ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w11 ১০/১৫ পৃষ্ঠা ২৩-২৭
  • “সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” যিহোবার ওপর নির্ভর করুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” যিহোবার ওপর নির্ভর করুন
  • ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • দুর্দশার কারণগুলোর সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করা
  • ঈশ্বরদত্ত সান্ত্বনার বিভিন্ন উদাহরণ
  • ঈশ্বরের চিরকালের হস্তের নীচে
  • ‘সমস্ত শোকার্ত্তকে সান্ত্বনা করুন’
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবা যে শক্তি দেন তার থেকে সান্ত্বনা পান
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ঈশ্বর যেভাবে সান্ত্বনা প্রদান করেন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (জনসাধারণের সংস্করণ)—২০১৬
  • কোথায় প্রকৃত সান্ত্বনা পাওয়া যেতে পারে?
    ২০০৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w11 ১০/১৫ পৃষ্ঠা ২৩-২৭

“সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” যিহোবার ওপর নির্ভর করুন

“ধন্য আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতা; তিনিই করুণা-সমষ্টির পিতা এবং সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর।”—২ করি. ১:৩.

১. মানুষের বয়স যা-ই হোক না কেন, তাদের কীসের প্রয়োজন রয়েছে?

আমরা আমাদের জন্মের সময় থেকেই সান্ত্বনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে থাকি। একটা শিশুর যখন সান্ত্বনার প্রয়োজন হয়, তখন সে তার কণ্ঠস্বর ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদেরকে তা জানিয়ে থাকে। সে হয়তো কোলে উঠতে চায় অথবা সে হয়তো ক্ষুধার্ত। এমনকী আমরা যখন বড়ো হই, তখনও প্রায়ই সান্ত্বনা লাভ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে থাকি। এটা বিশেষভাবে সেই সময়ে সত্য, যখন আমরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে থাকি।

২. যারা তাঁর ওপর নির্ভর করে, তাদেরকে যে তিনি সান্ত্বনা প্রদান করবেন, সেই সম্বন্ধে যিহোবা কোন আশ্বাস দিয়েছেন?

২ পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবরা প্রায়ই আমাদেরকে কিছুটা সান্ত্বনা প্রদান করতে পারে। কিন্তু, মাঝে মাঝে যে-পরিস্থিতিগুলোর কারণে আমরা দুর্দশা ভোগ করে থাকি, সেগুলোর প্রতিকার করা মানুষের সাধ্যের বাইরে। একমাত্র ঈশ্বরই আমাদেরকে সান্ত্বনা প্রদান করতে পারেন, তা আমাদের পরিস্থিতি যত দুর্দশামূলকই হোক না কেন। তাঁর বাক্য আমাদের আশ্বাস দেয়: “সদাপ্রভু সেই সকলেরই নিকটবর্ত্তী, যাহারা তাঁহাকে ডাকে, . . . আর তাহাদের আর্ত্তনাদ শুনিয়া তাহাদিগকে ত্রাণ করেন।” (গীত. ১৪৫:১৮, ১৯) হ্যাঁ, “ধার্ম্মিকগণের প্রতি সদাপ্রভুর দৃষ্টি আছে, তাহাদের আর্ত্তনাদের প্রতি তাঁহার কর্ণ আছে।” (গীত. ৩৪:১৫) কিন্তু, আমরা যদি ঈশ্বরের সমর্থন এবং সান্ত্বনা লাভ করতে চাই, তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই তাঁর ওপর বিশ্বাস বা নির্ভর করতে হবে। গীতরচক দায়ূদ বিষয়টা স্পষ্ট করেছিলেন, যখন তিনি এই গীত গেয়েছিলেন: “সদাপ্রভু হইবেন ক্লিষ্টের জন্য উচ্চ দুর্গ, সঙ্কটের সময়ে উচ্চ দুর্গ। যাহারা তোমার নাম জানে, তাহারা তোমাতে বিশ্বাস রাখিবে; কেননা, হে সদাপ্রভু, তুমি তোমার অন্বেষণকারীদিগকে পরিত্যাগ কর নাই।”—গীত. ৯:৯, ১০.

৩. তাঁর লোকেদের প্রতি যে যিহোবার প্রেম রয়েছে, তা কীভাবে যিশু উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করেছেন?

৩ যিহোবার উপাসকরা তাঁর কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। এই বিষয়টা যিশু স্পষ্ট করেছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন: “পাঁচটী চড়াই পাখী কি দুই পয়সায় বিক্রয় হয় না? আর তাহাদের মধ্যে একটীও ঈশ্বরের দৃষ্টিগোচরে গুপ্ত নয়। এমন কি, তোমাদের মস্তকের কেশগুলিও সমস্ত গণিত আছে। ভয় করিও না, তোমরা অনেক চড়াই পাখী হইতে শ্রেষ্ঠ।” (লূক ১২:৬, ৭) ভাববাদী যিরমিয়ের মাধ্যমে যিহোবা তাঁর প্রাচীন লোকদের বলেছিলেন: “আমি ত চিরপ্রেমে তোমাকে প্রেম করিয়া আসিতেছি, এই জন্য আমি তোমার প্রতি চিরস্থায়ী দয়া করিলাম।”—যির. ৩১:৩.

৪. কেন আমরা যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর নির্ভর করতে পারি?

৪ যিহোবা এবং তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলোর পরিপূর্ণতার ওপর নির্ভর করা, দুর্দশার সময় আমাদের জন্য সান্ত্বনা নিয়ে আসতে পারে। তাই, ঈশ্বরের প্রতি আমাদেরও একই নির্ভরতা রাখা উচিত, যা যিহোশূয়ের এই কথাগুলোর মধ্যে প্রকাশিত হয়েছিল, যিনি ঘোষণা করেছিলেন: “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের বিষয়ে যত মঙ্গলবাক্য বলিয়াছিলেন, তাহার মধ্যে একটীও বিফল হয় নাই; তোমাদের পক্ষে সকলই সফল হইয়াছে, তাহার একটীও বিফল হয় নাই।” (যিহো. ২৩:১৪) এ ছাড়া, আমরা এই বিষয়েও নিশ্চিত থাকতে পারি যে, এমনকী আমরা যদি ক্ষণিকের জন্যও কঠিন পরিস্থিতির কারণে কষ্ট পাই, সেই সময়ও “ঈশ্বর বিশ্বাস্য” এবং তাঁর অনুগত দাসদের কখনোই পরিত্যাগ করবেন না।—পড়ুন, ১ করিন্থীয় ১০:১৩.

৫. কীভাবে আমাদের পক্ষে অন্যদেরকে সান্ত্বনা দেওয়া সম্ভব?

৫ প্রেরিত পৌল যিহোবাকে “সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। “সান্ত্বনা দেওয়ার” অর্থ হল এমন কাউকে প্রশমিত করা, যিনি দুর্দশা অথবা দুঃখের মধ্যে রয়েছেন।  আর এটা করা যেতে পারে, তার নিদারুণ যন্ত্রণা অথবা শোক লাঘব করার মাধ্যমে এবং তার জন্য স্বস্তি নিয়ে আসার মাধ্যমে। নিশ্চিতভাবেই, যিহোবা এটা করে থাকেন। (পড়ুন, ২ করিন্থীয় ১:৩, ৪.) কোনোকিছু বা কেউই আমাদের স্বর্গীয় পিতার ওপর সীমা আরোপ করতে পারে না আর তাই যারা তাঁকে প্রেম করে, তাদেরকে সান্ত্বনা প্রদান করার জন্য যা-কিছুরই প্রয়োজন হোক না কেন, তিনি তা-ই করতে পারেন। আর এর ফলে আমরা সহবিশ্বাসীদেরকে “সমস্ত ক্লেশের” মধ্যে সান্ত্বনা দিতে পারি। আমরা “নিজে ঈশ্বর-দত্ত যে সান্ত্বনায় সান্ত্বনাপ্রাপ্ত হই, সেই সান্ত্বনা দ্বারা . . . সান্ত্বনা করিতে পারি।” এই বিষয়টা কত উত্তমভাবেই না বর্ণনা করে যে, হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের সান্ত্বনা দেওয়ার ক্ষেত্রে যিহোবার অতুলনীয় ক্ষমতা রয়েছে!

দুর্দশার কারণগুলোর সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করা

৬. সেই বিষয়গুলোর উদাহরণ দিন, যেগুলো দুর্দশার কারণ হতে পারে।

৬ জীবনের অনেক ক্ষেত্রে আমাদের সান্ত্বনা প্রয়োজন। শোক করার একটা অন্যতম কারণ হচ্ছে, মৃত্যুতে কোনো প্রিয়জনকে, বিশেষভাবে প্রিয় বিবাহসাথি অথবা সন্তানকে হারানো। এ ছাড়া, একজন ব্যক্তি যদি বৈষম্য বা ভেদাভেদের শিকার হন, তাহলেও সান্ত্বনার প্রয়োজন হতে পারে। খারাপ স্বাস্থ্য, বার্ধক্য, দারিদ্র, বৈবাহিক সমস্যা অথবা জগতের দুর্দশামূলক অবস্থা, ব্যক্তিগতভাবে সান্ত্বনা লাভ করার প্রয়োজনীয়তাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

৭. (ক) শোচনীয় পরিস্থিতিগুলোতে কোন ধরনের সান্ত্বনার প্রয়োজন? (খ) “ভগ্ন ও চূর্ণ” হৃদয়কে আরোগ্য করার জন্য যিহোবা কী করতে পারেন?

৭ দুর্দশার সময়ে, আমাদের এমন সান্ত্বনার প্রয়োজন, যা আমাদের হৃদয়, আমাদের মন, আমাদের আবেগ এবং আমাদের দৈহিক ও আধ্যাত্মিক, উভয় স্বাস্থ্যেকই প্রশমিত করে। উদাহরণস্বরূপ, হৃদয়ের কথা বিবেচনা করুন। ঈশ্বরের বাক্য স্বীকার করে যে, আমাদের হৃদয় “ভগ্ন ও চূর্ণ” হতে পারে। (গীত. ৫১:১৭) নিশ্চিতভাবেই, এই পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষমতা যিহোবার রয়েছে কারণ “তিনি ভগ্নচিত্তদিগকে সুস্থ করেন, তাহাদের ক্ষত সকল বাঁধিয়া দেন।” (গীত. ১৪৭:৩) এমনকী চরম পরিস্থিতিগুলোর মধ্যেও ঈশ্বর ক্ষতবিক্ষত এক হৃদয়ের জন্য স্বস্তি নিয়ে আসতে পারেন, যদি কিনা আমরা পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে তাঁর কাছে প্রার্থনা করি এবং তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করি।—পড়ুন, ১ যোহন ৩:১৯-২২; ৫:১৪, ১৫.

৮. আমরা যখন মানসিক কষ্টের মধ্যে থাকি, তখন কীভাবে যিহোবা আমাদের সাহায্য করতে পারেন?

৮ বিভিন্ন পরীক্ষার কারণে আসা চরম মানসিক কষ্টের জন্য প্রায়ই আমাদের মনের সান্ত্বনার প্রয়োজন হয়ে থাকে। নিজেদের শক্তিতে, আমরা সম্ভবত বিশ্বাসের এই পরীক্ষাগুলোর সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারব না। কিন্তু, গীতরচক গেয়েছিলেন: “আমার আন্তরিক ভাবনার বৃদ্ধিকালে তোমার দত্ত সান্ত্বনা আমার প্রাণকে আহ্লাদিত করে।” (গীত. ৯৪:১৯) অধিকন্তু, পৌল লিখেছিলেন: “কোন বিষয়ে ভাবিত হইও না, কিন্তু সর্ব্ববিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর। তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করিবে।” (ফিলি. ৪:৬, ৭) শাস্ত্র পাঠ করা ও তা নিয়ে ধ্যান করা, মানসিক কষ্টের সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করার জন্য বিরাট সাহায্য হতে পারে।—২ তীম. ৩:১৫-১৭.

৯. কীভাবে আমরা আবেগগত দুর্দশার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারি?

৯ মাঝে মাঝে আমরা হয়তো এতটাই নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ি যে, আমরা হয়তো নেতিবাচক আবেগের প্রভাবগুলোর কাছে নতিস্বীকার করে ফেলার মতো বিপদের মুখোমুখি হই। আমরা হয়তো শাস্ত্রীয় কোনো দায়িত্ব অথবা সেবা করার বিশেষ সুযোগ পালন করার ব্যাপারে নিজেদেরকে অসমর্থ বলে মনে করতে পারি। এই ক্ষেত্রেও, যিহোবা আমাদেরকে সান্ত্বনা দিতে এবং সাহায্য করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ: যিহোশূয়কে যখন শক্তিশালী শত্রু জাতিগুলোর বিরুদ্ধে ইস্রায়েলীয়দের নেতৃত্ব দান করার কার্যভার প্রদান করা হয়েছিল, তখন মোশি লোকেদেরকে বলেছিলেন: “বলবান হও ও সাহস কর, ভয় করিও না, তাহাদের হইতে মহাভয়ে ভীত হইও না; কেননা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনি তোমার সহিত যাইতেছেন, তিনি তোমাকে ছাড়িবেন না, তোমাকে ত্যাগ করিবেন না।” (দ্বিতীয়. ৩১:৬) যিহোবার সাহায্যে যিহোশূয় ঈশ্বরের লোকেদেরকে প্রতিজ্ঞাত দেশে নিয়ে যেতে এবং তাদের সমস্ত শত্রুদেরকে জয় করতে সমর্থ হয়েছিলেন। এর আগে, সূফসাগরের মধ্যে মোশিও একই ঐশিক সাহায্য লাভ করেছিলেন।—যাত্রা. ১৪:১৩, ১৪, ২৯-৩১.

১০. আমাদের দৈহিক স্বাস্থ্য যদি দুর্দশার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে আমরা কোন সাহায্য লাভ করতে পারি?

১০ দুর্দশামূলক ঘটনাগুলো আমাদের দৈহিক স্বাস্থ্যের ওপর এক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অবশ্য, ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া ও ব্যায়াম করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা আমাদের ওপর এক উত্তম প্রভাব ফেলতে পারে। আধ্যাত্মিকভাবে গঠনমূলক এক বাইবেলভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের দেহের ওপর ভালো প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, আমরা যখন কোনো কষ্টকর পরিস্থিতির মধ্যে থাকি, তখন পৌলের অভিজ্ঞতা এবং উৎসাহমূলক এই কথাগুলো মনে রাখা উপকারজনক: “আমরা সর্ব্বপ্রকারে ক্লিষ্ট হইতেছি, কিন্তু সঙ্কটাপন্ন হই না; হতবুদ্ধি হইতেছি, কিন্তু নিরাশ হই না; তাড়িত হইতেছি, কিন্তু পরিত্যক্ত হই না; অধঃক্ষিপ্ত হইতেছি, কিন্তু বিনষ্ট হই না।”—২ করি. ৪:৮, ৯.

১১. কীভাবে আধ্যাত্মিক অসুস্থতা কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে?

১১ কিছু পরীক্ষা আমাদের আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এই ক্ষেত্রেও, যিহোবা আমাদেরকে উদ্ধার করতে পারেন। তাঁর বাক্য আমাদের এই আশ্বাস প্রদান করে: “সদাপ্রভু পতনোন্মুখ সকলকে ধরিয়া রাখেন, অবনত সকলকে উত্থাপন করেন।” (গীত. ১৪৫:১৪) আধ্যাত্মিক অসুস্থতা কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে সাহায্য লাভ করার জন্য আমাদের খ্রিস্টান প্রাচীনদের কাছ থেকে সহযোগিতা চাওয়া উচিত। (যাকোব ৫:১৪, ১৫) আর সবসময় অনন্তজীবন সম্বন্ধীয় শাস্ত্রীয় আশার বিষয়টা মনে রাখা, আমাদেরকে আমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষার মধ্যে টিকে থাকতে সাহায্য করতে পারে।—যোহন ১৭:৩.

ঈশ্বরদত্ত সান্ত্বনার বিভিন্ন উদাহরণ

১২. অব্রাহামের প্রতি যিহোবা যে-সান্ত্বনাদায়ক মনোভাব দেখিয়েছিলেন, তা বর্ণনা করুন।

১২ একজন গীতরচক ঈশ্বরের অনুপ্রেরণায় বলেছিলেন: “তোমার দাসের পক্ষে সেই বাক্য স্মরণ কর, যদ্দ্বারা তুমি [সদাপ্রভু] আমাকে প্রত্যাশাযুক্ত করিয়াছ। দুঃখের সময়ে ইহাই আমার সান্ত্বনা, তোমার বচন আমাকে সঞ্জীবিত করিয়াছে।” (গীত. ১১৯:৪৯, ৫০) বর্তমানে, আমাদের কাছে যিহোবার লিখিত বাক্য রয়েছে, যেটির মধ্যে ঈশ্বরদত্ত সান্ত্বনার অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, অব্রাহাম হয়তো সেই সময় অনেক হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, যখন তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, যিহোবা সদোম ও ঘমোরাকে ধ্বংস করতে যাচ্ছেন। সেই বিশ্বস্ত কুলপতি ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করেছিলেন: “আপনি কি দুষ্টের সহিত ধার্ম্মিককেও সংহার করিবেন?” অব্রাহামকে যিহোবা এই আশ্বাস প্রদান করার মাধ্যমে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন যে, সদোমের মধ্যে যদি কেবল ৫০ জন ধার্মিক ব্যক্তিও পাওয়া যায়, তাহলে তিনি সেই নগরকে ধ্বংস করবেন না। কিন্তু, অব্রাহাম আরও পাঁচ বার যিহোবাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন: সেখানে যদি কেবল ৪৫ জন ধার্মিক লোক পাওয়া যায়? ৪০ জন? ৩০ জন? ২০ জন? ১০ জন? প্রত্যেক বার, যিহোবা অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে এবং সদয়ভাবে অব্রাহামকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, সদোম নগর ধ্বংস করা হবে না। যদিও সেখানে এমনকী দশ জন ধার্মিক ব্যক্তিও ছিল না, তবুও যিহোবা লোট এবং তার মেয়েদের রক্ষা করেছিলেন।—আদি. ১৮:২২-৩২; ১৯:১৫, ১৬, ২৬.

১৩. কীভাবে হান্না দেখিয়েছিলেন যে, তিনি যিহোবার ওপর নির্ভর করেন?

১৩ ইল্‌কানার স্ত্রী হান্না একটা সন্তানের জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষী ছিলেন। কিন্তু, তিনি বন্ধ্যা ছিলেন আর এই বিষয়টা তাকে অনেক কষ্ট দিত। বিষয়টা নিয়ে তিনি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন আর মহাযাজক এলি তাকে বলেছিলেন: “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে যাহা যাচ্ঞা করিলে, তাহা তিনি তোমাকে দিউন।” এটা হান্নাকে সান্ত্বনা প্রদান করেছিল এবং “তাঁহার মুখ আর বিষণ্ণ রহিল না।” (১ শমূ. ১:৮, ১৭, ১৮) হান্না যিহোবার ওপর নির্ভর করেছিলেন এবং আস্থা সহকারে বিষয়টা তাঁর হাতে ছেড়ে দিয়েছিলেন। যদিও তিনি জানতেন না যে, এর ফলাফল কী হবে, তবুও হান্না মনের শান্তি লাভ করেছিলেন। পরে, যিহোবা তার প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন। তিনি গর্ভবতী হয়েছিলেন এবং একটা ছেলের জন্ম দিয়েছিলেন আর তার নাম রেখেছিলেন শমূয়েল।—১ শমূ. ১:২০.

১৪. কেন দায়ূদের সান্ত্বনার প্রয়োজন ছিল আর তিনি কার কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন?

১৪ প্রাচীন ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদ হলেন আরেকটা উদাহরণ, যিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন। যিহোবা যেহেতু “অন্তঃকরণের প্রতি দৃষ্টি করেন,” তাই তিনি যখন দায়ূদকে ইস্রায়েলের ভাবী রাজা হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন, তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, দায়ূদ সত্য উপাসনার প্রতি আন্তরিক এবং একনিষ্ঠ। (১ শমূ. ১৬:৭; ২ শমূ. ৫:১০) কিন্তু, পরবর্তী সময়ে দায়ূদ বৎশেবার সঙ্গে ব্যভিচার করেছিলেন এবং তার স্বামীকে হত্যা করার মাধ্যমে সেই পাপকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। দায়ূদ যখন তার পাপের গুরুতর অবস্থা সম্বন্ধে বুঝতে পেরেছিলেন, তখন তিনি যিহোবার কাছে এই প্রার্থনা করেছিলেন: “তোমার করুণার বাহুল্য অনুসারে আমার অধর্ম্ম সকল মার্জ্জনা কর। আমার অপরাধ হইতে আমাকে নিঃশেষে ধৌত কর, আমার পাপ হইতে আমাকে শুচি কর। কেননা আমি নিজে আমার অধর্ম্ম সকল জানি; আমার পাপ সতত আমার সম্মুখে আছে।” (গীত. ৫১:১-৩) দায়ূদ সত্যিই অনুতপ্ত হয়েছিলেন আর যিহোবা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। তবে, দায়ূদকে তার অপরাধের পরিণতি ভোগ করতে হয়েছিল। (২ শমূ. ১২:৯-১২) যাই হোক, যিহোবার করুণা তাঁর নম্র দাসের জন্য সান্ত্বনার এক উৎস ছিল।

১৫. যিশু মারা যাওয়ার ঠিক আগে, যিহোবা তাঁকে কোন সাহায্য প্রদান করেছিলেন?

১৫ পৃথিবীতে থাকাকালীন, যিশু অনেক কষ্টকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। ঈশ্বর বিশ্বাসের এই পরীক্ষাগুলো ঘটার অনুমতি দিয়েছিলেন আর যিশু একজন সিদ্ধ মানুষ হিসেবে তাঁর নীতিনিষ্ঠা বজায় রেখেছিলেন, যিনি সবসময় যিহোবার ওপর নির্ভর করতেন ও সেইসঙ্গে তাঁর সার্বভৌমত্বকে সমর্থন করেছিলেন। যিশু যখন বিশ্বাসঘাতকতা ও মৃত্যুদণ্ডের সম্মুখীন হতে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন: “আমার ইচ্ছা নয়, তোমারই ইচ্ছা সিদ্ধ হউক।” এরপর, একজন স্বর্গদূত যিশুকে দেখা দিয়েছিলেন এবং তাঁকে শক্তিশালী করেছিলেন। (লূক ২২:৪২, ৪৩) ঈশ্বর যিশুকে সান্ত্বনা, শক্তি এবং সমর্থন জুগিয়েছিলেন, যা সেই সময় তাঁর প্রয়োজন ছিল।

১৬. নীতিনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে মৃত্যুর মুখোমুখি হলে আমরা হয়তো যে-দুর্দশা ভোগ করি, সেই সম্বন্ধে ঈশ্বর কী করতে পারেন?

১৬ এমনকী খ্রিস্টান হিসেবে আমাদের দৃঢ় অবস্থানের কারণে আমরা নিজেরাও যদি মৃত্যুর মুখোমুখি হই, তাহলেও যিহোবা আমাদেরকে তাঁর প্রতি আমাদের নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখার জন্য সাহায্য করতে পারেন এবং করবেন। অধিকন্তু, আমরা পুনরুত্থানের আশার মাধ্যমেও সান্ত্বনা লাভ করে থাকি। আর সেই দিনের জন্য আমরা কত অধীর আগ্রহেই না অপেক্ষা করে আছি, যখন শেষ শত্রু যে মৃত্যু, “সেও বিলুপ্ত হইবে”! (১ করি. ১৫:২৬) ঈশ্বরের যে-অনুগত দাসেরা ও সেইসঙ্গে অন্যান্য যে-ব্যক্তিরা মারা গিয়েছে, তারা যিহোবার নিখুঁত স্মৃতিতে রয়েছে এবং পুনরুত্থিত হবে। (যোহন ৫:২৮, ২৯; প্রেরিত ২৪:১৫) যিহোবা প্রদত্ত পুনরুত্থানের প্রতিজ্ঞার ওপর আস্থা রাখা, তাড়নার সময়ে আমাদের জন্য সান্ত্বনা নিয়ে আসে এবং এক নিশ্চিত আশা প্রদান করে।

১৭. যখন কোনো প্রিয়জন মারা যায়, তখন যিহোবা কীভাবে সান্ত্বনা প্রদান করতে পারেন?

১৭ এটা জানা কতই না সান্ত্বনাদায়ক যে, আমাদের যে-প্রিয়জনরা এখন মানবজাতির সাধারণ কবরে ঘুমিয়ে আছে, তাদের এমন এক অপূর্ব নতুন জগতে জীবন ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে, যা বর্তমানের সমস্ত দুর্দশার কারণ থেকে মুক্ত! আর যিহোবার দাসদের মধ্যে যে-‘বিস্তর লোকেরা’ এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষ সময়ে রক্ষা পাবে, তাদের জন্য সেই ব্যক্তিদেরকে স্বাগতম জানানো এবং শিক্ষা প্রদান করা কত বিশেষ সুযোগই না হবে, যারা পৃথিবীতে জীবনের জন্য পুনরুত্থিত হবে!—প্রকা. ৭:৯, ১০.

ঈশ্বরের চিরকালের হস্তের নীচে

১৮, ১৯. তাড়না ভোগ করার সময় ঈশ্বরের দাসেরা কীভাবে সান্ত্বনা লাভ করেছে?

১৮ জোরালো ও হৃদয়গ্রাহী গানের কথাগুলোর মধ্যে, মোশি ইস্রায়েলের লোকেদের এই আশ্বাস দিয়েছিলেন: “যিনি আদিকালের ঈশ্বর তিনিই তোমার আশ্রয়; তাঁর চিরকালের হাতে তিনিই তোমাকে ধরে আছেন।” (দ্বিতীয়. ৩৩:২৭, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) পরবর্তী সময়ে, ভাববাদী শমূয়েল ইস্রায়েলীয়দেরকে বলেছিলেন: “সদাপ্রভুর পশ্চাৎ হইতে সরিয়া যাইও না, সমস্ত অন্তঃকরণের সহিত সদাপ্রভুর সেবা কর। . . . সদাপ্রভু আপন মহানামের গুণে আপন প্রজাদিগকে ত্যাগ করিবেন না।” (১ শমূ. ১২:২০-২২) যতদিন পর্যন্ত আমরা সত্য উপাসনায় যিহোবার প্রতি আসক্ত থাকব, ততদিন পর্যন্ত তিনি আমাদের কখনো পরিত্যাগ করবেন না। তিনি সবসময় আমাদেরকে প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাবেন।

১৯ এই সংকটময় শেষকালে ঈশ্বর নিশ্চিতভাবেই তাঁর লোকেদের প্রয়োজনীয় সাহায্য এবং সান্ত্বনা প্রদান করবেন। এক-শো বছরেরও বেশি সময় ধরে, পৃথিবীব্যাপী আমাদের হাজার হাজার সহবিশ্বাসী, কেবল যিহোবাকে সেবা করার কারণে তাড়িত হয়েছে ও কারাবন্ধন ভোগ করেছে। তাদের অভিজ্ঞতাগুলো এই প্রমাণ দেয় যে, পরীক্ষার সময়ে যিহোবা সত্যিই তাঁর দাসদের সান্ত্বনা প্রদান করেন। উদাহরণস্বরূপ, প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নে আমাদের একজন ভাইকে তার বিশ্বাসের কারণে ২৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, তার কাছে আধ্যাত্মিক খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার একটা উপায় খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল, যেন তিনি শক্তি ও সান্ত্বনা লাভ করতে পারেন। তিনি বলেছিলেন: “সেই বছরগুলোতে আমি যিহোবার ওপর নির্ভর করতে শিখেছিলাম এবং তাঁর কাছ থেকে শক্তি লাভ করতে পেরেছিলাম।”—পড়ুন, ১ পিতর ৫:৬, ৭.

২০. কেন আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, যিহোবা আমাদের পরিত্যাগ করবেন না?

২০ আমরা যা-কিছুরই সম্মুখীন হই না কেন, আমাদের গীতরচকের এই সান্ত্বনামূলক কথাগুলো মনে রাখা উচিত: “সদাপ্রভু আপন প্রজাদিগকে দূর করিবেন না।” (গীত. ৯৪:১৪) যদিও ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সান্ত্বনা লাভ করার প্রয়োজন, তবুও আমাদেরও অন্যদের জন্য সান্ত্বনা নিয়ে আসার মহৎ সুযোগ রয়েছে। পরের প্রবন্ধে আমরা যেমন দেখব যে, সমস্যাপূর্ণ এই জগতে শোকার্ত ব্যক্তিদেরকে সান্ত্বনা প্রদান করার ক্ষেত্রে আমরাও অংশ নিতে পারি।

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

• কিছু বিষয় কী, যেগুলো আমাদের দুর্দশার কারণ হতে পারে?

• কীভাবে যিহোবা তাঁর দাসদেরকে সান্ত্বনা প্রদান করেন?

• আমরা যদি মৃত্যুর মুখোমুখি হই, তাহলে কী আমাদেরকে সান্ত্বনা প্রদান করতে পারে?

[২৫ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

সেই বিষয়গুলোর সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, যেগুলো আমাদের এই বিষয়গুলোকে প্রভাবিত করতে পারে, যেমন, . . .

▪ হৃদয় গীত. ১৪৭:৩; ১ যোহন ৩:১৯-২২; ৫:১৪, ১৫

▪ মন গীত. ৯৪:১৯; ফিলি. ৪:৬, ৭

▪ আবেগ যাত্রা. ১৪:১৩, ১৪; দ্বিতীয়. ৩১:৬

▪ দৈহিক স্বাস্থ্য ২ করি. ৪:৮, ৯

▪ আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য গীত. ১৪৫:১৪; যাকোব ৫:১৪, ১৫

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার