ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৯ ৮/১ পৃষ্ঠা ২৬-৩১
  • আনন্দের সঙ্গে যিহোবার নির্দেশনা মেনে নেওয়া

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আনন্দের সঙ্গে যিহোবার নির্দেশনা মেনে নেওয়া
  • ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • জীবনের লক্ষ্যে পরিবর্তন আনা
  • অগ্রগামী হয়ে মূল্যবান প্রশিক্ষণ পাওয়া
  • বিদেশে সেবা করতে চাওয়া
  • ওয়াশিংটন ও গিলিয়েডে
  • বিশ্বের প্রধান কার্যালয়ে পরিচর্যা
  • গিলিয়েডে স্থায়ীভাবে
  • ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কাজ করা
  • ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে
  • গিলিয়েড স্কুল—বিশ্বব্যাপী এর প্রসার
    যেভাবে আপনার দান ব্যবহার করা হয়
  • সফল ছাত্র থেকে সফল মিশনারী
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • গিলিয়েড স্কুল তার ১০০তম ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের বিদেশে পাঠায়
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৯ ৮/১ পৃষ্ঠা ২৬-৩১

আনন্দের সঙ্গে যিহোবার নির্দেশনা মেনে নেওয়া

ইউলিসিস ভি. গ্লাস দ্বারা কথিত

এটা একটা দারুণ ঘটনা ছিল। গ্র্যাজুয়েট ক্লাসের ছাত্র সংখ্যা ছিল মাত্র ১২৭ জন। কিন্তু সেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ১,২৬,৩৮৭ জন আগ্রহী শ্রোতা উপস্থিত ছিলেন। এটা ছিল ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অফ গিলিয়েড এর ২১তম ক্লাস যা ১৯৫৩ সালের ১৯শে জুলাই নিউ ইয়র্ক শহরের ইয়াংকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু কেন এটা আমার জীবনের এক স্মরণীয় ঘটনা ছিল? চলুন আমি আপনাদেরকে সবকিছু খুলে বলি।

উনিশশো বারো সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানার ভিনসিনাসে আমার জন্ম হয়। এই সময়টা ছিল প্রকাশিত বাক্য ১২:১-৫ পদে বলা মশীহ রাজ্য শুরু হওয়ার দুবছর আগে। আমার জন্মের এক বছর আগে থেকেই বাবামা শাস্ত্র অধ্যয়ন (ইংরেজি) নামের বইগুলো দিয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। প্রতি রবিবার সকালে, বাবা এই বইগুলোর কোন একটা থেকে আমাদের সবাইকে পড়ে শোনাতেন আর পরে আমরা ওই বিষয়ে আলোচনা করতাম।

মা যা শিখছিলেন তা আমাদের সব ভাইবোনদের শেখাতেন যাতে আমাদের মধ্যে ভাল বিষয় গেঁথে দিতে পারেন। মা খুব ভাল ছিলেন। তিনি খুব দয়ালু ছিলেন আর তিনি সবসময় অন্যদের সাহায্য করতে চাইতেন। আমরা চার ভাইবোন ছিলাম কিন্তু মা এতই স্নেহময়ী ছিলেন যে প্রতিবেশী বাচ্চাদেরও তিনি ভালবাসতেন। তিনি আমাদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। আর আমাদেরকে বাইবেলের গল্প বলতে ও আমাদের সঙ্গে গান গাইতে তার খুব ভাল লাগত।

এছাড়াও তিনি পূর্ণ-সময়ের পরিচারকদের আমাদের বাসায় নিমন্ত্রণ করতেন। তারা একদিন কি দুদিন আমাদের সঙ্গে থাকতেন আর তখন প্রায়ই আমাদের বাসায় সভা করতেন ও বক্তৃতা দিতেন। আমরা বিশেষ করে সেই ভাইদের বেশি পছন্দ করতাম যারা বক্তৃতার মধ্যে উদাহরণ দিতেন ও আমাদের গল্প শোনাতেন। ১৯১৯ সালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রায় এক বছর পর একবার একজন অতিথি ভাই বিশেষ করে ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য একটা বক্তৃতা দিয়েছিলেন। বক্তৃতায় তিনি আত্মনিবেদনের বিষয়ে বলেছিলেন যেটাকে আমরা এখন আরও শুদ্ধভাবে উৎসর্গীকরণ বলি। তিনি আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে কীভাবে এটা আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে। ওই দিন রাতেই আমি ঘুমানোর আগে আমাদের স্বর্গীয় পিতার কাছে প্রার্থনায় বলেছিলাম যে আমি সবসময় তাঁর সেবা করতে চাই।

কিন্তু, ১৯২২ সালের পর জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মাঝে আমার সেই সংকল্প হারিয়ে যায়। আমরা আমাদের পুরনো বাসা ছেড়ে আরেক জায়গায় চলে যাই আর এর ফলে যিহোবার লোকেদের মণ্ডলীর সঙ্গে আমাদের আর কোন যোগাযোগই থাকে না। বাবা রেলে চাকরি করায় বাড়ি থেকে দূরে থাকতেন। ফলে আমাদের বাইবেল অধ্যয়নও নিয়মিত হতো না। আমি একজন বিজ্ঞাপন চিত্রকর হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে স্কুলে সেই বিষয়ের ওপর পড়াশুনা শুরু করি আর বড় কোন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পরিকল্পনাও আমার ছিল।

জীবনের লক্ষ্যে পরিবর্তন আনা

১৯৩৫ সালের কাছাকাছি সময়ে পৃথিবী আরেকটা বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। আমরা তখন ওহিয়োর ক্লিভল্যান্ডে থাকতাম আর সেখানে একজন যিহোবার সাক্ষি আমাদের ঘরে আসেন। আমরা ছেলেবেলায় যা শিখেছিলাম সে বিষয়ে আরও গভীরভাবে ভাবতে শুরু করি। বিশেষ করে আমার দাদা রাসেল ব্যাপারটাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিলেন আর প্রথমে তিনিই বাপ্তিস্ম নেন। আমি কিছুটা চঞ্চল প্রকৃতির ছিলাম কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমিও ১৯৩৬ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি বাপ্তিস্ম নিই। যিহোবার কাছে উৎসর্গীকরণের মানে কী এই বিষয়ে আমার উপলব্ধি দিন দিন বেড়ে চলেছিল আর আমি আরও বেশি করে যিহোবার নির্দেশনা মেনে নিতে শিখছিলাম। ওই বছরই আমার দুই বোন ক্যাথরিন ও গার্টরুড বাপ্তিস্ম নেয়। আমরা সবাই অগ্রগামীর কাজ শুরু করি।

কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমরা কখনই অন্য কোন ব্যাপারে মন দিইনি। আমার বৌদি যখন আমাকে অ্যান নামে এক অপরূপা সুন্দরী মেয়ের কথা বলে তখন আমি খুব আগ্রহ নিয়ে তার কথা শুনি। সত্য শোনার শুরু থেকেই সে “খুবই আগ্রহী” হয়েছিল এবং আমাদের বাসার সভাতে তার আসার কথা ছিল। তখন অ্যান একটা অফিসে সেক্রেটারির কাজ করত আর সে এক বছরের মধ্যে বাপ্তিস্ম নেয়। যদিও বিয়ে করার কোন পরিকল্পনা আমার সেই মুহূর্তে ছিল না কিন্তু এটা স্পষ্ট ছিল যে অ্যান মনপ্রাণ দিয়ে সত্য গ্রহণ করেছিল। সে যিহোবার সেবায় নিজেকে পুরোপুরি সঁপে দিতে চেয়েছিল। এমন কথা সে কখনই বলেনি, “আমি কি এটা করতে পারি?” বরং সে জিজ্ঞেস করেছিল, “এটা আমি কীভাবে করতে পারি?” আর যে কোন মূল্যের বিনিময়ে তা করার জন্য সে সংকল্পবদ্ধ ছিল। তার এই ইতিবাচক মনোভাব আমার খুবই ভাল লেগেছিল। এছাড়াও, সে অপরূপা সুন্দরী ছিল আর আজও সে কিছু কম সুন্দরী নয়। আমরা বিয়ে করি আর খুব তাড়াতাড়ি সে আমার অগ্রগামী কাজে সঙ্গী হয়েছিল।

অগ্রগামী হয়ে মূল্যবান প্রশিক্ষণ পাওয়া

অগ্রগামী হয়ে আমরা আমাদের অভাবের সময় ও প্রাচুর্যের সময় কীভাবে সুখী থাকতে হয় সেই রহস্যটা জেনেছিলাম। (ফিলিপীয় ৪:১১-১৩) একদিন সন্ধ্যাবেলায় আমাদের কাছে কোন খাবারই ছিল না। আমাদের দুজনের কাছে মাত্র পাঁচ সেন্ট ছিল, সেই সময়ে যার মূল্য ছিল খুবই কম। একটা মাংসের দোকানে গিয়ে আমি বলেছিলাম, “আমাদের কি পাঁচ সেন্টের মাংস দিতে পারেন?” দোকানদার আমাদের দিকে এক ঝলক তাকিয়ে চার টুকরো মাংস কেটে দিয়েছিল। আমি নিশ্চিত যে ওই মাংসের দাম পাঁচ সেন্টের বেশি ছিল আর এই মাংস খেয়ে আমরা আমাদের খিদে কিছুটা মিটিয়েছিলাম।

প্রচারের সময় কঠোর বিরোধিতার মুখে পড়া একটা সাধারণ ব্যাপার ছিল। নিউ ইয়র্কে, সিরাকিউসের কাছের একটা শহরে আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে হ্যান্ডবিল বিলি করছিলাম আর একটা বিশেষ জনসাধারণের সভার প্রতি লোকেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য একটা প্ল্যাকার্ড পরেছিলাম। তখন দুজন বিশালদেহী লোক এসে আমাকে ধরেন ও আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন পুলিশ অফিসার তবে তিনি ইউনিফর্ম পরে ছিলেন না আর আমি তার পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেটাও তিনি আমাকে দেখাননি। ঠিক তখন, ব্রুকলিন বেথেলের ভাই গ্র্যান্ট সুইটার আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেন যে আমরা ব্যাপারটা মীমাংসা করার জন্য থানায় যাব। এরপর তিনি ব্রুকলিনে সোসাইটির অফিসে ফোন করেন আর সেখান থেকে আমাকে ও অ্যানকে সেই দিন আবারও প্ল্যাকার্ড ও হ্যান্ডবিল নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয় যাতে মামলার জন্য ভিত্তি পাওয়া যায়, যে মামলা ভবিষ্যতের জন্য নজির হিসেবে থাকবে। আমরা যেমন আশা করেছিলাম ঠিক তাই ঘটে, আমাদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু আমরা যখন পুলিশদের বলেছিলাম যে তারা আমাদের বেআইনীভাবে গ্রেপ্তার করার জন্য আদালতে দোষী হতে পারেন, তখন তারা আমাদের ছেড়ে দেন।

পরের দিন কিছু উচ্ছৃঙ্খল কিশোর একজন পাদ্রির উসকানিতে আমাদের সম্মেলনে ঢুকে পড়ে কিন্তু তখন আশেপাশে কোথাও পুলিশের টিকিটি পর্যন্ত দেখা যায়নি। এই গুণ্ডা ছেলেরা ব্যাট দিয়ে কাঠের মেঝেতে জোরে জোরে বাড়ি মারতে থাকে, কিছু শ্রোতাদের আসন থেকে ফেলে দেয় ও মঞ্চে গিয়ে সেখানে আমেরিকার পতাকা তুলে চেঁচিয়ে বলতে থাকে “এটাকে অভিবাদন কর! অভিভাদন কর!” তারপর তারা আমেরিকার একটা জনপ্রিয় গান গাইতে শুরু করে। তারা আমাদের সভাকে লণ্ডভণ্ড করে দেয়। আমরা সরাসরি যীশুর সেই কথার মানে বুঝতে পেরেছিলাম যখন তিনি বলেছিলেন: “কিন্তু তোমরা ত জগতের নহ, বরং আমি তোমাদিগকে জগতের মধ্য হইতে মনোনীত করিয়াছি, এই জন্য জগৎ তোমাদিগকে দ্বেষ করে।”—যোহন ১৫:১৯.

জনসাধারণের বক্তৃতাটা ছিল আসলে তখনকার ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির সভাপতি জে. এফ. রাদারফোর্ডের দেওয়া বক্তৃতার টেপ। অ্যান ও আমি সেই শহরে আরও কিছু দিনের জন্য থাকি ও লোকেদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই বক্তৃতা ঘরে বসে শোনার প্রস্তাব দিই। মাত্র কয়েকজন সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন।

বিদেশে সেবা করতে চাওয়া

এরই মধ্যে, পরিচর্যার নতুন রাস্তা খুলে যায়। আমার দাদা রাসেল ও তার স্ত্রী ডরথীকে ১৯৪৩ সালে গিলিয়েড স্কুলের প্রথম ক্লাসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয় ও তাদের কিউবায় মিশনারি করে পাঠানো হয়। আমার বোন ক্যাথরিন চতুর্থ ক্লাসে যোগ দেয়। তাকেও কিউবায় পাঠানো হয়। পরে তাকে ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রে পাঠানো হয় এবং এরপর পুয়ের্টো রিকোতেও পাঠানো হয়। অ্যান ও আমার কী হয়?

আমরা যখন গিলিয়েড স্কুল ও এর উদ্দেশ্যের কথা শুনি যে সোসাইটি মিশনারিদের অন্য দেশে পাঠাতে চায়, তখন আমরাও বিদেশে পরিচর্যা করার কথা ভাবি। প্রথমে আমরা নিজেরাই ম্যাক্সিকো যাওয়ার কথা চিন্তা করি। কিন্তু পরে আমরা ঠিক করি যে গিলিয়েড স্কুলে যোগ দেওয়ার পর যতক্ষণ না সোসাইটি আমাদের অন্য কোথাও পাঠাচ্ছে ততক্ষণ অপেক্ষা করাই ভাল। কারণ আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে এটা যিহোবারই একটা ব্যবস্থা।

আমাদেরকে গিলিয়েডের চতুর্থ ক্লাসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে, ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির তখনকার সভাপতি এন. এইচ. নর আসেন। তিনি অ্যানের শারীরিক সমস্যার বিষয়ে আরও ভালভাবে জানতে পারেন কারণ তার ছেলেবেলায় পোলিও হয়েছিল। তিনি এই বিষয়টা নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেন ও সিদ্ধান্ত নেন যে আমাদের অন্য দেশে পরিচর্যা করার জন্য পাঠানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

প্রায় দুবছর পর আমি যখন অধিবেশনের প্রস্তুতির জন্য কাজ করছিলাম, তখন ভাই নরের সঙ্গে আমার আবারও দেখা হয় আর তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে আমাদের এখনও গিলিয়েডে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা আছে কি না। তিনি আমাকে বলেন যে আমাদের বিদেশে পাঠানো হবে না; আমাদের নিয়ে তিনি অন্য কিছু ভাবছেন। তাই যখন ১৯৪৭ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি নবম ক্লাসের রেজিস্ট্রি করা হয়, তখন ছাত্রদের তালিকায় আমাদের নামও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।

গিলিয়েডের সেই দিনগুলোর কথাই আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে আছে। ক্লাশে গভীর আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। আমরা সারা জীবনের বন্ধুদের পেয়েছিলাম। কিন্তু ওই স্কুলে যোগ দেওয়া আমার জন্য আরও বেশি অর্থ রেখেছিল।

ওয়াশিংটন ও গিলিয়েডে

গিলিয়েড স্কুল তখনও নতুন ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এই স্কুলের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে ভালভাবে জানত না আর এর ফলে স্কুল সম্বন্ধে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সংশয় দেখা দেয়। তাই সোসাইটি ওয়াশিংটন ডি.সি.-তে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে চেয়েছিল। গিলিয়েড থেকে গ্র্যাজুয়েট হওয়ার কয়েক মাস পরে আমাদের সেখানে পাঠানো হয়েছিল। আমার কাজ ছিল অন্য দেশ থেকে গিলিয়েডে যোগ দেওয়ার জন্য যে ভাইবোনদের আমন্ত্রণ জানানো হতো তাদের জন্য ভিসার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ করার কাজে সাহায্য করা, যাতে গ্র্যাজুয়েটদের মিশনারি কাজের জন্য বিদেশে পাঠানো যায়। কিছু সরকারি কর্মকর্তা খুবই উদার ছিলেন আর তারা সাহায্যও করেছিলেন। কিন্তু অন্যেরা খুবই বিরোধী ছিলেন। এদের মধ্যে কয়েকজন খুবই গোঁড়া রাজনীতিবিদ ছিলেন যারা দাবি করেন যে আমরা সমাজবিরোধী দলগুলোর সঙ্গে যুক্ত।

একবার আমি একজন অফিসারের সঙ্গে দেখা করি যিনি আমরা পতাকা অভিবাদন করি না বা যুদ্ধে যাই না বলে আমাদের সম্বন্ধে যাচ্ছেতাই বলেন। তিনি এই বিষয় নিয়ে কিছুক্ষণ চেঁচামেচি করার পর আমি তাকে বলেছিলাম: “আমি আপনাকে জানাতে চাই আর আপনিও হয়তো জানেন যে যিহোবার সাক্ষিরা পৃথিবীর কারও সঙ্গেই যুদ্ধ করেন না। জগতের কোন কিছুর সঙ্গেই আমরা যুক্ত হই না। আমরা যুদ্ধে যাই না বা রাজনীতি করি না। আমরা পুরোপুরি নিরপেক্ষ। আমরা ইতিমধ্যেই সেই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পেরেছি যেগুলোর মুখোমুখি আপনারা হচ্ছেন; আমাদের সংগঠনে একতা আছে। . . . এখন আপনিই বলুন আমাদের কী করা উচিত? আপনি কী চান যে আমরা আমাদের পথ ছেড়ে আপনাদের পথে চলি?” এটা শোনার পর তিনি আর একটা কথাও বলেননি।

আমি সপ্তাহের দুটো দিন সরকারি কাজগুলো করার জন্য আলাদা করে রেখেছিলাম। এছাড়াও, আমরা বিশেষ অগ্রগামীর কাজ করতাম। তখন বিশেষ অগ্রগামীদের মাসে ১৭৫ ঘন্টা প্রচার করতে হতো (পরে কমিয়ে ১৪০ ঘন্টা করা হয়), তাই আমরা প্রায়ই রাত পর্যন্ত প্রচার করতাম। আমাদের দিনগুলো তখন সত্যিই সুন্দর ছিল। আমাদের খুব ভাল ভাল বাইবেল অধ্যয়ন ছিল যারা পুরো পরিবার মিলে অধ্যয়ন করতেন। তারা ভাল উন্নতি করেছিলেন। অ্যান ও আমি বাচ্চা চাই না বলে ঠিক করেছিলাম কিন্তু আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে বলতে গেলে আমাদের শুধু ছেলেমেয়েই নয় কিন্তু নাতিনাতনী আর এমনকি তাদের ছেলেমেয়েরাও আছে। তারা আমাদের কতই না আনন্দ দেয়!

১৯৪৮ সালের শেষের দিকে আমি আরও একটা দায়িত্ব পাই। ভাই নর আমাকে বলেন যে গিলিয়েড স্কুলের নিবন্ধক ও শিক্ষক ভাই শ্রোডার অন্য একটা জরুরি কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন তাই প্রয়োজনে আমি যেন গিলিয়েড ক্লাস নিই। অ্যানকে সঙ্গে নিয়ে ১৮ই ডিসেম্বর আমি দুরুদুরু বুকে নিউ ইয়র্কের সাউথ ল্যানসিংয়ে গিলিয়েডে আসি। প্রথম প্রথম আমরা গিলিয়েডে শুধু কয়েক সপ্তার জন্য থাকতাম আর কাজ শেষে আবার ওয়াশিংটনে ফিরে যেতাম। কিন্তু পরে আমি ওয়াশিংটনের চেয়ে বেশি সময় গিলিয়েডেই থাকতাম।

শুরুতে আমি যে সময়ের কথা বলেছি এটা ছিল সেই সময় যখন নিউ ইয়র্কের ইয়াংকি স্টেডিয়ামে গিলিয়েড গ্র্যাজুয়েটের ২১তম ক্লাস হয়। একজন শিক্ষক হওয়ায় আমিও সেই গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাই।

বিশ্বের প্রধান কার্যালয়ে পরিচর্যা

১৯৫৫ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি, আমাদের জন্য পরিচর্যার আরেকটা দ্বার খুলে যায়। আমরা যিহোবার পার্থিব সংগঠনের প্রধান কার্যালয়ে বেথেল পরিবারের সদস্য হই। কিন্তু সেখানে আমাদের কী কাজ করতে হবে? মূলত সেই কাজই করা যা আমাদের দেওয়া হবে আর অন্যদের সঙ্গে মিলেমিশে একই প্রকল্পে কাজ করা। এটা আমরা আগেও করেছি কিন্তু এখন আমরা অনেক বড় একটা দল প্রধান কার্যালয়ের বেথেল পরিবারের অংশ হয়ে তা করব। আমরা খুশি মনে এই নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করি যা যিহোবার নির্দেশনার প্রমাণ ছিল।

আমি প্রধানত সংবাদ বিভাগের সঙ্গে যুক্ত কাজগুলো করতাম। চাঞ্চল্যকর কাহিনী লেখার ইচ্ছায় ও বিভিন্ন চরমপন্থী দলগুলো থেকে তথ্য পেয়ে খবরের কাগজগুলো যিহোবার সাক্ষিদের সম্বন্ধে নোংরা নোংরা কথা লিখেছিল। আমরা এটা রোখার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলাম।

ভাই নর সবসময় চাইতেন যাতে আমরা সবাই অনেক কাজ করতে পারি আর তাই আমার অন্যান্য দায়িত্বও ছিল। কয়েকটা কাজে আমার সেই বিজ্ঞাপন চিত্রকরের প্রশিক্ষণ কাজে এসেছিল। আমি সোসাইটির বেতার কেন্দ্র, WBBR-এও কাজ করতাম। সোসাইটি যে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিল সেখানেও আমি কাজ করেছি। গিলিয়েড স্কুলে বাইবেলের সময়ের ইতিহাস শেখানো হতো কিন্তু আধুনিক দিনের ঈশতান্ত্রিক সংগঠনের পুরো ইতিহাস যাতে যিহোবার সাক্ষিরা আরও ভাল করে জানতে পারেন আর সেইসঙ্গে লোকেরাও যাতে তা জানেন তার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। গিলিয়েড স্কুলে লোকেদের সঙ্গে কথা বলার জন্যও প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো আর এর জন্য অনেক কাজ করার দরকার ছিল যাতে করে মণ্ডলীর ভাইয়েরাও লোকেদের সামনে কথা বলার জন্য মোটামুটি প্রশিক্ষণ পান তার ব্যবস্থা করারও দরকার ছিল। তাই করার মতো অনেক কাজ আমাদের ছিল।

গিলিয়েডে স্থায়ীভাবে

ভ্রমণ অধ্যক্ষ এবং ভবিষ্যতে নতুন নতুন শাখায় কাজ করার জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্দেশ্যে ১৯৬১ সালে গিলিয়েড স্কুলকে ব্রুকলিনে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির প্রধান কার্যালয় রয়েছে। আবারও আমি শিক্ষকতায় ফিরে আসি কিন্তু এবার আর কারও বদলে শিক্ষক হয়ে নয় বরং একজন নিয়মিত শিক্ষক হয়ে। আমার জন্য এটা কত বড় এক সুযোগ ছিল! আমি পুরোপুরি নিশ্চিত যে গিলিয়েড স্কুল যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া একটা উপহার, যে উপহার থেকে তাঁর পার্থিব সংগঠনের সকলে উপকার পেয়েছে।

ব্রুকলিনে গিলিয়েড ক্লাশে অনেক সুযোগ ছিল যা আগের ক্লাসগুলোর ছাত্রছাত্রীরা পায়নি। সেখানে অনেক অতিথি বক্তা ছিলেন, পরিচালক গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করা যেত আর প্রধান কার্যালয়ের বেথেল পরিবারের সঙ্গেও মেলামেশা করা যেত। এছাড়াও ছাত্রছাত্রীরা অফিসের কার্যপ্রণালী, বেথেলে কীভাবে কাজ করা হয় আর ফ্যাক্টরিতে বিভিন্ন কাজের বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারত।

এত বছরের মধ্যে অনেক ছাত্রছাত্রী সেখানে ক্লাস করেছেন আর অনেক শিক্ষকও শিক্ষা দিয়েছেন। স্কুলের জায়গাও কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন এটা নিউ ইয়র্কের, প্যাটারসনে রয়েছে যেখানকার পরিবেশ খুবই সুন্দর।

ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কাজ করা

এই ক্লাসগুলোতে শিক্ষা দেওয়া সত্যিই খুব আনন্দের! এই যুবক-যুবতীরা পুরনো বিধিব্যবস্থার কোন কাজ করতে আগ্রহী নয়। এখানে তারা তাদের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, বাড়ি, আর তাদের মাতৃভাষার লোকেদের ছেড়ে আসে। আবহাওয়া, খাবার-দাবার, সবকিছুই অন্যরকম। তারা এমনকি এটাও জানে না যে তাদেরকে কোন্‌ দেশে পাঠানো হবে কিন্তু তাদের লক্ষ্য হল মিশনারি কাজ করা। এইরকম মনের ব্যক্তিদের উৎসাহ দেওয়ার কোন দরকারই নেই।

আমি যখন ক্লাশে যেতাম তখন সবসময় আমার লক্ষ্য থাকত যাতে ছাত্রছাত্রীদের মনে কোনরকম ভয় না থাকে। মনে চাপ বা দুশ্চিন্তা নিয়ে কেউ কখনই ভালভাবে শিখতে পারে না। এটা ঠিক যে আমি শিক্ষক ছিলাম কিন্তু একজন ছাত্রের কেমন অনুভূতি হয় তা আমি জানতাম। কারণ একসময় আমিও এখানকার ছাত্র ছিলাম। গিলিয়েডে তাদের অনেক পড়াশোনা করতে ও অনেক কিছু শিখতে হতো কিন্তু আমি চাইতাম যাতে তারা এই সময়টাকে উপভোগ করে।

আমি জানতাম যে তারা যখন তাদের কাজের জায়গায় যাবে তখন সফল হওয়ার জন্য তাদের কিছু বিষয় মোকাবিলা করতে হবে। আর এর জন্য তাদের অটল বিশ্বাসের দরকার। অনেক অনেক নম্র হওয়া দরকার। তাদের লোকেদের সঙ্গে মানিয়ে চলতে, পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে ও উদারভাবে ক্ষমা করতে শিখতে হবে। তাদের সবসময় আত্মার ফল উৎপন্ন করতে হবে। তাদের লোকেদের আর সেইসঙ্গে যে কাজে তাদের পাঠানো হবে সেটাকে ভালবাসতে হবে। গিলিয়েডের ছাত্রছাত্রীদেরকে আমি সবসময় এই বিষয়গুলোই বোঝানোর চেষ্টা করতাম।

আমি ঠিক জানি না যে কত জন ছাত্রছাত্রীকে আমি শিক্ষা দিয়েছি। কিন্তু তারা যে আমার কাছে কতখানি ছিল তা আমিই জানি। পাঁচ মাস ধরে তাদের ক্লাস নেওয়ার পর, তারা আমার খুবই আপনজন হয়ে যেত। এরপর গ্র্যাজুয়েশনের দিনে আমি যখন তাদের মঞ্চের ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে ডিপ্লোমা নিতে দেখতাম, তখন আমি বুঝতে পারতাম যে তারা সফলভাবে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছে এবং এখান থেকে তারা খুব তাড়াতাড়িই বিদায় নেবে। আমার মনে হতো যেন আমার পরিবারের কেউ আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আপনি এইরকম ভাল যুবক-যুবতীদের ছেড়ে কীভাবে থাকতে পারেন যারা নিজেদেরকে বিলিয়ে দেওয়ার ও তাদের যে কাজ দেওয়া হয়েছে সেই কাজ করার জন্য খুবই ইচ্ছুক?

কয়েক বছর পর তারা যখন কখনও বেড়াতে আসে তখন আমি তাদের পরিচর্যা থেকে পাওয়া আনন্দের কথা শুনি আর আমি জানি যে তারা এখনও তাদের কাজ করে যাচ্ছে যা করার জন্য তারা প্রশিক্ষণ পেয়েছিল। এই সমস্ত কিছু দেখে আমার কেমন লাগে? সত্যিই আমার খুব ভাল লাগে।

ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে

আমার চোখের জ্যোতি এখন একদম কমে গেছে আর এর জন্য আমি হতাশায় ভুগি। গিলিয়েড ক্লাস নেওয়ার শক্তি এখন আমার আর নেই। প্রথম প্রথম এটা মেনে নিতে আমার খুব কষ্ট হয়েছিল কিন্তু সারা জীবন ধরে আমি পরিস্থিতিকে মেনে নিতে ও তার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে বেঁচে থাকতে শিখেছি। আমি প্রায়ই প্রেরিত পৌল ও তার ‘মাংসের একটা কন্টক’ সম্বন্ধে ভাবি। ওই জ্বালা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পৌল তিন বার প্রার্থনা করেছিলেন কিন্তু প্রভু তাকে বলেছিলেন: “আমার অনুগ্রহ তোমার পক্ষে যথেষ্ট; কেননা আমার শক্তি দুর্ব্বলতায় সিদ্ধি পায়।” (২ করিন্থীয় ১২:৭-১০) পৌল সারা জীবন ধরে এর মোকাবিলা করেছিলেন। যদি তিনি তা করতে পারেন, তবে আমারও তা পারা উচিত। যদিও আমি এখন আর ক্লাস নিই না কিন্তু আমি এইজন্য কৃতজ্ঞ যে আমার অফিস সেই স্কুলের কাছে যেখান থেকে এখনও আমি ছাত্রছাত্রীদের দেখতে পাই। কখনও কখনও তাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ আমার হয় আর তারা যে সুন্দর মনোভাব দেখায় তা আমাকে আনন্দ দেয়।

ভবিষ্যতের কথা কল্পনা করা সত্যিই চমৎকার। এখনই তার ভিত্তি স্থাপিত হচ্ছে। আর এতে গিলিয়েডের একটা মুখ্য ভূমিকা আছে। মহাক্লেশের পর যখন প্রকাশিত বাক্য ২০:১২ পদে বলা পুস্তকগুলো খোলা হবে, তখন হাজার বছর ধরে যিহোবার পথের বিষয়ে অনেক শিক্ষা দেওয়া হবে। (যিশাইয় ১১:৯) কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। এটা কেবল শুরু। চিরকাল ধরে, যিহোবার সম্বন্ধে আরও অনেক কিছু শেখার থাকবে এবং আমরা যখন তাঁর উদ্দেশ্যগুলো প্রকাশ পেতে দেখব তখন অনেক কিছু করার থাকবে। আমি পুরোপুরি নিশ্চিত যে যিহোবা তাঁর সমস্ত চমৎকার প্রতিজ্ঞাগুলো পরিপূর্ণ করবেন আর আমি সেখানে যিহোবার নির্দেশনা মেনে নেওয়ার জন্য থাকতে চাই।

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

১৯৫৩ সালে নিউ ইয়র্কের ইয়াংকি স্টেডিয়ামে গিলিয়েড গ্র্যাজুয়েশন

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

গার্টরুড, আমি, ক্যাথরিন ও রাসেল

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

এন. এইচ. নর (দূরে বাঁদিকে) ও এম. জি. হ্যানশেলের সঙ্গে অধিবেশনের প্রস্তুতির জন্য কাজ করা

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

WBBR বেতার কেন্দ্রে

[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

গিলিয়েডের ক্লাসরুমে

[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

অল্প কিছু দিন আগে অ্যানের সঙ্গে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার