ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৭ ৭/১৫ পৃষ্ঠা ৪-৭
  • যখন পাপ আর থাকবে না

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যখন পাপ আর থাকবে না
  • ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • মানুষ—পাপশূন্যভাবে সৃষ্ট হয়েছিল
  • পাপের উৎস
  • বিবেক ‘দোষী করে’ অথবা ‘সমর্থন করে’
  • পাপ থেকে স্বাধীনতা—কিভাবে?
  • খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্য আমাদের জন্য কী করতে পারে
  • খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্য—পরিত্রাণের জন্য ঈশ্বরের পথ
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবা ‘অনেকের পরিবর্ত্তে মুক্তির মূল্যের’ ব্যবস্থা করেন
    যিহোবার নিকটবর্তী হোন
  • যীশু পরিত্রাণ করেন—কীভাবে?
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “বহুমূল্য রক্ত” দ্বারা উদ্ধার পাওয়া
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৭ ৭/১৫ পৃষ্ঠা ৪-৭

যখন পাপ আর থাকবে না

“আমরা কি পাঈপে জন্মগ্রহণ করেছি?” বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করার অল্প কিছু পরেই এই প্রশ্নটি যুক্তরাষ্ট্রের এক স্নাতক ছাত্রকে বিভ্রান্ত করেছিল। হিন্দু পটভূমি থেকে আসার কারণে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পাপের ধারণাটি তার কাছে অপরিচিত ছিল। সে যুক্তি করেছিল যে, পাপ যদি প্রকৃতই উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হয়ে থাকে তাহলে এর বাস্তবতাকে অস্বীকার বা অবজ্ঞা করা অর্থহীন হবে। কিভাবে একজন এই প্রশ্নটির উত্তর খুঁজে পেতে পারে?

যদি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই পাপের একটি উৎসস্থল থাকবে। প্রথম মানুষটিকে কি দুষ্ট করেই সৃষ্টি করা হয়েছিল, যার ফলে সে মন্দ বৈশিষ্ট্যগুলি তার সন্তানদের মধ্যে সঞ্চারিত করেছিল? অথবা এই ত্রুটি পরে বিকশিত হয়েছিল? নির্দিষ্টভাবে ঠিক কখন পাপের আরম্ভ হয়? অপরপক্ষে, পাপ যদি কেবলমাত্র এক বাহ্যিক, মন্দ সত্তা অথবা গুণ হয়, তাহলে আমরা কি কখনও এর থেকে স্বাধীনতা লাভ করার আশা রাখতে পারি?

হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী দুঃখকষ্ট ও মন্দতা সৃষ্টির সাথে সাথে বিদ্যমান। একজন হিন্দু পণ্ডিত উল্লেখ করেন “দুঃখকষ্ট [অথবা মন্দতা] দীর্ঘস্থায়ী বাতের মত যেটি কেবলমাত্র এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় স্থানান্তরিত হয় কিন্তু সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয় না।” সমগ্র নথিবদ্ধ ইতিহাসে মন্দতা নিশ্চিতভাবেই মানবজাতির জীবনের এক অংশ হয়ে এসেছে। যদি এটি মানুষের ঐতিহাসিক নথির চেয়েও পূর্বকালীন হয়, তাহলে এর উৎপত্তি সম্বন্ধে নির্ভরযোগ্য উত্তরগুলি অবশ্যই মানুষের চেয়ে উচ্চতর এক উৎস থেকে আসা প্রয়োজনীয়। উত্তরগুলি অবশ্যই ঈশ্বরের কাছ থেকে আসবে।—গীতসংহিতা ৩৬:৯.

মানুষ—পাপশূন্যভাবে সৃষ্ট হয়েছিল

হিন্দু দার্শনিক নিখিলানন্দ স্বীকার করেন যে বেদে বর্ণিত মানুষ সৃষ্টির বিবরণটি হল রূপক। অনুরূপভাবে, প্রাচ্যের অধিকাংশ ধর্মগুলি সৃষ্টি সম্বন্ধে কেবলমাত্র পৌরাণিক ব্যাখ্যাই প্রদান করে থাকে। তবুও, প্রথম মানুষের সৃষ্টি সম্বন্ধে বাইবেলের বিবরণে বিশ্বাস করার জন্য যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক উভয় কারণই রয়েছে।a এর সর্বপ্রথম অধ্যায়টি উল্লেখ করে: “ঈশ্বর আপনার প্রতিমূর্ত্তিতে মনুষ্যকে সৃষ্টি করিলেন; ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তিতেই তাহাকে সৃষ্টি করিলেন, পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে সৃষ্টি করিলেন।”—আদিপুস্তক ১:২৭.

“ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তিতে” সৃষ্ট হওয়ার অর্থ কী? সহজ অর্থে এটিই: মানুষকে ঈশ্বরের অনুরূপে তৈরি করা হয়েছিল, ঈশ্বরীয় গুণাবলি দিয়ে—যেমন ন্যয়বিচার, প্রজ্ঞা এবং প্রেম—যা তাকে পশুদের থেকে পৃথক করে। (কলসীয় ৩:৯, ১০ পদের সাথে তুলনা করুন।) এই গুণাবলি তাকে নৈতিক দিক দিয়ে স্বাধীন ব্যক্তিরূপে, ভাল অথবা মন্দ কাজ করার ক্ষেত্রে মনোনয়ন করার ক্ষমতা দিয়েছিল। যখন সে সৃষ্ট হয়েছিল, প্রথম মানুষের মধ্যে কোন পাপ ছিল না, কিংবা তার জীবনে কোন মন্দতা অথবা দুঃখকষ্ট ছিল না।

মনুষ্য আদমের প্রতি যিহোবা এই আজ্ঞা দিয়েছিলেন: “তুমি এই উদ্যানের সমস্ত বৃক্ষের ফল স্বচ্ছন্দে ভোজন করিও; কিন্তু সদসদ্‌-জ্ঞানদায়ক যে বৃক্ষ, তাহার ফল ভোজন করিও না, কেননা যে দিন তাহার ফল খাইবে, সেই দিন মরিবেই মরিবে।” (আদিপুস্তক ২:১৬, ১৭) বাধ্য হওয়াকে মনোনীত করে আদম ও তার স্ত্রী হবা, তাদের সৃষ্টিকর্তার জন্য প্রশংসা ও সম্মান নিয়ে আসতে এবং পাপ থেকে স্বাধীন থাকতে পারত। অপরপক্ষে, অবাধ্যতামূলক এক পদক্ষেপ তাদের ঈশ্বরের সিদ্ধ মানের উপযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়াকে ইঙ্গিত করত আর তাদের অসিদ্ধ—পাপী করে তুলত।

আদম এবং হবা ঐশিকভাবে সৃষ্ট হয়নি। কিন্তু, তাদের কিছু ঐশিক গুণাবলি এবং নীতিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা ছিল। ঈশ্বরের সৃষ্টি হওয়ায় তারা পাপহীন অর্থাৎ সিদ্ধ ছিল। (আদিপুস্তক ১:৩১; দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৪) তাদের অস্তিত্বে নিয়ে আসা, তারা সৃষ্ট হওয়ার বহু যুগ আগে থেকেই ঈশ্বর ও নিখিল বিশ্বের মধ্যে বিরাজমান ঐকতানকে চূর্ণ করেনি। তাহলে কিভাবে পাপের শুরু হয়েছিল?

পাপের উৎস

পাপ প্রথমে আত্মিক রাজ্যে ঘটেছিল। পৃথিবী এবং মানুষ সৃষ্টির আগে ঈশ্বর বুদ্ধিমান আত্মিক প্রাণী দূতেদের সৃষ্টি করেছিলেন। (ইয়োব ১:৬; ২:১; ৩৮:৪-৭; কলসীয় ১:১৫-১৭) এই দূতেদের মধ্যে একজন তার নিজের সৌন্দর্য ও বুদ্ধিমত্তা সম্বন্ধে খুব বেশি চিন্তা করেছিল। (যিহিষ্কেল ২৮:১৩-১৫ পদের সাথে তুলনা করুন।) আদম ও হবাকে দেওয়া সন্তান উৎপাদন সম্বন্ধীয় ঈশ্বরের নির্দেশ থেকে এই দূত দেখতে পেয়েছিল যে শীঘ্রই সম্পূর্ণ পৃথিবী ধার্মিক মানুষে পূর্ণ হয়ে যাবে যাদের সকলেই ঈশ্বরকে উপাসনা করবে। (আদিপুস্তক ১:২৭, ২৮) এই আত্মিক প্রাণী নিজে তাদের উপাসনা পাওয়ার জন্য আকাঙ্ক্ষী ছিল। (মথি ৪:৯, ১০) এই আকাঙ্ক্ষা পোষণ করা তাকে এক ভুল পথ নিতে পরিচালিত করেছিল।—যাকোব ১:১৪, ১৫.

একটি সাপের মাধ্যমে হবার সাথে কথা বলে এই বিদ্রোহী দূত হবাকে বলেছিল যে সদসদ্‌ জ্ঞানদায়ক বৃক্ষের ফল খাওয়া নিষিদ্ধ করে ঈশ্বর তাকে সেই জ্ঞান থেকে বঞ্চিত করছেন যেটি তার পাওয়া উচিত ছিল। (আদিপুস্তক ৩:১-৫) এটি বলা এক ঘৃণার্হ মিথ্যা—এক পাপপূর্ণ কাজ ছিল। এই মিথ্যাটি বলার দ্বারা দূতটি নিজেকে এক পাপীতে পরিণত করেছিল। তখন থেকেই তাকে দিয়াবল, অপবাদক এবং শয়তান, ঈশ্বরের এক বিপক্ষ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।—প্রকাশিত বাক্য ১২:৯.

শয়তানের বিশ্বাস উৎপাদনকারী কথোপকথন হবার উপরে এক প্রতিকূল প্রভাব এনেছিল। প্রলোভনকারীর বাক্যগুলির উপর তার আস্থা স্থাপন করে সে নিজেকে প্রতারিত হতে অনুমোদন করেছিল আর নিষিদ্ধ বৃক্ষের কিছু ফল খেয়েছিল। তার স্বামী আদম সেই ফল খাওয়ায় তার সাথে যোগ দিয়েছিল আর তারপর তারা দুজনেই পাপীতে পরিণত হয়েছিল। (আদিপুস্তক ৩:৬; ১ তীমথিয় ২:১৪) স্পষ্টতই, ঈশ্বরের অবাধ্য হওয়াকে মনোনীত করে আমাদের প্রথম পিতামাতা সিদ্ধতার লক্ষ্যকে হারিয়েছিল এবং নিজেদের পাপীতে পরিণত করেছিল।

আদম ও হবার সন্তানদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? বাইবেল ব্যাখ্যা করে: “অতএব যেমন এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।” (রোমীয় ৫:১২) বংশগতির নিয়মটি ইতিমধ্যেই কার্যকর ছিল। তার কাছে যা ছিল না সেটি আদম তার সন্তানদের মধ্যে সঞ্চারিত করতে পারত না। (ইয়োব ১৪:৪) সিদ্ধতা হারিয়ে ফেলার কারণে যখন তাদের সন্তানেরা গর্ভে এসেছিল প্রথম দম্পতি পাপী ছিল। ফলস্বরূপ আমাদের সকলে—ব্যতিক্রম ছাড়াই—উত্তরাধিকারসূত্রে পাপ পেয়েছি। (গীতসংহিতা ৫১:৫; রোমীয় ৩:২৩) পরিবর্তে, পাপ কেবলমাত্র মন্দতা এবং দুঃখকষ্ট ছাড়া কিছুই উৎপন্ন করতে পারেনি। এছাড়াও, এই কারণে আমরা সকলে বৃদ্ধ হই এবং মারা যাই। “কেননা পাপের বেতন মৃত্যু।”—রোমীয় ৬:২৩.

বিবেক ‘দোষী করে’ অথবা ‘সমর্থন করে’

প্রথম মনুষ্য যুগলের ব্যবহারের উপর পাপের প্রভাব সম্বন্ধেও বিবেচনা করুন। তারা তাদের দেহের অংশ আবৃত করেছিল এবং নিজেদের ঈশ্বরের কাছ থেকে লুকানোর চেষ্টা করেছিল। (আদিপুস্তক ৩:৭, ৮) সুতরাং পাপ তাদের দোষী, উদ্বিগ্ন এবং লজ্জিত বোধ করার কারণস্বরূপ হয়েছিল। আজকে মানবজাতি এই সমস্ত অনুভূতির সাথে খুবই পরিচিত।

সত্যই যার প্রয়োজন আছে তার প্রতি দয়া না দেখিয়ে কে অস্বস্তিকর অনুভূতি ভোগ করেনি অথবা যে কথা কখনও বলা উচিত ছিল না সেই কথা বলে অনুশোচনা বোধ করেনি? (যাকোব ৪:১৭) কেন আমাদের এইধরনের যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতিগুলি আছে? প্রেরিত পৌল ব্যাখ্যা করেছিলেন যে ‘ব্যবস্থার কার্য্য আপন আপন হৃদয়ে লিখিত।’ যদি আমাদের বিবেক কঠিন না হয়ে থাকে, তাহলে সেই নিয়মের কোনকিছু লঙ্ঘন করাই এক আভ্যন্তরীণ আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাই বিবেকের সেই স্বর আমাদের ‘দোষী করে’ অথবা ‘সমর্থন করে।’ (রোমীয় ২:১৫; ১ তীমথিয় ৪:২; তীত ১:১৫) আমরা এটি উপলব্ধি করি বা না করি, আমাদের ভিতরে ভুল, পাপ সম্বন্ধে একটি বোধ আছে!

পৌল তার পাপপূর্ণ প্রবণতা সম্বন্ধে খুবই সচেতন ছিলেন। তিনি স্বীকার করেছিলেন, “সৎকার্য্য করিতে ইচ্ছা করিলেও মন্দ আমার কাছে উপস্থিত হয়। বস্তুতঃ আন্তরিক মানুষের ভাব অনুসারে আমি ঈশ্বরের ব্যবস্থায় আমোদ করি। কিন্তু আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অন্য প্রকার এক ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি তাহা আমার মনের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, এবং পাপের যে ব্যবস্থা আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আছে, আমাকে তাহার বন্দি দাস করে।” সুতরাং পৌল জিজ্ঞাসা করেছিলেন: “এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে?”—রোমীয় ৭:২১-২৪.

পাপ থেকে স্বাধীনতা—কিভাবে?

একজন পণ্ডিত বলেন “হিন্দু পরম্পরায় মুক্তি হল বারবার জন্মগ্রহণ ও মৃত্যু থেকে মুক্তি।” সমাধান হিসাবে বৌদ্ধ ধর্মও অনুরূপভাবে নির্বাণের প্রতি নির্দেশ করে—যা বাহ্যিক বাস্তবতার প্রতি বিস্মরণপূর্ণ একটি অবস্থা। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পাপের ধারণা সম্বন্ধে বোধগম্যতা না থাকায়, হিন্দু ধর্ম কেবলমাত্র অস্তিত্ব থেকে নিষ্কৃতির প্রতিজ্ঞা করে।

অপরপক্ষে, মুক্তি পাওয়ার জন্য বাইবেলের যে মাধ্যম, তার ফল হল পাপপূর্ণ পরিস্থিতির প্রকৃত অপসারণ। কিভাবে তিনি পাপ থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারেন সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার পর, প্রেরিত পৌল উত্তর দেন: “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি।” (রোমীয় ৭:২৫) হ্যাঁ, নিষ্কৃতি যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে।

মথির সুসমাচার অনুসারে “মনুষ্যপুত্ত্র” যীশু খ্রীষ্ট “অনেকের পরিবর্ত্তে আপন প্রাণ মুক্তির মূল্যরূপে দিতে” এসেছিলেন। (মথি ২০:২৮) ১ তীমথিয় ২:৬ পদে যেমন লিপিবদ্ধ আছে পৌল লিখেছিলেন যে যীশু “সকলের নিমিত্ত মুক্তির মূল্যরূপে আপনাকে প্রদান করিয়াছেন।” “মুক্তির মূল্য” শব্দটি বন্দীদের মুক্তির জন্য অর্থ মূল্য পরিশোধ করাকে সূচিত করে। বিষয়টি হচ্ছে যে এটি একটি সমরূপ মুক্তির মূল্য যেটি ন্যায়বিচারের আইনসঙ্গত মানদণ্ডে ভারসাম্য নিয়ে আসার জন্য মূল্যের অভীষ্ট ফলের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে। কিন্তু কিভাবে একজন মানুষের মৃত্যু “সকলের নিমিত্ত মুক্তির মূল্যরূপে” বিবেচিত হতে পারে?

আদম পাপ ও মৃত্যুতে সমস্ত মানবজাতিকে বিক্রি করেছিল যার অন্তর্ভুক্ত আমরাও। যে মূল্য বা দণ্ড সে দিয়েছিল সেটি ছিল তার সিদ্ধ মানব জীবন। এটিকে আচ্ছাদিত করতে অপর এক সিদ্ধ মানব জীবন—এক সমরূপ মুক্তির মূল্য—পরিশোধ করার প্রয়োজন ছিল। (যাত্রাপুস্তক ২১:২৩; দ্বিতীয় বিবরণ ১৯:২১; রোমীয় ৫:১৮, ১৯) যেহেতু কোন অসিদ্ধ মানুষ এই মুক্তির মূল্য সরবরাহ করতে পারত না, ঈশ্বর তাঁর অসীম প্রজ্ঞার দ্বারা এই দুর্দশা থেকে উদ্ধারের জন্য এক রাস্তা উন্মুক্ত করেছিলেন। (গীতসংহিতা ৪৯:৬, ৭) তিনি তাঁর একজাত পুত্রের সিদ্ধ জীবন স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে এক কুমারীর গর্ভে স্থানান্তরিত করেছিলেন, যাতে করে তিনি এক সিদ্ধ মানুষ হিসাবে জন্মগ্রহণ করতে পারেন।—লূক ১:৩০-৩৮; যোহন ৩:১৬-১৮.

মানবজাতিকে উদ্ধার করার এই কাজ সম্পন্ন করতে যীশুকে পৃথিবীতে থাকাকালীন সম্পূর্ণ সময় এক শুদ্ধ নথি বজায় রাখতে হয়েছিল। এটি তিনি করেছিলেন। এরপর তিনি বলিদানমূলক মৃত্যু বরণ করেছিলেন। এইভাবে, তাঁর নিজের জীবন—মানবজাতির উদ্ধারের জন্য মুক্তির মূল্যরূপে প্রাপ্তিসাধ্য করে যীশু এক সিদ্ধ মনুষ্য জীবনের মূল্য নিশ্চিত করেছিলেন।—২ করিন্থীয় ৫:১৪; ১ পিতর ১:১৮, ১৯.

খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্য আমাদের জন্য কী করতে পারে

যীশুর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদান এমনকি এখনই আমাদের জন্য উপকার করতে পারে। এটিতে বিশ্বাস অনুশীলন করার দ্বারা আমরা ঈশ্বরের সামনে এক শুদ্ধ অবস্থান উপভোগ করতে পারি এবং যিহোবার প্রেমপূর্ণ ও কোমল যত্নের অধীনে আসতে পারি। (প্রেরিত ১০:৪৩; রোমীয় ৩:২১-২৪) যে পাপ আমরা হয়ত করেছি তার কারণে অপরাধবোধ দ্বারা অত্যধিক আচ্ছন্ন হয়ে পড়ার পরিবর্তে আমরা স্বচ্ছন্দে মুক্তির মূল্যের ভিত্তিতে ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাইতে পারি।—যিশাইয় ১:১৮; ইফিষীয় ১:৭; ১ যোহন ২:১, ২.

আগত দিনগুলিতে মুক্তির মূল্য পাপের কারণে সৃষ্ট মানবজাতির অসুস্থ পরিস্থিতির সম্পূর্ণ আরোগ্যলাভকে সম্ভব করবে। বাইবেলের শেষ পুস্তকটি “জীবন-জলের নদী” সম্বন্ধে বর্ণনা করে যেটি ঈশ্বরের সিংহাসন থেকে নির্গত হচ্ছে। নদীর কূলগুলিতে “জাতিগণের আরোগ্য নিমিত্তক” পাতাসহ প্রচুর ফলের গাছ আছে। (প্রকাশিত বাক্য ২২:১, ২) রূপকভাবে বাইবেল এখানে যীশু খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের ভিত্তিতে অনন্তকালের জন্য মানবজাতিকে পাপ ও মৃত্যু থেকে স্বাধীন করা সম্বন্ধীয় সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব ব্যবস্থা সম্বন্ধে বলে।

প্রকাশিত বাক্য পুস্তকের ভবিষ্যদ্বাণীমূলক দর্শনগুলি শীঘ্রই পরিপূর্ণ হবে। (প্রকাশিত বাক্য ২২:৬, ৭) তখন সমস্ত ধার্মিক ব্যক্তিরা “ক্ষয়ের দাসত্ব হইতে মুক্ত হইয়া” সিদ্ধ হবে। (রোমীয় ৮:২০, ২১) এটি কি যিহোবা ঈশ্বর এবং তাঁর বিশ্বস্ত পুত্র যীশু খ্রীষ্ট যিনি মুক্তির মূল্য দিয়েছিলেন, তাঁর সম্বন্ধে আরও শিখতে আমাদের অনুপ্রাণিত করে না?—যোহন ১৭:৩.

[পাদটীকাগুলো]

a ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি দ্বারা প্রকাশিত জীবন—কিভাবে তা এখানে এসেছে? ক্রমবিবর্তন অথবা সৃষ্টির মাধ্যমে? (ইংরাজি) বইটি দেখুন।

[৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

আদম মানবজাতির জন্য পাপ ও মৃত্যু নিয়ে এসেছিল

[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

যীশুর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদান পাপ ও মৃত্যু থেকে স্বাধীনতা নিয়ে আসে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার