ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৪ ২/১ পৃষ্ঠা ৭-১২
  • ঐশিক শিক্ষার জয় হয়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ঐশিক শিক্ষার জয় হয়
  • ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • প্রজ্ঞার সন্ধান
  • যিহোবার দেওয়া মহান পাঠ্য পুস্তক
  • ক্রমশ বোধগম্যতা
  • ঈশ্বরের অপূর্ব জ্যোতিতে
  • আত্মা ও সত্যের মাধ্যমে উপাসনা
  • পরীক্ষা ও জগতের সামনে বিজয়ী
  • ঐশিক শিক্ষা উপকারগুলি উপভোগ করুন
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “ঐশিক শিক্ষা” জেলা সম্মেলনগুলি
    ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বর্তমান দিন পর্যন্ত যিহোবার দ্বারা শিক্ষিত
    ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ঐশিক শিক্ষা বনাম মন্দ আত্মাদের শিক্ষা
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৪ ২/১ পৃষ্ঠা ৭-১২

ঐশিক শিক্ষার জয় হয়

“তোমার চোখ তোমার মহান শিক্ষককে দেখতে পাবে। তোমার কান পিছন থেকে এই বাণী শুনতে পাবে: এই পথ। তোমরা এই পথেই চল।”—যিশাইয় ৩০:২০, ২১, NW.

১. কেন যিহোবার শিক্ষাকে যথার্থরূপে ঐশিক শিক্ষা বলা যেতে পারে?

যিহোবা ঈশ্বর সবচেয়ে উত্তম শিক্ষার উৎস। বিশেষত তাঁর পবিত্র বাক্যের মাধ্যমে তিনি যখন কিছু বলেন তা যদি আমরা শুনি, তাহলে তিনি আমাদের মহান শিক্ষক হবেন। (যিশাইয় ৩০:২০) ইব্রীয় বাইবেল শাস্ত্র তাঁকে “ঐশিক প্রভু”ও বলেছে। (গীতসংহিতা ৫০:১) সুতরাং, যিহোবার নির্দেশ হল ঐশিক শিক্ষা।

২. ঈশ্বর একমাত্র বিজ্ঞ তা কোন্‌ ক্ষেত্রে সত্য?

২ জগৎ তার বহু শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানগুলি সম্বন্ধে গর্বিত, কিন্তু তাদের একটিও ঐশিক শিক্ষা দেয় না। যিহোবার অপরিসীম প্রজ্ঞার উপর নির্ভর করা ঐশিক নির্দেশের সাথে তুলনা করলে, সমস্ত কালের জাগতিক জ্ঞানকে খুবই সামান্য বলে মনে হয়। রোমীয় ১৬:২৭ পদ বলে যে ঈশ্বর একমাত্র প্রজ্ঞাবান আর এই উক্তিটি এই অর্থে সত্য যে একমাত্র যিহোবারই সম্পূর্ণ প্রজ্ঞা রয়েছে।

৩. যীশু খ্রীষ্ট কেন পৃথিবীর সর্বমহান শিক্ষক ছিলেন?

৩ ঈশ্বরের পুত্র, যীশু খ্রীষ্ট প্রজ্ঞার সবচেয়ে উপযুক্ত প্রতিরূপ এবং পৃথিবীতে যত শিক্ষক জন্মেছেন তাদের মধ্যে সর্বমহান ছিলেন। আশ্চর্যের কিছুই নেই! বহুকাল ধরে স্বর্গে যিহোবাই তার শিক্ষক ছিলেন। বাস্তবিকই, ঐশিক শিক্ষার শুরু হয় যখন ঈশ্বর তাঁর প্রথম সৃষ্টি, তাঁর একজাত পুত্রকে নির্দেশ দিতে আরম্ভ করেছিলেন। তাই যীশু বলতে পেরেছিলেন: “পিতা আমাকে যেমন শিক্ষা দিয়াছেন, তদনুসারে এই সকল কথা কহি।” (যোহন ৮:২৮; হিতোপদেশ ৮:২২, ৩০) বাইবেলে লিখিত খ্রীষ্টের নিজের বাক্যগুলি ঐশিক শিক্ষা সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান আরও অনেক বৃদ্ধি করে। যীশু যা শিক্ষা দিয়েছেন তা শিক্ষা দিয়ে, অভিষিক্ত খ্রীষ্টানেরা তাদের মহান শিক্ষকের বাধ্য হয় যাঁর ইচ্ছা হল “ঈশ্বরের বহুবিধ প্রজ্ঞা” সমস্ত মণ্ডলীতে জ্ঞাত করা।​—⁠ইফিষীয় ৩:​১০, ১১; ৫:১; লূক ৬:৪০.

প্রজ্ঞার সন্ধান

৪. মস্তিষ্কে ক্ষমতা সম্বন্ধে কী বলা হয়েছে?

৪ ঐশিক শিক্ষার দ্বারা প্রজ্ঞা লাভ করতে হলে আমাদের ঈশ্বর-দত্ত চিন্তাশক্তিকে অধ্যবসায়-সহকারে ব্যবহার করা দরকার। তা করা সম্ভব কারণ মানব মস্তিষ্কের প্রচণ্ড ক্ষমতা আছে বিস্ময়কর যন্ত্র (ইংরাজীতে পাওয়া যায়) নামক বইটি বলে: “আমরা সবচেয়ে জটিল যে কমিপউটারের কথা চিন্তা করতে পারি, এমনকি তাও অপরিণত বলে মনে হবে, যদি মানব মস্তিষ্কের অসীম জটিলতা এবং গ্রহণশীলতার সাথে তার তুলনা করা হয়​—⁠যে গুণ সম্ভব হয়েছে মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম, শক্তি-নিয়ন্ত্রিত ইলেক্ট্রো-কেমিকাল সঙ্কেতগুলির জন্য। . . . আপনার মস্তিষ্কে যে কোন সময়ে, যে লক্ষ লক্ষ সঙ্কেত পরিবাহিত হচ্ছে তা অভাবনীয় পরিমাণ তথ্য বহন করে থাকে। এগুলি আপনার দেহের ভিতরের ও বাইরের পরিবেশ সম্বন্ধে সংবাদ নিয়ে আসে: আপনার আঙ্গুলে খিল ধরা সম্বন্ধে অথবা কফির সুগন্ধ বা কোন বন্ধুর হাস্যকর উক্তি সম্বন্ধে। অন্যান্য সঙ্কেতগুলি তথ্য বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা করে কোন নির্দিষ্ট অনুভূতি, স্মৃতি, চিন্তাধারা বা পরিকল্পনার সৃষ্টি করা যা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পরিচালিত করে। অবিলম্বে, আপনার মস্তিষ্কের সঙ্কেতগুলি আপনার শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলিকে বলে দেয় কী করতে হবে: আঙ্গুল নাড়াতে, কফি খেতে, হাসতে বা হয়ত কোন বুদ্ধিদীপ্ত জবাব দিতে। ইতিমধ্যে আপনার মস্তিষ্ক আপনার অজান্তে শ্বাসপ্রশ্বাস, রক্তসঞ্চালন, দেহের তাপমাত্রা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াগুলিও নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে। মস্তিষ্ক এমন নির্দেশ পাঠায় যার দ্বারা আপনার পরিবেশের ক্রমাগত পরিবর্তন হলেও আপনার দেহ স্থায়ী ও স্বাভাবিকভাবে কাজ করে যায়। ভবিষ্যত্যের প্রয়োজনের জন্যও মস্তিষ্ক প্রস্তুতি করে।​—⁠পৃষ্ঠা ৩২৬.

৫. শাস্ত্রীয় অর্থে, প্রজ্ঞা কী?

৫ কোন সন্দেহ নেই যে, মানব মস্তিষ্কের অপূর্ব ক্ষমতা রয়েছে, কিন্তু আমরা কিভাবে আমাদের মনকে সবচেয়ে উত্তমরূপে ব্যবহার করতে পারি? একমাত্র ভাষা, ইতিহাস, বিজ্ঞান বা তুলনামূলকভাবে ধর্মগুলির শ্রমসাপেক্ষ অধ্যয়নে নিজেদের মগ্ন করে নয়। প্রধানত ঐশিক শিক্ষা গ্রহণ করার জন্যই আমাদের চিন্তাশক্তিকে ব্যবহার করা উচিত। একমাত্র এর মাধ্যমেই প্রকৃত প্রজ্ঞা, যথার্থ জ্ঞান এবং প্রকৃত বোধশক্তির উপর নির্ভর করে বিচক্ষণতার উপর জোর দেয়। প্রজ্ঞা আমাদের, জ্ঞান ও বোধশক্তি উত্তমরূপে ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান করতে, বিপদ এড়িয়ে চলতে, অন্যদের সাহায্য করতে এবং লক্ষ্যে পৌঁছাতে সমর্থ করে। আগ্রহজনকভাবে, বাইবেল প্রজ্ঞার সাথে মূঢ়তা ও হীনবুদ্ধির পার্থক্য দেখায়​—⁠যে গুণাবলি আমরা অবশ্য এড়িয়ে যেতে চাই।​—⁠দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৬; হিতোপদেশ ১১:২৯; উপদেশক ৬:⁠৮.

যিহোবার দেওয়া মহান পাঠ্য পুস্তক

৬. যদি আমরা প্রকৃত প্রজ্ঞা প্রর্দশন করতে চাই তাহলে কী আমাদের উত্তমরূপে কাজে লাগাতে হবে?

৬ আমাদের চারিপাশে প্রচুর জাগতিক জ্ঞান আছে। (১ করিন্থীয় ৩:​১৮, ১৯) কেন, এই জগতের অসংখ্য স্কুলে ও লাইব্রেরীতে লক্ষ লক্ষ বই পাওয়া যায়! এদের মধ্যে অনেকগুলি হল পাঠ্যপুস্তক যা ভাষা, গণিত, বিজ্ঞান ও অন্যান্য জ্ঞানের বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে থাকে। কিন্তু মহান শিক্ষক এমন এক পাঠ্যপুস্তক দিয়েছেন যা অন্যান্য সব পুস্তকগুলি থেকে অনুপম​—⁠তাঁর অনুপ্রাণিত বাক্য, বাইবেল। (২ তীমথিয় ৩:​১৬, ১৭) এটি ইতিহাস, ভূগোল ও উদ্ভিদ্‌বিদ্যা সম্পর্কে আলোচনা করার সময়ে যে শুধুমাত্র নির্ভুল তা নয় কিন্তু ভবিষ্যদ্বাণী করার সময়ও নির্ভুল। তাছাড়া, এটি আমাদের এখনই সুখী ও সবচেয়ে সফলকামী জীবনযাপন করতে সাহায্য করে। অবশ্যই, যেমন জাগতিক স্কুলের ছাত্রদের বই ব্যবহার করতে হয়, ঠিক তেমনি ঈশ্বরের মহান পাঠ্যপুস্তকের সাথে আমাদের পরিচিত হতে হবে যদি আমরা যারা “ঈশ্বরের কাছে শিক্ষা পায়” তাদের মত প্রকৃত প্রজ্ঞা প্রদর্শন করতে চাই।​—⁠যোহন ৬:৪৫.

৭. কেন আপনি বলেন যে বাইবেলের সাথে বুদ্ধিদীপ্ত পরিচয় যথেষ্ট নয়?

৭ তবুও, বাইবেলের সাথে বুদ্ধিগতভাবে পরিচিত থাকা ও প্রকৃত প্রজ্ঞা ঐশিক শিক্ষা অনুযায়ী চলা, এক বিষয় নয়। তা প্রদর্শন করতে: সা.শ. সপ্তদশ শতাব্দীতে, কর্নেলিয়াস্‌ ভান ডের স্টেন্‌ নামে একজন ক্যাথলিক, জেসুইট হতে চেয়েছিলেন কিন্তু খর্বকায় হওয়ার জন্য তাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। মান্‌ফ্রেট বার্টেল তার লেখা জেসুইট্‌​—⁠যীশুর সমাজের ইতিহাস ও রূপকথা বইতে বলেছেন: “ভান ডের স্টেন্‌কে সংসদ জানিয়েছিল যে তারা একটি শর্তে প্রয়োজনীয় উচ্চতা উপেক্ষা করতে রাজি আছে, তাকে সম্পূর্ণ বাইবেল মুখস্থ বলতে শিখতে হবে এই উদ্ধত চাহিদা যদি ভান ডের স্টেন্‌ পূর্ণ না করতেন তাহলে এই গল্পটি বলার কোন অর্থ হয় না।” সম্পূর্ণ বাইবেল মনে রাখতে কী প্রচেষ্টারই না প্রয়োজন হয়েছিল! কিন্তু স্পষ্টতই, ঈশ্বরের বাক্য মুখস্থ করার থেকে তা বুঝতে পারা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

৮. ঐশিক শিক্ষা থেকে উপকৃত হতে ও প্রকৃত প্রজ্ঞা প্রদর্শন করতে কী আমাদের সাহায্য করবে?

৮ যদি আমরা ঐশিক শিক্ষা থেকে সত্যই উপকৃত হতে চাই এবং প্রকৃত প্রজ্ঞা প্রদর্শন করতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই শাস্ত্র সম্বন্ধে যথার্থ জ্ঞান নিতে হবে। যিহোবার পবিত্র আত্মা বা তাঁর সক্রিয় শক্তির দ্বারাও আমাদের পরিচালিত হতে হবে। এর মাধ্যমে আমরা অন্তনির্হিত সত্য, “ঈশ্বরের গভীর বিষয় সকল” জানতে পারব। (১ করিন্থীয় ২:১০) সুতরাং, আসুন আমরা অধ্যবসায়সহ যিহোবার দেওয়া মহান পাঠ্যপুস্তকটি পড়ি এবং পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাঁর পরিচালনার জন্য প্রার্থনা করি। হিতোপদেশ ২:​১-৬ পদের সাথে সমতা রেখে আসুন আমরা প্রজ্ঞার প্রতি কর্ণপাত করি, বিচক্ষণতাকে হৃদয়ঙ্গম করি ও বোধশক্তিকে আহ্বান করি। গুপ্তধন খোঁজার মত আমাদের তা করতে হবে আর তখনই আমরা ‘যিহোবার ভয় বুঝতে পারব এবং ঈশ্বরবিষক জ্ঞান প্রাপ্ত হব।’ ঐশিক শিক্ষার কিছু জয় এবং উপকার সম্বন্ধে বিবেচনা করলে তা আমাদের ঈশ্বর-দত্ত প্রজ্ঞার প্রতি উপলব্ধি বৃদ্ধি করবে।

ক্রমশ বোধগম্যতা

৯, ১০. আদিপুস্তক ৩:১৫ পদে যেমন লেখা আছে, ঈশ্বর কী বলেছিলেন এবং সেই সকল বাক্যগুলির উপযুক্ত অর্থ কী?

৯ যিহোবার লোকেদের শাস্ত্র সম্বন্ধে ক্রমশ বোধশক্তি দিয়ে ঐশিক শিক্ষা জয়লাভ করে। উদাহরণস্বরূপ আমরা শিখেছি যে এদনে একটি সর্পের মাধ্যমে শয়তান দিয়াবল কথা বলেছিল এবং মিথ্যা অভিযোগে করেছিল যে ঈশ্বর মিথ্যা বলেন যখন তিনি বলেছিলেন যে নিষিদ্ধ ফলটি খাওয়ার শাস্তি হবে মৃত্যু। কিন্তু, আমরা দেখেছি যে যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি অবাধ্যতা সত্যই মানবজাতির উপর মৃত্যু নিয়ে আসে। (আদিপুস্তক ৩:​১-৬; রোমীয় ৫:১২) তবুও, ঈশ্বর মানবজাতিকে আশা দেন যখন তিনি সর্প, অর্থাৎ শয়তানকে বলেছিলেন: “আমি তোমাতে ও নারীতে, এবং তোমার বংশে ও তাহার বংশে পরস্পর শত্রুতা জন্মাইব; সে তোমার মস্তক চূর্ণ করিবে, এবং তুমি তাহার পাদমূল চূর্ণ করিবে।”​—⁠আদিপুস্তক ৩:১৫.

১০ এই কথাগুলির মধ্যে এক রহস্য গুপ্ত ছিল যা ঐশিক শিক্ষার মাধ্যমে ক্রমশ প্রকাশ করা হয়। যিহোবা তাঁর লোকেদের শিক্ষা দেন যে বাইবেলের মুখ্য বিষয়বস্তু হল যিহোবার সার্বভৌমত্বের যথার্থ প্রতিপাদন করা একটি বীজের মাধ্যমে, যিনি অব্রাহাম ও দায়ূদের বংশধর এবং রাজ্যের শাসনভার পাওয়ার ন্যায় সঙ্গত অধিকার যার আছে। (আদিপুস্তক ২২:​১৫-১৮; ২ শমূয়েল ৭:​১২, ১৩; যিহিষ্কেল ২১:​২৫-২৭) আমাদের মহান শিক্ষক শিখিয়েছেন যে যীশু খ্রীষ্ট হলেন ঈশ্বরের সার্বিক সংগঠন, “নারী”র প্রাথমিক বীজ। (গালাতীয় ৩:১৬) তার উপর শয়তানের সমস্ত পরীক্ষা আসা সত্ত্বেও তিনি বিশ্বস্ততা বজায় রাখেন​—⁠এমনকি মৃত্যু পর্য্যন্তও, যা ছিল বীজের পদমূল চূর্ণ করা। আমরা এও শিখেছি যে মানবজাতির মধ্য থেকে ১,৪৪,০০ জন রাজ্যের সহ-উত্তরাধিকারীরা “পুরাতন সর্প” শয়তানের মস্তক চূর্ণ করায় খ্রীষ্টের সাথে অংশ নেবে। (প্রকাশিত বাক্য ১৪:​১-৪; ২০:২; রোমীয় ১৬:২০; গালাতীয় ৩:২৯; ইফিষীয় ৩:​৪-৬) ঈশ্বরের বাক্যের এই জ্ঞান আমরা কতই না উপলব্ধি করি!

ঈশ্বরের অপূর্ব জ্যোতিতে

১১. কেন বলা যায় যে লোকেদের আত্মিক জ্যোতি এনে ঐশিক শিক্ষা জয় লাভ করে?

১১ মানুষকে আত্মিক জ্যোতিতে নিয়ে এসে ঐশিক শিক্ষা জয়লাভ করে। প্রথম পিতর ২:৯ পদের পরিপূর্ণতাস্বরূপ, অভিষিক্ত খ্রীষ্টানেরা এই অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন: “তোমরা “মনোনীত বংশ, রাজকীয় যাজকবর্গ, পবিত্র জাতি, [ঈশ্বরের] নিজস্ব প্রজাবৃন্দ, যেন তাঁহারই গুণকীর্ত্তন কর,” যিনি তোমাদিগকে অন্ধকার হইতে আপনার আশ্চর্য্য জ্যোতির মধ্যে আহ্বান করিয়াছেন।” বর্তমানে, ঈশ্বর-দত্ত জ্যোতি “বিস্তর লোক” ও উপভোগ করে যারা পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকবে। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯; লূক ২৩:৪৩) ঈশ্বর তাঁর লোকেদের যেমন শিক্ষা দেন, হিতোপদেশ ৪:১৮ পদ সত্য প্রমাণিত হয়: “ধার্ম্মিকদের পথ প্রভাতীয় জ্যোতির ন্যায়, যাহা মধ্যাহ্ন পর্য্যন্ত উত্তরোত্তর দেদীপ্যমান হয়।” ক্রমশ এই শিক্ষা-পদ্ধতি ঐশিক শিক্ষা সম্বন্ধে আমাদের বোধশক্তিকে পরিশোধন করে, ঠিক যেমন ব্যাকরণ, ইতিহাস, অথবা অন্য কোন বিষয় পড়ার সময়ে একজন শিক্ষকের উত্তম সাহায্যের জন্য ছাত্রের অগ্রগতি হয়।

১২, ১৩. যিহোবার লোকেদের ঐশিক শিক্ষা কোন্‌ মতবাদের বিপদ থেকে রক্ষা করেছে?

১২ ঐশিক শিক্ষার আরও একটি জয় হল যে তার নম্র গ্রহণকারীদের “ভূতগণের শিক্ষা” থেকে রক্ষা করে। (১ তীমথিয় ৪:⁠১) অপরপক্ষে, খ্রীষ্টজগতকে দেখুন! আঠারোশো আটাত্তর সালে, রোমান ক্যাথলিক পাদ্রি জন হেন্‌রী নিউম্যান লিখেছিলেন: “মন্দ প্রভাবের দ্বারা কলুষিত হওয়াকে রোধ করতে খ্রীষ্টতত্ত্বের শক্তির উপর নির্ভর করে এবং শয়তানের উপাসনায় ব্যবহৃত বস্তু ও রীতিনীতি যাজকত্বের কাজে প্রতিস্থাপিত করার জন্য . . . প্রাচীনকাল থেকেই গির্জার শাসকবর্গ, প্রয়োজন হলে জনতার বর্তমান আচার-অনুষ্ঠান এবং প্রথা, এমনকি শিক্ষিত শ্রেণীর দর্শনবাদকে গ্রহণ, অনুকরণ অথবা অনুমোদন করে নিতে প্রস্তুত ছিল।” নিউম্যান্‌ আরও লিখেছিলেন যে পবিত্র জল, যাজকীয় পোশাক এবং মূর্তি ইত্যাদি “সমস্তই পৌত্তলিক উৎস থেকে এসেছে এবং গির্জা দ্বারা গৃহীত হওয়ার জন্য পবিত্রিকৃত হয়েছে।” ঐশিক শিক্ষা ঈশ্বরের লোকদের এই ধরনের ধর্মভ্রষ্টতা থেকে রক্ষা করে বলে তারা খুবই কৃতজ্ঞ। সব রকমের শয়তানের উপাসনা থেকে তা দূরে রাখে।​—⁠প্রেরিত ১৯:২০.

১৩ ঐশিক শিক্ষা সর্বপ্রকারের ধর্মীয় ভ্রান্তির উপরে জয়লাভ করে। উদাহরণস্বরূপ, ঈশ্বরের দ্বারা শিক্ষিত ব্যক্তি হিসাবে আমরা ত্রিত্বে বিশ্বাস করি না কিন্তু স্বীকার করি যে যিহোবা হলেন সর্বশক্তিমান, যীশু হলেন তাঁর পুত্র এবং পবিত্র আত্মা হল ঈশ্বরের সক্রিয় শক্তি। আমরা নরকাগ্নিকে ভয় পাই না কারণ আমরা জানি বাইবেলের নরক হল মানবজাতির সাধারণ সমাধিস্থল। আর মিথ্যা ধর্মে বিশ্বাসীরা বলে আত্মা অমর, কিন্তু আমরা জানি যে মৃতেরা কোন কিছু সম্বন্ধেই সচেতন থাকে না। ঐশিক শিক্ষার মাধ্যমে পাওয়া সত্যের তালিকা এইভাবে বাড়তেই থাকবে। মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্য, মহতী বাবিলের কাছে আত্মিক বন্দীত্ব থেকে মুক্ত হওয়া কত বড় আশীর্বাদ!​—⁠যোহন ৮:​৩১, ৩২; প্রকাশিত বাক্য ১৮:​২, ৪, ৫.

১৪. ঈশ্বরের সেবকেরা কেন আত্মিক জ্যোতিতে ক্রমাগত চলতে পারে?

১৪ ধর্মীয় ভ্রান্তির উপরে যেহেতু ঐশিক শিক্ষা জয় লাভ করে তাই এটি ঈশ্বরের দাসদের আধ্যাত্মিক জ্যোতিতে চলতে সক্ষম করে। ফলে, তারা পিছন থেকে বাণীটিকে, এই বলতে শুনতে পায়: “এই পথ। তোমরা এই পথেই চল।” (যিশাইয় ৩০:১২) মিথ্যা যুক্তি থেকেও ঈশ্বরের শিক্ষা রক্ষা করে। “ভাক্ত প্রেরিত”রা যখন করিন্থীয় মণ্ডলীতে সমস্যার সৃষ্টি করছিল, প্রেরিত পৌল লেখেন: “আমাদের যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র মাংসিক নহে, কিন্তু দুর্গসমূহ ভাঙ্গিয়া ফেলিবার জন্য ঈশ্বরের সাক্ষাতে পরাক্রমী। আমরা বিতর্ক সকল এবং ঈশ্বর-জ্ঞানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমস্ত উচ্চ বস্তু ভাঙ্গিয়া ফেলিতেছি, এবং সমুদয় চিন্তাকে বন্দি করিয়া খ্রীষ্টের আজ্ঞাবহ করিতেছি।” (২ করিন্থীয় ১০:​৪, ৫; ১১:​১৩-১৫) মণ্ডলীতে মৃদুতার সাথে নির্দেশ দেওয়ার মাধ্যমে এবং বাইরের লোকেদের সুসমাচার প্রচার করে ঐশিক শিক্ষার বিপরীত যুক্তি গুলি খণ্ডন হয়ে যায়।​—⁠২ তীমথিয় ২:​২৪-২৬.

আত্মা ও সত্যের মাধ্যমে উপাসনা

১৫, ১৬. যিহোবাকে আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করার অর্থ কী?

১৫ রাজ্যের প্রচার কাজ যত এগিয়ে চলেছে, নম্র ব্যক্তিরা কিভাবে ঈশ্বরকে “আত্মায় এবং সত্যে” উপাসনা করতে পারে তা দেখিয়ে দিয়ে ঐশিক শিক্ষা জয়লাভ করছে। শুখর নগরের কাজে যাকোবের কূপে, যীশু এক শমরীয় নারীকে বলেছিলেন যে তিনি এমন জল দিতে পারেন যা অনন্ত জীবন দেয়। শমরীয়দের প্রতি ঈঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন: “তোমরা যাহা জান না, তাহার ভজনা করিতেছ; . . . এমন সময় আসিতেছে, বরং এখনই উপস্থিত, যখন প্রকৃত ভজনাকারীরা আত্মায় ও সত্যে পিতার ভজনা করিবে; কারণ বাস্তবিক পিতা এইরূপ ভজনাকারীদেরই অন্বেষণ করেন।” (যোহন ৪:​৭-১৫, ২১-২৩) তারপর যীশু নিজেকে মশীহ বলে শনাক্ত করেছিলেন।

১৬ কিন্তু কিভাবে আমরা আত্মায় ঈশ্বরের উপাসনা করতে পারি? ঈশ্বরের বাক্যের যথার্থ জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে তাঁর প্রতি প্রেমের জন্য কৃতজ্ঞ-চিত্তে তাঁর বিশুদ্ধ উপাসনা করে। ধর্মীয় মিথ্যাগুলি পরিত্যাগ করে যিহোবার দত্ত মহান পাঠ্যপুস্তকে প্রকাশিত ঐশিক ইচ্ছা পালন করে আমরা তাঁকে সত্যে উপাসনা করতে পারি।

পরীক্ষা ও জগতের সামনে বিজয়ী

১৭. আপনি কিভাবে প্রমাণ করতে পারেন যে ঐশিক শিক্ষা যিহোবার সেবকদের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে সাহায্য করেছে?

১৭ যখন ঈশ্বরের লোকেরা পরীক্ষার সম্মুখীন হন তখন ঐশিক শিক্ষা বারে বারে জয়লাভ করে। এই ঘটনাটি বিবেচনা করুন: সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার সময়ে, যিহোবার সেবকদের তাঁর মহান পুস্তকের প্রতি বিশেষ অন্তর্দৃষ্টির প্রয়োজন হয়েছিল। নভেম্বর ১, ১৯৩৯ সালের প্রহরীদুর্গ-এর প্রবন্ধগুলি খুবই সাহায্যে আসে, যা স্পষ্টভাবে খ্রীষ্টীয় নিরপেক্ষতা সম্পর্কে ঐশিক শিক্ষা সম্বন্ধে বলে। (যোহন ১৭:১৬) অনুরূপে, ১৯৬০ সালের প্রথমদিকে, সরকারি “প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্ত্তৃপক্ষ”দের প্রতি আপেক্ষিক বশ্যতা সম্বন্ধে প্রহরীদুর্গ-এর কিছু প্রবন্ধ সামাজিক অশান্তির সময়ে ঈশ্বরের সেবকদের ঐশিক শিক্ষা অনুযায়ী চলতে সাহায্য করেছিল।​—⁠রোমীয় ১৩:​১-৭; প্রেরিত ৫:২৯.

১৮. সা.শ. দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শতকের নামধারী খ্রীষ্টানেরা অধঃপতিত আমোদ-প্রমোদকে কিভাবে দেখতেন এবং বর্তমানে সেই সম্পর্কে ঐশিক শিক্ষা কী সাহায্য প্রদান করে থাকে?

১৮ ঐশিক শিক্ষা অধঃপতিত আমোদপ্রমোদের মত প্রলোভনের উপরেও জয়লাভ করতে আমাদের সাহায্য করে। সা.শ. দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতকের নামধারী খ্রীষ্টানেরা কী বলেছিলেন তা লক্ষ্য করুন। টার্টুলিয়ান্‌ লেখেন: “সার্কাসের উম্মাদনা, রঙ্গমঞ্চের নির্লজ্জতা এবং বদ্ধভূমির হিংস্রতা সম্বন্ধে আমাদের কিছুই বলবার, দেখবার ও শুনবার প্রয়োজন নেই।” সেইকালের আর একজন লেখক জিজ্ঞাসা করেন: “যেহেতু একজন বিশ্বস্ত খ্রীষ্টান এমনকি মন্দতা সম্বন্ধে চিন্তাও করে না, তাই সে এই সমস্ত বিষয় দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে কী করতে পারে? কামেচ্ছা প্রকাশে সে কেন আনন্দ পাবে?” যদিও এই লেখকেরা প্রথম শতাব্দীর কিছু পরে বাস করতেন, তবুও তারা অধঃপতিত আমোদপ্রমোদকে নিন্দা করেন। বর্তমানে, ঐশিক শিক্ষা আমাদের অশ্লীল, অনৈতিক এবং হিংস্র আমোদ-প্রমোদকে পরিত্যাগ করতে প্রজ্ঞা দেয়।

১৯. জগতকে জয় করতে ঐশিক শিক্ষা আমাদের কিভাবে সাহায্য করে?

১৯ ঐশিক শিক্ষা অনুসারে চললে আমরা জগতকে জয় করতে পারি। হ্যাঁ, আমাদের মহান নির্দেশকের শিক্ষা প্রয়োগ করার মাধ্যমে আমরা শয়তানের ক্ষমতার অধীনে এই জগতের মন্দ প্রভাবকে জয় করি। (২ করিন্থীয় ৪:৪; ১ যোহন ৫:১৯) ইফিষীয় ২:​১-৩ পদ বলে যে যখন আমরা সেই আত্মার অধিপতির ইচ্ছানুসারে চলতাম তখন আমরা অপরাধ ও পাপে মৃত হওয়া সত্ত্বেও ঈশ্বর আমাদের জীবিত করেন। আমরা যিহোবাকে ধন্যবাদ দিই যে ঐশিক শিক্ষা আমাদের জাগতিক আকাঙ্ক্ষা এবং তাঁর ও আমাদের শত্রু​—⁠মহাপ্রতারক, শয়তান দিয়াবলের মনোভাবের উপর বিজয়ী হতে সাহায্য করে।

২০. কোন্‌ প্রশ্নগুলি আরও বিবেচনা করার প্রয়োজন?

২০ তাহলে, অবশ্যই, ঐশিক শিক্ষা বহুরূপে বিজয়ী। প্রকৃতপক্ষে, ঐশিক শিক্ষার সকল বিজয় সম্বন্ধে বলা অসম্ভব বলে মনে হয়। তা সর্বত্র পৃথিবীর লোকেদের প্রভাবিত করে। কিন্তু তা আপনার জন্য কী করছে? ঐশিক শিক্ষা আপনার জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করছে?

আপনি কী শিখেছেন?

▫ প্রকৃত প্রজ্ঞাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়?

▫ আদিপুস্তক ৩:১৫ পদ সম্বন্ধে ঈশ্বর ক্রমশ কী প্রকাশ করেন?

▫আত্মিক বিষয়ে ঐশিক শিক্ষা কিভাবে জয় লাভ করে?

▫ ঈশ্বরকে আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করার অর্থ কী?

▫ পরীক্ষা ও জগতকে জয় করতে ঐশিক শিক্ষা যিহোবার সেবকদের কিভাবে সাহায্য করেছে?

[Pictures on page 10]

যীশু বিশ্বস্ত ছিলেন মৃত্যু পর্যন্ত​—⁠যা ছিল বীজের পাদমূল চূর্ণ হওয়া

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার