ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w13 ১/১৫ পৃষ্ঠা ২৭-৩১
  • খ্রিস্টান প্রাচীনরা ‘আমাদের আনন্দের সহকারী’

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • খ্রিস্টান প্রাচীনরা ‘আমাদের আনন্দের সহকারী’
  • ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • আমাদের বিশ্বাস এবং আমাদের আনন্দ
  • ‘প্রিয়া পর্ষীকে মঙ্গলবাদ কর’
  • ‘তিনি প্রভুতে অত্যন্ত পরিশ্রম করিয়াছেন’
  • ‘ঈশ্বরের মণ্ডলীকে পালন কর’
  • ‘অবীশয় তাঁহার সাহায্য করিলেন’
  • ‘তোমাদের প্রতি আমার যে প্রেম আছে, তাহা জ্ঞাত হও’
  • প্রাচীনেরা—ক্রমাগত প্রেরিত পৌলকে অনুকরণ করুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
  • ‘মনুষ্যদিগের নানা বরদের’ প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানো
    ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘যাঁহারা তোমাদের মধ্যে পরিশ্রম করেন, তাঁহাদিগকে সম্মান করিও’
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘ফিরিয়া আসিয়া আপনার ভ্রাতৃগণকে সুস্থির করুন’
    ২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w13 ১/১৫ পৃষ্ঠা ২৭-৩১

খ্রিস্টান প্রাচীনরা ‘আমাদের আনন্দের সহকারী’

“আমরা . . . তোমাদের আনন্দের সহকারী।”—২ করি. ১:২৪.

উত্তরগুলো খুঁজুন:

কীভাবে পৌল দেখিয়েছিলেন যে, তিনি ‘তাহার ভাইদের বিশ্বাসের ওপর প্রভুত্ব’ করেননি বরং ‘তাহাদের আনন্দের সহকারী’ ছিলেন?

কোন কোন উপায়ে খ্রিস্টান প্রাচীনরা সহবিশ্বাসীদের আনন্দকে বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে?

কীভাবে আমরা সকলে মণ্ডলীর আনন্দিত মনোভাবকে বৃদ্ধি করতে পারি?

১. কেন পৌল করিন্থের খ্রিস্টানদের ব্যাপারে আনন্দ করেছিলেন?

বছরটা ছিল ৫৫ খ্রিস্টাব্দ। যদিও প্রেরিত পৌল বন্দরনগরী ত্রোয়াতে ছিলেন কিন্তু তার পরও করিন্থের ব্যাপারে চিন্তা তার মাথা থেকে যাচ্ছিল না। সেই বছরের শুরুর দিকে এই বিষয়টা জানতে পেরে তিনি কষ্ট পেয়েছিলেন যে, সেখানকার ভাইয়েরা নিজেদের মধ্যে বিবাদ করেছে। তাই, পিতৃসুলভ চিন্তা দেখিয়ে তিনি তাদেরকে সংশোধন করার জন্য একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। (১ করি. ১:১১; ৪:১৫) এ ছাড়া, তিনি তাদের কাছে তার সহকর্মী তীতকে পাঠিয়েছিলেন এবং তীত যেন ত্রোয়াতে ফিরে এসে তাকে সংবাদ দেয়, সেই ব্যবস্থাও করেছিলেন। এরপর, পৌল করিন্থীয়দের খবরাখবর শোনার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে ত্রোয়াতে তীতের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু, পৌল অত্যন্ত হতাশ হয়েছিলেন কারণ তীত ফিরে আসেননি। পৌল কী করতে পারতেন? তিনি জলপথে মাকিদনিয়ায় গিয়েছিলেন এবং আনন্দের বিষয় হল যে, সেখানে তারা একত্রে মিলিত হতে পেরেছিল। তীত বলেছিলেন যে, করিন্থের ভাইয়েরা পৌলের চিঠির প্রতি উত্তম সাড়া দিয়েছে এবং তারা তাকে দেখার জন্য আকুলভাবে আকাঙ্ক্ষা করছে। পৌল যখন সেই সুসংবাদটা পেয়েছিলেন, তখন তিনি ‘আরও আনন্দিত হইয়াছিলেন।’—২ করি. ২:১২, ১৩; ৭:৫-৯.

২. (ক) করিন্থীয়দেরকে পৌল বিশ্বাস ও আনন্দ সম্বন্ধে কী লিখেছিলেন? (খ) আমরা কোন প্রশ্নগুলো বিবেচনা করব?

২ এর কিছু সময় পরেই, পৌল করিন্থীয়দের উদ্দেশে তার দ্বিতীয় চিঠি লিখেছিলেন। তিনি তাদেরকে বলেছিলেন: “আমরা যে তোমাদের বিশ্বাসের উপরে প্রভুত্ব করি, এমন নয়, বরং তোমাদের আনন্দের সহকারী হই; কারণ বিশ্বাসেই তোমরা দাঁড়াইয়া আছ।” (২ করি. ১:২৪) এর দ্বারা পৌল কী বুঝিয়েছিলেন? আর বর্তমানে খ্রিস্টান প্রাচীনদের কীভাবে সেই কথাগুলোর দ্বারা প্রভাবিত হওয়া উচিত?

আমাদের বিশ্বাস এবং আমাদের আনন্দ

৩. (ক) সেই সময় পৌল কী বোঝাতে চেয়েছিলেন, যখন তিনি লিখেছিলেন: “বিশ্বাসেই তোমরা দাঁড়াইয়া আছ”? (খ) কীভাবে বর্তমান দিনের প্রাচীনরা পৌলের উদাহরণ অনুকরণ করে?

৩ পৌল আমাদের উপাসনার অতীব গুরুত্বপূর্ণ দুটো দিক সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন—বিশ্বাস এবং আনন্দ। মনে করে দেখুন যে, বিশ্বাস সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন: “আমরা যে তোমাদের বিশ্বাসের উপরে প্রভুত্ব করি, এমন নয়, . . . কারণ বিশ্বাসেই তোমরা দাঁড়াইয়া আছ।” এই কথাগুলোর দ্বারা পৌল স্বীকার করেছিলেন যে, করিন্থের ভাইয়েরা তার অথবা কোনো মানুষের ওপর নয় বরং ঈশ্বরের ওপর তাদের নিজেদের বিশ্বাসের কারণেই দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। তাই, পৌল তার ভাইদের বিশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনো প্রয়োজনই বোধ করেননি এবং তা করার কোনো আকাঙ্ক্ষাও তার ছিল না। তিনি এই বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন যে, তারা হচ্ছে এমন বিশ্বস্ত খ্রিস্টান, যারা সঠিক বিষয়টা করতে চায়। (২ করি. ২:৩) বর্তমানে, প্রাচীনরা তাদের ভাইদের বিশ্বাস এবং ঈশ্বরকে সেবা করার বিষয়ে তাদের উদ্দেশ্যের ওপর আস্থা প্রকাশ করার মাধ্যমে পৌলের উদাহরণ অনুকরণ করে থাকে। (২ থিষল. ৩:৪) মণ্ডলীর জন্য কঠোর নিয়ম তৈরি করার পরিবর্তে, প্রাচীনরা শাস্ত্রীয় নীতি এবং যিহোবার সংগঠনের কাছ থেকে প্রাপ্ত নির্দেশনার ওপর নির্ভর করে থাকে। সর্বোপরি, বর্তমান দিনের প্রাচীনরা তাদের ভাইদের বিশ্বাসের ওপর প্রভুত্ব করে না।—১ পিতর ৫:২, ৩.

৪. (ক) সেই সময় পৌল কী বুঝিয়েছিলেন, যখন তিনি লিখেছিলেন: “আমরা . . . তোমাদের আনন্দের সহকারী”? (খ) কীভাবে বর্তমানে প্রাচীনরা পৌলের মনোভাব অনুকরণ করে?

৪ পৌল এও বলেছিলেন: “আমরা . . . তোমাদের আনন্দের সহকারী।” এই অভিব্যক্তিটির দ্বারা তিনি নিজের এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন। কেন আমরা এই উপসংহারে আসতে পারি? কারণ সেই একই চিঠিতে পৌল করিন্থীয়দের এইরকম দুজন সহযোগীর কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, যখন তিনি লিখেছিলেন: “যীশু . . . আমাদের দ্বারা, অর্থাৎ আমার ও সীলের ও তীমথিয়ের দ্বারা তোমাদের নিকটে প্রচারিত হইয়াছেন।” (২ করি. ১:১৯) তা ছাড়া, যখনই পৌল তার চিঠিগুলোতে “সহকারী” অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করতেন, সেটি সবসময়ই তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের নির্দেশ করত যেমন আপল্লো, আক্বিলা, প্রিষ্কা, তীমথিয়, তীত এবং অন্যান্য ব্যক্তি। (রোমীয় ১৬:৩, ২১; ১ করি. ৩:৬-৯; ২ করি. ৮:২৩) তাই, “আমরা . . . তোমাদের আনন্দের সহকারী,” এই কথা বলার মাধ্যমে পৌল করিন্থীয়দের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, তিনি এবং তার সঙ্গীরা মণ্ডলীর সমস্ত সদস্যের আনন্দ বৃদ্ধি করার জন্য তাদের যথাসাধ্য করতে ইচ্ছুক। বর্তমানেও, খ্রিস্টান প্রাচীনদের একই আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। ‘সানন্দে সদাপ্রভুর সেবা করিবার’ ব্যাপারে তাদের ভাইদের সাহায্য করার জন্য তারা তাদের যথাসাধ্য করতে ইচ্ছুক।—গীত. ১০০:২; ফিলি. ১:২৫.

৫. আমরা কোন প্রশ্নের উত্তর বিবেচনা করব এবং কোন বিষয়টা আমাদের গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত?

৫ সম্প্রতি, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত একদল উদ্যোগী ভাই ও বোনকে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল যে, “একজন প্রাচীনের কোন কথাগুলো এবং কাজগুলো আপনার আনন্দকে বৃদ্ধি করেছে?” এখন আমরা যখন সহবিশ্বাসীদের সেই দলের মন্তব্যগুলো বিবেচনা করব, তখন আপনি হয়তো যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতেন, সেটার সঙ্গে তাদের মন্তব্যগুলো তুলনা করে দেখুন। এ ছাড়া, আসুন আমরা সকলে এই বিষয়টাও গভীরভাবে চিন্তা করে দেখি যে, কীভাবে আমরা আমাদের স্থানীয় মণ্ডলীর আনন্দিত মনোভাবকে বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারি।a

‘প্রিয়া পর্ষীকে মঙ্গলবাদ কর’

৬, ৭. (ক) একটা কোন উপায়ে প্রাচীনরা যিশু, পৌল এবং ঈশ্বরের অন্যান্য দাসদের অনুকরণ করতে পারে? (খ) কেন আমাদের ভাইবোনদের নাম মনে রাখা তাদের আনন্দকে বৃদ্ধি করে?

৬ আমাদের ভাইবোনদের মধ্যে অনেকেই এই কথা বলে যে, একজন প্রাচীন যখন তাদের প্রতি ব্যক্তিগত আগ্রহ দেখান, তখন তাদের আনন্দ বৃদ্ধি পায়। একটা যে-মৌলিক উপায়ে প্রাচীনরা তা করে থাকে, সেটা হল দায়ূদ, ইলীহূ এবং যিশুর দ্বারা স্থাপিত উদাহরণ অনুসরণ করার মাধ্যমে। (পড়ুন, ২ শমূয়েল ৯:৬; ইয়োব ৩৩:১; লূক ১৯:৫.) যিহোবার এই প্রত্যেক দাস, ব্যক্তি-বিশেষের নাম ব্যবহার করার মাধ্যমে অন্যদের প্রতি আন্তরিক আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। পৌলও সহবিশ্বাসীদের নাম মনে রাখার এবং সেগুলো ব্যবহার করার গুরুত্বকে উপলব্ধি করেছিলেন। তিনি তার একটা চিঠির শেষে ২৫ জনেরও বেশি ভাই এবং বোনের নাম উল্লেখ করে তাদেরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে পর্ষী নামে একজন খ্রিস্টান বোনও ছিলেন, যার সম্বন্ধে পৌল বলেছিলেন: ‘প্রিয়া পর্ষীকে মঙ্গলবাদ কর।’—রোমীয় ১৬:৩-১৫.

৭ কোনো কোনো প্রাচীনের পক্ষে নাম মনে রাখা অত্যন্ত কঠিন। তা সত্ত্বেও, তারা যখন সেটা করার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা করে, তখন তারা মূলত তাদের সহবিশ্বাসীদের এই কথা বলে যে, ‘আপনারা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’ (যাত্রা. ৩৩:১৭) বিশেষভাবে সেই সময় প্রাচীনরা তাদের ভাইবোনদের আনন্দকে বৃদ্ধি করবে, যখন তারা প্রহরীদুর্গ অধ্যয়ন অথবা অন্যান্য সভায় মন্তব্য করার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর সময় তাদের নাম মনে রাখে।—তুলনা করুন, যোহন ১০:৩.

‘তিনি প্রভুতে অত্যন্ত পরিশ্রম করিয়াছেন’

৮. একটা কোন গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে পৌল যিহোবা এবং যিশুর দ্বারা স্থাপিত উদাহরণ অনুসরণ করেছিলেন?

৮ এ ছাড়া, পৌল আন্তরিক প্রশংসা করার দ্বারাও অন্যদের প্রতি তার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, যা সহবিশ্বাসীদের আনন্দ বৃদ্ধি করার আরেকটা মৌলিক উপায়। তাই, যে-চিঠিতে তিনি তার ভাইদের আনন্দের জন্য কাজ করার ব্যাপারে তার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিলেন, সেই একই চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন: “তোমাদের পক্ষে আমি বড়ই শ্লাঘা করি।” (২ করি. ৭:৪) প্রশংসার এই বাক্যগুলো নিশ্চিতভাবেই করিন্থের ভাইদের হৃদয়কে উষ্ণ করে তুলেছিল। অন্যান্য মণ্ডলীর প্রতিও পৌল একইরকম অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন। (রোমীয় ১:৮; ফিলি. ১:৩-৫; ১ থিষল. ১:৮) বস্তুতপক্ষে, রোমের মণ্ডলীর প্রতি লেখা তার চিঠিতে পর্ষীর কথা উল্লেখ করার পর, পৌল আরও বলেছিলেন: ‘তিনি প্রভুতে অত্যন্ত পরিশ্রম করিয়াছেন।’ (রোমীয় ১৬:১২) সেই বিশ্বস্ত বোনের জন্য প্রশংসার এই বাক্য কতই না উৎসাহজনক ছিল! অন্যদেরকে প্রশংসা করার সময় পৌল যিহোবা এবং যিশুর দ্বারা স্থাপিত উদাহরণ অনুসরণ করেছিলেন।—পড়ুন, মার্ক ১:৯-১১; যোহন ১:৪৭; প্রকা. ২:২, ১৩, ১৯.

৯. কেন প্রশংসা করা এবং প্রশংসা পাওয়া মণ্ডলীর আনন্দিত মনোভাবকে বৃদ্ধি করে?

৯ বর্তমানেও, প্রাচীনরা তাদের ভাইদের প্রতি তাদের উপলব্ধির অনুভূতি, কথার মাধ্যমে প্রকাশ করার গুরুত্ব বুঝতে পারে। (হিতো. ৩:২৭; ১৫:২৩) একজন প্রাচীন যখন তা করেন, তখন তিনি আসলে তার ভাইদের এইরকমটা বলেন: ‘আপনারা যা করেছেন, তা আমি লক্ষ করেছি। আমি আপনাদের জন্য চিন্তা করি।’ আর সহবিশ্বাসীদের নিশ্চিতভাবেই প্রাচীনদের আশ্বাসদায়ক কথা শোনার প্রয়োজন রয়েছে। ৫০-এর কোঠার মাঝামাঝি একজন বোন অনেকের মতো একই অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন: “কর্মক্ষেত্রে আমি খুব কমই প্রশংসাবাক্য শুনে থাকি। সেখানকার পরিবেশ একেবারে নিষ্প্রাণ এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ। তাই, মণ্ডলীর জন্য কিছু করার পর একজন প্রাচীন যখন আমাকে প্রশংসা করেন, তখন তা আমার জন্য অত্যন্ত সতেজতাদায়ক এবং অনুপ্রেরণাদায়ক হয়! এটা আমাকে বুঝতে সাহায্য করে যে, আমার স্বর্গীয় পিতা আমাকে ভালোবাসেন।” একক অভিভাবক হিসেবে তার দুই সন্তানকে মানুষ করে তুলছেন এমন একজন ভাইও একইরকম অনুভব করেছিলেন। সম্প্রতি, একজন প্রাচীন হৃদয় থেকে তাকে প্রশংসা করেছিলেন। এটা আমাদের ভাইয়ের ওপর কেমন প্রভাব ফেলেছিল? তিনি বলেন: “প্রাচীন ভাইয়ের কথাগুলো আমাকে সত্যিকারের উৎসাহ জুগিয়েছিল!” নিশ্চিতভাবেই, সহবিশ্বাসীদের আন্তরিকভাবে প্রশংসা করার দ্বারা একজন প্রাচীন তাদের মনোভাবকে উদ্দীপিত করে তোলেন এবং তাদের আনন্দকে বৃদ্ধি করেন। ফল স্বরূপ, এটা তাদেরকে ক্রমাগত জীবনের পথে চলার জন্য আরও শক্তি জোগাবে এবং তারা “ক্লান্ত হইবে না।”—যিশা. ৪০:৩১.

‘ঈশ্বরের মণ্ডলীকে পালন কর’

১০, ১১. (ক) প্রাচীনরা কীভাবে নহিমিয়ের দ্বারা স্থাপিত উদাহরণ অনুসরণ করতে পারে? (খ) কোন বিষয়টা একজন প্রাচীনকে পালকীয় সাক্ষাৎ করার সময় আত্মিক বর প্রদান করতে সাহায্য করবে?

১০ বিশেষভাবে অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটা উপায় কী, যেটার মাধ্যমে প্রাচীনরা তাদের ভাইদের প্রতি ব্যক্তিগত আগ্রহ দেখায় এবং মণ্ডলীর আনন্দ বৃদ্ধি করে? উৎসাহের প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলার জন্য নিজে থেকে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে। (পড়ুন, প্রেরিত ২০:২৮.) প্রাচীনরা যখন তা করে, তখন তারা প্রাচীনকালের আধ্যাত্মিক পালকদের অনুকরণ করে। উদাহরণস্বরূপ, লক্ষ করুন যে, বিশ্বস্ত অধ্যক্ষ নহিমিয় সেই সময় কী করেছিলেন, যখন তিনি দেখেছিলেন, তার কিছু যিহুদি ভাই আধ্যাত্মিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিবরণ বলে যে, তিনি অবিলম্বে উঠে তাদের উৎসাহিত করেছিলেন। (নহি. ৪:১৪) বর্তমানেও প্রাচীনরা একই বিষয় করতে ইচ্ছুক। তারা “উঠিয়া”—নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে—সহবিশ্বাসীদেরকে বিশ্বাসে দৃঢ় হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ব্যক্তিগত উৎসাহ প্রদান করার জন্য তারা ভাইবোনদের ঘরে সাক্ষাৎ করতে যায়, যদি পরিস্থিতি অনুমোদন করে। এইরকম পালকীয় সাক্ষাতের সময়, তারা ভাইবোনদের “কোন আত্মিক বর প্রদান” করতে চায়। (রোমীয় ১:১১) কোন বিষয়টা প্রাচীনদেরকে তা করার জন্য সাহায্য করবে?

১১ কোনো পালকীয় সাক্ষাৎ করার পূর্বে, একজন প্রাচীনের সেই ব্যক্তি সম্বন্ধে চিন্তা করার জন্য কিছুটা সময় করে নেওয়া প্রয়োজন, যার সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন। সেই ব্যক্তি কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর সঙ্গে লড়াই করছে? কোন বিষয়গুলো তাকে গেঁথে তুলতে পারে? কোন শাস্ত্রপদ অথবা বাইবেলের কোন চরিত্রের অভিজ্ঞতা তার পরিস্থিতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? আগে থেকেই এইরকম বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা একজন প্রাচীনকে অর্থহীন নয় বরং অর্থপূর্ণ আলোচনা করতে সাহায্য করবে। পালকীয় সাক্ষাতের সময়, একজন প্রাচীন যখন তার ভাই এবং বোনদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন, তখন তিনি তাদেরকে নিজেদের প্রকাশ করার সুযোগ করে দেন। (যাকোব ১:১৯) একজন বোন বলেছিলেন: “একজন প্রাচীন যখন মনোযোগ দিয়ে কথা শোনেন, তখন তা অত্যন্ত সান্ত্বনাদায়ক।”—লূক ৮:১৮.

১২. মণ্ডলীর মধ্যে কাদের উৎসাহ প্রয়োজন এবং কেন?

১২ কারা পালকীয় সাক্ষাৎ থেকে উপকার লাভ করবে? পৌল তার সহখ্রিস্টান প্রাচীনদেরকে ‘সমস্ত পালের বিষয়ে সাবধান হইবার’ উপদেশ দিয়েছিলেন। নিশ্চিতভাবেই, মণ্ডলীর সমস্ত সদস্যের উৎসাহ লাভ করার প্রয়োজন রয়েছে আর এর অন্তর্ভুক্ত সেই প্রকাশক এবং অগ্রগামীরাও, যারা বছরের পর বছর ধরে বিশ্বস্তভাবে তাদের পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছে। কেন তাদের আধ্যাত্মিক পালকদের সমর্থনের প্রয়োজন রয়েছে? কারণ, মাঝে মাঝে আধ্যাত্মিকভাবে দৃঢ় এই ব্যক্তিরাও দুষ্ট জগতের কাছ থেকে আসা চাপের কারণে প্রায় ভারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কেন এমনকী ঈশ্বরের একজন শক্তিশালী দাসেরও মাঝে মাঝে একজন সঙ্গীর কাছ থেকে সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তা বোঝার জন্য আসুন আমরা রাজা দায়ূদের জীবনের একটা ঘটনা বিবেচনা করে দেখি।

‘অবীশয় তাঁহার সাহায্য করিলেন’

১৩. (ক) যিশ্‌বী-বোনব দায়ূদের কোন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছিলেন? (খ) কীভাবে অবীশয় দায়ূদকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন?

১৩ যুবক দায়ূদ রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার কিছু সময় পরই রফায়ীয় বংশের একজন দৈত্যাকৃতি ব্যক্তি গলিয়াতের সম্মুখীন হয়েছিলেন। সাহসী দায়ূদ সেই দৈত্যাকৃতি ব্যক্তিকে বধ করেছিলেন। (১ শমূ. ১৭:৪, ৪৮-৫১; ১ বংশা. ২০:৫, ৮) কয়েক বছর পর, পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময়, দায়ূদ আবারও এক দৈত্যাকৃতি ব্যক্তির মুখোমুখি হয়েছিলেন। তার নাম ছিল যিশ্‌বী-বোনব আর তিনিও রফায়ীয় বংশের একজন ব্যক্তি ছিলেন। (২ শমূ. ২১:১৬) কিন্তু, সেই সময় এই দৈত্যাকৃতি ব্যক্তি দায়ূদকে প্রায় বধ করতে যাচ্ছিলেন। কেন? এই কারণে নয় যে, দায়ূদ সাহস হারিয়ে ফেলেছিলেন বরং তিনি তার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। বিবরণ জানায়: “দায়ূদ ক্লান্ত হইলেন।” যিশ্‌বী-বোনব যখনই লক্ষ করেছিলেন যে, দায়ূদ শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন, তখনই তিনি ‘দায়ূদকে আঘাত করিতে মনস্থ করিলেন।’ কিন্তু, সেই দৈত্যাকৃতি ব্যক্তি তার অস্ত্র দিয়ে দায়ূদকে আঘাত করার ঠিক আগে, “সরূয়ার পুত্ত্র অবীশয় তাঁহার [দায়ূদের] সাহায্য করিয়া সেই পলেষ্টীয়কে আঘাত ও বধ করিলেন।” (২ শমূ. ২১:১৫-১৭) অল্পের জন্য দায়ূদ রক্ষা পেয়েছিলেন! অবীশয় যে দায়ূদের ওপর দৃষ্টি রেখেছেন এবং দায়ূদের জীবন ঝুঁকির মুখে থাকার সময় তাকে সাহায্য করার জন্য দ্রুত এগিয়ে এসেছেন, সেইজন্য দায়ূদ তার প্রতি কত কৃতজ্ঞই না হয়েছিলেন! এই ঘটনা থেকে আমরা কোন শিক্ষাগুলো লাভ করতে পারি?

১৪. (ক) কীভাবে আমরা গলিয়াৎতুল্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোকে জয় করতে পারি? (খ) কীভাবে প্রাচীনরা অন্যদেরকে তাদের শক্তি এবং আনন্দ ফিরে পাওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে? একটা উদাহরণ দিন।

১৪ শয়তান এবং তার প্রতিনিধিরা আমাদের পথে বিভিন্ন বাধা নিয়ে আসা সত্ত্বেও, পৃথিবীব্যাপী যিহোবার লোক হিসেবে আমরা আমাদের পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বড়ো বড়ো প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছি কিন্তু যিহোবার ওপর পূর্ণ নির্ভরতা বজায় রেখে আমরা সেই ‘গলিয়াৎতুল্য’ প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর সঙ্গে লড়াই করেছি এবং সেগুলোকে জয় করেছি। কিন্তু, মাঝে মাঝে এই জগতের চাপের সঙ্গে ক্রমাগত লড়াই করার ফলে আমরা ক্লান্ত এবং নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ি। সেই দুর্বল অবস্থায় আমরা অরক্ষিত থাকি আর এমন চাপগুলোর দ্বারা ‘আঘাতপ্রাপ্ত’ হওয়ার বিপদের মুখে থাকি, যেগুলো অন্য সময়ে হলে আমরা হয়তো সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারতাম। এই ধরনের মুহূর্তগুলোতে, একজন প্রাচীনের দেওয়া সময়োপযোগী সমর্থন আমাদের আনন্দ এবং শক্তি ফিরে পেতে সাহায্য করতে পারে, যেমনটা অনেকের বেলায় হয়েছে। ৬০-এর কোঠার মাঝামাঝি একজন অগ্রগামী বোন বলেছিলেন: “কিছুদিন আগে, আমার শরীর তেমন ভালো ছিল না এবং ক্ষেত্রের পরিচর্যায় যেতে আমার ক্লান্ত লাগত। একজন প্রাচীন আমার দুর্বল অবস্থা লক্ষ করেছিলেন এবং আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। বাইবেলের একটা ঘটনার ওপর ভিত্তি করে আমাদের মধ্যে এক উৎসাহজনক কথাবার্তা হয়েছিল। তিনি আমাকে যে-পরামর্শ দিয়েছিলেন, আমি তা কাজে লাগিয়েছিলাম এবং উপকার লাভ করেছিলাম।” তিনি আরও বলেছিলেন: “এটা কতই না প্রেমময় যে, সেই প্রাচীন আমার দুর্বল অবস্থা লক্ষ করেছিলেন এবং আমাকে সাহায্য করেছিলেন!” হ্যাঁ, এটা জানা উৎসাহজনক যে, আমাদের জন্য এমন প্রাচীনরা রয়েছে, যারা আমাদের ওপর এক প্রেমপূর্ণ দৃষ্টি রাখে এবং প্রাচীনকালের অবীশয়ের মতো ‘আমাদিগকে সাহায্য করিবার’ জন্য প্রস্তুত থাকে।

‘তোমাদের প্রতি আমার যে প্রেম আছে, তাহা জ্ঞাত হও’

১৫, ১৬. (ক) কেন পৌলকে সহবিশ্বাসীরা অত্যন্ত ভালোবাসত? (খ) কেন আমরা আমাদের মণ্ডলীর যত্নশীল প্রাচীনদের ভালোবাসি?

১৫ মেষপালক হওয়ার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম জড়িত। প্রাচীনরা ঈশ্বরের পালের প্রতি চিন্তিত থাকায় তাদের জন্য প্রার্থনা করার অথবা সহবিশ্বাসীদের আধ্যাত্মিক সাহায্য প্রদান করার জন্য মাঝে মাঝে নিদ্রাহীন রাত কাটায়। (২ করি. ১১:২৭, ২৮) এরপরও, প্রাচীনরা পূর্ণরূপে এবং আনন্দের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করে, যেমনটা পৌল করেছিলেন। তিনি করিন্থীয়দের উদ্দেশে লিখেছিলেন: “আমি অতিশয় আনন্দের সহিত তোমাদের প্রাণের নিমিত্ত ব্যয় করিব, এবং ব্যয়িতও হইব।” (২ করি. ১২:১৫) বস্তুতপক্ষে, ভাইদের প্রতি প্রেমের বশবর্তী হয়ে পৌল তাদেরকে শক্তিশালী করার জন্য নিজেকে পুরোপুরিভাবে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। (পড়ুন, ২ করিন্থীয় ২:৪; ফিলি. ২:১৭; ১ থিষল. ২:৮) তাই, এতে অবাক কিছুই নেই যে, ভাইয়েরা পৌলকে অত্যন্ত ভালোবাসত!—প্রেরিত ২০:৩১-৩৮.

১৬ বর্তমানে ঈশ্বরের দাস হিসেবে আমরাও আমাদের যত্নশীল খ্রিস্টান প্রাচীনদের ভালোবাসি এবং তাদেরকে দিয়েছেন বলে আমাদের ব্যক্তিগত প্রার্থনায় যিহোবাকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের প্রতি ব্যক্তিগত আগ্রহ দেখানোর মাধ্যমে তারা আমাদের আনন্দকে বৃদ্ধি করে। তাদের পালকীয় সাক্ষাতের ফলে আমরা উন্নতি লাভ করি। এ ছাড়া, আমরা এই কারণেও কৃতজ্ঞ যে, তারা আমাদের সেই মুহূর্তগুলোতে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকে, যখন আমরা এই জগতের চাপগুলোর কারণে ভারগ্রস্ত হয়ে পড়ি। হ্যাঁ, এই ধরনের মনোযোগী খ্রিস্টান প্রাচীনরা সত্যিই ‘আমাদের আনন্দের সহকারী।’

[পাদটীকা]

a সেই একই ভাইবোনদের এই প্রশ্নও জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, “একজন প্রাচীনের কোন গুণকে আপনি সবচেয়ে মূল্যবান বলে মনে করেন?” তাদের মধ্যে অধিকাংশই উত্তর দিয়েছিল, “বন্ধুত্বপরায়ণতা।” এই গুরুত্বপূর্ণ গুণটি এই পত্রিকার পরবর্তী কোনো সংখ্যায় বিবেচনা করা হবে।

[২৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

[৩০ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

পূর্বপ্রস্তুতি একজন প্রাচীনকে পালকীয় সাক্ষাতের সময় “কোন আত্মিক বর প্রদান” করতে সাহায্য করে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার