ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৯ ৪/১ পৃষ্ঠা ২৮-৩১
  • বাল উপাসনা—ইস্রায়েলীয়দের মন জেতার জন্য লড়াই

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বাল উপাসনা—ইস্রায়েলীয়দের মন জেতার জন্য লড়াই
  • ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • বাল কে ছিল?
  • কেন এত আকর্ষণীয়?
  • তারা বিশ্বাস দ্বারা নয় কিন্তু বাহ্য দৃশ্য দ্বারা চলেছিল
  • কে জয়ী হয়েছিল?
  • বাল উপাসনা থেকে সতর্কবাণী
  • আমাদের বিশ্বস্ততা বজায় রাখা
  • ঈশ্বর কি সবরকমের উপাসনা গ্রহণ করেন?
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • তিনি বিশুদ্ধ উপাসনার পক্ষসমর্থন করেছিলেন
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • কর্মিল পর্বতে কী ঘটে?
    বাইবেল থেকে তুমি যা শিখতে পার
  • এখনই চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার সময়
    ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৯ ৪/১ পৃষ্ঠা ২৮-৩১

বাল উপাসনা—ইস্রায়েলীয়দের মন জেতার জন্য লড়াই

প্রায় এক হাজার বছর পর্যন্ত, ইস্রায়েল জাতির লোকেদের মন জেতার জন্য লড়াই চলতে থাকে। এই লড়াইয়ে একদিকে ছিল বিশ্বাস ও নিষ্ঠা আর অন্যদিকে ছিল অন্ধবিশ্বাস থেকে আসা ভয় ও যৌন আচার অনুষ্ঠান। এই জীবন-মরণ লড়াইয়ে একদিকে ছিল যিহোবার উপাসনা ও অন্যদিকে ছিল বালের উপাসনা।

ইস্রায়েল জাতি কি সত্য ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে যিনি তাদের মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন? (যাত্রাপুস্তক ২০:২, ৩) অথবা তারা কনানের জনপ্রিয় দেবতা বালের দিকে যাবে যে সেখানকার জমিকে উর্বর রাখার প্রতিজ্ঞা করেছিল?

কয়েক হাজার বছর আগের এই আধ্যাত্মিক লড়াই আজ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কেন? প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “এই সকল . . . আমাদেরই চেতনার জন্য লিখিত হইল; আমাদের, যাহাদের উপরে যুগকলাপের অন্ত আসিয়া পড়িয়াছে।” (১ করিন্থীয় ১০:১১) আমরা এই ঐতিহাসিক লড়াইয়ের জন্য দেওয়া সাবধানবাণীর অর্থ আরও ভাল করে বুঝতে পারব যদি আমরা জানি যে বাল কে ছিল আর বাল উপাসনায় কী কী করা হতো।

বাল কে ছিল?

প্রায় সা.কা.পূ. ১৪৭৩ সালে ইস্রায়েলীয়রা যখন কনানে এসেছিল তখন তারা বাল কে তা জানতে পেরেছিল। তারা দেখেছিল যে কনানীয়রাও অনেক দেবদেবীর পূজা করত যেগুলো প্রায় মিশরের দেবদেবীদের মতোই ছিল যদিও সেগুলোর নাম ও বৈশিষ্ট্য কিছুটা আলাদা ছিল। কিন্তু বাইবেল বলে যে বাল কনানীয়দের প্রধান দেবতা ছিল আর মাটি খুঁড়ে পাওয়া নিদর্শন থেকেও এই বিষয়টা প্রমাণ হয়। (বিচারকর্ত্তৃগণ ২:১১) যদিও বাল কনানীয়দের দেবতাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল না কিন্তু প্রায় সব কনানীয়দের কাছেই তার গুরুত্ব ছিল। তারা বিশ্বাস করত যে বৃষ্টি, বাতাস ও মেঘ তার অধিকারে ছিল আর একমাত্র সেই ফসলকে নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে আর লোকেদের ও সেইসঙ্গে তাদের পশুপাখিদের বন্ধ্যাত্ব ও মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারত। বাল যদি রক্ষা না করে তবে কনানীয়দের যমদেব মুট তাদের ওপর একের পর এক অনিষ্ট নিয়ে আসবে।

বাল উপাসনা যৌন আচার অনুষ্ঠানে পূর্ণ ছিল। এমনকি বাল উপাসনার সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য বস্তু যেমন পবিত্র স্তম্ভ ও আশেরা মূর্তিগুলো যৌনতার সঙ্গে যুক্ত ছিল। পবিত্র স্তম্ভগুলো পাথর কেটে তৈরি করা হতো যেগুলো পুরুষাঙ্গের আকারের হতো। এগুলো বালকে চিত্রিত করত যে যৌন সঙ্গমে পুরুষ ছিল। অন্যদিকে আশেরা মূর্তিগুলো ছিল কাঠের কিংবা গাছের তৈরি যা বালের সাথি আশেরা ও তার স্ত্রী অঙ্গকে চিত্রিত করত।—১ রাজাবলি ১৮:১৯.

মন্দিরে বেশ্যাবৃত্তি আর শিশু বলি ছিল বাল উপাসনার আরেকটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য। (১ রাজাবলি ১৪:২৩, ২৪; ২ বংশাবলি ২৮:২, ৩) বাইবেল ও প্রত্নতত্ত্ব (ইংরাজি) নামের বই বলে: “কনানীয়দের মন্দিরে পুরুষ ও মহিলা বেশ্যারা (‘পবিত্র’ পুরুষ ও নারীরা) ছিল আর সেখানে জঘন্য যৌন অনাচার চলত। [কনানীয়রা] বিশ্বাস করত যে কোন না কোনভাবে এই আচার ফসল ও পশুপালে বৃদ্ধি নিয়ে আসত।” ধর্মের অজুহাত দেখিয়ে তারা এটা করত কিন্তু আসলে কোন সন্দেহই নেই যে এই অনৈতিক আচার তাদের দৈহিক কামনাকে তৃপ্ত করত। তাহলে কীভাবে বাল ইস্রায়েলীয়দের মন ভুলিয়েছিল?

কেন এত আকর্ষণীয়?

হয়ত বেশিরভাগ ইস্রায়েলীয় এমন একটা ধর্ম পালন করতে চেয়েছিল যা করতে গিয়ে তাদের খুব বেশি কিছু করতে হবে না। বালের উপাসনা করলে তারা মোশির ব্যবস্থার বিশ্রামবার ও অনেক অন্য নৈতিক বিধিনিষেধ পালন করাকে বাদ দিতে পারবে। (লেবীয় পুস্তক ১৮:২-৩০; দ্বিতীয় বিবরণ ৫:১-৩) হতে পারে যে কনানীয়দের ধনসম্পদ দেখেও কিছুজন বিশ্বাস করতে শুরু করে যে বালকে খুশি করা দরকার।

কনানীয়দের মন্দিরগুলো যেগুলোকে উচ্চস্থলী বলা হতো সেগুলো পাহাড়ের ওপর বনের মধ্যে ছিল। আর সেখানে যে প্রজনন সংক্রান্ত অনুষ্ঠান করা হতো তার জন্য এই জায়গা খুবই আকর্ষণীয় ও ঠিক বলে মনে হতো। ইস্রায়েলীয়রা খুব শিঘ্রিই নিজেদের জন্য উচ্চস্থলী বানিয়ে নিয়েছিল কারণ কনানীয়দের পবিত্র স্থান নিয়ে তারা বেশি দিন সন্তুষ্ট থাকেনি। “তাহারাও আপনাদের জন্য অনেক উচ্চস্থলী, এবং প্রত্যেক উচ্চ পর্ব্বতে ও প্রত্যেক হরিৎ বৃক্ষের তলে স্তম্ভ ও আশেরা-মূর্ত্তি নির্ম্মাণ করিত।”—১ রাজাবলি ১৪:২৩; হোশেয় ৪:১৩.

কিন্তু সবচেয়ে বড় বিষয় হল যে বাল উপাসনায় যৌন আকর্ষণ ছিল। (গালাতীয় ৫:১৯-২১) তাদের আচারগুলো শুধু ফসল ও পশুপাল বাড়ানোর জন্যই ছিল না আসলে সেখানে যৌন ক্রিয়াকলাপের ওপর জোর দেওয়া হতো, সেখানে যেন যৌনতার পূজা করা হতো। মাটি খুঁড়ে পাওয়া অনেক মূর্তি থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। মূর্তিগুলোকে অশালীন যৌন অনৈতিকতায় লিপ্ত অবস্থায় ও যৌন অঙ্গগুলো কামোত্তেজকভাবে তুলে ধরা অবস্থায় দেখানো হয়েছে। সেখানকার ভোজ, নাচ, গান কামলালসাকে উসকাতো।

আমরা কল্পনা করতে পারি যে শরৎকালের শুরুতে সেখানকার পরিবেশ কেমন হতো। সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে, গলা পর্যন্ত খাওয়াদাওয়া করে আর মদ খেয়ে মাতাল হয়ে উপাসকেরা নাচতে শুরু করত। তাদের প্রজনন নাচের উদ্দেশ্য ছিল গরমকালে ঘুমিয়ে থাকা বালকে ওঠানো যাতে সে জেগে ওঠে আর জমিতে বৃষ্টি আসে। তারা পুরুষাঙ্গের আকারের স্তম্ভ ও পবিত্র খুঁটির চারিদিকে ঘুরে ঘুরে নাচত। বিশেষ করে মন্দিরের বেশ্যাদের অঙ্গভঙ্গি কামোত্তেজনা ও যৌন লালসাকে জাগিয়ে তুলত। গানবাজনা ও দর্শকরাও তাদেরকে নাচ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ যোগাত। আর হয়ত এই নাচের শেষ দিকে তারা ব্যভিচার করার জন্য বালের মন্দিরের কামরাগুলোতে ঢুকে যেত।—গণনাপুস্তক ২৫:১, ২. যাত্রাপুস্তক ৩২:৬, ১৭-১৯ ও আমোষ ২:৮ পদগুলোর সঙ্গে তুলনা করুন।

তারা বিশ্বাস দ্বারা নয় কিন্তু বাহ্য দৃশ্য দ্বারা চলেছিল

একদিকে যেমন এইরকম অনৈতিক উপাসনা অনেক ইস্রায়েলীয়কে আকর্ষিত করেছিল, অন্যদিকে ভয়ও তাদেরকে বাল উপাসনার দিকে ঝুঁকতে বাধ্য করেছিল। যিহোবার ওপর যখন তারা বিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে থাকে তখন মৃত ব্যক্তিদের ভয় ও কাল কী হবে সেই ভয় তাদের এই উপাসনার দিকে নিয়ে গিয়েছিল। জাদুবিদ্যায় আগ্রহের জন্য তারা নিজেদেরকে প্রেতচর্চায় জড়িয়ে ফেলেছিল। আর এই প্রেতচর্চায় এমন ঘৃণিত কাজ করা হতো যা ভাষায় বলা যায় না। দ্যা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড বাইবেল এনসাইক্লোপিডিয়া বলে যে কীভাবে কনানীয়রা পূর্বপুরুষদের উপাসনার অংশ হিসেবে মৃত আত্মাদের সম্মান দেখাত: “পারিবারিক কবরস্থানে বা কবরের সামনে ভোজ করা হতো যেখানে প্রথানুযায়ী প্রচুর মদ খাওয়া হতো ও যৌন ক্রিয়া (সম্ভবত অজাচারও ছিল) করা হতো আর তারা মনে করত যে মৃতেরাও এতে অংশ নেয়।” এইরকম ঘৃণ্য প্রেতচর্চায় অংশ নেওয়ায় ইস্রায়েলীয়রা দিনে দিনে তাদের ঈশ্বর যিহোবার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল।—দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:৯-১২.

মূর্তি—ও তার সঙ্গে যুক্ত আচার অনুষ্ঠানও সেই ইস্রায়েলীয়দের আকর্ষিত করেছিল যারা বিশ্বাস দ্বারা নয় কিন্তু বাহ্য দৃশ্য দ্বারা চলতে চেয়েছিল। (২ করিন্থীয় ৫:৭) মিশর ছেড়ে আসা অনেক ইস্রায়েলীয়রা যিহোবার অদৃশ্য হাতের আশ্চর্য কাজ দেখেছিল কিন্তু তবুও ঈশ্বরকে উপাসনার জন্য তাদের বাহ্য দৃশ্যের দরকার হয়েছিল। (যাত্রাপুস্তক ৩২:১-৪) আর একইভাবে তাদের কিছু বংশধরেরাও উপাসনা করার জন্য বাহ্য দৃশ্য চেয়েছিল যেমন বালের মূর্তি।—১ রাজাবলি ১২:২৫-৩০.

কে জয়ী হয়েছিল?

প্রতিজ্ঞাত দেশে পৌঁছানোর অল্প কিছু আগে থেকে বাবিলনের বন্দীত্বে যাওয়ার আগে পর্যন্ত যখন তারা মোয়াবের তলভূমিতে ছিল সেইসময় থেকে শুরু করে শত শত বছর ধরে ইস্রায়েলীয়দের মনে লড়াই চলতে থাকে। পাল্লা কখনও এদিকে ভারি হয়েছে, কখনও বা ওদিকে। কখনও কখনও অনেক ইস্রায়েলীয়রা যিহোবার প্রতি নিষ্ঠা বজায় রাখত কিন্তু বার বার তারা বালের উপাসনা করতে শুরু করে দিত। এর একটা বড় কারণ ছিল আর তা ছিল তারা তাদের আশেপাশের পৌত্তলিক লোকেদের সঙ্গে মেলামেশা করত।

কনানীয়রা যুদ্ধে পরাজিত হয়ে আরও বেশি ধূর্ত এক অস্ত্র ব্যবহার করেছিল। তারা জয়ী ইস্রায়েলীয়দের পাশে পাশে থেকে তাদের দেশের দেবদেবীদের উপাসনা করার কুবুদ্ধি দিত। কিন্তু গিদিয়ন ও শমূয়েলের মতো সাহসী বিচারকেরা এই কাজে বাধা দিয়েছিলেন। শমূয়েল লোকেদের বলেছিলেন: “আপনাদের মধ্য হইতে বিজাতীয় দেবগণকে . . . দূর কর, ও সদাপ্রভুর দিকে আপন আপন অন্তঃকরণ সুস্থির কর।” কিছু দিনের জন্য ইস্রায়েলীয়রা শমূয়েলের কথা শুনে চলেছিল আর “বাল দেবগণকে ও অষ্টারোৎ দেবীগণকে দূর করিয়া কেবল সদাপ্রভুর সেবা করিতে লাগিল।”—১ শমূয়েল ৭:৩, ৪; বিচারকর্ত্তৃগণ ৬:২৫-২৭.

শৌল ও দায়ূদের রাজত্বের পর শলোমন তার বুড়ো বয়সে বিজাতীয় দেবদেবীর কাছে বলি উৎসর্গ করতে শুরু করেছিলেন। (১ রাজাবলি ১১:৪-৮) ইস্রায়েল ও যিহূদার অন্য রাজারাও তার মতো করেছিলেন আর বালের উপাসক হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এলিয়, ইলীশায় ও যোশিয়ের মত বিশ্বস্ত ভাববাদী ও রাজারা বাল উপাসনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। (২ বংশাবলি ৩৪:১-৫) এছাড়াও, ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে সবসময়ই কিছু লোকেরা ছিলেন যারা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন। এমনকি আহাব ও ঈষেবলের সময়ে বাল উপাসনা যখন চরম সীমায় পৌঁছেছিল তখনও সাত হাজার জনের ‘জানু বালের সম্মুখে পাতিত হয় নাই।”—১ রাজাবলি ১৯:১৮.

যিহূদীরা বাবিলন থেকে ফিরে আসার পরে বাল উপাসনার কথা আর কিছু বলা নেই। ইষ্রা ৬:২১ পদে যে যিহূদীদের কথা বলা আছে তাদের মতো সকলে ‘ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অন্বেষণার্থে দেশ-নিবাসী জাতিগণের অশুচিতা হইতে নিজেদেরকে পৃথক’ করেছিল।

বাল উপাসনা থেকে সতর্কবাণী

যদিও বাল উপাসনা সেই সময়ই বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তবুও কনানীয় ধর্ম ও আজকের এই সমাজে একটা বিষয় একই—যৌনতার পূজা। অনৈতিক কাজ করার জন্য প্রলোভন আমাদের চারিদিকে ছড়িয়ে আছে। (ইফিষীয় ২:২) পৌল সতর্ক করেন: “আমাদের এই যুদ্ধ সেই অদৃশ্য শক্তির সঙ্গে যা এই অন্ধকার জগৎ ও দুষ্ট আত্মিক প্রতিনিধিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।”—ইফিষীয় ৬:১২, ফিলিপস্‌।

শয়তানের এই “অদৃশ্য শক্তি” লোকেদের আধ্যাত্মিকভাবে দাস বানানোর জন্য যৌন অনৈতিকতাকে বাড়িয়ে তোলে। (যোহন ৮:৩৪) আজকের প্রশ্রয়ী সমাজে যৌনতায় ডুবে থাকা উর্বরতার জন্য করা আচার অনুষ্ঠান নয় বরং নিজের সন্তুষ্টি খোঁজা কিংবা নিজের ইচ্ছা চরিতার্থ করার জন্য করা হয়ে থাকে। আর এর জন্য প্রচারও ততখানিই আকর্ষণীয়। আমোদপ্রমোদ, গানবাজনা ও বিজ্ঞাপনের মধ্যে দিয়ে যৌনতা লোকেদের মনকে ছেয়ে ফেলে। ঈশ্বরের দাসেদের ওপরও এই আক্রমণ হয়ে থাকে। আসলে, খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী থেকে যাদেরকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাদের বেশিরভাগই এইরকম কাজেই জড়িয়ে পড়েছিলেন। যখনই সামনে আসে তখনই এই অনৈতিক মাধ্যমগুলো থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখলে তবেই একজন খ্রীষ্টান বিশুদ্ধ থাকতে পারবেন।—রোমীয় ১২:৯.

বিশেষ করে কম বয়সী সাক্ষীরা এইরকম বিপদে বেশি পড়ে কারণ যৌন আবেদন রয়েছে এমন বিষয়গুলোকে তারা আকর্ষণীয় বলে মনে করে। তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়ে কারণ তাদেরকে অন্য কম বয়সী ছেলেমেয়েদের চাপের মুখোমুখি হতে হয় যারা তাদের সবসময় এইরকম কাজ করার জন্য উসকায়। (হিতোপদেশ ১:১০-১৫ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অনেকে বড় বড় পার্টিতে গিয়ে এইরকম ফাঁদে পড়েছে। ঠিক সেইরকম যেমন প্রাচীন কালে বাল উপাসনায় লোকেরা গানবাজনা, নাচ ও যৌন কাজে পুরোপুরি উন্মাদ হয়ে পড়ত।—২ তীমথিয় ২:২২.

গীতরচক জিজ্ঞাসা করেছিলেন: “যুবক কেমন করিয়া নিজ পথ বিশুদ্ধ করিবে?” তিনি নিজেই উত্তর দিয়েছিলেন, “[যিহোবার] বাক্যানুসারে সাবধান হইয়াই করিবে।” (গীতসংহিতা ১১৯:৯) ঈশ্বরের ব্যবস্থা যেমন ইস্রায়েলীয়দেরকে কনানীয়দের সঙ্গে মেলামেশা না করার আদেশ দিয়েছিল, তেমনই বাইবেল আমাদের এইরকম মেলামেশা করার বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে যা করা বোকামি। (১ করিন্থীয় ১৫:৩২, ৩৩) একজন কম বয়সী খ্রীষ্টান যখন সেইসব প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় যা তাকে যৌনতার দিক দিয়ে আকর্ষণ করলেও সে জানে যে তা তার জন্য নৈতিকভাবে ক্ষতিকর তখন সে তার পরিপক্বতা দেখায়। বিশ্বস্ত ভাববাদী এলিয়ের মতো আমরাও আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় প্রচলিত ধারণার জোয়ারে গা ভাসিয়ে দিতে পারি না।—১ রাজাবলি ১৮:২১. মথি ৭:১৩, ১৪ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।

“সহজ বাধাজনক পাপ” হল আরেকটা বিপদ যার কারণে আমরা বিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে পারি। (ইব্রীয় ১২:১) মনে হয় অনেক ইস্রায়েলীয়রা যিহোবার ওপর বিশ্বাস রাখত কিন্তু একই সময়ে তারা আবার তাদের ফসলকে রক্ষা করা ও রোজকার চাহিদা মেটানোর জন্য বাল দেবের ওপর নির্ভর করেছিল। তারা হয়ত ভেবেছিল যে যিরূশালেমে যিহোবার মন্দির তাদের থেকে অনেক দূরে আর তাই তাঁর ব্যবস্থা পালন করা বাস্তব নয়। বাল উপাসনায় এত বেশি কিছু করতে হতো না, বেশি সময় দিতে হতো না তাই এটা খুবই সুবিধাজনক ছিল—তারা এমনকি তাদের নিজেদের ঘরের ছাদেই বালের উদ্দেশে ধূপ জ্বালাতে পারত। (যিরমিয় ৩২:২৯) হয়ত এইরকম কিছু আচার অনুষ্ঠান করতে করতে, যিহোবার নামে বালের কাছে বলি উৎসর্গ করে তারা আস্তে আস্তে বাল উপাসনায় জড়িয়ে পড়েছিল।

কীভাবে আমরা আস্তে আস্তে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে ও জীবন্ত ঈশ্বরের কাছ থেকে সরে পড়তে পারি? (ইব্রীয় ৩:১২) আমরা হয়ত দিনে দিনে সভা ও সম্মেলনগুলোর জন্য আমাদের আগেকার উপলব্ধি হারিয়ে ফেলতে পারি। আর উপলব্ধি হারিয়ে ফেললে “উপযুক্ত সময়ে” দেওয়া যিহোবার আধ্যাত্মিক খাদ্যের ব্যবস্থায় আমাদের ভরসা কমে যেতে পারে। (মথি ২৪:৪৫-৪৭) এভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে আমরা হয়ত “জীবনের বাক্য ধরিয়া” রাখায় ব্যর্থ হয়ে পড়তে পারি বা দ্বিমনাভাব গড়ে তুলতে পারি হয়ত বা আমরা বস্তুবাদ বা অনৈতিকতায় জড়িয়েও পড়তে পারি।—ফিলিপীয় ২:১৬. গীতসংহিতা ১১৯:১১৩ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।

আমাদের বিশ্বস্ততা বজায় রাখা

এতে কোন সন্দেহই নেই যে আজকে আমাদের মনকে নিয়েও এক লড়াই চলছে। আমরা কি যিহোবার প্রতি নিষ্ঠা বজায় রাখব নাকি এই জগতের উশৃঙ্খল জীবনযাত্রায় গা ভাসিয়ে দেব? দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে ইস্রায়েলীয়রা যেমন জঘন্য কনানীয় অভ্যাসগুলোর দ্বারা আকর্ষিত হয়েছিল তেমনই আজকে কিছু খ্রীষ্টান পুরুষ ও নারী লজ্জাকর কাজ করার ফাঁদে পড়ে যান।—হিতোপদেশ ৭:৭, ২১-২৩ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।

এইরকম আধ্যাত্মিক হার থেকে বাঁচা যেতে পারে যদি মোশির মতো আমরা ‘যিনি অদৃশ্য, তাঁহাকে দেখিয়াই স্থির থাকি।’ (ইব্রীয় ১১:২৭) এটা ঠিক যে আমাদের “বিশ্বাসের পক্ষে প্রাণপণ” যুদ্ধ করতে হবে। (যিহূদা ৩) কিন্তু আমরা আমাদের ঈশ্বরের প্রতি নিষ্ঠা বজায় রেখে ও তাঁর নীতিগুলোতে অটল থেকে সেই সময়ের জন্য আনন্দের সঙ্গে অপেক্ষা করতে পারি যখন মিথ্যা উপাসনা চিরতরে শেষ হয়ে যাবে। ঠিক যেমন যিহোবার উপাসনা বাল উপাসনার বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছিল, তেমনই আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে খুব তাড়াতাড়ি “সমুদ্র যেমন জলে আচ্ছন্ন, তেমনি পৃথিবী সদাপ্রভু-বিষয়ক জ্ঞানে পরিপূর্ণ হইবে।”—যিশাইয় ১১:৯.

[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

বাল উপাসনায় ব্যবহৃত গেজের পবিত্র স্তম্ভগুলোর ধ্বংসাবশেষ

[২৮ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

Musée du Louvre, Paris

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার