ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৫ ৬/১ পৃষ্ঠা ২৬-২৯
  • ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত পরিবারে ঈশ্বরীয় বাধ্যতা

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত পরিবারে ঈশ্বরীয় বাধ্যতা
  • ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • বাধ্য হওয়া কেন এত কঠিন?
  • ঈশ্বর আপনার কাছ থেকে কী আশা করেন?
  • যে সব সাথীরা ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখাতে সফল হয়েছে
  • ছেলেমেয়েরা যারা ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখায়
  • অন্যেরা কী করতে পারে
  • ঈশ্বরীয় বাধ্যতার আশীর্বাদ ও উপকারগুলি
  • বাধ্য হতে ছোটবেলা থেকে কি শেখানো দরকার?
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনার পরিবারের জন্য এক স্থায়ী ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন
    পারিবারিক সুখের রহস্য
  • বিভক্ত এক পরিবারেও সুখী হওয়া সম্ভব
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবা আপনার বাধ্যতাকে মূল্যবান বলে গণ্য করেন
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৫ ৬/১ পৃষ্ঠা ২৬-২৯

ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত পরিবারে ঈশ্বরীয় বাধ্যতা

“এটি দৈহিক আঘাতের থেকে আরও বেদনাদায়ক। . . . আমার এমন মনে হয় যে যেন দেহের চারিদিকে কেটে গিয়েছে, কিন্তু লোকে তা দেখতে পাচ্ছে না।” “কয়েক সময় আমার হাল ছেড়ে দিতে ইচ্ছা করে . . . অথবা ঘর ছেড়ে যেতে এবং কখন ফিরে না আসতে ইচ্ছা করে।” “এক এক সময় পরিষ্কারভাবে চিন্তা করতে পারি না।”

এই আবেগপূর্ণ কথাগুলি হতাশা এবং একাকীত্বের অনুভূতি প্রকাশ করে। এই অনুভূতিগুলি মৌখিকভাবে পীড়িত লোকেদের কাছ থেকে আসে যারা হয়ত—অভিযোগ, অশ্লীল নাম ধরে ডাকা, সম্পূর্ণভাবে অবজ্ঞা করা—এবং এমনকি নিজেদের সাথী কিংবা অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দৈহিক পীড়ন হতে পারে। কেন এই লোকেরা এইধরনের ব্যবহার পেয়ে থাকে? শুধুমাত্র ধর্মীয় ভিন্নমতের জন্য তা করা হয়। এই পরিস্থিতিতে থেকে ধর্মীয় দিক দিয়ে বিভক্ত পরিবারে যিহোবার উপাসনা করা সত্যই এক চ্যালেঞ্জস্বরূপ। তবুও, এইভাবে পীড়িত খ্রীষ্টানেরা সফলতার সাথে ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখিয়েছে।

এটি আনন্দের বিষয় যে, এইধরনের হতাশা ও চাপ ধর্মীয় দিক দিয়ে বিভক্ত সব পরিবারে দেখা যায় না। তবুও তা রয়েছে। আপনার পরিবার কি এর সাথে মিলে যায়? তাহলে, আপনি হয়ত আপনার সাথী অথবা বাবামাদের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে কঠিনবোধ করতে পারেন। আপনি যদি এইরকম পরিস্থিতিতে একজন স্ত্রী অথবা সেই পরিবেশে একজন ছেলে বা মেয়ে হন, তাহলে আপনি ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত পরিবারে কিভাবে ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখাতে পারেন? অন্যেরা কিরকম সমর্থন দিতে পারে? ঈশ্বর এই পরিস্থিতিকে কিভাবে দেখেন?

বাধ্য হওয়া কেন এত কঠিন?

জগতের আত্মকেন্দ্রিক ও অকৃতজ্ঞতা এবং তার সাথে আপনার নিজস্ব অসিদ্ধ প্রবণতা ঈশ্বরীয় বাধ্যতাকে অনবরত লড়াইয়ে পরিণত করতে প্রভাবিত করে। শয়তান তা জানে এবং সে আপনার মনোভাবকে ভাঙবার চেষ্টা করে চলেছে। পরিবারের সেই সব সদস্য যাদের ঈশ্বরীয় মানের প্রতি খুব অল্প উপলব্ধিবোধ অথবা কোন উপলব্ধিবোধ ও সম্মান নেই তাদের সে ব্যবহার করে। আপনার উচ্চ আধ্যাত্মিক ও নৈতিক মানগুলি আপনার অবিশ্বাসী পরিবারের থেকে অনেক ভিন্ন। এর অর্থ এই দাঁড়ায় আচরণ ও কাজের ক্ষেত্রে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি। (১ পিতর ৪:৪) আপনাকে আপনার খ্রীষ্টীয় মান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ খুব ঘোরতর হতে পারে, যেহেতু আপনি এই আদেশটি মেনেছেন: “অন্ধকারের ফলহীন কর্ম্ম সকলের সহভাগী হইও না।” (ইফিষীয় ৫:১১) তাদের চোখে যা কিছু আপনি করেন তা এখন আর ভাল নয়। এটি আপনার ধর্মের কারণবশত হয়েছে। একজন মা, যখন অসুস্থ ছেলেমেয়েদের দ্বারা ভারগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তখন স্বামীর কাছ থেকে সাহায্য চাওয়ার সময় ব্যঙ্গার্থক উত্তর পায়, “তোমার কাছে ধর্মের জন্য সময় আছে; তোমার সাহায্যের দরকার নেই।” এইধরনের মন্তব্যগুলি বাধ্য হওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে তোলে।

তারপর অনেক সময় আপনি হয়ত এমন বিষয় সকলের উপর ভিন্ন মত পোষণ করতে পারেন যা হয়ত সরাসরি শাস্ত্রকে লঙ্ঘন করে না। তবুও, আপনি বুঝতে পারেন আপনি পরিবারের একজন সদস্য এবং সেইজন্য আপনার কয়েকটি দায়িত্ব আছে। “যেভাবে আমার বাবা আমাদের সাথে ব্যবহার করেন তা দেখাতো যে তিনি একাকীত্ববোধ করেন, তা দেখে আমি মানসিক দিক দিয়ে কষ্ট পেতাম,” কোণি বলে। “আমি নিজেকে বার বার মনে করাতাম যে আমি যেন আমার পিতার বিরোধিতাকে ঘৃণা না করি। যেভাবে তিনি প্রতিক্রিয়া কিংবা আমাদের মান প্রত্যাখ্যান করতেন সেই বিষয়ে আমাকে অনবরত মনে করতে হত যে নিশ্চয়ই এর পিছনে কোন বড় কারণ আছে। শয়তান হল এই বিধিব্যবস্থার শাসক।” সুসান যিনি অন্য ধর্মে বিশ্বাসীর সাথে বিবাহিত, বিশ্বাসপূর্বক বলেন: “আমি প্রথমে মনে করতাম যে বিচ্ছেদ করে ফেলি—কিন্তু এখন আমি তা মনে করি না। আমি জানি যে শয়তান, আমাকে পরীক্ষা করার জন্য তাকে ব্যবহার করছে।”

আপনাকে অযোগ্য মনে করানো শয়তানের যে প্রচেষ্টা খুব জোরদার হতে পারে। অনেক দিন চলে যেতে পারে যখন আপনি আপনার সাথীর সাথে নাও কথা বলতে পারেন। জীবন খুব একা হয়ে পড়তে পারে। এটি বিশ্বাস ও আত্ম-সম্মানের ক্ষতি করতে পারে এবং আপনার ঈশ্বরীয় বাধ্যতাকে পরীক্ষা করতে পারে। ছেলেমেয়েরাও মানসিক ও দৈহিক ক্ষতি অনুভব করে। একটি ক্ষেত্রে, যদিও তাদের বাবামা বিরোধিতা করেছিল, তিনজন যুবক যারা ঈশ্বরের সেবক ছিল তারা বিশ্বস্তভাবে খ্রীষ্টীয় সভাগুলিতে যোগদান করে চলে। এদের মধ্যে একজন যে এখন পূর্ণ-সময়ের পরিচারক স্বীকার করে: “আমরা মানসিক দিক দিয়ে অসাড় ও পরিশ্রান্ত অনুভব করতাম; আমরা ঘুমাতে পারতাম না; এটি আমাদের হৃদয়কে ভেঙ্গে দিত।”

ঈশ্বর আপনার কাছ থেকে কী আশা করেন?

ঈশ্বরের প্রতি বাধ্যতা সবসময় প্রথমে আসে এবং তারপরে স্বামীরূপ মস্তকের প্রতি আসে সর্বদাআপেক্ষিক বাধ্যতা যেমন যিহোবা আমাদের নির্দেশ করেন। (প্রেরিত ৫:২৯) এটি হয়ত কষ্টকর হতে পারে, কিন্তু তা সম্ভবপর। সাহায্যের জন্য ঈশ্বরের প্রতি দৃষ্টিপাত করুন। আপনি যেন “আত্মায় ও সত্যে ভজনা” করেন এবং তাঁর নির্দেশ শোনেন ও বশ্যতা মেনে চলেন তা তিনি চান। (যোহন ৪:২৪) ঈশ্বরের জ্ঞান যদি সঠিক হৃদয়ে পৌঁছায় তা ইচ্ছুক বাধ্যতা নিয়ে আসে। যদিও হয়ত আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে, কিন্তু যিহোবা অথবা তাঁর বাক্যের কোন পরিবর্তন ঘটে না। (মালাখি ৩:৬; যাকোব ১:১৭) যিহোবা স্বামীকে মস্তক হওয়ার কার্যভার দিয়েছেন। তা তখনও বলবৎ থাকে যদি সে খ্রীষ্টের মস্তককে মানে কিংবা না মানে। (১ করিন্থীয় ১১:৩) যদিও এইধরনের মস্তকের সাথে বাশ করা কঠিন হতে পারে আপনি অনবরত অপব্যবহার পেতে থাকেন, শিষ্য যাকোব বলেন: “যে জ্ঞান উপর হইতে আইসে, তাহা . . . সহজে অনুনীত।” (যাকোব ৩:১৭) এই মস্তক পদকে পরিষ্কাররূপে স্বীকার ও গ্রাহ্য করার জন্য আমাদের ঈশ্বরের আত্মার প্রয়োজন আছে বিশেষ করে প্রেমের ফল।—গালাতীয় ৫:২২, ২৩.

যদি আপনি কাউকে ভালবাসেন, তাহলে ঐশিক অনুমোদিত কর্তৃত্বের প্রতি ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখানো সহজ হয়ে যায়। ইফিষীয় ৫:৩৩ পদ উপদেশ দেয়: “তোমরাও প্রত্যেক আপন আপন স্ত্রীকে তদ্রূপ আপনার মত প্রেম কর; কিন্তু স্ত্রীর উচিত যেন সে স্বামীকে ভয় করে।”

যীশুর বিষয় চিন্তা করুন। যদিও তিনি মৌখিক ও দৈহিকভাবে পীড়িত হয়েছিলেন, কিন্তু কাউকে তিনি তিরস্কার করেননি। তিনি নিখুঁত রেকর্ড বজায় রেখেছিলেন। (১ পিতর ২:২২, ২৩) যীশুর পক্ষে এই তীব্র অপব্যবহার সহ্য করার জন্য প্রচন্ড সাহসের ও তাঁর পিতা, যিহোবার প্রতি দৃঢ় প্রেমের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু, প্রেম “সকলই ধৈর্য্যপূর্ব্বক সহ্য করে।”—১ করিন্থীয় ১৩:৪-৮.

পৌল তার সহকর্মী তীমথিয়কে মনে করিয়ে দেন এবং তিনি আজকে আমাদেরও মনে করিয়ে দেন: “ঈশ্বর আমাদিগকে ভীরুতার আত্মা দেন নাই, কিন্তু শক্তির, প্রেমের ও সুবুদ্ধির আত্মা দিয়াছেন।” (২ তীমথিয় ১:৭) যিহোবা ও যীশুর প্রতি গভীর প্রেম আপনাকে ঈশ্বরীয় বাধ্যতা রাখতে উৎসাহিত করতে পারে যখন পরিস্থিতি হয়ত সহ্যের অতিরিক্ত হয়ে ওঠে। বিচক্ষণতা আপনাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে এবং যিহোবা ও যীশু খ্রীষ্টের সাথে সম্পর্ক সামনে রাখতে সাহায্য করবে।—তুলনা করুন ফিলিপীয় ৩:৮-১১.

যে সব সাথীরা ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখাতে সফল হয়েছে

অনেক সময় হয়ত আপনাকে বহুদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে এই দেখবার জন্য যে যিহোবা কিভাবে সমস্যার সমাধান করবেন। তথাপি তাঁর হাত ছোট কখনও নয়। “যিহোবা যে অধিকার এবং সুযোগ দেন তা করে যান—সভায় ও সম্মেলনে উপাসনা করা, পরিচর্যা করা, প্রার্থনা করা,” একজন উপদেশ দেন, যিনি সফলতার সাথে ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখিয়ে চলেছেন। আপনি যে কাজ সম্পন্ন করেন তাই শুধু যিহোবা আশীর্বাদ করেন না, কিন্তু আপনার প্রচেষ্টাকেও আশীর্বাদ করেন। ২ করিন্থীয় ৪:১৭ পদে পৌল বলেছিলেন যে, ‘আমাদের যে ক্লেশ তাহা ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু তাহা অনুপমরূপে আমাদের জন্য অনন্তকালস্থায়ী প্রতাপ সাধন করিতেছে।’ এর উপর চিন্তা করুন। এটি আপনার ক্ষেত্রে দৃঢ়তার একটি বিষয় হতে পারে। এক স্ত্রী চিন্তা করেন: “আমার পারিবারিক জীবন ভালর দিকে যাচ্ছে না, মাঝে মাঝে আমি চিন্তা করি যে যিহোবা আমার বিষয় খুশি কী না। কিন্তু একটা বিষয় যা আমি আশীর্বাদ হিসাবে নিই যে এই সব পরিস্থিতির মধ্যে থেকে আমি আমার স্বামীর থেকে আরও উত্তমভাবে কাটিয়ে উঠতে পারি। যেহেতু আমরা জানি যে আমাদের কর্মগুলি যিহোবাকে খুশি করে, তাই এই সংঘর্ষগুলি যথার্থ করে তোলে।”

যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেন যে যা আমাদের সহ্যের বাইরে তা তিনি হতে দেবেন না। তাঁর উপর আস্থা রাখুন। তিনি আপনার থেকে বেশি জানেন এবং আপনি নিজেকে যতটুকু জানেন তার থেকে তিনি আপনাকে বেশি জানেন। (রোমীয় ৮:৩৫-৩৯; ১১:৩৩; ১ করিন্থীয় ১০:১৩) কঠিন পরিস্থিতির সময়ে যিহোবার কাছে প্রার্থনা সাহায্যকারী হতে পারে। নির্দেশের জন্য যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন, বিশেষ করে সেই সব পরিস্থিতিতে যখন আপনি জানেন না কোন্‌ পথ অবলম্বন করবেন বা কিভাবে পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করবেন। (হিতোপদেশ ৩:৫; ১ পিতর ৩:১২) আপনার জীবনে কর্তৃত্বের কাছে বাধ্য হওয়ার জন্য তাঁর কাছে ধৈর্য, আত্ম-নিয়ন্ত্রণ এবং নম্রতার জন্য অনবরত যাঞ্চা করুন। গীতরচক বলেছিলেন: “সদাপ্রভু মম শৈল, মম দুর্গ, ও মম রক্ষাকর্ত্তা।” (গীতসংহিতা ১৮:২) যারা ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত পরিবারে বাস করে তাদের জন্য এই বিষয়টি মনে করা বিশেষ করে শক্তিশালী হতে পারে।

সর্বোপরি, আপনার বিবাহকে সুখী করার জন্য মন প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করুন। হ্যাঁ, যীশু আগের থেকে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে সুসমাচার বিভক্ত করবে। কিন্তু, প্রার্থনা করুন যে এই বিভক্তিকরণ আপনার মনোভাব ও আচরণের জন্য যেন না হয়। (মথি ১০:৩৫, ৩৬) যদি এই সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা দেখানো হয় তা দাম্পত্যের সমস্যাগুলিকে অনেকটা কমিয়ে দিতে পারে। শুধু যদি আপনি এই সঠিক মনোভাব দেখান তা হয়ত এই সমস্যাগুলি খারাপ ও বিরোধিতার পর্যায়ে পৌঁছানো থেকে এড়ানো যেতে পারে। ধৈর্য ও প্রেম খুব গুরুত্বপূর্ণ। “কোমল” এবং “সহনশীল” হোন।—২ তীমথিয় ২:২৪.

প্রেরিত পৌল “সর্ব্বজনের কাছে সর্ব্ববিধ” হয়েছিলেন। (১ করিন্থীয় ৯:২২) তাই একইভাবে, খ্রীষ্টীয় কর্তব্যগুলির সাথে আপস না করে আপনি হয়ত আপনার তালিকাকে এমনভাবে ঠিক করতে পারেন যাতে করে আপনি আপনার সাথী ও পরিবারের সাথে আরও সময় ব্যয় করতে পারেন। যার সাথে জীবন কাটাবেন বলে ঠিক করেছেন তার সাথে যতটা সম্ভব সময় ব্যয় করুন। খ্রীষ্টীয় বিবেচনা দেখান। এটি হল ঈশ্বরীয় বাধ্যতার এক অভিব্যক্তি।

এক ঈশ্বরভীরু এবং বশীভূত স্ত্রী যিনি নমনীয় ও সমব্যথী তার পক্ষে ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখানো সহজ হয়ে ওঠে। (ইফিষীয় ৫:২২, ২৩) যে বাক্যগুলি মধুর, “লবণে আস্বাদযুক্ত,” তা সম্ভাব্য ঝগড়ার ব্যাপকতাকে কমিয়ে দেয়।—কলসীয় ৪:৬; হিতোপদেশ ১৫:১.

ঈশ্বরীয় প্রজ্ঞা আপনাকে দ্বিমত তাড়াতাড়ি ঠিক করে নিতে এবং যে বাক্যগুলি উত্তম আর যা গড়ে তোলে তার দ্বারা শান্তি পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে উপদেশ দেয়, “কোপাবেশ” পরিস্থিতিতে শুতে যাওয়ার বিরুদ্ধে বলে। (ইফিষীয় ৪:২৬, ২৯, ৩১) এর জন্য নম্রতার প্রয়োজন আছে। শক্তির জন্য গভীরভাবে যিহোবার উপর নির্ভর করুন। এক খ্রীষ্টীয় স্ত্রী নম্রভাবে স্বীকার করেছিলেন: “যিহোবার কাছে গভীরভাবে প্রার্থনা করার পর, আমি উপলব্ধি করেছি যে যিহোবার আত্মা আমাকে আমার সাথীর প্রতি দৃষ্টি আরও প্রেমপূর্ণ করতে শক্তি যোগাচ্ছে।” ঈশ্বরের বাক্য উপদেশ দেয়: “মন্দের পরিশোধে কাহারও মন্দ করিও না; . . . উত্তমের দ্বারা মন্দকে পরাজয় কর।” (রোমীয় ১২:১৭-২১) এটি হল বিজ্ঞ উপদেশ এবং ঈশ্বরীয় বাধ্যতার পথ।

ছেলেমেয়েরা যারা ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখায়

ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত পরিবারে ছেলেমেয়েদের যিহোবার উপদেশ হল: “তোমরা সর্ব্ববিষয়ে পিতামাতার আজ্ঞাবহ হও, কেননা তাহাই প্রভুতে তুষ্টিজনক।” (কলসীয় ৩:২০) লক্ষ্য করুন যে প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে এখানে আনা হয়েছে। তাই, পিতামাতার প্রতি বাধ্যতা সম্পূর্ণ নয়। কিছুটা ক্ষেত্রে প্রেরিত ৫:২৯ পদের উপদেশ, “মনুষ্যদের অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন” করা খ্রীষ্টীয় যুবক-যুবতীদের জন্যও প্রযোজ্য। এমন পরিস্থিতি আসতে পারে যখন তোমাকে শাস্ত্রীয় ভিত্তিতে যা ঠিক সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। মিথ্যা ধর্মে কোন কাজে অংশগ্রহণ না করার জন্য তোমাকে হয়ত শাস্তি গ্রহণ করতে হতে পারে। যদিও এটি অপ্রীতিকর আশা, তবুও তুমি সান্ত্বনা পেতে ও এমনকি আনন্দিত হতে পার এই জেনে যে ঈশ্বরেরর চোখে যা সঠিক তা করার জন্য তুমি কষ্ট পাচ্ছ।—১ পিতর ২:১৯, ২০.

যেহেতু তোমার চিন্তাধারা বাইবেলের নীতিগুলির দ্বারা পরিচালিত, তাই হয়ত তুমি কোন কোন বিষয়ে বাবামার সাথে ভিন্ন মত পোষণ করতে পার। এটি তাদের তোমার শত্রু করে তোলে না। এমনকি যদিও তারা যিহোবার উৎসর্গীকৃত দাস নয়, তবুও তারা উপযুক্ত সম্মান পাওয়ার যোগ্য। (ইফিষীয় ৬:২) শলোমন বলেছিলেন: “তোমার জন্মদাতা পিতার কথা শুন, তোমার মাতা বৃদ্ধ হইলে তাঁহাকে তুচ্ছ করিও না।” (হিতোপদেশ ২৩:২২) তুমি যে ভিন্ন বিশ্বাস অবলম্বন করছ যা তাদের কাছে অদ্ভুত লাগে সেই বিষয়ে যে তাদের দুঃখ তা বুঝবার চেষ্টা কর। তাদের সাথে কথা বল এবং “তোমার যুক্তিবাদিতা জানতে দাও।” (ফিলিপীয় ৪:৫, NW) তোমার অনুভূতি ও চিন্তাধারাগুলি তাদের সাথে বন্টন করে নাও। ঈশ্বরীয় নীতিগুলির প্রতি দৃঢ় থাক, কিন্তু “যদি সাধ্য হয়, তোমাদের যত দূর হাত থাকে, মনুষ্যমাত্রের সহিত শান্তিতে থাক।” (রোমীয় ১২:১৮) বস্তুতপক্ষে তুমি যে এখন পিতামাদের নিয়ম মেনে চল তা যিহোবাকে দেখায় যে তুমি তাঁর রাজ্যে প্রজা হিসাবে বাধ্য হতে চাও।

অন্যেরা কী করতে পারে

খ্রীষ্টান যারা ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত পরিবারে বাস করে তাদের সহউপাসকদের সমর্থন ও উপলব্ধির প্রয়োজন। একজন ব্যক্তি যেভাবে বলেছিলেন তার থেকে তা পরিষ্কাররূপে বুঝা যায়: “যেহেতু কেউ কিছু করতে পারে না এবং আমিও কিছু করতে পারি না, তাই আমি সম্পূর্ণভাবে হতাশা ও অসহায় বোধ করি। তাঁর ইচ্ছা আমাদের পরিবারের ক্ষেত্রে পূরণ করার জন্য আমি যিহোবার উপর আস্থা রাখছি তা যা কিছু হোক না কেন।”

খ্রীষ্টীয় সভাগুলিতে আধ্যাত্মিক ভাই ও বোনেদের সাথে মেলামেশা হল এক আশ্রয়ের স্থান। একই ব্যক্তি তার জীবনকে এইভাবে ব্যক্ত করেন “যেন দুটি ভিন্ন জগৎ। একটিতে আমাকে থাকতে হচ্ছে এবং আরেকটিতে আমি থাকতে চাই।” ভ্রাতৃবোধের প্রেমের ফলে সমস্ত পরিস্থিতে ধৈর্য ও সেবা করা, এই নিপীড়িত ব্যক্তিদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে। আপনার প্রার্থনায় এদের অন্তর্ভুক্ত করুন। (ইফিষীয় ১:১৬) নিয়মিতরূপে, তাদের সাথে প্রতিটি সময়ে উৎসাহজনক, ইতিবাচক এবং সান্ত্বনাদায়ক কথা বলুন। (১ থিষলনীকীয় ৫:১৪) যখন কার্যকারী ও যথার্থ হয় আপনার ঈশ্বতান্ত্রিক ও সামাজিক কাজকর্মগুলিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন।

ঈশ্বরীয় বাধ্যতার আশীর্বাদ ও উপকারগুলি

ঈশ্বরীয় বাধ্যতা দেখানোর ফলে যে আশীর্বাদ ও উপকারগুলি আসে সে বিষয়ের উপর প্রতিদিন ধ্যান করুন। বাধ্য হওয়ার চেষ্টা করুন। ‘ক্লান্ত হবেন না।’ (গালাতীয় ৬:৯) প্রতিকূল পরিস্থিতিগুলিতে ও অন্যায়ের সামনে ধৈর্য ধরা ঈশ্বরের কাছে “ঈশ্বরের উদ্দ্যেশ্যে সংবেদ প্রযুক্ত . . . সাধুবাদের বিষয়।” (১ পিতর ২:১৯, ২০) যতক্ষণ না যিহোবার ধার্মিক নীতিগুলি ও নিয়মগুলি আপোশ করা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত বাধ্য থাকুন। এটি যিহোবার ব্যবস্থার প্রতি বিশ্বস্ততা দেখায়। আপনার ঈশ্বরীয় আচরণ এমনকি হয়ত আপনার সাথী, ছেলেমেয়ে অথবা বাবামাদের জীবন বাঁচাতে পারে।—১ করিন্থীয় ৭:১৬; ১ পিতর ৩:১.

যখন আপনি ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত পরিবারের চাহিদা ও আশাগুলির সাথে লড়াই করছেন তখন যিহোবা ও যীশু খ্রীষ্টের প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রাখার গুরুত্বতার কথা মনে রাখুন। আপনি হয়ত অনেক ক্ষেত্রে আপস করতে পারেন, কিন্তু বিশ্বস্ততার ক্ষেত্রে যদি আপনি আপস করেন, তাহলে আপনি সবকিছু আপস করছেন, এমনকি আপনার জীবনও। প্রেরিত পৌল বলেছিলেন: “ঈশ্বর . . . ইঁহাকেই সর্ব্বাধিকারী দায়াদ করিয়াছেন, এবং ইঁহারই দ্বারা যুগকলাপের রচনাও করিয়াছেন।’’ তাই “মহৎ এই পরিত্রাণ” আপনাকে বাধ্য হতে শক্তি যোগাবে।—ইব্রীয় ১:১, ২; ২:৩.

আপনার আপসহীন, বাধ্যতা এবং সঠিক নৈতিক মানগুলি ও মূল্যবোধগুলির প্রতি দৃঢ়তা আপনার ও আপনার অবিশ্বাসীর সাথীর জন্য হল একটি স্বাস্থ্যকর সুরক্ষাস্বরূপ। আনুগত্যতা পরিবারের বন্ধনকে আরও শক্ত করে। হিতোপদেশ ৩১:১১ পদ গুণবতী ও আনুগত্য ভার্যার সম্বন্ধে বলে: “তাঁহার স্বামীর হৃদয় তাঁহাতে নির্ভর করে।” আপনার সদাচরণ ও গভীর সম্মান হয়ত আপনার অবিশ্বাসী স্বামীর চোখ খুলে দিতে পারে। এটি হয়ত তাকে ঈশ্বরের সত্য গ্রহণ করতে পরিচালিত করতে পারে।

ঈশ্বরীয় বাধ্যতা সত্যিই মহামূল্যবান ও জীবনরক্ষাকারী। আপনার পরিবারিক জীবনে এর জন্য প্রার্থনা করুন। এটি মনের শান্তি এবং যিহোবার প্রশংসা নিয়ে আসবে।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার