ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৪ ৫/১ পৃষ্ঠা ২০-২৬
  • সমুদয় জগতে রাজ্যের ঘোষকেরা সক্রিয়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • সমুদয় জগতে রাজ্যের ঘোষকেরা সক্রিয়
  • ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • জাতিগণের সময়ের শেষের অপেক্ষায়
  • স্থাপিত রাজ্যকে উদ্যোগ-সহকারে ঘোষণা করা
  • সমুদয় জগতে পৌঁছানো
  • যতজন সম্ভব, ততজনের কাছে সুসমাচার নিয়ে যাওয়া
১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৪ ৫/১ পৃষ্ঠা ২০-২৬

সমুদয় জগতে রাজ্যের ঘোষকেরা সক্রিয়

“তোমরা . . . পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।”​—⁠প্রেরিত ১:⁠৮.

১. আমাদের দিনে কোন্‌ সংবাদ যীশুর অনুগামীরা ঘোষণা করবেন বলে তিনি বলেন?

যিহোবা তাঁর পুত্রকে যে কাজের জন্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন তা বর্ণনা করার সময়ে যীশু বলেছিলেন: “আমাকে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করিতে হইবে।” (লূক ৪:৪৩) একইভাবে, তিনি রাজকীয় ক্ষমতা নিয়ে ফিরে আসার পরে, তাঁর শিষ্যেরা পৃথিবীতে যে কাজ করবেন সেই সম্বন্ধে বলার সময়ে তিনি বলেছিলেন: “আর সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।”​—⁠মথি ২৪:১৪.

২. (ক) রাজ্য সংবাদ ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়া কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? (খ) আমাদের সকলের নিজেদের কী প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা উচিত?

২ ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে সংবাদ এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? এত বিস্তৃতভাবে কেন তা প্রচার করতে হবে? কারণ এটি হল মশীহ রাজ্য যা যিহোবার সার্বিক সার্বভৌমত্বকে মহিমান্বিত করবে। (১ করিন্থীয় ১৫:​২৪-২৮) এই রাজ্যের মাধ্যমে, যিহোবা শয়তানের বর্তমান বিধিব্যবস্থার উপরে বিচারাজ্ঞা নিয়ে আসবেন এবং পৃথিবীর সমস্ত জাতিকে আশীর্বাদ করা সম্বন্ধে তাঁর প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করবেন। (আদিপুস্তক ২২:​১৭, ১৮; দানিয়েল ২:৪৪) রাজ্য সম্বন্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে তিনি সেই ব্যক্তিদের খুঁজে পান পরে যাদের তিনি তাঁর পুত্রের সাথে সহ-উত্তরাধিকারী হিসাবে অভিষিক্ত করেছিলেন। রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে, বর্তমানে বিভক্তকরণের একটি কাজও চলছে। (মথি ২৫:​৩১-৩৩) যিহোবার ইচ্ছা যে সর্ব জাতির লোকেদের যেন তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সাবধান করে দেওয়া হয়। তিনি চান যে তারা যেন তাঁর রাজ্যের প্রজা হিসাবে জীবন বেছে নেওয়ার সুযোগ পায়। (যোহন ৩:১৬; প্রেরিত ১৩:৪৭) এই রাজ্য সম্বন্ধে প্রচার করতে আপনি কি সম্পূর্ণরূপে অংশ নিচ্ছেন?

জাতিগণের সময়ের শেষের অপেক্ষায়

৩. (ক) বাইবেল অধ্যয়নের দলগুলির গঠন করতে সি.টি. রাসেল তার প্রারম্ভিক যাত্রায় উপযুক্তরূপে কোন্‌ বিষয়টি তুলে ধরেন? (খ) ঈশ্বরের রাজ্য তাদের জীবনে কোন্‌ স্থান গ্রহণ করবে সেই সম্বন্ধে সেই প্রাথমিক বাইবেল ছাত্রেরা কী উপলব্ধি করেছিলেন?

৩ আঠারোশো আশি সালে, প্রহরীদুর্গ পত্রিকার প্রথম সম্পাদক চার্লস্‌ টেজ্‌ রাসেল, বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য বিভিন্ন দলগুলি তৈরি করতে উৎসাহ দান করার উদ্দেশ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে যাত্রা করেছিলেন। উপযুক্তরূপেই, যে বিষয়ে তিনি কথা বলেছিলেন তা হল “ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধীয় বিষয়সকল।” প্রহরীদুর্গের প্রথম সংখ্যাগুলিতে যেমন দেখানো হয়েছিল, বাইবেল ছাত্রেরা (যিহোবার সাক্ষীদের তখনকার নাম) বুঝতে পেরেছিলেন যে ঈশ্বরের রাজ্যের অংশ হওয়ার যোগ্য হতে হলে, রাজ্যকে তাদের জীবনের প্রধান আগ্রহ করে তুলতে হবে, আনন্দের সাথে তাদের জীবন, দক্ষতা এবং অর্থ রাজ্যের কাজে ব্যয় করতে হবে। (মথি ১৩:​৪৪-৪৬) তাদের দায়িত্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল অন্যদের ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার জানানো। (যিশাইয় ৬১:​১, ২) উনিশশো চোদ্দ সালে জাতিগণের সময় শেষ হওয়ার আগে কতটা ব্যাপকভাবে তারা তা করেছিল?

৪. অল্প সংখ্যক বাইবেল ছাত্রের দলটি ১৯১৪ সালের পূর্বে কতটা বাইবেল সাহিত্য বিতরণ করেছিলেন

৪ বাইবেল ছাত্রদের সংখ্যা ১৮৭০ সাল থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে অপেক্ষাকৃত অল্প ছিল। উনিশশো চোদ্দ সালে, মাত্র ৫,১০০ জন সক্রিয়ভাবে জনসাধারণের কাছে সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন। কিন্তু সেই সাক্ষ্য ছিল অসাধারণ! প্রথম প্রহরীদুর্গ প্রকাশিত হওয়ার মাত্র দুই বছর পরে, ১৮৮১ সালে ভাইয়েরা ১৬২ পৃষ্ঠার ফুড ফর থিংকিং ক্রিশ্‌চানস্‌ বইটি বিতরণ করার ভার গ্রহণ করেছিলেন। কয়েক মাসের মধ্যেই তারা ১,২০০,০০০টি কপি বিতরণ করেছিলেন। কয়েক বছরের মধ্যে, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ট্র্যাক্ট বহু ভাষায় বিতরণ করা হয়েছিল।

৫. কোল্‌পোর্টার কারা ছিল এবং কি ধরনের উদ্দীপনা তারা দেখিয়েছিলেন?

৫ এছাড়াও ১৮৮১ সাল নাগাদ, কিছু ব্যক্তি কোল্‌পোর্টার সুসমাচার প্রচারক হিসাবে তাদের পরিচর্যা শুরু করে। এরা ছিলেন বর্তমানের অগ্রগামীদের (পূর্ণ-সময়ের প্রচারক) অগ্রদূত। কিছু কোল্‌পোর্টার পায়ে হেঁটে অথবা সাইকেলে চড়ে, তারা যে দেশে থাকতেন, সেখানকার সর্বত্র ব্যক্তিগতভাবে প্রচার করেছিলেন। অন্যেরা বিদেশে যাত্রা করেছিলেন এবং ফিন্‌ল্যান্ড, বার্বাডোস, বার্মা (এখন যাকে মায়মার বলা হয়), ইত্যাদি দেশে সুসমাচার প্রথম নিয়ে গিয়েছিলেন। যীশু খ্রীষ্ট এবং তাঁর প্রেরিতদের মত তারা মিশনারী উদ্যোগ দেখিয়েছিলেন।​—⁠লূক ৪:৪৩; রোমীয় ১৫:​২৩-২৫.

৬. (ক) বাইবেলের সত্য প্রচার করতে ভাই রাসেলের ভ্রমণ কত ব্যাপক ছিল? (খ) জাতিগণের সময় শেষ হওয়ার পূর্বে বিদেশী ক্ষেত্রগুলিতেও আরও বেশি করে সুসমাচার প্রচার করতে কী করা হয়েছিল?

৬ সত্য প্রচার করতে ভাই রাসেল নিজেও অনেক ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি বার বার কানাডাতে গিয়েছিলেন; পানামা, জামাইকা এবং কিউবাতে প্রচার করেছিলেন; ইউরোপে ১২ বার গিয়েছিলেন; এবং সুসমাচার প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্বপরিক্রমা করেছিলেন। সুসমাচার প্রচার করা শুরু করতে এবং তাতে নেতৃত্ব নিতে, তিনি অন্যদেরও বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। এডল্ফ্‌ ওয়েবারকে ১৮৯০ দশকের মাঝামাঝি ইউরোপে পাঠানো হয়েছিল এবং তার পরিচর্যা সুইজারল্যান্ড থেকে ফ্রান্স্‌, ইটালি, জার্মানি এবং বেল্‌জিয়ামে বিস্তৃত হয়েছিল। ই. জে. কাওয়ার্ডকে ক্যারিবিয়ান্‌ অঞ্চলে পাঠানো হয়েছিল। উনিশশো বারো সালে রবার্ট হলিস্টারকে প্রাচ্যদেশগুলিতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে, দশটি ভাষায় বিশেষ ট্র্যাক্ট ছাপানো হয়েছিল এবং ভারত, চীন জাপান এবং কোরিয়ার সর্বত্র স্থানীয় বিতরকদের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ট্র্যাক্ট বিতরণ করা হয়েছিল। আপনি যদি সেই সময়ে বাস করতেন, আপনার সমাজে এবং তারও বাইরে সুসমাচার নিয়ে যেতে আপনার হৃদয় কি আপনাকে উদ্বুদ্ধ করে তুলত?

৭. (ক) সাক্ষ্যদানের তীব্রতা বৃদ্ধি করতে সংবাদপত্রগুলি কিভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল? (খ) “ফোট-ড্রামা অফ্‌ ক্রিয়েশন” কী ছিল এবং মাত্র এক বছরে কতজন লোক এটি দেখেছিল?

৭ জাতিগণের সময়ের শেষ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে, ভাই রাসেলের বক্তৃতাগুলি বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত করা হত। সেগুলিতে, বিশেষ জোর দেওয়া হত ঈশ্বরের উদ্দেশ্য ও সেগুলি পূর্ণ হওয়ার নিশ্চয়তার উপর, ১৯১৪ সালের উপরে নয়। একসঙ্গে প্রায় ২,০০০টি সংবাদপত্র ১,৫০,০০,০০০ জন পাঠকের কাছে নিয়মিত এই বক্তৃতা পৌঁছে দিত। তারপর, ১৯১৪ সাল শুরু হওয়ার সাথে সংগঠন জনসাধারণের কাছে “ফোটো-ড্রামা অফ্‌ ক্রিয়েশন” দেখাতে শুরু করে। চারটি ২-ঘন্টার উপস্থাপনায়, এটি সৃষ্টি থেকে হাজার বছর সম্বন্ধে বাইবেলের সত্যগুলি প্রদর্শন করে। মাত্র এক বছরের মধ্যে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ জিল্যান্ডে মোট ৯০ লক্ষেরও বেশি দর্শক তা দেখেছিল।

৮. বাইবেল ছাত্রেরা ১৯১৪ সালের মধ্যে কতগুলি দেশে সুসমাচার পৌঁছে দিয়েছিল?

৮ প্রাপ্ত রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯১৪ সালের শেষের দিকে, উদ্যোগী প্রচারকদের এই দল, ৬৮টি দেশে ঈশ্বরের রাজ্যের ঘোষণা নিয়ে গিয়েছিল।a কিন্তু সেটি ছিল সবে মাত্র শুরু!

স্থাপিত রাজ্যকে উদ্যোগ-সহকারে ঘোষণা করা

৯. সিডার পয়েন্টে সম্মেলনগুলিতে, কিভাবে রাজ্যের সাক্ষ্যদানের কাজে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছিল?

৯ বাইবেল ছাত্রেরা ১৯১৯ সালে যখন ওহাইও-এর সিডার পয়েন্টে একত্রিত হয়েছিলেন, ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির তৎকালীন সভাপতি ভাই জে. এফ. রাদা- রফোর্ড বলেছিলেন: “অতীতে এবং বর্তমানে আমাদের জীবিকা হল মশীহের আগত গৌরবময় রাজ্যের ঘোষণা করা।” উনিশশো বাইশ সালে, সিডার পয়েন্টে দ্বিতীয় সম্মেলনে, ভাই রাদারর্ফোড এই বিষয়ের উপরে জোর দিয়েছিলেন যে ১৯১৪ সালে জাতিগণের সময় শেষ হওয়ার পর, ‘গৌরবময় রাজা মহা-ক্ষমতা ধারণ করে শাসন শুরু করেছেন।’ তারপর তিনি স্পষ্টভাবে শ্রোতাদের সামনে বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন: “আপনারা কি বিশ্বাস করেন যে গৌরবময় রাজা শাসন শুরু করেছেন? যদি করেন, তাহলে ক্ষেত্রে ফিরে চলুন, হে সর্বমহান ঈশ্বরের সন্তানগণ! . . . বহুদূর পর্যন্ত এই বার্তা ঘোষণা করুন। জগতকে জানতেই হবে যে যিহোবা হলেন ঈশ্বর এবং যীশু খ্রীষ্ট হলেন রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু। এই দিনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেখুন, রাজা শাসন করছেন! আপনারা হলেন তাঁর প্রচারক।”

১০, ১১. লোকেদের কাছে রাজ্যের সত্য পৌঁছাতে কিভাবে রেডিও, লাউডস্পীকার লাগানো গাড়ি ও সাইনবোর্ড কার্যকারীভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল?

১০ সিডার পয়েন্ট সম্মেলনগুলির পরে সত্তরেরও বেশি বছর কেটে গেছে​—⁠তাঁর পুত্রের মশীহ শাসনের মাধ্যমে যিহোবা তাঁর সার্বভৌমত্বকে প্রকাশ করার পর প্রায় ৮০ বছর অতিবাহিত হয়েছে। ঈশ্বরের বাক্যে দেওয়া কাজ যিহোবার সাক্ষীরা প্রকৃতপক্ষে কতটা সম্পাদন করতে পেরেছে? ব্যক্তিগতভাবে আপনি তাতে কতটা অংশ নিচ্ছেন?

১১ উনিশশো কুড়ি সালের প্রথম দিকে, রাজ্যের বার্তাকে ব্যাপকভাবে প্রচার করার জন্য রেডিওর সাহায্য পাওয়া গিয়েছিল। উনিশশো তিরিশের দশকে, রেডিও নেটওয়ার্ক, ধারাবাহিক বেতারবার্তা প্রচার এবং টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে, এই জগতের আশা হিসাবে রাজ্য সম্বন্ধে সম্মেলনগুলিতে দেওয়া বক্তৃতা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সর্বসাধারণের এলাকাগুলিতে বাইবেল সম্বন্ধে রেকর্ড করা বক্তৃতা শোনাবার জন্য লাউডস্পীকার লাগানো গাড়ি ব্যবহার করা হত। তারপর, ১৯৩৬ সালে স্কট্‌ল্যান্ডের গ্লাস্‌গোতে, জনসাধারণের বক্তৃতার ঘোষণা করার জন্য আমাদের ভাইয়েরা গলায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ব্যবসায়িক অঞ্চলগুলির রাস্তায় হাঁটতেন। যখন আমাদের সংখ্যা অল্প ছিল, তখন লোকেদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার এই সমস্তই ছিল কার্যকারী উপায়।

১২. শাস্ত্র যেমন দেখায়, ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষ্য দিতে সবচেয়ে কার্যকারী উপায়টি কী?

১২ অবশ্যই, শাস্ত্রে স্পষ্টভাবে জানানো আছে যে খ্রীষ্টান হিসাবে সাক্ষ্য দেওয়ার ব্যক্তিগত দায়িত্ব আমাদের আছে। সংবাদপত্রের প্রবন্ধ এবং রেডিও বেতারবার্তাকে আমাদের হয়ে কাজ করতে দিতে আমরা পারি না। পুরুষ, স্ত্রী এবং যুবক-যুবতীরা​—⁠হাজার হাজার বিশ্বস্ত খ্রীষ্টান এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। ফলস্বরূপ, ঘরে-ঘরে প্রচার কাজ যিহোবার সাক্ষীদের শনাক্তিকরণ চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।​—⁠প্রেরিত ৫:​৪২; ২০:২০.

সমুদয় জগতে পৌঁছানো

১৩, ১৪. (ক) কেন কিছু সাক্ষী পরিচর্যা করতে অন্য শহরগুলিতে, এমনকি অন্য দেশগুলিতে চলে যায়? (খ) লোকেদের প্রতি প্রেমময় চিন্তা কিভাবে জন্মভূমিতে সুসমাচার ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছিল?

১৩ রাজ্যের বার্তা যে সমুদয় জগতে প্রচার করতে হবে তা জেনে, কিছু যিহোবার সাক্ষী গুরুত্বসহকারে চিন্তা করেছেন যে তাদের নিজস্ব এলাকার বাইরেও কিভাবে তারা ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য করতে পারেন।

১৪ অনেকে তাদের জন্মভূমি ছেড়ে বাইরে আসার পর সত্য শিখেছেন। যদিও আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য অনেকে চলে এসেছিলেন, কিন্তু তারা আরও বেশি মূল্যবান কিছু পেয়ে, তাদের জন্মভূমি অথবা জনসমাজে ফিরে এসে সেখানে সত্য জানানোর প্রয়োজন বোধ করেছেন। সুতরাং, এই শতাব্দীর প্রথম দিকে সুসমাচার স্ক্যান্‌ডিনেভিয়া, গ্রীস, ইটালি, পূর্ব ইউরোপের দেশগুলিতে এবং আরো অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিল। এমনকি এখনও, ১৯৯০এর দশকে, একইভাবে রাজ্যের বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে।

১৫. উনিশশো কুড়ি ও ত্রিশের দশকে কিছু ব্যক্তি কী সম্পাদন করেছিলেন যাদের মনোভাব ছিল যিশাইয় ৬:৮ পদের মতো?

১৫ অনেকে ঈশ্বরের বাক্য তাদের জীবনে প্রয়োগ করে, যে দেশগুলিতে তারা আগে কখনও বাস করেনি সেখানে কাজ করার জন্য নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন। ডব্লু. আর্‌. ব্রাউন (যাকে প্রায়ই “বাইবেল ব্রাউন” বলা হত) এদের মধ্যে একজন ছিলেন। প্রচার কাজ বাড়িয়ে তুলতে, ১৯২৩ সালে তিনি ত্রিনিদাদ থেকে পশ্চিম আফ্রিকায় গিয়েছিলেন। উনিশশো তিরিশের দশকে, ফ্র্যাঙ্ক ও গ্রে স্মিথ, রবার্ট নিস্‌বেট এবং ডেভিড নর্মান আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে রাজ্যের বার্তা নিয়ে গিয়েছিলেন। অন্যেরা দক্ষিণ আমেরিকার ক্ষেত্রকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেছিলেন। উনিশশো কুড়ি সালের প্রথম দিকে, কানাডার জর্জ ইয়াং আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, বলিভিয়া, চিলি এবং পেরুতে কাজ করেছিলেন। য়ুআন মুন্‌ইজ্‌, যিনি স্পেনে পরিচর্যা করেছিলেন, তিনি আর্জেন্টিনা, চিলি, প্যারাগুয়ে এবং উরুগুয়েতেও গিয়েছিলেন। এরা সকলেই যিশাইয় ৬:৮ পদে দেওয়া মনোভাব দেখিয়েছিলেন: “এই আমি, আমাকে পাঠাও।”

১৬. যুদ্ধের আগের বছরগুলিতে মূল কেন্দ্রে ছাড়া আর কোথায় সাক্ষ্য দান করা হয়েছিল?

১৬ এমনকি দূরবর্তী এলাকাতে ও সুসমাচার প্রচার ছড়িয়ে পড়ছিল। সাক্ষীরা জাহাজে করে নিউফাউন্ডল্যান্ডের বহির বন্দরগুলিতে, সুমেরু অঞ্চলের নরওয়ে উপকূলে ও প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপগুলিতে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বন্দরগুলিতে যেতে শুরু করেছিলেন।

১৭. (ক) সাক্ষীরা ১৯৩৫ সালের মধ্যে কতগুলি দেশে সাক্ষ্য দান করে? (খ) কেন সেই সময়েই প্রচার কাজ শেষ হয়নি?

১৭ আশ্চর্যজনকভাবে, ১৯৩৫ সালের মধ্যে, সাক্ষীরা ১১৫টি দেশে প্রচার-কাজে ব্যস্ত ছিলেন আর ইতিমধ্যেই তারা আরও ৩৪টি দেশে হয় সাক্ষ্যদান অভিযানের মাধ্যমে অথবা ডাকযোগে সাহিত্য পাঠিয়ে সুসমাচার পৌঁছে দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ তখনও শেষ হয়নি। সেই বছর, এক “বিরাট জনতা,” যারা যিহোবার নতুন জগতে পরিত্রাণ পাবে, তাদের একত্রিত করার তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে তিনি তাদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন। (প্রকাশিত বাক্য ৭:​৯, ১০, ১৪) আরও অনেক সাক্ষ্য দেওয়া বাকি ছিল!

১৮. গিলিয়াড স্কুল ও পরিচারক প্রশিক্ষণ স্কুল রাজ্যের ঘোষণা কাজে কী ভূমিকা পালন করে?

১৮ পৃথিবী যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল এবং বহু দেশে যখন হয় যিহোবার সাক্ষীদের অথবা তাদের বইপত্র নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তখন ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিকরূপে রাজ্য ঘোষণার আরও বৃহৎ কাজ সম্পাদন করতে সম্ভাব্য মিশনারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ওয়াচ টাওয়ার বাইবেল স্কুল অফ গিলিয়াড শুরু করা হয়েছিল। আজ পর্যন্ত, গিলিয়াড স্নাতকেরা ২০০টির বেশি দেশে কাজ করেছেন। তারা শুধুমাত্র বইপত্র দিয়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার থেকেও বেশি কিছু করেছিলেন। তারা বাইবেল অধ্যয়ন করিয়েছেন, মণ্ডলী গড়ে তুলেছেন এবং ঐশিক দায়িত্ব গ্রহণ করতে লোকেদের শিখিয়েছেন। সম্প্রতি, এই কাজের জরুরী প্রয়োজন মেটাতে, প্রাচীন এবং পরিচারক দাসেরা পরিচারক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়ে ছটি মহাদেশে সাহায্য করেছেন। আরও বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে।​—⁠তুলনা করুন ২ তীমথিয় ২:⁠২.

১৯. যেখানে আরও বেশি প্রয়োজন সেখানে পরিচর্যা করা আমন্ত্রণে যিহোবার দাসেরা কতটা সাড়া দিয়েছিল?

১৯ অন্যেরা কি যেখানে কাজ করা হয়নি সেইসব জায়গার যত্ন নিতে সাহায্য করতে পারে? উনিশশো সাতান্ন সালে, সারা জগতে সম্মেলনের সময়ে, যিহোবার পরিপক্ব সাক্ষীদের​—⁠একা এবং পরিবারগতভাবে​—⁠উৎসাহ দেওয়া হয় যেখানে আরও বেশি প্রয়োজন সেখানে গিয়ে বসবাস শুরু করতে এবং পরিচর্যা চালিয়ে যেতে। এই আমন্ত্রণটি ঠিক প্রেরিত পৌলকে ঈশ্বর যে আমন্ত্রণ দিয়েছিলেন, তার মত ছিল; যিনি দর্শনের মাধ্যমে দেখেছিলেন যে একজন ব্যক্তি তার কাছে আবেদন জানাচ্ছে: “মাকিদনিয়াতে আসিয়া আমাদের উপকার করুন।” (প্রেরিত ১৬:​৯, ১০) উনিশশো পঞ্চাশের দশকেই অনেকে তাদের বসবাসের স্থান পরিবর্তন করেছিলেন, অন্যেরা পরে করেছিলেন। প্রায় এক হাজার লোক আয়ারল্যান্ড এবং কলম্বিয়াতে গিয়েছিলেন; আরও শত শত লোক অন্যান্য জায়গায় গিয়েছিলেন। আরও হাজার হাজার লোক তাদের নিজেদের দেশেই যেখানে প্রয়োজন বেশি ছিল, সেখানে গিয়েছিলেন।​—⁠গীতসংহিতা ১১০:⁠৩.

২০. (ক) মথি ২৪:১৪ পদে যীশুর ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ করতে ১৯৩৫ সাল থেকে কী সম্পাদিত হয়েছে? (খ) বিগত কয়েক বছরে কিভাবে কাজ সত্বর হয়েছে?

২০ তাঁর লোকেদের উপরে যিহোবার আশীর্বাদের জন্য, রাজ্যের প্রচার কাজ অসাধারণ গতিতে এগিয়ে চলেছে। উনিশশো পঁয়ত্রিশ সাল থেকে প্রকাশকদের সংখ্যা প্রায় আশি গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রকাশকদের বৃদ্ধির হারের তুলনায় অগ্রগামীদের বৃদ্ধির হার ছিল ৬০ শতাংশ বেশি। গৃহ বাইবেল অধ্যয়নের ব্যবস্থা শুরু করা হয়েছিল ১৯৩০এর দশকে। এখন গড়ে প্রায় ৪৫ লক্ষেরও অধিক অধ্যয়ন প্রতি মাসে করা হয়। উনিশশো পঁয়ত্রিশ থেকে ১,৫০০ কোটিরও বেশি ঘন্টা রাজ্য ঘোষণার কাজে ব্যয় করা হয়েছে। এখন, ২৩১টি দেশে নিয়মিত সুসমাচার প্রচার করা হচ্ছে। পূর্ব ইউরোপ এবং আফ্রিকার ক্ষেত্রগুলিতে আরও মুক্তভাবে প্রচার করা সম্ভব হওয়ার জন্য, জনসাধারণের সামনে রাজ্যের বার্তাকে বিশিষ্ট করে তুলে ধরার জন্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন ব্যবহার করা হয়েছে। বহুকাল আগে, যিশাইয় ৬০:২২ পদে যিহোবা যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই অনুযায়ী তিনি অবশ্যই ‘যথাকালে এই কাজ সম্পন্ন করতে সত্বর হয়েছেন।’ এই কাজে অংশ নেওয়া আমাদের পক্ষে কত মহান সুযোগ!

যতজন সম্ভব, ততজনের কাছে সুসমাচার নিয়ে যাওয়া

২১, ২২. যেখানেই আমরা পরিচর্যা করি না কেন আরও কার্যকারী সাক্ষী হতে ব্যক্তিগতভাবে আমরা কী করতে পারি?

২১ প্রভু এখনও বলেননি যে কাজ হয়ে গেছে। এখনও হাজার হাজার লোক সত্য উপাসনা গ্রহণ করছে। সুতরাং, এই প্রশ্ন উত্থাপিত হয় যে, যিহোবা তাঁর ধৈর্যবশত এই কাজের জন্য যে সময় দিয়েছেন, আমরা কি তার সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করছি?​—⁠২ পিতর ৩:১৫.

২২ সকলেই কম-কাজ করা এলাকায় গিয়ে বসবাস করতে পারেন না। কিন্তু আপনার সামনে যে সুযোগ রয়েছে তা কি আপনি পূর্ণরূপে গ্রহণ করছেন? আপনি কি সহকর্মীদের কাছে সাক্ষ্য দেন? শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সহপাঠীদের কাছে? আপনার এলাকার পরিস্থিতিতে পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে আপনিও কি মানিয়ে নিয়েছেন? কাজের সময়ের পরিবর্তন হওয়ার জন্য, দিনের বেলা যদি খুব অল্প লোকই ঘরে থাকে, তাহলে আপনার কার্যসূচী পরিবর্তন করে আপনি কি বিকালে তাদের কাছে গেছেন? যে আবাসনগুলিতে অপরিচিতদের ঢুকতে দেওয়া হয় না, সেখানে কি টেলিফোন করে অথবা চিঠি লিখে আপনি সাক্ষ্য দিচ্ছেন? যেখানে আগ্রহ দেখানো হচ্ছে, আপনি কি সেখানে ফিরে যাচ্ছেন এবং গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন করার প্রস্তাব করছেন? আপনি কি সম্পূর্ণরূপে আপনার পরিচর্যা সম্পন্ন করছেন?​—⁠তুলনা করুন প্রেরিত ২০:২১; ২ তীমথিয় ৪:⁠৫.

২৩. আমরা তাঁর পরিচর্যায় কী করছি যিহোবা তা লক্ষ্য করার সাথে, আমাদের ক্ষেত্রেও কী স্পষ্ট হওয়া উচিত?

২৩ আমাদের মধ্যে সকলে যেন পরিচর্যা এমনভাবে করি যা স্পষ্টরূপ যিহোবাকে দেখাবে যে এই উল্লেখযোগ্য সময়ে তাঁর সাক্ষী হওয়ার মহান সুযোগকে আমরা প্রকৃত উপলব্ধি করি। যিহোবা যখন এই নীতিভ্রষ্ট পুরনো বিধি-ব্যবস্থার প্রতি বিচারাজ্ঞা নিয়ে আসবেন এবং যীশু খ্রীষ্টের হাজার বছরের গৌরবময় শাসন শুরু করবেন, সেই সব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার সুযোগ আমাদের যেন হয়!

[পাদটীকাগুলো]

a পৃথিবী ১৯৯০ দশকের প্রথম দিকে যেভাবে বিভক্ত ছিল, সেই হিসাব অনুযায়ী।

পুনরালোচনায়

▫ রাজ্যের সংবাদ প্রচার করা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

▫ উনিশশো চোদ্দ সাল পর্যন্ত কতদূর সুসমাচার প্রচারিত হয়েছিল?

▫ রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কত ব্যাপকভাবে সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছে?

▫ পরিচর্যায় আমাদের অংশকে কী আরও ফলপ্রদ করতে পারে?

[২২, ২৩ পৃষ্ঠার বাক্স]

যিহোবার সাক্ষীবৃন্দ ঈশ্বরের রাজ্যের ঘোষণাকারী

সারা পৃথিবীতে, ১৯৯৩-৯৪ সালের শত শত সম্মেলনে একটি নতুন বই, যিহোবার সাক্ষীবৃন্দ​—⁠ঈশ্বরের রাজ্যের ঘোষণাকারী প্রকাশিত হওয়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। এই বইটি যিহোবার সাক্ষীদের সবচেয়ে তথ্যবহুল, বিশ্লেষণমূলক ইতিহাস। বইটিতে ৭৫২ পৃষ্ঠা আছে, সুন্দরভাবে চিত্রিত, ৯৬ দেশ থেকে ১০০০টিরও বেশি চিত্র তাতে আছে। ইতিমধ্যেই, ১৯৯৩ সালের শেষ অবধি ২৫টি বিভিন্ন ভাষায় এটি প্রকাশিত হয়েছিল এবং আরও অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ হচ্ছে।

কী এই বইটিকে সময়োপযোগী করে তুলেছে? সম্প্রতি বছরগুলিতে সারা পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ লোকেরা যিহোবার সাক্ষী হয়েছে। তাদের সকলেরই যে সংগঠনের সঙ্গে তারা যুক্ত, তার ইতিহাস ভালভাবে জানা উচিত। এছাড়াও, তাদের প্রচার ও উপাসনা জগতের বিভিন্ন জাতি ও বর্ণের মধ্যে পরিব্যাপ্ত হয়েছে এবং আর্থিক ও শিক্ষাসংক্রান্ত সকল স্তরে যুবক ও বৃদ্ধেরা, সকলে তা গ্রহণ করেছে। ফলে, যা ঘটছে তা দেখে অনেকেরই মনে সাক্ষীদের সম্বন্ধে প্রশ্ন জাগে​—⁠কেবলমাত্র তাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে নয়, কিন্তু তাদের উৎস, তাদের ইতিহাস, তাদের সংগঠন, তাদের উদ্দেশ্য সম্বন্ধেও। অন্যেরা তাদের সম্বন্ধে লিখেছে, যদিও সব সময় নিরপেক্ষভাবে নয়। কিন্তু যিহোবার সাক্ষীদের আধুনিক ইতিহাস সম্বন্ধে তাদের নিজেদের থেকে অন্য কেউ বেশি ভাল জানে না। এই বইয়ের সম্পাদকেরা সেই ইতিহাসকে বাস্তব ও অকপট ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এটি করে, তারা খ্রীষ্টের উপস্থিতির চিহ্নের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের পরিপূর্ণতা লিপিবদ্ধ করেছেন, যা মথি ২৪:১৪ পদে দেওয়া আছে এবং তারা এমন বিশদভাবে তা করেছে, যা একমাত্র এই কাজে জড়িত ব্যক্তিরাই করতে পারেন।

বইটি সাতটি প্রধান অংশে বিভক্ত:

অংশ ১: এই অংশে যিহোবার সাক্ষীদের ঐতিহাসিক উৎসকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এর মধ্যে, ১৮৭০ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তাদের আধুনিক-দিনের সংক্ষিপ্ত ও তথ্যবহুল ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

অংশ ২: এখানে ধাপে ধাপে বিভিন্ন বিশ্বাসের অগ্রগতির একটি পুনরালোচনা প্রকাশিত হয়েছে যা অন্যান্য ধর্মীয় দলদের থেকে যিহোবার সাক্ষীদের পৃথক করে।

অংশ ৩: এই অংশে তাদের সাংগঠনিক কাঠামোর অগ্রগতিকে পরীক্ষা করা হয়েছে। এখানে তাদের মণ্ডলীর সভাগুলি ও সম্মেলনগুলি, আরও তাদের কিংডম হল, বড় বড় অধিবেশন হল ও বাইবেল সাহিত্যাদি প্রকাশের সুযোগসুবিধাগুলি নির্মাণ সম্বন্ধে আগ্রহজনক বিষয় বর্ণনা করেছে। যিহোবার সাক্ষীরা যে উদ্যোগের সাথে ঈশ্বরের রাজ্যকে ঘোষণা করে এবং কোন দুর্যোগের সময়ে অন্যদের প্রতি যত্ন নিয়ে যে প্রেম প্রকাশ করে, এখানে তা জ্ঞাপন করা হয়েছে।

অংশ ৪: এই অংশে আপনি কিভাবে ঈশ্বরের রাজ্য জগতের অধিকাংশ দেশ এবং দূরবর্তী দ্বীপগুলিতে পৌঁছানো হয়েছে তার রোমাঞ্চকর বর্ণনা পাবেন। কল্পনা করুন​—⁠১৯১৪ সালে ৪৩টি দেশে কিন্তু ১৯৯২ সালে ২২৯টি দেশে প্রচার করা হয়! এই পৃথিবীব্যাপী সম্প্রসারণের কাজে যারা অংশ নিয়েছে তাদের অভিজ্ঞতাগুলি সত্যই শিহরণ জাগায়।

অংশ ৫: রাজ্য ঘোষণা করার এই সকল কাজের জন্য, ২০০টিও বেশি ভাষায় বাইবেল ও সেই সঙ্গে বাইবেল সাহিত্যাদি প্রকাশিত করার আন্তর্জাতিক সুযোগসুবিধাগুলির অগ্রগতি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এখানে আপনি তাদের কাজের সেই বিষয় সম্বন্ধে শিখবেন।

অংশ ৬: সাক্ষীরা পরীক্ষাও সম্মুখীন হয়​—⁠কেউ কেউ অসিদ্ধতার জন্য, অন্যেরা ভাইয়েদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য এবং এমনকি আরও কিছুজন প্রত্যক্ষ তাড়নার জন্য। ঈশ্বরের বাক্য তা ঘটবে বলে সাবধান করে দিয়েছিল। (লূক ১৭:১; ২ তীমথিয় ৩:১২; ১ পিতর ৪:১২; ২ পিতর ২:​১, ২) বইয়ের এই অংশটি প্রাণবন্তভাবে বর্ণনা করেছে আসলে কী ঘটেছিল এবং কিভাবে বিশ্বাস, যিহোবার সাক্ষীদের সেগুলি জয় করতে সক্ষম করেছিল।

অংশ ৭: যিহোবার সাক্ষীরা কেন দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত যে তারা যে সংগঠনের অংশ তা ঈশ্বরের দ্বারা পরিচালিত, উপসংহারে বইটি সেটি আলোচনা করেছে। কেন তারা সাংগঠনিকভাবে ও ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক থাকার প্রয়োজন মনে করে এটি তাও আলোচনা করেছে।

এই বিষয়গুলি ছাড়া এই আকর্ষণীয়ভাবে প্রস্তুত বইটিতে, ৫০-পৃষ্ঠাব্যাপী রঙিন ছবির সাহায্যে এক সুন্দর ও তথ্যবহুল অংশ সারা জগতে যিহোবার সাক্ষীদের দ্বারা ব্যবহৃত বিশ্ব প্রধান দপ্তর ও শাখাগুলি দেখানো হয়েছে।

আপনি যদি ইতিমধ্যে তা না পড়ে থাকেন, তাহলে আপনি এই অপূর্ব প্রকাশনাটির একটি কপি নিয়ে ও পড়ে অবশ্যই উপকৃত হবেন।

যারা বইটিকে পড়েছেন তাদের কিছুজনের মন্তব্য

যারা ইতিমধ্যেই এই বইটি পড়েছেন তাদের প্রতিক্রিয়া কী? এখানে কিছু উল্লেখ করা হল:

“অপূর্ব, জীবন্ত বিবৃতি যিহোবার সাক্ষীবৃন্দ​—⁠ঈশ্বরের রাজ্যের ঘোষণাকারী বইটি আমি সবেমাত্র পড়া শেষ করেছি। একমাত্র একটি সংগঠনই সততা ও নম্রতার সাথে সত্যকে এত স্পষ্টভাবে, সাহসের সাথে ও সূক্ষ্মভাবে লিখতে পারে।”

“এটির সততা ও অকপটতার জন্য এটি প্রেরিতদের কার্য্য-বিবরণীর মত পড়তে লাগে।”

“কী এক আশ্চর্যজনক নতুন প্রকাশন! . . . এটি হল একটি সেরা ঐতিহাসিক গ্রন্থ।”

বইটির অর্ধেক পড়ার পর, এক ব্যক্তি লেখেন: “আমি বিস্মিত, হতবাক্‌ হয়ে পড়েছিলাম এবং আমার চোখে প্রায় জল এসে গিয়েছিল। . . . আমার সারা জীবনে আর কোন সাহিত্য আমার মনে এত বেশি দাগ কাটেনি।”

“প্রতিটি মুহূর্তে যখন আমি ভাবি কিভাবে এই বইটি যুবক-যুবতীদের ও এমনকি বর্তমানে যে নতুন ব্যক্তিরা সংগঠনে আসছে তাদের বিশ্বাসকে দৃঢ় করবে, তখন আমার হৃদয় আনন্দে ভরে ওঠে।”

“আমি সর্বদাই সত্যকে উপলব্ধি করেছি কিন্তু বইটি পড়ে আমার চোখ খুলে গেছে এবং এটি আমাকে আরও বেশি উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছে যে এই সবকিছুর পিছনে যিহোবার পবিত্র আত্মা রয়েছে।”

[Pictures on page 24]

এমনকি যখন অল্প সংখ্যক সাক্ষী ছিল তখনও অনেক লোকের কাছে রাজ্যের সংবাদ পৌঁছেছিল

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার