ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w09 ১১/১৫ পৃষ্ঠা ২০-২৪
  • ভ্রাতৃপ্রেম বৃদ্ধি করে চলুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ভ্রাতৃপ্রেম বৃদ্ধি করে চলুন
  • ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “তোমরাও প্রশস্ত হও”
  • অন্যদের জন্য সময় করে নিন
  • নম্রতা আমাদেরকে শান্তি স্থাপন করতে সাহায্য করে
  • আসুন আমরা “কার্য্যে ও সত্যে” প্রেম করি
  • “পরস্পর একাগ্র ভাবে প্রেম কর”
    একমাত্র সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করুন
  • ‘ভ্রাতৃপ্রেমে স্থির থাকিতে’ দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হোন!
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • আপনি কি প্রেম দেখানোর ক্ষেত্রে প্রশস্ত হতে পারেন?
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনার ভ্রাতৃপ্রেম স্থির থাকুক!
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w09 ১১/১৫ পৃষ্ঠা ২০-২৪

ভ্রাতৃপ্রেম বৃদ্ধি করে চলুন

“প্রেমে চল, যেমন খ্রীষ্টও তোমাদিগকে প্রেম করিলেন।”—ইফি. ৫:২.

১. যিশু তাঁর অনুসারীদের কোন গুরুত্বপূর্ণ চিহ্নের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করিয়েছিলেন?

ঘরে ঘরে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করা হচ্ছে যিহোবার সাক্ষিদের শনাক্তকারী চিহ্ন। তবে, খ্রিস্ট যিশু তাঁর প্রকৃত শিষ্যদের শনাক্ত করার জন্য খ্রিস্ট ধর্মের এক ভিন্ন বৈশিষ্ট্যকে বাছাই করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “এক নূতন আজ্ঞা আমি তোমাদিগকে দিতেছি, তোমরা পরস্পর প্রেম কর; আমি যেমন তোমাদিগকে প্রেম করিয়াছি, তোমরাও তেমনি পরস্পর প্রেম কর। তোমরা যদি আপনাদের মধ্যে পরস্পর প্রেম রাখ, তবে তাহাতেই সকলে জানিবে যে, তোমরা আমার শিষ্য।”—যোহন ১৩:৩৪, ৩৫.

২, ৩. যারা আমাদের খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে যোগ দেয়, তাদের ওপর আমাদের ভ্রাতৃপ্রেম কোন প্রভাব ফেলে?

২ সত্য খ্রিস্টীয় ভ্রাতৃসমাজের মতো প্রেম, মানবসমাজে আর কোথাও দেখা যায় না। একটা চুম্বক যেমন লোহাকে আকর্ষণ করে, তেমনই প্রেম যিহোবার দাসদের ঐক্যবদ্ধ করে এবং আন্তরিক ব্যক্তিদের সত্য উপাসনার দিকে আকৃষ্ট করে। উদাহরণস্বরূপ, মারসেলিনো নামে ক্যামেরুনের একজন ব্যক্তির কথা চিন্তা করুন, যিনি তার কর্মস্থলে তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন। এই দুর্ঘটনার পর, এইরকম গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যে, প্রেতচর্চা করার কারণে তিনি অন্ধ হয়ে গিয়েছেন। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার বদলে, তার গির্জার পাস্টর ও অন্য সদস্যরা তাকে মণ্ডলী থেকে বের করে দিয়েছিল। একজন যিহোবার সাক্ষি যখন তাকে সভাতে আসতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তখন মারসেলিনো ইতস্তত করেছিলেন। তিনি আর প্রত্যাখ্যাত হতে চাননি।

৩ কিংডম হলে যা ঘটেছিল, তা দেখে মারসেলিনো খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল এবং সেখানে তিনি বাইবেলের যে-শিক্ষাগুলো সম্বন্ধে শুনেছিলেন, সেগুলো থেকে সান্ত্বনা পেয়েছিলেন। তিনি মণ্ডলীর সব সভাতে যোগ দিতে শুরু করেছিলেন, তার বাইবেল অধ্যয়নে উন্নতি করেছিলেন এবং ২০০৬ সালে বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। এখন তিনি তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের কাছে সত্য জানাচ্ছেন এবং কয়েকটা বাইবেল অধ্যয়ন করাতে শুরু করেছেন। মারসেলিনো চান যে, তার সঙ্গে যে-ব্যক্তিরা বাইবেল অধ্যয়ন করছে তারা যেন সেই একই প্রেম অনুভব করে, যা তিনি ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে অনুভব করেছেন।

৪. কেন আমাদের ‘প্রেমে চলিবার’ বিষয়ে পৌলের পরামর্শে মনোযোগ দেওয়া উচিত?

৪ এই ভ্রাতৃপ্রেম হৃদয়গ্রাহী আর তা বজায় রাখার জন্য আমাদের প্রত্যেককে নিজের অংশটুকু করতে হবে। একটু চিন্তা করুন যে, রাতের বেলা শিবিরের বাইরে জ্বালানো আগুন লোকেদেরকে এর উষ্ণ, মিট মিট করে জ্বলা শিখার দিকে আকৃষ্ট করে। যারা সেই আগুনের উষ্ণতা উপভোগ করছে, তারা যদি তাতে জ্বালানি সরবরাহ না করে, তাহলে সেটা নিভে যাবে। একইভাবে, মণ্ডলীতে প্রেমের চমৎকার বন্ধন দুর্বল হয়ে যাবে, যদি না আমরা খ্রিস্টানরা ব্যক্তিগতভাবে এটাকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করি। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? প্রেরিত পৌল উত্তর দেন: “প্রেমে চল, যেমন খ্রীষ্টও তোমাদিগকে প্রেম করিলেন এবং আমাদের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশে, সৌরভের নিমিত্ত, উপহার ও বলিরূপে আপনাকে উৎসর্গ করিলেন।” (ইফি. ৫:২) এখন আমরা যে-প্রশ্নটা বিবেচনা করতে চাই সেটা হল, কোন কোন উপায়ে আমি প্রেমে চলতে পারি?

“তোমরাও প্রশস্ত হও”

৫, ৬. কেন পৌল করিন্থীয় খ্রিস্টানদের ‘প্রশস্ত হইতে’ জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন?

৫ প্রাচীন করিন্থের খ্রিস্টানদের উদ্দেশে প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “হে করিন্থীয়েরা, তোমাদের প্রতি আমাদের মুখ খোলা রহিয়াছে, আমাদের হৃদয় প্রশস্ত রহিয়াছে। তোমরা আমাদিগেতে সঙ্কুচিত নহ; কিন্তু আপন আপন অন্তরে সঙ্কুচিত রহিয়াছ। আমি তোমাদিগকে বৎসের ন্যায় জানিয়া বলিতেছি, অনুরূপ প্রতিদানের জন্য তোমরাও প্রশস্ত হও।” (২ করি. ৬:১১-১৩) কেন পৌল করিন্থীয়দের তাদের প্রেমে প্রশস্ত হতে জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন?

৬ প্রাচীন করিন্থের মণ্ডলী কীভাবে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তা বিবেচনা করুন। পৌল সা.কা. ৫০ সালের শেষের দিকে করিন্থে এসেছিলেন। যদিও সেখানে তার প্রচার কাজের শুরুতে বিরোধিতা এসেছিল কিন্তু এই প্রেরিত হাল ছেড়ে দেননি। স্বল্প সময়ের মধ্যে, সেই শহরের অনেকে সুসমাচারে বিশ্বাস করেছিল। “দেড় বৎসর” ধরে পৌল সেই নতুন মণ্ডলীতে শিক্ষা দেওয়ার ও সেটাকে শক্তিশালী করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। স্পষ্টতই, করিন্থীয় খ্রিস্টানদের জন্য তার গভীর ভালোবাসা ছিল। (প্রেরিত ১৮:৫, ৬, ৯-১১) প্রতিদানে তাদেরও তাকে ভালোবাসার ও সম্মান করার যথেষ্ট কারণ ছিল। কিন্তু, মণ্ডলীর কেউ কেউ তার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। সম্ভবত অল্প কিছু ব্যক্তি তার স্পষ্ট পরামর্শকে পছন্দ করেনি। (১ করি. ৫:১-৫; ৬:১-১০) অন্যেরা হয়তো “প্রেরিত-চূড়ামণিদের” দেওয়া অপবাদে কান দিয়েছিল। (২ করি. ১১:৫, ৬) পৌল তার সমস্ত ভাইবোনের অকৃত্রিম ভালোবাসা পেতে চেয়েছিলেন। তাই, তিনি তাদেরকে তার ও অন্য সহবিশ্বাসীদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার দ্বারা ‘প্রশস্ত হইতে’ অনুরোধ করেছিলেন।

৭. কীভাবে আমরা ভ্রাতৃপ্রেম প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে ‘প্রশস্ত হইতে’ পারি?

৭ আমাদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? ভ্রাতৃপ্রেম প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে কীভাবে আমরা ‘প্রশস্ত হইতে’ পারি? সমবয়সি বা একই সাম্প্রদায়িক পটভূমির লোকেরা হয়তো স্বাভাবিকভাবেই একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। আর বিনোদনের ব্যাপারেও যাদের একইরকম পছন্দ রয়েছে, তারা প্রায়ই একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়ে থাকে। কিন্তু, আমাদের পছন্দের বিষয়গুলো সম্বন্ধে কিছু খ্রিস্টানের সঙ্গে কথা বলা যদি আমাদেরকে অন্যদের থেকে পৃথক করে দেয়, তাহলে আমাদের ‘প্রশস্ত হইতে’ হবে। আমাদের নিজেদেরকে এই কথা জিজ্ঞেস করা বিজ্ঞতার কাজ হবে: ‘আমার সঙ্গে তেমন ঘনিষ্ঠ নয় এমন ভাইবোনদের সঙ্গে কি আমি কদাচিৎ প্রচারে অংশ নিই বা সামাজিক মেলামেশা করি? কিংডম হলে কি আমি এই চিন্তা করে নতুন ব্যক্তিদের সঙ্গে কম মেলামেশা করি যে, প্রথমে তাদেরকে প্রমাণ দিতে হবে আদৌ তারা আমার বন্ধু হওয়ার যোগ্য কি না? আমি কি মণ্ডলীতে বয়স্ক ও অল্পবয়সি উভয়কেই সম্ভাষণ জানাই?’

৮, ৯. রোমীয় ১৫:৭ পদে লিপিবদ্ধ পৌলের পরামর্শ কীভাবে আমাদেরকে একে অপরকে এমনভাবে সম্ভাষণ জানাতে সাহায্য করতে পারে, যা আমাদের ভ্রাতৃপ্রেমকে বৃদ্ধি করে?

৮ একে অপরকে সম্ভাষণ জানানোর বিষয়ে, রোমীয়দের প্রতি পৌলের কথাগুলো আমাদেরকে সহউপাসকদের সম্বন্ধে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। (পড়ুন, রোমীয় ১৫:৭.) যে-গ্রিক শব্দকে এখানে “গ্রহণ কর” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটির অর্থ হল “সদয়ভাবে বা অতিথিপরায়ণতার সঙ্গে অভ্যর্থনা জানানো, একজন ব্যক্তিকে নিজ সমাজে বা বন্ধুত্বের মধ্যে স্বীকার করে নেওয়া।” বাইবেলের সময়ে একজন অতিথিপরায়ণ নিমন্ত্রণকর্তা যখন বন্ধুদেরকে তার বাড়িতে গ্রহণ করতেন, তখন তিনি তাদেরকে জানাতেন যে, তাদেরকে দেখে তিনি কত খুশি হয়েছেন। খ্রিস্ট রূপকভাবে আমাদেরকে সেভাবে গ্রহণ করে নিয়েছেন আর সহউপাসকদের গ্রহণ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁকে অনুকরণ করার জন্য আমাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

৯ কিংডম হলে ও অন্যান্য জায়গায় যখন আমরা আমাদের ভাইদের সম্ভাষণ জানাই, তখন আমরা সেই ব্যক্তিদের প্রতি মনোযোগ দিতে পারি, যাদের সঙ্গে আমাদের সম্প্রতি দেখা হয়নি বা যাদের সঙ্গে আমাদের সম্প্রতি কথা হয়নি। তাদের সঙ্গে কয়েক মিনিট কথাবার্তা বলুন না কেন? পরের সভাতে, অন্যদের সঙ্গেও আমরা একই বিষয় করতে পারি। এভাবে অল্পসময়ের মধ্যেই দেখা যাবে যে, সব ভাইবোনের সঙ্গে আমাদের চমৎকার কথাবার্তা হচ্ছে। একই দিনে সবার সঙ্গে কথা বলতে না পারলে উদ্‌বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। আর আমরা যদি প্রতিটা সভাতে প্রত্যেককে সম্ভাষণ জানাতে না পারি, তাহলে কারোরই তাতে বিরক্ত হওয়া উচিত নয়।

১০. মণ্ডলীর সকলের সামনে কোন অমূল্য সুযোগ খোলা রয়েছে আর কীভাবে আমরা এটার সদ্‌ব্যবহার করতে পারি?

১০ অন্যদেরকে সম্ভাষণ জানানো হচ্ছে তাদেরকে গ্রহণ করে নেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। এটা হচ্ছে এমন এক পদক্ষেপ, যা উপভোগ্য আলোচনা ও স্থায়ী বন্ধুত্বের দিকে পরিচালিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সম্মেলনে যোগদানকারী ব্যক্তিরা যখন নিজে থেকে অন্যদের সঙ্গে পরিচিত হয় বা কথা শুরু করে, তখন তারা পরস্পরের সঙ্গে পুনরায় দেখা হওয়ার অপেক্ষায় থাকে। কিংডম হল নির্মাণ স্বেচ্ছাসেবক ও সেইসঙ্গে যারা ত্রাণ বিতরণের কাজে অংশ নিচ্ছে, তারা প্রায়ই ভালো বন্ধু হয়ে ওঠে কারণ তারা একে অন্যের কাছে অভিজ্ঞতা বলার দ্বারা পরস্পরের উত্তম গুণাবলি সম্বন্ধে জানতে পারে। স্থায়ী বন্ধুত্ব গড়ে তোলার প্রচুর সুযোগ যিহোবার সংগঠনে খোলা রয়েছে। যদি আমরা ‘প্রশস্ত হই,’ তাহলে আমাদের বন্ধুমহল আরও বড়ো হবে, সেই প্রেমকে আরও বৃদ্ধি করবে, যা সত্য উপাসনায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে।

অন্যদের জন্য সময় করে নিন

১১. মার্ক ১০:১৩-১৬ পদে যেমন দেখানো হয়েছে, যিশু কোন উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন?

১১ প্রত্যেক খ্রিস্টান, যিশুর মতো এমন ব্যক্তি হয়ে ওঠার জন্য প্রচেষ্টা করতে পারে, যার সঙ্গে সহজেই কথা বলা যায়। তাঁর শিষ্যরা যখন বাবা-মাদের তাদের ছোটো ছেলে-মেয়েদেরকে যিশুর কাছে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বাধা দিয়েছিল, তখন যিশু কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন, তা বিবেচনা করুন। “শিশুদিগকে আমার নিকটে আসিতে দেও,” তিনি বলেছিলেন। “বারণ করিও না; কেননা ঈশ্বরের রাজ্য এই মত লোকদেরই।” এরপর “তিনি তাহাদিগকে কোলে করিলেন, ও তাহাদের উপরে হস্তার্পণ করিয়া আশীর্ব্বাদ করিলেন।” (মার্ক ১০:১৩-১৬) একটু কল্পনা করুন যে, মহান শিক্ষকের কাছ থেকে এইরকম প্রেমময় মনোযোগ পেয়ে সেই ছোটো ছেলে-মেয়েরা নিশ্চয়ই কত রোমাঞ্চিতই না হয়েছিল!

১২. কোন বিষয়গুলো অন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে আমাদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে?

১২ প্রত্যেক খ্রিস্টানের নিজেকে জিজ্ঞেস করা উচিত, ‘আমি কি অন্যদের জন্য সময় করে নিই, নাকি আমি এমন ভাব দেখাই যে, আমি খুবই ব্যস্ত?’ ভুল নয় এমন অভ্যাসগুলোও মাঝে মাঝে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, অন্যদের উপস্থিতিতে যদি আমরা বেশিরভাগ সময়ই মোবাইল ফোনে কথা বলি বা হেডফোনে কিছু শুনতে থাকি, তাহলে আমরা হয়তো এইরকম ইঙ্গিত দিতে পারি যে, তাদের সাহচর্য আমরা পছন্দ করছি না। অন্যেরা যদি প্রায়ই আমাদেরকে হাতে বহনীয় ছোটো কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে, তাহলে তারা হয়তো এইরকম মনে করতে পারে যে, আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী নই। অবশ্য, “নীরব থাকিবার কাল” আছে। কিন্তু, যখন আমরা লোকেদের সঙ্গে থাকি, তখন মূলত “কথা কহিবার কাল।” (উপ. ৩:৭) কেউ কেউ হয়তো বলতে পারে, “আমি একা থাকতে পছন্দ করি” বা “সকাল সকাল কারো সঙ্গে কথা বলতে আমার ভালো লাগে না।” কিন্তু, যখন আমাদের কথা বলতে ইচ্ছে করে না, এমনকী তখনও বন্ধুত্বপূর্ণ কথাবার্তা বলা প্রমাণ দেয় যে, প্রেম “স্বার্থ চেষ্টা করে না।”—১ করি. ১৩:৫.

১৩. খ্রিস্টান ভাইবোনদের সম্বন্ধে কোন দৃষ্টিভঙ্গি রাখার জন্য পৌল তীমথিয়কে উৎসাহিত করেছিলেন?

১৩ যুবক তীমথিয়কে পৌল মণ্ডলীর সকল সদস্যের প্রতি সম্মান দেখাতে উৎসাহিত করেছিলেন। (পড়ুন, ১ তীমথিয় ৫:১, ২.) আমাদেরও বয়স্ক খ্রিস্টানদের সঙ্গে মা-বাবার মতো আচরণ করা উচিত এবং অপেক্ষাকৃত অল্পবয়স্ক ব্যক্তিদের সঙ্গে আমাদের আপন ভাইবোনের মতো আচরণ করা উচিত। আমাদের যখন সেইরকম মনোভাব থাকে, তখন আমাদের কোনো প্রিয় ভাই ও বোনই আমাদের উপস্থিতিতে অপরিচিত ব্যক্তির মতো অনুভব করবে না।

১৪. অন্যদের সঙ্গে গঠনমূলক কথাবার্তা বলার কিছু উপকার কী?

১৪ যখন আমরা অন্যদেরকে গঠনমূলক আলোচনায় জড়িত করি, তখন আমরা তাদের আধ্যাত্মিকতা ও তাদের আবেগগত মঙ্গলের ব্যাপারে অবদান রাখি। শাখা অফিসে কর্মরত একজন ভাই আনন্দের সঙ্গে এইরকম কয়েক জন বয়স্ক বেথেলকর্মীর কথা স্মরণ করেন, যারা তার বেথেল জীবনের প্রথম দিকে নিয়মিতভাবে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য সময় করে নিয়েছিল। তাদের উৎসাহজনক কথাবার্তা তাকে এইরকম মনে করতে পরিচালিত করেছিল যে, তিনি সত্যিই বেথেল পরিবারের অংশ ছিলেন। এখন তিনি তার সহবেথেলকর্মীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার দ্বারা সেই বয়স্ক বেথেলকর্মীদের অনুকরণ করার চেষ্টা করেন।

নম্রতা আমাদেরকে শান্তি স্থাপন করতে সাহায্য করে

১৫. কী দেখায় যে, আমাদের মধ্যেও মতভেদ হতে পারে?

১৫ প্রাচীন ফিলিপীতে, ইবদিয়া এবং সুন্তুখী নামে দুজন খ্রিস্টান বোনের মধ্যে সংঘটিত কোনো একটা সমস্যা মিটমাট করা একটু কঠিন ছিল বলে মনে হয়। (ফিলি. ৪:২, ৩) পৌল ও বার্ণবার মধ্যে ঘটা বিতণ্ডা জানাজানি হয়ে গিয়েছিল আর তারা কিছু সময়ের জন্য পৃথক হয়ে গিয়েছিল। (প্রেরিত ১৫:৩৭-৩৯) এই বিবরণগুলো দেখায় যে, মাঝে মাঝে সত্য উপাসকদের মধ্যেও মতভেদ হতে পারে। যিহোবা আমাদেরকে দ্বন্দ্ব মিটমাট করতে ও বন্ধুত্ব পুনর্স্থাপন করতে সাহায্য জোগান। তবে, তিনি আমাদের কাছ থেকে কিছু চান।

১৬, ১৭. (ক) ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব মিটমাট করার ক্ষেত্রে নম্রতা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ? (খ) এষৌর প্রতি যাকোবের আচরণ সম্বন্ধীয় বিবরণ কীভাবে নম্রতার গুরুত্বকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে?

১৬ কল্পনা করুন যে, আপনি ও আপনার এক বন্ধু গাড়িতে করে কোথাও যাবেন। আপনাদের যাত্রা শুরু করার আগে, আপনাকে গাড়ির ইঞ্জিন চালু করার জন্য চাবি ঘোরাতে হবে। ব্যক্তিগত মতভেদ মিটমাট করার প্রক্রিয়াও একটা চাবি দিয়েই শুরু হয়। সেই চাবিটি হচ্ছে নত হওয়া বা নম্রতা। (পড়ুন, যাকোব ৪:১০.) পরের অনুচ্ছেদে দেওয়া শাস্ত্রীয় উদাহরণে যেমন দেখানো হয়েছে, সেই চাবিটি একে অন্যের সঙ্গে সমস্যা হয়েছে এমন ব্যক্তিদেরকে বাইবেলের নীতিগুলো প্রয়োগ করতে শুরু করার সুযোগ করে দেয়।

১৭ এষৌ তার যমজ ভাই যাকোবের কাছে নিজ জ্যেষ্ঠাধিকার হারিয়ে ফেলার কারণে প্রচণ্ড বিরক্ত হয়ে ছিলেন এবং তাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন আর সেই ঘটনার পর প্রায় কুড়ি বছর কেটে গিয়েছিল। এত বছর পর, সেই দুই যমজ ভাই যখন একে অন্যের সঙ্গে আবার দেখা করতে উদ্যত হয়েছিল, “তখন যাকোব অতিশয় ভীত ও উদ্বিগ্ন হইলেন।” তিনি ভেবেছিলেন যে, এইরকম ঘটার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে যে, এষৌ তাকে আক্রমণ করবেন। কিন্তু, দুই ভাই যখন মিলিত হয়েছিল, তখন যাকোব এমন কিছু করেছিলেন, যা এষৌ আশা করেননি। তার ভাইয়ের সামনে এগিয়ে গিয়ে যাকোব ‘ভূমিতে প্রণিপাত করিলেন।’ এরপর কী হয়েছিল? “এষৌ তাঁহার সঙ্গে দেখা করিতে দৌড়িয়া আসিয়া তাঁহার গলা ধরিয়া আলিঙ্গন ও চুম্বন করিলেন, এবং উভয়েই রোদন করিলেন।” একটা ঝগড়া বেঁধে যাওয়ার ঝুঁকি দূর হয়ে গিয়েছিল। যাকোবের নম্রতা, এষৌর মধ্যে যে-ঘৃণাই থাকুক না কেন, সেটাকে দূর করে দিতে সাহায্য করেছিল।—আদি. ২৭:৪১; ৩২:৩-৮; ৩৩:৩, ৪.

১৮, ১৯. (ক) যখন ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব উত্থাপিত হয়, তখন শাস্ত্রীয় পরামর্শ প্রয়োগ করার জন্য নিজে থেকে পদক্ষেপ নেওয়া কেন অপরিহার্য? (খ) অন্য ব্যক্তি যদি প্রথমে ইতিবাচক উপায়ে সাড়া না-ও দেন, তবুও কেন আমাদের হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়?

১৮ বাইবেলে দ্বন্দ্ব মিটমাট করার ব্যাপারে চমৎকার পরামর্শ রয়েছে। (মথি ৫:২৩, ২৪; ১৮:১৫-১৭; ইফি. ৪:২৬, ২৭)a কিন্তু, যদি আমরা নম্রভাবে সেই পরামর্শ প্রয়োগ না করি, তাহলে শান্তি স্থাপন করা কঠিন হবে। অন্য ব্যক্তি নম্রতা দেখাবে, এটার জন্য অপেক্ষা করে থাকা কোনো সমাধান হতে পারে না, যখন আমাদের হাতেও সেই চাবিটি রয়েছে।

১৯ কিছু কারণে শান্তি স্থাপন করার বিষয়ে আমাদের প্রাথমিক চেষ্টাগুলো যদি সফল না-ও হয়, তবুও আমাদের আশা ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। অন্য ব্যক্তির হয়তো তার অনুভূতিকে সামলে ওঠার জন্য কিছুটা সময় লাগতে পারে। যোষেফের ভাইয়েরা তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। এরপর দীর্ঘসময় কেটে গিয়েছিল আর এবার তারা তাকে মিশরের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেয়েছিল। কিন্তু, অবশেষে তাদের হৃদয় পরিবর্তিত হয়েছিল এবং তারা ক্ষমা চেয়েছিল। যোষেফ তাদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন এবং যাকোবের ছেলেরা এমন এক জাতি হয়ে উঠেছিল, যে-জাতির যিহোবার নাম বহন করার বিশেষ সুযোগ হয়েছিল। (আদি. ৫০:১৫-২১) আমাদের ভাইবোনদের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখার দ্বারা আমরা মণ্ডলীর একতা ও আনন্দের ক্ষেত্রে অবদান রাখি।—পড়ুন, কলসীয় ৩:১২-১৪.

আসুন আমরা “কার্য্যে ও সত্যে” প্রেম করি

২০, ২১. যিশু যে তাঁর প্রেরিতদের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন, সেটা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

২০ যিশু তাঁর মৃত্যুর অল্প কিছুদিন আগে, তাঁর প্রেরিতদের বলেছিলেন: “আমি তোমাদিগকে দৃষ্টান্ত দেখাইলাম, যেন তোমাদের প্রতি আমি যেমন করিয়াছি, তোমরাও তদ্রূপ কর।” (যোহন ১৩:১৫) তিনি সবেমাত্র তাঁর ১২ জন শিষ্যের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন। যিশু যা করেছিলেন, তা নিছক এক রীতি কিংবা সদয় কাজ ছিল না। পা ধুয়ে দেওয়ার বিবরণ বর্ণনা করার আগে যোহন লিখেছিলেন: “যীশু, . . . জগতে অবস্থিত আপনার নিজস্ব যে লোকদিগকে প্রেম করিতেন, তাহাদিগকে শেষ পর্য্যন্ত প্রেম করিলেন।” (যোহন ১৩:১) শিষ্যদের প্রতি তাঁর প্রেমই যিশুকে এমন এক কাজ করতে প্রেরণা দিয়েছিল, যা সাধারণত একজন দাস করে থাকে। এখন তাদেরকে নম্রভাবে একে অন্যের জন্য প্রেমপূর্ণ কাজগুলো করতে হবে। হ্যাঁ, অকৃত্রিম ভ্রাতৃপ্রেমের দ্বারা আমাদের সমস্ত খ্রিস্টান ভাইবোনের প্রতি যত্ন নিতে ও চিন্তা দেখাতে পরিচালিত হওয়া উচিত।

২১ ঈশ্বরের পুত্র যার পা ধুয়ে দিয়েছিলেন, সেই প্রেরিত পিতর যিশুর কাজের অর্থ পুরোপুরিভাবে বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: “তোমরা সত্যের আজ্ঞাবহতায় অকল্পিত ভ্রাতৃপ্রেমের নিমিত্ত আপন আপন প্রাণকে বিশুদ্ধ করিয়াছ বলিয়া অন্তঃকরণে পরস্পর একাগ্র ভাবে প্রেম কর।” (১ পিতর ১:২২) প্রেরিত যোহন, যার পা-ও প্রভু ধুয়ে দিয়েছিলেন, তিনি লিখেছিলেন: “বৎসেরা, আইস, আমরা বাক্যে কিম্বা জিহ্বাতে নয়, কিন্তু কার্য্যে ও সত্যে প্রেম করি।” (১ যোহন ৩:১৮) আমাদের হৃদয় যেন আমাদেরকে নিজেদের ভ্রাতৃপ্রেমকে কাজে দেখাতে পরিচালিত করে।

[পাদটীকা]

a ২০০৭ সালের জুলাই মাসের আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা-র ৩-৬ পৃষ্ঠা দেখুন।

আপনার কি মনে আছে?

• কোন কোন উপায়ে আমরা একে অন্যের প্রতি আমাদের প্রেমে ‘প্রশস্ত হইতে’ পারি?

• কী আমাদেরকে অন্যদের জন্য সময় করে নিতে সাহায্য করবে?

• শান্তি স্থাপন করার ক্ষেত্রে নম্রতা কোন ভূমিকা পালন করে?

• কী আমাদেরকে সহবিশ্বাসীদের প্রতি যত্ন নিতে পরিচালিত করা উচিত?

[২১ পৃষ্ঠার চিত্র]

সহবিশ্বাসীদের উষ্ণভাবে আমন্ত্রণ জানান

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

অন্যদের জন্য সময় করে নেওয়ার সুযোগগুলোকে উপেক্ষা করবেন না

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার