ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w11 ৪/১৫ পৃষ্ঠা ২৩-২৭
  • আপনি কি নিজেকে ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা পরিচালিত হতে দিচ্ছেন?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আপনি কি নিজেকে ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা পরিচালিত হতে দিচ্ছেন?
  • ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • মৃদুতা এবং দীর্ঘসহিষ্ণুতা মণ্ডলীতে শান্তি বৃদ্ধি করে
  • দয়া এবং মঙ্গলভাবের দ্বারা আপনার পরিবারকে সতেজ রাখুন
  • একান্তে থাকার সময় বিশ্বাস দেখিয়ে চলুন
  • ইন্দ্রিয়দমন অনুশীলন করার মাধ্যমে আপনার হৃদয়কে রক্ষা করুন
  • আপনি কি ‘আত্মার বশে চলিবেন’?
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২০
  • কেন ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হবেন?
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আত্মার বশে ও আপনার উৎসর্গীকরণের যোগ্যরূপে চলুন
    ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w11 ৪/১৫ পৃষ্ঠা ২৩-২৭

আপনি কি নিজেকে ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা পরিচালিত হতে দিচ্ছেন?

“তোমার আত্মা মঙ্গলময়, আমাকে সরল ভূমি দিয়া চালাও।”—গীত. ১৪৩:১০.

১, ২. (ক) এমন কিছু সময়ের কথা উল্লেখ করুন, যখন যিহোবা তাঁর দাসদের জন্য পবিত্র আত্মা ব্যবহার করেছিলেন? (খ) পবিত্র আত্মা কি শুধু বিশেষ বিশেষ সময়ে কাজ করে? ব্যাখ্যা করুন।

আপনি যখন পবিত্র আত্মার কাজ সম্বন্ধে চিন্তা করেন, তখন আপনার মনে কোন বিষয়টা আসে? আপনার কি গিদিয়োনের এবং শিম্‌শোনের পরাক্রমী কাজের কথা মনে আসে? (বিচার. ৬:৩৩, ৩৪; ১৫:১৪, ১৫) আপনার হয়তো প্রাথমিক খ্রিস্টানদের সাহসের কথা অথবা সভার সামনে স্তিফান যে-শান্তভাব দেখিয়েছিলেন, সেটার কথা মনে আসে। (প্রেরিত ৪:৩১; ৬:১৫) আধুনিক দিনে, আমাদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোতে লক্ষণীয় প্রচুর আনন্দ, নিরপেক্ষতার কারণে জেলে গিয়েছিল আমাদের এমন ভাইবোনদের আনুগত্য এবং প্রচার কাজে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি সম্বন্ধেই বা কী বলা যায়? এই সমস্ত উদাহরণ পবিত্র আত্মার কাজের প্রমাণ দেয়।

২ পবিত্র আত্মা কি কেবলমাত্র বিশেষ বিশেষ সময়ে অথবা ব্যতিক্রম পরিস্থিতিতেই কাজ করে? না। ঈশ্বরের বাক্য খ্রিস্টানদেরকে ‘আত্মার বশে চলিবার,’ ‘আত্মা দ্বারা চালিত হইবার’ এবং ‘আত্মার বশে জীবন ধারণ করিবার’ বিষয়ে বলে। (গালা. ৫:১৬, ১৮, ২৫) এই অভিব্যক্তিগুলো দেখায় যে, পবিত্র আত্মা আমাদের জীবনের ওপর ক্রমাগতভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। আমাদের চিন্তাভাবনা, কথাবার্তা এবং কাজ যাতে যিহোবার আত্মা দ্বারা পরিচালিত হয়, সেইজন্য আমাদের প্রতিদিন তাঁর কাছে মিনতি করা উচিত। (পড়ুন, গীতসংহিতা ১৪৩:১০.) আমরা যদি সেই আত্মাকে আমাদের জীবনে স্বচ্ছন্দে কাজ করতে দিই, তাহলে তা আমাদের মধ্যে এমন ফল উৎপন্ন করবে, যা অন্যদের জন্য সতেজতাদায়ক হবে ও সেইসঙ্গে ঈশ্বরের প্রশংসা নিয়ে আসবে।

৩. (ক) কেন আমাদের পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হতে হবে? (খ) আমরা কোন প্রশ্নগুলো বিবেচনা করব?

৩ কেন আমাদের জন্য আত্মার দ্বারা পরিচালিত হওয়া অতীব গুরুত্বপূর্ণ? কারণ আরেক ধরনের শক্তি আমাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে আর তা এমন এক শক্তি, যা পবিত্র আত্মার কাজের বিরোধিতা করে। শাস্ত্র সেই শক্তিকে “মাংস” বলে অভিহিত করে, যা আমাদের পাপপূর্ণ মাংসের—আদমের বংশধর হিসেবে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত অসিদ্ধতার—পাপপূর্ণ প্রবণতাকে নির্দেশ করে। (পড়ুন, গালাতীয় ৫:১৭.) তাহলে, নিজেদেরকে ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হতে দেওয়ার সঙ্গে কী জড়িত? এমন ব্যবহারিক পদক্ষেপ কি রয়েছে, যা আমরা আমাদের পাপপূর্ণ মাংসিক প্রবণতার জোরালো প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নিতে পারি? আসুন আমরা ‘আত্মার ফলের’ বাকি ছয়টা দিক অর্থাৎ “দীর্ঘসহিষ্ণুতা, মাধুর্য্য [‘দয়া,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন], মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা, ইন্দ্রিয়দমন” নিয়ে আলোচনা করার সময় এই প্রশ্নগুলো বিবেচনা করি।—গালা. ৫:২২, ২৩.

মৃদুতা এবং দীর্ঘসহিষ্ণুতা মণ্ডলীতে শান্তি বৃদ্ধি করে

৪. কীভাবে মৃদুতা এবং দীর্ঘসহিষ্ণুতা মণ্ডলীর শান্তিতে অবদান রাখে?

৪ কলসীয় ৩:১২, ১৩ পদ পড়ুন। মণ্ডলীর শান্তি বৃদ্ধিতে মৃদুতা এবং দীর্ঘসহিষ্ণুতা একসঙ্গে কাজ করে। আত্মার ফলের এই দুটো দিকই আমাদেরকে অন্যদের সঙ্গে সদয় আচরণ করতে, উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে শান্ত থাকতে এবং অন্যেরা যখন নির্দয় কথাবার্তা বলে অথবা কাজ করে, তখন প্রতিশোধ নেওয়া এড়াতে সাহায্য করে। আমাদের যদি কোনো সহবিশ্বাসীর সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়, তাহলে দীর্ঘসহিষ্ণুতা বা ধৈর্য আমাদেরকে সেই ভাই বা বোনের ব্যাপারে হাল ছেড়ে না দিয়ে বরং সমস্যা মিটমাট করার জন্য যথাসাধ্য করতে সাহায্য করে। মণ্ডলীতে কি সত্যিই মৃদুতা ও দীর্ঘসহিষ্ণুতা প্রয়োজন? হ্যাঁ, কারণ আমরা সকলে অসিদ্ধ।

৫. পৌল এবং বার্ণবার মধ্যে কী হয়েছিল আর এটা কোন বিষয়ের ওপর জোর দেয়?

৫ পৌল এবং বার্ণবার মধ্যে কী ঘটেছিল, তা বিবেচনা করুন। তারা সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করেছিল। প্রত্যেকেরই প্রশংসনীয় গুণাবলি ছিল। তা সত্ত্বেও, এক বার তাদের মধ্যে ‘এমন বিতণ্ডা হইয়াছিল যে, তাঁহারা পরস্পর পৃথক্‌ হইয়াছিলেন।’ (প্রেরিত ১৫:৩৬-৩৯) এই ঘটনাটা এই বিষয়ের ওপর জোর দেয় যে, কখনো কখনো এমনকী ঈশ্বরের একনিষ্ঠ দাসদের মধ্যেও মতবিরোধ দেখা দিতে পারে। একজন খ্রিস্টানের যদি কোনো সহবিশ্বাসীর সঙ্গে ভুলবোঝাবুঝি হয়ে থাকে, তাহলে সেই পরিস্থিতিকে চরম বাদানুবাদের দিকে নিয়ে যাওয়ার আগে তিনি কী করতে পারেন, যে-বাদানুবাদ পরস্পরের সম্পর্কের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী ফাটল ধরাতে পারে?

৬, ৭. (ক) একজন সহবিশ্বাসীর সঙ্গে কোনো আলোচনা চরমে চলে যাওয়ার আগেই আমরা কোন শাস্ত্রীয় পরামর্শ কাজে লাগাতে পারি? (খ) “শ্রবণে সত্বর, কথনে ধীর, ক্রোধে ধীর” হওয়ার কিছু উপকার কী?

৬ ‘এমন বিতণ্ডা হইয়াছিল যে,’ এই বাক্যাংশের দ্বারা বোঝা যায়, পৌল এবং বার্ণবার মধ্যে মতবিরোধ হঠাৎ করে হয়েছিল এবং সেটা তীব্র ছিল। একজন খ্রিস্টান যদি বুঝতে পারেন যে, একজন সহবিশ্বাসীর সঙ্গে কোনো বিষয়ে কথাবার্তা বলার সময় তিনি রেগে যাচ্ছেন, তাহলে তিনি যাকোব ১:১৯, ২০ পদের এই কথাগুলোতে মনোযোগ দিলে বিজ্ঞতার কাজ করবেন: “তোমাদের প্রত্যেক জন শ্রবণে সত্বর, কথনে ধীর, ক্রোধে ধীর হউক, কারণ মনুষ্যের ক্রোধ ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতার অনুষ্ঠান করে না।” পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তিনি হয়তো বিষয়বস্তু পরিবর্তন করার চেষ্টা করতে, আলোচনা স্থগিত রাখতে অথবা আলোচনা চরমে চলে যাওয়ার আগে সেখান থেকে চলে যেতে পারেন।—হিতো. ১২:১৬; ১৭:১৪; ২৯:১১.

৭ এই পরামর্শ মেনে চলার কিছু উপকার কী? শান্ত হওয়ার জন্য সময় নেওয়ার, বিষয়টা নিয়ে প্রার্থনা করার এবং কীভাবে সর্বোত্তম উপায়ে উত্তর দেওয়া যায়, তা বিবেচনা করার মাধ্যমে একজন খ্রিস্টান নিজেকে ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হতে দেন। (হিতো. ১৫:১, ২৮) আত্মার প্রভাবাধীনে তিনি মৃদুতা ও দীর্ঘসহিষ্ণুতা দেখাতে পারেন। এভাবে তিনি ইফিষীয় ৪:২৬, ২৯ পদে প্রাপ্ত এই পরামর্শের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার জন্য সজ্জিত হবেন: “ক্রুদ্ধ হইলে পাপ করিও না . . . তোমাদের মুখ হইতে কোন প্রকার কদালাপ বাহির না হউক, কিন্তু প্রয়োজনমতে গাঁথিয়া তুলিবার জন্য সদালাপ বাহির হউক, যেন যাহারা শুনে, তাহাদিগকে অনুগ্রহ করা হয়।” বস্তুতপক্ষে, আমরা যখন মৃদুতা ও দীর্ঘসহিষ্ণুতা পরিধান করি, তখন আমরা মণ্ডলীর শান্তি ও একতায় অবদান রাখি।

দয়া এবং মঙ্গলভাবের দ্বারা আপনার পরিবারকে সতেজ রাখুন

৮, ৯. দয়া এবং মঙ্গলভাব কী আর বাড়ির পরিবেশের ওপর এগুলোর কোন প্রভাব রয়েছে?

৮ ইফিষীয় ৪:৩১, ৩২; ৫:৮, ৯ পদ পড়ুন। প্রচণ্ড গরমের এক দিনে মৃদুমন্দ বাতাস এবং ঠাণ্ডা পানীয়ের মতো, দয়া ও মঙ্গলভাবও সতেজতাদায়ক। এগুলো পারিবারিক বৃত্তের মধ্যে এক মনোরম পরিবেশ সৃষ্টিতে অবদান রাখে। দয়া হল এমন এক আবেদনময় গুণ, যা অন্যদের প্রতি আন্তরিক আগ্রহ থেকে উদ্ভূত হয়, যে-আগ্রহ উপকারজনক কাজ ও বিবেচনাপূর্ণ কথাবার্তার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। দয়ার মতো, মঙ্গলভাবও এক ইতিবাচক গুণ আর এই গুণ সেই কাজগুলোতে প্রকাশ পায়, যেগুলো অন্যদের জন্য উপকার নিয়ে আসে। এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে উদারতার মনোভাব। (প্রেরিত ৯:৩৬, ৩৯; ১৬:১৪, ১৫) কিন্তু, মঙ্গলভাবের সঙ্গে আরও বেশি কিছু জড়িত।

৯ মঙ্গলভাব হল নৈতিক উৎকর্ষতা। এর সঙ্গে কেবল আমরা যে-কাজ করি, সেটাই নয় কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অর্থাৎ আমরা কেমন ব্যক্তি, সেটাও জড়িত। এটা এমন একটা ফলের মতো, যেটার সমস্ত অংশই মিষ্টি এবং যেটার ভিতরে বা বাইরে কোনো ত্রুটি নেই। একইভাবে, পবিত্র আত্মার মাধ্যমে উৎপন্ন মঙ্গলভাব একজন খ্রিস্টানের জীবনের সমস্ত দিককে প্রভাবিত করে।

১০. পরিবারের সদস্যরা যেন আত্মার ফল উৎপন্ন করার ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা করতে পারে, সেইজন্য কী করা যেতে পারে?

১০ কোন বিষয়টা এক খ্রিস্টান পরিবারের সদস্যদেরকে একে অন্যের সঙ্গে দয়া ও মঙ্গলভাব সহকারে আচরণ করার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে? ঈশ্বরের বাক্য সম্বন্ধে তত্ত্বজ্ঞান বা সঠিক জ্ঞান এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (কল. ৩:৯, ১০) কিছু পরিবারের মস্তক তাদের সাপ্তাহিক পারিবারিক উপাসনার সন্ধ্যায় আলোচনার অংশ হিসেবে আত্মার ফল নিয়ে অধ্যয়ন করার বিষয়টা অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই ধরনের বিষয়ের ব্যবস্থা করা কঠিন কিছু নয়। আপনার ভাষায় প্রাপ্তিসাধ্য গবেষণা করার হাতিয়ারগুলো ব্যবহার করে আত্মার ফলের একেকটা দিকের ওপর বিষয়বস্তু বাছাই করুন। আপনি হয়তো প্রতি সপ্তাহে অল্প কয়েকটা অনুচ্ছেদ বিবেচনা করতে পারেন আর এভাবে একেকটা দিক নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা করতে পারেন। বিষয়বস্তু অধ্যয়ন করার সময় উল্লেখিত শাস্ত্রপদগুলো পড়ুন এবং আলোচনা করুন। আপনি যা শিখেছেন, সেগুলো কাজে লাগানোর উপায় খুঁজুন এবং আপনার প্রচেষ্টায় আশীর্বাদ করার জন্য যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন। (১ তীম. ৪:১৫; ১ যোহন ৫:১৪, ১৫) এই ধরনের অধ্যয়ন কি আসলেই পরিবারের সদস্যরা পরস্পরের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করে, তার ওপর প্রভাব ফেলে?

১১, ১২. কীভাবে দুই খ্রিস্টান দম্পতি দয়া সম্বন্ধে অধ্যয়ন করার মাধ্যমে উপকার লাভ করেছে?

১১ এক অল্পবয়সি দম্পতি তাদের বিবাহিত জীবনকে সফল করার আকাঙ্ক্ষায় আত্মার ফল নিয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারা কীভাবে উপকৃত হয়েছিল? স্ত্রী মন্তব্য করেন: “দয়ার সঙ্গে যে বিশ্বস্ততা এবং আনুগত্য জড়িত রয়েছে, তা শেখা এখনও পর্যন্ত পরস্পরের সঙ্গে আমাদের আচরণে পরিবর্তন নিয়ে আসে। এটা আমাদেরকে মানিয়ে নিতে ও ক্ষমা করতে শিখিয়েছে। আর এটা আমাদেরকে যখন উপযুক্ত, তখন ‘ধন্যবাদ’ এবং ‘আমি দুঃখিত’ বলা শিখতে সাহায্য করেছে।”

১২ বৈবাহিক সমস্যা ভোগ করছিল এমন অন্য এক খ্রিস্টান দম্পতি বুঝতে পেরেছিল যে, তাদের সম্পর্কের মধ্যে দয়ার অভাব রয়েছে। তারা একসঙ্গে দয়া সম্বন্ধে অধ্যয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর ফল কী হয়েছিল? স্বামী স্মরণ করে বলেন: “দয়া সম্বন্ধে অধ্যয়ন করার ফলে আমরা ভুল উদ্দেশ্য রয়েছে এমন দোষারোপ করার পরিবর্তে বরং একে অন্যকে নির্দোষ বলে গণ্য করার এবং একে অন্যের ভালো বিষয়গুলো খোঁজার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছি। আমরা একে অন্যের চাহিদার প্রতি আরও বেশি আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছি। সদয় হওয়ার অন্তর্ভুক্ত হল, আমার স্ত্রী যা বলেছে, তাতে বিরক্ত না হয়ে বরং তার মনে কী রয়েছে, সেই বিষয়ে স্বচ্ছন্দে খুলে কথা বলার জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানানো। আমার জন্য এর অর্থ ছিল যে, গর্ব না করা। আমরা যখন আমাদের বিয়েতে দয়া দেখানো শুরু করেছিলাম, তখন নিজেকে নির্দোষ বলে প্রতিপন্ন করার মনোভাব ধীরে ধীরে কমে গিয়েছিল। এটা বেশ উপকারজনক ছিল।” আপনার পরিবারও কি আত্মার ফল নিয়ে অধ্যয়ন করার ফলে উপকৃত হবে?

একান্তে থাকার সময় বিশ্বাস দেখিয়ে চলুন

১৩. আমাদের আধ্যাত্মিকতার জন্য হুমকি স্বরূপ এমন কোন বিষয়ের বিরুদ্ধে সাবধান থাকতে হবে?

১৩ খ্রিস্টানদের জনসমক্ষে ও একান্তে থাকার সময় ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা নিজেদের পরিচালিত হতে দেওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে শয়তানের জগৎ নোংরা ছবি এবং নিম্নমানের আমোদপ্রমোদে ছেয়ে আছে। এটা আমাদের আধ্যাত্মিকতার জন্য হুমকি স্বরূপ। একজন খ্রিস্টান কী করবেন? ঈশ্বরের বাক্য আমাদের এই পরামর্শ দেয়: “তোমরা সকল অশুচিতা এবং দুষ্টতার উচ্ছ্বাস ফেলিয়া দিয়া, মৃদুভাবে সেই রোপিত বাক্য গ্রহণ কর, যাহা তোমাদের প্রাণের পরিত্রাণ সাধন করিতে পারে।” (যাকোব ১:২১) আসুন আমরা বিবেচনা করে দেখি যে, কীভাবে আত্মার ফলের আরেকটা দিক বিশ্বস্ততা বা বিশ্বাস আমাদেরকে যিহোবার সামনে শুদ্ধতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

১৪. কীভাবে বিশ্বাসের অভাব অন্যায় আচরণের দিকে পরিচালিত করতে পারে?

১৪ মূলত, বিশ্বাসের অর্থ হল যে, যিহোবা ঈশ্বর আমাদের কাছে বাস্তব। ঈশ্বর যদি আমাদের কাছে বাস্তব না হয়ে থাকেন, তাহলে আমরা সহজেই অন্যায় আচরণে জড়িত হয়ে পড়তে পারি। প্রাচীনকালে ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে কী ঘটেছিল, তা বিবেচনা করুন। একান্তে থাকার সময় যে জঘন্য কাজ করা হচ্ছে, তা যিহোবা ভাববাদী যিহিষ্কেলের কাছে এই বলে প্রকাশ করেছিলেন: “হে মনুষ্য-সন্তান, ইস্রায়েল-কুলের প্রাচীন-বর্গ অন্ধকারে, প্রত্যেকে আপন আপন ঠাকুরঘরে, কি কি কার্য্য করে, তাহা কি তুমি দেখিলে? কারণ তাহারা বলে, সদাপ্রভু আমাদিগকে দেখিতে পান না, সদাপ্রভু দেশ ত্যাগ করিয়াছেন।” (যিহি. ৮:১২) আপনি কি লক্ষ করেছেন যে, কোন বিষয়টার কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছিল? তারা এই বিষয়টা বিশ্বাস করেনি যে, তারা যা করছিল, সেই সম্বন্ধে যিহোবা অবগত আছেন। যিহোবা তাদের কাছে বাস্তব ছিলেন না।

১৫. কীভাবে যিহোবার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস আমাদেরকে সুরক্ষা করে?

১৫ এর বিপরীতে, যোষেফের উদাহরণ বিবেচনা করুন। তার পরিবার এবং তার লোকেদের কাছ থেকে দূরে থাকা সত্ত্বেও, যোষেফ পোটীফরের স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার করতে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কেন? তিনি বলেছিলেন: “আমি কিরূপে এই মহা দুষ্কর্ম্ম করিতে ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করিতে পারি?” (আদি. ৩৯:৭-৯) হ্যাঁ, যিহোবা তার কাছে বাস্তব ছিলেন। ঈশ্বর যদি আমাদের কাছে বাস্তব হন, তাহলে আমরা নোংরা আমোদপ্রমোদের বিষয়গুলো দেখব না অথবা একান্তে এমন কিছু করব না, যেটা করলে আমরা জানি যে, ঈশ্বর অসন্তুষ্ট হবেন। আমাদের দৃঢ়সংকল্প গীতরচকের মতো হতে হবে, যিনি গেয়েছিলেন: “আমার গৃহমধ্যে আমি হৃদয়ের সিদ্ধতায় চলিব। আমি কোন জঘন্য পদার্থ চক্ষের সম্মুখে রাখিব না।”—গীত. ১০১:২, ৩.

ইন্দ্রিয়দমন অনুশীলন করার মাধ্যমে আপনার হৃদয়কে রক্ষা করুন

১৬, ১৭. (ক) হিতোপদেশ বইয়ের বর্ণনা অনুযায়ী কীভাবে ‘একজন বুদ্ধিবিহীন যুবক’ পাপ করার ফাঁদে পা দিয়েছিল? (খ) ২৬ পৃষ্ঠার ছবিতে যেমন তুলে ধরা হয়েছে কীভাবে বর্তমানেও একই বিষয় ঘটতে পারে, তা একজন ব্যক্তির বয়স যা-ই হোক না কেন?

১৬ ইন্দ্রিয়দমন অর্থাৎ আত্মার ফলের শেষ দিক আমাদেরকে সেই বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে না বলতে সাহায্য করে, যেগুলোকে ঈশ্বর নিন্দা করেন। এটা আমাদের হৃদয়কে রক্ষা করার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে। (হিতো. ৪:২৩) হিতোপদেশ ৭:৬-২৩ পদে প্রাপ্ত দৃশ্যটা বিবেচনা করুন, যা এমন ‘একজন বুদ্ধিবিহীন যুবকের’ সম্বন্ধে বর্ণনা করে, যে এক বেশ্যার ছলনায় ভুলে গিয়েছিল। সে “ঐ স্ত্রীর কোণের নিকটে” যাওয়ার পর ফাঁদে পা দিয়েছিল। হতে পারে যে, সে কৌতূহলবশত তার এলাকায় যাওয়ার ঝুঁকি নিয়েছিল। নিমিষের মধ্যেই সেই যুবক এটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিল যে, সে এমন একটা মূর্খতাপূর্ণ কাজের দিকে ধাবিত হচ্ছিল, যা “প্রাণনাশক।”

১৭ কীভাবে সেই যুবক এই মারাত্মক ভুল করা এড়াতে পারত? এই সাবধানবাণীর প্রতি মনোযোগ দেওয়ার মাধ্যমে: “উহার মার্গে ভ্রমণ করিও না।” (হিতো. ৭:২৫) এখানে আমাদের জন্য একটা শিক্ষা রয়েছে: আমরা যদি চাই যে, ঈশ্বরের আত্মা আমাদেরকে পরিচালনা দিক, তাহলে আমাদের প্রলুব্ধকর পরিস্থিতিগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। একটা যে-উপায়ে একজন ব্যক্তি ‘বুদ্ধিবিহীন যুবকের’ মতো মূর্খতাপূর্ণ কাজের দিকে ধাবিত হতে পারেন, তা হল উদ্দেশ্যহীনভাবে টেলিভিশনের চ্যানেল ঘোরানোর অথবা ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করার মাধ্যমে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হোক বা উদ্দেশ্যহীনভাবে হোক, তার সামনে যৌনউদ্দীপক দৃশ্যগুলো আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তিনি হয়তো ধীরে ধীরে পর্নোগ্রাফি দেখার নোংরা অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন, যা কিনা তার বিবেক ও ঈশ্বরের সঙ্গে তার সম্পর্কের ক্ষেত্রে মারাত্মক পরিণতি নিয়ে আসবে। এর সঙ্গে তার জীবন জড়িত থাকতে পারে।—পড়ুন, রোমীয় ৮:৫-৮.

১৮. একজন খ্রিস্টান তার হৃদয়কে রক্ষা করার জন্য কোন পদক্ষেপগুলো নিতে পারেন আর কীভাবে সেগুলো ইন্দ্রিয়দমন অনুশীলন করার সঙ্গে জড়িত?

১৮ অবশ্য, আমাদের সামনে যদি যৌন উত্তেজনামূলক ছবি এসে পড়ে, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে ইন্দ্রিয়দমন করতে পারি এবং তা করা উচিত। কিন্তু, আমরা যদি আগে থেকেই এই পরিস্থিতি এড়িয়ে চলি, তাহলে তা কত উত্তমই না হয়! (হিতো. ২২:৩) উপযুক্ত প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং সেগুলো কাজে লাগানোর সঙ্গে ইন্দ্রিয়দমন জড়িত। উদাহরণস্বরূপ, সবার চোখে পড়ে এমন জায়গায় কম্পিউটার রাখা এক সুরক্ষা হিসেবে কাজ করতে পারে। কেউ কেউ দেখেছে যে, শুধুমাত্র অন্যদের উপস্থিতিতে কম্পিউটার ব্যবহার করা বা টেলিভিশন দেখা সবচেয়ে ভালো। অন্যেরা আবার ইন্টারনেট ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। (পড়ুন, মথি ৫:২৭-৩০.) নিজেদের ও সেইসঙ্গে আমাদের পরিবারকে রক্ষা করার জন্য আমরা যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিই, যাতে আমরা “শুচি হৃদয়, সৎসংবেদ ও অকল্পিত বিশ্বাস” সহকারে যিহোবার উপাসনা করতে পারি।—১ তীম. ১:৫.

১৯. নিজেদেরকে পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হতে দেওয়ার উপকারগুলো কী?

১৯ পবিত্র আত্মার কাজের মাধ্যমে উৎপন্ন ফল অনেক উপকার নিয়ে আসে। মৃদুতা এবং দীর্ঘসহিষ্ণুতা মণ্ডলীতে শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে অবদান রাখে। দয়া এবং মঙ্গলভাব পারিবারিক সুখকে বৃদ্ধি করে। বিশ্বাস ও ইন্দ্রিয়দমন আমাদেরকে যিহোবার নিকটবর্তী থাকতে এবং তাঁর সামনে শুচি থাকতে সাহায্য করে। অধিকন্তু, গালাতীয় ৬:৮ পদ আমাদের এই আশ্বাস দেয়: “আত্মার উদ্দেশে যে বুনে, সে আত্মা হইতে অনন্ত জীবনরূপ শস্য পাইবে।” হ্যাঁ, খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের ওপর ভিত্তি করে যিহোবা সেই ব্যক্তিদেরকে অনন্তজীবন দান করার জন্য তাঁর পবিত্র আত্মা ব্যবহার করবেন, যারা নিজেদেরকে পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হতে দেয়।

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

• কীভাবে মৃদুতা এবং দীর্ঘসহিষ্ণুতা মণ্ডলীতে শান্তি বৃদ্ধি করে?

• কী খ্রিস্টানদেরকে পরিবারে দয়া ও মঙ্গলভাব দেখানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে?

• কীভাবে বিশ্বাস ও ইন্দ্রিয়দমন একজন খ্রিস্টানকে তাঁর হৃদয় রক্ষা করতে সাহায্য করে?

[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

কোনো আলোচনা চরমে যাওয়ার আগেই আপনি কোন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন?

[২৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

আত্মার ফল নিয়ে অধ্যয়ন করা আপনার পরিবারকে উপকৃত করতে পারে

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

বিশ্বাস ও ইন্দ্রিয়দমন অনুশীলন করার মাধ্যমে আমরা কোন বিপদগুলো এড়াতে পারি?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার