পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল
কয়েক বছরের রিপোর্ট দেখায় যে স্মরণার্থক প্রতীকগুলি গ্রহণকারী ব্যক্তিদের সংখ্যা সামান্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাহলে এটি কি এই ইঙ্গিত করে যে অনেক নতুন ব্যক্তিরা পবিত্র আত্মার দ্বারা অভিষিক্ত হচ্ছে?
এটি বিশ্বাস করার যথেষ্ট উত্তম কারণ রয়েছে যে ১,৪৪,০০০ জনের অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের সংখ্যা বহু দশক আগে সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
সেই সীমিত দলটির প্রথম ব্যক্তিদের সম্বন্ধে আমরা প্রেরিত ২:১-৪ পদে পড়ি: “পরে পঞ্চাশত্তমীর দিন উপস্থিত হইলে তাঁহারা সকলে এক স্থানে সমবেত ছিলেন। আর হঠাৎ আকাশ হইতে প্রচণ্ড বায়ুর বেগের শব্দবৎ একটা শব্দ আসিল, এবং যে গৃহে তাঁহারা বসিয়াছিলেন, সেই গৃহের সর্ব্বত্র ব্যাপ্ত হইল। আর অংশ অংশ হইয়া পড়িতেছে, এমন অনেক অগ্নিবৎ জিহ্বা তাঁহাদের দৃষ্টিগোচর হইল; এবং তাঁহাদের প্রত্যেক জনের উপরে বসিল। তাহাতে তাঁহারা পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হইলেন, এবং আত্মা তাহাদিগকে যেরূপ বক্তৃতা দান করিয়াছিলেন, তদানুসারে অন্য অন্য ভাষায় কথা কহিতে লাগিলেন।”
এরপর, যিহোবা অন্যদের নির্বাচন করেন আর তাঁর পবিত্র আত্মার দ্বারা তিনি তাদের অভিষিক্ত করেন। খ্রীষ্টতত্ত্বের সেই প্রথম বছরগুলিতে হাজার হাজার ব্যক্তিরা যুক্ত হয়েছিল। আমাদের কালে স্মরণার্থক সভা উদ্যাপনের সময়ে, বক্তা প্রায়ই রোমীয় ৮:১৫-১৭ পদে প্রেরিত পৌলের কথাগুলির প্রতি আকৃষ্ট করান, যেটি উল্লেখ করে যে অভিষিক্তেরা ‘দত্তকপুত্ত্রতার আত্মা পায়।’ পৌল আরও বলেছিলেন যে, যে পবিত্র আত্মা তারা পায় তা ‘তাদের আত্মার সাথে সাক্ষ্য দেয় যে, তারা ঈশ্বরের সন্তান, খ্রীষ্টের সহদায়াদ।’ যাদের সত্যই এই অভিষেককারী আত্মা রয়েছে তারা নিশ্চিতভাবে তা জানেন। এটি কেবলমাত্র একটি ইচ্ছা অথবা নিজেদের কোন আবেগগত প্রতিফলন এবং অবাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি নয়।
যদিও তথা-কথিত অন্ধকারময় যুগে, হয়ত এমন সময় এসেছে যখন অভিষিক্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা খুবই কম ছিল, তবুও আমরা বুঝতে পারি যে এই স্বর্গীয় আহ্বান শতাব্দীর পর শতাদ্বীর ধরে চলে এসেছে।a বিগত শতাব্দীর প্রায় শেষের দিকে সত্য খ্রীষ্টতত্ত্বের পুনর্স্থাপন হওয়ার সাথে আরও অধিক ব্যক্তিদের আহ্বান ও মনোনয়ন করা হয়। কিন্তু এটি মনে করা হয় যে ১৯৩০ দশকের মধ্যভাগে, মূলতঃ ১,৪৪,০০০ জনের পূর্ণ সংখ্যা শেষ হয়েছিল। তাই পার্থিব আশা নিয়ে বিশ্বস্ত খ্রীষ্টানদের একটি দল আবির্ভূত হতে শুরু করে। যীশু এদের “আরও মেষ” বলে অভিহিত করেছিলেন, যারা এক অনুমোদিত দল হিসাবে অভিষিক্তদের সাথে উপাসনায় একতাবদ্ধ।—যোহন ১০:১৪-১৬.
বিগত দশকগুলি ধরে, অভিষিক্তদের আহ্বানের সমাপ্তি এবং ক্রমবর্ধমান ‘বিস্তর লোকের,’ যারা “মহাক্লেশ” থেকে উদ্ধার পাবে বলে আশা করে তাদের উপর যিহোবার আশীর্বাদ উভয়ই প্রতিফলিত হয়েছে। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯, ১৪) উদাহরণস্বরূপ, ১৯৩৫ সালে স্মরণার্থক সভা উদ্যাপনের সময়ে যোগদানকারীর সংখ্যা ছিল ৬৩,১৪৬ জন, আর অভিষিক্ত বলে প্রকাশ্যে ঘোষণার প্রমাণস্বরূপ যারা এই প্রতীকগুলিকে গ্রহণ করেছিল তাদের সংখ্যা ছিল ৫২,৪৬৫ জন। ত্রিশ বছর পর অর্থাৎ ১৯৬৫ সালে, যোগদানকারীদের সংখ্যা ছিল ১৯,৩৩,০৮৯, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১১,৫৫০ জন। ৩০ বছর পেরিয়ে, ১৯৯৫ সালে যোগদানকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১,৩১,৪৭,২০১, কিন্তু কেবলমাত্র ৮,৬৪৫ জন সেই রুটি ও দ্রাক্ষারস গ্রহণ করেন। (১ করিন্থীয় ১১:২৩-২৬) স্পষ্টতই, দশকগুলি যতই অতিক্রান্ত হতে থাকে, অবশিষ্টাংশ বলে যারা প্রকাশ্যে স্বীকৃত তাদের সংখ্যা খুবই কমে যায়—প্রায় ১৯৩৫ সালে ৫২,৪০০; ১৯৬৫ সালে ১১,৫০০; ১৯৯৫ সালে ৮,৬০০. কিন্তু, যাদের পার্থিব আশা রয়েছে তারা আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়েছে এবং পর্যাপ্তভাবে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
খুব সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টটি হল ১৯৯৫ সাল আর এটি দেখায় যে বিগত বছরের চাইতে আরও অতিরিক্ত ২৮ জন অংশগ্রহণকারী ছিল যদিও অংশগ্রহণকারীদের গড় প্রকৃতরূপে হ্রাস পেয়েছিল। বিবেচিত সমস্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে, এই তথ্য, যে আরও কিছু ব্যক্তিকে প্রতীকগুলি গ্রহণ করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে, তা চিন্তার কোন কারণ নয়। কিছু বছর ধরে, এমনকি নতুন বাপ্তাইজিত ব্যক্তিরা হঠাৎ করে অংশ নিতে শুরু করে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে, কিছুদিন পরে তারা বুঝতে পারে যে এটি ছিল একটি ভুল কাজ। কেউ কেউ এও স্বীকার করে যে আবেগের বশে হয়ত শারীরিক অথবা মানসিক চাপের ফলে তারা এটি গ্রহণ করেছিল। কিন্তু পরিশেষে তারা উপলব্ধি করেছিল যে বাস্তবিকপক্ষে তাদের স্বর্গীয় জীবনের জন্য আহ্বান করা হয়নি। ঈশ্বরের করুণাপূর্ণ বোধগম্যতার জন্য তারা প্রার্থনা করেছিল। আর তারা পৃথিবীতে অনন্ত জীবনের আশা নিয়ে উত্তম, বিশ্বস্ত খ্রীষ্টান হিসাবে ক্রমাগতভাবে তাঁকে সেবা করে চলে।
যদি একজন ব্যক্তি প্রতীকগুলি নিতে শুরু করে অথবা তা নিতে বন্ধ করে দেয় তাহলে তাতে আমাদের কারও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। কাউকে বাস্তবিকপক্ষে পবিত্র আত্মা দ্বারা অভিষিক্ত করা অথবা স্বর্গীয় জীবনে আহ্বান করা হয়েছে অথবা হয়নি তা প্রকৃতপক্ষে আমাদের জানার বিষয় নয়। যীশুর দৃঢ় আশ্বাসবাণীকে স্মরণ করুন: “আমিই উত্তম মেষপালক; আমার নিজের সকলকে আমি জানি।” ঠিক তেমনি নিশ্চিতভাবে যিহোবা তাদের জানেন যাদের তিনি আত্মিক পুত্র হিসাবে মনোনীত করেছেন। তাই আগত দিনগুলিতে যে অভিষিক্তদের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাবে এবং অদৃষ্টপূর্ব ঘটনাগুলি তাদের পার্থিব জীবনকে শেষ করবে তা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কিন্তু, এমনকি যেমন এই সত্যই অভিষিক্ত ব্যক্তিরা মৃত্যু পর্যন্ত বিশ্বস্ততা প্রমাণ করে, জীবন মুকুট পাওয়ার অপেক্ষায় থাকবে, তেমনি অপর মেষ, যারা মেষশাবকের রক্তে তাদের বস্ত্র ধৌত করেছে তারা আগত মহাক্লেশ থেকে রক্ষার জন্য আশা করতে পারে।—২ তীমথিয় ৪:৬-৮; প্রকাশিত বাক্য ২:১০.
[পাদটীকাগুলো]
a মার্চ ১৫, ১৯৬৫ সালের প্রহরীদুর্গ (ইংরাজি) এর পৃষ্ঠা ১৯১-২ দেখুন।