ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৯ ৯/১ পৃষ্ঠা ৮-১৩
  • যুবক-যুবতীরা—জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ কর

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যুবক-যুবতীরা—জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ কর
  • ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • জগতের আত্মাকে চেনা
  • জগতের আত্মার প্রকাশ
  • জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ করা
  • “অন্য আত্মা” দেখানো
  • আপনি কি জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ করছেন?
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • জগতের নয় বরং ঈশ্বরের আত্মা লাভ করুন
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কোন ধরনের মনোভাব দেখান?
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “জগতের আত্মাকে” প্রতিরোধ করুন
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৯ ৯/১ পৃষ্ঠা ৮-১৩

যুবক-যুবতীরা—জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ কর

“কিন্তু আমরা জগতের আত্মাকে পাই নাই, বরং ঈশ্বর হইতে নির্গত আত্মাকে পাইয়াছি।”—১ করিন্থীয় ২:১২.

১, ২. (ক) জগতের যুবক-যুবতী ও যিহোবার সাক্ষি যুবক-যুবতীদের মধ্যে কোন্‌ আকাশ পাতাল পার্থক্য দেখা যায়? (খ) বেশির ভাগ সাক্ষি যুবক-যুবতীদেরকে কেন অন্তর থেকে প্রশংসা করা যায়?

“আমাদের নতুন প্রজন্মের মনোবল যেন ভেঙে গেছে, তারা প্রত্যাখ্যাত এবং বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে।” অস্ট্রেলিয়ার দ্যা সান হেরাল্ড খবরের কাগজে এই কথাই বলা হয়েছিল। এতে আরও বলা হয়েছিল: “আদালতের রেকর্ড দেখায় যে [গত বছরের চেয়ে] ২২ শতাংশেরও বেশি কিশোরকিশোরী গুরুতর অপরাধে ধরা পড়েছে . . . ষাটের দশকের চেয়ে তিন গুণ বেশি ছেলেমেয়েরা এখন আত্মহত্যা করছে . . . আর এর চেয়েও বেশি বেশি ছেলেমেয়েরা বড়দের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, দিনের পর দিন আরও বেশি যুবক-যুবতীরা নিজেদের অজান্তেই মাদক দ্রব্য ও মদের আশ্রয় নিচ্ছে আর নিজেরা ধ্বংসের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে।” এইরকম পরিস্থিতি শুধু একটা দেশেই নয়। সারা পৃথিবীতে বাবামা, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা যুবক-যুবতীদের এই অবস্থা নিয়ে খুবই চিন্তিত।

২ তবে আজকের এই যুবক-যুবতী এবং যিহোবার সাক্ষিদের মণ্ডলীর যুবক-যুবতীদের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে! কিন্তু তার মানে এই নয় যে তারা কোন ভুল করে না। ‘যৌবনকালের অভিলাষের’ সঙ্গে তাদেরকেও লড়াই করতে হয়। (২ তীমথিয় ২:২২) কিন্তু এই যুবক-যুবতীরা সঠিক কাজ করার জন্য সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং জগতের চাপের কাছে হার মানেনি। যুবক-যুবতীরা, তোমরা যারা শয়তানের “সুনিপুণ চাতুরীর” বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হচ্ছো, আমরা অন্তর থেকে তোমাদের প্রশংসা করি! (ইফিষীয় ৬:১১, পাদটীকা, NW) প্রেরিত যোহনের মতো আমরাও তোমাদের বলতে চাই: “যুবকেরা [ও যুবতীরা], তোমাদিগকে লিখিলাম, কারণ তোমরা বলবান্‌, এবং ঈশ্বরের বাক্য তোমাদের অন্তরে বাস করে, আর তোমরা সেই পাপাত্মাকে জয় করিয়াছ।”—১ যোহন ২:১৪.

৩. ‘আত্মা’ শব্দের মানে কী হতে পারে?

৩ তবুও, পাপাত্মার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সবসময় জয়ী হওয়ার জন্য তোমাকে অবশ্যই বাইবেল যাকে ‘জগতের আত্মা’ বলে তাকে দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। (১ করিন্থীয় ২:১২) গ্রিক ভাষার একটা বই বলে, ‘আত্মা’ বলতে “একজনের স্বভাব বা প্রভাবকে বোঝায় যার নিয়ন্ত্রণে একজন ব্যক্তি কাজ করে।” উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি বদমেজাজি কাউকে দেখে হয়তো বলবেন যে তার ‘স্বভাব’ খুব খারাপ। আপনার “আত্মা,” আপনার স্বভাব বা মানসিক প্রবণতা আপনার কোন কিছু বেছে নেওয়ার ওপর প্রভাব ফেলে; এছাড়াও তা আপনার কাজে ও কথায় ছাপ ফেলে। আগ্রহের বিষয় যে, শুধু একজন ব্যক্তিই নয় কিন্তু গোটা দলও “আত্মা” প্রদর্শন করতে পারে। একদল খ্রীষ্টানকে প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের আত্মার সহবর্ত্তী হউক।” (ফিলীমন ২৫) তাহলে এই জগৎ কোন্‌ আত্মাকে প্রদর্শন করে? যেহেতু “সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার” অর্থাৎ শয়তান দিয়াবলের অধীনে “শুইয়া রহিয়াছে,” তাই জগতের আত্মা কখনও ভাল হতে পারে না, তাই নয় কি?—১ যোহন ৫:১৯.

জগতের আত্মাকে চেনা

৪, ৫. (ক) খ্রীষ্টান হওয়ার আগে ইফিষ মণ্ডলীর ভাইবোনদের ওপর কোন্‌ আত্মা প্রভাব ফেলেছিল? (খ) ‘আকাশের কর্ত্তৃত্বাধিপতি’ কে আর এই ‘আকাশ’ কী?

৪ পৌল বলেছিলেন: “যখন তোমরা আপন আপন অপরাধে ও পাপে মৃত ছিলে, তখন তিনি তোমাদিগকেও জীবিত করিলেন; সেই সকলেতে তোমরা পূর্ব্বে চলিতে, এই জগতের যুগ অনুসারে, আকাশের কর্ত্তৃত্বাধিপতির অনুসারে, যে আত্মা এখন অবাধ্যতার সন্তানগণের মধ্যে কার্য্য করিতেছে, সেই আত্মার অধিপতির অনুসারে চলিতে। সেই লোকদের মধ্যে আমরাও সকলে পূর্ব্বে আপন আপন মাংসের অভিলাষ অনুসারে আচরণ করিতাম, মাংসের ও মনের বিবিধ ইচ্ছা পূর্ণ করিতাম, এবং অন্য সকলের ন্যায় স্বভাবতঃ ক্রোধের সন্তান ছিলাম।”—ইফিষীয় ২:১-৩.

৫ খ্রীষ্টের পথ শেখার আগে ইফিষের খ্রীষ্টানেরা নিজেদের অজান্তেই ‘আকাশের কর্ত্তৃত্বাধিপতি,’ শয়তান দিয়াবলের পিছনে চলতেন। এই ‘আকাশ’ সত্যিকারের কোন জায়গা নয় যেখানে শয়তান ও তার মন্দ দূতেরা থাকে। পৌল যখন এই কথাগুলো লিখেছিলেন তখন শয়তান দিয়াবল ও তার মন্দ দূতেরা অনায়াসে স্বর্গে যাওয়া আসা করতে পারত। (ইয়োব ১:৬; প্রকাশিত বাক্য ১২:৭-১২ পদগুলোর সঙ্গে তুলনা কর।) ‘আকাশ’ শব্দের অর্থ সেই স্বভাব বা মনোভাব যা শয়তানের জগতের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। (প্রকাশিত বাক্য ১৬:১৭-২১ পদের সঙ্গে তুলনা কর।) আকাশের মতো আমাদের চারদিকেই এই আত্মা ছড়িয়ে রয়েছে।

৬. ‘আকাশের কর্ত্তৃত্ব’ কী এবং অনেক যুবক-যুবতীদের ওপর এটা কীভাবে প্রভাব ফেলে?

৬ কিন্তু ‘আকাশের কর্ত্তৃত্ব’ কী? এটা পরিষ্কার যে এই ‘আকাশ’ লোকেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে ও তাদের ওপর কর্তৃত্ব খাটায়। পৌল বলেছিলেন যে এই আত্মা “অবাধ্যতার সন্তানগণের মধ্যে কার্য্য করিতেছে।” অর্থাৎ, জগতের আত্মা লোকেদেরকে অবাধ্য হওয়ার ও বিদ্রোহ করার জন্য উসকানি দেয় আর যুবকদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সমবয়সীদের চাপের মাধ্যমে তাদের ওপর কর্তৃত্ব খাটায়। একজন যুবতী বোন বলে, “স্কুলে সব বন্ধুবান্ধবেরা তোমাকে একটু বিদ্রোহী হওয়ার জন্য উসকাবে। আর তুমি যদি কিছুটা বিদ্রোহী হও, তাহলে সবাই তোমাকে বাহবা দেবে।”

জগতের আত্মার প্রকাশ

৭-৯. (ক) এমন কিছু বিষয়ের কথা বল যেগুলো দিয়ে আজকে অনেক যুবক-যুবতীদের মধ্যে জগতের আত্মা দেখা যায়। (খ) তোমার আশেপাশে কি তুমি এগুলোর কিছু হতে দেখেছ?

৭ আজকে যুবক-যুবতীদের মধ্যে জগতের আত্মা কীভাবে প্রকাশ পায়? অসততা ও বিদ্রোহের মাধ্যমে। একটা পত্রিকার রিপোর্ট জানায় যে কলেজের প্রায় ৭০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী স্বীকার করে যে হাইস্কুলে পড়ার সময় তারা পরীক্ষায় নকল করেছিল। বাচালতা, বিদ্রূপ ও নোংরা কথাবার্তাও তাদের মধ্যে খুবই সাধারণ। এটা ঠিক যে কখনও কখনও ইয়োব ও প্রেরিত পৌলও সঠিক রাগ প্রকাশ করতে গিয়ে এমন কথা বলেছিলেন যা কারও কারও কাছে বিদ্রূপাত্মক বলে মনে হতে পারে। (ইয়োব ১২:২; ২ করিন্থীয় ১২:১৩) কিন্তু, আজকে অনেক যুবক-যুবতীদের মুখে যে বিদ্রূপপূর্ণ কথাবার্তা শোনা যায় তা প্রায়ই গালিগালাজের মতোই।

৮ জগতের আত্মা মাত্রাতিরিক্ত মনোরঞ্জনের মধ্যে দিয়েও প্রকাশ পায়। নাইটক্লাব, ডান্সপার্টিa ও অন্য ধরনের অবাধ হৈচৈপূর্ণ পার্টি অনেক যুবক-যুবতীদের কাছে খুবই প্রিয়। একইভাবে পোশাকআশাক ও সাজগোজেও চরম উগ্রতা দেখা যায়। অনেক যুবক-যুবতীরা তাদের উদ্ভট সাজগোজের মাধ্যমে জগতের বিদ্রোহী আত্মাকে প্রদর্শন করে, যেমন তারা “হিপ-হপ” স্টাইলের ঢিলেঢালা জামাকাপড় পরে আর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুটো করে। (রোমীয় ৬:১৬ পদের সঙ্গে তুলনা কর।) ধনসম্পদের পিছনে ছোটা হল জগতের আত্মার আরেকটা প্রকাশ। একটা শিক্ষামূলক পত্রিকা বলে, “বিক্রেতারা এখন আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে পদে পদে ছেলেমেয়েদের লোভ দেখানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।” আমেরিকার যুবক-যুবতীদের হাইস্কুল পাশ করা পর্যন্ত টিভিতে প্রায় ৩,৬০,০০০টা বিজ্ঞাপন দেখা হয়ে যায়। তোমার বন্ধুবান্ধবরাও হয়তো তোমাকে নতুন নতুন জিনিস কেনার জন্য জোর করে। ১৪ বছরের এক মেয়ে বলে: “সবাই জিজ্ঞেস করে, ‘তোমার সোয়েটার, জ্যাকেট বা জিন্সটা কোন্‌ কোম্পানির?’”

৯ বাইবেলের সময় থেকেই নোংরা গানবাজনাকে শয়তান এক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে যা লোকেদের খারাপ চালচলনে জড়িয়ে ফেলে। (যাত্রাপুস্তক ৩২:১৭-১৯; গীতসংহিতা ৬৯:১২; যিশাইয় ২৩:১৬ পদগুলোর সঙ্গে তুলনা কর।) তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে আজকালকার গানগুলোতে যৌনতা খোলাখুলিভাবে না থাকলেও এর কথায় তার ইঙ্গিত থাকে। আর এর অশ্লীলতা, প্রচণ্ড গতি, উত্তেজনাপূর্ণ তাল যুবক-যুবতীদের কাছে খুবই প্রিয়। এছাড়াও জগতের অশুচি আত্মা যৌন অনৈতকিতার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। (১ করিন্থীয় ৬:৯-১১) দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস বলে: “অনেক কিশোর কিশোরীদের কাছে যৌনতা সঙ্গীসাথিদের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে . . . উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি ছাত্রছাত্রীরা যৌন অনৈতিকতায় লিপ্ত হয়েছিল।” দ্যা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এর একটা প্রবন্ধে এইরকম কিছু প্রমাণ দেওয়া হয়েছিল যে ৮ থেকে ১২ বছরের ছেলেমেয়েরা “আরও বেশি করে যৌন অনৈতিকতায় জড়িয়ে পড়ছে।” সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত একজন স্কুল উপদেষ্টা বলেন: “এখন ষষ্ঠ শ্রেণীর মেয়েরাও গর্ভবতী হতে শুরু করেছে।”b

জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ করা

১০. খ্রীষ্টান পরিবারের কিছু যুবক-যুবতী কীভাবে জগতের আত্মার ফাঁদে ধরা দিয়েছে?

১০ দুঃখজনক হলেও সত্যি যে কিছু খ্রীষ্টান যুবক-যুবতীরা জগতের আত্মার ফাঁদে ধরা দিয়েছে। জাপানের একজন মেয়ে স্বীকার করে, “আমার বাবামা ও খ্রীষ্টান ভাইবোনদের সামনে আমি খুব ভাল মেয়ে ছিলাম কিন্তু আমার জীবনের অন্য আরেকটা রূপও ছিল।” কেনিয়ার একজন কিশোরী বলে: “কিছু সময়ের জন্য আমি দ্বৈত জীবনযাপন করেছি। পার্টিতে যাওয়া, রক গান শোনা ও খারাপ বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে মেতে থাকা, এসবই আমি করেছি। আমি জানতাম যে আমি ভুল করছিলাম কিন্তু আমি ততখানি আমল দিতে চাইনি কারণ আমি ভেবেছিলাম যে সময় মতো সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। দিনের পর দিন তা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছিল।” জার্মানির আরেকজন মেয়ে বলে: “এই সবকিছু তখন শুরু হয়েছিল যখন আমি খারাপ ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করি। তারপর আমি সিগারেট খাওয়া ধরি। আমি আমার বাবামাকে কষ্ট দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি আসলে নিজেকেই কষ্ট দিয়েছি।”

১১. দশ জন গুপ্তচর যখন খারাপ খবর নিয়ে এসেছিল তখন কালেব কীভাবে তাদের চাপকে এড়িয়েছিলেন?

১১ এরপরও কিন্তু জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ করা যায়, এটাকে প্রত্যাখ্যান করা যায়। প্রাচীনকালের কালেবের কথা চিন্তা কর। দশজন ভীরু গুপ্তচরেরা যখন প্রতিজ্ঞাত দেশের বিষয়ে খারাপ খবর নিয়ে এসেছিল তখন যিহোশূয় ও কালেব সেই লোকেদের চাপে পড়েননি বা সেই জনতার সঙ্গে যোগ দেননি। বরং তারা সাহসের সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন: “আমরা যে দেশ নিরীক্ষণ করিতে গিয়াছিলাম, সে যার পর নাই উত্তম দেশ। সদাপ্রভু যদি আমাদিগেতে প্রীত হন, তবে তিনি আমাদিগকে সেই দেশে প্রবেশ করাইবেন, ও সেই দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশ আমাদিগকে দিবেন।” (গণনাপুস্তক ১৪:৭, ৮) কিন্তু কেন কালেব ওই সমস্ত চাপকে সহ্য করতে পেরেছিলেন? যিহোবা কালেবের বিষয়ে বলেছিলেন: “কালেবের অন্তরে অন্য আত্মা ছিল।”—গণনাপুস্তক ১৪:২৪.

“অন্য আত্মা” দেখানো

১২. কথা বলার সময় কেন “অন্য আত্মা” দেখানো জরুরি?

১২ আজকে জগতের আত্মা থেকে আলাদা অর্থাৎ “অন্য আত্মা” অথবা মনোভাব দেখানোর জন্য সাহস ও শক্তির দরকার। এটা করার একটা উপায় হল বিদ্রূপাত্মক ও অসম্মানজনক কথাবার্তা না বলা। আগ্রহের বিষয় হল, বিদ্রূপের ইংরেজি রূপ (সারকাজম) শব্দ যে গ্রিক ক্রিয়াপদ থেকে এসেছে তার আসল মানে, “কুকুরের মতো মাংসকে ছিঁড়ে খাওয়া।” (গালাতীয় ৫:১৫ পদের সঙ্গে তুলনা কর।) কুকুরের দাঁত যেমন হাড় থেকে মাংস ছিঁড়ে নেয় ঠিক তেমনই বিদ্রূপ করে “হাসি-ঠাট্টা” করা অন্যের মর্যাদাহানি করে। কিন্তু কলসীয় ৩:৮ পদ তোমাকে এই পরামর্শ দেয়: “তোমরাও এ সকল ত্যাগ কর,—ক্রোধ, রাগ, হিংসা, নিন্দা ও তোমাদের মুখনির্গত কুৎসিত আলাপ।” আর হিতোপদেশ ১০:১৯ পদ বলে: “বাক্যের বাহুল্যে অধর্ম্মের অভাব নাই; কিন্তু যে ওষ্ঠ দমন করে, সে বুদ্ধিমান।” কেউ যদি তোমাকে অপমান করে তবে নিজেকে দমন কর যাতে তুমি “অন্য গাল তাহার দিকে ফিরাইয়া” দাও অর্থাৎ যে ব্যক্তি এমন করেছে তার সঙ্গে একান্তে শান্তভাবে, রাগারাগি না করে সমস্যাটা মিটমাট করে নাও।—মথি ৫:৩৯; হিতোপদেশ ১৫:১.

১৩. বস্তুগত বিষয়ের প্রতি যুবক-যুবতীরা কীভাবে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখাতে পারে?

১৩ “অন্য আত্মা” দেখানোর আরেকটা উপায় হল বস্তুগত জিনিসের প্রতি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা। সবাই চায় যে তাদের কাছে সুন্দর সুন্দর জিনিস থাকুক। যীশু খ্রীষ্টেরও অন্তত একটা সুন্দর জামা ছিল। (যোহন ১৯:২৩, ২৪) কিন্তু যখন নতুন নতুন জিনিস কেনা তোমার অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায় এবং তুমি তোমার বাবামায়ের কাছে এমন কোন জিনিস কিনে দেওয়ার জন্য জেদ কর যেটা কিনে দেওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই অথবা তুমি যখন অন্য ছেলেমেয়েদেরটা দেখে কিছু করতে চাও, তখন জগতের আত্মা তোমার ওপর তুমি যতটা ভাবছ তার চেয়েও বেশি করে প্রভাব ফেলছে। বাইবেল বলে: “জগতে যে কিছু আছে, মাংসের অভিলাষ, চক্ষুর অভিলাষ, ও জীবিকার দর্প, এ সকল পিতা হইতে নয়, কিন্তু জগৎ হইতে হইয়াছে।” জগতের বস্তুবাদী আত্মার কাছে হার মেনো না! তোমার যা আছে তাতেই খুশি হতে শেখো।—১ যোহন ২:১৬; ১ তীমথিয় ৬:৮-১০.

১৪. (ক) যিশাইয়ের দিনে ঈশ্বরের লোকেরা কীভাবে মনোরঞ্জনের ব্যাপারে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব দেখিয়েছিল? (খ) কিছু খ্রীষ্টান যুবক-যুবতী নাইটক্লাব ও উদ্দাম পার্টিগুলোতে গিয়ে কী ধরনের বিপদে পড়েছে?

১৪ এছাড়াও মনোরঞ্জনকে তার নিজের জায়গায় রাখা জরুরি। ভাববাদী যিশাইয় ঘোষণা করেছিলেন: “ধিক্‌ তাহাদিগকে, যাহারা খুব সকালে উঠে, যেন সুরার অনুধাবন করিতে পারে; যাহারা অনেক রাত্রি বসিয়া থাকে, যাবৎ না দ্রাক্ষারস তাহাদিগকে উত্তপ্ত করে! বীণা ও নেবল, তবল ও বাঁশী ও দ্রাক্ষারস, এই সকল তাহাদের ভোজে বিদ্যমান; কিন্তু তাহারা সদাপ্রভুর কার্য্য নেহারে না, তাঁহার হস্তের ক্রিয়া দেখিল না।” (যিশাইয় ৫:১১, ১২) দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, কিছু খ্রীষ্টান যুবক-যুবতী একইরকম উদ্দাম পার্টিতে যাওয়া-আসা করে। কিছু খ্রীষ্টান যুবক-যুবতীকে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল যে নাইটক্লাবগুলোতে কী হয়ে থাকে তখন একজন যুবতী বলেছিল: “সারাক্ষণই ঝগড়াঝাঁটি চলতে থাকে। আমিও এতে জড়িয়ে পড়েছিলাম।” একজন যুবক বলেছিল: “সেখানে মদ, সিগারেট ও অন্যান্য নেশাকর দ্রব্যের ছড়াছড়ি চলে।” আরেকজন যুবক স্বীকার করে: “সবাই মাতাল হয়ে যায়। তারা অসভ্যের মতো আচরণ করে! আর সেখানে অবাধে মাদক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়। একটার পর একটা নোংরা কাজ চলতে থাকে। আপনি যদি সেখানে যান ও ভাবেন যে আপনার কিছুই হবে না, তাহলে আপনি ভুল করছেন।” অর্থাৎ, উপযুক্ত কারণেই বাইবেলে রঙ্গরস অথবা “উদ্দাম পার্টিগুলোকে” “মাংসের কার্য্য” বলা হয়েছে।—গালাতীয় ৫:১৯-২১; বাইংটন, রোমীয় ১৩:১৩.

১৫. মনোরঞ্জনের বিষয়ে বাইবেল কোন্‌ সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি দেয়?

১৫ এইরকম বিপদজনক মনোরঞ্জন এড়িয়ে চলার মানে এই নয় যে তোমাকে নিরস জীবন কাটাতে হবে। আমরা “ধন্য [সুখী] ঈশ্বরের” উপাসনা করি যিনি চান তুমি তোমার যৌবনকে উপভোগ কর! (১ তীমথিয় ১:১১; উপদেশক ১১:৯) কিন্তু বাইবেল আবার এও বলে: “যে আমোদ [“চিত্তবিনোদন,” লামসা] ভালবাসে, তাহার দৈন্যদশা ঘটিবে।” (হিতোপদেশ ২১:১৭) তুমি যদি মনোরঞ্জনকে তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় বিষয় করে তোল, তাহলে তুমি আধ্যাত্মিক বিষয়ের অভাবে ভুগবে। তাই মনোরঞ্জন বেছে নেওয়ার সময় বাইবেলের নীতিগুলোকে মাথায় রাখ। তোমাকে আনন্দ দেওয়ার মতো এমন অনেক কিছু আছে যেগুলো তোমার ক্ষতি করার চেয়ে বরং তোমাকে গেঁথে তুলবে।c—উপদেশক ১১:১০.

১৬. খ্রীষ্টান যুবক-যুবতীরা কীভাবে দেখাতে পারে যে তারা আলাদা?

১৬ তুমি যখন মার্জিত পোশাক পর ও রুচিসম্মত সাজগোজ কর এবং জগতের চালচলনকে নকল না কর, তখন তুমি দেখাও যে তুমি অন্যদের চেয়ে আলাদা। (রোমীয় ১২:২; ১ তীমথিয় ২:৯) একইভাবে গানবাজনা বাছাই করার সময়ও সতর্ক হওয়া দরকার। (ফিলিপীয় ৪:৮, ৯) “আমার কাছে এমন কিছু গানের ক্যাসেট আছে যেগুলো আসলে আমার ফেলে দেওয়া উচিত,” একজন খ্রীষ্টান যুবতী স্বীকার করে, “কিন্তু এগুলো শুনতে আমার এত ভাল লাগে যে বলার নয়!” আরেকজন কিশোর স্বীকার করে: “গানবাজনা আমার জন্য একটা ফাঁদ কারণ আমি গান শোনার পাগল। আমি যদি ওগুলোর মধ্যে ভুল কিছু খুঁজে পাই অথবা আমার বাবামা যদি আমাকে কিছু বলেন তখন সেগুলো শোনা বন্ধ করতে আমার খুবই কষ্ট হয় কারণ এই গানগুলো আমার খুবই প্রিয়।” যুবক-যুবতীরা “[শয়তানের] কল্পনা সকল . . . অজ্ঞাত” হয়ো না! (২ করিন্থীয় ২:১১) খ্রীষ্টান যুবক-যুবতীদেরকে যিহোবার কাছ থেকে সরিয়ে নিতে সে গানবাজনাকে ব্যবহার করছে! রাপ, হেভি মেটাল ও অন্যান্য রক সংগীতের বিষয় আলোচনা করে ওয়াচ টাওয়ার প্রকাশনায় এমন অনেক প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে।d কিন্তু ওয়াচ টাওয়ার প্রকাশনা, নতুন নতুন যে সমস্ত গানবাজনা বের হয় সেগুলোর সবকিছু নিয়েই আলোচনা করতে পারে না বা তা করা সম্ভবও নয়। তাই গান বাছাই করার সময় তোমাকে “পরিণামদর্শিতা” এবং “বুদ্ধি” কাজে লাগাতে হবে।—হিতোপদেশ ২:১১.

১৭. (ক) পরনিয়া কী আর এর মধ্যে কী কী পড়ে? (খ) নৈতিকতার বিষয়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা কী?

১৭ সব শেষে বলতে হয় যে তোমাকে নৈতিক দিক দিয়ে শুচি থাকতে হবে। বাইবেল বলে: “ব্যভিচার হইতে পলায়ন কর।” (১ করিন্থীয় ৬:১৮) ব্যভিচারের জন্য ব্যবহৃত গ্রিক শব্দ পরনিয়া সমস্ত ধরনের অবৈধ যৌনতাকে বোঝায় আর এর মধ্যে বিয়ের বাইরে যে কোন ধরনের যৌন সম্বন্ধ পড়ে। এর মধ্যে মৌখিক যৌনতা ও যৌন অঙ্গগুলোতে হাত দেওয়াও পড়ে। বেশ কিছু খ্রীষ্টান যুবক-যুবতীরা এইরকম কাজে জড়িত হয় এই ভেবে যে তারা আসলে ব্যভিচার করছে না। কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য স্পষ্টভাবে বলে: “ফলতঃ ঈশ্বরের ইচ্ছা এই, তোমাদের পবিত্রতা;—যেন তোমরা ব্যভিচার হইতে দূরে থাক, তোমাদের প্রত্যেক জন যেন, . . . পবিত্রতায় ও সমাদরে নিজ নিজ পাত্র লাভ করিতে জানে।”—১ থিষলনীকীয় ৪:৩-৫.

১৮. (ক) একজন যুবক কীভাবে জগতের আত্মা দ্বারা কলুষিত হওয়াকে এড়াতে পারে? (খ) পরের প্রবন্ধে কোন্‌ বিষয় আলোচনা করা হবে?

১৮ হ্যাঁ, যিহোবার সাহায্যে তুমি জগতের আত্মার দ্বারা কলুষিত হয়ে পড়াকে এড়াতে পার! (১ পিতর ৫:১০) কিন্তু, শয়তানের মারাত্মক ফাঁদগুলো সহজে দেখা যায় না আর তাই এই বিপদ বোঝার জন্য সত্যিকারের বিচক্ষণ হতে হয়। আমাদের পরের প্রবন্ধ যুবক-যুবতীদেরকে তাদের জ্ঞানেন্দ্রিয়কে প্রশিক্ষিত করতে সাহায্য করবে।

[পাদটীকাগুলো]

a এইরকম ডান্সপার্টি সাধারণত সারারাত ধরে চলে। এই বিষয়ে আরও জানার জন্য ১৯৯৭ সালের ২২শে ডিসেম্বর সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকার “যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য . . . ডান্সপার্টিগুলোতে কি কোন বিপদ আছে?” প্রবন্ধটা দেখ।

b ১১ বছরের কাছাকাছি বয়সী মেয়েরা।

c এই বিষয়ে আরও জানার জন্য যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য—যে উত্তরগুলো কাজ করে (ইংরেজি) বইয়ের ২৯৬-৩০৩ পৃষ্ঠা দেখ।

d ১৯৯৩ সালের ১৫ই এপ্রিল সংখ্যার প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) দেখুন।

পুনরালোচনার প্রশ্নগুলো

◻ ‘জগতের আত্মা’ কী আর এটা লোকেদের ওপর কীভাবে ‘কর্ত্তৃত্ব’ খাটায়?

◻ আজকে যুবক-যুবতীদের মধ্যে কীভাবে জগতের আত্মা দেখা যায়?

◻ কথা বলা ও মনোরঞ্জনের ব্যাপারে খ্রীষ্টান যুবক-যুবতীরা কীভাবে “অন্য আত্মা” দেখাতে পারে?

◻ নৈতিকতা ও গানবাজনার ক্ষেত্রে খ্রীষ্টান যুবক-যুবতীরা কীভাবে “অন্য আত্মা” দেখাতে পারে?

[৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

অনেক যুবক-যুবতী তাদের চালচলনের মাধ্যমে দেখায় যে তারা জগতের আত্মার ‘কর্ত্তৃত্বের’ অধীনে

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

গানবাজনা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক হও

[১১ পৃষ্ঠার চিত্র]

জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ করার জন্য সাহসের দরকার

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার