আমাদের প্রিয়জনদের জন্য পূর্বেই পরিকল্পনা করা
সম্প্রতি আফ্রিকার একটি সংবাদপত্রে অ্যানির দুঃখের কাহিনী প্রকাশিত হয়েছিল। অ্যানির স্বামী ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি ১৫টি গাড়ি; বেশ কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট; নগদ প্রায় ৪,০০০ (মার্কিন) ডলার; একটি দোকান; একটি মদের দোকান ও তিন শয়নকক্ষ বিশিষ্ট একটি বাড়ি রেখে ১৯৯৫ সালে মারা গিয়েছিলেন। যা তিনি রেখে যাননি তা হচ্ছে একটি উইল।
বিবরণ অনুযায়ী অ্যানির দেবর সম্পত্তি ও অর্থ আত্মসাৎ করেন এবং তাকে ও তার ছয় সন্তানকে তাদের বাড়ি থেকে জোর করে বের করে দেন। নিঃস্ব হয়ে, তিনি সন্তানদের নিয়ে এখন তার দাদার সাথে বাস করেন। তার চার সন্তানকে বিদ্যালয় ছাড়তে হয়েছে কারণ বেতন দেওয়ার বা বিদ্যালয়ের পোশাক কেনার জন্য অর্থ নেই।
অ্যানি উচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন যা নির্দেশ দিয়েছিল যে তাকে একটি গাড়িসহ কিছু সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে নেওয়ার জন্য তার দেবরকে বাধ্য করাতে, একটি লিখিত আদেশনামার জন্য তাকে আবারও আদালতে যেতে হবে।
কেন মৃত্যু সম্বন্ধে চিন্তা করবেন?
অ্যানির কাহিনী স্পষ্টভাবে দেখায় যে, পরিবারের একজন মস্তক তার মৃত্যুর সম্ভাবনা সম্বন্ধে পরিকল্পনা করতে ব্যর্থ হলে কী ঘটতে পারে। মৃত্যুতে, সকল মানুষ “অন্যদের জন্য আপনাদের ধন রাখিয়া যায়।” (গীতসংহিতা ৪৯:১০) এছাড়াও, তাদের সম্পত্তি নিয়ে যা করা হয় তার উপর মৃতদের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। (উপদেশক ৯:৫, ১০) তার বিষয়সম্পত্তি কী করা হবে সেই সম্বন্ধে কিছু বলার থাকলে, একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই মৃত্যুর পূর্বে বিষয়গুলি সম্বন্ধে ব্যবস্থা করতে হবে।
যদিও আমরা সকলেই জানি যে আমরা অপ্রত্যাশিতভাবে মারা যেতে পারি, অনেক লোকেরা তাদের জীবিত প্রিয়জনদের জন্য আগে থেকে ব্যবস্থা করতে অকৃতকার্য হন। যদিও আমাদের আলোচনা আফ্রিকার নির্দিষ্ট কিছু সংস্কৃতির গোষ্ঠীর প্রতি আলোকপাত করবে, বিশ্বের অন্যান্য অংশেও একই সমস্যাগুলি বিদ্যমান।
মৃত্যুর পরে আপনার সম্পত্তি হস্তান্তর সম্বন্ধে কোন পদক্ষেপ আপনি গ্রহণ করুন বা না করুন সেটি আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। (গালাতীয় ৬:৫) তবুও, একজন হয়ত জিজ্ঞাসা করতে পারেন, ‘কেন একজন ব্যক্তি জীবিত অবস্থায় তার স্ত্রী ও সন্তানদের সস্নেহে পালন করেন ও যত্ন নেন অথচ তার মৃত্যুর পর তাদের মঙ্গলের জন্য কোন ব্যবস্থা করেন না?’ একটি প্রধান কারণ হল, আমাদের অধিকাংশই আমরা যে মারা যেতে পারি সেই সম্ভাবনা সম্বন্ধে চিন্তা করতে চাই না আর মৃত্যুর জন্য পরিকল্পনা করা তো দূরের কথা। বস্তুত, আমরা আমাদের মৃত্যুর দিন সম্বন্ধে আগে থেকে জানতে পারি না যেমন বাইবেল বলে: “তোমরা ত কল্যকার তত্ত্ব জান না; তোমাদের জীবন কি প্রকার? তোমরা ত বাষ্পস্বরূপ, যাহা ক্ষণেক দৃশ্য থাকে, পরে অন্তর্হিত হয়।”—যাকোব ৪:১৪.
মৃত্যুর সম্ভাবনা সম্বন্ধে পরিকল্পনা করা বাস্তবধর্মী। এটি জীবিতদের জন্য প্রেমপূর্ণ আগ্রহকেও প্রদর্শন করে। আমরা যদি আমাদের বিষয়গুলির ব্যবস্থা না করি, তবে অন্যেরা তা করবেন। সম্ভবত যে লোকেদের সাথে আমাদের কখনও দেখা হয়নি তারা আমাদের বিষয়সম্পত্তি ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্বন্ধে সিদ্ধান্ত নেবেন। কিছু দেশে এইধরনের পরিস্থিতিতে, আমাদের অর্থ ও সম্পত্তি কে পাবে সেই বিষয়ে রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যান্য স্থানে, আত্মীয়স্বজনেরা সিদ্ধান্ত নেন আর এই সিদ্ধান্তগুলি প্রায়ই তর্কবিতর্কের দ্বারা পরিবেষ্টিত যা পরিবারের মধ্যে বিদ্বেষের সৃষ্টি করে। তদুপরি, যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা হয়ত আমাদের যা ইচ্ছা ছিল তার চেয়ে অনেক ভিন্ন হয়।
সম্পত্তি আত্মসাৎ করা
স্বামী মারা যাওয়ার পর একজন বিধবাকেই সবচেয়ে বেশি কষ্টভোগ করতে হয়। সাথী হারানোর দুঃখের পাশাপাশি, তিনি প্রায়ই সম্পত্তি আত্মসাতের শিকার হন। শুরুতে অ্যানির ঘটনায় এটি বর্ণিত হয়েছিল। সম্পত্তি আত্মসাতের কারণ অনেকাংশে স্ত্রীদের যেভাবে গণ্য করা হয় তার সাথে সম্পর্কযুক্ত। কিছু সংস্কৃতিতে একজন ব্যক্তির স্ত্রীকে তার পরিবারের অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। তিনি এক অর্থে বহিরাগত, যিনি যে কোন সময় তার পরিবারে ফিরে যেতে বা পুনর্বিবাহের মাধ্যমে অন্য পরিবারে চলে যেতে পারেন। বিপরীতে, যুক্তি দেখান হয় যে একজন ব্যক্তির ভাই, বোন ও পিতামাতারা তাকে কখনও ছেড়ে যাবেন না। তার পরিবার মনে করেন যে যদি তিনি মারা যান তবে যা কিছু তার ছিল তা তাদের অধিকারভুক্ত, তার স্ত্রী ও সন্তানদের নয়।
স্ত্রীদের উপর যে স্বামীদের আস্থা নেই তারাই এইধরনের চিন্তায় ইন্ধন যোগান। মাইক তার ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়গুলি কেবল তার ভাইদের সাথেই আলোচনা করতেন। তারা তার সম্পত্তি সম্বন্ধে জানতেন কিন্তু তার স্ত্রী সেই সম্বন্ধে সামান্যই জানতেন। তিনি যখন মারা যান, তখন তার ভাইরা তার কাছে এসে সেই অর্থ দাবি করেছিলেন যা তার স্বামীর একজন দেনাদারের কাছ থেকে পাওয়ার কথা ছিল। তিনি এমনকি সেই সম্বন্ধে জানতেনও না। এরপর তারা ফটোস্ট্যাট মেশিন ও টাইপরাইটারগুলি দখল করে নেন যেগুলি তার স্বামী তার জন্য কিনে দিয়েছিলেন। অবশেষে, তার ভাইরা বাড়ি ও এর আভ্যন্তরীণ সবকিছু হস্তগত করেন। এই বিধবা ও তার বাচ্চা মেয়েকে কেবল তাদের পরিহিত পোশাক নিয়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।
“সেই দুই জন একাঙ্গ হইবে”
খ্রীষ্টীয় স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের ভালবাসেন ও তাদের আস্থাযোগ্য হিসাবে গণ্য করেন। এইধরনের ব্যক্তিরা এই শাস্ত্রীয় পরামর্শকে হৃদয়ে গ্রহণ করেন: “স্বামীরাও আপন আপন স্ত্রীকে আপন আপন দেহ বলিয়া প্রেম করিতে বাধ্য।” এই ব্যক্তিরা ঐশিকভাবে অনুপ্রাণিত এই উক্তিটির সাথেও একমত: “মনুষ্য আপন পিতা মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে।”—ইফিষীয় ৫:২৮, ৩১.
ঈশ্বরীয় স্বামীরা খ্রীষ্টীয় প্রেরিত পৌলের সাথেও একমত, যিনি লিখেছিলেন: “কিন্তু কেহ যদি আপনার সম্পর্কীয় লোকদের বিশেষতঃ নিজ পরিজনগণের জন্য চিন্তা না করে, তাহা হইলে সে বিশ্বাস অস্বীকার করিয়াছে, এবং অবিশ্বাসী অপেক্ষা অধম হইয়াছে।” (১ তীমথিয় ৫:৮) এই নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে, যদি একজন খ্রীষ্টীয় স্বামী একটি দীর্ঘ যাত্রার পরিকল্পনা করতেন, তবে তার অবর্তমানে তার পরিবারের যত্ন সম্বন্ধে তাকে নিশ্চিত করতে হত। একইভাবে, এটি কি যুক্তিসংগত নয় যে তার মৃত্যুর ক্ষেত্রেও তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য ব্যবস্থা করবেন? অপ্রত্যাশিত দুঃখজনক ঘটনার জন্য প্রস্তুতি কেবল বাস্তবধর্মী নয় কিন্তু প্রেমপূর্ণও।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রথাগুলি
খ্রীষ্টীয় স্বামীদের এই বিষয়ের অন্য একটি দিক বিবেচনা করার আছে। একজন বিধবার তার সাথী, সম্পত্তি ও এমনকি তার সন্তান হারানোর ব্যথাকে আরও বৃদ্ধি করে, কিছু সমাজ তাকে পরম্পরাগত শোক সংক্রান্ত রীতিনীতিগুলি পালন করতে বাধ্য করে। নাইজেরিয়ার অভিভাবক (ইংরাজি) সংবাদপত্রটি অভিযোগ করে যে কিছু এলাকায়, পরম্পরাগত রীতিগুলি একজন বিধবাকে তার স্বামীর মৃতদেহের সাথে একই অন্ধকার ঘরে ঘুমাতে বাধ্য করে। অন্যান্য স্থানে, প্রায় ছয় মাস শোক পালন কালে বিধবাদের তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে দেওয়া হয় না। সেই সময়ে, তারা স্নান করতে পারবেন না আর এমনকি খাওয়ার পূর্বে বা পরে তাদের হাত ধোওয়াও নিষেধ।
এইধরনের প্রথাগুলি সমস্যা উত্থাপন করে, বিশেষ করে খ্রীষ্টীয় বিধবাদের জন্য। ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার আকাঙ্ক্ষা তাদের সেই প্রথাগুলি পরিহার করতে পরিচালিত করে যা বাইবেলের শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। (২ করিন্থীয় ৬:১৪, ১৭) কিন্তু, এই প্রথাগুলি পালন না করার জন্য একজন বিধবাকে হয়ত তাড়না ভোগ করতে হতে পারে। এমনকি তাকে হয়ত তার জীবন রক্ষার জন্য পালাতেও হতে পারে।
বৈধ উপায় অবলম্বন করা
বাইবেল বিজ্ঞতার সাথে বলে: “পরিশ্রমীর চিন্তা হইতে কেবল ধনলাভ হয়।” (হিতোপদেশ ২১:৫) পরিবারের একজন মস্তক কোন্ পরিকল্পনাগুলি করতে পারেন? অধিকাংশ সমাজে একটি উইল বা একটি দলিল তৈরি করা সম্ভব যা উল্লেখ করে যে একজন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি কিভাবে বন্টন করা হবে। এতে হয়ত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংক্রান্ত ব্যবস্থাগুলিরও বিস্তারিত বর্ণনা থাকতে পারে। এছাড়া দলিলটি এও নির্দিষ্ট করে দিতে পারে যে একজন বিবাহ সাথী, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বা শোক সংক্রান্ত প্রথাগুলির ক্ষেত্রে কী করবে (বা করবে না)।
লিয়া নামে একজন মহিলা ১৯৯২ সালে মৃত্যুতে তার স্বামীকে হারিয়েছিলেন। তিনি বলেন: “আমার পাঁচটি সন্তান আছে—চারটি মেয়ে ও একটি ছেলে। আমার স্বামী তার মৃত্যুর কিছু সময় পূর্ব থেকেই অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু তিনি অসুস্থ হওয়ার পূর্বেই, তিনি একটি কাগজে এই কথাগুলি লিখেছিলেন যে তিনি চান তার সমস্ত সম্পত্তি যেন আমি ও আমাদের সন্তানেরা পায়। এর অন্তর্ভুক্ত ছিল বীমাকৃত টাকা, খামার, গবাদি পশু ও একটি বাড়ি। তিনি উইলটিতে সাক্ষর করেছিলেন ও আমাকে দিয়েছিলেন। . . . আমার স্বামীর মৃত্যু পর, আত্মীয়স্বজনেরা তার সম্পত্তির অংশ চেয়েছিলেন। আমি তাদের কাছে উল্লেখ করেছিলাম যে আমার স্বামী তার নিজস্ব টাকায় খামারটি কিনেছিলেন আর তাই তাদের কোন কিছু দাবি করার অধিকার নেই। যখন তারা লিখিত উইলটি দেখেছিলেন, তারা তা মেনে নিয়েছিলেন।”
পরিবারের সাথে বিষয়গুলি আলোচনা করা
একজন ব্যক্তি যদি তার পরিবারের সাথে তার বিশ্বাস ও ইচ্ছা সম্বন্ধে আলোচনা না করেন তখন হয়ত সমস্যা উত্থাপিত হতে পারে। একজন ব্যক্তির বিষয়ে বিবেচনা করুন যার আত্মীয়স্বজনেরা নাছোড়বান্দা ছিলেন যে তার কবর গ্রামে স্থানীয় প্রথা অনুসারে হবে। যখন তাদের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়, তখন তার বিধবা স্ত্রী ও সন্তানেরা তার দেহকে আত্মীয়স্বজনদের হাতে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। তিনি দুঃখ করে বলেন: “যদি আমার স্বামী একবার অন্তত তার একজন কাকা বা কোন সম্পর্কীয় ভাইকে বলতেন যে কিভাবে তিনি চান তার কবর হোক, তাহলে পরিবার তাদের পরম্পরাগত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংক্রান্ত অভ্যাসগুলি সম্বন্ধে নাছোড়বান্দা হত না।”
কিছু সমাজে মৌখিক চুক্তি একটি লিখিত দলিলের মতই কার্যকারী। সোয়াজিল্যান্ডের কিছু অংশে এই অবস্থাটি বিদ্যমান যেখানে অনেকে এমন মতাবলম্বী যা পরম্পরাগত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও শোক সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলিকে উৎসাহিত করে। এটি জেনে, আইজ্যাক নামে একজন খ্রীষ্টান ব্যক্তি তার আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে একটি সভা ডেকেছিলেন যারা যিহোবার সাক্ষী ছিলেন না আর তার মৃত্যুর পর তিনি কী করতে চান সেই সম্বন্ধে আলোচনা করেছিলেন। তিনি তাদের বলেছিলেন যে কে নির্দিষ্ট বস্তুগত সম্পদগুলি পাবেন এবং তিনি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে কিভাবে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে। তিনি মারা যাওয়ার পর, তার ইচ্ছানুযায়ী বিষয়গুলি সম্পাদিত হয়েছিল। আইজ্যাককে খ্রীষ্টীয় রীতি অনুযায়ী কবর দেওয়া ও তার স্ত্রীকে সঠিকভাবে দেখাশোনা করা হয়েছিল।
আপনার পরিবারকে রক্ষা করুন
আপনার মৃত্যুতে পরিবারকে রক্ষা করার জন্য আপনি কী করবেন সেটি ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু এডওয়ার্ড নামে একজন খ্রীষ্টান বলেন: “আমার পরিবারের আটজন সদস্যের উপকারের জন্য আমার একটি জীবন বীমা আছে। আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের একজন দস্তখতকারী হলেন আমার স্ত্রী। তাই আমি যদি মারা যাই, তবে সে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারবে। . . . আমার পরিবারের উপকারার্থে আমার একটি উইল আছে। আমি যদি মারা যাই, তবে যা কিছু আমি রেখে যাব তা আমার স্ত্রী ও সন্তানেরা পাবে। আমি পাঁচ বছর আগে আমার উইলটি লিখে রেখেছি। এটি একজন উকিলের দ্বারা তৈরি করা হয়েছে এবং আমার স্ত্রী ও ছেলের কাছে এর একটি প্রতিলিপি আছে। আমার উইলে, আমি নির্দিষ্ট করে বলেছি যে আমার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আমার আত্মীয়স্বজনদের কোন মতামত থাকবে না। আমি যিহোবার সংগঠনভুক্ত। তাই আমার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত করার জন্য যদি কেবল একজন বা দুইজন সাক্ষী থাকেন, তবে সেটিই যথেষ্ট। আমি এই বিষয়ে আমার আত্মীয়স্বজনদের সাথে আলোচনা করেছি।”
পরোক্ষ অর্থে, এইধরনের ব্যবস্থাগুলি আপনার পরিবারের জন্য একটি উপহারস্বরূপ। অবশ্যই, মৃত্যুর সম্ভাবনা সম্বন্ধে পরিকল্পনা করাটা চকোলেট বা একটি ফুলের তোড়ার মত উপহার নয়। তবুও, এটি আপনার প্রেম প্রদর্শন করে। এটি প্রমাণ করে যে আপনি এমনকি আপনার অবর্তমানেও ‘আপনার পরিজনগণের জন্য চিন্তা’ করতে ইচ্ছুক।
[২১ পৃষ্ঠার বাক্স//চিত্র]
যীশু তাঁর মায়ের জন্য ব্যবস্থা করেছিলেন
“যীশুর ক্রুশের নিকটে তাঁহার মাতা ও তাঁহার মাতার ভগিনী, ক্লোপার [স্ত্রী] মরিয়ম, এবং মগ্দলিনী মরিয়ম, ইঁহারা দাঁড়াইয়াছিলেন। যীশু মাতাকে দেখিয়া, এবং যাঁহাকে প্রেম করিতেন, সেই শিষ্য নিকটে দাঁড়াইয়া আছেন দেখিয়া, মাতাকে কহিলেন, হে নারি, ঐ দেখ, তোমার পুত্ত্র। পরে তিনি সেই শিষ্যকে কহিলেন, ঐ দেখ, তোমার মাতা। তাহাতে সেই দণ্ড অবধি ঐ শিষ্য [যোহন] তাঁহাকে আপন গৃহে লইয়া গেলেন।”—যোহন ১৯:২৫-২৭.
[২২ পৃষ্ঠার চিত্র]
অনেক খ্রীষ্টানেরা তাদের পরিবারকে রক্ষা করতে চিন্তাপূর্বক আইনগত পদক্ষেপগুলি নিয়ে থাকেন