দীপ্তির ঝলকগুলি মুখ্য ও গৌণ—দ্বিতীয় ভাগ
“তোমারই দীপ্তিতে আমরা দীপ্তি দেখিতে পাই।”—গীতসংহিতা ৩৬:৯.
১. প্রকাশিত বাক্য পুস্তকের সংকেতগুলিকে বুঝবার জন্য আগে কোন্ প্রাথমিক প্রচেষ্টা করা হয়েছিল?
বাইবেলের প্রকাশিত বাক্য পুস্তকটি সুদূর অতীত থেকে খ্রীষ্টানদের কৌতূহল জাগিয়ে এসেছে। সত্যের দীপ্তি যে কিভাবে অবিরাম বেড়েই চলে, সেই বিষয়ে বইটি এক নিখুঁত দৃষ্টান্ত প্রদান করে। ১৯১৭ সালে যিহোবার লোকেরা সমাপ্ত রহস্য নামক বইটি প্রকাশ করে প্রকাশিত বাক্য বইটির উপর ব্যাখ্যা দেয়। বইটি খ্রীষ্টীয় জগতের ধর্ম এবং রাজনৈতিক নেতাদের দুঃসাহসিকতার সাথে প্রকাশ করে দেয়, কিন্তু সেখানে লিখিত ব্যাখ্যার অনেকটাই ছিল বিভিন্ন সূত্র থেকে ধার করা। তথাপি, সমাপ্ত রহস্য বইটি যিহোবা দৃশ্যত যে মাধ্যমকে ব্যবহার করছিলেন, তার প্রতি বাইবেল ছাত্ররা বিশ্বস্ততা বজায় রাখবে কি না, সেই বিষয়ে পরীক্ষা করে।
২. “জাতিগণের জন্ম” প্রবন্ধটি প্রকাশিত বাক্য পুস্তকের উপর কিভাবে আলোকপাত করেছে?
২ মার্চ ১, ১৯২৫ সালের প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় “জাতির জন্ম” নামক প্রবন্ধটির মাধ্যমে প্রকাশিত বাক্য পুস্তকের উপর এক লক্ষণীয় দীপ্তির ঝলক প্রকাশ পায়। মনে হয়েছিল যে প্রকাশিত বাক্যের ১২ অধ্যায় পৌত্তলিক রোম এবং রোমীয় যাজকদের মধ্যে যে যুদ্ধ, তার বর্ণনা দিচ্ছে, আর পুত্রসন্তানটি যাজকদের চিত্রিত করছে। কিন্তু সেই প্রবন্ধটি দেখিয়ে দেয় যে প্রকাশিত বাক্য ১১:১৫-১৮ পদের সাথে ১২ অধ্যায়ের একটি সম্পর্ক রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে ঈশ্বরের রাজ্যের জন্মের সাথে তা সম্পর্কযুক্ত।
৩. কোন্ প্রকাশনাগুলি প্রকাশিত বাক্য পুস্তকের উপর অধিক দীপ্তি দেয়?
৩ এই সবকিছুই প্রকাশিত বাক্য পুস্তককে আরও পরিষ্কারভাবে বুঝতে পরিচালিত করে, যা এসেছিল ১৯৩০ সালে দুই খণ্ড বিশিষ্ট জ্যাতি (ইংরাজি) নামক পুস্তকটি প্রকাশের মাধ্যমে। আরও পরিমার্জিতভাবে প্রকাশ পায় “মহতী বাবিলের পতন হয়েছে!” ঈশ্বরের রাজ্য শাসন শুরু করে [ইংরাজি] (১৯৬৩) এবং “তখনই ঈশ্বর বিষয়ক রহস্যের সমাপ্তি!” (১৯৬৯) [ইংরাজি] বইটির মাধ্যমে। তবুও, ভাববাণীমূলক এই প্রকাশিত বাক্য বইটির বিষয়ে তখনও অনেক কিছুরই জানার ছিল। হ্যাঁ, আরও উজ্জ্বলতর দীপ্তি প্রকাশ পায় ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত বাক্য—তার মহান পরিপূর্ণতা সন্নিকট! (ইংরাজি) বইটির মাধ্যমে। এই ক্রমবর্ধমান উন্নতির চাবিকাঠির সম্পর্কে বলা যায় যে প্রকাশিত বাক্য পুস্তকের সমস্ত ভাববাণীই “প্রভুর দিন” এর প্রতি প্রযোজ্য, যে সময়টি ১৯১৪ সালে শুরু হয়েছে। (প্রকাশিত বাক্য ১:১০) অতএব যতই দিন যেতে থাকবে, প্রকাশিত বাক্য পুস্তকের অর্থও তত ভালভাবে বুঝা যাবে।
“প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্ত্তৃপক্ষদের” অর্থ পরিষ্কার হয়
৪, ৫. (ক) বাইবেল ছাত্ররা রোমীয় ১৩:১ পদকে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছিলেন? (খ) “প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্ত্তৃপক্ষদের” স্থান কোথায় হবে, সেই বিষয়ে পরবর্তীকালে শাস্ত্রীয় দৃষ্টিভঙ্গি কী?
৪ রোমীয় ১৩:১ পদকে কেন্দ্র করে ১৯৬২ সালে উজ্জ্বল এক দীপ্তির ঝলক দেখা যায়, যা বলে: “প্রত্যেক প্রাণী প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্ত্তৃপক্ষদের [“উচ্চতর কর্তাদের,” নিউ ওয়ার্ল্ড ট্রান্সলেশন] বশীভূত হউক।” (কিং জেমস সংস্করণ) প্রাথমিক বাইবেল ছাত্ররা বুঝতে পেরেছিলেন যে সেখানে উল্লেখিত “প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ”-রা হল জাগতিক কর্তারা। তারা এই শাস্ত্রপদটির অর্থ বুঝেছিলেন যে যদি কোন খ্রীষ্টানকে যুদ্ধকালীন দলভুক্ত হতে হয়, তাহলে তাকে যুদ্ধের পোশাক পরতে হবে, কাঁধে বন্দুক নিতে হবে, সীমান্তবর্তী এলাকায় সামনে এগিয়ে যেতে হবে। মনে করা হয়েছিল যে যেহেতু একজন খ্রীষ্টান তার প্রতিবেশীকে হত্যা করতে পারে না, তাহলে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে সে বাধ্য হয়ে শূন্যে বন্দুক চালাতে পারে।a
৫ ১৯৬২ সালের নভেম্বর ১৫ এবং ডিসেম্বর ১ তারিখের প্রহরীদুর্গ পত্রিকা মথি ২২:২১ পদে যীশুর কথাগুলির বিষয়বস্তুর উপর পরিষ্কারভাবে আলোকপাত করে: “কৈসরের যাহা যাহা, কৈসরকে দেও, আর ঈশ্বরের যাহা যাহা, ঈশ্বরকে দেও।” প্রেরিত ৫:২৯ পদে প্রেরিতদের কথাগুলি ছিল প্রসঙ্গোচিত: “মনুষ্যদের অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করিতে হইবে।” খ্রীষ্টানেরা কৈসরের—“প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্ত্তৃপক্ষদের” অধীন—শুধুমাত্র যতক্ষণ খ্রীষ্টানদের ঈশ্বরের আইনের বিরুদ্ধে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। কৈসরের প্রতি বাধ্যতা হল আপেক্ষিক, সম্পূর্ণ নয়। খ্রীষ্টানেরা কৈসরের যা যা, শুধুমাত্র তখনই তাকে দেয়, যখন তা ঈশ্বরের আইনের সাথে বিরোধিতা করে না। সেই বিষয়ের উপর স্বচ্ছ দীপ্তি প্রকাশ কতই না সন্তোষের কারণ ছিল!
সাংগঠনিক বিষয়গুলির উপর দীপ্তির ঝলক
৬. (ক) খ্রীষ্টীয় জগতের যাজকতন্ত্রের কাঠামো থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কোন্ নীতিকে বলবৎ করা হয়? (খ) যারা মণ্ডলী তত্ত্বাবধান করবেন, তাদের মনোনয়ন করার সঠিক পন্থা সম্পর্কে কোন উপসংহারে আসা হয়?
৬ প্রশ্ন উঠেছিল মণ্ডলীতে কারা প্রাচীনের এবং কারা ডিকানের কাজ করবে। খ্রীষ্টীয় জগতের যাজকতন্ত্রের কাঠামো থেকে বেরিয়ে আসার জন্য, এই সিদ্ধান্তে আসা হয় যে গণতন্ত্রের নীতিতে প্রত্যেকটি মণ্ডলীর সদস্যদের দ্বারা তাদের নির্বাচন করা হবে। কিন্তু ১৯৩২ সালের সেপ্টেম্বর ১ এবং অক্টোবর ১৫ তারিখের প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় ক্রমবর্ধমান দীপ্তি দেখায় যে শাস্ত্র নির্বাচনের মাধ্যমে প্রাচীন নির্বাচন অনুমোদন করে না। সেইজন্য সেগুলিকে একটি পরিচর্যা কমিটি এবং পরিচর্যা নির্দেশকের দ্বারা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত সমিতি নেয়।
৭. মণ্ডলীর দাসেদের নিযুক্ত করার বিষয়ে দীপ্তির ঝলক কিভাবে উন্নতিসাধন করে?
৭ দীপ্তির ঝলক ১৯৩৮ সালের জুন ১ এবং ১৫ তারিখের প্রহরীদুর্গ পত্রিকার মধ্যেও প্রকাশ পায়, যা দেখায় যে মণ্ডলীর দাসেদের নির্বাচন করা হয় না, কিন্তু ঐশিক মান অনুসারে নিযুক্ত করা হয়। ১৯৭১ সালে আরেকটি দীপ্তির ঝলক প্রকাশ করে দেয় যে প্রতিটি মণ্ডলী শুধুমাত্র একজন দাসের দ্বারা আর পরিচালিত হবে না। পরিবর্তে, প্রত্যেকটি মণ্ডলীতে থাকবে প্রাচীন বা অধ্যক্ষের গোষ্ঠী, যারা যিহোবার সাক্ষীদের পরিচালক গোষ্ঠীর দ্বারা নির্বাচিত হবে। সুতরাং, বিগত ৪০ বছর যাবৎ ক্রমবর্ধমান দীপ্তির দ্বারা প্রমাণ হয় যে প্রাচীন এবং ডিকানেরা যাদের এখন পরিচালক দাস বলা হয়, তাদের “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্ দাস” এর পরিচালক গোষ্ঠীর মাধ্যমে নিযুক্ত হওয়া উচিত। (মথি ২৪:৪৫-৪৭) এই সব কিছুই প্রেরিতদের সময়ের ধারা অনুসারে হয়েছিল। তীমথিয় ও তীতের মত ব্যক্তিরা প্রথম শতাব্দীর পরিচালক গোষ্ঠীর দ্বারা অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। (১ তীমথিয় ৩:১-৭; ৫:২২; তীত ১:৫-৯) এই সব কিছুই যিশাইয় ৬০:১৭ পদের উল্লেখযোগ্য পরিপূর্ণতা: “আমি পিত্তলের পরিবর্ত্তে সুবর্ণ, এবং লৌহের পরিবর্ত্তে রৌপ্য আনিব, কাষ্ঠের পরিবর্ত্তে পিত্তল, ও প্রস্তরের পরিবর্ত্তে লৌহ আনিব; আর আমি শান্তিকে তোমার অধ্যক্ষ করিব, ধার্ম্মিকতাকে তোমার শাসনকর্ত্তা করিব।”
৮. (ক) সমিতির কার্যনির্বাহ কিভাবে হবে, সেই বিষয়ে ক্রমবর্ধমান সত্য কী কী উন্নতি ঘটায়? (খ) পরিচালক গোষ্ঠীর কী কী কমিটি আছে এবং সেগুলি তত্ত্বাবধান অথবা কার্যনির্বাহ করার যথাযোগ্য স্থানগুলি কী কী?
৮ ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির কার্যনির্বাহ কিভাবে হবে, তাও ছিল বিবেচনার বিষয়। বহু বছর যাবৎ যিহোবার সাক্ষীদের পরিচালক গোষ্ঠী এবং ওয়াচ টাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি অফ পেনসিলভিনিয়ার পরিচালকদের সমিতি ছিল একই এবং সমস্ত বিষয়ই ছিল বহুলাংশে সভাপতির নিয়ন্ত্রণে। যেমন ১৯৭৭ সালের যিহোবার সাক্ষীদের বর্ষপুস্তকে আলোচিত হয়েছে, (পৃষ্ঠা ২৫৮-৯), ১৯৭৬ সাল থেকে পরিচালক গোষ্ঠী ছয়টি কমিটি নিয়ে সমিতির কাজ শুরু করে, যারা বিশ্বব্যাপী প্রতিটি কাজের একটি বিশেষ দিকের যত্ন নেয়। ব্যক্তিবিশেষ কমিটি সকলের ব্যক্তিগত বিষয়ের দেখাশোনা করে, যার অন্তর্ভুক্ত হল বিশ্বব্যাপী বেথেল পরিবারের সকল সদস্যের যত্ন নেওয়া। প্রকাশনা কমিটি সকল জাগতিক ও আইন সংক্রান্ত বিষয় পরিচালনা করে, যেমন সম্পত্তি এবং ছাপানোর বিষয়সকল। পরিচর্যা কমিটির দায়িত্ব হল সাক্ষ্যদানের কাজ, ভ্রমণ অধ্যক্ষ, অগ্রগামী ও মণ্ডলীর প্রকাশকদের কাজকর্ম পরিদর্শন করা। শিক্ষাদান কমিটি মণ্ডলীর সভাগুলি, বিশেষ অধিবেশনের দিনগুলি, সীমা অধিবেশনগুলি, জেলা এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলি এবং সেইসঙ্গে ঈশ্বরের লোকেদের আধ্যাত্মিক শিক্ষাদানের নিমিত্ত বিভিন্ন বিদ্যালয়গুলির কার্যনির্বাহের জন্য দায়িত্ববদ্ধ। লিখন কমিটি সর্বপ্রকার অনুবাদের কাজ প্রস্তুত করার কাজ দেখাশুনা করে এবং দৃঢ়নিশ্চিত হয় যেন সবকিছু শাস্ত্রের ভিত্তিতে হয়। সভাপতির কমিটি জরুরি অবস্থা এবং অন্যান্য জরুরি বিষয়গুলির যত্ন নেয়। এছাড়াও, ১৯৭০ এর দশকে ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির শাখা অফিসগুলি একজন অধ্যক্ষের পরিবর্তে একটি কমিটির দ্বারা পরিচালিত হতে শুরু করে।b
খ্রীষ্টীয় আচরণ সংক্রান্ত বিষয়ের উপর দীপ্তি
৯. সত্যের আলো কিভাবে খ্রীষ্টানদের, জাগতিক সরকারগুলির সাথে সম্পর্কের উপর প্রভাব বিস্তার করে?
৯ খ্রীষ্টীয় আচরণ সংক্রান্ত দীপ্তির বহু ঝলক ছড়িয়ে পড়ে। উদাহরণস্বরূপ, নিরপেক্ষতার বিষয়টি বিবেচনা করুন। বিশেষভাবে এই বিষয়টির উপর উজ্জ্বল দীপ্তির এক ঝলক ছড়িয়ে পড়ে ১৯৩৯ সালের ১লা নভেম্বরের প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় প্রকাশিত “নিরপেক্ষতা” প্রবন্ধটিতে। এই দীপ্তিটি ছিল কতই না সময়োপযোগী, ঠিক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরেই। প্রবন্ধটি নিরপেক্ষতাকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করে এবং পরিষ্কার করে দেয় যে জাতিগণের বিপরীতমুখী সংগ্রামে এবং রাজনৈতিক বিষয় সকলের মধ্যে খ্রীষ্টানেরা অবশ্যই যেন জড়িত না হয়। (মীখা ৪:৩, ৫; যোহন ১৭:১৪, ১৬) সকল জাতিগণের দ্বারা ঘৃণিত হওয়ার এটাই হল একটা কারণ। (মথি ২৪:৯) প্রাচীন ইস্রায়েলের যুদ্ধগুলি খ্রীষ্টানদের জন্য অতীতের কোন নজির রাখে না, যা যীশু মথি ২৬:৫২ পদে পরিষ্কার করে দিয়েছেন। এছাড়াও, বর্তমান সময়ে একটি রাজনৈতিক দেশও অস্তিত্বে নাই, যেটি ঐশতন্ত্র, ঈশ্বর দ্বারা শাসিত, ঠিক যেমন প্রাচীন ইস্রায়েলে ছিল।
১০. রক্তের প্রতি খ্রীষ্টানদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত, সে বিষয়ে দীপ্তির ঝলক কী প্রকাশ করে?
১০ রক্তের পবিত্রতার উপরও দীপ্তি প্রকাশ পায়। বাইবেল ছাত্ররা মনে করেছিলেন যে প্রেরিত ১৫:২৮, ২৯ পদে উল্লেখিত রক্তের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রাথমিকভাবে যিহূদী এবং পরজাতীয় খ্রীষ্টানদের মধ্যে শান্তি স্থাপনার্থে লেখা হয়েছিল। কিন্তু, প্রেরিত ২১:২৫ পদ দেখায় যে প্রেরিতদের সময়ে এই আদেশটি জাতিগণের মধ্য থেকে যে কেউ বিশ্বাসী হয়েছিল, তার প্রতিই এটা প্রযোজ্য ছিল। সুতরাং, রক্তের পবিত্রতার বিষয়টি সব খ্রীষ্টানদের প্রতি প্রযোজ্য, যেমন ১৯৪৫ সালের ১লা জুলাই প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় ব্যক্ত করা হয়েছে। এর অর্থ হল শুধুমাত্র পশুর রক্তই খাওয়া বারণ নয়, যেমন রক্ত দিয়ে তৈরি সসিজ খাদ্য, কিন্তু মানুষের রক্ত থেকেও পৃথক থাকা, যেমন শরীরে রক্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।
১১. তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে খ্রীষ্টানদের কিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি দেখা গিয়েছে?
১১ প্রথমে যে অভ্যাসগুলিকে কটাক্ষভাবে নেওয়া হত, দীপ্তি প্রখর হওয়ার ফলে পরবর্তীকালে সেই বিষয়গুলিকেই গম্ভীরভাবে বিবেচনা করা হয়েছিল। এর একটি উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায় তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে। ১৮৯৫ সালের ১লা আগস্ট, সায়নস্ ওয়াচ টাওয়ার-এ ভাই রাসেল ১ করিন্থীয় ১০:৩১ এবং ২ করিন্থীয় ৭:১ পদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়ে লেখেন: “আমি বুঝতে পারছি না যে কিভাবে এটা ঈশ্বরের গৌরব আনবে, অথবা একজন খ্রীষ্টানের পক্ষে মঙ্গলজনক হবে, যদি সে কোনভাবে তামাক ব্যবহার করে।” ১৯৭৩ সাল থেকে পরিষ্কারভাবে বুঝা গিয়েছিল যে কোন তামাক ব্যবহারকারী যিহোবার সাক্ষী হতে পারবে না। ১৯৭৬ সালে এটা পরিষ্কার করে দেওয়া হয় যে কোন সাক্ষীরাই জুয়াজাত সংস্থায় কাজ করে মণ্ডলীর মধ্যে সুনাম বজায় রাখতে পারবে না।
অন্যান্য সংশোধনগুলি
১২. (ক) দীপ্তির একটি ঝলক পিতরের হাতে রাজ্যের চাবিগুলি অর্পণ করার বিষয়ে কী প্রকাশ করে? (খ) যখন পিতর প্রতিটি চাবি ব্যবহার করেন, তখন পরিস্থিতি কেমন ছিল?
১২ পিতরকে যীশু যে রূপক চাবিগুলি দিয়েছিলেন, তার উপরেও দীপ্তি আরও বেড়ে ওঠে। বাইবেল ছাত্ররা ভেবেছিলেন যে পিতর দুটি চাবি পেয়েছিলেন যা ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হবার জন্য রাস্তা খুলে দিয়েছিল—যার একটিকে সা.শ. ৩৩ সালে পঞ্চাশত্তমীর দিনে এবং অন্যটিকে সা.শ. ৩৬ সালে পরজাতীয়দের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় যখন পিতর কর্ণীলিয়ের কাছে প্রচার করেন। (প্রেরিত ২:১৪-৪১; ১০:৩৪-৪৮) যথা সময়ে, দেখা যায় এর মধ্যে তৃতীয় একটি দল রয়েছে—তারা হল শমরীয়। পিতর দ্বিতীয় চাবিটি ব্যবহার করেছিলেন তাদের সামনে রাজ্যের সুযোগগুলি খুলে দেওয়ার জন্য। (প্রেরিত ৮:১৪-১৭) সুতরাং, তৃতীয় চাবিটি তখনই ব্যবহার করা হয়েছিল যখন পিতর কর্ণীলিয়ের কাছে প্রচার করেছিলেন।—প্রহরীদুর্গ, অক্টোবর ১, ১৯৭৯, পৃষ্ঠা ১৬-২২, ২৬.
১৩. যোহন ১০ অধ্যায়ে উল্লেখিত মেষেদের খোঁয়াড়ের বিষয়ে কিধরনের দীপ্তির ঝলক দেখা যায়?
১৩ আরেকটি দীপ্তির আভা থেকে উপলব্ধি করা যায় যে যীশু শুধুমাত্র দুটি নয়, কিন্তু তিনটি মেষের খোঁয়াড়ের বিষয়ে বলেছিলেন। (যোহন ১০ অধ্যায়) এগুলি ছিল (১) যিহূদীদের খোঁয়াড় যাদের যোহন বাপ্তাইজক ছিলেন দ্বাররক্ষক, (২) রাজ্যের অভিষিক্ত উত্তরাধিকারীদের খোঁয়াড়—এবং (৩) “অপর মেষ” দের খোঁয়াড়, যাদের এক পাথিব আশা আছে।—যোহন ১০:২, ৩, ১৫, ১৬; প্রহরীদুর্গ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ১৯৮৪, পৃষ্ঠা ১০-২০.
১৪. পঞ্চাশত্তমের সমতুল্য যোবেল মহোৎসবের শুরুর বিষয়ে বর্ধিত দীপ্তি কিভাবে বিষয়গুলিকে পরিষ্কার করে দেয়?
১৪ পঞ্চাশত্তম বছরের যোবেল মহোৎসবের মূল অনুরূপ সম্পর্কে উপলব্ধিবোধও আরও পরিষ্কার হয়। নিয়ম ব্যবস্থার অধীনে প্রত্যেক পঞ্চাশত্তম বছর ছিল যোবেল মহোৎসব, যখন সমস্ত জিনিসপত্র তাদের নিজেদের আধিকারিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হত। (লেবীয়পুস্তক ২৫:১০) দীর্ঘদিন যাবৎ এটাই বুঝা গিয়েছিল যে এটি খ্রীষ্টের সহস্র বছরের রাজত্বকে চিত্রিত করছে। কিন্তু, খুব সম্প্রতিকালে উপলব্ধি করা গিয়েছিল যে পঞ্চাশত্তম বছরের যোবেল মহোৎসব প্রকৃতপক্ষে স.শ. ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর দিনে শুরু হয়েছিল, যখন উপস্থিত সকলের উপর পবিত্র আত্মা বর্ষিত হয়, তখন তারা মোশির নিয়ম চুক্তির সকল বন্দীত্ব থেকে মুক্ত হয়।—প্রহরীদুর্গ, জানুয়ারি ১, ১৯৮৭, পৃষ্ঠা ১৮-২৮.
পরিভাষার উপর বর্ধিত দীপ্তি
১৫. “পরিকল্পনা” শব্দটির ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিধরনের দীপ্তি প্রকাশ পায়?
১৫ “উপদেশক মনোহর বাক্য, এবং যাহা সরলভাবে লিখিত হইয়াছে, অর্থাৎ সত্যের বাক্য, প্রাপ্ত হইবার জন্য অনুসন্ধান করিতেন।” (উপদেশক ১২:১০) এই কথাগুলি হয়ত আমাদের এখনকার বিষয়বস্তুর প্রতিও প্রযোজ্য, কারণ দীপ্তি শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ মতবাদ ও আচরণের উপরই দেখা যায়নি, কিন্তু খ্রীষ্টীয় পরিভাষা এবং তার যথার্থ অর্থের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, বাইবেল ছাত্রদের কাছে যে পুস্তকখানি সবচেয়ে প্রিয় ছিল, তা হল স্টাডিস ইন দি স্ক্রিপচার্স এর ১ম খণ্ড, যার নাম ছিল যুগের এক ঐশিক পরিকল্পনা (ইংরাজি) যাইহোক, যথাসময়ে বুঝতে পারা গিয়েছিল যে ঈশ্বরের বাক্য বলে যে শুধুমাত্র মানুষই পরিকল্পনা করে থাকে। (হিতোপদেশ ১৯:২১) যিহোবা পরিকল্পনা করছেন, এমন কথা শাস্ত্রে কোথাও বলা নেই। তাঁর পরিকল্পনা করার প্রয়োজন নেই। যা কিছু তিনি উদ্দেশ্য করেন, তা সফল হবেই কারণ তাঁর অফুরন্ত প্রজ্ঞা ও শক্তি রয়েছে, যা আমরা ইফিষীয় ১:১০ পদে পড়ি: “তাঁহার সেই হিতসঙ্কল্প অনুসারে যাহা তিনি কালের পূর্ণতার বিধান লক্ষ্য করিয়া তাঁহাতে পূর্ব্বে সঙ্কল্প করিয়াছিলেন।” সেইজন্য ধীরে ধীরে এটাই দেখা যায় যে যখন যিহোবাকে উল্লেখ করে কিছু বলা হয়, তখন “সঙ্কল্প” শব্দটি আরও বেশি যথার্থ হয়ে দাঁড়ায়।
১৬. লূক ২:১৪ পদের সঠিক উপলব্ধিবোধের জন্য ক্রমাগতভাবে কী দেখা যায়?
১৬ তারপর আসে লূক ২:১৪ পদের পরিষ্কার অর্থ বুঝবার সময়। কিং জমস সংস্করণ অনুসারে এটিকে এইভাবে পড়া হয়: “ঊর্দ্ধলোকে ঈশ্বরের মহিমা, পৃথিবীতে [তাঁহার] প্রীতিপাত্র মনুষ্যদের মধ্যে শান্তি।” দেখা গিয়েছিল যে এটি প্রকৃত অর্থ ব্যক্ত করেনি, কারণ ঈশ্বরের দয়া দুষ্টদের প্রতি দেখান হয়নি। সেইজন্য সাক্ষীরা মনে করেছিলেন যে ঈশ্বরের সঙ্গে যারা ভাল সুনাম রেখেছে, তাদের শান্তির কথাই বলা হচ্ছে। সেইজন্য যে সব ব্যক্তিরা বাইবেলের প্রতি আগ্রহী, তাদের প্রীতিপাত্র বলা হয়েছিল। কিন্তু তখন বুঝা গিয়েছিল যে দয়া মানুষের পক্ষ থেকে নয়, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষ থেকে। তাই নিউ ওয়ার্ল্ড ট্রান্সলেশন-এ লূক ২:১৪ পদের পাদটীকা সেই সব “ব্যক্তি যাদের তিনি [ঈশ্বর] অনুমোদন করেন,” তাদের কথা ব্যক্ত করে। সকল খ্রীষ্টানেরা, যারা তাদের উৎসর্গীকরণের প্রতিশ্রুতি অনুসারে জীবন যাপন করছে, তাদের সকলের কাছেই ঈশ্বরের অনুমোদন আছে।
১৭, ১৮. যিহোবা কিসের যথার্থতা মহিমান্বিত করবেন এবং কী তিনি পবিত্র করবেন?
১৭ একইভাবে, দীর্ঘকালব্যাপী সাক্ষীরা যিহোবার নামকে মহিমান্বিত করার কথা উল্লেখ করে এসেছে। কিন্তু শয়তান কি কখনও যিহোবার নামের উপর সন্দেহ জাগাবার চেষ্টা করেছে? সেই বিষয়ে শয়তানের কোন প্রতিনিধি কি কখনও যিহোবার নামকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন তুলেছে, যে তাঁর এই নামের প্রতি যিহোবার কোন অধিকার নেই? না, কখনই না। না যিহোবার নামকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ডাকা হয়নি, যে সেই নামের যথার্থতাকে মহিমান্বিত করতে হবে। সেইজন্য ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির সাম্প্রতিক প্রকাশনাগুলি যিহোবার নামের যথার্থতাকে মহিমান্বিত করার কথা উল্লেখ করে না। পরিবর্তে, সেগুলি যিহোবার সার্বভৌমত্ব এর যথার্থতাকে মহিমান্বিত করার এবং তাঁর নাম পবিত্রীকৃত করার কথা বলে। এটি যীশু আমাদের যেভাবে প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন, তার সাথে সামঞ্জস্য রাখে: “তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক।” (মথি ৬:৯) বারংবার যিহোবা বলেছিলেন যে তিনি তাঁর নামকে পবিত্রীকৃত করবেন, যার বিরুদ্ধে ইস্রায়েলীয়রা কোন প্রশ্ন তোলেনি, কিন্তু অপবিত্রই করেছিল।—যিহিষ্কেল ২০:৯, ১৪, ২২; ৩৬:২৩.
১৮ আগ্রহের বিষয় যে, ১৯৭১ সালে প্রকাশিত “জাতিগণ জানিবে যে আমিই যিহোবা”—কিভাবে? (ইংরাজি) বইটি এই পার্থক্যটি দেখায়: “যিহোবার সার্বভৌমত্বকে মহিমান্বিত এবং তাঁর নামকে গৌরবান্বিত করবার জন্য যীশু খ্রীষ্ট সংগ্রাম করেন।” (পৃষ্ঠা ৩৬৪-৫) ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত “সহস্র বছরব্যাপী ঈশ্বরের রাজ্য সন্নিকট” বইটি জানায়: “আগত ‘মহাক্লেশই’ হল সময়, যখন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যিহোবা তাঁর সার্বিক সার্বভৌমত্বকে প্রতিষ্ঠা করবেন এবং তাঁর যথাযোগ্য নামকে পবিত্র করবেন।” (পৃষ্ঠা ৪০৯) তারপর, ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত জগতের দুর্বিষহ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ সন্নিকট! (ইংরাজি) বইটি জানায়: “নিখিলসৃষ্টির ইতিহাসে সর্বোৎকৃষ্ট ঘটনাটি তখনই সম্পাদিত হবে, যখন যিহোবার সার্বিক সার্বভৌমত্ব মহিমান্বিত এবং তাঁর পবিত্র নামের পবিত্রীকরণ করা হবে।”—পৃষ্ঠা ২৮১.
১৯, ২০. আধ্যাত্মিক দীপ্তির ঝলকগুলির বিষয়ে আমরা কিভাবে উপলব্ধিবোধ দেখাতে পারি?
১৯ যিহোবার লোকেরা কতই না আশীর্বাদপ্রাপ্ত যে তারা এই আধ্যাত্মিক দীপ্তিতে আমোদ করে! এর সম্পূর্ণ বিপরীতে, খ্রীষ্টীয় জগতের নেতারা যে আধ্যাত্মিক অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিস্থিতিতে নিজেদের খুঁজে পায়, তা একজন যাজকের কথায় প্রকাশ পায়: “এত পাপ কেন? কেন দুঃখকষ্ট? আর দিয়াবলই বা কেন? যখন আমি স্বর্গে যাব, তখন এই প্রশ্নগুলি আমি প্রভুকে জিজ্ঞাসা করব।” কিন্তু যিহোবার সাক্ষীরা তাকে বলে দিতে পারে যে কেন এগুলি ঘটছে: কারণ হল যিহোবার সার্বভৌমত্বের যথার্থতার বিচার্য বিষয়টি এবং দিয়াবলের বিরোধিতা সত্ত্বেও মানুষ ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রাখবে কি না সেই প্রশ্নটি।
২০ বিগত বছরগুলিতে মুখ্য ও গৌণ দীপ্তির ঝলকগুলি যিহোবার উৎসর্গীকৃত দাসেদের গতিবিধিকে আলোকিত করে আসছে। আর তা ঘটেছে গীতসংহিতা ৯৭:১১ পদ এবং হিতোপদেশ ৪:১৮ পদের পরিপূর্ণতাস্বরূপ। কিন্তু আমরা যেন কখনও ভুলে না যাই, যে দীপ্তিতে চলার অর্থ হল বর্ধিত দীপ্তির প্রতি উপলব্ধি দেখান এবং সেইমত জীবনযাপন করা। যেমন আমরা ইতিমধ্যেই দেখেছি যে এই ক্রমবর্ধমান দীপ্তি আমাদের আচরণ এবং আমাদের প্রচার করার দায়িত্বকে অন্তর্ভুক্ত করে।
[পাদটীকাগুলো]
a এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিক্রিয়ায় ১৯২৯ সালের জুন ১ এবং জুন ১৫ তারিখের প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় “প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্ত্তৃপক্ষ”-কে যিহোবা ঈশ্বর এবং যীশু খ্রীষ্টরূপে চিত্রিত করা হয়েছিল। এই পরিস্থিতিকে ১৯৬২ সালে সংশোধন করা হয়।
b এপ্রিল ১৫, ১৯৯২ সালের প্রহরীদুর্গ পত্রিকা ঘোষণা করে যে “অপর মেষ” থেকে নির্বাচিত কিছু ভাইকে পরিচালক গোষ্ঠী কমিটির সাথে সহযোগিতা করার জন্য নিযুক্ত করা হয়, ঠিক ইষ্রার দিনে নথীনীয়দের মত।—যোহন ১০:১৬; ইষ্রা ২:৫৮.
আপনি কি স্মরণ করতে পারেন?
◻ “প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্ত্তৃপক্ষদের” বিষয়বস্তুটির উপর কী দীপ্তি প্রকাশ পায়?
◻ দীপ্তির ঝলক সাংগঠনিক ক্ষেত্রে কী উন্নতিবিধান করেছে?
◻ বর্ধিত দীপ্তি কিভাবে খ্রীষ্টীয় আচরণের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে?
◻ আধ্যাত্মিক দীপ্তি বিশেষ বিশেষ শাস্ত্রীয় বিষয়গুলিকে উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে কিধরনের সূক্ষ্মতাবোধ দিয়েছে?
[২৫ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
Keys on page 24: Drawing based on photo taken in Cooper-Hewitt, National Design Museum, Smithsonian Institution