ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৩ ১২/১ পৃষ্ঠা ২২-২৭
  • ঈশ্বরীয় ভয় গড়ে তোলা

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ঈশ্বরীয় ভয় গড়ে তোলা
  • ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবাকে সম্মান দেখানো
  • প্রেমময় সংশোধন
  • সবচেয়ে বড় আনন্দ
  • প্রকৃত প্রজ্ঞা গড়ে তোলা
  • মঙ্গল করবার জন্য আগ্রহ
  • মন্দতাকে ঘৃণা করুন!
  • যিহোবার আরও কাছে আসুন
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • প্রজ্ঞা লাভ করুন এবং উপদেশ শুনুন
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “সদাপ্রভুই প্রজ্ঞা দান করেন”
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • হিতোপদেশ বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৩ ১২/১ পৃষ্ঠা ২২-২৭

ঈশ্বরীয় ভয় গড়ে তোলা

“যিহোবাকে ভয় কর ও মন্দ বিষয় থেকে দূরে যাও।”—হিতোপদেশ ৩:৭, NW.

১. হিতোপদেশ কাদের জন্য লেখা হয়েছিল?

বাইবেলের হিতোপদেশ বইতে অমূল্য আধ্যাত্মিক উপদেশ আছে। প্রথমে যিহোবা এই বইটি দিয়েছিলেন তাঁর জাতি ইস্রায়েলকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। বর্তমানে, বইটি তাঁর পবিত্র খ্রীষ্টীয় জাতিকে বিজ্ঞ উপদেশ দেয়, “যাহাদের উপরে যুগকলাপের অন্ত আসিয়া পড়িয়াছে।”—১ করিন্থীয় ১০:১১; হিতোপদেশ ১:১-৫; ১ পিতর ২:৯.

২. হিতোপদেশ ৩:৭ পদের সাবধানবাণী কেন এখন এত সময়োপযোগী?

২ হিতোপদেশ ৩:৭ পদ খুলে আমরা পড়তে পারি: “আপনার দৃষ্টিতে জ্ঞানবান হইও না; যিহোবাকে ভয় কর ও মন্দ বিষয় থেকে দূরে যাও।” আমাদের প্রথম পিতামাতার সময় থেকেই, যখন শয়তান হবাকে “সদসদ্‌-জ্ঞান প্রাপ্ত” হওয়ার প্রলোভন দেখিয়েছিল, তখন থেকে মানুষের জ্ঞান মানবজাতির প্রয়োজন মিটাতে পারেনি। (আদিপুস্তক ৩:৪, ৫; ১ করিন্থীয় ৩:১৯, ২০) বিংশ শতাব্দী ছাড়া, ইতিহাসের অন্য কোন সময়ে এই বিষয়টি এত স্পষ্ট হয়নি—এই “শেষ কালে” নাস্তিক, ক্রমবিবর্তনবাদী মনোভাবের ফল হিসাবে মানবজাতি বর্ণবিভেদ, মারামারি এবং সব ধরনের অনৈতিকতায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। (২ তীমথিয় ৩:১-৫, ১৩; ২ পিতর ৩:৩, ৪) এটি হল একটি ‘নতুন জগৎ অব্যবস্থা’ যার সমাধান রাষ্ট্রসংঘ অথবা জগতের বিভক্ত ধর্মগুলি, কেউই করতে পারবে না।

৩. আমাদের দিনের কোন্‌ ঘটনাবলি সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল?

৩ ঈশ্বরের ভাববাণীমূলক বাক্যে আমাদের বলা হয়েছে যে মন্দ দূতেদের বাহিনী “জগৎ সমুদয়ের রাজাদের নিকটে গিয়া, সর্ব্বশক্তিমান্‌ ঈশ্বরের সেই মহাদিনের যুদ্ধার্থে তাহাদিগকে একত্র করে . . . ইব্রীয় ভাষায় যাহাকে হর্‌মাগিদোন বলে, সেই স্থানে তাহাদিগকে একত্র করিল।” (প্রকাশিত বাক্য ১৬:১৪, ১৬) শীঘ্রই যিহোবার আতঙ্ক সেই রাজা অথবা শাসকদের ঘিরে ফেলবে। তাদের আতঙ্ক সেই কনানীয়দের মত হবে যখন যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলীয়রা তাদের ধ্বংস করতে এসেছিল। (যিহোশূয় ২:৯-১১) কিন্তু এখন যিনি যিহোশূয়কে চিত্রিত করছেন—“রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু,” খ্রীষ্ট যীশু—তিনি “সর্ব্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধ” প্রকাশরূপে ‘জাতিগণকে আঘাত করবেন এবং লৌহদণ্ড দ্বারা তাহাদিগকে শাসন করবেন।’—প্রকাশিত বাক্য ১৯:১৫, ১৬.

৪, ৫. কারা পরিত্রাণ পাবে এবং কেন?

৪ সেই সময়ে কে পরিত্রাণ পাবে? আতঙ্কগ্রস্ত যারা, তারা নয় কিন্তু যারা যিহোবার প্রতি একটি স্বাস্থ্যকর ভয় গড়ে তুলেছে, তারা। নিজেদের দৃষ্টিতে জ্ঞানবান না হয়ে, এরা “মন্দ বিষয় থেকে” দূরে থাকে। নম্রতার সাথে তারা ভাল বিষয় দিয়ে তাদের মন পূর্ণ রাখে, যাতে মন্দ বিষয়ের জায়গা সেখানে না হয়। “সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্ত্তা” সার্বভৌম প্রভু যিহোবা, যিনি শীঘ্রই যারা মন্দতা ধরে রাখে তাদের অধঃপতিত সদোমের লোকেদের মত ধ্বংস করবেন, তাঁর প্রতি স্বাস্থ্যকর শ্রদ্ধা দেখানোতে তারা আনন্দিত হয়। (আদিপুস্তক ১৮:২৫) বাস্তবিকই, ঈশ্বরের নিজস্ব লোকেদের জন্য, “সদাপ্রভুর ভয় জীবনের উৎস, তাহা মৃত্যুর ফাঁদ হইতে দূরে যাইবার পথ।”—হিতোপদেশ ১৪:২৭.

৫ ঐশ্বরিক বিচারদিনে, যারা যিহোবার প্রতি সম্পূর্ণরূপে নিজেদের সমর্পন করে তাঁকে অসন্তুষ্ট করতে ভয় পায়, তারা রূপক অর্থে হিতোপদেশ ৩:৮ পদের এই সত্যটি উপলব্ধি করতে পারবে: “[যিহোবার ভয়] তোমার নাভির স্বাস্থ্যস্বরূপ হইবে, তোমার অস্থির মজ্জাস্বরূপ হইবে।”

যিহোবাকে সম্মান দেখানো

৬. হিতোপদেশ ৩:৯ পদ মেনে চলতে কী আমাদের প্রেরণা দেবে?

৬ যিহোবার প্রতি উপলব্ধিমূলক ভয়ের সাথে তাঁর জন্য আমাদের প্রগাঢ় প্রেমবশত আমাদের উচিত হিতোপদেশ ৩:৯ পদ মেনে চলতে প্রেরণা পাওয়া: “তুমি সদাপ্রভুর সম্মান কর আপনার ধনে, আর তোমার সমস্ত দ্রব্যের অগ্রিমাংশে।” দান দেওয়ার মাধ্যমে যিহোবাকে সম্মান দেখানোর জন্য আমাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে না। দান স্বেচ্ছাকৃত হওয়া উচিত, যেমন প্রাচীন ইস্রায়েলে বলিদানের ক্ষেত্রে যাত্রাপুস্তক ৩৫:২৯ থেকে দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:২৩ পদের মধ্যে প্রায় ১২ বার দেখানো হয়েছে। যিহোবার কাছ থেকে আমরা যে সহৃদয়তা এবং প্রেমময় করুণা পেয়েছি, তার উপলব্ধিস্বরূপ এই অগ্রিমাংশ আমাদের সবচেয়ে ভাল উপহার হওয়া উচিত। (গীতসংহিতা ২৩:৬) সেগুলির মধ্যে যেন “প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা” করতে আমাদের ইচ্ছা প্রকাশ পায়। (মথি ৬:৩৩) আর আমাদের মূল্যবান বস্তুগুলির দ্বারা যিহোবার সম্মান করলে তার কী ফল হয়? “তাহাতে তোমার গোলাঘর সকল বহু শস্যে পূর্ণ হইবে, তোমার কুণ্ডে নূতন দ্রাক্ষারস উথলিয়া পড়িবে।”—হিতোপদেশ ৩:১০.

৭. কোন্‌ অগ্রিমাংশ আমাদের যিহোবাকে দেওয়া উচিত এবং তার ফল কী হবে?

৭ আমাদের আশীর্বাদ করতে যিহোবার মুখ্য উপায় হল আধ্যাত্মিক। (মালাখি ৩:১০) সুতরাং, আমরা যে অগ্রিমাংশ তাঁকে দেব, তাও প্রধানত আধ্যাত্মিক হওয়া উচিত। তাঁর ইচ্ছা পালন করতে আমাদের সময়, শক্তি এবং উদ্যোগ ব্যবহার করা উচিত। এইভাবে আমরা সতেজ হয়ে উঠব, ঠিক যেমন এই ধরনের কাজ যীশুর কাছে “খাদ্য” হয়ে উঠেছিল। (যোহন ৪:৩৪) আমাদের আধ্যাত্মিক গোলাঘর পরিপূর্ণ থাকবে আর নূতন দ্রাক্ষারস দ্বারা চিত্রিত আমাদের আনন্দ প্রচুর বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, প্রত্যেক দিনের শারীরিক খাদ্যের জন্য আস্থাপূর্বক প্রার্থনা করার সাথে সাথে, আমরা বিশ্বব্যাপী রাজ্যের কাজের প্রতি নিয়মিত উদারহস্তে দান করতে পারি। (মথি ৬:১১) আমাদের যা কিছু আছে, এমনকি ধনসম্পদও, আমাদের প্রেমময় স্বর্গীয় পিতার কাছ থেকে এসেছে। এই সব মূল্যবান বস্তু আমরা যত তাঁর প্রশংসার্থে ব্যবহার করব, তত বেশি তিনি আমাদের প্রতি আশীর্বাদ বর্ষন করবেন।—হিতোপদেশ ১১:৪; ১ করিন্থীয় ৪:৭.

প্রেমময় সংশোধন

৮, ৯. সংশোধন এবং শাসনকে আমাদের কিভাবে দেখা উচিত?

৮ হিতোপদেশ ৩ অধ্যায়ের ১১ এবং ১২ পদে ঈশ্বর-ভক্ত পরিবারগুলিতে পিতা এবং সন্তানদের মধ্যে এবং যিহোবা ও পৃথিবীতে তাঁর প্রিয় আধ্যাত্মিক সন্তানদের মধ্যে যে আনন্দময় সম্পর্ক আছে, সেই সম্বন্ধে আবার বলা হয়েছে। সেখানে লেখা আছে: “বৎস, সদাপ্রভুর শাসন তুচ্ছ করিও না, তাঁহার অনুযোগে ক্লান্ত হইও না; কেননা সদাপ্রভু যাহাকে প্রেম করেন, তাহাকেই শাস্তি প্রদান করেন, যেমন পিতা প্রিয় পুত্ত্রের প্রতি করেন।” জগতের লোকেরা শাসনকে ঘৃণা করে। যিহোবার লোকেদের উচিত সংশোধনকে আমন্ত্রণ জানানো। হিতোপদেশ থেকে এই কথাগুলি উদ্ধৃতি করে প্রেরিত পৌল বলেছিলেন: “হে আমার পুত্ত্র, প্রভুর শাসন তুচ্ছ করিও না, তাঁহার দ্বারা অনুযুক্ত হইলে ক্লান্ত হইও না। কেননা প্রভু যাহাকে প্রেম করেন, তাহাকেই শাসন করেন, . . . কোন শাসনই আপাততঃ আনন্দের বিষয় বোধ হয় না, তথাপি তদ্দ্বারা যাহাদের অভ্যাস জন্মিয়াছে, তাহা পরে তাহাদিগকে ধার্ম্মিকতার শান্তিযুক্ত ফল প্রদান করে।”—ইব্রীয় ১২:৫, ৬, ১১.

৯ হ্যাঁ, সংশোধন এবং শাসন হল আমাদের প্রত্যেকের প্রশিক্ষণের একটি প্রয়োজনীয় অংশ, তা সে পিতামাতা, খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী অথবা ব্যক্তিগত অধ্যয়নের সময়ে শাস্ত্র সম্বন্ধে চিন্তা করার মাধ্যমেই আসুক। শাসন গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে একটি জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন, যেমন হিতোপদেশ ৪:১, ১৩ পদেও বলা হয়েছে: “বৎসগণ, পিতার উপদেশ শুন, সুবিবেচনা বুঝিবার জন্য মনোযোগ কর। উপদেশ ধরিয়া রাখিও, ছাড়িয়া দিও না, তাহা রক্ষা কর, কেননা তাহা তোমার জীবন।”

সবচেয়ে বড় আনন্দ

১০, ১১. হিতোপদেশ ৩:১৩-১৮ পদের অপূর্ব কথাগুলির কয়েকটি মুখ্য বিষয় কী?

১০ এর পরে কী অপূর্ব অভিব্যক্তি প্রকাশ পেয়েছে, বাস্তবিকই ‘মনোহর ও সত্যের সরল বাক্য।’ (উপদেশক ১২:১০) শলোমনের এই অনুপ্রাণিত বাক্যগুলি প্রকৃত আনন্দের বর্ণনা করে। এই কথাগুলিকে আমাদের হৃদয়ে গ্রহণ করা উচিত। আমরা পড়ি:

১১ “ধন্য সেই ব্যক্তি যে প্রজ্ঞা পায়, সেই ব্যক্তি যে বুদ্ধি লাভ করে; কেননা রৌপ্যের বাণিজ্য অপেক্ষাও তাহার বাণিজ্য উত্তম, সুবর্ণ অপেক্ষাও প্রজ্ঞা-লাভ উত্তম। তাহা মুক্তা হইতেও বহুমূল্য; তোমার অভীষ্ট কোন বস্তু তাহার সমান নয়। তাহার দক্ষিণ হস্তে দীর্ঘ পরমায়ু, তাহার বাম হস্তে ধন ও সম্মান থাকে। তাহার পথ সকল মনোরঞ্জনের পথ, তাহার সমস্ত মার্গ শান্তিময়। যাহারা তাহাকে ধরিয়া রাখে, তাহাদের কাছে তাহা জীবনবৃক্ষ; যে কেহ তাহা গ্রহণ করে, সে ধন্য।”—হিতোপদেশ ৩:১৩-১৮.

১২. প্রজ্ঞা ও বুদ্ধির দ্বারা কিভাবে আমাদের উপকার হওয়া উচিত?

১২ প্রজ্ঞা—হিতোপদেশে এই কথাটি কত ঘন ঘন উল্লেখ করা হয়েছে, সব শুদ্ধ ৪৬ বার! “সদাপ্রভুকে ভয় করাই প্রজ্ঞার আরম্ভ।” ঈশ্বরের বাক্যের উপর ভিত্তি করে এটি হল ঐশ্বরিক, ব্যবহারিক প্রজ্ঞা যা শয়তানের জগতের বিপজ্জনক ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্যে থেকে তাঁর লোকেদের সুরক্ষিত পথ বেছে নিতে সাহায্য করে। (হিতোপদেশ ৯:১০) হিতোপদেশে ১৯ বার উল্লিখিত বুদ্ধির সঙ্গে প্রজ্ঞার সম্পর্ক আছে, শয়তানের ফাঁদগুলির মোকাবিলা করতে যা সাহায্য করে। তার চাতুরীপূর্ণ কাজ সাধন করাতে, আমাদের প্রধান শত্রুর হাজার হাজার বছরের অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু শিক্ষক হিসাবে অভিজ্ঞতার তুলনায়, অনেক বেশি মূল্যবান কিছু আমাদের কাছে আছে—ঈশ্বরীয় বুদ্ধি, ভাল-মন্দ বিচার করে সঠিক পথটি বেছে নেওয়ার ক্ষমতা। তাঁর বাক্যের মাধ্যমে যিহোবা আমাদের তাই শিক্ষা দেন।—হিতোপদেশ ২:১০-১৩; ইফিষীয় ৬:১১.

১৩. অর্থনৈতিক সমস্যার সময়ে কী আমাদের রক্ষা করতে পারে এবং কিভাবে?

১৩ বর্তমান জগতের আর্থিক সমস্যা হল যিহিষ্কেল ৭:১৯ পদের ভবিষ্যদ্বাণীর অগ্রদূত: “তাহারা আপন আপন রৌপ্য চকে ফেলিয়া দিবে, তাহাদের সুবর্ণ অশুচি বস্তু হইবে; সদাপ্রভুর ক্রোধের দিনে তাহাদের স্বর্ণ কি রৌপ্য তাহাদিগকে রক্ষা করিতে পারিবে না।” প্রজ্ঞা এবং বুদ্ধির জীবন বাঁচানোর ক্ষমতার সঙ্গে পৃথিবীর সমস্ত ধনসম্পদের তুলনা করা যায় না। আরেকটি উপলক্ষে বিজ্ঞ রাজা শলোমন লিখেছিলেন: “প্রজ্ঞা আশ্রয়, ধনও আশ্রয় বটে, কিন্তু জ্ঞানের উৎকৃষ্টতা এই যে, প্রজ্ঞা আপন অধিকারীর জীবন রক্ষা করে।” (উপদেশক ৭:১২) যারা যিহোবার মনোরঞ্জনের পথে বর্তমানে চলে এবং যারা বিজ্ঞতার সাথে পাপের প্রায়শ্চিত্তমূলক যীশুর বলিদানে বিশ্বাস করে তাদের যে অনন্ত জীবন ঈশ্বর উপহার দেবেন, সেই “দীর্ঘ পরমায়ু” বেছে নেয় তারা সত্যই সুখী।—হিতোপদেশ ৩:১৬; যোহন ৩:১৬; ১৭:৩.

প্রকৃত প্রজ্ঞা গড়ে তোলা

১৪. কিভাবে যিহোবা অতুলনীয় প্রজ্ঞা দেখিয়েছেন?

১৪ অপূর্ব সৃষ্টিকার্যের সময়ে যে গুণ, প্রজ্ঞা এবং বুদ্ধি ঈশ্বর নিজে প্রদর্শন করেছেন, ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে তৈরি আমরা মানুষেরাও যে সেই গুণ অর্জন করতে চেষ্টা করি, তা উপযুক্ত। “সদাপ্রভু প্রজ্ঞা দ্বারা পৃথিবীর মূল স্থাপন করিয়াছেন, বুদ্ধি দ্বারা আকাশমণ্ডল অটল করিয়াছেন।” (হিতোপদেশ ৩:১৯, ২০) জীবন্ত প্রাণীদের তিনি সৃষ্টি করেছিলেন কোন অস্পষ্ট, অনির্বচনীয় ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে নয় কিন্তু সরাসরি সৃষ্টির মাধ্যমে, প্রত্যেকটি “স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী একটি বুদ্ধিমান উদ্দেশ্য নিয়ে।” (আদিপুস্তক ১:২৫) অবশেষে যখন বুদ্ধি এবং অন্যান্য জীবজন্তুর থেকে বহু গুণে শ্রেষ্ঠ ক্ষমতা নিয়ে মানুষের সৃষ্টি হয়েছিল, তখন ঈশ্বরের স্বর্গীয় সন্তানদের জয়ধ্বনি নিশ্চয় বারে বারে স্বর্গে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। (তুলনা করুন ইয়োব ৩৮:১, ৪, ৭) পৃথিবীতে তাঁর সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে যিহোবার বিচক্ষণ পূর্বদৃষ্টি, তাঁর প্রজ্ঞা ও তাঁর প্রেম স্পষ্ট প্রকাশ পায়।—গীতসংহিতা ১০৪:২৪.

১৫. (ক) শুধুমাত্র প্রজ্ঞা গড়ে তোলাই যথেষ্ট নয় কেন? (খ) হিতোপদেশ ৩:২৫, ২৬ পদের মাধ্যমে আমরা কী আস্থা পেতে পারি?

১৫ যিহোবার মত প্রজ্ঞা ও বুদ্ধি শুধুমাত্র আমরা গড়েই তুলব না কিন্তু তা আমাদের ধরে রাখতে হবে, তাঁর বাক্য অধ্যয়ন করায় কখনোই শিথিল হওয়া চলবে না। তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন: “বৎস, এ সকল তোমার দৃষ্টি-বহির্ভূত না হউক, তুমি সূক্ষ্ম বুদ্ধি ও পরিণামদর্শিতা রক্ষা কর। তাহাতে সে সকল তোমার প্রাণের জীবনস্বরূপ হইবে, তোমার কণ্ঠের শোভাস্বরূপ হইবে।” (হিতোপদেশ ৩:২১, ২২) এইভাবে আমরা সুরক্ষায় ও মনের শান্তিতে চলতে পারি, এমনকি যখন শয়তানের জগতের উপরে যে “ধ্বংস” হঠাৎ চোরের মত এসে পড়বে, তখনও। (১ থিষলনীকীয় ৫:২, ৩) মহাক্লেশের সময়ে “আকস্মিক বিপদ হইতে . . . দুষ্টের বিনাশ আসিলে তাহা হইতে ভীত” হওয়ার প্রয়োজন হবে না। “সদাপ্রভু তোমার বিশ্বাসভূমি হইবেন, ফাঁদ হইতে তোমার চরণ রক্ষা করিবেন।”—হিতোপদেশ ৩:২৩-২৬.

মঙ্গল করবার জন্য আগ্রহ

১৬. পরিচর্যায় উদ্যোগ দেখানো ছাড়া খ্রীষ্টানদের আর কী করতে হবে?

১৬ প্রত্যেক জাতির কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সুসমাচার প্রচার করার এখনই হল সময়। কিন্তু এই সাক্ষ্য দেওয়ার কাজের সাথে অন্যান্য খ্রীষ্টীয় কাজও থাকা উচিত, যেমন হিতোপদেশ ৩:২৭, ২৮ পদে ব্যাখ্যা করা হয়েছে: “যাহাদের মঙ্গল করা উচিত, তাহাদের মঙ্গল করিতে অস্বীকার করিও না, যখন তাহা করিবার ক্ষমতা তোমার হাতে থাকে। তোমার প্রতিবাসীকে বলিও না, ‘যাও, আবার আসিও, আমি কল্য দিব,’ যখন দ্রব্য তোমার হস্তে থাকে।” (তুলনা করুন যাকোব ২:১৪-১৭) জগতের অধিকাংশ এলাকা দারিদ্র্য এবং দুর্ভিক্ষের কবলে থাকার জন্য আমাদের সহমানবদের, বিশেষত আত্মিক ভাইদের সাহায্য করার জরুরী আবেদন আমাদের কাছে আসে। যিহোবার সাক্ষীরা কীরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে?

১৭-১৯. (ক) উনিশ্‌শো তিরানব্বই সালে কোন্‌ জরুরী প্রয়োজন সম্বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল এবং তার ফল কী হয়েছিল? (খ) কী দেখায় যে আমাদের দুর্দশাগ্রস্ত ভাইয়েরা “সম্পূর্ণরূপে বিজয়ী হয়েছেন”?

১৭ একটি উদাহরণ বিবেচনা করুন: গত বছর, প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়া থেকে সাহায্যের জন্য এক জরুরী আবেদন এসেছিল। প্রতিবেশী দেশগুলির ভাইয়েরা অপূর্বরূপে সাড়া দিয়েছিলেন। গত শীতকালের জমে যাওয়ার মত ঠাণ্ডা মাসগুলিতে, ত্রাণসামগ্রীসমেত অনেকগুলি ট্রাককে যুদ্ধের এলাকায় পাঠানো সবে হয়েছিল, যেগুলিতে করে অভাবগ্রস্ত ভাইদের জন্য সাম্প্রতিক সাহিত্য, গরম জামাকাপড়, খাদ্য এবং ওষুধপত্র পাঠানো হয়েছিল। একটি ক্ষেত্রে, ভাইয়েরা ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাওয়ার আবেদন জমা দিয়েছিলেন, কিন্তু যখন তারা স্বীকৃতিপত্র পেয়েছিলেন তখন তাতে ৩০ টন নিয়ে যাওয়ার অনুমতি ছিল! অস্ট্রিয়ার যিহোবার সাক্ষীরা তাড়াতাড়ি আরও তিনটি ট্রাক পাঠিয়ে দিয়েছিল। সব শুদ্ধ, ২৫ টন গন্তব্যস্থলে পাঠানো হয়েছিল। প্রচুর পরিমাণে আধ্যাত্মিক এবং শারীরিক সঙ্গতি পেয়ে আমাদের ভাইয়েরা কতই না আনন্দিত হয়েছিলেন!

১৮ যারা তা পেয়েছিলেন, তারা কিভাবে সাড়া দিয়েছিলেন? এই বছরের শুরুতে, একজন প্রাচীন লিখেছিলেন: “সেরাহিভোর ভাই-বোনেরা বেঁচে আছেন ও ভাল আছেন, আর তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ যে এই উন্মাদ যুদ্ধ সহ্য করার জন্য তারা এখনও আত্মিকভাবে দৃঢ় আছেন। খাদ্য সম্পর্কে পরিস্থিতি খুবই খারাপ ছিল। আমাদের জন্য আপনারা যে প্রচেষ্টা করেছেন, সেই জন্য যিহোবা যেন আপনাদের আশীর্বাদ দেন ও পুরস্কৃত করেন। অনুকরণযোগ্য জীবনযাপনের জন্য এবং কর্তৃপক্ষদের প্রতি শ্রদ্ধার জন্য, কর্তৃপক্ষরা যিহোবার সাক্ষীদের বিশেষ সম্মানের চোখে দেখে। যে আধ্যাত্মিক খাদ্য আপনারা আমাদের পাঠিয়েছেন, সে জন্যও আমরা কৃতজ্ঞ।”—তুলনা করুন গীতসংহিতা ১৪৫:১৮.

১৯ তাদের উদ্যোগী ক্ষেত্রের পরিচর্যার মাধ্যমেও এই বিপদগ্রস্ত ভাইয়েরা উপলব্ধি দেখিয়েছেন। অনেক প্রতিবেশীরা তাদের কাছে গৃহ বাইবেল অধ্যয়নের ইচ্ছা নিয়ে আসেন। তুজ্‌লা শহরে, যেখানে ৫ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছিল, সেখানকার ৯ জন অগ্রগামীর সমর্থনে, ৪০ জন প্রকাশক প্রত্যেকে গড়ে ২৫ ঘন্টা পরিচর্যা রিপোর্ট করেছেন। যীশুর মৃত্যুর স্মরণার্থক দিনে তাদের মণ্ডলীতে ২৪৩ জনের আশ্চর্যজনক উপস্থিতিও হয়েছিল। এই প্রিয় ভাইয়েরা বাস্তবিকই ‘যিনি তাদের প্রেম করেছেন, তাঁর দ্বারা সম্পূর্ণরূপে বিজয়ী হয়েছেন।’—রোমীয় ৮:৩৭.

২০. প্রাক্তন সোভিয়েত রাশিয়াতে কোন্‌ “সাম্যভাব” এসেছে?

২০ পূর্বেকার সোভিয়েত রাশিয়াতে ত্রাণ হিসাবে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য এবং গরম জামাকাপড় পাঠানোর মাধ্যমে যে উদারতা প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানকার ভাইয়েরা ঠিক সেইরকমই উদ্যোগ দেখিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, গত বছরের ৩,৫০০ জনের তুলনায় এই বছরে মস্কোতে স্মরণার্থক সভায় উপস্থিতি ছিল ৭,৫৪৯ জন। এই একই সময়ে সেই শহরে মণ্ডলীর সংখ্যা ১২ থেকে বেড়ে ১৬ হয়েছে। সম্পূর্ণ প্রাক্তন সোভিয়েত রাশিয়াতে (বল্‌টিক দেশগুলি বাদে), মণ্ডলীর সংখ্যায় ১৪ শতাংশ, রাজ্যের প্রকাশকদের সংখ্যায় ২৫ শতাংশ এবং অগ্রগামীদের সংখ্যায় ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। কী উদ্যোগী এবং আত্মত্যাগী মনোভাব! প্রথম শতাব্দী সম্বন্ধে আমাদের মনে পড়ে যায় যখন একটি “সাম্যভাব” হয়েছিল। যে খ্রীষ্টানদের আধ্যাত্মিক ও জাগতিক সম্পদ ছিল তারা অন্যান্য অভাবগ্রস্ত এলাকায় মুক্তহস্তে উপহার পাঠাতেন আর দারিদ্র্যপীড়িত ভাইদের উদ্যোগ সেই দাতাদের আনন্দ ও উৎসাহ দিত।—২ করিন্থীয় ৮:১৪.

মন্দতাকে ঘৃণা করুন!

২১. হিতোপদেশ ৩ অধ্যায়ের শেষে কিভাবে জ্ঞানবান এবং হীনবুদ্ধি লোকেদের মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে?

২১ এর পরে হিতোপদেশ তিন অধ্যায়ে, পর পর কয়েকটি বৈষম্য দেওয়া হয়েছে, ও শেষে এই নির্দেশ দিয়ে শেষ করা হয়েছে: “তোমার প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে কুসঙ্কল্প করিও না, সে ত তোমার নিকটে নির্ভয়ে বাস করে। অকারণে কোন ব্যক্তির সহিত বিরোধ করিও না, যদি সে তোমার অপকার না করিয়া থাকে। উপদ্রবীর প্রতি ঈর্ষা করিও না, আর তাহার কোন পথ মনোনীত করিও না; কেননা খল সদাপ্রভুর ঘৃণার পাত্র; কিন্তু সরলগণের সহিত তাঁহার গূঢ় মন্ত্রণা। দুষ্টের গৃহে সদাপ্রভুর অভিশাপ থাকে, কিন্তু তিনি ধার্ম্মিকদের নিবাসকে আশীর্ব্বাদ করেন। নিশ্চয়ই তিনি নিন্দকদিগের নিন্দা করেন, কিন্তু নম্রদিগকে অনুগ্রহ প্রদান করেন। জ্ঞানবানেরা সম্মানের অধিকারী হইবে, কিন্তু অবজ্ঞাই হীনবুদ্ধিদের উন্নতি।”—হিতোপদেশ ৩:২৯-৩৫.

২২. (ক) হীনবুদ্ধি লোকেদের পরিণতি আমরা কিভাবে এড়াতে পারি? (খ) জ্ঞানবানেরা কী ঘৃণা করে, তারা কী গড়ে তোলে এবং কী পুরস্কার পায়?

২২ হীনবুদ্ধিদের মধ্যে গণ্য হওয়া আমরা কিভাবে এড়িয়ে চলতে পারি? মন্দকে বিতৃষ্ণা করতে আমাদের শিখতে হবে, হ্যাঁ যিহোবা যা ঘৃণা করেন তা আমাদের ঘৃণা করতে হবে—এই দৌরাত্ম্যপূর্ণ, রক্তপাতকারী জগতের সমস্ত কুটিল পথকে। (হিতোপদেশ ৬:১৬-১৯ পদও দেখুন।) এর পরিবর্তে, ভাল বিষয়গুলি আমাদের অর্জন করতে হবে—সরলতা, ধার্মিকতা এবং বিনয়—যাতে নম্রতার সাথে এবং যিহোবার ভয়ে আমরা “ধন, সম্মান ও জীবন” পেতে পারি। (হিতোপদেশ ২২:৪) এই হবে আমাদের সকলের পুরস্কার, যারা বিশ্বস্তভাবে এই উপদেশ পালন করব: “তুমি সমস্ত চিত্তে সদাপ্রভুতে বিশ্বাস কর।” (w93 12/15)

আপনার মন্তব্য কী?

▫ এই অধ্যয়নের মুখ্য শাস্ত্র পদটি বর্তমানে কিভাবে প্রয়োগ করা যায়?

▫ কিভাবে আমরা যিহোবাকে সম্মান দেখাতে পারি?

▫ শাসনকে কেন আমাদের অবজ্ঞা করা উচিত নয়?

▫ কোথায় সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাওয়া যায়?

▫ কিভাবে আমরা ভাল বিষয়কে প্রেম আর মন্দ বিষয়কে ঘৃণা করতে পারি?

[Pictures on page 24]

যারা যিহোবাকে তাদের সর্বোত্তম বিষয়গুলি বলিদান হিসাবে দেয়, তারা প্রচুর আশীর্বাদ পাবে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার