ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৮ ৪/১৫ পৃষ্ঠা ৯-১৪
  • বিশ্বাস এবং আপনার ভবিষ্যৎ

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বিশ্বাস এবং আপনার ভবিষ্যৎ
  • ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • অতীত কিসের মত ছিল?
  • কোন মানব সমাধান নয়
  • যিহোবার সাক্ষীরা ভবিষ্যৎকে যেভাবে মূল্যায়ন করেন
  • মানব শাসনের ভবিষ্যৎ
  • যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলিতে বিশ্বাস রাখুন
  • তাঁর উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করতে যিহোবাতে আস্থা রাখুন
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ঈশ্বরের উদ্দেশ্য শীঘ্রই বাস্তবে রূপায়িত হবে
    জীবনের উদ্দেশ্য কী? আপনি কিভাবে তা পেতে পারেন?
  • ঈশ্বরের রাজ্য—পৃথিবীর নতুন শাসনব্যবস্থা
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবা বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের প্রতি তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলি পরিপূর্ণ করেন
    ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৮ ৪/১৫ পৃষ্ঠা ৯-১৪

বিশ্বাস এবং আপনার ভবিষ্যৎ

“বিশ্বাস প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান।”—ইব্রীয় ১১:১.

১. অধিকাংশ লোকেরা কোন্‌ ধরনের ভবিষ্যৎ চান?

আপনি কি ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আগ্রহী? অধিকাংশ লোক আগ্রহী। তারা যা আশা করেন তা হল শান্তিপূর্ণ, ভয় মুক্ত, উন্নত জীবনযাত্রা, উৎপাদনশীল ও উপভোগ্য কাজ, উত্তম স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু বিশিষ্ট এক ভবিষ্যৎ। নিঃসন্দেহে, ইতিহাসের প্রতিটি প্রজন্মই ওই বিষয়গুলির আকাঙ্ক্ষা করেছে। আর আজকে, সমস্যা জর্জরিত এই জগতে, এইধরনের অবস্থা অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে আরও অধিক কাম্য।

২. ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে একটি দৃষ্টিভঙ্গিকে একজন কূটনীতিবিদ্‌ কিভাবে ব্যক্ত করেছিলেন?

২ মানবজাতি যতই একবিংশ শতাব্দীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা স্থির করার কোন উপায় কি আছে? ২০০ বছরেরও বেশি আগে আমেরিকার কূটনীতিবিদ্‌ প্যাট্রিক হেনরী একটি উপায় ব্যক্ত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “অতীত ছাড়া ভবিষ্যৎকে বিচার করার কোন উপায়ই আমার জানা নেই।” এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, মানুষ অতীতে যা কিছু করেছে তার মাধ্যমে মানব পরিবারের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে এক উল্লেখযোগ্য সীমা পর্যন্ত জানা যেতে পারে। অনেকেই এই ধারণার সাথে একমত হন।

অতীত কিসের মত ছিল?

৩. ভবিষ্যতের প্রত্যাশাগুলি সম্বন্ধে ইতিহাসের নথি কী ইঙ্গিত করে?

৩ ভবিষ্যৎ যদি অতীতের এক প্রতিফলন হয়, আপনি কি তা উৎসাহজনক বলে মনে করেন? যুগ যুগ ধরে পূর্বের বংশগুলির জন্য ভবিষ্যৎ কি অধিকতর উত্তম হয়েছিল? প্রকৃতপক্ষে হয়নি। হাজার হাজার বছর ধরে লোকেদের যে আশা ছিল সেটি এবং কিছু স্থানের বস্তুগত উন্নতি সত্ত্বেও ইতিহাস নিষ্ঠুরতা, বিরোধিতা, অপরাধ, দৌরাত্ম্য, যুদ্ধ এবং দরিদ্রতা দ্বারা আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে। এই জগৎ একটির পর একটি বিপর্যয় অভিজ্ঞতা করেছে, বিশেষভাবে অসন্তোষজনক মানব শাসনের মাধ্যমে তা ঘটেছে। বাইবেল যথার্থই উল্লেখ করে: “এক জন অন্যের উপরে তাহার অমঙ্গলার্থে কর্ত্তৃত্ব করে।”—উপদেশক ৮:৯.

৪, ৫. (ক) বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে লোকেরা কেন আশান্বিত ছিলেন? (খ) ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে তাদের আশার কী ঘটেছে?

৪ সত্যটি হল, মানবজাতির এই মন্দ ইতিহাস পুনরাবৃত্ত হয়েই চলেছে—ব্যতিক্রম কেবল এটিই যে তা আরও বৃহত্তর এবং অধিকতর ক্ষতিকর মাত্রায়। এই বিংশ শতাব্দীই তার প্রমাণ। মানবজাতি কি অতীতের ভুলগুলি থেকে শিখেছে এবং সেগুলি পরিহার করেছে? এই শতাব্দীর প্রারম্ভে, অনেকে তুলনামূলকভাবে দীর্ঘসময় ধরে শান্তি বিরাজ করা এবং শিল্প, বিজ্ঞান ও শিক্ষার অগ্রগতির কারণে এক অধিকতর উত্তম ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে বিশ্বাস স্থাপন করেছিল। ১৯০০ সালের প্রথম দিকে, একজন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক বলেছিলেন, মনে করা হয়েছিল যে যুদ্ধের আর কোন সম্ভাবনা নেই কারণ “লোকেরা অত্যন্ত সভ্য।” অতীতের সেই সময়ে লোকেদের যে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সেই সম্বন্ধে এক প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন: “সমস্ত কিছু উত্তম থেকে উত্তমতর হবে। এমন এক বিশ্বেই আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম।” কিন্তু তারপর তিনি উল্লেখ করেছিলেন: “হঠাৎ, অপ্রত্যাশিতভাবে, ১৯১৪ সালের এক সকালে সব কিছু শেষ হয়ে গিয়েছিল।”

৫ সেই সময় এক উত্তম ভবিষ্যতের বিশ্বাস বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও, নতুন শতাব্দী সবেমাত্র শুরু হয়েছিল যখন যে কোন সময়ের চেয়ে জঘন্যতম মনুষ্য নির্মিত বিপর্যয়—১ম বিশ্বযুদ্ধ জগৎকে সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করেছিল। এর বৈশিষ্ট্যের একটি উদাহরণ হিসাবে, ১৯১৬ সালে ফ্রান্সের সোম নদীর নিকটে একটি যুদ্ধে যখন ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনী জার্মান সৈন্যদলকে আক্রমণ করেছিল তখন যা ঘটেছিল তা বিবেচনা করুন। কেবল কয়েক ঘন্টায় ব্রিটিশরা ২০,০০০ জনকে হারিয়েছিল এবং জার্মান পক্ষের অনেক লোক হত হয়েছিল। চার বছরের হত্যাকাণ্ড প্রায় এক কোটি সৈনিক এবং অনেক বেসামরিক লোকেদের প্রাণ নিয়েছিল। অনেকে প্রাণ হারানোর কারণে ফ্রান্সের জনসংখ্যা কিছু সময়ের জন্য হ্রাস পেয়েছিল। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যা ১৯৩০ এর দশককে চরম অর্থনৈতিক মন্দার দিকে পরিচালিত করেছিল। আশ্চর্যের বিষয় নয় যে কেউ কেউ বলেছিলেন, যেদিন ১ম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়, সেদিন থেকে বিশ্ব উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল!

৬. ১ম বিশ্বযুদ্ধের পর কি জীবন অধিকতর উত্তম হয়েছিল?

৬ সেই প্রজন্ম কি এই ভবিষ্যতেরই প্রত্যাশা করেছিল? কখনও না। তাদের আশা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিল; সেগুলির কোনটিই উত্তম কিছুর দিকে পরিচালিত করেনি। ১ম বিশ্বযুদ্ধের মাত্র ২১ বছর পর অর্থাৎ ১৯৩৯ সালে আরও ভয়ঙ্কর মনুষ্য নির্মিত বিপর্যয়—২য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। এটি প্রায় পাঁচ কোটি পুরুষ, নারী ও শিশুদের জীবন নিয়েছিল। ব্যাপক বোমা নিক্ষেপ শহরগুলিকে বিধ্বস্ত করেছিল। ১ম বিশ্বযুদ্ধে, একটি যুদ্ধে যেখানে কয়েক ঘন্টায় প্রায় বেশ কিছু হাজার সৈনিক মারা গিয়েছিল, সেখানে ২য় বিশ্বযুদ্ধে কেবলমাত্র দুটি পারমানবিক বোমা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ১,০০,০০০ জনেরও বেশি লোক হত্যা করেছিল। অনেকে এটিকে নাৎসী কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিদের ধারাবাহিকভাবে হত্যা করার চেয়েও অধিকতর বীভৎস বলে মনে করেন।

৭. এই সমগ্র শতাব্দীর বাস্তব বিষয়টি কী?

৭ বেশ কয়েকটি উৎস উল্লেখ করে যে আমরা যদি জাতিগুলির মধ্যে যুদ্ধ, আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং নিজ নাগরিকদের উপর সরকার কর্তৃক আরোপিত মৃত্যু গণনা করি, তবে দেখা যাবে যে এই শতাব্দীতে মৃতের সংখ্যা সর্বমোট প্রায় ২০ কোটিতে পৌঁছেছে। এমনকি একটি উৎস প্রকাশ করে যে সেই সংখ্যা ৩৬ কোটি। এই সমস্ত আতঙ্কের কথা কল্পনা করুন—ব্যথা, অশ্রু, নিদারুণ যন্ত্রণা এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত জীবন! এছাড়াও, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০,০০০ লোক, বিশেষত শিশুরা দরিদ্রতার সাথে যুক্ত কারণগুলির জন্য মারা যায়। সেই সংখ্যার তিনগুণ শিশু প্রতিদিন গর্ভপাতের কারণে মারা যায়। এছাড়াও, প্রায় একশ কোটি লোক এত দরিদ্র যে একটি স্বাভাবিক দিনের কাজ করার জন্য যতটুকু খাদ্যের প্রয়োজন সেইটুকুও অর্জন করতে পারে না। এই সমস্ত পরিস্থিতি বাইবেলে ভবিষ্যদ্বাণীকৃত ভাববাণীর প্রমাণস্বরূপ যে আমরা এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থার “শেষ কালে” বাস করছি।—২ তীমথিয় ৩:১-৫, ১৩; মথি ২৪:৩-১২; লূক ২১:১০, ১১; প্রকাশিত বাক্য ৬:৩-৮.

কোন মানব সমাধান নয়

৮. মানব নেতারা কেন জগতের সমস্যাগুলির সমাধান করতে পারেন না?

৮ বিংশ শতাব্দী যতই এর সমাপ্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে, আমরা এর অভিজ্ঞতাগুলিকে অতীতের শতাব্দীগুলির সাথে যোগ করতে পারি। আর সেই ইতিহাস আমাদের কী জানায়? এটি আমাদের জানায় যে মানব নেতারা কখনও জগতের গুরুতর সমস্যাগুলি সমাধান করতে পারেননি, তারা এখনও সেগুলির সমাধান করছেন না আর ভবিষ্যতেও তারা সেগুলি সমাধান করতে পারবেন না। যত সদুদ্দেশ্যপূর্ণই তারা হোন না কেন, আমরা যেধরনের ভবিষ্যৎ চাই, সেই ভবিষ্যৎ প্রদান করা তাদের সাধ্যাতীত। আর কর্তৃত্বে আছেন এমন ব্যক্তিরা কেউ কেউ সদুদ্দেশ্যপূর্ণ নন; তারা অপরের মঙ্গলের জন্য নয় কিন্তু নিজেদের অহংবোধ ও বস্তুগত সম্পদের জন্য পদমর্যাদা এবং ক্ষমতার অন্বেষণ করেন।

৯. মানুষের সমস্যাগুলি সম্বন্ধে বিজ্ঞানের উত্তরগুলি রয়েছে কি না সেই সম্বন্ধে কেন সন্দেহের কারণ রয়েছে?

৯ বিজ্ঞানের কাছে কি উত্তরগুলি রয়েছে? আমরা যদি অতীত বিবেচনা করি তাহলে নেই। সরকারি বিজ্ঞানীরা ভয়ঙ্কর ধ্বংসাত্মক রাসায়নিক, জৈবিক ও অন্যান্য প্রকারের অস্ত্র তৈরির জন্য প্রচুর পরিমাণে অর্থ, সময় ও শক্তি ব্যয় করেছেন। যারা ন্যূনতম পরিমাণে এটির ব্যয় বহন করতে সমর্থ সেগুলি সহ জাতিগুলি যুদ্ধের সরঞ্জামাদির জন্য প্রতি বছর ৭০,০০০ কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয় করে! এছাড়াও, ‘বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি’ আংশিকভাবে সেই রাসায়নিক পদার্থগুলির জন্য দায়ী যেগুলি বায়ু, ভূমি, জল ও খাদ্যকে দূষিত করেছে।

১০. এমনকি শিক্ষাও কেন এক উত্তম ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিতে পারে না?

১০ আমরা কি আশা করতে পারি যে জগতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি উচ্চ নৈতিক মান, অন্যদের প্রতি বিবেচনাশীল, প্রতিবেশীর প্রতি প্রেম শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে অধিকতর উত্তম এক ভবিষ্যৎ গড়তে সাহায্য করবে? না। পরিবর্তে, সেগুলি ভবিষ্যৎ উন্নতি, অর্থ উপার্জনের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে। সেগুলি সহযোগিতামূলক নয়, বরঞ্চ এক অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে তোলে; বিদ্যালয়গুলি কোন নৈতিকতাও শিক্ষা দেয় না। বিপরীতে, সেগুলির অধিকাংশই যৌন স্বাধীনতা অনুমোদন করে যা ব্যাপক মাত্রায় কিশোরী গর্ভসঞ্চার এবং যৌন রোগগুলি উৎপন্ন করেছে।

১১. ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির নথি কিভাবে ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে সন্দেহ নিক্ষেপ করে?

১১ জগতের বৃহৎ বৃহৎ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি কি হঠাৎ করে আমাদের গ্রহের উত্তম যত্ন নিতে এবং সেই সমস্ত সামগ্রী যা কেবল লাভের জন্য নয় কিন্তু মানুষের প্রকৃত উপকারের জন্য, সেগুলি উৎপন্ন করে অপরের প্রতি প্রেম দেখানোর জন্য প্রণোদিত হবে? সম্ভবত না। তারা কি দৌরাত্ম্যপূর্ণ এবং অনৈতিক টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলি যা লোকেদের, বিশেষভাবে যুবক-যুবতীদের মনকে কলুষিত করে, সেগুলির উৎপাদন বন্ধ করে দেবে? এই ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক অতীত মোটেই উৎসাহজনক নয়, কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে টিভি অনৈতিকতা এবং দৌরাত্ম্যের এক ভাণ্ডারে পরিণত হয়েছে।

১২. অসুস্থতা ও মৃত্যু সম্বন্ধে মানুষের অবস্থা কী?

১২ এছাড়া, চিকিৎসকেরা যতই আন্তরিক হোন না কেন, তবুও তারা অসুস্থতা এবং মৃত্যুকে জয় করতে পারেননি। উদাহরণস্বরূপ, ১ম বিশ্বযুদ্ধের শেষে তারা স্প্যানিশ ইনফ্লুয়েঞ্জাকে রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন; জগদ্ব্যাপী এটি প্রায় ২ কোটি লোকের জীবন নিয়েছিল। আজকে হৃদরোগ, ক্যান্সার ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগগুলি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিকিৎসা জগৎ এইডস এর আধুনিক মহামারীকেও জয় করতে পারেনি। বিপরীতে, ১৯৯৭ সালের নভেম্বর মাসে প্রকাশিত রাষ্ট্রসংঘের একটি বিবৃতি উপসংহার করেছিল যে এইডস ভাইরাস পূর্ববর্তী হিসাবের চেয়ে দ্বিগুণ হারে বিস্তার লাভ করছে। এটির কারণে ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। সাম্প্রতিক বছরে, আরও ত্রিশ লক্ষ লোক আক্রান্ত হয়েছেন।

যিহোবার সাক্ষীরা ভবিষ্যৎকে যেভাবে মূল্যায়ন করেন

১৩, ১৪. (ক) যিহোবার সাক্ষীরা ভবিষ্যৎকে কিভাবে মূল্যায়ন করেন? (খ) মানুষেরা কেন এক উত্তম ভবিষ্যৎ আনতে পারেন না?

১৩ যাইহোক, যিহোবার সাক্ষীরা বিশ্বাস করেন যে মানবজাতির এক উজ্জ্বল, সর্বোত্তম ভবিষ্যৎ রয়েছে! কিন্তু তারা মানব প্রচেষ্টার দ্বারা সেই উত্তম ভবিষ্যৎ আসবে বলে প্রত্যাশা করেন না। পরিবর্তে, তারা সৃষ্টিকর্তা যিহোবা ঈশ্বরের দিকে তাকান। ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা তিনি জানেন আর তা হবে চমৎকার! তিনি আরও জানেন যে মানুষ এইধরনের এক ভবিষ্যৎ আনতে পারে না। যেহেতু ঈশ্বর তাদের সৃষ্টি করেছিলেন তাই অন্য যে কারও চেয়ে তিনি তাদের সীমাবদ্ধতাগুলি আরও অনেক ভালভাবে জানেন। তাঁর বাক্যে তিনি স্পষ্টভাবে আমাদের বলেন যে ঐশিক নির্দেশনা ছাড়া কোন মানুষকে কৃতকার্যতার সাথে শাসন করার ক্ষমতা দিয়ে তিনি সৃষ্টি করেননি। তাঁর থেকে স্বাধীন হয়ে মানুষকে দীর্ঘদিনব্যাপী শাসন করার জন্য অনুমতি প্রদান, সমস্ত সন্দেহের উর্ধ্বে তাদের অক্ষমতাকে প্রদর্শন করেছে। একজন গ্রন্থকার স্বীকার করেছিলেন: “মানুষের বিজ্ঞতা সার্বভৌম ক্ষমতার সম্ভাব্য সমস্ত সমন্বয়গুলির চেষ্টা করেছে আর সব কিছুতেই ব্যর্থ হয়েছে।”

১৪ যিরমিয় ১০:২৩ পদে আমরা অনুপ্রাণিত ভাববাদীর বাক্যগুলি পড়ি: “হে সদাপ্রভু আমি জানি, মনুষ্যের পথ তাহার বশে নয়, মনুষ্য চলিতে চলিতে আপন পাদবিক্ষেপ স্থির করিতে পারে না।” এছাড়াও, গীতসংহিতা ১৪৬:৩ পদ উল্লেখ করে: “তোমরা নির্ভর করিও না রাজন্যগণে, বা মনুষ্য-সন্তানে, যাহার নিকটে ত্রাণ নাই।” প্রকৃতপক্ষে রোমীয় ৫:১২ পদ যেমন দেখায় যে যেহেতু আমরা জন্মগতভাবে অসিদ্ধ, ঈশ্বরের বাক্য আমাদের নিজেদের উপরও নির্ভর না করার জন্য সাবধান করে। যিরমিয় ১৭:৯ পদ বলে: “অন্তঃকরণ সর্ব্বাপেক্ষা বঞ্চক।” তাই হিতোপদেশ ২৮:২৬ পদ ঘোষণা করে: “যে নিজ হৃদয়কে বিশ্বাস করে, সে হীনবুদ্ধি; কিন্তু যে প্রজ্ঞা-পথে চলে, সে রক্ষা পাইবে।”

১৫. আমরা কোথায় প্রজ্ঞা খুঁজে পেতে পারি যা আমাদের নির্দেশনা যোগাবে?

১৫ এই প্রজ্ঞা আমরা কোথায় পেতে পারি? “সদাপ্রভুকে ভয় করাই প্রজ্ঞার আরম্ভ, পবিত্রতম-বিষয়ক জ্ঞানই সুবিবেচনা।” (হিতোপদেশ ৯:১০) একমাত্র যিহোবারই সেই প্রজ্ঞা রয়েছে যা আমাদের এই ভীতিপ্রদ সময়ের মধ্য দিয়ে নির্দেশনা দিতে পারে। আর তিনি আমাদের পবিত্র শাস্ত্রাবলীর মাধ্যমে তাঁর প্রজ্ঞা লাভ করার ক্ষমতা দান করেছেন, আমাদের নির্দেশনার জন্য যেটিকে তিনি অনুপ্রাণিত করেছিলেন।—হিতোপদেশ ২:১-৯; ৩:১-৬; ২ তীমথিয় ৩:১৬, ১৭.

মানব শাসনের ভবিষ্যৎ

১৬. ভবিষ্যৎ কে স্থির করেছেন?

১৬ তাহলে, ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে ঈশ্বরের বাক্য আমাদের কী বলে? এটি আমাদের বলে যে ভবিষ্যৎ অতি নিশ্চিতভাবে অতীতে মানুষেরা যা কিছু করেছেন তা প্রতিফলিত করবে না। তাই প্যাট্রিক হেনরীর দৃষ্টিভঙ্গি ভুল ছিল। এই পৃথিবী ও এখানে বসবাসকারী লোকেদের ভবিষ্যৎ মানুষদের দ্বারা নয় কিন্তু যিহোবা ঈশ্বরের দ্বারা স্থিরীকৃত হবে। তাঁর ইচ্ছা পৃথিবীতে সম্পাদিত হতে চলেছে, এই জগতের কোন মানুষ অথবা জাতির ইচ্ছা নয়। “মানুষের মনে অনেক সঙ্কল্প হয়, কিন্তু সদাপ্রভুরই মন্ত্রণা স্থির থাকিবে।”—হিতোপদেশ ১৯:২১.

১৭, ১৮. আমাদের সময়ের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা কী?

১৭ আমাদের সময়ের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা কী? তিনি এই দৌরাত্ম্যপূর্ণ, অনৈতিক বিধিব্যবস্থাকে ধ্বংস করা স্থির করেছেন। বহু শতাব্দীর মানব শাসনের মন্দ আধিপত্য শীঘ্রই ঈশ্বরের নির্মিত শাসনব্যবস্থার দ্বারা স্থানান্তরিত হবে। দানিয়েল ২:৪৪ পদে প্রাপ্ত ভবিষ্যদ্বাণী উল্লেখ করে: “সেই রাজগণের সময়ে [যেগুলি বর্তমানে অস্তিত্বশীল] স্বর্গের ঈশ্বর [স্বর্গে] এক রাজ্য স্থাপন করিবেন, তাহা কখনও বিনষ্ট হইবে না, এবং সেই রাজত্ব অন্য জাতির হস্তে সমর্পিত হইবে না; তাহা ঐ সকল রাজ্য চূর্ণ ও বিনষ্ট করিয়া আপনি চিরস্থায়ী হইবে।” রাজ্য শয়তান দিয়াবলের মন্দ প্রভাবকেও দূরীভূত করবে যা মানুষেরা কখনও করতে পারেননি। এই জগতের উপর তাঁর কর্তৃত্ব চিরকালের জন্য বিলুপ্ত হবে।—রোমীয় ১৬:২০; ২ করিন্থীয় ৪:৪; ১ যোহন ৫:১৯.

১৮ লক্ষ্য করুন যে স্বর্গীয় সরকার সকল প্রকার মানব শাসনের অস্তিত্বকে সম্পূর্ণরূপে চূর্ণবিচূর্ণ করবে। এই পৃথিবীর শাসনব্যবস্থার ভার আর কখনও লোকেদের উপর দেওয়া হবে না। স্বর্গে যারা ঈশ্বরের রাজ্য গঠন করবেন তারা মানবজাতির মঙ্গলের জন্য পৃথিবীর সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করবেন। (প্রকাশিত বাক্য ৫:১০; ২০:৪-৬) পৃথিবীতে, বিশ্বস্ত মানুষেরা ঈশ্বরের রাজ্যের নির্দেশকদের সাথে সহযোগিতা করবেন। এটি হল সেই শাসনব্যবস্থা যার জন্য যীশু আমাদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন: “তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হউক।”—মথি ৬:১০.

১৯, ২০. (ক) রাজ্য ব্যবস্থাকে বাইবেল কিভাবে বর্ণনা করে? (খ) এর শাসন মানবজাতির জন্য কী করবে?

১৯ যিহোবার সাক্ষীরা ঈশ্বরের রাজ্যের উপর তাদের বিশ্বাস স্থাপন করেন। এই “নূতন আকাশমণ্ডলের” সম্বন্ধেই প্রেরিত পিতর লিখেছিলেন: “তাঁহার প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমরা এমন নূতন আকাশমণ্ডলের ও নূতন পৃথিবীর অপেক্ষায় আছি, যাহার মধ্যে ধার্ম্মিকতা বসতি করে।” (২ পিতর ৩:১৩) ‘নূতন পৃথিবী’ হচ্ছে নতুন মানব সমাজ, যেটি নতুন আকাশমণ্ডল অর্থাৎ ঈশ্বরের রাজ্যের দ্বারা শাসিত হবে। এটি সেই ব্যবস্থা যে সম্বন্ধে ঈশ্বর প্রেরিত যোহনের কাছে এক দর্শনে প্রকাশ করেছিলেন, যিনি লিখেছিলেন: “আমি ‘এক নূতন আকাশ ও এক নূতন পৃথিবী’ দেখিলাম; কেননা প্রথম আকাশ ও প্রথম পৃথিবী লুপ্ত হইয়াছে; . . . আর [ঈশ্বর] তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না; কারণ প্রথম বিষয় সকল লুপ্ত হইল।”—প্রকাশিত বাক্য ২১:১, ৪.

২০ লক্ষ্য করুন যে নতুন পৃথিবীতে ধার্মিকতা থাকবে। সমস্ত অধার্মিক বিষয় ঈশ্বরের হস্তক্ষেপে, হর্‌মাগিদোনের যুদ্ধের মাধ্যমে সরিয়ে ফেলা হবে। (প্রকাশিত বাক্য ১৬:১৪, ১৬) হিতোপদেশ ২:২১, ২২ পদের ভবিষ্যদ্বাণী এটিকে এভাবে ব্যক্ত করে: “সরলগণ দেশে বাস করিবে, সিদ্ধেরা তথায় অবশিষ্ট থাকিবে। কিন্তু দুষ্টগণ দেশ হইতে উচ্ছিন্ন হইবে, বিশ্বাসঘাতকেরা তথা হইতে উন্মূলিত হইবে।” আর গীতসংহিতা ৩৭:৯ পদ প্রতিজ্ঞা করে: “দুরাচারগণ উচ্ছিন্ন হইবে, কিন্তু যাহারা সদাপ্রভুর অপেক্ষা করে, তাহারাই দেশের অধিকারী হইবে।” আপনি কি এইধরনের এক নতুন জগতে বাস করতে চান না?

যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলিতে বিশ্বাস রাখুন

২১. যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলিতে কেন আমাদের বিশ্বাস রাখা উচিত?

২১ যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলিতে কি আমরা বিশ্বাস রাখতে পারি? তাঁর ভাববাদী যিশাইয়ের মাধ্যমে তিনি যা উল্লেখ করেন, তা শুনুন: “সেকালের পুরাতন কার্য্য সকল স্মরণ কর; কারণ আমিই ঈশ্বর, আর কেহ নয়; আমি ঈশ্বর, আমার তুল্য কেহ নাই। আমি শেষের বিষয় আদি অবধি জ্ঞাত করি, যাহা সাধিত হয় নাই, তাহা পূর্ব্বে জানাই, আর বলি, আমার মন্ত্রণা স্থির থাকিবে, আমি আপনার সমস্ত মনোরথ সিদ্ধ করিব।” ১১ পদের পরবর্তী অংশ বলে: “আমি বলিয়াছি, আর আমি সফল করিব; আমি কল্পনা করিয়াছি, আর আমি সিদ্ধ করিব।” (যিশাইয় ৪৬:৯-১১) হ্যাঁ, যিহোবা ও তাঁর প্রতিজ্ঞাতে আমরা বিশ্বাস রাখতে পারি, ঠিক এমনভাবে যেন সেই প্রতিজ্ঞাগুলি ইতিমধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বাইবেল এটিকে এভাবে ব্যক্ত করে: “বিশ্বাস প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান, অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণপ্রাপ্তি।”—ইব্রীয় ১১:১.

২২. কেন আমরা প্রত্যয়ী হতে পারি যে যিহোবা তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলি পরিপূর্ণ করবেন?

২২ নম্র ব্যক্তিরা এইধরনের বিশ্বাস প্রদর্শন করেন কারণ তারা জানেন যে ঈশ্বর তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলি পরিপূর্ণ করবেন। উদাহরণস্বরূপ, গীতসংহিতা ৩৭:২৯ পদে আমরা পড়ি: “ধার্ম্মিকেরা দেশের অধিকারী হইবে, তাহারা নিয়ত তথায় বাস করিবে।” আমরা কি এটি বিশ্বাস করতে পারি? হ্যাঁ, কারণ ইব্রীয় ৬:১৮ পদ বলে: “মিথ্যাকথা বলা ঈশ্বরের অসাধ্য।” ঈশ্বর কি পৃথিবীর কর্তা যে তিনি নম্র ব্যক্তিদের এটি দিতে পারেন? প্রকাশিত বাক্য ৪:১১ পদ ঘোষণা করে: “তুমিই সকলের সৃষ্টি করিয়াছ, এবং তোমার ইচ্ছাহেতু সকলই অস্তিত্বপ্রাপ্ত ও সৃষ্ট হইয়াছে।” তাই গীতসংহিতা ২৪:১ পদ বলে: “পৃথিবী ও তাহার সমস্ত বস্তু সদাপ্রভুরই।” যিহোবা পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছিলেন, তিনি এর কর্তা এবং যাদের তাঁর উপর বিশ্বাস রয়েছে তাদের সেটি দেন। এই বিষয়ে আমাদের প্রত্যয় গড়ে তুলতে সাহায্য করার জন্য পরবর্তী প্রবন্ধ আমাদের দেখাবে যে যিহোবা কিভাবে অতীতে এবং সেই সাথে আমাদের দিনেও তাঁর লোকেদের প্রতি তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলি পূর্ণ করেছিলেন আর কেন আমরা চূড়ান্তভাবে দৃঢ়প্রত্যয়ী হতে পারি যে তিনি ভবিষ্যতেও তা করবেন।

পুনরালোচনার বিষয়গুলি

◻ ইতিহাসব্যাপী লোকেদের আশাগুলির প্রতি কী ঘটেছে?

◻ এক উত্তম ভবিষ্যতের জন্য কেন আমাদের মানুষের দিকে তাকানো উচিত নয়?

◻ ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে ঈশ্বরের ইচ্ছা কী?

◻ কেন আমরা প্রত্যয়ী যে ঈশ্বর তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলি পরিপূর্ণ করবেন?

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

বাইবেল যথার্থই বলে: “মনুষ্য চলিতে চলিতে আপন পাদবিক্ষেপ স্থির করিতে পারে না।”—যিরমিয় ১০:২৩

[সজন্যে]

বোমা: U.S. National Archives photo; ক্ষুধার্ত শিশুরা: WHO/OXFAM; শরণার্থীরা: UN PHOTO 186763/J. Isaac; মুসোলিনি ও হিটলার: U.S. National Archives photo

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার