ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৫ ৭/১ পৃষ্ঠা ৫-৮
  • কেন সত্যের অন্বেষণ করব?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • কেন সত্যের অন্বেষণ করব?
  • ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • সম্পর্কবাদের মূল্য
  • সত্য কী?
  • সত্য কার্যেতে দেখানো
  • যে কোন মূল্যে দেওয়ার মত একটি সম্পদ
  • খ্রীষ্টানরা আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করেন
    ২০০২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “আমি তোমার সত্যে চলিব”
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৮
  • সত্যের ঈশ্বরকে অনুকরণ করা
    ২০০৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘সত্যে চলতে’ থাকুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
আরও দেখুন
১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৫ ৭/১ পৃষ্ঠা ৫-৮

কেন সত্যের অন্বেষণ করব?

বহু ধর্মীয় সংস্থা দাবি করে থাকে যে তাদের কাছে সত্য আছে এবং তারা তা মুক্তহস্তে অপরের কাছে অর্পণ করে থাকে। কিন্তু, তারই মধ্যে তারা হতবুদ্ধিকারী ‘সত্যের’ প্রাচুর্যই বিনিময় করে থাকে। এটা কি আরেকটি প্রমাণ দেয় যে সব সত্য হল আপেক্ষিক, অর্থাৎ চরম সত্য বলে কিছু নেই? না।

অধ্যাপক ভি. আর. রুজেরো তার লিখিত পুস্তক দি আর্ট অফ থিঙ্কিং-এ তার আশ্চর্য অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন যে এমনকি মাঝে মাঝে বুদ্ধিমান ব্যক্তিরাও বলে থাকেন যে সত্য হল আপেক্ষিক। তিনি যুক্তি দেখান: “যদি প্রত্যেকে নিজের সুবিধামত সত্য তৈরি করে, তাহলে কারোরই দৃষ্টিভঙ্গি অপরের থেকে উত্তম বলে মনে হবে না। সকলের দৃষ্টিভঙ্গি সমান হওয়া উচিত। আর যদি সব দৃষ্টিভঙ্গি সমান হয়, তাহলে কোন বিষয়বস্তু নিয়ে গবেষণা করার কী প্রয়োজন আছে? কেনই বা মাটি খুঁড়ে ভূতত্ববিদ্যা সম্বন্ধীয় প্রশ্নের উত্তর খুঁজব? মধ্যপ্রাচ্যের চাপা উত্তেজনার অবস্থার কারণ নিয়ে কেন এত অনুসন্ধান? ক্যানসারের প্রতিকারের জন্য কেন এত গবেষণা? মহাকাশের ছায়াপথেই বা কেন এত আবিষ্কারার্থক ভ্রমণ? এই কার্যসকলের পিছনে কিছু যুক্তি তখনই থাকবে, যখন একে অপরের থেকে ভাল উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়, যদি সত্য কোন স্বতন্ত্র বিষয় হয় এবং যদি ব্যক্তিবিশেষের দর্শনানুপাত অনুযায়ী প্রভাব বিস্তার না করে।”

বস্তুতপক্ষে, প্রকৃতপক্ষে সত্য নেই বলে কেউই বিশ্বাস করে না। যখন এটা পদার্থবিদ্যাগত বাস্তবের ক্ষেত্রের কথা বলে, যেমন ওষুধ, গণিতবিদ্যা অথবা পদার্থবিদ্যার নীতিগুলি, তখন এমনকি একেবারে কঠোর সম্পর্কবাদীরাও বিশ্বাস করবে যে কিছু বিষয় সত্য আছে। আমাদের মধ্যে কে আছে যার বিমানে যাত্রা করার সাহস আছে, যদি সে বিশ্বাস করে না যে বায়ুগতিবিদ্যা হল ধ্রুব সত্য। যাচাই করা সত্যের অস্তিত্ব আছে; সেগুলি আমাদের চারিদিকে ছড়িয়ে আছে, আর এই ধ্রুব সত্যগুলির উপর আমরা আমাদের জীবনকে বিশ্বাসভরে অর্পণ করি।

সম্পর্কবাদের মূল্য

যদিও এটা হল নৈতিক জগৎ যেখানে সম্পর্কবাদের ভুলত্রুটিগুলি বেশি করে বাহ্যত প্রতীয়মান হয়, কারণ এখানেই এমন চিন্তাধারাগুলি সবচেয়ে বেশি সর্বনাশ করেছে। এনসাইক্লোপিডিয়া আমেরিকানা এই বিষয়ে ব্যক্ত করে: “জ্ঞান অথবা জ্ঞাত সত্য মানুষের পক্ষে অর্জন করা সম্ভব কি না সেবিষয়ে গভীরভাবে সন্দেহ করা হয়েছে . . . যদিও এটা নিশ্চিত যে যখনই সত্য ও জ্ঞান সম্পর্কে হুবহু দুটি একই দৃষ্টিভঙ্গিকে কাল্পনিক অথবা ক্ষতিকারক বলে অগ্রাহ্য করা হয়, তখন মানব সমাজে অবক্ষয় দেখা দেয়।”

আপনি হয়ত এই অবক্ষয় দেখেছেন। উদাহরণস্বরূপ, বাইবেলের নৈতিক শিক্ষাগুলি যা পরিষ্কাররূপে বলে যে যৌন অনৈতিকতা ভুল, কিন্তু এই বিষয়টি আজকে খুব কম লোকে সত্য বলে মনে করে। প্রচলিত কোন নৈতিক রীতি অনুসারে—“আপনি সিদ্ধান্ত নিন যে আপনার জন্য কোন্‌টি ঠিক”—কোন্‌টি অধিক প্রভাবশালী অভিমত। কেউ কি দাবি করতে পারে যে মানব সমাজের অবক্ষয় এই সম্পর্কবাদী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য হয়নি? অবশ্যই পৃথিবীব্যাপী যৌন রোগসংক্রান্ত যে মহামারী, পারিবারিক জীবনে ভাঙন এবং কৈশরাবস্থায় গর্ভবতী হওয়া, সবই নৈতিক অবক্ষয়ের সুস্পষ্ট চিত্রকে তুলে ধরে।

সত্য কী?

আসুন আমরা সম্পর্কবাদের এই অন্ধকারাচ্ছন্ন ঝাপসা আবহাওয়াকে ভুলে গিয়ে সংক্ষেপে বাইবেলের স্বচ্ছ অমিশ্রিত সত্য কী ব্যক্ত করে, তা পরীক্ষা করে দেখি। (যোহন ৪:১৪; প্রকাশিত বাক্য ২২:১৭) বাইবেলে “সত্য” কিন্তু কোনভাবেই দুর্বোধ্য, অলীক কল্পনামাত্র নয়, যা নিয়ে দাশনিকেরা তর্কবিতর্ক করে।

যখন যীশু বলেছিলেন যে তাঁর জীবনের সমস্ত উদ্দেশ্যই হল সত্যের বিষয়ে ব্যক্ত করা, তখন তিনি এমন একটি বিষয়ে বলছিলেন, যা বিশ্বস্ত যিহূদীরা দীর্ঘ শতাব্দীব্যাপী অত্যন্ত মূল্যবান মনে করে এসেছেন। তাদের পবিত্র লিপিগুলিতে যিহূদীরা দীর্ঘকাল যাবৎ “সত্য”-কে বাস্তব বলে পাঠ করে এসেছেন, আনুমানিক বিষয় বলে নয়। বাইবেলে ইব্রীয় শব্দ “এমেথ”-কে “সত্য” বলে অনুবাদ করা হয়েছে, যা আসলে দৃঢ়, অপরিবর্তনীয়, সম্ভবত বিশেষভাবে নির্ভরযোগ্যতাকে সূচিত করে।

যিহূদীদের কাছে উত্তম কারণ ছিল সত্যকে এরূপ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখার। তারা তাদের ঈশ্বর যিহোবাকে “সত্যের ঈশ্বর” বলে সম্বোধন করেছিল। (গীতসংহিতা ৩১:৫) তার কারণ হল যিহোবা যা কিছু করবেন বলে বলেছিলেন, সবই সম্পন্ন করেছিলেন। যখন তিনি কিছু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তা তিনি রেখেছিলেন। যখন তিনি ভাববাণীগুলিকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, তখন সেগুলি পরিপূর্ণতা লাভ করেছিল। যখন তিনি চরম বিচারাজ্ঞার বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন, সেগুলি সম্পাদিত হয়েছিল। লক্ষ লক্ষ ইস্রায়েলীয়রা এইসব সত্যগুলিকে প্রত্যক্ষ করেছিল। বাইবেলের অনুপ্রাণিত লেখকেরা এগুলিকে তর্কাতীত ঐতিহাসিক সত্য বলে লিপিবদ্ধ করেছিলেন। অন্যান্য পুস্তকগুলিকে যেমন পবিত্র বলে মনে করা হয়, বাইবেল কিন্তু তেমন গল্প অথবা পৌরাণিক কাহিনীর পটভূমিকার ভিত্তি অনুযায়ী লেখা হয়নি। এটি দৃঢ়ভাবে যাচাই করা সত্যগুলির উপর ভিত্তি করে লিখিত—ঐতিহাসিক, প্রত্নতত্ত্ব সম্বন্ধীয়, বৈজ্ঞানিক এবং সমাজবিদ্যাগত বাস্তব সত্যগুলি। আশ্চর্যের কিছু নেই যখন গীতরচক যিহোবার বিষয়ে বলেন: “তোমার ব্যবস্থা সত্য। . . . তোমার সমস্ত আজ্ঞা সত্য। . . . তোমার বাক্যের সমষ্টি সত্য।”—গীতসংহিতা ১১৯:১৪২, ১৫১, ১৬০.

যখন যীশু যিহোবার কাছে প্রার্থনায় বলেছিলেন: “তোমার বাক্যই সত্যস্বরূপ,” তখন তিনি গীতরচকের কথাকে প্রতিধ্বনিত করেই তা বলেছিলেন। (যোহন ১৭:১৭) যীশু জানতেন যে তাঁর পিতা যাই বলুন না কেন, তা ছিল সম্পূর্ণরূপে স্থির এবং নির্ভরযোগ্য। একইভাবে, যীশু “সত্যে পূর্ণ” ছিলেন। (যোহন ১:১৪) তাঁর অনুগামীরা সচক্ষে দেখে সেগুলি শিখেছিলেন এবং সকল উত্তরপুরুষদের জন্য লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলেন, যা কিছু তিনি বলেছিলেন, সবটাই ছিল নির্ভরযোগ্য, সত্য।a

যাইহোক, যখন যীশু পীলাতকে বলেছিলেন যে তিনি এই পৃথিবীতে সত্যকে উন্মুক্ত করার জন্য এসেছেন, তখন তাঁর মনে একটি বিশেষ সত্যের বিষয় ছিল। পীলাতের প্রশ্ন: “তুমি কি রাজা?” তার উত্তরে যীশু তা ব্যক্ত করেন। (যোহন ১৮:৩৭) পৃথিবীতে থাকাকালীন ঈশ্বরের রাজ্য, আর সেই রাজ্যের রাজা হিসাবে যীশুর নিজের ভূমিকাই ছিল তাঁর শিক্ষার মুখ্য বিষয়। (লূক ৪:৪৩) সেই রাজ্য যিহোবার নামকে মহিমান্বিত করবে, তাঁর সার্বভৌমত্বকে প্রতিষ্ঠা করবে এবং বিশ্বস্ত মানবজাতিকে অনন্ত এবং সুখী জীবনের পথে পুনঃস্থাপিত করবে, এটাই হল “সত্য,” যা সকল সত্য খ্রীষ্টানের আশা। যেহেতু ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাসকলের পরিপূর্ণতায় যীশুর ভূমিকা এতই গুরুত্বপূর্ণ আর যেহেতু ঈশ্বরের সকল ভাববাণী যীশুর জন্যই “আমেন” অথবা সত্য হয়েছে, তাই যীশু বলতে পেরেছিলেন: “আমিই পথ ও সত্য ও জীবন।”—যোহন ১৪:৬; ২ করিন্থীয় ১:২০; প্রকাশিত বাক্য ৩:১৪.

এই সত্যটিকে সম্পূর্ণরূপে নির্ভরযোগ্যরূপে উপলব্ধি করা বর্তমানে খ্রীষ্টানদের কাছে এক বিশেষ অর্থ রাখে। এর অর্থ হল যে ঈশ্বরের প্রতি তাদের বিশ্বাস এবং তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলির প্রতি তাদের আশা হল সত্য, বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।

সত্য কার্যেতে দেখানো

আশ্চর্যের কিছু নয় যে বাইবেল সত্যকে কাজের সাথে যোগ করে। (১ শমূয়েল ১২:২৪; ১ যোহন ৩:১৮) ঈশ্বরভীরু যিহূদীদের কাছে সত্য কোন দর্শনবিদ্যার বিষয়বস্তু ছিল না, এটি ছিল জীবনের পথ। ইব্রীয় শব্দ “সত্য” এর অর্থ “বিশ্বস্ততা”-ও হতে পারে এবং এমন কাউকে বর্ণনা করার জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে যিনি বিশ্বস্তভাবে তার কথা অনুযায়ী কাজ করবেন বলে বিশ্বাস করা যায়। যীশু তাঁর অনুগামীদের শিখিয়েছিলেন যে তারাও যেন সত্যকে সেই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখে। তিনি প্রচণ্ড আবেগের সাথে নিন্দা করে ফরীশীদের ভণ্ডামীকে প্রকাশ করে দিয়েছিলেন, তাদের আত্মধার্মিকতাপূর্ণ কথাবার্তা এবং তাদের অসৎ কাজগুলির মধ্যে বিরাট ব্যবধান, তা দেখিয়ে দিয়ে। আর তিনি যে সত্য শিখিয়েছিলেন, সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করার দ্বারা আদর্শ স্থাপন করেছিলেন।

সুতরাং খ্রীষ্টের সকল অনুগমীদের তাই হওয়া উচিত। তাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্যের সত্য হল যীশু খ্রীষ্টের শাসনাধীনে ঈশ্বরের রাজ্যের উল্লসিত সুসংবাদ, যা শুধুমাত্র তথ্যের চেয়ে আরও বেশি কিছু। সেই সত্য তাদের কাজ করতে পরিচালিত করে, সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করতে এবং অপরের সাথে তা বন্টন করে নিতে বাধ্য করে। (তুলনা করুন যিরমিয় ২০:৯.) প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীতে যীশুর অনুগামীরা যে ধরনের জীবনধারা প্রদর্শন করেছিল, তা কিছুসময়ের জন্য “সত্য” অথবা “সত্যের পথ” বলে পরিচিত হয়েছিল।—২ যোহন ৪; ৩ যোহন ৪, ৮; ২ পিতর ২:২.

যে কোন মূল্যে দেওয়ার মত একটি সম্পদ

সত্যই, ঈশ্বরের বাক্যের সত্য গ্রহণ করার জন্য কিছু মূল্য দিতে হয়। প্রথমত, শুধুমাত্র সত্যকে শেখা একটি চূর্ণবিচূর্ণ করার মত অভিজ্ঞতা হতে পারে। দি এনসাইক্লোপিডিয়া আমেরিকানা বলে: “সত্য প্রায়ই অসম্মত, কারণ তা কুসংস্কার অথবা অতিকথাকে সমর্থন করে না।” আমাদের বিশ্বাস অসত্য বলে প্রকাশ হয়ে পড়া স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার মত হতে পারে, বিশেষত যদি আমরা বিশ্বাসযোগ্য ধর্মীয় নেতাদের দ্বারা শিক্ষিত হয়ে থাকি। কিছু ব্যক্তি হয়ত এইধরনের অভিজ্ঞতা বিশ্বস্ত পিতামাতাকে গুপ্ত অপরাধী হয়ে যাওয়ার প্রকাশপ্রাপ্তির সাথে তুলনা করেন। কিন্তু প্রবঞ্চনার মধ্যে বেঁচে থাকার চাইতে ধর্মীয় সত্যকে খুঁজে পাওয়া কি উত্তম নয়? মিথ্যার দ্বারা স্বীয় উদ্দেশ্যসাধনে পরিচালিত হওয়ার পরিবর্তে সত্যকে জানা কি ভাল কথা নয়?b—তুলনা করুন যোহন ৮:৩২; রোমীয় ৩:৪.

দ্বিতীয়ত, ধর্মীয় সত্যকে অবলম্বন করে জীবনযাপন করলে হয়ত আমাদের আগেকার বন্ধুবান্ধবেরা আমাদের প্রত্যাখ্যান করতে পারে। এই জগতে যেখানে বহু ব্যক্তি “মিথ্যার দ্বারা ঈশ্বরের সত্যকে পরিবর্তন করে নিয়েছে,” সেখানে যারা ঈশ্বরের বাক্যের সত্যকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে আছে, তাদের দেখে অদ্ভুত মনে হতে পারে এবং কখনও কখনও তাদের পরিহার করা এবং ভুলও বোঝা হয়ে থাকে।—রোমীয় ১:২৫; ১ পিতর ৪:৪.

কিন্তু সত্য এই দ্বিগুণ মূল্যের সমান। সত্যকে জানলে পর তা আমাদের মিথ্যা, ভ্রান্তি এবং কুসংস্কার থেকে মুক্ত করে। আর যখন আমরা সেইভাবে চলি, সেই সত্য আমাদের দুঃখকষ্ট সহ্য করতে শক্তিশালী করে তোলে। ঈশ্বরের সত্য এতই নির্ভরযোগ্য এবং দৃঢ় ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত আর তা আমাদের আশা দিয়ে এতই অনুপ্রাণিত করে, যে তা আমাদের যে কোন পরীক্ষায় দৃঢ় থাকতে সক্ষম করে। কোন আশ্চর্যের বিষয় নয় যে প্রেরিত পৌল সত্যকে একটি চওড়া, বলিষ্ঠ বেল্ট বা কোমরবন্ধনীর সাথে তুলনা করেছেন, যা যোদ্ধারা যুদ্ধক্ষেত্রে পরিধান করত!—ইফিষীয় ৬:১৩, ১৪.

বাইবেলের প্রবাদ বাক্য বলে: “সত্য ক্রয় কর, বিক্রয় করিও না; প্রজ্ঞা, শাসন ও সুবিবেচনা [ক্রয় কর]।” (হিতোপদেশ ২৩:২৩) সত্যকে আপেক্ষিক অথবা তার অস্তিত্ব নেই বলে প্রত্যাখ্যান করার অর্থ হল সবচেয়ে আনন্দদায়ক এবং জীবনের সবচেয়ে পরিপূর্ণতাদায়ক অভীষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছানোর থেকে বঞ্চিত হওয়া। সত্যকে খুঁজে পাওয়ার অর্থ হল আশা পাওয়া; সত্যকে জানা ও তাকে প্রেম করা হল এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা এবং তাঁর একজাত পুত্রকে জানা ও তাঁদের প্রেম করা; সেই মত জীবনযাপন করা হল এখন এবং চিরকালের জন্য উদ্দেশ্য নিয়ে ও শান্তিতে জীবনযাপন করা।—হিতোপদেশ ২:১-৫; সখরিয় ৮:১৯; যোহন ১৭:৩.

[পাদটীকাগুলো]

a সুসমাচারের বিবরণে প্রায় ৭০টিরও অধিক স্থানে যীশুকে ঈশ্বরের বাক্যের সত্যতাকে জোর দিয়ে এক অনুপম শব্দকে ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। একটি বাক্যকে উপস্থাপন করার জন্য তিনি প্রায়ই “আমেন” (“সত্যই,” NW) শব্দটিকে ব্যবহার করেছেন। এর অনুরূপ ইব্রীয় শব্দ যার অর্থ হল “নিশ্চিত, সত্য।” দ্যা নিউ ইনটারন্যাশন্যাল ডিকশনারী অফ নিউ টেস্টামেন্ট থিওলজি জানায়: “আমেন বলার দ্বারা তাঁর কথাগুলিকে উপস্থাপন করানোর দ্বারা যীশু বোঝাতে চাইছিলেন যে সেগুলি হল নিশ্চিত এবং নির্ভরযোগ্য। তিনি তাঁর কথামত কাজ করতেন এবং সেগুলি তাঁর নিজের এবং তাঁর শ্রোতাদের মধ্যে এক বন্ধনস্বরূপ ছিল। এগুলি ছিল তাঁর মর্যাদা এবং কর্তৃত্বের এক অভিব্যক্তি।”

b “সত্য” কথাটি গ্রীক শব্দ আলেথিয়া কথাটি থেকে নেওয়া হয়েছ, যার অর্থ হল “গুপ্ত না রাখা,” সুতরাং প্রায়ই সত্যের অন্তর্ভুক্ত হল অতীতে যা লুক্কায়িত ছিল, তা প্রকাশ করে দেওয়া।—তুলনা করুন লূক ১২:২.

[৬ পৃষ্ঠার বাক্স]

সত্যের কি কখনও পরিবর্তন হয়?

এই আগ্রহজনক প্রশ্নটি উঠেছিল ভি. আর. রুজেরোর দ্বারা লিখিত দি আর্ট অফ থিঙ্কিং পুস্তকটিতে। তার উত্তর হল সত্য কখনও পরিবর্তন হয় না। তিনি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে বলেন: “কখনও কখনও মনে হয় যে সত্য হয়ত পরিবর্তিত হয়, কিন্তু গভীরভাবে পরীক্ষা করলে দেখা যায় যে তা হয় না।”

“বিবেচনা করে দেখুন”, তিনি বলেন, “বাইবেলের প্রথম বই, আদিপুস্তকের স্রষ্টার কথা। দীর্ঘ শতাব্দীব্যাপী খ্রীষ্টান এবং যিহূদী উভেয়েই বিশ্বাস করতেন যে এই পুস্তকটির একটি মাত্র লেখক আছেন। কালক্রমে এই দৃষ্টিভঙ্গির উপরে প্রশ্ন উঠে এবং পরিশেষে এই বিশ্বাসের দ্বারা পরিবর্তিত হয় যে আদিপুস্তক লেখার পিছনে কমপক্ষে পাঁচজন লেখকের অবদান আছে। তারপর ১৯৮১ সালে, আদিপুস্তকের ভাষাবিদ্যাগত বিশ্লেষণের ৫ বছরের ফল প্রকাশিত হয়, যা ব্যাখ্যা করে বলে যে ৮২ শতাংশের মত সম্ভাবনা রয়েছে যে একজন মাত্র লেখক আদিপুস্তক লিখেছেন, যেমন অতীতে কল্পনা করা হয়েছিল।

“আদিপুস্তকের লেখকের সেই সত্যতা সম্বন্ধে কি কোন পরিবর্তন ঘটেছে? না। শুধুমাত্র আমাদের বিশ্বাসের পরিবর্তন হয়েছে। . . . আমাদের জ্ঞান বা অজ্ঞানতার দ্বারা সত্য পরিবর্তন হয়ে যাবে না।

[৭ পৃষ্ঠার বাক্স]

সত্যের প্রতি শ্রদ্ধা

“আমাদের এই বর্তমান কালে সত্যের প্রতি সম্মান শুধুমাত্র মিথ্যা বিশ্বনিন্দাবাদই নয়, যা সবকিছুকেই ‘উন্মোচন’ করে দিতে চায়, এই মনোভাব নিয়ে যে কোন কিছুই বা কেউই সম্পূর্ণরূপে সত্যকে উপলব্ধি করতে পারে না। সত্যের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হল এমন এক মনোভাব যাতে আছে এক আনন্দদায়ক আস্থা, যে সত্যকে নিশ্চয়ই খুঁজে পাওয়া সম্ভব, যে কোন স্থানে এবং যে কোন সময়ে সত্য প্রকাশ পায়, যদি নম্রতার সাথে সত্যকে স্বীকার করা হয়। সত্যের প্রতি এমন উন্মুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি তাদের জন্য প্রয়োজন যারা সত্যের ঈশ্বরকে উপাসনা করে; যেখানে সত্যের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা একজন ব্যক্তিকে তার প্রতিবেশীর সাথে কথায় এবং কাজে সৎভাবে আচরণ করতে প্ররোচিত করে। আমরা এমন দৃষ্টিভঙ্গি দেখেছি, যে বিষয়ে পু[রাতন] এবং নূ[তন] নি[য়ম], উভয়েই সাক্ষ্য বহন করে।”—দ্যা নিউ ইনটারন্যাশন্যাল ডিকশনারী অফ নিউ টেস্টামেন্ট থিওলজি, ২৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৯০১.

[Pictures on page 7]

বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ভিত্তি হল বিজ্ঞানের সত্যগুলি প্রকাশিত করা

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

সত্য রাজ্য ও তার আশীর্বাদগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার