ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w11 ৩/১৫ পৃষ্ঠা ৮-১২
  • জগতের নয় বরং ঈশ্বরের আত্মা লাভ করুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • জগতের নয় বরং ঈশ্বরের আত্মা লাভ করুন
  • ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • জগতের আত্মা—কেন এতটা পরিব্যাপ্ত?
  • জগতের আত্মা কি আপনাকে প্রভাবিত করছে?
  • যিশুর উদাহরণ থেকে শিখুন
  • আমরা জগৎকে জয় করতে পারি
  • “জগতের আত্মাকে” প্রতিরোধ করুন
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ করছেন?
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • কেন ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হবেন?
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আত্মার বশে ও আপনার উৎসর্গীকরণের যোগ্যরূপে চলুন
    ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w11 ৩/১৫ পৃষ্ঠা ৮-১২

জগতের নয় বরং ঈশ্বরের আত্মা লাভ করুন

“আমরা জগতের আত্মাকে পাই নাই, বরং ঈশ্বর হইতে নির্গত আত্মাকে পাইয়াছি, যেন ঈশ্বর অনুগ্রহপূর্ব্বক আমাদিগকে যাহা যাহা দান করিয়াছেন, তাহা জানিতে পারি।”—১ করি. ২:১২.

১, ২. (ক) কোন অর্থে সত্য খ্রিস্টানরা যুদ্ধে রত? (খ) কোন প্রশ্নগুলো আমরা বিবেচনা করব?

সত্য খ্রিস্টানরা যুদ্ধে রত! আমাদের শত্রু শক্তিশালী, ধূর্ত এবং যুদ্ধে পারদর্শী। সে তার অস্ত্রকে এতটাই কার্যকারীভাবে ব্যবহার করতে সমর্থ যে, অধিকাংশ মানবজাতি এর দ্বারা পরাভূত হয়েছে। কিন্তু, আমরা নিজেদের শক্তিহীন অথবা আমাদের পরাজয় অনিবার্য বলে মনে করব না। (যিশা. ৪১:১০) আমাদের জন্য এমন এক প্রতিরক্ষা রয়েছে, যা অভেদ্য ও অপ্রতিরোধ্য।

২ আমাদের যুদ্ধ আক্ষরিক নয়; এটা আধ্যাত্মিক। আমাদের শত্রু হল শয়তান দিয়াবল এবং তার ব্যবহৃত একটা মূল অস্ত্র হল ‘জগতের আত্মা।’ (১ করি. ২:১২) তার আক্রমণের বিরুদ্ধে আমাদের প্রধান প্রতিরক্ষা হল ঈশ্বরের আত্মা। এই যুদ্ধে রক্ষা পাওয়ার ও আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী থাকার জন্য আমাদেরকে ঈশ্বরের আত্মা চাইতে হবে আর এরপর আমাদের জীবনে এর ফল প্রদর্শন করতে হবে। (গালা. ৫:২২, ২৩) কিন্তু, জগতের আত্মা কী আর কীভাবে এটা এতটা প্রভাববিস্তারকারী হয়ে উঠেছে? কীভাবে আমরা নির্ণয় করতে পারি যে, জগতের আত্মা আমাদের প্রভাবিত করছে কি না? আর ঈশ্বরের আত্মাকে লাভ করার ও জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ করার ব্যাপারে যিশুর কাছ থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

জগতের আত্মা—কেন এতটা পরিব্যাপ্ত?

৩. জগতের আত্মা কী?

৩ “এ জগতের অধিপতি” শয়তান হল এই জগতের আত্মার উৎস এবং এটা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার বিপরীত। (যোহন ১২:৩১; ১৪:৩০; ১ যোহন ৫:১৯) এটা হচ্ছে জগতের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রবণতা আর এটাই লোকেদের কাজ করতে পরিচালিত করে। এই প্ররোচনাদানকারী শক্তি মানবসমাজকে ঈশ্বরের ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি করতে পরিচালিত করে।

৪, ৫. শয়তান যে-আত্মাকে ছড়িয়ে দিয়েছে, তা কীভাবে এতটা পরিব্যাপ্ত হয়ে উঠেছে?

৪ শয়তান যে-আত্মাকে ছড়িয়ে দিয়েছে, তা কীভাবে এতটা পরিব্যাপ্ত হয়ে উঠেছে? প্রথমে, শয়তান এদন উদ্যানে হবাকে প্রতারিত করেছিল। সে তাকে এই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী করেছিল যে, ঈশ্বরের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়া তার জীবনকে উন্নত করবে। (আদি. ৩:১৩) সে কত বড়ো মিথ্যাবাদী বলেই না প্রমাণিত হয়েছিল! (যোহন ৮:৪৪) এরপর, সে আদমকে যিহোবার অবাধ্য হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করতে সেই নারীকে কৌশলে কাজে লাগিয়েছিল। আদমের বাছাইয়ের কারণে মানবজাতি পাপের অধীনে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল আর এভাবে উত্তরাধিকারসূত্রে শয়তানের অবাধ্যতার আত্মা দ্বারা প্ররোচিত হওয়ার প্রবণতা লাভ করেছিল।—পড়ুন, ইফিষীয় ২:১-৩.

৫ এ ছাড়া, শয়তান যথেষ্ট সংখ্যক স্বর্গদূতকে প্ররোচিত করেছিল, যারা মন্দদূত হয়ে উঠেছিল। (প্রকা. ১২:৩, ৪) ঈশ্বরের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার সেই ঘটনা নোহের দিনের জলপ্লাবনের কিছু সময় আগে ঘটেছিল। সেই স্বর্গদূতেরা এটা বিশ্বাস করেছিল যে, স্বর্গে তাদের নির্ধারিত স্থান পরিত্যাগ করা ও পৃথিবীতে তাদের বিকৃত বাসনাকে চরিতার্থ করা তাদের জন্য আরও ভালো হবে। (যিহূদা ৬) সেই মন্দদূতেরা, যারা এখন আর মাংসিক দেহে নেই, তাদের সাহায্যে শয়তান “সমস্ত নরলোকের ভ্রান্তি জন্মায়।” (প্রকা. ১২:৯) দুঃখের বিষয় যে, অধিকাংশ মানবজাতি এই মন্দদূতদের প্রভাব সম্বন্ধে অন্ধ হয়ে রয়েছে।—২ করি. ৪:৪.

জগতের আত্মা কি আপনাকে প্রভাবিত করছে?

৬. একমাত্র কখন জগতের আত্মা আমাদের প্রভাবিত করতে পারে?

৬ যদিও অনেকে শয়তানের প্রভাব সম্বন্ধে অন্ধ হয়ে রয়েছে কিন্তু সত্য খ্রিস্টানরা তার কলাকৌশল সম্বন্ধে অজ্ঞাত নয়। (২ করি. ২:১১) আসলে, জগতের আত্মা আমাদেরকে প্রভাবিত করতে পারে না, যদি না আমরা এটাকে সুযোগ দিই। আসুন আমরা চারটে প্রশ্ন মনোযোগ সহকারে বিবেচনা করি, যেগুলো আমাদের জানতে সাহায্য করবে যে, আমরা ঈশ্বরের আত্মা, নাকি জগতের আত্মা দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছি।

৭. কোন একটা উপায়ে শয়তান যিহোবার কাছ থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে চায়?

৭ আমার আমোদপ্রমোদ বাছাই আমার সম্বন্ধে কী প্রকাশ করে? (পড়ুন, যাকোব ৩:১৪-১৮.) শয়তান আমাদের হৃদয়ে দৌরাত্ম্যের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলার মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছ থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে চায়। দিয়াবল জানে যে, দৌরাত্ম্য ভালোবাসে এমন যেকোনো ব্যক্তিকে যিহোবা ঘৃণা করেন। (গীত. ১১:৫) তাই, শয়তান আমাদের মাংসিক আকাঙ্ক্ষাকে জাগিয়ে তোলার জন্য সাহিত্যাদি, চলচ্চিত্র, গানবাজনা এবং ইলেকট্রনিক গেইমস্‌—যেগুলোর মধ্যে কয়েকটা খেলোয়াড়দের মধ্যে জঘন্য অনৈতিকতা ও নিষ্ঠুরতার ভাব জাগিয়ে তোলে—ব্যবহার করার চেষ্টা করে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা যা সঠিক, সেগুলোকে ভালোবাসার সঙ্গে সঙ্গে শয়তান যে-ভুল বিষয়গুলোকে তুলে ধরে, সেগুলোকেও ভালোবাসি, ততক্ষণ পর্যন্ত সে খুশি থাকে।—গীত. ৯৭:১০.

৮, ৯. আমোদপ্রমোদ সম্বন্ধে নিজেদের কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করা উচিত?

৮ অন্যদিকে, ঈশ্বরের আত্মা সেই ব্যক্তিদের পরিচালিত করে, যারা শুচি, শান্তিপ্রিয় ও দয়াতে পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য তা লাভ করে। আমাদের নিজেদের জিজ্ঞেস করা উচিত, ‘আমি যে-আমোদপ্রমোদ বাছাই করি, সেগুলো কি আমার মধ্যে ইতিবাচক গুণাবলি গড়ে তোলে?’ যে-জ্ঞান বা প্রজ্ঞা ওপর থেকে আসে, তা “নিষ্কপট।” তাই, যারা ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে, তারা প্রতিবেশীদের কাছে শুচিতা ও শান্তি সম্বন্ধে প্রচার করার পর, নিজেদের ঘরে একান্তে দৌরাত্ম্যপূর্ণ এবং বিকৃত অনৈতিক বিষয়গুলো দেখে আনন্দ লাভ করে না।

৯ যিহোবা একাগ্র ভক্তি আশা করেন। কিন্তু, শয়তান শুধু একবার উপাসনা পেলেই খুশি থাকে, যেমনটা সে যিশুর কাছ থেকে চেয়েছিল। (লূক ৪:৭, ৮) আমরা হয়তো নিজেদের জিজ্ঞেস করতে পারি: ‘আমি যে-আমোদপ্রমোদ বাছাই করি, তার ফলে আমার পক্ষে কি ঈশ্বরকে একাগ্র ভক্তি দেওয়া সম্ভবপর হয়? আমার বাছাই কি আমার জন্য জগতের আত্মা প্রতিরোধ করাকে কঠিন, নাকি সহজ করে তোলে? ভবিষ্যতে আমোদপ্রমোদ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমার কি কোনো পরিবর্তন করা উচিত?’

১০, ১১. (ক) জগতের আত্মা বস্তুগত ধনসম্পদের বিষয়ে কোন মনোভাব জাগিয়ে তোলে? (খ) ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা অনুপ্রাণিত বাক্য কোন মনোভাবকে উৎসাহিত করে?

১০ বস্তুগত ধনসম্পদের প্রতি আমার মনোভাব কেমন? (পড়ুন, লূক ১৮:২৪-৩০.) জগতের আত্মা লোভ ও বস্তুবাদিতাকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে “চক্ষুর অভিলাষ” বৃদ্ধি করে। (১ যোহন ২:১৬) এটা অনেকের মধ্যে ধনী হওয়ার সংকল্পকে জাগিয়ে তুলেছে। (১ তীম. ৬:৯, ১০) সেই আত্মা আমাদের এটা বিশ্বাস করাতে চায় যে, প্রচুর বস্তুগত বিষয়ের ভাণ্ডার গড়ে তোলা স্থায়ী নিরাপত্তা নিয়ে আসবে। (হিতো. ১৮:১১) কিন্তু, আমরা যদি টাকাপয়সার প্রতি ভালোবাসাকে, ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভালোবাসার স্থানকে দখল করার সুযোগ দিই, তাহলে শয়তান জয়ী হয়ে যাবে। আমাদের নিজেদের জিজ্ঞেস করা উচিত, ‘আমার জীবন কি বস্তুগত আরামআয়েশ ও আনন্দফূর্তি খোঁজার ওপর কেন্দ্রীভূত?’

১১ এর বিপরীতে, ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা অনুপ্রাণিত বাক্য আমাদেরকে টাকাপয়সার প্রতি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে এবং নিজেদের ও আমাদের পরিবারের বস্তুগত প্রয়োজনগুলো মেটানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে উৎসাহিত করে। (১ তীম. ৫:৮) ঈশ্বরের আত্মা সেই ব্যক্তিদের সাহায্য করে, যারা যিহোবার উদার ব্যক্তিত্বকে প্রতিফলিত করার জন্য এটা লাভ করে। এই ব্যক্তিরা গ্রহীতা হিসেবে নয় বরং দাতা হিসেবে পরিচিত। তারা বস্তুর চেয়ে লোকেদের উচ্চমূল্য দিয়ে থাকে এবং তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের কাছে যা আছে, সেগুলো আনন্দের সঙ্গে ভাগ করে নেয়। (হিতো. ৩:২৭, ২৮) আর তারা কখনো ঈশ্বরের সেবার চেয়ে টাকাপয়সার পিছনে ছোটাকে অগ্রাধিকারের বিষয় হওয়ার সুযোগ দেয় না।

১২, ১৩. জগতের আত্মার বিপরীতে ঈশ্বরের আত্মা কীভাবে আমাদের মঙ্গলের জন্য আমাদেরকে প্রভাবিত করতে পারে?

১২ আমার ব্যক্তিত্ব কোন ধরনের আত্মাকে প্রতিফলিত করে? (পড়ুন, কলসীয় ৩:৮-১০, ১৩.) জগতের আত্মা মাংসের কার্য সকল বৃদ্ধি করে। (গালা. ৫:১৯-২১) কোন ধরনের আত্মা আমাদের প্রভাবিত করে, সেটার আসল পরীক্ষা পরিস্থিতি যখন অনুকূলে থাকে, তখন নয় বরং সেই সময়ে আসে, যখন পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে না, যেমন, কোনো খ্রিস্টান ভাই বা বোন যদি আমাদের উপেক্ষা করেন, অসন্তুষ্ট করেন অথবা এমনকী আমাদের বিরুদ্ধে পাপ করেন। এ ছাড়া, আমাদের ঘরে একান্তে এটা হয়তো প্রকাশ পেতে পারে যে, কোন ধরনের আত্মা আমাদের প্রভাবিত করছে। কিছুটা আত্মপরীক্ষা করা উচিত। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘গত ছয় মাসে, আমার ব্যক্তিত্ব কি আগের চেয়ে আরও বেশি খ্রিস্টতুল্য হয়ে উঠেছে, নাকি আমি কথাবার্তা ও আচরণের ক্ষেত্রে আমার মন্দ অভ্যাসে ফিরে গিয়েছি?’

১৩ ঈশ্বরের আত্মা আমাদের “পুরাতন মনুষ্যকে” বা ব্যক্তিত্বকে “তাহার ক্রিয়াশুদ্ধ বস্ত্রবৎ ত্যাগ” করার এবং “নূতন মনুষ্যকে” বা ব্যক্তিত্বকে পরিধান করার জন্য সাহায্য করতে পারে। এই নতুন ব্যক্তিত্ব আমাদেরকে আরও প্রেমময় ও দয়ালু হতে সাহায্য করবে। আমরা স্বেচ্ছায় একে অন্যকে ক্ষমা করতে চাইব, এমনকী যদি আমাদের দোষ দেওয়ার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে বলেও মনে হয়। আমরা যদি মনে করি যে, আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে, তবুও আমরা আর “কটুকাটব্য, রোষ, ক্রোধ, কলহ, নিন্দা” সহকারে প্রতিক্রিয়া দেখাব না। এর পরিবর্তে, আমরা “করুণচিত্ত” হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা করব।—ইফি. ৪:৩১, ৩২.

১৪. জগতের অনেকে ঈশ্বরের বাক্যকে কীভাবে দেখে থাকে?

১৪ আমি কি বাইবেলের নৈতিক মানগুলোকে সম্মান করি ও ভালোবাসি? (পড়ুন, হিতোপদেশ ৩:৫, ৬.) জগতের আত্মা ঈশ্বরের আত্মার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ প্রকাশ করে। এই আত্মা দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তি বাইবেলের যে-অংশগুলো পালন করা অসুবিধাজনক বলে মনে করে, সেই অংশগুলো উপেক্ষা করে এবং এর পরিবর্তে মানবপ্রথা ও দর্শনবিদ্যার আশ্রয় নেয়। (২ তীম. ৪:৩, ৪) কেউ কেউ ঈশ্বরের পুরো বাক্যকেই উপেক্ষা করে। এই ব্যক্তিরা বাইবেলের প্রাসঙ্গিকতা ও নির্ভরযোগ্যতা সম্বন্ধে প্রশ্ন তোলে, নিজেদের চোখে জ্ঞানী হয়ে ওঠে। তারা পারদারিকতা, সমকামিতা ও বিবাহবিচ্ছেদ সম্বন্ধে বাইবেলের শুদ্ধ মানদণ্ডকে হালকা করে ফেলে। তারা “মন্দকে ভাল, আর ভালকে মন্দ বলে” শিক্ষা দেয়। (যিশা. ৫:২০) আমরা কি এই আত্মা দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছি? সমস্যার মুখোমুখি হলে আমরা কি নিজস্ব ধারণাসহ মানবপ্রজ্ঞার ওপর নির্ভর করি? নাকি আমরা বাইবেলের উপদেশ পালন করার আপ্রাণ চেষ্টা করি?

১৫. নিজেদের প্রজ্ঞার ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে আমাদের কী করা উচিত?

১৫ ঈশ্বরের আত্মা আমাদের মধ্যে বাইবেলের প্রতি সম্মান গড়ে তোলে। গীতরচকের মতো, আমরাও ঈশ্বরের বাক্যকে আমাদের চরণের প্রদীপ ও পথের আলোক বলে মনে করি। (গীত. ১১৯:১০৫) আমরা সঠিক ও ভুল নির্ণয় করার জন্য নিজেদের প্রজ্ঞার ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে ঈশ্বরের লিখিত বাক্যের ওপর আস্থা সহকারে নির্ভর করি। আমরা শুধু বাইবেলকে সম্মান করতেই শিখি না কিন্তু সেইসঙ্গে ঈশ্বরের ব্যবস্থাকে ভালোবাসতেও শিখি।—গীত. ১১৯:৯৭.

যিশুর উদাহরণ থেকে শিখুন

১৬. “খ্রীষ্টের মন” লাভ করার সঙ্গে কী জড়িত?

১৬ ঈশ্বরের আত্মা লাভ করার জন্য আমাদের “খ্রীষ্টের মন” গড়ে তুলতেই হবে। (১ করি. ২:১৬) “খ্রীষ্ট যীশুর অনুরূপে . . . একমনা” হওয়ার জন্য, তিনি যেভাবে চিন্তা ও কাজ করেছেন, তা জানতে আর এরপর তাঁকে অনুকরণ করতে হবে। (রোমীয় ১৫:৫; ১ পিতর ২:২১) তা করার কিছু উপায় বিবেচনা করুন।

১৭, ১৮. (ক) প্রার্থনা সম্বন্ধে যিশুর কাছ থেকে আমরা কী শিখতে পারি? (খ) কেন আমাদের ‘যাচ্ঞা করা’ বা করে চলা উচিত?

১৭ ঈশ্বরের আত্মা চেয়ে প্রার্থনা করুন। পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়ার আগে, যিশু তাঁকে সাহায্য করার জন্য ঈশ্বরের আত্মা চেয়ে প্রার্থনা করেছিলেন। (লূক ২২:৪০, ৪১) আমাদেরও ঈশ্বরের কাছে তাঁর আত্মা চেয়ে প্রার্থনা করতে হবে। যারা বিশ্বাস সহকারে তা চায়, তাদের সকলকে যিহোবা অকাতরে ও উদারভাবে তাঁর আত্মা দেন। (লূক ১১:১৩) যিশু বলেছিলেন: “যাচ্ঞা কর, তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে; অন্বেষণ কর, পাইবে; দ্বারে আঘাত কর, তোমাদের জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। কেননা যে কেহ যাচ্ঞা করে, সে গ্রহণ করে; এবং যে অন্বেষণ করে, সে পায়; আর যে আঘাত করে, তাহার জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে।”—মথি ৭:৭, ৮.

১৮ যিহোবার আত্মা ও সাহায্য চাওয়ার সময়, খুব তাড়াতাড়িই যাচ্ঞা করা বন্ধ করে দেবেন না। আমাদের হয়তো প্রায়ই প্রার্থনা করতে হবে এবং প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাকতে হবে। কখনো কখনো, যিহোবা তাঁর কাছে অনুরোধকারীদের সুযোগ দেন, যাতে তিনি তাদের প্রার্থনার উত্তর দেওয়ার আগে তারা তাদের গভীর চিন্তা ও অকপট বিশ্বাস প্রদর্শন করতে পারে।a

১৯. যিশু সবসময় কী করতেন এবং আমাদের কেন তাঁকে অনুকরণ করা উচিত?

১৯ যিহোবার প্রতি সম্পূর্ণ বাধ্যতা দেখান। যিশু সবসময় এমন বিষয়গুলো করতেন, যেগুলো তাঁর পিতাকে খুশি করে। তবে অন্ততপক্ষে এক বার, একটা পরিস্থিতির সঙ্গে যেভাবে মোকাবিলা করা যায় সেই বিষয়ে যিশুর চিন্তাভাবনা, তাঁর পিতা যেভাবে চেয়েছিলেন, সেটার চেয়ে ভিন্ন ছিল। তা সত্ত্বেও, তিনি আস্থা সহকারে তাঁর পিতাকে বলেছিলেন: “আমার ইচ্ছা নয়, তোমারই ইচ্ছা সিদ্ধ হউক।” (লূক ২২:৪২) নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘আমি কি সেই সময়েও ঈশ্বরের বাধ্য থাকি, এমনকী যখন তা থাকা সহজ নয়?’ ঈশ্বরের প্রতি বাধ্যতা জীবনের জন্য অপরিহার্য। আমাদের নির্মাতা অর্থাৎ জীবনের উৎস ও রক্ষাকর্তা হিসেবে তাঁর প্রতি আমাদের অবশ্যই সম্পূর্ণ বাধ্যতা দেখাতে হবে। (গীত. ৯৫:৬, ৭) বাধ্যতার কোনো বিকল্প নেই। বাধ্যতা ছাড়া আমরা যিহোবার অনুগ্রহ লাভ করতে পারি না।

২০. যিশুর জীবন কোন বিষয়টার ওপর কেন্দ্রীভূত ছিল এবং কীভাবে আমরা তাঁকে অনুকরণ করতে পারি?

২০ বাইবেলকে ভালোভাবে জানুন। শয়তান যখন তাঁর বিশ্বাসের ওপর সরাসরি আক্রমণ করেছিল, তখন তা প্রতিরোধ করার সময় যিশু শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃতি করেছিলেন। (লূক ৪:১-১৩) ধর্মীয় বিরোধীদের মুখোমুখি হওয়ার সময় যিশু ঈশ্বরের বাক্যকে তাঁর নির্দেশক হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। (মথি ১৫:৩-৬) যিশুর পুরো জীবন ঈশ্বরের ব্যবস্থা জানা ও তা পালন করার ওপর কেন্দ্রীভূত ছিল। (মথি ৫:১৭) আমরাও ঈশ্বরের সেই বাক্যের দ্বারা আমাদের মনকে পুষ্ট করতে চাই, যা বিশ্বাসকে শক্তিশালী করে। (ফিলি. ৪:৮, ৯) আমাদের কারো কারো পক্ষে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অধ্যয়নের জন্য সময় করে নেওয়া এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। কিন্তু, আমাদের হয়তো সময় খোঁজার চেয়ে বরং সময় তৈরি করে নিতে হবে।—ইফি. ৫:১৫-১৭.

২১. ঈশ্বরের বাক্যকে আরও ভালোভাবে জানার ও তা কাজে লাগানোর জন্য আমরা কোন ব্যবস্থাকে ব্যবহার করতে পারি?

২১ “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস” প্রতি সপ্তাহে পারিবারিক উপাসনার সন্ধ্যার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অধ্যয়ন করার জন্য সময় করে নিতে আমাদের সাহায্য করেছেন। (মথি ২৪:৪৫) আপনি কি এই ব্যবস্থাকে বিজ্ঞতার সঙ্গে কাজে লাগাচ্ছেন? আপনি যাতে খ্রিস্টের মন লাভ করতে পারেন, সেইজন্য আপনি কি অধ্যয়নের উদ্দেশ্যে আপনার বাছাইকৃত বিষয়গুলো সম্বন্ধে যিশু যা শিক্ষা দিয়েছেন, সেগুলো নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনার জন্য আপনার অধ্যয়নে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন? আপনি যে-বিষয়টা জানতে চান, সেই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য খুঁজে বের করার জন্য ওয়াচ টাওয়ার পাবলিকেশনস্‌ ইনডেক্স ব্যবহার করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এই পত্রিকার জনসাধারণের সংস্করণ “যিশুর কাছ থেকে আমরা যা শিখি” এই শিরোনামের ওপর বেশ কিছু প্রবন্ধ তুলে ধরেছে। আপনি হয়তো অধ্যয়নের ভিত্তি হিসেবে এই প্রবন্ধগুলো ব্যবহার করতে চাইবেন। এ ছাড়া, একই পত্রিকায় “পারিবারিক সুখের চাবিকাঠি,” “ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন” ও “আপনি কি জানতেন?” শিরোনামের বিভিন্ন প্রবন্ধ রয়েছে। মাঝে মাঝে আপনাদের পারিবারিক উপাসনা কার্যক্রমে এই বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করুন না কেন?

আমরা জগৎকে জয় করতে পারি

২২, ২৩. জগৎকে জয় করার জন্য আমাদের কী করতে হবে?

২২ ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হওয়ার জন্য, আমাদের জগতের আত্মাকে প্রতিরোধ করতেই হবে। প্রতিরোধ করার এই ধরনের ক্ষমতা এমনি এমনিই আসে না। এর জন্য প্রাণপণ করার প্রয়োজন হতে পারে। (যিহূদা ৩) কিন্তু, আমরা জয়ী হতে পারি! যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন: “জগতে তোমরা ক্লেশ পাইতেছ; কিন্তু সাহস কর, আমিই জগৎকে জয় করিয়াছি।”—যোহন ১৬:৩৩.

২৩ আমরাও জগৎকে জয় করতে পারি, যদি আমরা এর আত্মাকে প্রতিরোধ করি এবং ঈশ্বরের আত্মা লাভ করার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করি। সত্যিই, “ঈশ্বর যখন আমাদের সপক্ষ, তখন আমাদের বিপক্ষ কে?” (রোমীয় ৮:৩১) ঈশ্বরের আত্মা লাভ করার এবং এর নির্দেশনা অনুসরণ করার মাধ্যমে আমরা পরিতৃপ্তি, শান্তি, সুখ ও শীঘ্র আসন্ন নতুন জগতে অনন্তজীবনের নিশ্চয়তা লাভ করব, যেমনটা বাইবেলে বলা হয়েছে।

[পাদটীকা]

a আরও তথ্যের জন্য বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ১৭০-১৭৩ পৃষ্ঠা দেখুন।

আপনার কি মনে আছে?

• কেন জগতের আত্মা এতটা পরিব্যাপ্ত?

• নিজেদের কোন চারটে প্রশ্ন আমাদের জিজ্ঞেস করা উচিত?

• ঈশ্বরের আত্মা লাভ করার বিষয়ে যিশুর কাছ থেকে আমরা কোন তিনটে বিষয় শিখতে পারি?

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

কীভাবে কিছু স্বর্গদূত মন্দদূত হয়ে উঠেছিল?

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

যদিও শয়তান লোকেদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জগতের আত্মাকে ব্যবহার করে কিন্তু আমরা এর প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারি

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার