ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৬ ৭/১ পৃষ্ঠা ১৯-২৪
  • সত্য উপাসনার বিজয় সন্নিকট

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • সত্য উপাসনার বিজয় সন্নিকট
  • ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • ঈশ্বরের আত্মিক মন্দিরে বিদেশীরা
  • পবিত্র স্থান এবং এর সাজসরঞ্জাম
  • সত্য উপাসনার সম্পূর্ণ বিজয়লাভ
  • পার্থিব পুনরুত্থান
  • রূপক কুটিরোৎসব
  • ইস্রায়েলের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য উৎসবগুলি
    ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “তুমি সম্পূর্ণরূপে আনন্দিত হইবে”
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার মহান আত্মিক মন্দির
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • এক বিস্তর লোক পবিত্র পরিচর্যা করছে
    ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৬ ৭/১ পৃষ্ঠা ১৯-২৪

সত্য উপাসনার বিজয় সন্নিকট

“সদাপ্রভু [“যিহোবা,” NW] সমস্ত দেশের উপরে রাজা হইবেন।”—সখরিয় ১৪:৯.

১. ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল এবং কিভাবে এটি ভাববাণী করা হয়েছিল?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে, অভিষিক্ত খ্রীষ্টানেরা যুদ্ধরত দেশগুলির হাতে বহু কষ্টভোগ এবং কারারবণ সহ্য করেছিল। যিহোবার উদ্দেশ্যে তাদের প্রশংসাবলি নিদারুনভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল আর তারা আধ্যাত্মিকভাবে বন্দী দশায় পতিত হয়েছিল। এই সমস্ত কিছুই সখরিয় ১৪:২ পদে ভাববাণী করা হয়েছিল, যেটি যিরূশালেমের উপর এক আন্তর্জাতিক আক্রমণ রূপে বর্ণনা করে। ভবিষ্যদ্বাণীর এই শহরটি হল “স্বর্গীয় যিরূশালেম” ঈশ্বরের স্বর্গীয় রাজ্য এবং স্থানটি হল “ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন।” (ইব্রীয় ১২:২২, ২৮; ১৩:১৪; প্রকাশিত বাক্য ২২:৩) পৃথিবীতে ঈশ্বরের অভিষিক্ত ব্যক্তিরা সেই শহরের প্রতিনিধিত্ব করে। তাদের মধ্যে বিশ্বস্ত ব্যক্তিরা “নগর” থেকে নিজেদের নির্বাসিত হতে অনুমতি দিতে প্রত্যাখ্যান করে আক্রমণ থেকে বেঁচে যায়।a

২, ৩. (ক) ১৯১৯ সাল থেকে যিহোবার সত্য উপাসনা কিভাবে বিজয়লাভ করেছে? (খ) ১৯৩৫ সাল থেকে কোন্‌ বিষয়গুলি ঘটতে থাকে?

২ ১৯১৯ সালে বিশ্বস্ত অভিষিক্ত ব্যক্তিদের বন্দীদশা থেকে মুক্ত করা হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে তারা যুদ্ধের পরবর্তী শান্তির সময়টির সদ্ব্যবহার করে। স্বর্গীয় যিরূশালেমের রাজদূত হিসাবে, তারা ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করার মহান সুযোগকে গ্রহণ করে এবং ১,৪৪,০০০ জনের শেষ সদস্যদের একত্রিত করায় সহযোগিতা করে। (মথি ২৪:১৪; ২ করিন্থীয় ৫:২০) ১৯৩১ সালে তারা উপযুক্ত শাস্ত্রীয় নাম যিহোবার সাক্ষী গ্রহণ করে।—যিশাইয় ৪৩:১০, ১২.

৩ তারপর থেকে ঈশ্বরের অভিষিক্ত সাক্ষীরা কখনও থেমে থাকেনি। এমনকি হিটলারের নাৎসী রাজনৈতিক ও সামরিক বাহিনীও তাদের স্তব্ধ করতে পারেনি। পৃথিবীব্যাপী তাড়না সত্ত্বেও তাদের কাজ সারা পৃথিবীতে ফল উৎপাদন করেছে। বিশেষ করে, ১৯৩৫ সাল থেকে, যেমন প্রকাশিত বাক্য পুস্তকে ভাববাণী করা হয়েছিল, তাদের সাথে আন্তর্জাতিক ‘বিস্তর লোক’ যোগ দিয়েছে। এরাও উৎসর্গীকৃত, বাপ্তাইজিত খ্রীষ্টান এবং যীশু খ্রীষ্ট অর্থাৎ “মেষশাবকের রক্তে আপন আপন বস্ত্র ধৌত করিয়াছে, ও শুক্লবর্ণ করিয়াছে।” (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯, ১৪) কিন্তু, স্বর্গীয় জীবনের আশাপ্রাপ্ত অভিষিক্ত ব্যক্তি তারা নয়। তাদের আশা হল আদম ও হবা যা হারিয়েছিল তার উত্তরাধিকার পাওয়া, যার অর্থ পার্থিব পরমদেশে সিদ্ধ মানব জীবন। (গীতসংহিতা ৩৭:২৯; মথি ২৫:৩৪) আজকে বিরাট জনতার সংখ্যা ৫০ লক্ষেরও বেশি। যিহোবার সত্য উপাসনা বিজয়লাভ করছে, কিন্তু এর শেষ বিজয়লাভ এখনও বাকি আছে।

ঈশ্বরের আত্মিক মন্দিরে বিদেশীরা

৪, ৫. (ক) বিরাট জনতা কোথায় যিহোবার উপাসনা করে? (খ) তারা কোন্‌ সুযোগগুলি উপভোগ করে এবং কোন্‌ ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতায়?

৪ যেমন ভাববাণী করা হয়েছিল, বিরাট জনতা “দিবারাত্র তাঁহার মন্দিরে [ঈশ্বরের] আরাধনা করে।” (প্রকাশিত বাক্য ৭:১৫, NW, পাদটীকা) যেহেতু তারা আত্মিক, যাজকীয় ইস্রায়েল নয়, তাই যোহন সম্ভবত তাদের মন্দিরে জাতিগণের জন্য বহিঃস্থ প্রাঙ্গণের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন। (১ পিতর ২:৫) যিহোবার আত্মিক মন্দির কতই না মহিমান্বিত হয়েছে, এর মন্দির সংলগ্ন স্থানটি বিরাট জনতার দ্বারা পূর্ণ হয়েছে, যারা আত্মিক ইস্রায়েলের অবশিষ্টাংশের সাথে তাঁর প্রশংসা করছে!

৫ আভ্যন্তরীণ যাজকীয় প্রাঙ্গণের দ্বারা চিত্রিত সেই অবস্থায় বিরাট জনতা ঈশ্বরের সেবা করে না। ঈশ্বরের দত্তক, আত্মিক পুত্র হওয়ার জন্য তারা ধার্মিক বলে ঘোষিত হয়নি। (রোমীয় ৮:১, ১৫) তৎসত্ত্বেও, যীশুর মুক্তির মূল্যে বিশ্বাস প্রদর্শনের দ্বারা তারা যিহোবার সামনে শুদ্ধভাবে দাঁড়াতে পারে। তারা তাঁর বন্ধু হওয়ার উদ্দেশ্যে ধার্মিক বলে ঘোষিত হয়। (তুলনা করুন যাকোব ২:২১, ২৩.) ঈশ্বরের আত্মিক বেদীর উপর তাদেরও গ্রহণযোগ্য বলি উৎসর্গ করার সুযোগ রয়েছে। তাই, এই বিরাট জনতার প্রতি যিশাইয় ৫৬:৬, ৭ পদের ভবিষ্যদ্বাণীটি এক গৌরবময় পরিপূর্ণতা লাভ করছে: “বিজাতি-সন্তানগণ সদাপ্রভুর পরিচর্য্যা করিবার জন্য, তাঁহার নামের প্রতি প্রেম দেখাইবার জন্য . . . সদাপ্রভুতে আসক্ত হয়, . . . তাহাদিগকে আমি আপন পবিত্র পর্ব্বতে আনিব, এবং আমার প্রার্থনা-গৃহে আনন্দিত করিব; তাহাদের হোমবলি ও অন্য বলি সকল আমার যজ্ঞবেদির উপরে গ্রাহ্য হইবে, যেহেতু আমার গৃহ সর্ব্বজাতির প্রার্থনা-গৃহ বলিয়া আখ্যাত হইবে।”

৬. (ক) বিদেশীরা কিধরনের বলি উৎসর্গ করে? (খ) যাজকীয় প্রাঙ্গণে জলের পাত্র তাদের কী বিষয় মনে করিয়ে দেয়?

৬ এই বিদেশীরা যে বলি উৎসর্গ করে তা হল “[ঈশ্বরের] নাম স্বীকারকারী ওষ্ঠাধরের ফল [যেমন উৎসর্গের জন্য উত্তমভাবে প্রস্তুত করা দানাশস্য],” এবং “উপকারও সহভাগিতার কার্য্য।” (ইব্রীয় ১৩:১৫, ১৬) জলের বড় পাত্র যেটি যাজকেরা নিজেদের ধৌত করতে ব্যবহার করত, সেটিও এই বিদেশীদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ অনুস্মারক। ঈশ্বরের বাক্য তাদের কাছে ক্রমশঃ স্পষ্টতর হওয়ার সাথে সাথে তাদের অবশ্যই আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শুদ্ধতার বশীভূত হতে হবে।

পবিত্র স্থান এবং এর সাজসরঞ্জাম

৭. (ক) পবিত্র যাজকবর্গের সুযোগগুলিকে বিরাট জনতা কিভাবে দেখে থাকে? (খ) অতিরিক্ত কোন্‌ সুযোগগুলি কিছু বিদেশীরা পেয়ে থাকে?

৭ পবিত্র স্থান এবং এর সাজসরঞ্জাম কি বিদেশীদের বিরাট জনতার জন্য কোন অর্থ রাখে? হ্যাঁ রাখে, তারা কখনও পবিত্র দ্বারা চিত্রিত এমন অবস্থায় থাকবে না। স্বর্গীয় নাগরিকত্ব নিয়ে তারা ঈশ্বরের আত্মিক পুত্র হিসাবে পুনরায় জন্মগ্রহণ করে না। এতে কি তারা ঈর্ষা অথবা লোভ বোধ করে? না। বরঞ্চ, ১,৪৪,০০০ জনের অবশিষ্টাংশদের সমর্থন করার সুযোগে তারা আনন্দ করে এবং এই আত্মিক পুত্রদের দত্তক গ্রহণ করার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যের জন্য তারা গভীর উপলব্ধিবোধ প্রকাশ করে, যারা মানবজাতিকে সিদ্ধতায় উন্নীত করার ক্ষেত্রে খ্রীষ্টের সাথে অংশ নেবে। এছাড়া, পরমদেশে অনন্ত জীবনের পার্থিব আশার নিশ্চয়তা প্রদানে বিদেশীদের বিরাট জনতা ঈশ্বরের অযাচিত মহা করুণা উপভোগ করে। প্রাচীন নথীনীয়বর্গের মত, এই বিদেশীদের কিছুজনকে পবিত্র যাজকবর্গকে সহযোগিতা করার জন্য তত্ত্বাবধান করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।b (যিশাইয় ৬১:৫) এদের মধ্য থেকে যীশু “সমস্ত পৃথিবীতে অধ্যক্ষ” নিযুক্ত করেন।—গীতসংহিতা ৪৫:১৬.

৮, ৯. পবিত্র স্থানের সাজসরঞ্জামের বিষয়টি বিবেচনা করে বিরাট জনতা কী উপকার লাভ করে থাকে?

৮ যদিও তারা কখনও রূপক পবিত্র স্থানে প্রবেশ করবে না, তবুও বিদেশীদের এই বিরাট জনতা এর সাজসরঞ্জাম থেকে মূল্যবান শিক্ষালাভ করে। ঠিক যেমন প্রদীপের জন্য প্রয়োজন ছিল তেলের ক্রমাগত সরবরাহ, তেমনি বিদেশীদের প্রয়োজন পবিত্র আত্মার যাতে করে তারা “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস” এর মাধ্যমে প্রবাহিত ঈশ্বরের বাক্য থেকে প্রগতিমূলক সত্য বুঝতে পারে। (মথি ২৪:৪৫-৪৭) এছাড়া, ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা এই আমন্ত্রণের প্রতি সাড়া দিতে তাদের সাহায্য করে: “আত্মা ও কন্যা [অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশ] কহিতেছেন, আইস। যে শুনে, সেও বলুক, আইস। আর যে পিপাসিত, সে আইসুক; যে ইচ্ছা করে, সে বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করুক।” (প্রকাশিত বাক্য ২২:১৭) তাই দীপবৃক্ষ হল খ্রীষ্টান হিসাবে আলো দিতে এবং ঈশ্বরের আত্মাকে দুঃখ দিতে পারে এইরূপ যে কোন মনোভাব, চিন্তা, কথা অথবা কাজ এড়িয়ে চলতে তাদের দায়িত্বের ক্ষেত্রে বিরাট জনতার কাছে এক অনুস্মারক।—ইফিষীয় ৪:৩০.

৯ দর্শন-রুটির মেজ বিরাট জনতাকে মনে করিয়ে দেয় আত্মিকভাবে স্বাস্থ্যবান থাকতে, তাদের অবশ্যই নিয়মিতভাবে বাইবেল এবং “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস” এর প্রকাশনাদি থেকে পাওয়া আত্মিক খাদ্যে অংশগ্রহণ করতে হবে। (মথি ৪:৪) ধূপের বেদী তাদের মনে করিয়ে দেয় বিশ্বস্ততা বজায় রাখতে সাহায্যের জন্য যিহোবার কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করার গুরুত্বকে। (লূক ২১:৩৬) তাদের প্রার্থনার অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত প্রশংসা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপনের আন্তরিক অভিব্যক্তি। (গীতসংহিতা ১০৬:১) এছাড়া ধূপের বেদী তাদের অন্যান্য উপায়ে যেমন, খ্রীষ্টীয় সভাগুলিতে সম্পূর্ণ চিত্তে রাজ্যের গানগুলি গাওয়া এবং “পরিত্রাণের জন্য” জনসাধারণ্যে ফলপ্রসূ ঘোষণা করতে ভালভাবে প্রস্তুত হওয়ার দ্বারা ঈশ্বরকে প্রশংসা করার মত অন্যান্য প্রয়োজনীয়তাকেও মনে করিয়ে দেয়।—রোমীয় ১০:১০.

সত্য উপাসনার সম্পূর্ণ বিজয়লাভ

১০. (ক) কোন্‌ মহান প্রত্যাশার প্রতি আমরা সম্মুখে দৃষ্টিপাত করতে পারি? (খ) কোন্‌ বিষয়টি অবশ্যই প্রথমে ঘটবে?

১০ আজকে বিভিন্ন জাতি থেকে আসা “অনেক দেশের লোক” যিহোবার উপাসনার গৃহের দিকে স্রোতের ন্যায় প্রবাহিত হচ্ছে। (যিশাইয় ২:২, ৩) এটি নিশ্চিত করে প্রকাশিত বাক্য ১৫:৪ পদ জানায়: “হে প্রভু, কে না ভীত হইবে? এবং তোমার নামের গৌরব কে না করিবে? কেননা একমাত্র তুমিই সাধু, কেননা সমস্ত জাতি আসিয়া তোমার সম্মুখে ভজনা করিবে, কেননা তোমার ধর্ম্মক্রিয়া সকল প্রকাশিত হইয়াছে।” সখরিয় ১৪ অধ্যায় এর পরবর্তী বিষয়গুলির বর্ণনা করে। নিকট ভবিষ্যতে পৃথিবীর অধিকাংশের পাশবিক আচরণ এক চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে যখন তারা শেষ বারের মত যিরূশালেমের বিরুদ্ধে—অর্থাৎ পৃথিবীতে স্বর্গীয় যিরূশালেমের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করতে একত্রিত হবে। তখন যিহোবা পদক্ষেপ নেবেন। বিজয়ী-ঈশ্বর হিসাবে, তিনি “বাহির হইবেন, এবং . . . ঐ জাতিগণের সহিত যুদ্ধ করিবেন” যারা এই আক্রমণ করতে সাহস করে।—সখরিয় ১৪:২, ৩.

১১, ১২. (ক) তাঁর মন্দিরে উপাসকদের উপর আগত আক্রমণের প্রতি যিহোবা কিভাবে সাড়া দেবেন? (খ) ঈশ্বরের যুদ্ধের পরিণতি কী হবে?

১১ “যে সকল জাতি যিরূশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিবে সদাপ্রভু এইরূপ আঘাতে তাহাদিগকে আহত করিবেন; চরণে ভর দিয়া দাঁড়াইবার সময়ে তাহাদের মাংস ক্ষয় পাইবে, কোটরে চক্ষু দুটী ক্ষয় পাইবে, ও মুখে জিহ্বা ক্ষয় পাইবে। আর সেই দিন তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভু হইতে মহাকোলাহল হইবে; তাহারা প্রত্যেক জন আপন আপন প্রতিবাসীর হস্ত ধরিবে, এবং প্রত্যেকের হস্ত আপন আপন প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে উত্তোলিত হইবে।”—সখরিয় ১৪:১২, ১৩.

১২ এই আঘাত আক্ষরিক অথবা রূপক যাই হোক না কেন, আমরা এর পরিণতি দেখতে অপেক্ষা করব। কিন্তু, একটি বিষয় নিশ্চিত। ঈশ্বরের শত্রুরা যিহোবার দাসেদের উপর তাদের জগদ্ব্যাপী আক্রমণ হানতে অগ্রসর হওয়ার সময়ে ঈশ্বরের মহাশক্তির ভয়াবহ প্রকাশের দ্বারা স্তব্ধ হবে। তাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এটি এমন হবে যেন তাদের প্রতিবাদমূলক জিহ্বা ক্ষয় পেয়েছে। তাদের ঐক্যবদ্ধ লক্ষ্য তাদের দৃষ্টি থেকে অস্পষ্ট হয়ে যাবে, ঠিক যেন তাদের চক্ষু ক্ষয় পেয়েছে। তাদের শারীরিক শক্তি, যেটি তাদের সাহস যোগায় আক্রমণ হানতে, তা নষ্ট করা হবে। বিভ্রান্ত হয়ে, তারা ব্যাপকভাবে একে অপরকে হত্যা করতে আরম্ভ করবে। এইভাবে ঈশ্বরের উপাসনার সমস্ত পার্থিব শত্রুদের মুছে ফেলা হবে। অবশেষে, সকল জাতিকে জোরপূর্বক যিহোবার সার্বিক সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করানো হবে। তখন এই ভবিষ্যদ্বাণীটি পরিপূর্ণ হবে: “সদাপ্রভু সমস্ত দেশের উপরে রাজা হইবেন।” (সখরিয় ১৪:৯) এরপর, শয়তান ও তার মন্দ দূতেদের বদ্ধ করা হবে, যখন মানবজাতির জন্য সঞ্চিত মহান আশীর্বাদগুলি দিয়ে খ্রীষ্টের হাজার বছরের রাজত্ব আরম্ভ হবে।—প্রকাশিত বাক্য ২০:১, ২; ২১:৩, ৪.

পার্থিব পুনরুত্থান

১৩. “সমস্ত জাতির মধ্যে যাহারা অবশিষ্ট থাকিবে” তারা কারা?

১৩ সখরিয়ের ভবিষ্যদ্বাণী ১৪ অধ্যায়ে ১৬ পদে আরও বলে: “যিরূশালেমের বিরুদ্ধে আগত সমস্ত জাতির মধ্যে যাহারা অবশিষ্ট থাকিবে, তাহারা বৎসর বৎসর বাহিনীগণের সদাপ্রভু রাজার কাছে প্রণিপাত করিতে ও কুটীরোৎসব পালন করিতে আসিবে।” বাইবেল অনুসারে, আজকের দিনে জীবিত সকলে যারা এই মন্দ বিধিব্যবস্থার শেষ পর্যন্ত জীবিত থাকবে এবং যারা সত্য উপাসকদের শত্রু বলে বিচারিত হবে তারা “অনন্তকালস্থায়ী বিনাশরূপ দণ্ড” ভোগ করবে। (২ থিষলনীকীয় ১:৭-৯; এছাড়াও দেখুন মথি ২৫:৩১-৩৩, ৪৬.) তারা পুনরুত্থিত হবে না। সম্ভবত তখন, যারা “অবশিষ্ট থাকিবে” তারা জাতিগণের অন্তর্ভুক্ত, যারা ঈশ্বরের শেষ যুদ্ধের আগে মারা গিয়েছে এবং যাদের জন্য বাইবেল-ভিত্তিক পুনরুত্থানের আশা রয়েছে। যীশু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, “এমন সময় আসিতেছে, যখন কবরস্থ সকলে তাঁহার রব শুনিবে, এবং যাহারা সৎকার্য্য করিয়াছে, তাহারা জীবনের পুনরুত্থানের জন্য, ও যাহারা অসৎকার্য্য করিয়াছে, তাহারা বিচারের পুনরুত্থানের জন্য বাহির হইয়া আসিবে।”—যোহন ৫:২৮, ২৯.

১৪. (ক) অনন্ত জীবন লাভ করার জন্য পুনরুত্থিত ব্যক্তিদের অবশ্যই কী করতে হবে? (খ) যারা নিজেদের যিহোবার কাছে উৎসর্গ করতে এবং সত্য উপাসনা অভ্যাস করতে অস্বীকার করবে তাদের কী ঘটবে?

১৪ এই পুনরুত্থিত ব্যক্তিদের অবশ্যই কিছু করতে হবে যাতে করে তাদের পুনরুত্থান জীবনের প্রতি পরিচালিত হয়, প্রতিকূল বিচারের প্রতি নয়। তাদের অবশ্যই যিহোবার মন্দিরের পার্থিব প্রাঙ্গণে আসতে হবে এবং যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গীকরণের দ্বারা নতজানু হতে হবে। পুনরুত্থিতদের যে কেউ যদি তা করতে অস্বীকার করে, তাহলে তারা একই কষ্টভোগ করবে যা বর্তমান-দিনের জাতিগণের প্রতি ঘটবে। (সখরিয় ১৪:১৮) কতজন আনন্দের সাথে এই রূপক কুটিরোৎসব উদ্‌যাপনে বিরাট জনতার সাথে যোগ দেবে তা কে জানে? নিঃসন্দেহে, অনেকেই থাকবে এবং ফলস্বরূপ যিহোবার মহান আত্মিক মন্দির আরও বেশি মহিমান্বিত হবে!

রূপক কুটিরোৎসব

১৫. (ক) প্রাচীন ইস্রায়েলের কুটিরোৎসবের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য কী? (খ) কেন উৎসবের সময়ে ৭০টি ষাঁড় বলি দিতে হত?

১৫ প্রতি বছর প্রাচীন ইস্রায়েলদের কুটিরোৎসব উদ্‌যাপন করতে হত। এটি এক সপ্তাহ ধরে চলত এবং তাদের শস্য সংগ্রহের দ্বারা পরিসমাপ্ত হত। এটি ছিল ধন্যবাদ জ্ঞাপনের এক আনন্দমুখর সময়। সেই সপ্তাহে তাদের গাছের পাতা দিয়ে, বিশেষ করে খেজুর পাতা দিয়ে তৈরি সাময়িক কুটিরে বসবাস করতে হত। এই উৎসব ইস্রায়েলদের মনে করিয়ে দিত যে কিভাবে ঈশ্বর তাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে উদ্ধার করেছিলেন এবং কিভাবে তিনি তাদের যত্ন নিয়েছিলেন যখন তারা কুটিরে বসবাস করেছিল প্রায় চল্লিশ বছর প্রান্তরে ঘোরার সময়ে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা প্রতিজ্ঞাত দেশে পৌঁছেছিল। (লেবীয় পুস্তক ২৩:৩৯-৪৩) উৎসবের সময়ে মন্দিরের বেদীতে ৭০টি ষাঁড়কে বলি দেওয়া হত। প্রমাণ অনুসারে, উৎসবের এই বৈশিষ্ট্যটি ছিল যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা সম্পাদিত সিদ্ধ ও সম্পূর্ণ জীবনরক্ষাকারী কাজ বিষয়ক ভবিষ্যদ্বাণী। তাঁর মুক্তির মূল্যের উপকারগুলি পরিশেষে মানবজাতির ৭০টি পরিবারের অসংখ্য বংশধরদের উপর প্রবাহিত হবে যারা নোহর থেকে এসেছে।—আদিপুস্তক ১০:১-২৯; গণনাপুস্তক ২৯:১২-৩৪; মথি ২০:২৮.

১৬, ১৭. (ক) কখন রূপক কুটিরোৎসব আরম্ভ হয়েছিল এবং কিভাবে এটি চলতে থাকে? (খ) এই উদ্‌যাপনে বিরাট জনতা কিভাবে অংশ নেয়?

১৬ তাই প্রাচীন কুটিরোৎসব ইঙ্গিত করে যিহোবার মহান আত্মিক মন্দিরে উদ্ধারকৃত পাপীদের আনন্দিত সমাবেশকে। খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীতে আত্মিক ইস্রায়েলদের আনন্দিত সমাবেশের আরম্ভ দিয়ে এই রূপক উৎসবটি শুরু হয়েছিল সা.শ. ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর দিনে। (প্রেরিত ২:৪১; ৪৬, ৪৭) এই অভিষিক্ত ব্যক্তিরা উপলব্ধি করেছে যে শয়তানের এই জগতে তারা “প্রবাসী” কারণ তারা প্রকৃতপক্ষে “স্বর্গপুরীর প্রজা।” (১ পিতর ২:১১; ফিলিপীয় ৩:২০) এই আনন্দিত উৎসবটি সাময়িকভাবে ধর্মভ্রষ্টতার দ্বারা ঢেকে গিয়েছিল যার ফলস্বরূপ খ্রীষ্টীয়জগৎ গঠিত হয়। (২ থিষলনীকীয় ২:১-৩) কিন্তু, ১৯১৯ সালে ১,৪৪,০০০ জন আত্মিক ইস্রায়েলের শেষ সদস্যদের আনন্দপূর্ণ সমবেশ দিয়ে এই উৎসবটি পুনরায় আরম্ভ হয়েছিল যা পরে প্রকাশিত বাক্যের ৭:৯ পদের আন্তর্জাতিক বিরাট জনতাকে একত্রিত করার দ্বারা অনুসৃত হয়।

১৭ এই বিরাট জনতার সম্বন্ধে বর্ণনা করা হয়েছে যে তাদের হাতে খেজুর পাতা আছে, যেটি দেখায় যে তারাও হল এই রূপক কুটিরোৎসবের আনন্দিত উদ্‌যাপনকারী। উৎসর্গীকৃত খ্রীষ্টান হিসাবে, তারা আনন্দের সাথে যিহোবার মন্দিরে আরও উপাসকদের একত্রীকরণের কাজে অংশ নেয়। এছাড়া পাপী হিসাবে, তারা উপলব্ধি করে যে তাদের পৃথিবীতে চিরকাল বসবাস করার অধিকার নেই। ভবিষ্যৎ পুনরুত্থিত ব্যক্তিদের সাথে তাদেরও অবশ্যই খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্যে বিশ্বাস করতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা খ্রীষ্টের হাজার বছরের রাজত্বের শেষে মানব সিদ্ধতায় পৌঁছায়।—প্রকাশিত বাক্য ২০:৫.

১৮. (ক) যীশু খ্রীষ্টের হাজার বছর রাজত্বের শেষে কী ঘটবে? (খ) পরিশেষে কিভাবে যিহোবার সত্য উপাসনা বিজয়লাভ করবে?

১৮ তারপর, স্বর্গীয় যাজকত্বের প্রয়োজন ছাড়াই পৃথিবীতে ঈশ্বরের উপাসকেরা সিদ্ধ মানব রূপে তাঁর সামনে দাঁড়াবে। এই সময়টি আসবে যখন যীশু খ্রীষ্ট “পিতা ঈশ্বরের হস্তে রাজ্য সমর্পণ করিবেন।” (১ করিন্থীয় ১৫:২৪) তারপর সিদ্ধ মানবজাতিকে পরীক্ষা করার জন্য “অল্প কালের নিমিত্ত” শয়তানকে মুক্ত করা হবে। শয়তান ও তার মন্দ দূতেদের সাথে অবিশ্বস্ত ব্যক্তিরা চিরকালের জন্য ধ্বংস হবে। যারা বিশ্বস্ত থাকবে তাদের অনন্ত জীবন দেওয়া হবে। তারা পার্থিব পরমদেশে চিরস্থায়ী বসবাসকারী হবে। এইভাবে রূপক কুটিরোৎসব এক গৌরবময়, সফল পরিণতিতে পৌঁছাবে। যিহোবার অনন্তকালীন গৌরব ও মানবজাতির অনন্ত সুখের জন্য সত্য উপাসনা বিজয়লাভ করবে।—প্রকাশিত বাক্য ২০:৩, ৭-১০, ১৪, ১৫.

[পাদটীকাগুলো]

a সখরিয় ১৪ অধ্যায়ের প্রত্যেক পদের উপর ব্যাখ্যার জন্য, ১৯৭২ সালের ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটির দ্বারা প্রকাশিত ঈশ্বতন্ত্রের দ্বারা—মানবজাতির জন্য পরমদেশ পুনর্স্থাপিত! (ইংরাজি) নামক বইটির ২১ ও ২২ অধ্যায় দেখুন।

b আধুনিক-দিনের নথীনীয়বর্গ সম্বন্ধে আরও তথ্য জানার জন্য প্রহরীদুর্গ (ইংরাজি), এপ্রিল ১৫, ১৯৯২, পৃষ্ঠা ১৬ দেখুন।

পুনরালোচনার প্রশ্নগুলি

◻ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ‘যিরূশালেম’ কিভাবে আক্রমণের অধীন হয়?—সখরিয় ১৪:২.

◻ ১৯১৯ সাল থেকে ঈশ্বরের লোকেদের প্রতি কী ঘটেছে?

◻ রূপক কুটিরোৎসব উদ্‌যাপনে আজকে কারা অংশ নেয়?

◻ কিভাবে সত্য উপাসনা সম্পূর্ণরূপে বিজয়লাভ করবে?

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

কুটিরোৎসব উদ্‌যাপনের সময়ে খেঁজুর পাতা ব্যবহৃত হত

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার