প্রকৃত সুখ কোথায় পাওয়া যেতে পারে?
অনেক লোকেরা মনে করে যে বস্তুগত সম্পদগুলি অর্জন করার দ্বারা সুখ পাওয়া যেতে পারে। আপনার সম্বন্ধে কী? যদিও বস্তুগত জিনিসগুলি আমাদের সুখের ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই কিছু অবদান রাখতে পারে, কিন্তু সেগুলি এটিকে নিশ্চিত করে না; অথবা শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য বিশ্বাস গড়ে তুলতে অথবা আধ্যাত্মিক চাহিদাগুলি পূর্ণ করতে পারে না।
পর্বতে দত্ত তাঁর উপদেশে, যীশু খ্রীষ্ট বলেছিলেন: “সুখী তারাই যারা তাদের আধ্যাত্মিক চাহিদার প্রতি সচেতন, কারণ স্বর্গ-রাজ্য তাদেরই।” (মথি ৫:৩, NW) যীশু আরও বলেছিলেন: “সর্ব্বপ্রকার লোভ হইতে আপনাদিগকে রক্ষা করিও, কেননা উপচিয়া পড়িলেও মনুষ্যের সম্পত্তিতে তাহার জীবন হয় না।”—লূক ১২:১৫.
অনেকে অবৈধ যৌন আচরণ এবং অন্যান্য “মাংসের কার্য্য সকল” এর সাথে জড়িত হওয়ার দ্বারা সুখ খোঁজে। (গালাতীয় ৫:১৯-২১) কিন্তু, ইন্দ্রিয়গত আনন্দের প্রতি আত্মসমর্পন করা প্রকৃত ও স্থায়ী সুখ আনতে পারে না। বস্তুতপক্ষে, যারা এইরূপ বিষয়গুলি অভ্যাস করে তারা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাবে না।—১ করিন্থীয় ৬:৯, ১০.
অন্যান্যেরা তাদের সুখের প্রত্যাশায় নিজস্ব আত্ম-সম্মান গড়ে তোলার প্রচেষ্টার দিকে ধাবিত হয়। গ্রন্থাগার এবং বইয়ের দোকানগুলি স্বাবলম্বী হতে নির্দেশনার বইগুলির দ্বারা পূর্ণ, কিন্তু এইরূপ প্রকাশনাদি লোকেদের জন্য স্থায়ী সুখ নিয়ে আসেনি। তাহলে, কোথায় আমরা প্রকৃত সুখ পেতে পারি?
প্রকৃতভাবে সুখী হওয়ার জন্য, আমাদের অবশ্যই আমাদের সহজাত আধ্যাত্মিক চাহিদাকে শনাক্ত করতে হবে। যীশু বলেছিলেন: “সুখী তারাই যারা তাদের আধ্যাত্মিক চাহিদার প্রতি সচেতন।” অবশ্যই, এটি আমাদের অল্পই উপকার করতে পারে যদি আমরা এই চাহিদাকে কেবলমাত্র উপলব্ধি করি এবং তারপর এই সম্বন্ধে কোন কিছু করতে ব্যর্থ হই। উদাহরণস্বরূপ: একজন ম্যারাথন দৌড়বিদের কী হবে যে প্রতিযোগিতার পর তার দেহের জলের চাহিদার প্রতি সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়। সে কি শীঘ্রই জলশূন্যতা এবং অন্যান্য গুরুতর পরিণতির সম্মুখীন হবে না? অনুরূপভাবে, আধ্যাত্মিক পুষ্টির জন্য যদি আমরা আমাদের চাহিদার প্রতি সাড়া দিতে ব্যর্থ হই, তাহলে আমরা পরিণামে আধ্যাত্মিকভাবে নির্জীব হয়ে যাব। এটি আনন্দ ও সুখ হারানোর দিকে পরিচালিত করবে।
যীশু তাঁর আধ্যাত্মিক চাহিদাকে সম্পূর্ণরূপে শনাক্ত করেছিলেন, নিয়মিতরূপে ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন ও ধ্যান করে। তিনি সহজেই পবিত্র শাস্ত্রাবলির অংশ নির্দেশ করতে ও পড়তে পারতেন এবং তিনি অন্যান্যদেরও একইরূপ করতে শিক্ষা দিয়েছিলেন। (লূক ৪:১৬-২১; তুলনা করুন ইফিষীয় ৪:২০, ২১.) এছাড়াও যীশু তাঁর স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করাকে খাদ্যের সাথে তুলনা করেছিলেন। ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন তাঁর জন্য প্রচুর পরিমাণে সুখ নিয়ে এসেছিল।—যোহন ৪:৩৪.
হ্যাঁ, বস্তুগত জিনিসগুলি অর্জন করার দ্বারা প্রকৃত সুখ লাভ করা যায় না; অথবা পতিত মাংসের চাহিদা মেটানোর দ্বারাও সুখ আসে না। প্রকৃত সুখ হল হৃদয়ের এক অবস্থা, যা অকৃত্রিম বিশ্বাস এবং যিহোবা ঈশ্বরের সাথে এক উত্তম সম্পর্কের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাই উপযুক্তভাবে, গীতরচক দায়ূদ গেয়েছিলেন: “ধন্য [“সুখী,” NW] সেই জাতি, সদাপ্রভু [“যিহোবা,” NW] যাহার ঈশ্বর।”—গীতসংহিতা ১৪৪:১৫খ.
[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]
বিশ্বাস এবং ঈশ্বরের সাথে এক উত্তম সম্পর্ক আপনার জন্য প্রকৃত সুখ নিয়ে আসবে