মানসিক ও ধর্ম্মীয় বিশ্বাসের প্রতি যত্ন নিতে অক্ষম।”
পিতামাতারা—ভালভাবে শিক্ষা দিন
১৯. পিতামাতারা তাদের ছেলেমেয়েদের প্রতি কি বিশেষ দায়িত্ব পূর্ণ করবেন?
১৯ এই অভিজ্ঞতাগুলি এক জোরালো সংবাদ পিতামাতাদের কাছে বয়ে নিয়ে আসে যারা আকাঙ্খা রাখেন যে তাদের পরিবার রক্ত সম্বন্ধে ঈশ্বরের আইন অনুযায়ী জীবন ধারণ করুক। একটি কারণ কেন অব্রাহামকে ঈশ্বরের বন্ধু বলা হয়েছে কারণ হল তিনি জানতেন যে সেই কুলপতি “সে আপন ভাবী সন্তানগণকে ও পরিবারদিগকে আদেশ করবে, যেন তাহারা তাহার পরে [অবশ্যই] ধর্ম্মসঙ্গত ও ন্যায্য আচরণ করিতে করিতে যিহোবার পথে চলে।” (আদিপুস্তক ১৮:১৯, NW.) খ্রীষ্টীয় পিতামাতাদের ক্ষেত্রে কি আজ ইহা সত্য হওয়া উচিত নয়? আপনি যদি একজন পিতামাতা হন, আপনি কি আপনার প্রিয় ছেলেমেয়েদের যিহোবার পথে চলতে শিক্ষা দিচ্ছেন যাতে তারা “যে কেহ [তাহাদের] অন্তরস্থ প্রত্যাশার হেতু জিজ্ঞাসা করে . . . তাহাকে ভয়ে ও মৃদুতার সাথে উত্তর” দেবার জন্য প্রস্তুত থাকে?—১ পিতর ৩:১৫, NW.
২০. বিশেষ করে আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা রক্ত সম্বন্ধে কি জানুক ও বিশ্বাস করুক? (দানিয়েল ১:৩-১৪)
২০ যদিও ইহা ভাল আমাদের ছেলেমেয়েদের জানানো যে রক্ত নেওয়ার মধ্যে কি রোগ এবং অন্যান্য ঝুঁকি জড়িত আছে, কিন্তু আমাদের ছেলেমেয়েদের ঈশ্বরের সিদ্ধ আইন রক্ত সম্বন্ধে শিক্ষা দেবার প্রধাণ উদ্দেশ্য এই নয় যে আমরা তাদের মধ্যে রক্ত সম্বন্ধে এক ভয় ধরিয়ে দেবার চেষ্টা করছি। দৃষ্টান্তস্বরূপ, যদি একজন বিচারকর্ত্তা একটি মেয়েকে জিজ্ঞাসা করে যে কেন তাকে রক্ত দেওয়া হবে না এবং তার উত্তরের প্রধাণ কারণ হয় যে রক্ত নেওয়া খুব ঝুঁকিসম্পন্ন ও ভীতিজনক, তার প্রতিক্রিয়া কি হবে? বিচারকর্ত্তা এই উপসংহারে উপনিত হবেন যে মেয়েটি অপরিপক্ক ও অতিরিক্ত ভীত, সে হয়ত এমনই চিৎকার করবে ও বাধা দেবে যদি তার এপেনডেকটোমি অপারেশন হয় যা তার বাবা মাও মনে করে তার জন্য ভাল। আরও, আমরা লক্ষ্য করেছি যে আমাদের প্রধাণ উদ্দেশ্য কেন আমরা রক্ত দেওয়ার বিরোধীতা করি তার কারণ এই নয় যে রক্ত দূষিত কিন্তু তা আমাদের জীবন-দাতা ঈশ্বরের কাছে খুব মূল্যবান। আমাদের ছেলেমেয়েদের তা জানা উচিত, এবং চিকিৎসা বিদ্যার দিক থেকে রক্তের যে সমস্যা আছে সেটা আমাদের ধর্ম্মীয় বিশ্বাসকে আরও জোরালো করে।
২১. (ক) পিতামাতাদের তাদের ছেলেমেয়েদের সম্বন্ধে এবং বাইবেল রক্ত সম্বন্ধে কি বলে সেই বিষয় কি শেখা উচিত?
২১ যদি আপনার ছেলেমেয়ে থাকে, আপনি কি নিশ্চিত যে তারা একমত এবং বাইবেল-ভিত্তিক রক্ত নেওয়ার যে মান তা বোঝাতে পারে? তারা কি সত্যই বিশ্বাস করে যে তাদের এই প্রতিরোধ সত্যই ঈশ্বরের ইচ্ছা? তারা কি এই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয় যে ঈশ্বরের আইন লঙ্ঘন করা এত গুরুতর যে তাহা একজন খ্রীষ্টানের অনন্ত জীবনের আশাকে বিপদগ্রস্থ করতে পারে? বিজ্ঞ পিতামাতারা এই বিষয়গুলি তাদের ছেলেমেয়েদের সাথে পুনর্বিবেচনা করবেন, তা তারা খুব ছোট অথবা প্রায় প্রাপ্তবয়স্ক হতে চলেছে যাই হোক না কেন। পিতামাতারা হয়ত অভ্যাস পর্ব করতে পারেন যেখানে প্রত্যেক অল্পবয়স্কদের সামনে প্রশ্ন রাখা যেতে পারে যেমন হয়ত একজন বিচারকর্ত্তা অথবা হাসপাতালের অধিকর্ত্তা করতে পারেন। লক্ষ্য এই নয় যে একজন অল্পবয়স্ক ব্যক্তি কিছু নির্বাচিত তথ্য বা উত্তর মুখস্থ বলে যাবে। আরও অধিক গুরুত্বপূর্ণ হল যেন তারা জানে যে তারা কি বিশ্বাস করে, এবং কেন তা করে। অবশ্যই, আদালতে যখন শোনানি হয়, পিতামাতা অথবা অন্যরা সেই তথ্যগুলি সরবরাহ করবেন যা রক্ত দেওয়ার ঝুঁকি ও বিকল্প যে চিকিৎসা প্রাপ্তিসাধ্য তা যোগাবে। কিন্তু একজন বিচারপতি অথবা অধিকর্ত্তা যে বিষয় আমাদের ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে জানতে চাইবে তা হল তারা পরিপক্কভাবে তাদের পরিস্থিতি এবং যে পছন্দগুলি আছে তা বোঝে কিনা আরও যে তাদের নিজেদের কোন মূল্যবোধ এবং দৃড়সংকল্প আছে কিনা।—তুলনা করুন ২ রাজাবলি ৫:১-৪.
২২. ঈশ্বরের দ্বারা রক্ত সম্বন্ধে শিক্ষিত হওয়ার দ্বারা কি স্থায়ী ফল হতে পারে?
২২ আমরা সকলে যেন উপলব্ধি ও স্থিরসঙ্কল্পের সাথে ঈশ্বরীয় যে দৃষ্টিভঙ্গি রক্ত সম্বন্ধে তা ধরে রাখি। প্রকাশিত বাক্য ১:৫ খ্রীষ্টকে বর্ণনা করে সেইরূপ একজন হিসাবে যিনি ‘আমাদের প্রেম করেছেন এবং আমাদের পাপ থেকে বন্ধনমুক্ত করেছেন তার নিজের রক্তের দ্বারা।’ কেবলমাত্র যীশুর রক্তের মূল্য গ্রহণ করার দ্বারা আমরা আমাদের পাপের জন্য অনন্ত ক্ষমা পেতে পারি। রোমীয় ৫:৯ পরিষ্কারভাবে বলে: “সুতরাং সম্প্রতি তাহার রক্তে যখন ধার্ম্মিক গণিত হইয়াছি, তখন আমরা কত অধিক নিশ্চয় তাহা দ্বারা ঈশ্বরের ক্রোধ হইতে পরিত্রাণ পাইব।” ইহা কত বিজ্ঞের কাজ না হবে, তাহলে, আমাদের জন্য ও আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য যেন আমরা যিহোবার দ্বারা শিক্ষিত হই এই বিষয়ে এবং স্থিরসঙ্কল্প করি যে চিরকাল তাঁর পথে চলব! (w91 6/1)
[পাদটীকাগুলো]
a দেখুন হাউ ক্যান ব্লাড সেভ ইওর লাইফ?, ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যাণ্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি অফ নিউ ইয়োর্ক, আই এন সি., কর্তৃক প্রকাশিত পৃষ্ঠা ২১-২, ২৮-৩১.
উপদেশের মুখ্য বিষয়গুলি
▫ যিহোবার দ্বারা শিক্ষিত হওয়া সম্বন্ধে আমাদের কিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি রাখা দরকার?
▫ রক্ত সম্বন্ধে ঈশ্বরের আইন পালন করা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
▫ কেন ইহা এত গুরুত্বপূর্ণ যে তরুণরা তাদের যে প্রত্যয় তা দৃঢ়তার সাথে এবং পরিষ্কার করে বোঝাতে পারে?
▫ কি করে খ্রীষ্টীয় পিতামাতারা তাদের ছেলেমেয়েদের সাহায্য করতে পারে যাতে তারা রক্ত সম্বন্ধে যিহোবার আইনে ভাল করে শিক্ষিত হয়?
[১৪ পৃষ্ঠার বাক্স]
আদালত প্রভাবিত হয়
অনুচ্ছেদ ১৭তে যে ডি. পি.-র বিষয় বর্ণনা করা হয়েছে তার সম্বন্ধে আদালতের বিচার কি বিবৃতি দেয়?
“আদালত এই ১৪-১/২ বৎসর বয়স্ক তরুণের বুদ্ধি, ভারসাম্যতা, মর্যাদাপূর্ণ ব্যবহার, এবং প্রবলতা দেখে প্রভাবিত হয়েছে। সে হয়ত এটা জেনে সম্পূর্ণরূপে অভিভূত হয়েছে যে তার এক মারাত্মক ধরনের ক্যানসার হয়েছে . . . যাহাহোক, একজন পরিপক্ক তরুণ ব্যক্তি আদালতে আসে তার সাক্ষ্য দিতে। তার সামনে যে কঠিন পরিস্থিতি রয়েছে মোকাবিলা করার জন্য তার উপর সে স্পষ্ট আলোকপাত করে। সে সব উপদেশ দেবার পর্বে যোগ দেয়, সে এক ধরনের চিকিৎসা নিতে সম্মত হয়, ও এক সুসঙ্গত মতবাদ গড়ে তোলে যে একজন মানুষ হিসাবে কিভাবে এই চিকিৎসামূলক সমস্যার মোকাবিলা করবে, আর সে আদালতে আসে তীব্র বিনতি নিয়ে: আমার মীমাংসাকে সম্মান করুন। . . .
“তার পরিপক্কতা ছাড়াও, ডি.পি. যথেষ্ট বিষয় আলোচনা করেছে যাতে আদা লত তার যে মীমাংসা তাকে সম্মান করে। আত্মিক দিক দিয়ে, মনোবিদ্যাগতভাবে, নৈতিকভাবে, এবং মানসিকভাবে তার ক্ষতি হবে যদি এমন কোন চিকিৎসা করা হয় যার অন্তর্ভুক্ত থাকে রক্ত। আদালত তার চিকিৎসার যে নির্ণয় তাকে সম্মান করবে।”
[Pictures on page 13]
একজন বিচারক অথবা হাসপাতালের অধিকর্ত্তা হয়ত জানতে চাইবে যে একজন তরুণ খ্রীষ্টান আসলে কি বিশ্বাস করে, এবং কেন তা করে