ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০০ ১/১ পৃষ্ঠা ২৪-২৯
  • যৌবনকাল থেকেই আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করা

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যৌবনকাল থেকেই আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করা
  • ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • আমার খ্রীষ্টীয় উত্তরাধিকার
  • ভাল উদাহরণগুলো থেকে উপকার পাওয়া
  • সম্মেলনগুলোতে যোগ দেওয়া
  • পূর্ণ-সময়ের প্রচার কাজ
  • জীবনের জন্য শিক্ষা
  • বিয়ে ও তারপরেও সেবা করে চলা
  • স্কুল এবং আমাদের নতুন দায়িত্ব
  • অন্যান্য আশীর্বাদ
  • কৃতজ্ঞ হওয়ার আরও অনেক কারণ
  • সমস্ত কিছুই একটা হাসির কারণে সম্ভব হয়েছে!
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২১
  • প্রেম সত্য খ্রিস্টানদের শনাক্ত করে​—⁠মূল্যবান একতা রক্ষা করুন
    আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা ২০১৮
  • আমি সোনার চেয়েও মূল্যবান কিছু পেয়েছি
    ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • সঠিক বাছাইগুলো চিরস্থায়ী আশীর্বাদগুলোর দিকে চালিত করে
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০০ ১/১ পৃষ্ঠা ২৪-২৯

জীবন কাহিনী

যৌবনকাল থেকেই আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করা

ডেভিড জেড. হিবস্‌ম্যান দ্বারা কথিত

“আজ, জীবনের এই শেষ প্রান্তে এসে আমি সত্যিই আশা করতে পারি যে সারা জীবন ধরে আমি যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থেকেছি। এখন তাঁর কাছে আমার শুধু এটুকুই বিনতি যে তিনি যেন আমার ডেভিডের যত্ন নেন। তাকে স্বামী হিসেবে পাওয়ায় আমি তোমার কাছে ভীষণ কৃতজ্ঞ যিহোবা। আমাদের বিবাহিত জীবন কত সুন্দর, কত সুখের!”

উনিশশো বিরানব্বই সালের মার্চ মাসে আমার স্ত্রীকে কবর দিয়ে আসার পর, তার ডায়েরিতে লেখা এই শেষ কথাগুলো পড়ে আমার কেমন লেগেছিল তা একবার কল্পনা করুন। মাত্র পাঁচ মাস আগেই আমরা হেলেনের পূর্ণ-সময়ের প্রচার কাজের ৬০তম বার্ষিকী পালন করেছিলাম।

১৯৩১ সালের সেই দিনের কথা আমার এখনও পরিষ্কার মনে আছে, যেদিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর কলম্বাস শহরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে হেলেন এবং আমি পাশাপাশি বসেছিলাম। হেলেন তখনও ১৪ বছরে পা দেয়নি কিন্তু সে ওই সম্মেলনের গুরুত্ব আমার চেয়ে বেশি করে বুঝেছিল। প্রচার কাজে তার উদ্যোগ কতখানি তা খুব অল্পসময় পরেই বোঝা গিয়েছিল যখন হেলেন এবং তার বিধবা মা অগ্রগামীর কাজ শুরু করেছিলেন। যিহোবার সাক্ষিদের পূর্ণ-সময়ের সুসমাচার প্রচারকদের ওই সময় অগ্রগামী বলা হতো। হেলেন ও তার মা, দক্ষিণ আমেরিকার গ্রামগুলোতে গিয়ে প্রচার করার জন্য তাদের সুন্দর বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল।

আমার খ্রীষ্টীয় উত্তরাধিকার

১৯১০ সালে আমার বাবামা তাদের ছোট দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে পূর্ব পেনসিলভানিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম দিকে গ্রোভ শহরে চলে আসেন। সেখানে তারা নগদ কিছু টাকা দিয়ে একটা ছোট্ট বাড়ি কেনেন এবং রিফর্মড্‌ গির্জার সক্রিয় সদস্য হন। কিছুদিন পর উইলিয়াম ইভান্স নামে এক ভদ্রলোক তাদের কাছে আসেন যিনি একজন বাইবেল ছাত্র ছিলেন, যিহোবার সাক্ষিদের তখন এই নামে ডাকা হতো। বাবার বয়স তখন ২৪ কি ২৫ বছর এবং মা তার থেকে পাঁচ বছরের ছোট ছিলেন, তারা ওয়েলসের ওই হাসিখুশি ভদ্রলোক উইলিয়ামের কথা শোনেন এবং তাকে দুপুরে খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করেন। বাবামা বাইবেল থেকে যে সত্য শিখেছিলেন তাড়াতাড়িই তাকে তারা তাদের নিজের করে নিয়েছিলেন।

মণ্ডলীর কাছাকাছি থাকার জন্য বাবা, আমাদের পুরো পরিবার নিয়ে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে শারোণ শহরে চলে আসেন। কয়েক মাস পর ১৯১১ বা ১৯১২ সালে বাবামা দুজনেই বাপ্তিস্ম নেন। ওয়াচটাওয়ার সোসাইটির প্রথম প্রেসিডেন্ট চার্লস টেজ রাসেল তাদের বাপ্তিস্মের বক্তৃতা দিয়েছিলেন। ১৯১৬ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর আমার জন্ম হয়। আমার বড় আরও চারজন ভাইবোন ছিল। আমার জন্মের পর বাবামা তাদের বলেছিলেন “তোমাদের একটা প্রিয় ভাই হয়েছে।” তাই আমার নাম ডেভিড রাখা হয়েছিল যার মানে “প্রিয়।”

আমার বয়স যখন চার সপ্তাহ তখন আমাকে প্রথম সম্মেলনে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমদিকের সেই দিনগুলোতে বাবা এবং দাদারা কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটে সভায় যেতেন আর মা আমাকে ও দিদিকে নিয়ে ট্রামে করে যেতেন। সকাল, বিকাল দুবেলাই সভা হতো। ঘরে সবসময় প্রহরীদুর্গ এবং সচেতন থাক! পত্রিকার প্রবন্ধগুলো নিয়ে কথাবার্তা হতো, সচেতন থাক! পত্রিকার পুরনো নাম ছিল স্বর্ণযুগ।

ভাল উদাহরণগুলো থেকে উপকার পাওয়া

বিভিন্ন মণ্ডলীতে গিয়ে গিয়ে বক্তৃতা দিতেন এমন অনেক বক্তা যাদেরকে আগে ভ্রমণকারী বলা হতো, আমাদের মণ্ডলীতে আসতেন। তারা সাধারণত দুই এক দিন করে আমাদের সঙ্গে থাকতেন। তাদের মধ্যে একজনের কথা আমার মনে পড়ে যার নাম ছিল ওয়ালটার জে. থর্ন। আর তিনি ‘যৌবনকাল থেকেই’ তার মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন। (উপদেশক ১২:১) আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমি বাবার সঙ্গে “ফটো ড্রামা অফ ক্রিয়েশন” দেখানোর জন্য গিয়েছিলাম। চার পর্বের এই ড্রামাতে মানবজাতির ইতিহাস সম্পর্কে দেখানো হয়েছিল।

যেহেতু ভাই ইভান্স এবং তার স্ত্রী মিরিয়ামের কোন ছেলেমেয়ে ছিল না, তাই তারা আমাদের পরিবারের আধ্যাত্মিক বাবামা এবং দাদুদিদিমা হয়ে উঠেছিলেন। উইলিয়াম সবসময় বাবাকে “ছেলে” বলে ডাকতেন এবং তিনি ও মিরিয়াম আমাদের পরিবারের সবার মধ্যে প্রচার করার ইচ্ছা গড়ে তুলেছিলেন। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ভাই ইভান্স ওয়েলসে ফিরে যান যাতে সোয়ান্সি শহরের আশেপাশের এলাকায় বাইবেলের সত্য প্রচার করতে পারেন। সেখানে সবাই তাকে আমেরিকার প্রচারক বলে জানতেন।

১৯২৮ সালে ভাই ইভান্স তার চাকরি ছেড়ে দেন এবং পশ্চিম ভার্জিনিয়ার পাহাড়ি এলাকায় প্রচার করতে শুরু করেন। আমার দুই দাদা, ২১ বছর বয়সী ক্ল্যারেন্স এবং ১৯ বছর বয়সী কার্লও তার সঙ্গে গিয়েছিল। আমরা চার ভাই-ই বেশ কয়েক বছর ধরে পূর্ণ-সময়ের প্রচার কাজ করেছিলাম। আসলে, আমরা সবাই যুবক বয়সে যিহোবার সাক্ষিদের ভ্রমণ অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেছি। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, আমার মার ছোট বোন মেরি যার বয়স এখন ৯০ বছর, আমাকে লিখেছিলেন: “আমরা কতই না কৃতজ্ঞ যে ভাই ইভান্সের প্রচার কাজে এত উদ্যোগ ছিল আর তিনি গ্রোভ শহরে এসেছিলেন!” আমার এই মাসিও যৌবনকাল থেকেই তার সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন।

সম্মেলনগুলোতে যোগ দেওয়া

শুধু বাবা এবং ক্ল্যারেন্সই ১৯২২ সালের ওহাইওর সিডার পয়েন্টের সেই বিশেষ সম্মেলনে যোগ দিতে পেরেছিলেন। কিন্তু, ১৯২৪ সালে আমাদের একটা গাড়ি ছিল বলে আমরা পুরো পরিবার ওহাইওর কলম্বাসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যেতে পেরেছিলাম। আমরা সব ভাইবোনেরা বুঝতে শিখেছিলাম যে আমাদের পয়সা জমাতে হবে যাতে আটদিনের এই সম্মেলনে, দুপুরের খাবার আমাদের নিজেদের জমানো টাকা দিয়ে আমরা কিনতে পারি। আমাদের বাবামা মনে করতেন যে পরিবারের সব সদস্যদের নিজেদের ভার নিজেদের বহন করতে শেখা উচিত। তাই আমরা মুরগি এবং খরগোশ পুষতাম ও মৌমাছির চাষ করতাম। আর আমরা সব ভাইয়েরা রোজগার করার জন্য খবরের কাগজও বিলি করতাম।

১৯২৭ সালে যখন কানাডার টরেন্টোতে সম্মেলনের সময় এগিয়ে এসেছিল, তখন আমাদের ছয় মাসের ভাই পলও আমাদের সঙ্গে ছিল। আমার বাবামা অন্য ভাইবোনদের নিয়ে টরেন্টোর সম্মেলনে গিয়েছিলেন কিন্তু পলের দেখাশোনা করার জন্য আমি আমার বিবাহিত মাসীর সঙ্গে ছিলাম। এই কাজের জন্য উপহার হিসেবে আমি দশ ডলার পেয়েছিলাম যা দিয়ে পরে আমি একটা নতুন স্যুট কিনেছিলাম। আমাদেরকে মিটিং-এ সবসময় পরিপাটি হয়ে যাওয়ার এবং জামাকাপড়ের যত্ন নেওয়ার জন্য শেখানো হতো।

১৯৩১ সালে, ওহাইওর কলম্বাস শহরের সেই স্মরণীয় সম্মেলনের সময় ক্ল্যারেন্স এবং কার্লের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল আর তারা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে অগ্রগামীর কাজ করছিল। তারা দুজনেই নিজেদের তৈরি ভ্রাম্যমাণ বাড়িতে থাকত। কার্ল পশ্চিম ভার্জিনিয়ার হুইলিং শহরের, ক্লার হোস্টনকে বিয়ে করেছিল আর তাই আমি কলম্বাসের সেই সম্মেলনে ক্লারের ছোট বোন হেলেনের পাশে বসেছিলাম।

পূর্ণ-সময়ের প্রচার কাজ

১৯৩২ সালে, ১৫ বছর বয়সে আমি হাইস্কুল পাশ করি আর এর পরের বছরই আমি আমার দাদা ক্ল্যারেন্সকে একটা পুরনো গাড়ি কিনে দিই। দাদা তখন দক্ষিণ ক্যারোলিনায় অগ্রগামীর কাজ করছিল। আমি অগ্রগামীর কাজ করার জন্য আবেদন করি এবং ক্ল্যারেন্স ও তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রচার কাজ শুরু করি। হেলেন তখন ক্যান্টাকির হপকিন্সভিলে অগ্রগামীর কাজ করছিল আর সেই প্রথমবার আমি তাকে চিঠি লিখেছিলাম। চিঠির উত্তরে সে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল: “তুমি কি একজন অগ্রগামী?”

আমি উত্তর দিয়েছিলাম: “হ্যাঁ, আমি একজন অগ্রগামী এবং আশা রাখি যে আমি সবসময় অগ্রগামীর কাজই করে যাব।” সেই চিঠি হেলেন গত ৬০ বছর ধরে তার মৃত্যু পর্যন্ত আগলে রেখেছিল। সেই চিঠিতে আমি হেলেনকে লিখেছিলাম যে প্রচার করার সময় আমি রাজ্য, জগতের আশা (ইংরেজি) নামের পুস্তিকাটা পাদ্রি এবং বিচারকদের কাছে বিতরণ করেছিলাম।

১৯৩৩ সালে বাবা আমার জন্য আড়াই মিটার লম্বা এবং আড়াই মিটার চওড়া একটা ট্রেইলার বানিয়ে দেন যার দেওয়াল ছিল ক্যানভাসের তৈরি এবং এর সামনে ও পিছনে জানালাও ছিল। আর পরের চার বছর অগ্রাগামী কাজের সময় এটাই ছিল আমার ছোট্ট ঘর।

১৯৩৪ সালের মার্চ মাসে আমরা আটজন ক্ল্যারেন্স, কার্ল, তাদের স্ত্রী, হেলেন ও তার মা, ক্ল্যারেন্সের শ্যালিকা এবং আমি ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলসের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য পশ্চিম দিকে গিয়েছিলাম। কিছুজন আমার ট্রেইলারে চড়ে গিয়েছিল ও তার মধ্যেই ঘুমিয়েছিল। আমি গাড়িতেই ঘুমিয়েছিলাম আর বাকিরা হোটেলে ছিল। গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমরা লস এঞ্জেলসের ছয় দিনের সম্মেলনে দ্বিতীয় দিন পৌঁছাই। সেখানে মার্চ মাসের ২৩ তারিখে আমি এবং হেলেন জলে বাপ্তিস্ম নিয়ে নিজেদেরকে যিহোবার কাছে উৎসর্গ করি।

সেই সম্মেলনে ওয়াচটাওয়ার সোসাইটির তখনকার প্রেসিডেন্ট যোসেফ এফ. রাদারফোর্ড নিজে এসে প্রত্যেক অগ্রগামীর সঙ্গে আলাদা আলাদা করে কথা বলেছিলেন। তিনি আমাদের উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন যে আমরা সবাই বাইবেলের সত্যের সাহসী যোদ্ধা। সেই সম্মেলনে, অগ্রগামীদের তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

জীবনের জন্য শিক্ষা

লস এঞ্জেলসের সম্মেলন থেকে ফিরে আসার পর আমরা সবাই দক্ষিণ ক্যারোলিনা, ভার্জিনিয়া, পশ্চিম ভার্জিনিয়া এবং ক্যান্টাকির সমস্ত এলাকার লোকেদের কাছে রাজ্যের বার্তা প্রচার করি। কয়েক বছর পরে সেই সময়ের কথা হেলেন আমাকে এইভাবে লিখেছিল: “আমাদের দেখাশোনা করার জন্য কোন মণ্ডলী সেখানে ছিল না, সাহায্য করার মতো কোন বন্ধু ছিল না, সেই অজানা দেশে আমরা সত্যিই বিদেশী ছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম যে আমি শিক্ষা পেয়ে চলেছি। আর আমি ধনী হয়ে উঠছি।”

সে আরও লিখেছিল: “বন্ধুবান্ধব এবং বাড়িঘর ছেড়ে এক যুবতী মেয়ে যখন দূরে থাকে তখন কীভাবেই বা তার সময় কাটে? কিন্তু আমার সময় খারাপ কাটছে না। আমার মনে পড়ে না যে আমি কখনও একঘেয়ে বোধ করেছি। আমি পড়তে খুব ভালবাসি। আমরা সবসময় বাইবেল সাহিত্যাদি পড়তাম ও অধ্যয়ন করতাম। আমি মার সঙ্গেই থাকতাম আর আমাদের যা টাকা-পয়সা ছিল তা দিয়েই আমি নিজেদের চালিয়ে নেওয়ার জন্য কেনাকাটা করা, গাড়ির চাকা বদলানো, রান্না ও সেলাই করা এবং প্রচার করা শিখেছি। এর জন্য আমার কোন দুঃখ নেই আর কেউ যদি আমাকে এগুলো আবারও করতে বলে, আমি তার জন্য সবসময় তৈরি।”

হেলেনের মার নিজের একটা সুন্দর বাড়ি ছিল কিন্তু তবুও সেই বছরগুলোতে হেলেন ও তার মা একটা ছোট্ট ট্রেইলারের মধ্যে থাকতেন। ১৯৩৭ সালে ওহাইওর কলম্বাস শহরের সম্মেলনের পর, হেলেনের মার শরীর খুবই খারাপ হতে থাকে এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৯৩৭ সালের নভেম্বর মাসে, পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ফিলিপিতে কাজ করার সময় তিনি মারা যান।

বিয়ে ও তারপরেও সেবা করে চলা

১৯৩৮ সালের জুনের ১০ তারিখে হেলেন ও আমি বাড়িতেই খুব সাদাসিধেভাবে বিয়ে করি। পশ্চিম ভার্জিনিয়ার হুইলিং শহরের কাছাকাছি এলম্‌ গ্রভের এই বাড়িতেই হেলেনের জন্ম হয়েছিল। আমাদের প্রিয় ভাই ইভান্স যিনি আমার জন্মের কয়েক বছর আগে আমার পরিবারকে সত্যে এনেছিলেন, তিনি বিয়ের বক্তৃতা দেন। বিয়ের পর হেলেন এবং আমি ঠিক করি যে আমরা পূর্ব ক্যান্টাকিতে গিয়ে অগ্রগামীর কাজ করব কিন্তু আমাদের অবাক করে দিয়ে আমাদেরকে আঞ্চলিক কাজ করার জন্য ডাকা হয়। এই কাজের মধ্যে ছিল পশ্চিম ক্যান্টাকি ও টেনেসির যিহোবার সাক্ষি ভাইবোনদের সঙ্গে দেখা করা এবং তাদের প্রচার কাজে সাহায্য করা। তখন আমরা যেসব জায়গাগুলোতে গিয়েছিলাম সেখানে সব মিলিয়ে মাত্র প্রায় ৭৫ জন রাজ্যের প্রকাশক ছিলেন।

সেই সময় জাতিয়তাবাদী মনোভাব এতটাই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল যে আমার মনে হয়েছিল খ্রীষ্টীয় নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য আমাকে হয়তো খুব শীঘ্রিই জেলে যেতে হবে। (যিশাইয় ২:৪) কিন্তু আমার প্রচার কাজের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ড্রাফ্ট বোর্ড আমাকে পূর্ণ-সময়ের প্রচার কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল।

আমরা যখন ভ্রমণ কাজ শুরু করি তখন প্রায় সকলেই আমাদের দেখে অবাক হয়ে যেতেন যে কত অল্প বয়সে আমরা এই দায়িত্বপূর্ণ কাজ করছি। ক্যান্টাকির হপকিন্সভিল শহরে একজন খ্রীষ্টান বোন হেলেনকে দেখে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করেন: “তুমি কি আমাকে চিনতে পারছ?” ১৯৩৩ সালে হেলেন সেই বোনের স্বামীর দোকানে বসে তাকে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তিনি সানডে স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন আর হেলেন তাকে যে বইটা দিয়েছিল সেটা পড়ার পর তিনি ক্লাসে গিয়ে এই বলে ক্ষমা চেয়েছিলেন যে তিনি এতদিন তাদের বাইবেলের শিক্ষার বদলে অন্য কিছু শিখিয়েছিলেন। গির্জা থেকে নাম কাটিয়ে তিনি তার এলাকার লোকেদের কাছে বাইবেলের সত্য বলতে শুরু করেন। হেলেন এবং আমি পশ্চিম ক্যান্টাকিতে তিন বছর কাজ করেছিলাম এবং সেই বোনের বাড়ি যেন আমাদের নিজেদের বাড়ি হয়ে উঠেছিল।

সেই সময় আমাদের শহরে ছোট ছোট স্থানীয় সম্মেলন হতো এবং এর একটাতে এ. এইচ ম্যাকমিলান এসেছিলেন। হেলেন যখন ছোট ছিল তখন একবার তিনি হেলেনদের বাড়িতে থেকেছিলেন, তাই সম্মেলনের সময় তিনি আমাদের পাঁচ মিটার লম্বা ভ্রাম্যমাণ বাড়িতে থাকতে চেয়েছিলেন যেখানে আমাদের একটা বাড়তি বিছানাও ছিল। তিনিও যৌবনকাল থেকেই তার মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন এবং ১৯০০ সালে, ২৩ বছর বয়সে তিনি যিহোবার কাছে তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।

১৯৪১ সালে নভেম্বর মাসে কিছুসময়ের জন্য ভ্রমণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল আর তাই আমাকে ক্যান্টাকির হ্যাজার্ডে অগ্রগামী করে পাঠানো হয়েছিল। আবারও আমরা দাদা কার্ল এবং তার স্ত্রী ক্লারের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। সেখানে হেলেনের ভাইপো যোসেফ হাউসটন আমাদের সঙ্গে অগ্রগামীর কাজ শুরু করে। সে প্রায় ৫০ বছর ধরে পূর্ণ-সময়ের প্রচার কাজ করেছিল এবং ১৯৯২ সালে হঠাৎ করে হার্ট আ্যটাকে সে মারা যায়। মৃত্যু পর্যন্ত সে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে যিহোবার সাক্ষিদের প্রধান কার্যালয়ে বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করেছিল।

১৯৪৩ সালে আমাদের কানেকটিকাটের রকভিলে প্রচার করার জন্য পাঠানো হয়। যেহেতু হেলেন এবং আমি দক্ষিণ অঞ্চলে প্রচার করে অভ্যস্থ ছিলাম তাই এটা আমাদের জন্য একটা আলাদা জগৎ ছিল। রকভিলে হেলেন প্রতি সপ্তাহে ২০টারও বেশি বাইবেল অধ্যয়ন করাতো। শেষ পর্যন্ত আমরা কিংডম হলের জন্য একটা সুন্দর কামরা ভাড়া নিয়েছিলাম আর সেটাই ছিল আমাদের ছোট মণ্ডলীর ভিত।

রকভিলে কাজ করার সময় আমাদের নিউ ইয়র্কের সাউথ ল্যানসিংয়ে, ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অফ গিলিয়েডের পঞ্চম ক্লাসে যোগ দেওয়ার জন্য ডাকা হয়। আমরা যখন জানতে পারি যে আমাদের পুরনো বন্ধু ওবরি এবং বার্থা বিভান্সও আমাদের সঙ্গে একই ক্লাসে যোগ দেবেন তখন আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম।

স্কুল এবং আমাদের নতুন দায়িত্ব

যদিও আমাদের বয়স খুব বেশি ছিল না, তবুও আমাদের সহপাঠীদের বেশির ভাগই আমাদের চেয়ে বয়সে ছোট ছিল। হ্যাঁ, তারা সকলেই যৌবনকাল থেকেই তাদের মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছিলেন। ১৯৪৫ সালে জুলাই মাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে আমরা গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলাম। মিশনারি কাজের দায়িত্ব পাওয়ার আগে আমরা নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনের ফ্ল্যাটবুস মণ্ডলীতে কাজ করেছিলাম। শেষে ১৯৪৬ সালের ২১শে অক্টোবর আমরা বিভান্স ও আরও ছয়জন সহপাঠীর সঙ্গে আমাদের নতুন বাড়ি গুয়াতেমালার, গুয়াতেমালা শহরে যাই। সেই সময় পুরো মধ্য আমেরিকায় ৫০ জনেরও কম যিহোবার সাক্ষি ছিলেন।

১৯৪৯ সালের এপ্রিল মাসে আমাদের কয়েকজন মিশনারিকে কেনসালটেনানগোতে পাঠানো হয়েছিল যেটা আয়তন ও গুরুত্বের দিক দিয়ে দেশের দ্বিতীয় শহর ছিল। এই শহর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,৩০০ মিটার ওপরে ছিল এবং এখানকার পাহাড়ি হাওয়া ছিল প্রাণ জুড়ানো ও বিশুদ্ধ। আমাদের এখানকার কাজ সম্বন্ধে হেলেন সংক্ষেপে লিখেছিল: “এখানকার প্রায় ১২টা শহর এবং গ্রামগুলোতে কাজ করতে পারাটা আমাদের জন্য একটা বিশেষ সুযোগ ছিল। প্রায় ভোর চারটেয় উঠে আমাদের দূরের শহরগুলোতে যাওয়ার জন্য বাস (এই বাসগুলোতে সাধারণত জানালার বদলে ক্যানভাসের পর্দা থাকত যেগুলোকে খোলা ও বন্ধ করা যেত) ধরতে হতো। বিকেলে ঘরে ফেরার আগে পর্যন্ত সেখানে আমরা প্রায় আট ঘন্টা প্রচার করতাম।” আজ এগুলোর মধ্যে অনেক জায়গায় এখন মণ্ডলী আছে আর কেটাসালটেনানগোতে ছয়টা মণ্ডলী আছে।

শীঘ্রিই ক্যারিবিয়ান কোস্টের পুয়ের্টো ব্যারিওসে কাজ করার জন্য মিশনারিদের দরকার হয় যেটা গুয়েতেমালার তৃতীয় বড় শহর ছিল। এই নতুন কাজের জায়গায় যাদের পাঠানো হয়েছিল তার মধ্যে আমাদের প্রিয় বন্ধু বিভান্সও ছিল। আমরা একসঙ্গে গুয়েতেমালায় পাঁচ বছর কাজ করেছিলাম। তার চলে যাওয়া আমাদের জন্য খুব কষ্টের ছিল আর তা আমাদের জীবনে এক শূন্যতা এনে দিয়েছিল। তখন সেই মিশনারি হোমে শুধু আমরা দুজনই ছিলাম তাই আমরা মিশনারি হোম ছেড়ে একটা ছোট বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। ১৯৯৫ সালে হেলেন ও আমাকে মাজাটেনানগোতে যেতে বলা হলে আমরা সেখানে চলে যাই। এখানে খুব গরম পড়ত। আমরা এখানে আসার কিছুদিন আগে আমার ছোট ভাই পল এবং তার স্ত্রী ডলোরেস সেখানে কাজ শুরু করেছিল যারা ১৯৫৩ সালে গিলিয়েড থেকে গ্র্যাজুয়েট হয়েছিল।

১৯৫৮ সালের মধ্যে গুয়েতেমালার তিনটে সীমায় ৭০০ জনেরও বেশি সাক্ষি ভাইবোন ও ২০টা মণ্ডলী হয়ে যায়। হেলেন এবং আমি আবারও ভ্রমণের কাজ শুরু করি এবং সাক্ষিদের ছোট ছোট দলগুলোকে পরিদর্শন করতে থাকি। আমরা অনেক মণ্ডলীতে যেতাম যার মধ্যে কেনসালটেনানগোর একটা মণ্ডলীও ছিল। এরপর ১৯৫৯ সালের আগস্ট মাসে আমাদের আবার গুয়েতেমালায় ফিরে যাওয়ার জন্য বলা হয়, সেখানে আমরা শাখা অফিসে থাকতাম। আমাকে শাখা অফিসে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কিন্তু হেলেন এরপর আরও ১৬ বছর ধরে মিশনারি কাজ চালিয়ে যায়। এরপর সেও শাখা অফিসে কাজ করা শুরু করে।

অন্যান্য আশীর্বাদ

বেশ কয়েক বছর আগেও মনে হতো যে যারা যিহোবাকে সেবা করছেন তাদের মধ্যে আমিই সবচেয়ে ছোট ছিলাম। কিন্তু এখন আমিই সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি, যেমন ১৯৯৬ সালে যখন আমি প্যাটারসনের শাখা স্কুলে যোগ দেওয়ার জন্য গিয়েছিলাম সেখানে আমিই সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি ছিলাম। যুবক বয়সে আমি অনেক বয়স্ক ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি আর আজকে আমিও সেইরকমই অনেক যুবক ব্যক্তিদের সাহায্য করতে পারি, যারা তাদের যৌবনকাল থেকেই তাদের মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করছেন।

গুয়েতেমালায় যিহোবা তাঁর লোকেদের আরও আশীর্বাদ করেছেন। ১৯৯৯ সালে গুয়েতেমালা শহরে এখন ৬০টারও বেশি মণ্ডলী আছে। আর উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিমে অনেক অনেক মণ্ডলী আছে ও ঈশ্বরের রাজ্যের হাজার হাজার সুসমাচার প্রচারক রয়েছেন। ৫৩ বছর আগে যখন আমরা এখানে এসেছিলাম তখন ৫০ জনেরও কম রাজ্য প্রচারক ছিলেন আর এখন এই সংখ্যা বেড়ে ১৯,০০০ জনেরও বেশি হয়েছে!

কৃতজ্ঞ হওয়ার আরও অনেক কারণ

জীবনে দুঃখ-কষ্ট সবাইকেই ভোগ করতে হয় কিন্তু আমরা আমাদের ‘ভার সদাপ্রভুতেই অর্পণ করতে’ পারি। (গীতসংহিতা ৫৫:২২) তিনি প্রায়ই আমাদের ভাল সাথিদের দিয়ে আমাদের সাহায্য জোগান। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মারা যাওয়ার কয়েক বছর আগে হেলেন ইব্রীয় ৬:১০ পদের কথাগুলো একটা ছোট্ট ফ্রেমে বাঁধিয়ে আমাকে উপহার দিয়েছিল, যেখানে লেখা ছিল: ‘ঈশ্বর ন্যায় বিচারক; তাই তোমার কাজের আর তাঁর লোকেদের সেবা-যত্ন করে তুমি তাঁকে যে ভালবাসা দেখিয়েছ ও দেখাচ্ছ, তা তিনি ভুলে যাবেন না।’—প্রেমের বাণী।

এর সঙ্গে সে আমাকে যা লিখেছিল তার কিছুটা অংশ ছিল এইরকম: “প্রিয়তম, আমার সবটুকু ভালবাসা ছাড়া তোমাকে আমি আর কি-ই-বা দিতে পারি . . . এই পদটা তোমার জন্য একেবারে ঠিক আর তুমি এটা তোমার টেবিলে রেখ, আমি দিয়েছি বলে নয় কিন্তু তোমার সারা জীবনের সঙ্গে এই পদের মিল আছে বলে।” সেই ফ্রেমটা এখনও গুয়েতেমালার শাখা অফিসে আমার টেবিলে আছে।

আমি যৌবনকাল থেকেই যিহোবার সেবা করে আসছি এবং এখনও এই বয়সেও আমার স্বাস্থ্য ভাল থাকায় আমি যিহোবাকে ধন্যবাদ দিই। আমি আজও আমার সব কাজ নিজে করতে পারি। প্রত্যেকদিন যখনই আমি বাইবেল পড়তে বসি তখনই বাইবেলের সেই পদগুলোর দিকে আমার চোখ যায়, যেগুলো পড়তে গিয়ে আমার মনে হয় যে হেলেন বেঁচে থাকলে এই পদগুলোর নিচে দাগ দিত। যেমন গীতসংহিতা ৪৮:১৪ পদটা পড়ার সময় আমার এরকম মনে হয় যেখানে লেখা আছে: “এই ঈশ্বর অনন্তকালতরে আমাদের ঈশ্বর; তিনি চিরকাল আমাদের পথদর্শক হইবেন।”

পুনরুত্থানের বিষয়ে অন্যদের বলতে আমার খুব ভাল লাগে, যখন নতুন পৃথিবীতে সমস্ত জাতির লোক তাদের নিজেদের মৃত প্রিয়জনদের আবার দেখবেন ও তাদের জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানাবেন। কত সুন্দর আশা! সেই সময়ে এই কথা আমরা আবারও মনে করব যে যিহোবা সত্যিই সেই ঈশ্বর যিনি “অবনতদিগকে সান্ত্বনা করেন”!—২ করিন্থীয় ৭:৬.

[২৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

ওপরে বাঁ দিকে: মা, বাবা, ইভা আন্টি এবং দুই দাদা কার্ল ও ক্ল্যারেন্স, ১৯১০

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

হেলেনের সঙ্গে ১৯৪৭ এবং ১৯৯২ সালে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার