ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৪ ১০/১৫ পৃষ্ঠা ৩-৭
  • আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো অনুধাবন করার দ্বারা উপকার লাভ করুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো অনুধাবন করার দ্বারা উপকার লাভ করুন
  • ২০০৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব
  • বাইবেল সর্বোচ্চ মূল্যবোধগুলোকে উন্নীত করে
  • আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো পুরস্কার নিয়ে আসে
  • এটা কি সত্যিই উপকারজনক?
  • চিরস্থায়ী আধ্যাত্মিক ধনের অনুধাবন করুন
  • ধন কি আপনাকে সুখী করতে পারে?
    ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • চিরন্তন মূল্যবোধগুলোর দ্বারা আবদ্ধ
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ঈশ্বরের নতুন জগতে প্রকৃত সমৃদ্ধি
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনাকে সুখী করতে কিসের প্রয়োজন?
    ১৯৯৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
২০০৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৪ ১০/১৫ পৃষ্ঠা ৩-৭

আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো অনুধাবন করার দ্বারা উপকার লাভ করুন

“যে ব্যক্তি রৌপ্য ভালবাসে, সে রৌপ্যে তৃপ্ত হয় না; আর যে ব্যক্তি ধনরাশি ভালবাসে, সে ধনাগমে তৃপ্ত হয় না।”—উপদেশক ৫:১০.

অত্যধিক খাটুনি চাপ নিয়ে আসতে পারে আর এই চাপ শারীরিক সমস্যাগুলোর কারণ হতে পারে, যা কখনও কখনও মৃত্যুর মুখেও ঠেলে দেয়। অনেক দেশে বিবাহবিচ্ছেদের দ্বারা পরিবারগুলোও ভেঙে যায়। এই ধরনের বেদনাদায়ক ঘটনাগুলোর পিছনে প্রায়ই বস্তুগত বিষয়গুলোর জন্য অতিরিক্ত চিন্তা জড়িত থাকে। একজন ব্যক্তি যিনি ধনসম্পদ অর্জনে পুরোপুরিভাবে ডুবে থাকেন, তিনি তার যা আছে তা উপভোগ করার পরিবর্তে সবসময় আরও বেশি চান আর তা করতে গিয়ে তার মঙ্গলের ক্ষেত্রে যেকোনো মূল্যই দিতে হোক না কেন। স্বাবলম্বী হওয়ার একটা বই উল্লেখ করেছিল: “প্রতিবেশীর সঙ্গে পাল্লা দেওয়া এখন খুবই সাধারণ বিষয়, এমনকি সেই প্রতিবেশী যদি একজন কাজপাগল হন ও তেতাল্লিশ বছর বয়সেই হার্ট আ্যটাক হওয়ার ঝুঁকির মধ্যেও থাকেন।”

আরও পাওয়ার চেষ্টা অতৃপ্ত থেকে যেতে পারে, একজন ব্যক্তির যেকোনো আনন্দ কেড়ে নিতে পারে যা তিনি হয়তো অন্যভাবে উপভোগ করতে পারতেন। এইক্ষেত্রে আমাদের মানব দুর্বলতাগুলো প্রায়ই এক শক্তিশালী প্রভাবের দ্বারা শোষিত হয় আর তা হল বিজ্ঞাপন! টেলিভিশনের অনুষ্ঠানগুলো বিজ্ঞাপনে পরিপূর্ণ আর তা আপনাকে বার বার সেই জিনিসগুলো কিনতে বলবে, যেগুলো হয়তো আপনার প্রয়োজন নেই আর এমনকি সেগুলো কেনার সামর্থ্যও আপনার নেই। এই সমস্তকিছু আপনাকে বড় ধরনের ক্ষতির দিকে চালিত করতে পারে।

অনিয়ন্ত্রিত আত্মতুষ্টি শারীরিক ও নৈতিক উভয় দিক দিয়েই আমাদের ওপর এক সূক্ষ্ম অথচ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বিজ্ঞ রাজা শলোমন বলেছিলেন: “শান্ত হৃদয় শরীরের জীবন।” (হিতোপদেশ ১৪:৩০) এর বিপরীতে অতি পরিশ্রম, উদ্বিগ্নতা এবং বস্তুগত ধনসম্পদ সংগ্রহ করার চাপ আমাদের স্বাস্থ্য ও সুখকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এ ছাড়া, বস্তুগত লক্ষ্যগুলো যখন আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে, তখন পারস্পরিক সম্পর্কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর একজন ব্যক্তির পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের যখন অবনতি ঘটে, তখন সামগ্রিকভাবে তার জীবনের গুণগত মান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব

বহু শতাব্দী আগে প্রেরিত পৌল সতর্ক করেছিলেন যে, “এই যুগের অনুরূপ হইও না।” (রোমীয় ১২:২) সেই ব্যক্তিদের প্রতি এই জগতের ভালবাসা রয়েছে, যারা এর মূল্যবোধগুলোর সঙ্গে সংগতি রেখে জীবনযাপন করে। (যোহন ১৫:১৯) এর প্রবণতা হচ্ছে দর্শন, স্পর্শ, আস্বাদন, ঘ্রাণ এবং শ্রবণের মতো আপনার ইন্দ্রিয়গুলোকে আকর্ষিত করা—হ্যাঁ, এক বস্তুবাদী জীবনধারাকে গ্রহণ করানো। ‘চক্ষুর অভিলাষের’ ওপর জোর দেওয়া হয়, যাতে আপনি এবং অন্যেরা বস্তুগত বিষয়গুলো অনুধাবন করেন।—১ যোহন ২:১৫-১৭.

কিন্তু, টাকাপয়সা, খ্যাতি এবং বস্তুগত ধনসম্পদের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধগুলো রয়েছে। বহু শতাব্দী আগে রাজা শলোমন জগতের সমস্ত বস্তুগত বিষয় সংগ্রহ করেছিলেন। তিনি অনেক বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন এবং তার অনেক উদ্যান, ফলের বাগান, দাসদাসী, পশুপাল, গায়ক-গায়িকা ও সেইসঙ্গে প্রচুর সোনা ও রুপো ছিল। শলোমন তার সম্পদ, তার আগে যারা ছিল, তাদের চাইতেও অনেক গুণ বৃদ্ধি করেছিলেন। তিনি ধনী ছিলেন, শুধু এই কথা বললে আসলে কম বলা হবে। আকাঙ্ক্ষিত প্রায় সমস্ত বিষয়ই শলোমনের ছিল। তা সত্ত্বেও, তিনি যখন তার সমস্ত প্রাপ্তির প্রতি মনোযোগ দিয়েছিলেন, তখন বলেছিলেন: “সকলই অসার ও বায়ুভক্ষণ মাত্র।”—উপদেশক ২:১-১১.

তিনি যে-শ্রেষ্ঠ প্রজ্ঞা লাভ করার বিশেষ সুযোগ পেয়েছিলেন, তা থেকে শলোমন জানতে পেরেছিলেন যে, আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো অনুধাবন করার মাধ্যমেই বড় পরিতৃপ্তি আসে। তিনি লিখেছিলেন: “আইস, আমরা সমস্ত বিষয়ের উপসংহার শুনি; ঈশ্বরকে ভয় কর, ও তাঁহার আজ্ঞা সকল পালন কর, কেননা ইহাই সকল মনুষ্যের কর্ত্তব্য।”—উপদেশক ১২:১৩.

ঈশ্বরের বাক্য বাইবেলের পাতায় পাতায় যে সঞ্চিত সম্পদ রয়েছে, তা সোনা ও রুপোর চাইতেও বেশি মূল্যবান। (হিতোপদেশ ১৬:১৬) মূল্যবান মণির মতো, সেখানে গভীর সত্যগুলো রয়েছে, যা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। আপনি কি সেগুলো অন্বেষণ ও খনন করবেন? (হিতোপদেশ ২:১-৬) প্রকৃত মূল্যবোধগুলোর উৎস, আমাদের সৃষ্টিকর্তা আপনাকে তা করতে জোরালোভাবে প্রণোদিত করেন আর তিনি আপনাকে সাহায্য করবেন। কীভাবে?

যিহোবা তাঁর বাক্য, তাঁর আত্মা এবং তাঁর সংগঠনের মাধ্যমে সত্যের মূল্যবান রত্নগুলো জুগিয়ে থাকেন। (গীতসংহিতা ১:১-৩; যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮; মথি ২৪:৪৫-৪৭; ১ করিন্থীয় ২:১০) অপরিমেয় মূল্যের এই উৎকৃষ্ট রত্নগুলো পরীক্ষা করা আপনাকে বুদ্ধির সঙ্গে সবচেয়ে ভাল ও সর্বোত্তম জীবনের পুরস্কারদায়ক পথ বাছাই করার এক সুযোগ দেবে। আর তা কষ্টসাধ্য হবে না কারণ আমাদের সৃষ্টিকর্তা যিহোবা জানেন যে, সত্যিকারের সুখী হওয়ার জন্য আমাদের কী দরকার।

বাইবেল সর্বোচ্চ মূল্যবোধগুলোকে উন্নীত করে

বাইবেলে যে-উপকারজনক পরামর্শ বা উপদেশ পাওয়া যায় তা বাস্তব এবং অনুপম। এটি যে-নৈতিক মানগুলো সমর্থন করে তা অদ্বিতীয়। এর পরামর্শ সবসময়ই উপকারজনক। দীর্ঘ সময় ধরে এটি টিকে রয়েছে। বাইবেলের উপকারজনক উপদেশের উদাহরণগুলো হল, কঠোর পরিশ্রম করুন, সৎ হোন, বিজ্ঞতার সঙ্গে টাকাপয়সা ব্যবহার করুন এবং অলসতা পরিহার করুন।—হিতোপদেশ ৬:৬-৮; ২০:২৩; ৩১:১৬.

এই কথাগুলোর সঙ্গে মিল রেখে যিশু বলেছিলেন: “তোমরা পৃথিবীতে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় করিও না; এখানে ত কীটে ও মর্চ্চ্যায় ক্ষয় করে, এবং এখানে চোরে সিঁধ কাটিয়া চুরি করে। কিন্তু স্বর্গে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় কর; সেখানে কীটে ও মর্চ্চ্যায় ক্ষয় করে না, সেখানে চোরেও সিঁধ কাটিয়া চুরি করে না।”—মথি ৬:১৯, ২০.

এই সময়োপযোগী সতর্কবাণী আজকেও প্রযোজ্য, যেমনটা ২,০০০ বছর আগে ছিল। আরও বস্তুগত ধনসম্পদ পাওয়ার চেষ্টার পরিবর্তে, জীবনের এক উৎকৃষ্ট পথ অনুধাবনের মাধ্যমে আমরা এখনই উপকৃত হতে পারি। মূল বিষয়টা হল আধ্যাত্মিক ধন সঞ্চয় করা, যা এক প্রকৃত সুখ ও পরিতৃপ্তিকর জীবনের দিকে পরিচালিত করে। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল পড়ে এবং এটি যা শিক্ষা দেয় তা কাজে লাগানোর মাধ্যমে।

আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো পুরস্কার নিয়ে আসে

যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হলে আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো আমাদের শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে উপকার করে। পৃথিবীর উপরিস্থ ওজোন স্তর যেমন আমাদেরকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে, তেমনই গভীর নৈতিক নীতিগুলোও বস্তুবাদিতার বিপদজনক প্রভাবগুলো প্রকাশ করে দেওয়ার দ্বারা আমাদের সুরক্ষিত থাকতে সাহায্য করে। খ্রিস্টান প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “যাহারা ধনী হইতে বাসনা করে, তাহারা পরীক্ষাতে ও ফাঁদে এবং নানাবিধ মূঢ় ও হানিকর অভিলাষে পতিত হয়, সে সকল মনুষ্যদিগকে সংহারে ও বিনাশে মগ্ন করে। কেননা ধনাসক্তি সকল মন্দের একটা মূল; তাহাতে রত হওয়াতে কতক লোক বিশ্বাস হইতে বিপথগামী হইয়াছে, এবং অনেক যাতনারূপ কন্টকে আপনারা আপনাদিগকে বিদ্ধ করিয়াছে।”—১ তীমথিয় ৬:৯, ১০.

ধনের প্রতি ভালবাসা লোকেদেরকে আরও বেশি ধনসম্পদ, পদমর্যাদা এবং ক্ষমতার অন্বেষণ করতে প্রলোভিত করে। প্রায়ই এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করার ক্ষেত্রে প্রতারণা এবং অসৎ উপায়গুলো অবলম্বন করা হয়। বস্তুবাদিতার পিছনে ছোটা একজন ব্যক্তির সময়, শক্তি এবং ক্ষমতা হরণ করে। এটা এমনকি একজনের রাতের ঘুমও কেড়ে নিতে পারে। (উপদেশক ৫:১২) আরও পাওয়ার চেষ্টা নিশ্চিতভাবে আধ্যাত্মিক অগ্রগতিতে বাধা দেয়। সর্বকালের সর্বমহান পুরুষ যিশু খ্রিস্ট স্পষ্টভাবে আরও উত্তম উপায়টি দেখিয়েছিলেন: “সুখী তারা যারা তাদের আধ্যাত্মিক চাহিদা সম্বন্ধে সচেতন।” (মথি ৫:৩, NW) তিনি জানতেন যে, আধ্যাত্মিক সম্পদ স্থায়ী পুরস্কারগুলোর দিকে পরিচালিত করে আর তা ক্ষণস্থায়ী বস্তুগত লাভের চাইতে আরও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।—লূক ১২:১৩-৩১.

এটা কি সত্যিই উপকারজনক?

“আমার বাবামা আমাকে বোঝানোর জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করেছে যে, আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো ব্যবহারিক নয়,” গ্রেগ স্মরণ করেন। “তা সত্ত্বেও, আমি আধ্যাত্মিক লক্ষ্যগুলো অনুধাবন করে প্রচুর মনের শান্তি লাভ করেছি কারণ আমি ধনসম্পদ লাভ করার প্রতিযোগিতার চাপ থেকে মুক্ত।”

এ ছাড়া, আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো উত্তম ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রকৃত বন্ধুরা আপনার কী কী আছে সেইজন্য নয়, বরং আপনি কে, সেই কারণে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়। বাইবেল সুপারিশ করে: “জ্ঞানীদের সহচর হও, জ্ঞানী হইবে।” (হিতোপদেশ ১৩:২০) এ ছাড়া, একটা সফল পরিবার গড়ে ওঠে প্রজ্ঞা ও প্রেমের দ্বারা, বস্তুগত বিষয়সম্পত্তির দ্বারা নয়।—ইফিষীয় ৫:২২–৬:৪.

আমরা মূল্যবোধগুলো নিয়ে জন্মাইনি। আমাদেরকে এগুলো আমাদের সঙ্গীসাথি অথবা এক উচ্চতর উৎস থেকে শিখতে হবে। সেই কারণে এক বাইবেলভিত্তিক শিক্ষা বস্তুগত বিষয়গুলো সম্বন্ধে আমাদের পুরো মানসিক দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলে দিতে পারে। “আমি আমার মূল্যবোধগুলো সম্বন্ধে পুনরায় ভেবে দেখার জন্য সাহায্য পেয়েছিলাম আর আমি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে শিখেছিলাম,” ডন বলেন, যিনি একজন প্রাক্তন ব্যাঙ্কার।

চিরস্থায়ী আধ্যাত্মিক ধনের অনুধাবন করুন

আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো ক্ষণস্থায়ী আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করে না, বরং দীর্ঘস্থায়ী পুরস্কারকে তুলে ধরে। পৌল লিখেছিলেন: “যাহা যাহা দৃশ্য [বস্তুগত], তাহা ক্ষণকালস্থায়ী, কিন্তু যাহা যাহা অদৃশ্য [আধ্যাত্মিক], তাহা অনন্তকালস্থায়ী।” (২ করিন্থীয় ৪:১৮) এটা ঠিক যে, বস্তুগত অনুধাবনগুলো ক্ষণিকের আকাঙ্ক্ষাগুলো চরিতার্থ করতে পারে কিন্তু লোভের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো চিরকালীন।—হিতোপদেশ ১১:৪; ১ করিন্থীয় ৬:৯, ১০.

বাইবেল বস্তুবাদিতার প্রতি মন কেন্দ্রীভূত করাকে নিন্দা করে, যা এই সময়ে খুবই লক্ষণীয়। এটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, আমাদের চোখকে সরল রাখার অর্থাৎ বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা আধ্যাত্মিক ধনের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখার মাধ্যমে কীভাবে আমরা স্বার্থপর আকাঙ্ক্ষাকে দমন করতে পারি। (ফিলিপীয় ১:১০, NW) এটি আমাদের কাছে স্পষ্ট করে যে, লোভ আসলে কী—আত্মউপাসনা। ঈশ্বরের বাক্য থেকে শেখা বিষয়গুলো যখন আমরা কাজে লাগাই, তখন আমরা প্রচুর সুখ অনুভব করি। আমাদের চিন্তাভাবনা মূলত গ্রহণ করা অপেক্ষা দান করায় পরিবর্তিত হয়। আত্মতুষ্টির জায়গায় আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো স্থাপন করার কী এক শক্তিশালী চালিকাশক্তি!

এটা সত্যি যে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে টাকাপয়সা এক সুরক্ষা হিসেবে কাজ করতে পারে। (উপদেশক ৭:১২) কিন্তু, বাইবেল বাস্তবসম্মতভাবে বলে: “আপনার টাকাপয়সা মুহূর্তের মধ্যে চলে যেতে পারে, যেন এর পাখা গজিয়েছিল ও ঈগলের মতো উড়ে গিয়েছিল।” (হিতোপদেশ ২৩:৫, টুডেজ ইংলিশ ভারসন) লোকেরা চরম পরিণতিসহ বস্তুবাদিতার বেদিতে নিজেদের স্বাস্থ্য, পরিবার ও এমনকি এক উত্তম বিবেককে পুরোপুরি উৎসর্গ করেছে। অন্যদিকে, আধ্যাত্মিকতা বজায় রাখা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলো মেটায় আর সেই চাহিদাগুলো হল ভালবাসা পাওয়া, এক উদ্দেশ্য থাকা এবং প্রেমময় ঈশ্বর যিহোবাকে উপাসনা করা। এ ছাড়া, এটা এক পরমদেশ পৃথিবীতে মানব সিদ্ধতায় অনন্তজীবনের পথে চালিত করে—এমন প্রত্যাশা, যা ঈশ্বর আমাদের জন্য রেখেছেন।

শীঘ্রই মানবজাতির সমৃদ্ধির স্বপ্ন ঈশ্বরের নতুন জগতে পূর্ণ হবেই। (গীত ১৪৫:১৬) সেই সময়ে পুরো পৃথিবী “সদাপ্রভু-বিষয়ক জ্ঞানে পরিপূর্ণ” হবে। (যিশাইয় ১১:৯) আধ্যাত্মিক মূল্যবোধগুলো সমৃদ্ধিলাভ করবে। বস্তুবাদিতা এবং এর ক্ষতগুলো পুরোপুরি নির্মূল হয়ে যাবে। (২ পিতর ৩:১৩) এরপর যে-বিষয়গুলো জীবনকে স্থায়ীভাবে আরও মূল্যবান করে—নিখুঁত স্বাস্থ্য, সন্তোষজনক কাজ, স্বাস্থ্যকর অবকাশযাপন, উষ্ণ পারিবারিক সম্পর্ক এবং ঈশ্বরের সঙ্গে চিরস্থায়ী বন্ধুত্ব—সেগুলো চিরকালের জন্য মানবজাতির প্রকৃত সুখ নিয়ে আসবে।

[৬ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

আপনার টাকাপয়সা বিজ্ঞতার সঙ্গে ব্যবহার করুন!

আপনার চাহিদাগুলো শনাক্ত করুন।যিশু আমাদের এই প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন: “আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য প্রতিদিন আমাদিগকে দেও।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (লূক ১১:৩) আজকের চাওয়াকে আগামীকালের চাহিদার বিষয় করে তুলবেন না। মনে রাখবেন যে, আপনার কী রয়েছে, তার ওপর আপনার জীবন নির্ভর করে না।—লূক ১২:১৬-২১.

বাজেট তৈরি করুন।অপরিকল্পিতভাবে কেনাকাটা করবেন না। বাইবেল বলে: “পরিশ্রমীর চিন্তা হইতে কেবল ধনলাভ হয়, কিন্তু যে কেহ হঠকারী, তাহার কেবল অভাব ঘটে।” (হিতোপদেশ ২১:৫) যিশু তাঁর শ্রোতাদের যেকোনো আর্থিক প্রকল্পে হাত দেওয়ার আগে মূল্য বিবেচনা করে দেখতে উপদেশ দিয়েছিলেন।—লূক ১৪:২৮-৩০.

অযথা ঋণ করা পরিহার করুন।যেখানেই সম্ভব বাকিতে কেনার পরিবর্তে, কেনাকাটা করার জন্য সঞ্চয় করুন। হিতোপদেশ এটাকে এভাবে বলে: “ধনবান দরিদ্রগণের উপরে কর্ত্তৃত্ব করে, আর ঋণী মহাজনের দাস হয়।” (হিতোপদেশ ২২:৭) আত্মসংযম অনুশীলন এবং নিজের বাজেটের মধ্যে থাকার মাধ্যমে আপনি এমনকি গুরুত্বপূর্ণ কিছু কেনার পরিকল্পনায় সফল হতে পারেন।

অপচয় করা পরিহার করুন।ইতিমধ্যেই আপনার যা রয়েছে, সেগুলোর উত্তম যত্ন নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সেগুলো টিকিয়ে রাখার দ্বারা অপচয় কমান। যিশু যা ব্যবহার করেছিলেন সেটার সংরক্ষণের প্রতি তিনি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছিলেন।—যোহন ৬:১০-১৩.

অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো প্রথমে রাখুন।একজন বিজ্ঞ ব্যক্তি অধিক গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলো অনুধাবন করার জন্য “সুযোগ কিনিয়া” নেবেন।—ইফিষীয় ৫:১৫, ১৬.

[৭ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

অভিজ্ঞতা থেকে শেখা —এর চেয়েও উত্তম এক উপায় রয়েছে

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা—ভাল ও মন্দ উভয়ই—আমাদের মূল্যবান বিষয়গুলো শিক্ষা দিতে পারে। কিন্তু এটা কি সত্যি যে, আমাদের অভিজ্ঞতাগুলো থেকেই আমরা সবচেয়ে ভালভাবে শিখতে পারি? না, নির্দেশনার এক শ্রেষ্ঠ উৎস রয়েছে। গীতরচক সেটাকে শনাক্ত করেছিলেন, যখন তিনি প্রার্থনায় বলেছিলেন: “তোমার বাক্য আমার চরণের প্রদীপ, আমার পথের আলোক।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—গীতসংহিতা ১১৯:১০৫.

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে শেখার চাইতে ঐশিক শিক্ষা থেকে শেখা কেন আরও উত্তম? একটা কারণ হল, কেবলমাত্র অভিজ্ঞতা থেকে শেখার—পরীক্ষামূলকভাবে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করার—ফলে একই সময়ে প্রচুর খেসারত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বেদনাদায়কও হতে পারে। এ ছাড়া, এটা অপ্রয়োজনীয়। “আহা! তুমি কেন আমার আজ্ঞাতে অবধান কর নাই?” ঈশ্বর, প্রাচীন ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন। “করিলে তোমার শান্তি নদীর ন্যায়, তোমার ধার্ম্মিকতা সমুদ্র-তরঙ্গের ন্যায় হইত।”—যিশাইয় ৪৮:১৮.

ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষার এক উৎস হিসেবে বিশিষ্ট হওয়ার একটা কারণ হল যে, এর মধ্যে মানুষের অভিজ্ঞতার সবচেয়ে প্রাচীন এবং সবচেয়ে সঠিক বিবরণ রয়েছে। আপনি সম্ভবত উপলব্ধি করেন যে, অন্যদের ভুলগুলো পুনরাবৃত্তি করার চেয়ে বরং তাদের সাফল্য এবং ব্যর্থতাগুলো থেকে কোনো যন্ত্রণা না পেয়ে শেখাই আরও বেশি শ্রেয়। (১ করিন্থীয় ১০:৬-১১) এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হল, বাইবেলে ঈশ্বর আমাদের সর্বোৎকৃষ্ট আইন ও পরিচালনাকারী নীতিগুলো দিয়েছেন, যেগুলো পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য। “সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিদ্ধ, . . . সদাপ্রভুর সাক্ষ্য বিশ্বসনীয়, অল্পবুদ্ধির জ্ঞানদায়ক।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (গীতসংহিতা ১৯:৭) নিশ্চিতভাবেই, আমাদের প্রেমময় সৃষ্টিকর্তার প্রজ্ঞা থেকে শেখা হচ্ছে সম্ভাব্য সর্বোত্তম উপায়।

[৪ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

এই জগৎ চায় আপনি এর বস্তুবাদী জীবনধারা অবলম্বন করুন

[৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

বাইবেলে পাওয়া সম্পদ সোনা অথবা রুপোর চাইতেও বেশি মূল্যবান

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার