ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০১ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ২৪-২৬
  • স্কুথীয় অতীতের এক রহস্যময় জাতি

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • স্কুথীয় অতীতের এক রহস্যময় জাতি
  • ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • দুর্দান্ত অশ্বারোহী
  • চিরকালের জন্য কবর সাজানো
  • বাইবেলে স্কুথীয়রা
  • এক রহস্যময় অবনতি
  • আপনি কি মনে করতে পারেন?
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি জানতেন?
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২১
২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০১ ১১/১৫ পৃষ্ঠা ২৪-২৬

স্কুথীয় অতীতের এক রহস্যময় জাতি

ধূলির রাস্তায় দ্রুত ঘোড়া চালিয়ে, দুদিকে ঝোলানো থলিগুলোতে লুট করা মালামাল বোঝাই করে এক যাযাবর জাতির অশ্বারোহী দল এসে পৌঁছায়। এই রহস্যময় লোকেরা সা.কা.পূ. ৭০০ থেকে ৩০০ সাল পর্যন্ত ইউরেশিয়ার স্তেপ অঞ্চলগুলোতে রাজত্ব করেছিল। এরপর তাদেরকে আর দেখা যায় না কিন্তু ইতিহাসে তারা ঠিকই জায়গা করে নেয়। এমনকি বাইবেলেও তাদের বিষয় উল্লেখ করা আছে। তারা ছিল স্কুথীয় জাতি।

কয়েকশ বছর ধরে, যাযাবর এবং বন্য ঘোড়ার পাল পূর্ব ইউরোপের কারপ্যাথিয়ান পর্বতমালা থেকে শুরু করে বর্তমানের দর্ক্ষিণপূর্ব রাশিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা তৃণভূমির বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছে। সা.কা.পূ. অষ্টম শতাব্দীর মধ্যে চাইনিজ সম্রাট শুয়ানের সৈন্যবাহিনী তাদেরকে জোরপূর্বক পশ্চিমে পাঠিয়ে দিয়েছিল। পশ্চিমাঞ্চলে এগিয়ে যাওয়ার সময় স্কুথীয়রা ককেশাস ও কৃষ্ণ সাগরের উত্তরাঞ্চলে রাজত্বকারী সিমেরিয়ানদের সঙ্গে লড়াই করেছিল ও তাদেরকে তাড়িয়ে বের করেছিল।

ধনসম্পদের খোঁজে স্কুথীয়রা অশূরের রাজধানী নীনবীকে দখল করে লুট করেছিল। পরে তারা মিডিয়া, বাবিলনীয় এবং অন্যান্য জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অশূরীয়দের সঙ্গে হাত মেলায়। এমনকি তারা উত্তর মিশর পর্যন্ত আক্রমণ করেছিল। উত্তরপূর্ব ইস্রায়েলের বৈৎ-শান শহরকে পরে স্কুথীওপলিস নাম দেওয়া হয়, এই বিষয়টাই হয়তো ইঙ্গিত দেয় যে কিছু সময়ের জন্য স্কুথীয়দের অধিকার ছিল।—১ শমূয়েল ৩১:১১, ১২.

শেষ পর্যন্ত স্কুথীয়রা বর্তমানের রোমানিয়া, মলডোভা, ইউক্রেন এবং দক্ষিণ রাশিয়ার স্তেপ অঞ্চলগুলোতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেছিল। সেখানে তারা গ্রিক এবং বর্তমান দিনের ইউক্রেন ও দক্ষিণ রাশিয়ার শস্য উৎপাদনকারীদের মধ্যে দালাল হিসেবে কাজ করে ধনী হয়ে উঠেছিল। স্কুথীয়রা গ্রিকদের মদ, কাপড়, অস্ত্র এবং শিল্পকর্মগুলোর বিনিময়ে শস্য, মধু, পশুর লোম এবং গবাদি পশু বিক্রি করত। এভাবে তারা প্রচুর ধনসম্পদের মালিক হয়েছিল।

দুর্দান্ত অশ্বারোহী

মরুভূমির লোকেদের কাছে উট যেমন মূল্যবান, স্তেপ অঞ্চলের এই অশ্বারোহীদের কাছে ঘোড়ার মূল্য ঠিক ততখানি। স্কুথীয়রা চমৎকার অশ্বারোহী ছিল এবং তারাই প্রথম ঘোড়ার দুপাশে ঝোলানো থলি ও রেকাব ব্যবহার করেছিল। তারা ঘোড়ার মাংস খেত এবং ঘোড়ীর দুধ খেত। এছাড়া তারা এমনকি নৈবেদ্য উৎসর্গ করার জন্যও ঘোড়া বলি দিত। কোন স্কুথীয় অশ্বারোহী মারা গেলে তার ঘোড়াকেও মেরে ফেলে, সম্মানের সঙ্গে কবর দেওয়া হতো ও সেই সঙ্গে ঘোড়াকে যা দিয়ে সাজানো হয় সেগুলোও কবর দেওয়া হতো।

ইতিহাসবেত্তা হেরোডোটাস বলেছিলেন, স্কুথীয়দের রীতিরেওয়াজগুলো খুবই নিষ্ঠুর প্রকৃতির ছিল। সেগুলোর মধ্যে একটা ছিল যে তারা তাদের শিকার করা ব্যক্তির মাথার খুলিকে পেয়ালা হিসেবে ব্যবহার করত। তাদের শত্রুদেরকে আক্রমণ করার জন্য তারা লোহার খড়্গ, যুদ্ধের কুড়াল, বড়শা এবং মাংস বিদীর্ণ করার জন্য তীক্ষ্ণ কাঁটাওয়ালা তীর ব্যবহার করে হত্যা করত।

চিরকালের জন্য কবর সাজানো

স্কুথীয়রা ডাকিনীবিদ্যা ও স্যামানদের ধর্মে বিশ্বাস করত এবং অগ্নি ও দেবী মার উপাসনা করত। (দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১০-১২) তারা কবরকে মৃতদের স্থায়ী আবাস হিসেবে দেখত। মৃত প্রভুর কাজ করার জন্য দাস ও পশুদেরকে বলি দেওয়া হতো। মনে করা হতো যে, ধনসম্পত্তি ও ঘরের দাসেরাও “পরজন্মে” প্রভুর সঙ্গে সঙ্গে যাবে। একটা রাজকীয় কবরে দেখা গিয়েছিল যে, পাঁচজন দাস তাদের মালিকের দিকে পা রেখে শুয়ে ছিল, যারা উঠে দাঁড়িয়ে তাদের কাজ করার জন্য একেবারে তৈরি ছিল।

শাসকদেরকে অনেক দামি দামি জিনিস দিয়ে কবর দেওয়া হতো এবং শোক করার সময় স্কুথীয়রা তাদের শরীরের রক্ত ঝরাতো এবং মাথার চুল কেটে ফেলত। হেরোডোটাস লিখেছিলেন: “তারা তাদের কানের একটু অংশ কেটে ফেলত, মাথার চুল কামাতো, তাদের বাহুর চারপাশে কাটত, কপাল ও নাক চিরত এবং তাদের বাঁহাতকে তীর দিয়ে বিদ্ধ করত।” এর বিপরীতে ওই সময় ইস্রায়েলীয়দেরকে দেওয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থা আদেশ দিয়েছিল: “মৃত লোকের জন্য আপন আপন অঙ্গে অস্ত্রাঘাত করিও না।”—লেবীয় পুস্তক ১৯:২৮.

স্কুথীয়রা হাজার হাজার কুরগান (স্মারণিক কবর) রেখে গিয়েছে। কুরগানগুলোতে যে প্রচুর অলংকার পাওয়া গেছে, তা থেকে স্কুথীয়দের রোজকার জীবনের কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। রাশিয়ার জার পিটার দ্যা গ্রেট ১৭১৫ সালে এই জিনিসগুলোকে সংগ্রহ করতে শুরু করেছিলেন এবং এই চাকচিক্যময় জিনিসগুলো এখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের জাদুঘরগুলোতে দেখা যায়। এই “পশু শিল্পের” মধ্যে রয়েছে ঘোড়া, ঈগল, বাজপাখি, বিড়াল, চিতাবাঘ, এল্ক, হরিণ, বার্ড-গ্রিফিন্স ও লায়ন-গ্রিফিন্স (পৌরাণিক কাহিনীর প্রাণী যেগুলোর শরীর ডানা সহ বা ছাড়া কোন এক পশুর মতো কিন্তু মাথা অন্য আরেক পশুর মতো)।

বাইবেলে স্কুথীয়রা

বাইবেলে কেবল এক জায়গাতেই স্কুথীয়দের কথা সরাসরি বলা আছে। কলসীয় ৩:১১ পদে আমরা পড়ি: “এস্থানে গ্রীক কি যিহূদী, ছিন্নত্বক্‌ কি অচ্ছিন্নত্বক্‌, বর্ব্বর, স্কুথীয়, দাস, স্বাধীন বলিয়া কিছু হইতে পারে না, কিন্তু খ্রীষ্টই সর্ব্বেসর্ব্বা।” খ্রীষ্টান প্রেরিত পৌল যখন এই কথাগুলো লিখেছিলেন, তখন যে গ্রিক শব্দকে “স্কুথীয়” বলে অনুবাদ করা হয়েছে, তা কোন নির্দিষ্ট একটা জাতিকে বোঝায়নি কিন্তু অসভ্য বর্বর লোকেদেরকে বুঝিয়েছিল। পৌল জোর দিয়েছিলেন যে, যিহোবার পবিত্র আত্মা বা কার্যকারী শক্তির প্রভাবে এইরকম ব্যক্তিরা পর্যন্ত ঈশ্বরীয় ব্যক্তিত্ব পরিধান করতে পারে।—কলসীয় ৩:৯, ১০.

কিছু প্রত্নতত্ত্ববিদরা মনে করেন যে, যিরমিয় ৫১:২৭ পদে অস্কিনস বলে যে নামটা পাওয়া গেছে, তা আসলে অশূরীয় আশ্‌গাজা-র বদলে ব্যবহার করা হয়েছে আর এই শব্দটা স্কুথীয়দের প্রতি প্রয়োগ করা হতো। সা.কা.পূ. সপ্তম শতাব্দীতে অশূরীয়দের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সময় এই লোকেদের ও মিন্নির লোকেদের মধ্যে বন্ধুত্ব থাকার বিষয়ে কীলকাকার ফলকগুলোতে বর্ণনা করা আছে। যিরমিয় ভবিষ্যদ্বাণী করার ঠিক আগে স্কুথীয়রা মিশরে যাওয়ার ও সেখান থেকে আসার পথে যিহূদা দেশের ওপর দিয়ে গিয়েছিল তবে কারও কোন ক্ষতি করেনি। তাই, উত্তর থেকে যিহূদার ওপর আক্রমণের ব্যাপারে যারা যিরমিয়ের ভবিষ্যদ্বাণী শুনেছিলেন তারা হয়তো তার ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যতা সম্বন্ধে সন্দেহ করেছিলেন।—যিরমিয় ১:১৩-১৫.

কিছু পণ্ডিতরা মনে করেন যে, যিরমিয় ৫০:৪২ পদে হয়তো পরোক্ষভাবে স্কুথীয়দের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে আমরা পড়ি: “তাহারা ধনুক ও বড়শাধারী, নিষ্ঠুর ও করুণারহিত; তাহাদের রব সমুদ্রগর্জ্জনের তুল্য, ও তাহারা অশ্বারোহণে আসিতেছে; অয়ি বাবিল-কন্যে, তোমারই বিপরীতে যুদ্ধ করণার্থে তাহারা প্রত্যেক জন যোদ্ধার ন্যায় সুসজ্জিত হইয়াছে।” কিন্তু এই পদটা মূলত মাদীয় ও পারসিকদের বেলায় খাটে, যারা সা.কা.পূ. ৫৩৯ সালে বাবিলনকে জয় করেছিল।

এইরকম বলা হয় যে, যিহিষ্কেল ৩৮ ও ৩৯ অধ্যায়ে যে ‘মাগোগ দেশের’ কথা বলা আছে তা স্কুথীয় গোষ্ঠীকেই বোঝায়। কিন্তু, ‘মাগোগ দেশের’ এক রূপক তাৎপর্য আছে। এটা স্পষ্টত পৃথিবীর আশেপাশের কোন জায়গাকে বোঝায়, যেখানে স্বর্গে যুদ্ধ হওয়ার পর শয়তান ও তার দূতেদেরকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।—প্রকাশিত বাক্য ১২:৭-১৭.

নীনবীকে উৎপাটন করার বিষয়ে নহূমের ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতায় স্কুথীয়রা জড়িত ছিল। (নহূম ১:১, ১৪) সা.কা.পূ. ৬৩২ সালে কলদীয়, স্কুথীয় ও মাদীয়রা নীনবীকে লুট করেছিল ও এর ফলে অশূরীয় সাম্রাজ্যের পতন হয়েছিল।

এক রহস্যময় অবনতি

স্কুথীয়রা লুপ্ত হয়ে গেছে, কিন্তু কেন? ইউক্রেনের একজন বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ বলেন, “সত্যি বলতে কী, ওদের আসলে কী হয়েছে, তা আমরা জানি না।” কেউ কেউ মনে করেন যে, ধনসম্পদের প্রতি অতি লোভ থাকায় তারা সা.কা.পূ. প্রথম এবং দ্বিতীয় শতাব্দীতে সারমেশিয়ান নামে এশিয়ার এক নতুন যাযাবর জাতির কাছে বশ্যতা স্বীকার করেছিল।

অন্যান্য পণ্ডিত ব্যক্তিরা মনে করেন যে, স্কুথীয় গোষ্ঠীর লোকেদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বই তাদের অবনতির আসল কারণ হয়েছিল। কিন্তু অন্যান্যরা বলেন যে, স্কুথীয়দের অবশিষ্টাংশদেরকে ককেশাসের ওসিশিয়দের মাঝে পাওয়া যেতে পারে। যাই হোক না কেন, অতীতের এই রহস্যময় লোকেরা মানব ইতিহাসে এমন এক ছাপ ফেলে গেছে, যা এই স্কুথীয়দের আরেক নাম দেয় আর তা হল নিষ্ঠুরতা।

[২৪ পৃষ্ঠার মানচিত্র]

(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)

◻ প্রাচীন শহর

• আধুনিক শহর

ড্যানিউব

স্কুথীয় ← মাইগ্রেশন পথ

• কিভ

নিপার

নিস্টার

কৃষ্ণ সাগর

ওসেশিয়া

ককেশাস পর্বতমালা

কাস্পিয়ান সাগর

অশূরীয় ← আক্রমণের পথগুলো

◻ নীনবী

টাইগ্রিস

মিডিয়া ← আক্রমণের পথগুলো

মেসোপটেমিয়া

বাবিলনিয়া ← আক্রমণের পথগুলো

◻ বাবিলন

ইউফ্রেটিস

পারস্য সাম্রাজ্য

◻ সুসা

পারস্য উপসাগর

প্যালেস্টাইন

• বৈৎ-শান (স্কুথীয়পলিস)

মিশর ← আক্রমণের পথগুলো

নীলনদ

ভূমধ্য সাগর

গ্রিস

[২৫ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

স্কুথীয়রা কেবল যুদ্ধই করত

[সৌজন্যে]

The State Hermitage Museum, St. Petersburg

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

স্কুথীয়রা গ্রিকদের শিল্পকর্মগুলো কেনার জন্য তাদের জিনিসগুলো বিক্রি করত আর এভাবে অনেক ধনী হয়ে উঠেছিল

[সৌজন্যে]

Courtesy of the Ukraine Historic Treasures Museum, Kiev

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার