ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৩ ৬/১ পৃষ্ঠা ১২-১৭
  • সংযমশীল হোন—পরিণাম সন্নিকট

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • সংযমশীল হোন—পরিণাম সন্নিকট
  • ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • সংযমশীল হওয়া জরুরী কেন
  • সংযমশীল হওয়ার অর্থ কি
  • কিভাবে সংযমশীলতা আমাদের নিরাপদে রাখে
  • সংযমশীলতা রক্ষা করতে যিহোবার সাহায্য নিন
  • যতই শেষ নিকটবর্তী হচ্ছে “সংযত” হওয়া
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • শেষ যতই এগিয়ে আসছে, সংযমশীল হোন
    ২০০৩ আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা
  • বিজ্ঞতার সঙ্গে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিন
    ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আত্মার ভাব বজায় রাখুন এবং বেঁচে থাকুন!
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৩ ৬/১ পৃষ্ঠা ১২-১৭

সংযমশীল হোন—পরিণাম সন্নিকট

“সকল বিষয়ের পরিণাম সন্নিকট; অতএব সংযমশীল হও, এবং প্রার্থনার নিমিত্ত প্রবুদ্ধ থাক।”—১ পিতর ৪:৭.

১. (ক) এক ধর্মীয় নেতা ও তার অনুগামীদের কোন্‌ হতাশার অভিজ্ঞতা হয়েছিল? (খ) যেহেতু কিছু আশা পূর্ণ হয়নি, কি কি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে?

“আজ রাত্রের শেষ প্রার্থনার সময় আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এক আহ্বান পেয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন ১,১৬,০০০ ব্যক্তি স্বর্গে উত্থিত হবে এবং ৩৭ লক্ষ মৃত বিশ্বাসীদের কবর আকাশের প্রতি উন্মুক্ত হবে।” এই কথাগুলি বলেছিলেন দি মিশন ফর দি কামিং ডেজ্‌-এর একজন নেতা তাদের ভবিষ্যদ্বাণী করা শেষ বিচারের দিন, ১৯৯২ সালের ২৮শে অক্টোবর তারিখের প্রাক্কালে। কিন্তু, যখন ২৯শে অক্টোবর এসেছিল, একজন ব্যক্তিও স্বর্গে উত্থিত হননি, এবং মৃতদের একটি কবরও উন্মুক্ত হয়নি। কোরিয়ায় শেষ বিচারদিনের ওই বিশ্বাসীরা, এক স্বর্গীয় আনন্দে শীঘ্র উত্থিত হওয়ার পরিবর্তে, শুধুমাত্র আর একটি দিন শুরু হতে দেখেছিল। শেষ বিচারদিনের অনেক সম্ভাব্য তারিখ এসেছে, আবার চলেও গেছে, কিন্তু বিচারদিনের ভবিষ্যদ্বক্তারা নির্ভীক রয়ে গেছেন। খ্রীষ্টানেরা কি করবেন? পরিণাম যে দ্রুত এগিয়ে আসছে তা বিশ্বাস করা কি তারা বন্ধ করবেন?

২. এক ভবিষ্যৎ বিচারের দিন সম্বন্ধে প্রেরিতদের কে বলেছিলেন, এবং কি পরিস্থিতিতে তারা তা জেনেছিলেন?

২ উত্তর দিতে, আসুন আমরা সেই ঘটনাটি স্মরণ করি যখন যীশু তাঁর শিষ্যদের সাথে নিভৃতে কথাবার্তা বলছিলেন। সেখানে, কৈসরিয়া ফিলিপী জেলায়, গালীল সমূদ্রের উত্তরপূর্ব্বে, মহিমময় হর্মোণ পর্ব্বতের নাটকীয় পটভূমিকায়, তারা তাঁকে স্পষ্টভাষায় বলতে শুনেছিল যে তিনি হত হবেন। (মথি ১৬:২১) অন্যান্য চিন্তা করার মত কথাও পরেই বলার ছিল। শিষ্যত্বের অর্থ অবিরত স্বার্থত্যাগের এক জীবন যাপন তা তাদের ব্যাখ্যা করার পর, যীশু সাবধান করেছিলেন: “কেননা মনুষ্যপুত্র আপন দূতগণের সহিত আপন পিতার প্রতাপে আসিবেন, আর তখন প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাহার ক্রিয়ানুসারে প্রতিফল দিবেন।” (মথি ১৬:২৭) যীশু এক ভবিষ্যৎ আগমন সম্পর্কে বলেছিলেন। তখন কিন্তু, তিনি একজন বিচারক হবেন। সেই সময়ে সমস্ত কিছু নির্ভর করবে একজন ব্যক্তি তাঁকে বিশ্বস্তভাবে অনুসরণ করছে কি না তা তাঁর দেখতে পাওয়ার উপর। যীশুর বিচার আচরণের উপর ভিত্তি করে হবে, সেই ব্যক্তির জাগতিক সম্পদ যতই থাকুক বা না থাকুক কিছু যায় আসে না। এই সত্যটিকে তাঁর শিষ্যদের খুব দৃঢ়ভাবে মনে রাখতে হয়েছিল। (মথি ১৬:২৫, ২৬) সুতরাং, যীশু খ্রীষ্ট স্বয়ং তাঁর শিষ্যদের বলছেন বিচারসহ তাঁর সেই প্রতাপের আগমনের অপেক্ষা করে থাকতে।

৩. তাঁর ভবিষ্যৎ আগমনের নিশ্চয়তা সম্পর্কে যীশু কিভাবে উদাহরণ দিয়েছিলেন?

৩ পরেই যীশু যা বলেন তা তাঁর ভবিষ্যৎ আগমনের নিশ্চয়তা ব্যাখ্যা করে। কর্তৃত্বের সাথে তিনি বলেন: “আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যাহারা এখানে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে, তাহাদের মধ্যে এমন কয়েক জন আছে, যাহারা কোনমতে মৃত্যুর আস্বাদ পাইবে না, যে পর্য্যন্ত মনুষ্যপুত্রকে আপনার রাজ্যে আসিতে না দেখিবে।” (মথি ১৬:২৮) ছয়দিন পর এই কথাগুলি সত্য হয়। যীশুর রূপান্তরের এক উজ্জ্বল দর্শন তাঁর অন্তরঙ্গ শিষ্যদের চমৎকৃত করে। তারা প্রকৃতই তাঁর মুখ সূর্যের ন্যায় দেদীপ্যমান এবং তাঁর বস্ত্র দীপ্তির ন্যায় শুভ্র দেখে। এই রূপান্তর খ্রীষ্টের প্রতাপ ও রাজ্যের এক প্রতিচ্ছবি ছিল। রাজ্যের ভবিষ্যদ্বাণীগুলি সম্পর্কে কি দৃঢ় নিশ্চয়তা! সংযমশীল হতে শিষ্যদের জন্য কি শক্তিশালী প্রেরণা!—২ পিতর ১:১৬-১৯.

সংযমশীল হওয়া জরুরী কেন

৪. তাঁর আগমন সম্বন্ধে খ্রীষ্টানেরা আত্মিকভাবে অবশ্যই সজাগ থাকবেন কেন?

৪ এক বছরেরও অল্প সময় পর, যীশুকে দেখা যায় জৈতুন পর্ব্বতের উপর বসে আছেন, আবার তাঁর শিষ্যদের সাথে নিভৃতে কথাবার্তা বলছেন। যখন তারা যিরূশালেম শহরের দিকে তাকিয়ে আছেন, তাঁর ভবিষ্যৎ উপস্থিতির কি চিহ্ন হবে তা তিনি ব্যাখ্যা করলেন ও তারপর সাবধান করেন: “অতএব জাগিয়া থাক, কেননা তোমাদের প্রভু কোন্‌ দিন আসিবেন, তাহা তোমরা জান না।” তাঁর অনুগামীরা অবশ্যই সর্বদা সজাগ থাকবেন কারণ তাঁর আগমন সময় জানা নেই। তারা এর জন্য সর্বদা অবশ্যই প্রস্তুত থাকবেন।—মথি ২৪:৪২.

৫. সতর্ক প্রহরার প্রয়োজনীয়তার কিভাবে উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে?

৫ তাঁর আগমনের ধরনে, প্রভু এক চোরের সদৃশ হবেন। তিনি বলে চলেন: “কিন্তু ইহা জানিও, চোর কোন্‌ প্রহরে আসিবে, তাহা যদি গৃহকর্তা জানিত, তবে জাগিয়া থাকিত, নিজ গৃহে সিঁধ কাটিতে দিত না।” (মথি ২৪:৪৩) এক চোর ঘোষণা করে গৃহকর্তাকে খবর দেয় না যে সে কখন আসবে; তার প্রধান অস্ত্র অপ্রত্যাশিত বিস্ময়। সুতরাং, গৃহকর্তা অবশ্যই সদা সতর্ক থাকবেন। কিন্তু, বিশ্বস্ত খ্রীষ্টানের জন্য, ক্লান্তিহীন সতর্কতা কোন ভীতিপ্রদ আশঙ্কার কারণে নয়। বরং, এটি প্রেরণা পায় খ্রীষ্টের প্রতাপে আগমনের সেই অধীর আগ্রহ থেকে যা নিয়ে আসবে সহস্র বছরের শান্তি।

৬. আমরা অবশ্যই সংযমশীল হব কেন?

৬ এত প্রহরা সত্ত্বেও, কেউ আগে থেকে তাঁর আগমনের নির্দিষ্ট দিনটি কখনও বলতে পারবে না। যীশু বলেছেন: “এইজন্য তোমরাও প্রস্তুত থাক, কেননা যে দণ্ড তোমরা মনে করিবে না, সেই দণ্ডে মনুষ্যপুত্র আসিবেন।” (মথি ২৪:৪৪) অতএব সংযমশীলতার প্রয়োজন। যদি কোন খ্রীষ্টান ভাবেন যে কোন এক নির্দিষ্ট দিনে, খ্রীষ্ট আসবেন না, হতে পারে হয়ত সেই দিনেই তিনি আসবেন! অবশ্য, সদিচ্ছাসম্পন্ন বিশ্বস্ত খ্রীষ্টানেরা অতীতে আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করেছেন কখন শেষ আসবে তা ভবিষ্যদ্বাণী করতে। তবুও, যীশুর সাবধানবাণী বারবার সত্য প্রমাণিত হয়েছে: “সেই দিনের ও সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেহই জানে না, স্বর্গের দূতগণও জানেন না, পুত্ত্রও জানেন না, কেবল পিতা জানেন।”—মথি ২৪:৩৬.

৭. খ্রীষ্টের অনুগামী হতে হলে, আমাদের কিভাবে জীবন যাপন করা উচিৎ?

৭ তাহলে, আমরা কি সিদ্ধান্তে আসব? এই যে খ্রীষ্টের অনুগামী হতে হলে, আমাদের সর্বদা এই বিশ্বাস নিয়ে বাস করতে হবে যে এই দুষ্ট বিধি-ব্যবস্থার শেষ আসন্ন।

৮. খ্রীষ্টধর্মের প্রারম্ভিক সময় থেকে খ্রীষ্টানদের এক পার্থক্য-সূচক চিহ্ন কি ছিল?

৮ এইরূপ মনোভাব সর্বদাই খ্রীষ্টানদের এক পার্থক্য-সূচক চিহ্ন ছিল, যা জগতের ঐতিহাসিকগণ ও বাইবেল পণ্ডিতগণ স্বীকার করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, দি ট্রানশ্লেটারস্‌ নিউ টেস্টামেন্টের সম্পাদকেরা, তাদের অভিধানে “দিন” শব্দের নীচে, বলেছেন: “নুতন নিয়মের সময়কার খ্রীষ্টানেরা সেই দিনের (অর্থাৎ সেই সময়ের) অপেক্ষায় বাস করতেন যখন বর্তমান জগতকে তার সমস্ত দুষ্টতা ও মন্দতার সাথে ধ্বংস করা হবে এবং যীশু সমগ্র মানবজাতির বিচার করতে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন, শান্তির এক নতুন যুগের প্রতিষ্ঠা করবেন এবং সমস্ত জগতের উপর তাঁর প্রভুত্ব আরম্ভ করবেন।” এন্সাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা লেখে: “খ্রীষ্টধর্মের পৃথিবীব্যাপী অদ্বিতীয় বিস্তারের সাথে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে শেষ সময় সম্বন্ধে খ্রীষ্টীয় আশার, খ্রীষ্টের প্রত্যাবর্তনের আসন্ন প্রতীক্ষার রূপে। শেষ সময় সম্বন্ধে খ্রীষ্টীয় আশা কখনই আগত ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে শুধুমাত্র এক জড়, নিষ্ক্রিয় ইচ্ছা দ্বারা গঠিত ছিল না।”

সংযমশীল হওয়ার অর্থ কি

৯. মশীহ সম্পর্কে পিতরের কিছু প্রত্যাশা যদিও ভুল ছিল, তবুও কেন তিনি নিশ্চয়তা রাখতে পেরেছিলেন?

৯ প্রেরিত পিতর, যীশুর তাঁর অন্তরঙ্গ শিষ্যদের সাথে নিভৃতে সেই কথাবার্তার প্রায় ৩০ বছর পরেও, শেষ আসার অপেক্ষায় ক্লান্ত হয়ে পড়েন নি। যদিও তার ও তার সহ-শিষ্যদের মশীহ সম্বন্ধে প্রাথমিক প্রত্যাশা ভুল ছিল, তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে যিহোবার প্রেম ও শক্তি তাদের প্রত্যাশাকে অবশ্যই বাস্তবে পরিণত করবে। (লুক ১৯:১১; ২৪:২১; প্রেরিত ১:৬; ২ পিতর ৩:৯, ১০) গ্রীক শাস্ত্রে বারবার শোনা গেছে এরূপ একটি বিষয় তিনি স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন যখন তিনি বলেন: “সকল বিষয়ের পরিণাম সন্নিকট।” তারপর তিনি সহ-খ্রীষ্টানদের অনুরোধ করেন: “অতএব সংযমশীল হও, এবং প্রার্থনার নিমিত্ত প্রবুদ্ধ থাক।”—১ পিতর ৪:৭.

১০. (ক) সংযমশীল হওয়ার অর্থ কি? (খ) যিহোবার ইচ্ছার উপযুক্ত পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়গুলি দেখার সাথে কি জড়িত আছে?

১০ জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে যাকে বোধযুক্ত বলা হয় “সংযমশীল” হওয়ার অর্থ তা নয়। যিহোবা বলেন: “আমি জ্ঞানবানদের জ্ঞান নষ্ট করিব, বিবেচক লোকদের বিবেচনা ব্যর্থ করিব।” (১ করিন্থীয় ১:১৯) পিতর যে শব্দ ব্যবহার করেন তার অর্থ “স্থির-চিত্ত” হতে পারে। আমাদের উপাসনার সাথে এই আত্মিক স্থিরতার যোগ আছে। সুতরাং, চিত্তে স্থির হয়ে, আমরা সমস্ত বিষয়গুলিকে যিহোবার ইচ্ছার উপযুক্ত পরিপ্রেক্ষিতে দেখতে পারি; আমরা বুঝতে পারি কোন বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ, কোনগুলি নয়। (মথি ৬:৩৩, ৩৪) যদিও শেষ আসন্ন, কিন্তু সাময়িক উন্মাদনাগ্রস্ত কোন জীবনধারায় আমরা ভেসে যাই না; অথবা যে কালে আমরা বাস করছি সে সম্বন্ধেও আমরা উদাসীন নই। (তুলনা করুন মথি ২৪:৩৭-৩৯.) বরং, আমরা চিন্তায়, প্রবণতায়, ও আচরণে মিতাচার ও ভারসাম্যতা দ্বারা পরিচালিত হই, প্রথমে ঈশ্বরের প্রতি প্রকাশে (“প্রার্থনার নিমিত্ত প্রবুদ্ধ থেকে”) এবং পরে আমাদের প্রতিবাসীর প্রতি প্রকাশে (“পরস্পর একাগ্র ভাবে প্রেম করে”)।—১ পিতর ৪:৭, ৮.

১১. (ক) আমাদের “আপন মনের ভাবে ক্রমশঃ নবীনীকৃত” হওয়ার অর্থ কি? (খ) এক নুতন মানসিক শক্তি কিভাবে উত্তম সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সাহায্য করে?

১১ সংযমশীল হওয়ার সাথে জড়িত রয়েছে আমাদের “আপন মনের ভাবে ক্রমশঃ নবীনীকৃত” হওয়া। (ইফিষীয় ৪:২৩) কেন নবীনীকৃত হব? যেহেতু আমরা অসিদ্ধতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি ও পাপপূর্ণ পরিবেশে বাস করছি, আত্মিকতা-বিরোধী এক প্রবণতা আমাদের মনের উপর কর্তৃত্ব করে। ওই শক্তি ক্রমাগত আমাদের চিন্তাধারা ও আগ্রহকে এক বস্তুবাদী, স্বার্থপর পথের দিকে ঠেলতে থাকে। সুতরাং, যখন কেউ খ্রীষ্টান হন, তার এক নুতন শক্তি অথবা কর্তৃত্বকারী মনোভাবের প্রয়োজন হয়, যা তার চিন্তাধারাকে সঠিক পথে, আত্মিক পথে, স্বার্থত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকার পথে নিয়ে যাবে। এইভাবে, যখন কোনকিছু বেছে নেওয়ার প্রশ্ন আসে, উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষা, কর্মজীবন, চাকুরী, আমোদপ্রমোদ, খেলাধূলা, পোশাক-পরিচ্ছদ অথবা যে কোন বিষয়ে হোক, তার প্রথম প্রবণতা হবে বিষয়টিকে এক মাংসিক, স্বার্থপর দৃষ্টিতে দেখার পরিবর্তে আত্মিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করা। এই নুতন মনোভাব বিষয়গুলি সম্বন্ধে সংযমশীলতা ও শেষ যে আসন্ন সেই সচেতনতার সাথে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ করে তোলে।

১২. কিভাবে আমরা “বিশ্বাসে নিরাময়” থাকতে পারি?

১২ সংযমশীল হওয়া ইঙ্গিত করে যে আমাদের উত্তম আত্মিক স্বাস্থ্য রয়েছে। আমরা কিভাবে “বিশ্বাসে নিরাময়” থাকতে পারি? (তীত ২:২) আমাদের অবশ্যই মনকে সঠিক প্রকৃতির আহার দেওয়া উচিৎ। (যিরমিয় ৩:১৫) ঈশ্বরের সত্যের বাক্যের এক নিয়মিত খাদ্যতালিকা ও সেই সাথে তাঁর পবিত্র আত্মার প্রভাবের সহায়তা আমাদের আত্মিক ভারসাম্যতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। সুতরাং, নিয়মিত ব্যক্তিগত অধ্যয়ন, সেই সঙ্গে ক্ষেত্র পরিচর্যা, প্রার্থনা এবং খ্রীষ্টীয় মেলামেশা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কিভাবে সংযমশীলতা আমাদের নিরাপদে রাখে

১৩. সংযমশীলতা কিভাবে আমাদের মূর্খতার ভুল কাজ করা থেকে রক্ষা করতে পারে?

১৩ সংযমশীলতা আমাদের কোন মূর্খতার ভুল কাজ করা থেকে রক্ষা করতে পারে যার জন্য আমাদের হয়ত অনন্ত জীবন হারাতে হত। কিভাবে তা সবে? প্রেরিত পৌল “মনের ব্যবস্থার” কথা বলেছেন। বিশ্বাসে নিরাময় এক ব্যক্তির জন্য, ঐ মনের ব্যবস্থা, যাতে সে আমোদ করে, যথা “ঈশ্বরের ব্যবস্থা” দ্বারা পরিচালিত হয়। সত্য, “পাপের ব্যবস্থা” মনের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। কিন্তু, খ্রীষ্টীয় ব্যক্তি যিহোবার সাহায্যে জয়ী হতে পারবেন।—রোমীয় ৭:২১-২৫.

১৪, ১৫. (ক) মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে কোন্‌ দুটি পরিচালনা-শক্তি যুদ্ধ করে? (খ)কিভাবে মনের যুদ্ধে আমরা জয়ী হতে পারে?

১৪ পৌল দুটি মনের মধ্যে স্পষ্ট বৈসাদৃশ্য দেখান, একটি মন পাপপূর্ণ মাংসের অধীনে যা ইন্দ্রিয়-পরিতৃপ্তিকারী এক জীবনের উপর কেন্দ্রীভূত, অপরটি ঈশ্বরের আত্মার অধীনে সেই মন যা যিহোবার সেবায় এক স্বার্থত্যাগী জীবনের উপর কেন্দ্রীভূত। পৌল রোমীয় ৮:৫-৭ পদে লেখেন: “যাহারা মাংসের বশে আছে, তাহারা মাংসিক বিষয় ভাবে; কিন্তু যাহারা আত্মার বশে আছে, তাহারা আত্মিক বিষয় ভাবে। কারণ মাংসের ভাব মৃত্যু, কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি। কেননা মাংসের ভাব ঈশ্বরের প্রতি শত্রুতা, কারণ তাহা ঈশ্বরের ব্যবস্থার বশীভূত হয় না, বাস্তবিক হইতে পারেও না।”

১৫ পৌল, ১১ পদে, তারপর ব্যাখ্যা করেন সেই মন যা পবিত্র আত্মার সাথে সহযোগিতা করে কিভাবে তা যুদ্ধে জেতে: “আর যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে যীশুকে উঠাইলেন, তাঁহার আত্মা যদি তোমাদিগেতে বাস করেন, তবে যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে খ্রীষ্ট যীশুকে উঠাইলেন, তিনি তোমাদের অন্তরে বাসকারী আপন আত্মা দ্বারা তোমাদের মর্ত্ত্য দেহকেও জীবিত করিবেন।”

১৬. সংযমশীলতা আমাদের কোন্‌ প্রলোভনগুলি থেকে রক্ষা করে?

১৬ সুতরাং, সংযমশীল হওয়ার দ্বারা, আমরা এই জগতের সর্বত্র বিরাজমান প্রলোভনসকল দ্বারা প্রলুব্ধ হব না, যার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সব রকমের আনন্দে, পার্থিব দ্রব্যসকলে এবং যৌন অনৈতিকতায় অপরিমেয় ভোগপরায়ণতা। আমাদের সংযত মন আমাদের বলবে “ব্যভিচার হইতে পলায়ন” করতে এবং তার সর্বনাশা ফল এড়াতে। (১ করিন্থীয় ৬:১৮) আমাদের সংযত মনোভাব রাজ্যের আগ্রহকে প্রথমে রাখতে প্রেরণা দেবে এবং আমাদের চিন্তাধারাকে রক্ষা করবে যখন তা জাগতিক কোন কর্মজীবন যা যিহোবার সাথে আমাদের সম্পর্ককে দুর্বল করতে পারে সেরূপ কোন প্রস্তাবের দ্বারা প্রলুব্ধ হবে।

১৭. আর্থিক দায়িত্বের সম্মুখীন হয়ে এক অগ্রগামী বোন কিভাবে সংযমশীলতা দেখিয়েছিল?

১৭ উদাহরণস্বরূপ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এক গ্রীষ্মপ্রধান দেশে, এক অল্পবয়স্কা ভগ্নী আছে যে রাজ্যের আগ্রহকে সর্বাগ্রে মনে রেখেছিল। পূর্ণ-সময় পরিচর্যার প্রতি সে এক প্রেম গড়ে তুলেছিল। সেই দেশে বেশীর ভাগ চাকুরিতে ছয় বা সাত দিনের পূর্ণ-সময় কাজ দিতে হত। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়ে বেরোনোর পর, তার পিতা, যে যিহোবার সাক্ষী ছিল না, আশা করেছিল যে সে পরিবারের জন্য অনেক অর্থ উপার্জন করবে। কিন্তু যেহেতু, সেই বোনের অগ্রগামী হওয়ার এক প্রবল ইচ্ছা ছিল, সে একটি আংশিক-সময়ের কাজ নিয়ে অগ্রগামীর পরিচর্যা শুরু করে দেয়। এতে তার পিতা ক্রুদ্ধ হয় ও তার জিনিসপত্র রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেবার ভয় দেখায়। জুয়া খেলার জন্য, তার প্রচুর ধারদেনা হয়েছিল, ও সে আশা করেছিল যে তার মেয়ে সব ধার শোধ করে দেবে। তার ছোট ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছিল, ও এই ধারদেনার জন্য, তার পড়াশোনার খরচা দেবার অর্থ ছিল না। ছোট ভাই প্রতিজ্ঞা করে যে বোন যদি তাকে সাহায্য করে, তাহলে পরে চাকুরি পেয়ে সে সমস্ত পরিবারের ভার নেবে। তার ভাইয়ের প্রতি ভালবাসা ও অগ্রগামীর পরিচর্যার প্রতি প্রেম এই দুইয়ের মাঝে পড়ে তার হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল। ভালভাবে বিষয়টি বিবেচনা করার পর, সে অগ্রগামীর কাজ করে যেতে ও অন্য একটি চাকুরি খোঁজার সিদ্ধান্ত নেয়। তার প্রার্থনার উত্তরে, শুধু যে তার পরিবার ও তার ভাইকে আর্থিক সাহায্য দিতে সে একটি ভাল চাকুরি পেয়েছিল তাই নয় কিন্তু তার প্রথম প্রেম, সেই অগ্রগামী পরিচর্যাকেও সে বজায় রেখেছিল।

সংযমশীলতা রক্ষা করতে যিহোবার সাহায্য নিন

১৮. (ক) কিছু লোক কেন নিরুৎসাহ হয়ে পড়তে পারে? (খ) কোন্‌ শাস্ত্র পদগুলি নিরুৎসাহিতদের সান্ত্বনা দিতে পারে?

১৮ খ্রীষ্টের কিছু অনুগামীদের পক্ষে সংযমশীলতা রক্ষা করা হয়ত কঠিন হতে পারে। হয়ত তারা যা আশা করেছিলেন তার চেয়েও বেশীদিন এই বর্তমান দুষ্ট বিধি-ব্যবস্থা থেকে যাওয়ার জন্য তাদের ধৈর্যচ্যুতি হতে পারে। এ সম্বন্ধে তারা নিরুৎসাহ হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু, শেষ আসবেই। যিহোবা তা প্রতিজ্ঞা করেছেন। (তীত ১:২) আর তাঁর প্রতিজ্ঞাত পার্থিব পরমদেশ সম্বন্ধেও তাই। যিহোবা তার দায়িত্ব নিয়েছেন। (প্রকাশিত বাক্য ২১:১-৫) যখন নুতন জগৎ আসবে, যারা সংযমশীলতা রক্ষা করেছে তাদের সকলের জন্য সেখানে একটি “জীবনবৃক্ষ” থাকবে।—হিতোপদেশ ১৩:১২.

১৯. সংযমশীলতা কিভাবে রক্ষা করা যেতে পারে?

১৯ কিভাবে আমরা সংযমশীলতা রক্ষা করতে পারি? যিহোবার সাহায্য নিন। (গীতসংহিতা ৫৪:৪) তাঁর সন্নিকটে থাকুন। আমরা কত আনন্দিত যে যিহোবা আমাদের অন্তরঙ্গতা পছন্দ করেন! “ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন,” লিখেছেন শিষ্য যাকোব। (যাকোব ৪:৮) পৌল বলেছেন: “তোমরা প্রভুতে সর্ব্বদা আনন্দ কর; পুনরায় বলিব, আনন্দ কর। তোমাদের শান্ত ভাব মনুষ্যমাত্রের বিদিত হউক। প্রভু নিকটবর্ত্তী। কোন বিষয়ে ভাবিত হইও না, কিন্তু সর্ব্ববিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর। তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি, তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করিবে।” (ফিলিপীয় ৪:৪-৭) এবং যখন এই মুমূর্ষু বিধি-ব্যবস্থার বোঝাগুলি আর বহন করার পক্ষে দুর্বহ বলে মনে হবে, সেগুলি যিহোবার উপর ফেলে দিন, আর তিনিই আপনাকে তুলে ধরবেন।—গীতসংহিতা ৫৫:২২.

২০. প্রথম তীমথিয় ৪:১০ পদ অনুযায়ী কোন্‌ পথে আমাদের চলা উচিৎ?

২০ হ্যাঁ, শেষ সন্নিকট হয়েছে, তাই সংযমশীল হোন! এটি উত্তম উপদেশ ছিল ১,৯০০ বছর আগে; বর্তমানে এটি অত্যাবশ্যক উপদেশ। আসুন আমরা আমাদের উত্তম মানসিক ক্ষমতাগুলি যিহোবার প্রশংসায় ব্যবহার করে চলি যখন তিনি তাঁর নুতন জগতে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের পথনির্দেশ দিয়ে চলেছেন।—১ তীমথিয় ৪:১০. (w93 6/1)

কিভাবে আপনি উত্তর দেবেন?

▫ সংযমশীলতার অর্থ কি?

▫ সংযমশীল হওয়া এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?

▫ আমরা কিভাবে আপন মনের ভাবে ক্রমশঃ নবীনীকৃত হতে পারি?

▫ আমাদের মনে ক্রমাগত কোন্‌ যুদ্ধ অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে?

▫ আমরা কিভাবে সংযমশীলতা রক্ষা করি?

[Pictures on page 14]

প্রার্থনায় ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়া আমাদের সংযমশীলতা রক্ষা করতে সাহায্য করে

[Pictures on page 16]

সংযমশীল হওয়ার দ্বারা, এই জগতের প্রলোভনগুলি দ্বারা আমরা প্রলুব্ধ হব না

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার