যিহোবা—আমাদের স্নেহপূর্বক করুণাময় পিতা
“যিহোবা অনুভূতিতে অতিশয় স্নেহপূর্ণ আর করুণাময়।”—যাকোব ৫:১১, NW, পাদটীকা।
১. কেন অবহেলিতরা যিহোবার ঈশ্বরের কাছে আসে?
এই মহাবিশ্ব এত বৃহৎ যে জ্যোতির্বিদরা এর সব কটি ছায়াপথের সংখ্যা পর্যন্ত গুণে উঠতে পারেনি। আমাদের ছায়াপথ অর্থাৎ মিল্কিওয়ে এত বড় যে মানুষ তার মধ্যে যত নক্ষত্র আছে, এমনকি তার গণনা পর্যন্ত আরম্ভ করতে সক্ষম হয়নি। কিছু নক্ষত্র, যেমন অ্যানট্যারিস, আমাদের সূর্যের থেকে হাজার হাজার গুণ বড় এবং উজ্জ্বল। তাহলে, মহাবিশ্বের মধ্যে সব নক্ষত্রগুলির মহান সৃষ্টিকর্তা কতই না শক্তিশালী হবেন! বাস্তবিকই তিনি, “বাহিনীর ন্যায় সংখ্যানুসারে তাহাদিগকে বাহির করিয়া আনেন, সকলের নাম ধরিয়া তাহাদিগকে আহ্বান করেন।” (যিশাইয় ৪০:২৬) তবুও এই একই সম্ভ্রমশালি ঈশ্বর হলেন “অতিশয় স্নেহপূর্ণ আর করুণাময়।” যিহোবার নম্র সেবকদের জন্য এই জ্ঞান কতই না তৃপ্তিদায়ক, বিশেষ করে যারা তাড়না, রোগব্যাধি, বিষণ্ণতা কিংবা অন্যান্য কঠিন পরিস্থিতি ভোগ করে!
২. জগতের লোকেরা স্নেহের অনুভূতিকে কী চোখে দেখে?
২ অনেকে কোমল অনুভূতিগুলি, যেমন খ্রীষ্টের “স্নেহ ও করুণা” দুর্বলতা বলে মনে করে। (ফিলিপীয় ২:১) ক্রমবিবর্তনীয় দর্শনবাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তারা লোকেদের নিজেদের প্রথমে রাখার উৎসাহ দেয়, এমনকি প্রয়োজন হলে অপরের অনুভূতিগুলিকে পদদলিত করে। আমোদপ্রমোদ এবং খেলাধূলার ক্ষেত্রে আদর্শ মডেল, যারা পৌরুষত্বের গড়িমা করে, তাদের সহজে চোখে জল অথবা স্বভাবের মধ্যে করুণার প্রকাশ দেখা যায় না। কিছু রাজনৈতিক শাসকেরা একই মনোভাব দেখায়। স্টোয়িক দার্শনিক সেনেকা, যিনি নিষ্ঠুর সম্রাট নিরোকে শিক্ষা দান করেছিলেন, তিনি জোর দিয়েছিলেন যে, “দয়া হল দুর্বলতা।” ম্যাকলিনটক এবং স্ট্রংএর বিশ্বকোষ বলে: “এমনকি আজকের দিনেও স্টোয়িকবাদের প্রভাবগুলি . . . লোকেদের মনকে প্রভাবিত করে।”
৩. যিহোবা মোশির কাছে নিজেকে কিভাবে বর্ণনা করেন?
৩ পরিবর্তে মানবজাতির স্রষ্টার ব্যক্তিত্ব হল হৃদয়গ্রাহী। তিনি নিজেকে মোশির কাছে এইকথাগুলির দ্বারা বর্ণনা করেন: “সদাপ্রভু, স্নেহশীল ও কৃপাময় ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর এবং দয়াতে ও সত্যে মহান্; . . . অপরাধের, অধর্ম্মের ও পাপের ক্ষমাকারী; তথাপি তিনি অবশ্য [পাপের] দণ্ড দেন।” (যাত্রাপুস্তক ৩৪:৬, ৭) সত্যই, ন্যায় বিচারকে তুলে ধরার মাধ্যমে যিহোবা তাঁর নিজের সম্বন্ধে এই বর্ণনা শেষ করেন। তিনি সেচ্ছাচারী পাপিকে যথার্থ শাস্তি থেকে নিষ্কৃতি দেবেন না। তবুও তিনি নিজেকে প্রথমে এমন ঈশ্বর হিসাবে বর্ণনা দেন যিনি “ক্ষমাশীল” আক্ষরিকভাবে “ক্ষমাতে পরিপূর্ণ।”
৪. ইব্রীয় শব্দ যা বেশির ভাগ “ক্ষমা” অনুবাদ করা হয় তার আন্তরিক অর্থ কী?
৪ কখনও কখনও “ক্ষমা” শব্দটি শুধুমাত্র অনুভূতিহীন, বিচারসংক্রান্ত শাস্তিকে রোধ করা বলে মনে করা হয়। কিন্তু, বাইবেল অনুবাদগুলি তুলনা করলে ইব্রীয় বিশেষণের উৎকৃষ্ট অর্থ পাওয়া যায় যা র্যাকাম ক্রিয়াপদ থেকে গৃহীত হয়েছে। কয়েকজন পণ্ডিতের মতানুযায়ী এর মূল অর্থ হল “কোমল হওয়া।” সিনোনিমস অফ দি অল্ড টেস্টামেন্ট (ইংরাজি) বই “র্যাকাম” এর ব্যাখ্যা করে “আন্তরিক এবং করুণার স্নেহের অনুভূতি যা দুর্বলতা অথবা দুঃখকষ্ট দেখে উদ্ভব হয় তাদের প্রতি, যারা আমাদের কাছের লোক কিংবা যাদের সাহায্যের প্রয়োজন।” এই আর্কষণীয় গুণাবলির অন্যান্য হৃদয়গ্রাহী সংজ্ঞাগুলি শাস্ত্রের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি (ইংরাজি) বইয়ের খণ্ড ২ পৃষ্ঠা ৩৭৫-৯ পাওয়া যায়।
৫. মোশির নিয়মে ক্ষমা কিভাবে প্রত্যক্ষ হয়?
৫ ইস্রায়েলজাতির প্রতি দেওয়া নিয়ম ঈশ্বরের স্নেহপূর্বক করুণার স্পষ্ট প্রমাণ দেয়। অবহেলিতদের যেমন বিধবা, পিতৃমাতৃহীন বালক বালিকা, দরিদ্রদের প্রতি করুণার সাথে তাদের ব্যবহার করতে হত। (যাত্রাপুস্তক ২২:২২-২৭; লেবীয় পুস্তক ১৯:৯, ১০; দ্বিতীয় বিবরণ ১৫:৭-১১) দাস-দাসী ও জন্তুজানোয়ার সকলে সাপ্তাহিক বিশ্রামদিন থেকে উপকার লাভ করতে পারত। (যাত্রাপুস্তক ২০:১০) এছাড়া, ঈশ্বর তাদেরও লক্ষ্য করতেন যারা স্নেহের সাথে অবহেলিতদের সঙ্গে ব্যবহার করত। হিতোপদেশ ১৯:১৭ পদ বলে: “যে দরিদ্রকে কৃপা করে, সে সদাপ্রভুকে ঋণ দেয়; তিনি তাহার সেই উপকারের পরিশোধ করিবেন।”
ঐশিক করুণার সীমারেখা
৬. যিহোবা কেন ভাববাদী এবং তাঁর প্রতিনিধিকে তাঁর লোকেদের কাছে পাঠান?
৬ ইস্রায়েলজাতি ঈশ্বরের নাম ধারণ করে এবং যিরূশালেমের মন্দিরেতে উপাসনা করে যা ছিল “সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশে এক গৃহ।” (২ বংশাবলি ২:৪; ৬:৩৩) কিন্তু, কালক্রমে, তারা অনৈতিকতা, প্রতিমাপূজা এবং হত্যাকে প্রশ্রয় দিয়ে যিহোবার নামের উপর গুরুতর দুর্নাম আনে। তাঁর করুণাময় ব্যক্তিত্বের সাথে মিল রেখে সমস্ত জাতির উপর চরম দুর্দশা না এনে ঈশ্বর ধৈর্যের সাথে তাদের এই খারাপ পরিস্থিতি শুধরাবার চেষ্টা করেন। তিনি “আপন দূতদিগকে তাহাদের কাছে পাঠাইতেন, প্রত্যুষে উঠিয়া পাঠাইতেন, কেননা তিনি আপন প্রজাদের ও আপন বাসস্থানের প্রতি মমতা করিতেন। কিন্তু তাহারা ঈশ্বরের দূতদিগকে পরিহাস করিত, তাঁহার বাক্য তুচ্ছ করিত ও তাঁহার ভাববাদিগণকে বিদ্রূপ করিত; তন্নিমিত্ত শেষে আপন প্রজাদের বিরুদ্ধ সদাপ্রভুর ক্রোধ উত্থিত হইল, অবশেষে আর প্রতীকারের উপায় রহিল না।”—২ বংশাবলি ৩৬:১৫, ১৬.
৭. যখন যিহোবার করুণা সীমারেখায় পৌঁছায় তখন যিহূদা রাজ্যের কী হয়?
৭ যদিও যিহোবা হলেন করুণাময় এবং ক্রোধে ধীর, কিন্তু প্রয়োজন হলে তিনি ধার্মিক রাগ প্রকাশ করেন। তখনকার দিনে, ঐশিক করুণা শেষ সীমারেখায় পৌঁছেছিল। আমরা তার পরিমাণ সম্বন্ধে পড়ি: “অতএব [যিহোবা] কল্দীয়দের রাজাকে তাহাদের বিরুদ্ধে আনিলেন, আর রাজা যুবকগণকে তাহাদের ধর্ম্মধামে খড়্গ দ্বারা বধ করিলেন, আর যুবক কি যুবতী, বৃদ্ধ কি জরাজীর্ণ, কাহারও প্রতি দয়া করিলেন না; ঈশ্বর তাঁহার হস্তে সকলকে সমর্পণ করিলেন।” (২ বংশাবলি ৩৬:১৭) এইভাবে যিরূশালেম এবং তার মন্দির ধ্বংস হয় এবং সেই জাতিকে বাবিলনের বন্দী দশায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তাঁর নামের প্রতি করুণা
৮, ৯. (ক) কেন যিহোবা ঘোষণা করেন যে তিনি তাঁর নামের প্রতি করুণা দেখাবেন? (খ) যিহোবার শত্রুরা কিভাবে চুপ করে যায়?
৮ চতুরপার্শের জাতিগুলি এই চরম দুর্দশা দেখে খুশি হয়েছিল। বিদ্রূপ করে তারা বলেছিল: “উহারা সদাপ্রভুর প্রজা, এবং তাঁহারই দেশ হইতে বাহির হইয়াছে।” এই দুর্নামের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে যিহোবা ঘোষণা করেন: “আমি আমার সেই পবিত্র নামের অনুরোধে দয়ার্দ্র হইলাম . . . “আমি আমার সেই মহৎ নাম পবিত্র করিব . . . আর জাতিগণ জানিবে যে, আমিই সদাপ্রভু।”—যিহিষ্কেল ৩৬:২০-২৩.
৯ তাঁর জাতি ৭০ বছর বন্দী দশায় থাকার পর করুণার ঈশ্বর, যিহোবা তাদের মুক্তি দেন এবং তাদের ফিরে যেতে আর যিরূশালেমের মন্দির পুনর্নির্মাণ করতে অনুমতি দেন। এটি চতুরপার্শের জাতিগুলিকে স্তব্ধ করে যারা অবাক হয়ে দেখেছিল। (যিহিষ্কেল ৩৬:৩৫, ৩৬) কিন্তু, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, যে ইস্রায়েলজাতি আবার খারাপ অভ্যাসে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এক বিশ্বস্ত যিহূদী, নহিমিয়, এই পরিস্থিতিকে শুধরাতে সাহায্য করে জনসাধারণ্যে একটি, প্রার্থনার মাধ্যমে তিনি সেই জাতির সঙ্গে ঈশ্বরের করুণার ব্যবহারকে এই বলে পুনরালোচনা করেন:
১০. যিহোবার করুণা নহিমিয় কিভাবে প্রকাশ করেন?
১০ “কষ্টের সময়ে যখন তাহারা তোমার কাছে কাঁদিত, তখন তুমি স্বর্গ হইতে তাহা শুনিতে, এবং তোমার প্রচুর করুণা প্রযুক্ত তাহাদিগকে নিস্তারকর্ত্তৃগণ দিতে, যাঁহারা বিপক্ষদের হস্ত হইতে তাহাদিগকে নিস্তার করিতেন। তথাপি বিশ্রাম পাইলে পর তাহারা আবার তোমার সাক্ষাতে কদাচরণ করিত, তাহাতে তুমি তাহাদিগকে শত্রুহস্তে সমর্পণ করিতে, এবং সেই শত্রুগণ তাহাদের উপরে কর্ত্তৃত্ব করিত; কিন্তু তাহারা ফিরিলে ও তোমার কাছে ক্রন্দন করিলে তুমি স্বর্গ হইতে তাহা শুনিতে; এবং আপন করুণানুসারে অনেক বার তাহাদিগকে উদ্ধার করিতে; . . . তুমি বহু বৎসর তাহাদের ব্যবহার সহ্য করিলে।”—নহিমিয় ৯:২৬-৩০; যিশাইয় ৬৩:৯, ১০ পদও দেখুন।
১১. যিহোবা এবং লোকেদের ঈশ্বরের মধ্যে কী বৈসাদৃশ্য?
১১ অবশেষে, ঈশ্বরের প্রিয় পুত্রকে নিষ্ঠুরভাবে প্রত্যাখ্যান করার পরে যিহূদী জাতি এই পদমর্যাদার সুযোগকে চিরদিনের জন্য হারায়। তাদের সাথে ঈশ্বরের বিশ্বস্ত সম্বন্ধে ১,৫০০ বছরের বেশি ছিল। যিহোবা যে প্রকৃতই ক্ষমার ঈশ্বর এই সত্যের সেটি হল যেন অনন্তকালীন এক সাক্ষী। সেই সব পাপপূর্ণ মানুষের গড়া নিষ্ঠুর এবং অনুভূতিহীন ঈশ্বরগুলি থেকে এটি কতই না ভিন্ন!
সবচেয়ে বড় করুণার প্রকাশ
১২. ঈশ্বরের করুণার সবচেয়ে বড় প্রকাশ কী?
১২ তাঁর প্রিয় পুত্রকে পৃথিবীতে পাঠানো, ছিল ঈশ্বরের সবচেয়ে বড় করুণার প্রকাশ। সত্যই, যীশুর বিশ্বস্ত জীবন যিহোবাকে মহা আনন্দ দেয় যা দিয়াবলের মিথ্যা অভিযোগগুলির সঠিক উত্তর যোগায়। (হিতোপদেশ ২৭:১১) ঠিক একই সঙ্গে কিন্তু তাঁর প্রিয় পুত্রকে নিষ্ঠুর এবং অপমানকর মৃত্যুভোগ করতে দেখা নিশ্চয় যিহোবাকে বেশি কষ্ট দেয় যা কোন পিতামাতাকে কখনও ভোগ করতে হয়নি। এটি একটি প্রেমপূর্ণ বলি ছিল যা মানবজাতির পরিত্রাণের রাস্তা খুলে দেয়। (যোহন ৩:১৬) যোহন বাপ্তাইজের পিতা সখরিয় যেমন ভবিষ্যদ্বাণী করেন তা “আমাদের ঈশ্বরের স্নেহপূর্ণ করুণা” প্রকাশ করে।—লূক ১:৭৭, ৭৮, NW.
১৩. কোন্ বিশেষ উপায়ে যীশু ঈশ্বরের ব্যক্তিত্বকে প্রতিফলিত করে?
১৩ ঈশ্বরের পুত্রকে পৃথিবীতে পাঠানোর দ্বারা মানবজাতি যিহোবার ব্যক্তিত্বের স্পষ্ট পরিচয় পায়। কিভাবে? কারণ যীশু ঈশ্বরের ব্যক্তিত্বকে নিখুঁতভাবে প্রতিফলিত করেন, বিশেষ করে অবহেলিতদের যেভাবে স্নেহপূর্বক করুণা তিনি দেখাতেন সেই ক্ষেত্রে! (যোহন ১:১৪; ১৪:৯) এই বিষয়ে তিনজন সুসমাচার লেখক মথি, মার্ক আর লূক গ্রীক ক্রিয়াপদ স্পলাগখিনিজোমাই যা “অন্ত্রের” যে গ্রীক শব্দ তার থেকে আসে। “এর সকল অর্থ থেকে” বাইবেল অধ্যাপক উইলিয়াম বার্কলে ব্যাখ্যা করে “বোঝা যায় যে এটি কোন সাধারণ দয়া কিংবা করুণা নয় কিন্তু একটি অনুভূতি যা এক মানুষের অন্তরকে প্রভাবিত করে। গ্রীক ভাষাতে করুণার অনুভূতি এটি হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ।” এটি বিভিন্নভাবে অনুবাদ করা হয় যেমন “করুণা হইতেছে” কিংবা ‘করুণাবিষ্ট হইয়া’।—মার্ক ৬:৩৪; ৮:২.
যখন যীশু সমব্যথা অনুভব করেছিলেন
১৪, ১৫. গালীলের একটি শহরে কিভাবে যীশু করুণাবিষ্ট হন এবং তা কী চিত্রিত করেন?
১৪ দৃশ্যটি হল গালীলের একটি শহর। রীতি অনুযায়ী সাবধানবাণী না দিয়ে “সর্ব্বাঙ্গকুষ্ঠ” ভরা ছিল এক ব্যক্তি যীশুর কাছে আসে। (লূক ৫:১২) যীশু কি তাকে রূঢ়ভাবে ভর্ৎসনা করেন যেহেতু সে ঈশ্বরের ব্যবস্থা অনুযায়ী “অশুচি অশুচি” বলে চিৎকার করেনি? (লেবীয় পুস্তক ১৩:৪৫) না। পরিবর্তে, যীশু সেই ব্যক্তি মরিয়া হয়ে যে কথাগুলি বলতে থাকে তা শোনেন: “যদি আপনার ইচ্ছা হয়, আমাকে শুচি করিতে পারেন।” “করুণাবিষ্ট হইয়া” যীশু হাত বাড়িয়ে কুষ্ঠরোগীকে স্পর্শ করেন, এই বলে “আমার ইচ্ছা, তুমি শুচীকৃত হও।” সেই ব্যক্তিটি তৎক্ষণাৎ সুস্থ হয়। যীশু এর দ্বারা শুধু তাঁর অলৌকিক ঈশ্বরদত্ত শক্তির প্রকাশ করেননি কিন্তু সেই শক্তি ব্যবহার করার জন্য যে স্নেহ তাঁকে প্রণোদিত করেছিল তাও প্রকাশ করেছিলেন।—মার্ক ১:৪০-৪২.
১৫ তাঁর কাছে না আসলে যীশু কি করুণা দেখাতেন না? না। এর কিছুদিন পরে, নায়িন শহরে শবদেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছে এমন এক মিছিলের সাথে তাঁর দেখা হয়। কোন সন্দেহ নেই, যীশু আগে এইধরনের শবদেহ নিয়ে যাওয়া দেখেছেন, কিন্তু এটি বিশেষ করে দুঃখদায়ক ছিল। সেই মৃত ব্যক্তিটি হল বিধবার একমাত্র সন্তান। ‘তার প্রতি করুণাবিষ্ট হয়ে’ যীশু তার কাছে যান এবং বলেন: “কাঁদিও না।” তারপরে তিনি সেই অসাধারণ অলৌকিক কাজ করেন তার পুত্রকে আবার জীবন দান করে।—লূক ৭:১১-১৫.
১৬. যে বিরাট জনতা তাঁকে অনুসরণ করছিল তাদের প্রতি যীশু কেন করুণাবিষ্ট হন?
১৬ উপরোক্ত ঘটনাগুলি থেকে যে চমকপ্রদ শিক্ষা পাওয়া যায় তা হল যে যখন যীশু ‘করুণাবিষ্ট হতেন,’ তিনি তখন সাহায্য করবার জন্য কিছু গঠনমূলক কাজ করতেন। পরে আরেকটি ঘটনায়, যীশু একটি বিরাট জনতা যারা তাঁকে অনুসরণ করছিল তাদের পরীক্ষা করেন। মথি বর্ণনা করেন যে “তিনি তাহাদের প্রতি করুণাবিষ্ট হইলেন, কেননা তাহারা ব্যাকুল ও ছিন্নভিন্ন ছিল, যেন পালকবিহীন মেষপাল।” (মথি ৯:৩৬) ফরীশীরা সাধারণ লোকের আধ্যাত্মিক ক্ষুধা মিটানোর জন্য খুব চেষ্টা করত। পরিবর্তে, তারা অনেক অপ্রয়োজনীয় নিয়ম দ্বারা অবহেলিত ব্যক্তিদের ভারগ্রস্ত করত। (মথি ১২:১, ২; ১৫:১-৯;২৩:৪, ২৩) সাধারণ লোকেদের প্রতি তাদের মনোভাব প্রকাশ পায় যখন তারা যারা যীশুর কথা শুনছিল তাদের সম্পর্কে বলে: “এই যে লোকসমূহ ব্যবস্থা জানে না, ইহারা শাপগ্রস্ত।”—যোহন ৭:৪৯.
১৭. জনতার প্রতি যীশুর করুণা কিভাবে তাঁকে প্রভাবিত করে এবং সেখানে তিনি কোন্ সুদূরপ্রসারী পরিচালনা দেন?
১৭ অপরপক্ষে, যীশু জনতার আধ্যাত্মিক পরিস্থিতি দেখে গভীরভাবে প্রভাবিত হন। কিন্তু এত আগ্রহী ব্যক্তিরা সেখানে ছিল যে তাঁর পক্ষে প্রতিটি ব্যক্তি-বিশেষের প্রতি নজর দেওয়া সম্ভবপর ছিল না। তাই তিনি তাঁর শিষ্যদের বলেন আরও কর্মীদের জন্য প্রার্থনা করতে। (মথি ৯:৩৫-৩৮) এই প্রার্থনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে যীশু তাঁর এই বার্তা দিয়ে প্রেরিতদের পাঠান: “স্বর্গ-রাজ্য সন্নিকট হইল।” সেই সময়ে তিনি যে নির্দেশনা দেন তা আজকের দিনের খ্রীষ্টানদের জন্যেও এক অতি মূল্যবান পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করছে। নিঃসন্দেহে, যীশুর করুণার অনুভূতি প্রভাবিত করে মানবজাতির আধ্যাত্মিক ক্ষুধা মিটাতে তাঁকে পরিচালিত করে।—মথি ১০:৫-৭.
১৮. জনতা তাঁর নির্জনতায় ব্যাঘাত ঘটালে যীশু কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখান এবং এর থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
১৮ আরেকটি ঘটনায় যীশু আবার জনতার আধ্যাত্মিক প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে চিন্তিত হন। এই সময়ে তিনি এবং তাঁর প্রেরিতেরা ব্যস্ত পরিচর্যা ভ্রমণের পর ক্লান্ত এবং তারা জায়গা খোঁজে বিশ্রাম নেবার। কিন্তু লোকেরা খুব শীঘ্রই তাদের খুঁজে পায়। তাদের এই নির্জনতার উপর ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য যীশু বিরক্তিবোধ না করে মার্ক লিপিবদ্ধ করেন যে তিনি “করুণাবিষ্ট হইলেন।” আর যীশুর এই আন্তরিক অনুভূতির পিছনে কারণটি কী ছিল? “তাহারা পালকবিহীন মেষপালের ন্যায় ছিল।” আবার, যীশু তাঁর অনুভূতি কাজের দ্বারা প্রকাশ করেন এবং সেই জনতাকে শিক্ষা দিতে থাকে “ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়।” হ্যাঁ, তিনি তাদের আধ্যাত্মিক ক্ষুধা দেখে এত গভীরভাবে প্রভাবিত হন যে তিনি প্রয়োজনীয় বিশ্রাম বিসর্জন দিয়ে তাদের শিক্ষা দেন।—মার্ক ৬:৩৪; লূক ৯:১১.
১৯. জনতার প্রতি যীশুর চিন্তা কিভাবে তাদের আধ্যাত্মিক প্রয়োজনীয়তাগুলিকে ছাড়িয়ে গেছিলেন?
১৯ যদিও লোকেদের আধ্যাত্মিক প্রয়োজনীয়তার উপর বিশেষ করে চিন্তিত ছিলেন, কিন্তু যীশু কখনও তাদের দরকারি দৈহিক প্রয়োজনীয়তাগুলি অবহেলা করেননি। সেই একই সময়ে তিনি “যাহাদের সুস্থ হইবার প্রয়োজন ছিল, তাহাদিগকে সুস্থ করিলেন”। (লূক ৯:১১) পরবর্তী এক ঘটনায়, জনতা তাঁর সঙ্গে অনেকক্ষণ ছিল এবং তারা ঘর থেকে অনেক দূরে ছিল। তাদের দৈহিক প্রয়োজনীয়তাকে অনুভব করে, যীশু তাঁর শিষ্যদের বলেন: “এই লোকসমুহের প্রতি আমার করুণা হইতেছে; কেননা ইহারা আজ তিন দিবস আমার সঙ্গে রহিয়াছে, এবং ইহাদের নিকটে খাবার কিছুই নাই; আর আমি ইহাদিগকে অনাহারে বিদায় করিতে ইচ্ছা করি না, পাছে ইহারা পথে মূর্চ্ছা পড়ে।” (মথি ১৫:৩২) যীশু এই কষ্ট এড়ানোর জন্য কিছু করেন। তিনি অলৌকিকভাবে সাতটি রুটি এবং কয়েকটি মাছ থেকে হাজার হাজার পুরুষ, স্ত্রী এবং বাচ্চাদের খাবার প্রদান করেন।
২০. যীশুর করুণাবিষ্ট হওয়ার লিপিবদ্ধ শেষ ঘটনাটি থেকে কী শিখতে পারি?
২০ যীশুর করুণাবিষ্ট হওয়ার শেষ লিপিবদ্ধ উপলক্ষ হল যিরূশালেমে তাঁর শেষ যাত্রার সময়ে। নিস্তারপর্ব উদযাপন করার জন্য বিরাট জনতা তাঁর সঙ্গে যাত্রা করছিল। যিরীহো শহরের কাছে রাস্তায়, দুটি অন্ধ ভিক্ষুক চিৎকার করতে থাকে: “প্রভু . . . আমাদের প্রতি দয়া করুন।” জনতা তাদের চুপ করবার চেষ্টা করে, কিন্তু যীশু তাদের ডাকেন এবং জিজ্ঞাসা করে যে তারা তাঁর কাছ থেকে কী চায়। “প্রভু, আমাদের চক্ষু যেন খুলিয়া যায়,” তারা অনুরোধ করে। “করুণাবিষ্ট হইয়া” তিনি তাদের চক্ষু স্পর্শ করেন আর তারা দৃষ্টি ফিরে পায়। (মথি ২০:২৯-৩৪) কতই গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা আমরা এর থেকে পাই! যীশু তাঁর পার্থিব পরিচর্যার শেষ সপ্তাহে এসে পৌঁছেছেন। শয়তানের প্রতিনিধির হাতে নিষ্ঠুর মৃত্যুর আগে তাঁর অনেক কিছু করার আছে। তবুও, এই সংকটপূর্ণ সময়ে পরিস্থিতির চাপ তাঁকে কম গুরুত্বপূর্ণ মানবীয় প্রয়োজনীয়তাগুলির ক্ষেত্রে করুণার স্নেহের অনুভূতি প্রকাশ করতে বাধা দেয়নি।
যে দৃষ্টান্তগুলি করুণা প্রকাশ করে
২১. মালিকের তার দাসের বড় ধার থেকে অব্যাহতি করার দ্বারা কী চিত্রিত হয়?
২১ গ্রীক ক্রিয়াপদ স্পলাগখিনিজোমাই যা যীশুর জীবনের এই ঘটনাগুলিতে ব্যবহৃত হয়, তা যীশুর তিনটি দৃষ্টান্তেও ব্যবহৃত হয়। একটি গল্পে একজন দাস সনির্বন্ধ অনুরোধ করে যাতে করে সে তার অনেক ধার মিটাতে পারে। তার মালিক “করুণাবিষ্ট হইয়া” তাকে ধার শোধ করার থেকে অব্যাহতি দেয়। এটি দেখায় যে প্রত্যেক খ্রীষ্টীয় ব্যক্তি যারা যীশুর মুক্তির মূল্য বলিদানে বিশ্বাস প্রদর্শন করেছে তাদের বিরাট পাপের ধার ক্ষমা করে যিহোবা ঈশ্বর প্রচুর পরিমাণে করুণা দেখিয়েছেন।—মথি ১৮:২৭; ২০:২৮.
২২. হারান পুত্রে উপদেশমূলক গল্প কী বোঝায়
২২ তারপর, হারান পুত্রের গল্পটি রয়েছে। মনে করুন যে কি হয়েছিল যখন সেই বিপথগামী পুত্রটি বাড়িতে ফিরে আসে। “সে দূরে থাকিতেই তাহার পিতা তাহাকে দেখিতে পাইলেন, ও করুণাবিষ্ট হইলেন, আর দৌড়িয়া গিয়া তাহার গলা ধরিয়া তাহাকে চুম্বন করিতে থাকিলেন।” (লূক ১৫:২০) এটি দেখায় যে যখন একজন খ্রীষ্টান বিপথগামী হয়ে পড়ে কিন্তু প্রকৃত অনুশোচনা দেখায়, যিহোবা তাকে করুণা দেখাবেন এবং স্নেহের সাথে তাকে গ্রহণ করবেন। তাই, এই দুইটি দৃষ্টান্তের সাহায্যে যীশু দেখান যে আমাদের পিতা, যিহোবা, “অনুভূতিতে অতিশয় স্নেহপূর্ণ ও করুণাময়।”—যাকোব ৫:১১, পাদটীকা।
২৩. প্রতিবেশিসুলভ শমরীয়ের দৃষ্টান্ত থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
২৩ তৃতীয় দৃষ্টান্তমূলক স্পলাগখিনিজোমাই শব্দটির ব্যবহার করুণাময় শমরীয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যিনি এক যিহূদি যাকে লুণ্ঠন করা হয় আধ মরা অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয় তাকে দেখে তার প্রতি ‘করুণাবিষ্ট হন।’ (লূক ১০:৩৩) এই অনুভূতির দ্বারা পরিচালিত হয়ে সেই অচেনা লোকটিকে সাহায্য করার জন্য, শমরীয় ব্যক্তিটি তার যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। এটি দেখায় যে যিহোবা এবং যীশু তাঁদের উদাহরণ অনুসরণ করে সত্য খ্রীষ্টানদের কাছ থেকে সেই একই ধরনের স্নেহ এবং করুণা প্রদর্শন আশা করেন। তা কিভাবে করা যায় তার কয়েকটি দিক পরবর্তী প্রবন্ধে আলোচনা করা হবে।
পুনরালোচনা জন্য প্রশ্নগুলি
▫ ক্ষমাশীল হওয়ার অর্থ কী?
▫ কিভাবে যিহোবা তাঁর নামের প্রতি করুণা দেখান?
▫ করুণার সবচেয়ে বড় উদাহরণ কী?
▫ কোন্ বিশেষ উপায়ে যীশু তাঁর পিতার ব্যক্তিত্বকে প্রতিফলিত করে?
▫ যীশুর করুণাপূর্ণ কাজগুলি এবং তাঁর দৃষ্টান্তগুলি থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
[৬, ৭ পৃষ্ঠার বাক্স]
“স্নেহপূর্ণ প্রেমময় যত্ন”—এর বর্ণনামূলক শব্দ
“হায় আমার অন্ত্র! হায় আমার অন্ত্র!” ভাববাদী যিরমিয় চিৎকার করে বলেন। তিনি কি কিছু খারাপ খাওয়ার ফলে তার নাড়ী সম্পর্কীয় কোন কষ্টের সম্বন্ধে যন্ত্রণা প্রকাশ করছিলেন? না। যিহূদা রাজ্যের উপর আসন্ন দুর্দশা সম্বন্ধে তাঁর গভীর চিন্তা বর্ণনা করতে গিয়ে যিরমিয় একটি ইব্রীয় বাক্যালঙ্কার ব্যবহার করছিলেন।—যিরমিয় ৪:১৯.
যেহেতু যিহোবা ঈশ্বরের গভীর অনুভূতি আছে, তাই “অন্ত্র” কিংবা “নাড়ী” (মিইম), ইব্রীয় শব্দ তাঁর স্নেহের অনুভূতিগুলি বর্ণনা করতেও ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যিরমিয়ের সময়ের অনেক দশক আগে, ইস্রায়েলের দশটি-জাতি বিশিষ্ট রাজ্যকে অশরীয় রাজা দ্বারা বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের অবিশ্বস্ততার জন্য যিহোবা শাস্তি হিসাবে এটি অনুমতি দেন। কিন্তু নির্বাসনে পাঠিয়ে ঈশ্বর কি তাদের ভুলে যান? না। তাঁর চুক্তিবদ্ধ লোক হিসাবে তিনি তখনও পর্যন্ত তাদের সাথে গভীরভাবে যুক্ত থাকেন। তাদের মুখ্য জাতি ইফ্রয়িম নামে ডেকে, যিহোবা জিজ্ঞাসা করেন: “ইফ্রয়িম কি আমার প্রিয় পুত্ত্র? সে কি আনন্দদায়ী বালক? হাঁ, যতবার আমি তাহার বিরুদ্ধে কথা কহি, ততবার পুনরায় তাহাকে সাগ্রহে স্মরণ করি; এই কারণ তাহার জন্য আমার অন্তর ব্যাকুল হয়; অবশ্য আমি তাহার প্রতি করুণা করিব, ইহা সদাপ্রভু বলেন।”—যিরমিয় ৩১:২০.
“আমার অন্তর ব্যাকুল হয়” এই কথাগুলি যিহোবা তাঁর নির্বাসিত লোকেদের প্রতি গভীর অনুরাগের অনুভূতি প্রকাশ করতে বাক্যালঙ্কার ব্যবহার করেন। এই শাস্ত্রপদটি সম্বন্ধে মন্তব্যে উনবিংশ শতাব্দীর বাইবেল পণ্ডিত ই. হেন্ডেরসন্ লেখেন: “হারান ব্যক্তির ফিরে আসা সম্বন্ধে পিতার স্নেহপূর্ণ অনুভূতির মর্মস্পর্শী প্রকাশ এর থেকে উৎকৃষ্ট কোন কিছু হতে পারে না, যা যিহোবা এখানে প্রদর্শন করেন . . . যদিও তিনি তাদের [প্রতিমাপূজক ইফ্রয়িমজাতির] বিরুদ্ধে বলেছিলেন এবং তাদের শাস্তি দিয়েছিলেন . . . কিন্তু তাদের তিনি কখনও ভুলে যাননি, পরিবর্তে, অবশেষে তাদের প্রত্যাবর্তনের প্রত্যাশায় আনন্দিত হন।”
“নাড়ী” কিংবা “অন্ত্র” এর ক্ষেত্রে গ্রীক শব্দটি খ্রীষ্টীয় গ্রীক শাস্ত্র ঠিক একইভাবে ব্যবহৃত হয়। যখন আক্ষরিক অর্থে এটি ব্যবহার করা হয় না যেমন প্রেরিত ১:১৮, তখন এটি অনুরাগ কিংবা স্নেহপূর্ণ করুণার অনুভূতিগুলিকে ইঙ্গিত করে। (ফিলীমন ১২) এই শব্দটি কোন কোন সময় গ্রীক শব্দ “ভালো কিংবা “উত্তম”-এর সাথে যুক্ত করা হয়। প্রেরিত পৌল এবং পিতর এই যৌথ উক্তিটি ব্যবহার করেন খ্রীষ্টানদের “করুণাচিত্ত” হওয়া সম্বন্ধে উৎসাহ দেওয়ার সময় যার আক্ষরিক অর্থ হল “করুণার প্রতি উদ্যত হওয়া।” (ইফিষীয় ৪:৩২; ১ পিতর ৩:৮) গ্রীক শব্দ “নাড়ী” সঙ্গে গ্রীক শব্দ পোলি-র সাথে যোগ করা যেতে পারে। এই সংযোজনের আক্ষরিক অর্থ হল “অনেক নাড়ী থাকা।” এই দুর্লভ উক্তি মাত্র একবার বাইবেলে ব্যবহার করা হয়েছে এবং তা যিহোবা ঈশ্বরকে ইঙ্গিত করে নিউ ওয়ার্ল্ড ট্রান্সলেশন এইভাবে বলে: “যিহোবা অনুভূতিতে অতিশয় স্নেহপূর্ণ।”—যাকোব ৫:১১.
আমাদের কতই কৃতজ্ঞ থাকা উচিত এই জেনে যে করুণাহীন ব্যক্তিদের দ্বারা আবিষ্কৃত নিষ্ঠুর ঈশ্বরগুলি চাইতে, মহাবিশ্বে সবচাইতে শক্তিশালী, যিহোবা ঈশ্বর কতই না ভিন্ন! তাদের “করুণাচিত্ত” ঈশ্বরের অনুকরণে সত্য খ্রীষ্টানেরা একে অপরের প্রতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই একই ধরনের গুণ দেখাতে প্রণোদিত হয়।—ইফিষীয় ৫:১.
[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
যখন ঐশিক করুণা শেষ সীমারেখায় পৌঁছায় যিহোবা বাবিলনীয়দের তাঁর বিপথগামী লোকদের উপর রাজত্ব করতে অনুমতি দেন
[৫ পৃষ্ঠার চিত্র]
তাঁর প্রিয় পুত্রকে মৃত্যুবরণ করতে দেখা নিশ্চয় যিহোবা ঈশ্বরকে অতি কষ্ট দিয়েছিলেন যা কখনও কাউকে আজ পর্যন্ত ভোগ করতে হয়নি
[৯ পৃষ্ঠার চিত্র]
যীশু তাঁর পিতার করুণাপূর্ণ ব্যক্তিত্বকে নিখুঁতভাবে প্রতিফলিত করেন