ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৭ ১/১৫ পৃষ্ঠা ২১-২৫
  • বাইবেল প্রকৃতপক্ষে যা শিক্ষা দেয়, তা-ই শিক্ষা দিন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বাইবেল প্রকৃতপক্ষে যা শিক্ষা দেয়, তা-ই শিক্ষা দিন
  • ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • ঈশ্বর কি চিন্তা করেন?
  • আমরা কেন এখানে আছি?
  • মৃত্যুতে আমাদের কী হয়?
  • আমাদের ব্যবহারের জন্য একটি নতুন বই
  • আপনার অমূল্য সুযোগের জন্য কৃতজ্ঞ হোন
  • আপনি কি সত্য জানতে চান?
    আপনি কি সত্য জানতে চান?
  • ঈশ্বর সম্বন্ধে সত্যটা কী?
    বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়?
  • কেন ঈশ্বর দুঃখকষ্ট থাকতে দিয়েছেন?
    বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়?
  • বাইবেল যা শিক্ষা দেয়, তা পালন করতে অন্যদের সাহায্য করুন
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৭ ১/১৫ পৃষ্ঠা ২১-২৫

বাইবেল প্রকৃতপক্ষে যা শিক্ষা দেয়, তা-ই শিক্ষা দিন

“সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; . . . তাহাদিগকে শিক্ষা দেও।”—মথি ২৮:১৯, ২০.

১. বাইবেলের প্রাপ্তিসাধ্যতা সম্বন্ধে কী বলা যেতে পারে?

যিহোবার বাক্য পবিত্র বাইবেল হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ও সবচেয়ে বেশি বিতরিত বইগুলোর মধ্যে একটি। অন্ততপক্ষে এর কিছু অংশ ২,৩০০রও বেশি ভাষায় অনুবাদিত হয়েছে। পৃথিবীর অধিবাসীদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি লোকের কাছে তাদের নিজের ভাষায় এই বাইবেল রয়েছে।

২, ৩. (ক) বাইবেলের শিক্ষাগুলো নিয়ে কেন বিভ্রান্তি রয়েছে? (খ) আমরা কোন প্রশ্নগুলো বিবেচনা করব?

২ লক্ষ লক্ষ লোক প্রতিদিন বাইবেলের কিছু অংশ পড়ে থাকে। কেউ কেউ এটিকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বহুবার পড়েছে। যদিও হাজার হাজার ধর্মীয় দল দাবি করে যে, তাদের শিক্ষাগুলোর ভিত্তি হচ্ছে বাইবেল কিন্তু বাইবেল যা শিক্ষা দেয়, সেটার সঙ্গে তারা একমত নয়। একই ধর্মের সদস্যদের মধ্যে তীব্র মতভেদ সেই বিভ্রান্তিকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কেউ কেউ বাইবেল, এটির উৎস এবং এটির মূল্য সম্বন্ধে সন্দেহ করে। অনেকে এটিকে এমন এক পবিত্র বই হিসেবে দেখে থাকে, যা নিছক অঙ্গীকার করার অথবা আদালতে সত্য কথা বলার ক্ষেত্রে শপথ নেওয়ার জন্য রীতিগতভাবে ব্যবহৃত হয়।

৩ আসলে, বাইবেলে মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের জোরালো বাক্য অথবা বার্তা রয়েছে। (ইব্রীয় ৪:১২) তাই, যিহোবার সাক্ষি হিসেবে আমরা চাই যেন লোকেরা বাইবেল যা শিক্ষা দেয়, তা জানে। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করতে পেরে আনন্দিত, যা যিশু খ্রিস্ট তাঁর অনুসারীদের দিয়েছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন: “তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; . . . তাহাদিগকে শিক্ষা দেও।” (মথি ২৮:১৯, ২০) আমাদের জনসাধারণ্যের পরিচর্যায় আমরা এমন সৎহৃদয়ের লোকেদের খুঁজে পাই, যারা জগতে ব্যাপকভাবে বিদ্যমান ধর্মীয় বিভ্রান্তির কারণে হতাশাগ্রস্ত। তারা আমাদের সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে সত্য জানতে চায় এবং জীবনের অর্থ সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে, তা জানতে আকাঙ্ক্ষী। আসুন আমরা তিনটে প্রশ্ন বিবেচনা করি, যেগুলো অনেক লোককে ভাবিয়ে তোলে। প্রতিটা ক্ষেত্রে আমরা লক্ষ করব যে, ধর্মীয় নেতারা ভুলভাবে কী বলে থাকে এবং এরপর আমরা পুনরালোচনা করব যে, বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়। সেই প্রশ্নগুলো হচ্ছে: (১) ঈশ্বর কি আমাদের জন্য চিন্তা করেন? (২) আমরা কেন এখানে আছি? (৩) আমরা মারা গেলে আমাদের কী হয়?

ঈশ্বর কি চিন্তা করেন?

৪, ৫. কেন লোকেরা এইরকম মনে করে থাকে যে, ঈশ্বর আমাদের জন্য চিন্তা করেন না?

৪ আসুন আমরা এই প্রশ্নটা দিয়ে শুরু করি যে, ঈশ্বর কি আমাদের জন্য চিন্তা করেন? দুঃখের বিষয় যে, অনেক লোক মনে করে এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, না। কেন তারা এইরকম মনে করে? একটা কারণ হচ্ছে, তারা এমন এক জগতে বাস করে, যা ঘৃণা, যুদ্ধ এবং দুঃখকষ্টে পরিপূর্ণ। ‘ঈশ্বর যদি প্রকৃতপক্ষে চিন্তাই করতেন,’ তারা যুক্তি দেখায়, ‘তা হলে যে-মন্দ বিষয়গুলো ঘটছে, সেগুলোকে তিনি নিশ্চয়ই রোধ করতেন।’

৫ আরেকটা যেকারণে লোকেরা মনে করে থাকে যে, ঈশ্বর আমাদের জন্য চিন্তা করেন না, তা হচ্ছে ধর্মীয় নেতারা তাদেরকে এইরকম মনে করতে বাধ্য করেছে। কোনো দুঃখজনক ঘটনা ঘটলে পাদরিরা প্রায়ই কী বলে থাকে? একজন মহিলা যখন গাড়ি দুর্ঘটনায় তার দুটো বাচ্চাকে হারিয়েছিলেন, তখন তার গির্জার পরিচারক বলেছিলেন: “এটা ঈশ্বরেরই ইচ্ছা ছিল। ঈশ্বরের আরও দুজন স্বর্গদূতের প্রয়োজন হয়েছিল।” পাদরিরা যখন এই ধরনের মন্তব্য করে, তখন তারা মন্দ বিষয়গুলো ঘটার জন্য আসলে ঈশ্বরকেই দোষারোপ করে। কিন্তু, শিষ্য যাকোব লিখেছিলেন: “পরীক্ষার সময়ে কেহ না বলুক, ঈশ্বর হইতে আমার পরীক্ষা হইতেছে; কেননা মন্দ বিষয়ের দ্বারা ঈশ্বরের পরীক্ষা করা যাইতে পারে না, আর তিনি কাহারও পরীক্ষা করেন না।” (যাকোব ১:১৩) যিহোবা ঈশ্বর কখনোই মন্দ বিষয় ঘটান না। বস্তুতপক্ষে, “ইহা দূরে থাকুক যে, ঈশ্বর দুষ্কার্য্য করিবেন।”—ইয়োব ৩৪:১০.

৬. এই জগতের দুষ্টতা ও দুঃখকষ্টের পিছনে কে রয়েছে?

৬ তা হলে, কেন এত দুষ্টতা ও দুঃখকষ্ট? একটা কারণ হল, সামগ্রিকভাবে মানবজাতি শাসক হিসেবে ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তাঁর ধার্মিক আইন ও নীতিগুলোর প্রতি বশীভূত থাকতে চায়নি। মানুষ অজান্তেই ঈশ্বরের শত্রু শয়তানের বশীভূত হয়েছে কারণ “সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে।” (১ যোহন ৫:১৯) এই বিষয়টা সম্বন্ধে জ্ঞান এটা বোঝা আরও সহজ করে দেয় যে, কেন মন্দ পরিস্থিতি বিদ্যমান। শয়তান হচ্ছে মন্দ, ঘৃণাপূর্ণ, প্রতারক এবং নিষ্ঠুর। তাই, এই জগৎ এর শাসকের ব্যক্তিত্বকে প্রতিফলিত করবে, এমনটাই আমাদের আশা করা উচিত। সুতরাং এত দুষ্টতা দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই!

৭. আমরা যে-দুঃখকষ্ট ভোগ করি, তার কিছু কারণ কী?

৭ আমরা যে-দুঃখকষ্ট ভোগ করি, তার আরেকটা কারণ হচ্ছে মানব অসিদ্ধতা। পাপী মানুষেরা কর্তৃত্বের জন্য সংগ্রাম করে থাকে আর তা প্রায়ই যুদ্ধ, নিপীড়ন এবং কষ্ট নিয়ে আসে। উপদেশক ৮:৯ পদ উপযুক্তভাবে বলে: মানুষ “এক জন অন্যের উপরে তাহার অমঙ্গলার্থে কর্ত্তৃত্ব করে।” দুঃখকষ্টের আরও একটা কারণ হল, “সকলের প্রতি কাল ও দৈব ঘটে।” (উপদেশক ৯:১১) প্রায়ই লোকেরা দুর্দশা ভোগ করে কারণ তারা ভুল সময়ে ভুল জায়গায় উপস্থিত থাকে।

৮, ৯. কীভাবে আমরা জানি যে, যিহোবা প্রকৃতপক্ষে আমাদের জন্য চিন্তা করেন?

৮ এটা জানা সান্ত্বনাদায়ক যে, ঈশ্বর দুঃখকষ্ট ঘটান না। কিন্তু, আমাদের জীবনে যা ঘটছে, সেই সম্বন্ধে ঈশ্বর কি আসলেই চিন্তা করেন? হৃদয়গ্রাহী উত্তরটা হচ্ছে, হ্যাঁ! আমরা জানি যে, ঈশ্বর চিন্তা করেন কারণ তাঁর অনুপ্রাণিত বাক্য আমাদের জানায় যে, কেন তিনি মানুষকে এক মন্দ পথ অনুধাবন করতে দিয়েছেন। ঈশ্বরের কারণগুলোর সঙ্গে দুটো বিচার্য বিষয় জড়িত: তাঁর সার্বভৌমত্ব ও মানুষের নীতিনিষ্ঠা। যেহেতু তিনি সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা, তাই যিহোবা আমাদের কাছে বলতে বাধ্য নন যে, কেন তিনি দুঃখকষ্ট থাকতে অনুমতি দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও, তিনি আমাদের তা জানিয়েছেন কারণ তিনি আমাদের জন্য চিন্তা করেন।

৯ ঈশ্বর যে আমাদের জন্য চিন্তা করেন, তার আরও কারণ বিবেচনা করুন। নোহের সময়ে যখন পৃথিবী মন্দতায় ভরে গিয়েছিল, তখন তিনি ‘মনঃপীড়া পাইয়াছিলেন।’ (আদিপুস্তক ৬:৫, ৬) আজকে কি ঈশ্বর ভিন্ন বোধ করবেন? না, কারণ তাঁর পরিবর্তন নাই। (মালাখি ৩:৬) তিনি অবিচার ঘৃণা করেন এবং লোকেদের কষ্ট পেতে দেখাকেও ঘৃণা করেন। বাইবেল শিক্ষা দেয় যে, শীঘ্রই ঈশ্বর মানুষের শাসন ও দিয়াবলের প্রভাবের ফলে ঘটা সমস্ত ক্ষতিকে দূর করে দেবেন। এটা কি এক দৃঢ়প্রত্যয়জনক প্রমাণ নয় যে, ঈশ্বর আমাদের জন্য চিন্তা করেন?

১০. মানুষের দুঃখকষ্ট সম্বন্ধে যিহোবা কেমন বোধ করেন?

১০ ধর্মীয় নেতারা ভুলভাবে ঈশ্বরকে তুলে ধরে, যখন তারা বলে যে আমরা যে-দুঃখজনক ঘটনাগুলো ভোগ করি, সেগুলো ঈশ্বরেরই ইচ্ছা। এর পরিবর্তে, মানুষের দুঃখকষ্টকে শেষ করার জন্য যিহোবা আকুল আকাঙ্ক্ষী। “তিনি তোমাদের জন্য চিন্তা করেন,” ১ পিতর ৫:৭ পদ বলে। বাইবেল প্রকৃতপক্ষে এটাই শিক্ষা দেয়!

আমরা কেন এখানে আছি?

১১. পৃথিবীতে মানবজীবন সম্বন্ধে জগতের ধর্মগুলো প্রায়ই কী বলে থাকে?

১১ আসুন আমরা এখন দ্বিতীয় প্রশ্নটা বিবেচনা করি, যে-বিষয়ে অনেকে ভেবে থাকে আর সেটা হচ্ছে, আমরা কেন এখানে আছি? জগতের ধর্মগুলো প্রায়ই উত্তর দেয় যে, মানুষ কেবল ক্ষণকালের জন্য পৃথিবীতে রয়েছে। তারা পৃথিবীকে জীবনের অন্য কোথাও চলে যাওয়ার পথে শুধুমাত্র যাত্রাবিরতির এক স্থান অথবা একটা ধাপ বলে মনে করে। কিছু পাদরি মিথ্যাভাবে শিক্ষা দেয় যে, ঈশ্বর কোনো একদিন এই গ্রহকে ধ্বংস করে দেবেন। এই ধরনের শিক্ষার ফলস্বরূপ অনেক লোক এই উপসংহারে পৌঁছেছে যে, তাদের জন্য যথাসম্ভব পূর্ণরূপে জীবন উপভোগ করা উত্তম কারণ তাদের জন্য কেবল মৃত্যুই অপেক্ষা করছে। আমরা কেন এখানে আছি, সেই বিষয়ে বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়?

১২-১৪. পৃথিবী ও মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে বাইবেল কী শিক্ষা দেয়?

১২ পৃথিবী ও মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের এক চমৎকার উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি “[পৃথিবীকে] অনর্থক সৃষ্টি না করিয়া” বরং “বাসস্থানার্থে নির্ম্মাণ করিয়াছেন।” (যিশাইয় ৪৫:১৮) অধিকন্তু, যিহোবা “পৃথিবীকে তাহার ভিত্তিমূলের উপরে স্থাপন করিয়াছেন; তাহা অনন্তকালেও বিচলিত হইবে না।” (গীতসংহিতা ১০৪:৫) পৃথিবী ও মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে এই বিষয়গুলো জানা আমাদের বুঝতে সাহায্য করতে পারে যে, আমরা কেন এখানে আছি।

১৩ আদিপুস্তক ১ ও ২ অধ্যায় দেখায় যে, যিহোবা অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। আমাদের পৃথিবী ঘিরে সৃষ্টির সময়কালের শেষে সমস্তকিছু “অতি উত্তম” ছিল। (আদিপুস্তক ১:৩১) ঈশ্বর প্রথম মানব-মানবী আদম ও হবাকে এক মনোরম এদন উদ্যানে রেখেছিলেন এবং তাদের জন্য প্রচুর পরিমাণে উত্তম উত্তম খাদ্য জুগিয়েছিলেন। প্রথম মানব দম্পতিকে বলা হয়েছিল: “তোমরা প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও, এবং পৃথিবী পরিপূর্ণ ও বশীভূত কর।” তাদের সিদ্ধ সন্তান জন্ম দেওয়ার, উদ্যান গৃহের সীমা পুরো পৃথিবী জুড়ে প্রসারিত করার এবং পশুপাখির ওপর প্রেমময় কর্তৃত্ব করার কথা ছিল।—আদিপুস্তক ১:২৬-২৮.

১৪ ঈশ্বরের উদ্দেশ্য হল, সিদ্ধ মানব পরিবার দেশে বা পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকবে। ঈশ্বরের বাক্য বলে: “ধার্ম্মিকেরা দেশের অধিকারী হইবে, তাহারা নিয়ত তথায় বাস করিবে।” (গীতসংহিতা ৩৭:২৯) হ্যাঁ, মানবজাতির পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তজীবন উপভোগ করার কথা ছিল। এটাই হল ঈশ্বরের উদ্দেশ্য আর বাইবেল প্রকৃতপক্ষে এটাই শিক্ষা দেয়।

মৃত্যুতে আমাদের কী হয়?

১৫. আমরা মারা গেলে আমাদের কী হয়, সেই সম্বন্ধে জগতের অধিকাংশ ধর্ম কী শিক্ষা দেয়?

১৫ আসুন এখন আমরা তৃতীয় প্রশ্নটা আলোচনা করি, যেটা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত: আমরা মারা গেলে আমাদের কী হয়? জগতের অধিকাংশ ধর্মই শিক্ষা দেয় যে, দেহের মৃত্যুর পরও একজন ব্যক্তির ভিতরে কোনোকিছু বেঁচে থাকে। কিছু ধর্মীয় দল এখনও এই ধারণাকে দৃঢ়ভাবে ধরে রেখেছে যে, ঈশ্বর দুষ্টদেরকে এক অগ্নিময় নরকে অনন্তকাল যাতনা দেওয়ার মাধ্যমে শাস্তি দেন। কিন্তু, এটা কি সত্য? মৃতদের সম্বন্ধে বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়?

১৬, ১৭. বাইবেল অনুসারে, মৃতদের অবস্থা কী?

১৬ ঈশ্বরের বাক্য বলে: “জীবিত লোকেরা জানে যে, তাহারা মরিবে; কিন্তু মৃতেরা কিছুই জানে না, এবং তাহাদের আর কোন ফলও হয় না।” যেহেতু “মৃতেরা কিছুই জানে না,” তাই তারা শুনতে, দেখতে, কথা বলতে, অনুভব করতে অথবা চিন্তা করতে পারে না। তারা আর কোনো ফলও পেতে পারে না। কীভাবেই বা তারা পারবে? তারা তো কোনো কাজই করতে পারে না! অধিকন্তু, “তাহাদের প্রেম, তাহাদের দ্বেষ ও তাহাদের ঈর্ষা সকলই বিনষ্ট হইয়া গিয়াছে,” কারণ তারা কোনো আবেগই প্রকাশ করতে পারে না।—উপদেশক ৯:৫, ৬, ১০.

১৭ এই বিষয়ে বাইবেল যা বলে, তা সরল ও স্পষ্ট—মৃতেরা অন্য কোথাও বেঁচে থাকে না। এমন কোনোকিছুই নেই, যা মৃত্যুতে আমাদের দেহ ছেড়ে চলে যায় এবং আরেকটা দেহে পুনরায় জন্মগ্রহণ করার জন্য বেঁচে থাকে, যেমনটা যারা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে, তারা বলে থাকে। আমরা হয়তো বিষয়টাকে এই উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে পারি: আমরা যে-জীবন উপভোগ করি, তা মোমবাতির শিখার মতো। শিখাটা যখন নিভিয়ে ফেলা হয়, তখন এটা কোনো জায়গায় চলে যায় না। এটা কেবল অস্তিত্বহীন হয়ে যায়।

১৮. একজন বাইবেল ছাত্র যখন জানতে পারেন যে, মৃতেরা কিছুই জানে না, তখন তিনি কোন উপসংহারে পৌঁছাতে পারেন?

১৮ এই সরল অথচ জোরালো সত্যের তাৎপর্য সম্বন্ধে চিন্তা করুন। একজন বাইবেল ছাত্র যখন শেখে যে মৃতেরা কিছুই জানে না, তখন তিনি সহজেই এই উপসংহারে আসতে পারবেন যে, তার মৃত পূর্বপুরুষরা তাদের জীবনকালে যত অসন্তুষ্টই হোক না কেন, তারা তাকে আর জ্বালাতন করতে পারে না। তিনি দ্রুত এটাও উপলব্ধি করতে পারবেন যে, তার প্রিয় মৃত ব্যক্তিরা আর শুনতে, দেখতে, কথা বলতে, অনুভব করতে অথবা চিন্তা করতে পারে না। তাই, তারা পুরগাতরিতে অসহনীয় একাকিত্ব ভোগ করতে অথবা অগ্নিময় যাতনার এক স্থানে কষ্ট পেতে পারে না। কিন্তু, বাইবেল শিক্ষা দেয় যে, যে-মৃত ব্যক্তিরা ঈশ্বরের স্মৃতিতে রয়েছে, তারা পুনরুত্থিত হবে। কত অপূর্ব এক আশা!—যোহন ৫:২৮, ২৯.

আমাদের ব্যবহারের জন্য একটি নতুন বই

১৯, ২০. খ্রিস্টান হিসেবে আমাদের কোন দায়িত্ব রয়েছে আর পরিচর্যায় আমাদের ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে কোন বাইবেল অধ্যয়ন সহায়ক তৈরি করা হয়েছে?

১৯ আমরা মাত্র তিনটে প্রশ্ন বিবেচনা করেছি, যেগুলো নিয়ে অনেক লোক ভেবে থাকে। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে, বাইবেল যা শিক্ষা দেয়, তা স্পষ্ট ও সহজবোধ্য। এই সত্যগুলো সেই লোকেদের জানানো কতই না আনন্দের বিষয়, যারা জানতে চায় যে, বাইবেল কী শিক্ষা দেয়! কিন্তু, এমন আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়েছে, যেগুলোর সন্তোষজনক উত্তর সৎহৃদয়ের লোকেদের জানা প্রয়োজন। খ্রিস্টান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হল আমরা যেন এই ধরনের প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করার জন্য তাদের সাহায্য করি।

২০ শাস্ত্রীয় সত্য এমন এক উপায়ে শিক্ষা দেওয়া কঠিন বিষয়, যা কিনা স্পষ্ট এবং হৃদয়কে স্পর্শ করে। সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা মোকাবিলা করার জন্য “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস” একটি বই প্রস্তুত করেছে, যেটিকে বিশেষভাবে আমাদের খ্রিস্টীয় পরিচর্যায় ব্যবহার করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। (মথি ২৪:৪৫-৪৭) ২২৪ পৃষ্ঠার এই বইটির শিরোনাম হচ্ছে, বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়?

২১, ২২. বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য কী?

২১ যিহোবার সাক্ষিদের ২০০৫/০৬ সালের “ঈশ্বরীয় বাধ্যতা” জেলা সম্মেলনগুলোতে প্রকাশিত এই বইয়ের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বইটিতে পাঁচ পৃষ্ঠার ভূমিকা রয়েছে, যা গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করার জন্য অনেক সাহায্যকারী। আপনি হয়তো ভূমিকায় দেওয়া ছবি ও শাস্ত্রপদগুলো নিয়ে আলোচনা করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন। এ ছাড়া, কীভাবে বাইবেলের অধ্যায় এবং পদগুলো বের করতে হয়, তা ছাত্রকে দেখানোর জন্য আপনি হয়তো এই বিভাগের বিষয়বস্তুও ব্যবহার করতে পারেন।

২২ এই বইয়ের রচনাশৈলী সরল ও স্পষ্ট। যেখানেই সম্ভব ছাত্রকে জড়িত করে তার হৃদয়ে পৌঁছানোর জন্য প্রকৃত প্রচেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিটা অধ্যায়ের শুরুতে বেশ কয়েকটা ভূমিকামূলক প্রশ্ন রয়েছে এবং শেষে একটা বাক্স রয়েছে, যেটার শিরোনাম হল, “বাইবেল যা শিক্ষা দেয়।” এই বাক্সে ভূমিকামূলক প্রশ্নগুলোর শাস্ত্রীয় উত্তর রয়েছে। এই প্রকাশনার বিভিন্ন চমৎকার ছবি এবং ছবির নীচে দেওয়া শিরোনাম ও সেইসঙ্গে দৃষ্টান্তগুলো ছাত্রকে নতুন ধারণাগুলো বুঝতে সাহায্য করবে। যদিও বইটির প্রধান পাঠ্যাংশ বেশ সহজ করা হয়েছে, তবে বইটিতে একটা পরিশিষ্ট রয়েছে, যা আপনাকে যদি ছাত্রের অতিরিক্ত তথ্যের প্রয়োজন হয়, তা হলে ১৪টা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আরও গভীরভাবে বিবেচনা করার সুযোগ দেবে।

২৩. বাইবেল অধ্যয়নে বাইবেল শিক্ষা দেয় বই ব্যবহার করা সম্বন্ধে কোন কোন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে?

২৩ বাইবেল শিক্ষা দেয়? বইটি বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং বিভিন্ন ধর্মীয় পটভূমির লোকেদের শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সাহায্য করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। কোনো ছাত্রের যদি বাইবেল সম্বন্ধে একটুও জ্ঞান না থাকে, তা হলে একটা অধ্যায় শেষ করার জন্য হয়তো একটা অধ্যয়ন পর্বের চেয়ে আরও বেশি সময় লাগতে পারে। তাড়াহুড়ো করে বিষয়বস্তু শেষ করবেন না বরং ছাত্রের হৃদয়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। তিনি যদি বইয়ে ব্যবহৃত কোনো একটা দৃষ্টান্ত বুঝতে না পারেন, তা হলে সেটা ব্যাখ্যা করুন অথবা বিকল্প কোনো দৃষ্টান্ত ব্যবহার করুন। ভালভাবে প্রস্তুতি নিন, বইটি কার্যকারীভাবে ব্যবহার করার জন্য যথাসাধ্য করুন এবং ঈশ্বরের সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করুন, যাতে আপনি “সত্যের বাক্য যথার্থরূপে ব্যবহার করিতে” পারেন।—২ তীমথিয় ২:১৫.

আপনার অমূল্য সুযোগের জন্য কৃতজ্ঞ হোন

২৪, ২৫. যিহোবা তাঁর লোকেদের কোন কোন অমূল্য সুযোগ দিয়েছেন?

২৪ যিহোবা তাঁর লোকেদের অমূল্য সুযোগ দিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে তাঁর সম্বন্ধে সত্য শিখতে সমর্থ করেছেন। আমরা কখনো সেই সুযোগকে হালকাভাবে নেব না! বস্তুতপক্ষে, ঈশ্বর গর্বিত ব্যক্তিদের কাছে তাঁর উদ্দেশ্য গুপ্ত রেখেছেন এবং সেগুলো নম্র ব্যক্তিদের কাছে প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়ে যিশু বলেছিলেন: “হে পিতঃ, হে স্বর্গের ও পৃথিবীর প্রভু, আমি তোমার ধন্যবাদ করিতেছি, কেননা তুমি বিজ্ঞ ও বুদ্ধিমানদের হইতে এই সকল বিষয় গুপ্ত রাখিয়া শিশুদের নিকটে প্রকাশ করিয়াছ।” (মথি ১১:২৫) সেই নম্র ব্যক্তিদের মধ্যে গণিত হওয়া এক বিরল সম্মান, যারা নিখিলবিশ্বের সার্বভৌম যিহোবাকে সেবা করে।

২৫ এ ছাড়া, যিহোবা আমাদেরকে তাঁর বিষয়ে অন্যদের শিক্ষা দেওয়ার বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন। মনে রাখবেন যে, সেইসমস্ত ব্যক্তিরা যিহোবাকে ভুলভাবে তুলে ধরেছে, যারা তাঁর সম্বন্ধে বিভিন্ন মিথ্যা শিক্ষা দিয়েছে। ফলে, যিহোবা সম্বন্ধে অনেক লোকের পুরোপুরি ভুল ধারণা রয়েছে, তারা এইরকম চিন্তা করে যে, তিনি উদাসীন ও কঠিনচিত্ত। আপনি কি সেই ভুল ধারণা সংশোধন করার ব্যাপারে সাহায্য করতে ইচ্ছুক, এমনকি উৎসুক? আপনি কি চান যে, সব জায়গার সৎহৃদয়ের লোকেরা ঈশ্বর সম্বন্ধে সত্য জানুক? তা হলে, যেকোনোভাবেই হোক, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্বন্ধে শাস্ত্র যা বলে, সেগুলো উদ্যোগের সঙ্গে অন্যদের কাছে প্রচার করে ও তাদের শিক্ষা দিয়ে আপনার ঈশ্বরীয় বাধ্যতা প্রদর্শন করুন। সত্য অন্বেষণকারীদের জানতে হবে যে, বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়।

আপনার উত্তর কী?

• কীভাবে আমরা জানি যে, ঈশ্বর আমাদের জন্য চিন্তা করেন?

• আমরা কেন এই পৃথিবীতে আছি?

• আমরা মারা গেলে আমাদের কী হয়?

• বাইবেল শিক্ষা দেয় বইয়ের কোন বৈশিষ্ট্যগুলো আপনি বিশেষভাবে উপলব্ধি করেন?

[২২ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

বাইবেল শিক্ষা দেয় যে, দুঃখকষ্ট শেষ হবে

[সৌজন্যে]

ওপরে ডানদিকে, মেয়ে: © Bruno Morandi/age fotostock; বামদিকে মহিলা: AP Photo/Gemunu Amarasinghe; নীচে ডানদিকে, শরণার্থী: © Sven Torfinn/Panos Pictures

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

ধার্মিকেরা চিরকাল পরমদেশে বাস করবে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার