ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯২ ১০/১ পৃষ্ঠা ২০-২৫
  • খ্রীষ্ট অধার্মিকতাকে ঘৃণা করতেন—আপনিও কি করেন?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • খ্রীষ্ট অধার্মিকতাকে ঘৃণা করতেন—আপনিও কি করেন?
  • ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • তিন ধরনের ঘৃণা
  • আমরা কেন অধার্মিকতাকে ঘৃণা করব
  • যারা অধার্মিকতাকে ঘৃণা করে
  • অধার্মিকতার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন
  • যৌন অশ্লীলতাকে ঘৃণা করা
  • মিথ্যা ধর্ম ও ধর্মভ্রষ্টতাকে ঘৃণা করা
  • আপনি কি দুষ্টতাকে ঘৃণা করেন?
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পৃথিবীব্যাপী অপরাধ ও দুষ্টতার বৃদ্ধি—এই সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে?
    অন্যান্য বিষয়
  • ঘৃণাকে একেবারে দূর করে দেওয়ার একমাত্র উপায়
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • কেন এই পৃথিবীতে এত ঘৃণা রয়েছে?—এই সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে?
    অন্যান্য বিষয়
আরও দেখুন
১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯২ ১০/১ পৃষ্ঠা ২০-২৫

খ্রীষ্ট অধার্মিকতাকে ঘৃণা করতেন—আপনিও কি করেন?

“তুমি ধার্ম্মিকতাকে প্রেম, ও দুষ্টতাকে ঘৃণা করিয়াছ; এই কারণে ঈশ্বর, তোমার ঈশ্বর, তোমাকে অভিষিক্ত করিয়াছেন, তোমার সখাগণ অপেক্ষা অধিক পরিমাণে আনন্দ-তৈলে।”—ইব্রীয় ১:৯.

১. ধার্মিকতাকে ভালবাসা ছাড়াও, যিহোবা ঈশ্বরের সকল সত্য সেবকদের নিকট থেকে আর কী আশা করা প্রয়োজন?

যিহোবার সত্য সেবকেরা তাঁকে তাদের সমস্ত হৃদয়, প্রাণ, মন এবং শক্তি দিয়ে প্রেম করে। (মার্ক ১২:৩০) তারা যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করতে চায় তাদের আনুগত্য বজায় রেখে। (হিতোপদেশ ২৭:১১) তা করার জন্য, তাদের যে কেবল ধার্মিকতার প্রেমিক হতে হবে তা নয় কিন্তু অধার্মিকতাকেও ঘৃণা করতে হবে। তাদের উদাহরণকর্তা, যীশু খ্রীষ্ট, অবশ্যই তাই করেছিলেন। তাঁর সম্বন্ধে বলা হয়: “তুমি ধার্ম্মিকতাকে প্রেম, ও দুষ্টতাকে ঘৃণা করিয়াছ।”—ইব্রীয় ১:৯.

২. অধার্মিকতায় কী অন্তর্ভূক্ত আছে?

২ অধার্মিকতা কী? তা হল পাপ, যেমন প্রেরিত যোহন দেখান যখন তিনি লেখেন: “যে কেহ পাপাচরণ করে, সে ব্যবস্থালঙ্ঘনও করে, আর ব্যবস্থালঙ্ঘনই পাপ।” (১ যোহন ৩:৪) একজন অধার্মিক ব্যক্তি “আইনের দ্বারা সংযত বা নিয়ন্ত্রিত হয় না।” (ওয়েবস্টারস নাইনথ্‌ নিউ কলেজিয়েট ডিক্সনারী) অধার্মিকতার মধ্যে সেই সব জড়িত যা হল মন্দ, দুষ্ট, অনৈতিক, কলুষিত এবং অসৎ। জগতের দিকে তাকালে তা আমাদের দেখায় যে অধার্মিকতা আজ অন্য যে কোন সময়ের থেকে অপ্রতিহতগতি। ২ তীমথিয় ৩:১-৫ পদে প্রেরিত পৌল যে “বিষম সময়ের” কথা ভবিষ্যদ্‌বাণী করে রেখেছিলেন কোন সন্দেহ নেই আমরা আজ সেই সময় বাস করছি। যেহেতু এত অধার্মিকতা রয়েছে, এটা কত উত্তম আদেশ যে আমরা যেন সকল দুষ্টতাকে ঘৃণা করি! উদাহরণস্বরূপ আমাদের বলা হয়েছে: “হে যিহোবার প্রেমিকগণ, দুষ্টতাকে ঘৃণা কর।” (গীতসংহিতা ৯৭:১০, NW) একইভাবে, আমরা পড়ি: “মন্দকে ঘৃণা কর ও উত্তমকে ভালবাস।”—আমোষ ৫:১৫.

তিন ধরনের ঘৃণা

৩-৫. কোন তিন উপায়ে “ঘৃণা” শব্দটি ঈশ্বরের বাক্যে ব্যবহার করা হয়েছে?

৩ ঘৃণা করার অর্থ কী? ঈশ্বরের বাক্যে, “ঘৃণা” তিনটি স্বতন্ত্র উপায়ে ব্যবহার করা হয়েছে। সেই ধরনের ঘৃণা আছে যা পরিচালিত হয় বিদ্বেষের জন্য যার চেষ্টা হল লক্ষ্যবস্তুর ক্ষতি করা। খ্রীষ্টানদের অবশ্যই এই ধরনের ঘৃণা এড়িয়ে চলতে হবে। এটা হল সেই ধরনের ঘৃণা যা পরিচালনা করেছিল কয়িনকে তার ধার্মিক ভাই হেবলের হত্যা করতে। (১ যোহন ৩:১২) এটা সেই ধরনেরও ঘৃণা যা ধর্মীয় নেতাদের যীশু খ্রীষ্টের প্রতি ছিল।—মথি ২৬:৩, ৪.

৪ আরও, “ঘৃণা” এই শব্দটি কাউকে কম ভালবাসার অর্থেও শাস্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যীশু বলেন: “যদি কেহ আমার নিকটে আইসে, আর আপন পিতা, মাতা, স্ত্রী, সন্তানসন্ততি, ভ্রাতৃগণ, ও ভগিনীগণকে এমনকি, নিজ প্রাণকেও ঘৃণা না করে, তবে সে আমার শিষ্য হইতে পারে না।” (লূক ১৪:২৬, NW) এটা পরিষ্কার, যীশু এখানে শুধুমাত্র বোঝাতে চাইছেন এদের আমরা তাঁর থেকে কম ভালবাসব। যাকোব ‘লেয়াকে ঘৃণা করিলেন,’ অর্থাৎ সে তাকে রাহেলের থেকে কম ভালবাসত।—আদিপুস্তক ২৯:৩০, ৩১, NW.

৫ তারপর “ঘৃণা” শব্দের সেই অর্থও আছে যেটা নিয়ে আমরা এখানে বিশেষভাবে চিন্তিত। এটি কোন ব্যক্তি অথবা বস্তুর প্রতি অপছন্দের তীব্র অনুভূতির বা কঠিন বিরূপতার এরূপ এক মনোভাব যার জন্য আমরা সেই ব্যক্তি বা বস্তুর সাথে সকল সম্পর্ক এড়িয়ে চলি। গীতসংহিতা ১৩৯ অধ্যায়ে এই সম্বন্ধে বলা হয়েছে “সম্পূর্ণ ঘৃণা।” সেখানে দায়ূদ বলেন: “হে যিহোবা, যাহারা তোমাকে দ্বেষ করে, আমি কি তাহাদিগকে দ্বেষ করি না? যাহারা তোমার বিরুদ্ধে উঠে, তাহাদের প্রতি কি বিরক্ত হই না? আমি তাহাদিগকে সম্পূর্ণ ঘৃণা করি, তাহাদিগকে আমারই শত্রু মনে করি।”—গীতসংহিতা ১৩৯:২১, ২২, NW.

আমরা কেন অধার্মিকতাকে ঘৃণা করব

৬, ৭. (ক) কেন, প্রধানত, আমাদের অধার্মিকতাকে ঘৃণা করা উচিৎ? (খ) অধার্মিকতাকে ঘৃণা করার দ্বিতীয় জোরাল কারণ কী?

৬ আমরা কেন অধার্মিকতাকে ঘৃণা করব? একটি কারণ হল যেন আমাদের আত্ম-সম্মান ও উত্তম বিবেক থাকে। কেবল এইভাবে আমাদের উত্তম সম্পর্ক থাকতে পারে আমাদের ধার্মিক, প্রেমময় স্বর্গীয় পিতা, যিহোবার সাথে। দায়ূদ এই সম্বন্ধে খুব সুন্দর উদাহরণ স্থাপন করেন, যা আমরা পাই গীতসংহিতা ২৬ অধ্যায়ে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি বলেন: “আমি দুরাচারদের সমাজ ঘৃণা করি, দুষ্টগণের সঙ্গে বসিব না।” (গীতসংহিতা ২৬:৫) ঈশ্বরের প্রতি ও ধার্মিকতার প্রতি প্রেম আমাদের পরিচালিত করবে ধার্মিক ঘৃণামিশ্রিত ক্রোধ—হ্যাঁ, ঘৃণা—পোষণ করতে সমস্ত কিছুর জন্য যা তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে থেকে অধার্মিক, যার অন্তর্ভূক্ত তাদেরও অধার্মিক কাজ যারা যিহোবার অবাধ্য হয় এবং তাঁকে ঘৃণা করে। আরও, আমরা অধার্মিকতাকে ঘৃণা করব কারণ তা ঈশ্বরের নামের উপর দুর্নাম নিয়ে আসে।

৭ আরেকটি যুক্তি কেন যিহোবার লোকদের অধার্মিকতাকে ঘৃণা করা উচিত কারণ তা অতীব বিপদজনক ও ক্ষতিকারক। মাংসের উদ্দেশ্যে বোনা, যার অর্থ হচ্ছে অধার্মিকতা, তার ফল কী হবে? পৌল সাবধান করেন: “তোমরা ভ্রান্ত হইও না, ঈশ্বরকে পরিহাস করা যায় না; কেননা মনুষ্য যাহা কিছু বুনে তাহাই কাটিবে। ফলতঃ আপন মাংসের উদ্দেশ্যে যে বুনে, সে মাংস হইতে ক্ষয়রূপ শস্য পাইবে; কিন্তু আত্মার উদ্দেশ্যে যে বুনে, সে আত্মা হইতে অনন্ত জীবনরূপ শস্য পাইবে।” (গালাতীয় ৬:৭, ৮) তাই আমাদের অধার্মিকতার সাথে যেন কোনরকম সম্পর্ক না থাকে। সত্যই, আমাদের মঙ্গলের জন্য ও মনের শান্তির জন্য আমাদের অধার্মিকতাকে ঘৃণা করা দরকার।

যারা অধার্মিকতাকে ঘৃণা করে

৮. অধার্মিকতাকে ঘৃণা করার প্রধান উদাহরণ কে স্থাপন করেছেন, এবং কোন শাস্ত্রীয় পদগুলি তা দেখায়?

৮ অধার্মিকতাকে ঘৃণা করার ব্যাপারে, ঈশ্বর তাঁর সমস্ত বুদ্ধিমান প্রাণীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ স্থাপন করেন। তিনি ধার্মিকতায় অধার্মিকতার বিরুদ্ধে ঘৃণাপূর্ণ ক্রোধ করেন, এবং তাঁর বাক্য বাইবেল বলে: “এই ছয় বস্তু যিহোবার ঘৃণিত, এমনকি, সপ্ত বস্তু তাঁহার প্রাণের ঘৃণাস্পদ; উদ্ধত দৃষ্টি, মিথ্যাবাদীর জিহ্বা, নির্দ্দোষের রক্তপাতকারী হস্ত, দুষ্ট সঙ্কল্পকারী হৃদয়, দুষ্কর্ম্ম করিতে দ্রুতগামী চরণ, যে মিথ্যাসাক্ষী অসত্য কথা কহে, ও যে ভ্রাতৃগণের মধ্যে বিবাদ খুলিয়া দেয়।” আমরা এও পড়ি: “যিহোবার ভয় দুষ্টতার প্রতি ঘৃণা, অহঙ্কার, দাম্ভিকতা ও কুপথ, এবং কুটিল মুখও আমি ঘৃণা করি।” (হিতোপদেশ ৬:১৬-১৯; ৮:১৩) আরও, আমাদের বলা হয়েছে: “কেননা, আমি যিহোবা, ন্যায়বিচার ভালবাসি, অধর্ম্মযুক্ত অপহরণ ঘৃণা করি।”—যিশাইয় ৬১:৮.

৯, ১০. কি করে যীশু দেখান যে তিনি অধার্মিকতাকে ঘৃণা করেছেন?

৯ যীশু খ্রীষ্ট তাঁর পিতাকে অনুকরণ করেন অধার্মিকতাকে ঘৃণা করার ব্যাপারে। সেইজন্য, আমরা পাঠ করি: “তুমি ধার্ম্মিকতাকে প্রেম, ও দুষ্টতাকে ঘৃণা করিয়াছ। এই কারণে ঈশ্বর, তোমার ঈশ্বর, তোমাকে অভিষিক্ত করিয়াছেন, তোমার সখাগণ অপেক্ষা অধিক পরিমাণে আনন্দ-তৈলে।” (ইব্রীয় ১:৯) যীশুর এই ধরনের ঘৃণা আমাদের জন্য এক উদাহরণ স্থাপন করে। অধার্মিকতার প্রতি তাঁর ঘৃণা তিনি প্রদর্শন করেন যারা স্বেচ্ছায় তা অভ্যাস করছিল তাদের প্রকাশ করে দিয়ে—মিথ্যা ধর্মীয় নেতাদের। বারবার, তিনি তাদের ভর্ৎসনা করেন কপটী বলে। (মথি, ২৩ অধ্যায়) অন্য সময় যীশু তাদের বলেন: “তোমরা আপনাদের পিতা দিয়াবলের, এবং তোমাদের পিতার অভিলাষ সকল পালন করাই তোমাদের ইচ্ছা।” (যোহন ৮:৪৪) অধার্মিকতার প্রতি যীশু তাঁর ঘৃণা দেখান এমনকি দৈহিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমেও, দুইবার তিনি মন্দিরকে পরিষ্কার করেন অর্থলোলুপ ধর্মীয় কপটীদের কাছ থেকে।—মথি ২১:১২, ১৩; যোহন ২:১৩-১৭.

১০ অধার্মিকতা ও পাপের প্রতি তাঁর ঘৃণা যীশু এইভাবেও প্রদর্শন করেন নিজেকে সেগুলি থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত রেখে। সেইকারণে, তিনি তার বিরোধীদের জিজ্ঞাসা করতে পেরেছিলেন: “তোমাদের মধ্যে কে আমাকে পাপী বলিয়া প্রমাণ করিতে পারে?” (যোহন ৮:৪৬) যীশু ছিলেন “সাধু, অহিংসক, বিমল, পাপীগণ হইতে পৃথক্‌কৃত।” (ইব্রীয় ৭:২৬) এই বিষয়কে সুদৃঢ় করে, পিতর লেখেন যে যীশু “পাপ করেন নাই, তাঁহার মুখে কোন ছলও পাওয়া যায় নাই।”—১ পিতর ২:২২.

১১. কোন্‌ শাস্ত্রীয় উদাহরণ আমাদের রয়েছে সেই অসিদ্ধ মানুষদের যারা অধার্মিকতাকে ঘৃণা করেছে?

১১ যীশু, কিন্তু, একজন সিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন। আমাদের কাছে কী অসিদ্ধ মানুষদের শাস্ত্রীয় উদাহরণ আছে যারা সত্যই অধার্মিকতাকে ঘৃণা করতেন? অবশ্যই আমাদের আছে! উদাহরণস্বরূপ, মোশি এবং তাঁর সহ লেবীয়রা তীব্র ঘৃণা দেখান প্রতিমাপূজার প্রতি ৩,০০০ প্রতিমাপূজককে যিহোবার আদেশে হত্যা করে। (যাত্রাপুস্তক ৩২:২৭, ২৮) পীনহস অধার্মিকতার প্রতি তার তীব্র ঘৃণা দেখান যখন তিনি দুইজন ব্যভিচারে রত ব্যক্তিকে বড়শা দ্বারা হত্যা করেন।—গণনাপুস্তক ২৫:৭, ৮.

অধার্মিকতার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন

১২. (ক)আমরা কি করে অধার্মিকতার প্রতি আমাদের ঘৃণা দেখাতে পারি? (খ) কতগুলি কী ব্যবহারিক উপায় আছে অধার্মিক চিন্তাধারাকে এড়িয়ে চলার?

১২ আমাদের দিনে, আমরা কি করে অধার্মিকতার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করতে পারি? আমাদের চিন্তা, কথা, এবং কাজকে বশে রেখে। আমাদের মন যখন কোন কাজে ব্যস্ত নয় তখন গঠনমূলক বিষয় চিন্তা করার অভ্যাস আমাদের গড়ে তুলতে হবে। যদি আমরা রাত্রে জেগে থাকি, তখন হয়ত আমাদের মনে কোন বিরূপ চিন্তা আসতে পারে, যেমন ক্রমাগতভাবে আমাদের অভিযোগগুলি অথবা যৌনবিলাসের বিষয় চিন্তা করা। কখনও এইসব বিষয় মনে স্থান দেবেন না, কিন্তু উপকারী বিষয়গুলি চিন্তা করার অভ্যাস করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি শাস্ত্রীয় পদগুলি মুখস্থ করার চেষ্টা করতে পারেন, নয়টি সুখের বিষয়, এবং আত্মার নয়টি ফল। (মথি ৫:৩-১২; গালাতীয় ৫:২২, ২৩) আপনি কি ১২ জন প্রেরিতের নাম বলতে পারেন? আপনি কি দশআজ্ঞা জানেন? কোন্‌ সাতটি মণ্ডলীকে প্রকাশিত বাক্যে সম্বোধন করা হয়েছে? রাজ্যের গানগুলি স্মরণ করাও আমাদের সাহায্য করে যা সত্য, যা বিশেষ চিন্তার উপযুক্ত, ধার্মিক, বিশুদ্ধ, আদরণীয়, সুখ্যাতিযুক্ত, কোন সদ্‌গুণ এবং কোন কীর্তির বিষয়ে চিন্তা করতে।—ফিলিপীয় ৪:৮.

১৩. অধার্মিকতাকে ঘৃণা করা কী ধরনের কথাবার্তাকে ঘৃণা করতে আমাদের সাহায্য করবে?

১৩ আরও, সকল ধরনের অশ্লীল কথাবার্তা এড়িয়ে চলে আমরা প্রদর্শন করি যে অধার্মিকতাকে আমরা ঘৃণা করি। জগতের অনেক লোক আনন্দ পায় নোংরা ধরনের কৌতুক করে এবং তা শুনে, কিন্তু খ্রীষ্টানরা যেন তা শোনার প্রতিও আগ্রহ না দেখান। বরং, আমাদের সেইরূপ কোন কথাবার্তা থেকে সরে যাওয়া ও এড়িয়ে চলা উচিৎ যা এইরূপ নিম্ন মানের। যদি আমরা সরে যেতে সক্ষম না হই, অন্তত আমাদের মুখের হাবভাবে দেখাতে পারি যে আমরা এই ধরনের কথাবার্তা ঘৃণা করি। আমাদের এইরূপ ভাল উপদেশ গ্রহণ করা প্রয়োজন: “তোমাদের মুখ হইতে কোন প্রকার কদালাপ বাহির না হউক, কিন্তু প্রয়োজনমত গাঁথিয়া তুলিবার জন্য সদালাপ বাহির হউক, যেন যাহারা শুনে, তাহাদিগকে অনুগ্রহ দান করা হয়।” (ইফিষীয় ৪:২৯) আমরা নিজেদের কলুষিত করব না সেই কথা বলে যা অশ্লীল অথবা তা শুনে।

১৪. অধার্মিকতার প্রতি ঘৃণা আমাদের কী ধরনের নিরাপত্তা দেবে চাকুরি ও ব্যবসার ক্ষেত্রে?

১৪ অধার্মিকতার প্রতি আমাদের ঘৃণা সমস্ত পাপাচরণ অভ্যাসগুলির বিরুদ্ধে পরিচালিত হওয়া উচিত। অধার্মিকতাকে ঘৃণা এই ব্যাপারে কোন আপোষ করার ফাঁদ এড়াতে আমাদের সাহায্য করবে। যারা সত্য খ্রীষ্টান তারা কোন পাপে রত হন না। (তুলনা করুন ১ যোহন ৫:১৮.) উদাহরণস্বরূপ, আমাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে সকল ধরনের অসাধু উপায় ঘৃণা করতে হবে। আজ, অনেক যিহোবার সাক্ষীদের উপর চাপ দেওয়া হয়েছে তাদের নিয়োগকর্তাদের জন্য অসাধু কাজ করতে কিন্তু তারা এইরূপ করতে প্রত্যাখ্যান করেছে। খ্রীষ্টানেরা এমনকি তাদের চাকুরি হারাতেও প্রস্তুত তাদের বাইবেল দ্বারা শিক্ষিত বিবেককে লঙ্ঘন করার পরিবর্তে। আরও, আমাদের অধার্মিকতার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করা দরকার ট্রাফিক আইন ভঙ্গ না করে এবং যেখানে কাস্টমস্‌ ডিউটি ও কর দেওয়া প্রয়োজন তা ফাঁকি না দিয়ে।—প্রেরিত ২৩:১; ইব্রীয় ১৩:১৮.

যৌন অশ্লীলতাকে ঘৃণা করা

১৫. মানুষকে যৌন মিলনের প্রবল প্রবৃত্তি দিয়ে সৃষ্টি করার কী উত্তম উদ্দেশ্য ছিল?

১৫ খ্রীষ্টান হিসাবে, বিশেষ করে আমাদের সকল ধরনের যৌন অশ্লীলতাকে ঘৃণা করতে হবে। মানুষকে যৌন মিলনের প্রবল প্রবৃত্তি দিয়ে, ঈশ্বর দুইটি উত্তম উদ্দেশ্য সাধন করেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে মানবজাতি যেন বিলুপ্ত না হয়, আর তিনি সুখের সব থেকে প্রেমময় ব্যবস্থা করেন। এমনকি যে ব্যক্তিরা দরিদ্র, অশিক্ষিত, অথবা অন্য কোন অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে তারাও প্রগাঢ় সুখ পেতে পারে বিবাহসম্পর্কের মধ্যে। কিন্তু, যিহোবা সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন যার মধ্যে এই সম্পর্ক উপভোগ করা যেতে পারে। এই ঈশ্বর-দত্ত সীমাকে অবশ্যই সম্মান দিতে হবে।—আদিপুস্তক ২:২৪; ইব্রীয় ১৩:৪.

১৬. নৈতিকভাবে নোংরা চিত্তবিনোদন এবং অভ্যাসগুলির প্রতি আমাদের কিরূপ মনোভাব থাকা দরকার?

১৬ যদি আমরা অধার্মিকতাকে ঘৃণা করি, আমরা সকল ধরনের যৌন অশ্লীলতা এবং অনৈতিক চিত্তবিনোদন এড়িয়ে চলতে যত্নশীল হব। আমরা সেইকারণে সেই সব বই, পত্রিকা, এবং কাগজ এড়িয়ে চলব যেগুলির নৈতিকতা সম্বন্ধে প্রশ্ন ওঠে। এইভাবে, যদি আমরা অধার্মিকতাকে ঘৃণা করি, তাহলে আমরা সেইসব কোন অশ্লীল দৃশ্যের উপস্থাপনা দেখব না, তা দূরদর্শনে, চলচ্চিত্রে, অথবা রঙ্গমঞ্চে যেখানে হোক। যদি আমরা দেখি যে কোন প্রোগ্রাম অনৈতিক, তাহলে আমরা পরিচালিত হব সঙ্গে সঙ্গে দূরদর্শন বন্ধ করে দিতে অথবা আমাদের সাহস থাকা উচিৎ প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরিয়ে আসার। একইভাবে, অধার্মিকতাকে ঘৃণা করা আমাদের সেই সব সংগীত সম্বন্ধে সচেতন থাকতে সাহায্য করবে যা যৌন-উত্তেজনা বৃদ্ধি করে তার গীত বা তাল ও লয়ের দ্বারা। আমরা অনৈতিক বিষয়ের জ্ঞানের চেষ্টা করব না ‘বরং মন্দতে শিশুগণের ন্যায় হইব, কিন্তু বুদ্ধিতে পরিপক্ক হইব।’—১ করিন্থীয় ১৪:২০, NW.

১৭. কলসীয় ৩:৫ আমাদের কী উপদেশ দেয় যা আমাদের নৈতিকভাবে পরিষ্কার থাকতে সাহায্য করে?

১৭ খুবই উপযুক্তরূপে আমাদের উপদেশ দেওয়া হয়েছে: “তোমরা পৃথিবীস্থ আপন আপন অঙ্গ সকল মৃত্যুসাৎ কর, যথা বেশ্যাগমন, অশুচিতা, মোহের বিষয়।” (কলসীয় ৩:৫, NW) এই সম্বন্ধে কোন সন্দেহ নেই যে আমাদের ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপসকল নিতে হবে যদি আমরা নিশ্চিত হতে চাই যে নৈতিকভাবে পরিষ্কার থাকব। যে গ্রীক ক্রিয়াপদের অনুবাদ ব্যবহার করা হয়েছে “মৃত্যুসাৎ” কলসীয় ৩:৫ পদে, সেই সম্বন্ধে দ্যা এক্সপোজিটারস বাইবেল কমেন্‌টারি বলে: “এটি ইঙ্গিত করে আমরা কেবল যে মন্দ কাজকে ও মনোভাবকে চেপে রাখব বা নিয়ন্ত্রিত করব তা নয়। আমাদের তাকে একেবারে মুছে ফেলতে হবে, সম্পূর্ণভাবে পুরাতন জীবনকে ধ্বংস করতে হবে। ‘চূড়ান্ত হত্যা’ হয়ত এর যে জোর তাকে প্রকাশ করতে পারে। . . . তাই এর ক্রিয়াপদ ও যে জোর দেওয়া হয়েছে উভয়ই ইঙ্গিত করে পরিশ্রমসাপেক্ষ, কষ্টদায়ক ব্যক্তিগত দৃঢ়তাসম্পন্ন এক কাজকে।” সেইজন্য আমরা অশ্লীল বিষয়গুলিকে বিপদজনক, ছোঁয়াচে, মৃত্যু-দায়ক রোগ হিসাবে এড়িয়ে চলব, কারণ নৈতিকভাবে ও আত্মিকভাবে ইহা সেইরূপ। খ্রীষ্ট এইরূপ চিন্তাই ব্যক্ত করেন যখন তিনি বলেন, যদি একটি হাত, পা, অথবা এমনকি একটি চোখও বিঘ্ন জন্মায় তবে তা কেটে ফেলতে।—মার্ক ৯:৪৩-৪৮.

মিথ্যা ধর্ম ও ধর্মভ্রষ্টতাকে ঘৃণা করা

১৮. কি করে আমরা ধর্মীয় অধার্মিকতার প্রতি আমাদের ঘৃণা দেখাতে পারি?

১৮ তারপর, যীশু যেমন অধার্মিকতার প্রতি তাঁর ঘৃণা দেখিয়েছিলেন ধর্মীয় নেতাদের ভণ্ডামি প্রকাশ করে দিয়ে, তদ্রুপ আজ যিহোবার সাক্ষীরা তাদের ঘৃণা দেখান ভণ্ড ধর্মীয় অধার্মিকতার প্রতি। কি করে? সেই ধরনের বাইবেল সাহিত্যাদি বিতরণ করে যা খোলাখুলিভাবে তুলে ধরে যে মহতী বাবিল আসলে কী, এক ধর্মীয় বেশ্যা। যদি আমরা সত্যই অধার্মিক ধর্মীয় ভণ্ডামীকে ঘৃণা করি, তাহলে আমরা এগিয়ে আসব মহতী বাবিলকে প্রকাশ করে দিতে, যা হল মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্য। আমরা তা করব সেই সহৃদয় ব্যক্তিদের জন্য যাদের সে অন্ধ করেছে এবং আত্মিক দাসত্ববন্ধনে রেখেছে। আমরা সত্যই মহতী বাবিলকে যতটা ঘৃণা করি, ঠিক ততটাই উৎসাহের সাথে আমরা রাজ্যের পরিচর্য্যার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশ নেব।—মথি ১৫:১-৩, ৭-৯; তীত ২:১৩, ১৪; প্রকাশিত বাক্য ১৮:১-৫.

১৯. ধর্মভ্রষ্টদের আমাদের কিরূপে দেখা উচিৎ, এবং কেন?

১৯ অধার্মিকতার প্রতি ঘৃণার যে বাধ্যবাধকতা তা ধর্মভ্রষ্টদের সকল কাজের প্রতিও প্রযোজ্য। আমাদের মনোভাব ধর্মভ্রষ্টদের প্রতি দায়ূদের মত হওয়া উচিৎ, যিনি ঘোষণা করেন: “হে যিহোবা, যাহারা তোমাকে দ্বেষ করে, আমি কি তাহাদিগকে দ্বেষ করি না? যাহারা তোমার বিরুদ্ধে ওঠে, তাহাদের প্রতি কি বিরক্ত হই না? আমি যারপর নাই দ্বেষে তাহাদিগকে দ্বেষ করি; তাহাদিগকে আমারই শত্রু মনে করি।” (গীতসংহিতা ১৩৯:২১, ২২) বর্তমান দিনের ধর্মভ্রষ্টরা “সেই পাপপুরুষ” খ্রীষ্টীয় জগতের পাদ্রী শ্রেণীর সাথে হাত মিলিয়েছে। (২ থিষলনীকীয় ২:৩) যিহোবার বিশ্বস্ত সাক্ষী হিসাবে তাই তাদের সাথে আমাদের কিছুই এক নয়। যেহেতু আমরা অসিদ্ধ, সেইজন্য আমরা সহজেই আমাদের ভাইদের সম্বন্ধে সমালোচনামূলক হতে পারি। ব্যক্তিগতভাবে, যারা “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস” তারাও অসিদ্ধ ব্যক্তি। (মথি ২৪:৪৫-৪৭) কিন্তু এই দলটি বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান। যারা ধর্মভ্রষ্ট তারা যে ভাইরা পরিচালনা দেন তাদের ভুলত্রুটিগুলি নিজেদের সুবিধার্থে কাজে লাগায়। আমাদের নিরাপত্তা নির্ভর করে ধর্মভ্রষ্ট সব প্রচার এড়িয়ে চলা ঠিক যেন তা বিষ, বাস্তবেও তা তাই।—রোমীয় ১৬:১৭, ১৮.

২০, ২১. অধার্মিকতাকে ঘৃণা করার জন্য যে কারণগুলি আছে তা কি করে সংক্ষেপে বলা যেতে পারে?

২০ আমরা লক্ষ্য করেছি যে এই জগৎ অধার্মিকতায় পরিপূর্ণ, যা পাপের সমার্থ। আমাদের কেবল ধার্মিকতাকে ভালবাসলেই চলবে না; আমাদের অধার্মিকতাকে অবশ্যই ঘৃণা করতে হবে। কেউ কেউ যারা খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী থেকে সমাজচ্যুত হয়েছে তারা হয়ত মনে করেছিল যে তারা ধার্মিকতা ভালবাসে, কিন্তু তারা অধার্মিকতাকে যথেষ্টভাবে ঘৃণা করেনি। আমরা এও দেখেছি যে আমাদের কেন অধার্মিকতাকে ঘৃণা করা দরকার। আমাদের উত্তম বিবেক ও আত্মসম্মান থাকবে না, তা না করলে। আরও, অধার্মিকতার অর্থ হচ্ছে যিহোবা ঈশ্বরের কাছে অবিশ্বস্ত হওয়া। আর অধার্মিকতা আমাদের অনেক তিক্ত ফসল কাটতে বাধ্য করে—দুর্দশা, দুর্নীতি, এবং মৃত্যু।

২১ আমরা এও লক্ষ্য করেছি যে কি করে আমরা দেখাই যে আমরা অধার্মিকতাকে ঘৃণা করি। আমরা তা করি কোনরকম অসাধুতা, যৌন অনৈতিকতা, অথবা ধর্মভ্রষ্টতার সাথে কোন সম্পর্ক না রেখে। যেহেতু আমরা যিহোবার সত্যতা প্রতিপাদনে অংশ নিতে চাই এবং তাঁর হৃদয়কে আনন্দিত করতে চাই, আমরা কেবল ধার্মিকতাকে ভালবাসব ও তাঁর সেবায় ব্যস্ত থাকব তা নয় কিন্তু অধার্মিকতাকেও ঘৃণা করব, যেমন করেছিলেন আমাদের নেতা এবং পরিচালক, যীশু খ্রীষ্ট। (w92 7/15)

আপনি কি ভাবে উত্তর দেবেন?

▫ শাস্ত্র কিভাবে “ঘৃণা” এই শব্দটি ব্যবহার করে?

▫ কতগুলি উত্তম কী কারণ আমাদের রয়েছে অধার্মিকতাকে ঘৃণা করার?

▫ যারা অধার্মিকতাকে ঘৃণা করেছিল তাদের কী উত্তম উদাহরণ আমাদের জন্য রয়েছে?

▫ অধার্মিকতার জন্য আমরা কি করে আমাদের ঘৃণা দেখাতে পারি?

[২০ পৃষ্ঠার চিত্র]

যীশু মন্দির পরিষ্কার করেন কারণ তিনি অধার্মিকতাকে ঘৃণা করেন

[Pictures on page 22]

যদি আমরা অধার্মিকতাকে ঘৃণা করি, তাহলে আমরা অনৈতিক যৌন চিত্তবিনোদন ঘৃণা করব

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার