ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • wp16 নং ২ পৃষ্ঠা ৮-১১
  • যেভাবে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি কাটিয়ে ওঠা যায়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যেভাবে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি কাটিয়ে ওঠা যায়
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (জনসাধারণের সংস্করণ)—২০১৬
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • নিরাপত্তাহীন পরিবেশে বড়ো হয়ে ওঠার বিভিন্ন সমস্যা
  • ঈশ্বর সত্যিই আমাদের জন্য চিন্তা করেন
  • নিরাপদবোধ করার তিনটে উপায়
  • প্রত্যেকের জন্য নিরাপত্তা
  • স্থায়ী নিরাপত্তার এক জীবন
    ১৯৯৮ সচেতন থাক!
  • আপনি একা নন, যিহোবা আপনার সঙ্গে রয়েছেন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২১
  • যিহোবা সত্যিই আপনাকে ভালোবাসেন!
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২১
  • বাইবেল জীবনকে পরিবর্তন করে
    প্রহরীদুর্গ: বাইবেল জীবনকে পরিবর্তন করে
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (জনসাধারণের সংস্করণ)—২০১৬
wp16 নং ২ পৃষ্ঠা ৮-১১
একজন বাবা তার ছাটা মেয়েকে ধরে রয়েছন

যেভাবে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি কাটিয়ে ওঠা যায়

বোধ হয়, সদ্যোজাত শিশুর মতো অসহায় আর কেউ নেই। আমরা যখন পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলাম, তখন নিরাপত্তার জন্য আমরা পুরোপুরিভাবে আমাদের বাবা-মায়ের উপর নির্ভর করতাম। আমরা যখন হাঁটতে শিখেছিলাম, তখন অপরিচিত কাউকে দেখলে মনে হতো, যেন বিশাল বিশাল দৈত্য আসছে। বাবা-মা আমাদের কাছাকাছি না থাকলে, আমরা তাদের দেখে ভয় পেয়ে যেতাম। কিন্তু আমরা যখন আমাদের বাবা কিংবা মায়ের হাত চেপে ধরতাম, তখন আমরা নিরাপদবোধ করতাম।

ছেলেবেলায় বাবা-মায়ের ভালোবাসা ও উৎসাহের উপর আমাদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নির্ভর করত। বাবা-মা যে আমাদের ভালোবাসেন, তা উপলব্ধি করার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হতাম যে, আমরা নিরাপদে রয়েছি। তারা যখন বলতেন, আমরা ভালো করছি, তখন আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যেত আর আমরা আরও উন্নতি করতাম।

বড়ো হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে, ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও আমাদের নিরাপত্তা জোগাত। তাদের সান্নিধ্যে আমরা স্বস্তি অনুভব করতাম এবং স্কুলে তারা আমাদের আশেপাশে থাকলে, আমাদের আতঙ্ক কিছুটা কমে যেত।

এতক্ষণ যা বলা হল, সেটা অবশ্য আদর্শ ছেলেবেলার বর্ণনা। এমন অনেকে রয়েছে, যাদের তেমন কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব নেই এবং খুব কম ছেলে-মেয়েই তাদের বাবা-মায়ের সমর্থন পেয়ে বড়ো হয়। মনিকারa অভিজ্ঞতা তা তুলে ধরে। তিনি বলেন, “আমি যখন দেখি কোনো পরিবার একসঙ্গে কোনো কাজ করছে, তখন আমি চিন্তা করি, ‘কত ভালো হতো, যদি আমিও ছোটোবেলায় এ-রকম কিছু উপভোগ করতে পারতাম!’” আপনিও হয়তো একইরকম অনুভব করেন।

নিরাপত্তাহীন পরিবেশে বড়ো হয়ে ওঠার বিভিন্ন সমস্যা

সম্ভবত আপনিও আত্মবিশ্বাসের অভাব নিয়ে বড়ো হয়ে উঠেছেন। হতে পারে, আপনি কারো কাছ থেকে খুব বেশি ভালোবাসা ও উৎসাহ পাননি। আপনি হয়তো এমন এক পরিবেশে বড়ো হয়ে উঠেছেন, যেখানে আপনার বাবা-মায়ের মধ্যে দিনরাত অশান্তি লেগে থাকত, এর ফলে তারা শেষপর্যন্ত আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। সেই পরিণতির জন্য আপনি হয়তো ভুলভাবে নিজেকে দোষী মনে করেন। এর থেকেও খারাপ বিষয় হল, আপনার বাবা অথবা মা হয়তো আপনাকে গালিগালাজ করতেন কিংবা শারীরিক অত্যাচার করতেন।

নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা একজন সন্তানের প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে? কেউ কেউ কিশোর বয়সেই নেশাকর ওষুধ কিংবা অতিরিক্ত মদ্যপান করতে শুরু করে। আবার অনেকে অন্যদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য কুসংসর্গে জড়িয়ে পড়ে। ভালোবাসা ও স্নেহ পাওয়ার আশায় এই কিশোর-কিশোরীরা তাড়াহুড়ো করে রোমান্টিক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক টেকে না আর সেই কারণে তারা আরও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।

কোনো কোনো কিশোর-কিশোরী এই ধরনের বড়ো বড়ো ফাঁদ এড়াতে পারলেও হয়তো নিজেদের মধ্যে অযোগ্যতার অনুভূতি নিয়ে বেড়ে ওঠে। অনিতা ব্যাখ্যা করেন, “আমার দ্বারা কিচ্ছু হবে না, এই কথাটা মায়ের কাছ থেকে বার বার শুনতে শুনতে আমার মনে হয়েছিল, আমি সত্যিই অযোগ্য। আমার মা কখনো আমার প্রশংসা করেছে অথবা ভালোবাসা দেখিয়েছে বলে আমার মনে পড়ে না।”

আমরা যেভাবে বড়ো হয়ে উঠি, সেটাই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার একমাত্র কারণ নয়। দুঃখজনক বিবাহবিচ্ছেদ, বৃদ্ধ বয়সের বিভিন্ন সমস্যা, এমনকী নিজের চেহারা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করার কারণে আমরা হয়তো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারি। কারণ যা-ই হোক না কেন, এগুলো আমাদের আনন্দ কেড়ে নিতে পারে এবং অন্যদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে নষ্ট করে দিতে পারে। এই অনুভূতিগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য আমরা কী করতে পারি?

ঈশ্বর সত্যিই আমাদের জন্য চিন্তা করেন

আমাদের জানা উচিত যে, সাহায্যের পথ খোলা রয়েছে। এমন একজন রয়েছেন, যিনি আমাদের সাহায্য করতে চান এবং সেই ক্ষমতাও তাঁর রয়েছে আর তিনি হলেন স্বয়ং ঈশ্বর।

ঈশ্বর তাঁর ভাববাদী যিশাইয়ের মাধ্যমে এই বার্তা জানিয়েছিলেন: “ভয় করিও না, কারণ আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে আছি; ব্যাকুল হইও না, কারণ আমি তোমার ঈশ্বর; আমি তোমাকে পরাক্রম দিব; আমি তোমার সাহায্য করিব; আমি আপন ধর্ম্মশীলতার দক্ষিণ হস্ত দ্বারা তোমাকে ধরিয়া রাখিব।” (যিশাইয় ৪১:১০, ১৩) এটা চিন্তা করা কতই-না সান্ত্বনাদায়ক যে, যিহোবা রূপকভাবে আমাদের হাত ধরে নিয়ে যেতে চান! আমাদের ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই!

বাইবেলে ঈশ্বরের এমন উপাসকদের সম্বন্ধে বর্ণনা করা হয়েছে, যারা দুশ্চিন্তার সময়েও ঈশ্বরের হাত ধরতে শিখেছিলেন। সন্তান না হওয়ায় একসময় শমূয়েলের মা হান্না খুবই ভেঙে পড়েছিলেন। বন্ধ্যা হওয়ায় প্রায়ই তিনি উপহাসের শিকার হতেন। ফলে, মাঝেমধ্যে হান্না খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে কান্নাকাটি করতেন। (১ শমূয়েল ১:৬, ৮) কিন্তু হৃদয় উজাড় করে ঈশ্বরের কাছে নিজের মনের কথা বলার পর হান্না আর বিষণ্ণ থাকেননি।—১ শমূয়েল ১:১৮.

গীতরচক দায়ূদও একেক সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন। বহু বছর ধরে রাজা শৌল তাকে তন্নতন্ন হয়ে খুঁজেছিলেন। দায়ূদ বেশ কয়েক বার মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। কখনো কখনো তিনি মনে করতেন, তিনি সমস্যার জালে জড়িয়ে পড়েছেন। (গীতসংহিতা ৫৫:৩-৫; ৬৯:১) তা সত্ত্বেও তিনি লিখেছিলেন: “আমি শান্তিতে শয়ন করিব, নিদ্রাও যাইব; কেননা, হে সদাপ্রভু তুমিই একাকী আমাকে নির্ভয়ে বাস করিতে দিতেছ।”—গীতসংহিতা ৪:৮.

হান্না ও দায়ূদ উভয়ই যিহোবার উপর তাদের চিন্তার ভার অর্পণ করেছিলেন এবং তারা বুঝতে পেরেছিলেন, যিহোবা তাদের ধরে রেখেছেন। (গীতসংহিতা ৫৫:২২) কীভাবে বর্তমানে আমরাও একই কাজ করতে পারি?

নিরাপদবোধ করার তিনটে উপায়

১. যিহোবাকে পিতা হিসেবে মনে করে তাঁর উপর আস্থা রাখতে শিখুন।

একজন ব্যক্তি বাইবেল পড়ার সময় তা নিয়ে ধ্যান করছন

যিশু আমাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন, যেন আমরা তাঁর পিতা অর্থাৎ “একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে” জানি। (যোহন ১৭:৩) প্রেরিত পৌল আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, “তিনি [ঈশ্বর] আমাদের কাহারও হইতে দূরে নহেন।” (প্রেরিত ১৭:২৭) যাকোব লিখেছিলেন, “ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন।”—যাকোব ৪:৮.

আমাদের একজন স্বর্গীয় পিতা রয়েছেন, যিনি আমাদের ভালোবাসেন ও আমাদের জন্য চিন্তা করেন। এটা জানা দুশ্চিন্তা কাটিয়ে ওঠার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটা ঠিক যে, এই আস্থা গড়ে তোলার জন্য সময়ের প্রয়োজন কিন্তু অনেকে দেখেছে, তা করা সত্যিই উপকারজনক। কাজল বলেন, “পিতা হিসেবে যিহোবাকে পেয়ে আমার মনে হয়, শেষপর্যন্ত আমি এমন একজন ঈশ্বরকে খুঁজে পেয়েছি, যাঁকে আমি আমার মনের কথা জানাতে পারি। এটা আমাকে খুবই সান্ত্বনা দেয়।”

রত্না নিজের কথা স্মরণ করে বলেন, “বাবা-মা যখন আমাকে একা রেখে চলে গিয়েছিলেন, তখন একমাত্র যিহোবাই আমাকে নিরাপদবোধ করতে সাহায্য করেছিলেন। আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারি এবং সমস্যায় পড়লে তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে পারি। আর তিনি আমাকে সাহায্য করেন।”b

২. আধ্যাত্মিক পরিবারের মধ্যে থাকুন।

কিংডম হলে কথাবার্তা চলছ

যিশু শিক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁর শিষ্যরা যেন একে অন্যকে ভাই ও বোন হিসেবে দেখে। তিনি তাদের বলেছিলেন, “তোমরা সকলে ভ্রাতা।” (মথি ২৩:৮) তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর প্রকৃত শিষ্যরা যেন একে অন্যকে ভালোবাসে এবং এক বিশাল আধ্যাত্মিক পরিবারের অংশ হয়ে ওঠে।—মথি ১২:৪৮-৫০; যোহন ১৩:৩৫.

যিহোবার সাক্ষিদের মণ্ডলীগুলো আন্তরিকভাবে এক প্রকৃত আধ্যাত্মিক পরিবারের মতো ভালোবাসা ও সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে। (ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫) অনেকে দেখেছে, মণ্ডলীর সভাগুলো তাদের আবেগগত ক্ষতের উপর উপশমকারী মলমের মতো কাজ করে।

নিজের পরিস্থিতির কথা মনে করে ইলা বলেন, “স্থানীয় মণ্ডলীতে আমার একজন বিশেষ বান্ধবী ছিল, যে আমার কষ্ট বুঝত। সে মন দিয়ে আমার কথা শুনত, আমার সঙ্গে বাইবেল পড়ত এবং প্রার্থনা করত। সে সবসময় লক্ষ রাখত, যেন আমি কখনো নিজেকে একা মনে না করি। তার কাছে আমি আমার মনের কথা বলে নিজেকে হালকা মনে করতাম। সে আমাকে সাহায্য করেছিল বলে আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ আর সেই কারণেই আমি নিজেকে আরও বেশি নিরাপদ বলে মনে করতে শুরু করি।” পূর্বে উল্লেখিত রত্না এইরকম মন্তব্য করেন, “আমি মণ্ডলীর মধ্যে ‘একজন বাবা ও একজন মা’ খুঁজে পেয়েছিলাম। তারা আমাকে ভালোবাসতেন এবং তাদের সান্নিধ্যে থাকার ফলে আমি নিরাপত্তা খুঁজে পেয়েছি।”

৩. অন্যদের প্রতি প্রেম ও দয়া দেখান।

অন্যদের প্রতি প্রেম ও দয়া দেখানো স্থায়ী বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। যিশু বলেছিলেন: “গ্রহণ করা অপেক্ষা বরং দান করা ধন্য হইবার বিষয়।” (প্রেরিত ২০:৩৫) এতে কোনো সন্দেহ নেই, আমরা অন্যদের প্রতি যত বেশি ভালোবাসা দেখাব, তারাও আমাদের প্রতি তত বেশি ভালোবাসা দেখাবে। যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন: “দেও, তাহাতে তোমাদিগকেও দেওয়া যাইবে।”—লূক ৬:৩৮.

আমরা যখন অন্যদের ভালোবাসি এবং অন্যেরা যখন আমাদের ভালোবাসে, তখন আমরা আরও বেশি নিরাপদবোধ করি। বাইবেল বলে, “প্রেম কখনও শেষ হয় না।” (১ করিন্থীয় ১৩:৮) মেঘা স্বীকার করেন, “আমি নিজের সম্বন্ধে অযথা কিছু নেতিবাচক চিন্তাভাবনা মনের মধ্যে পুষে রেখেছিলাম। এই চিন্তাভাবনা থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য আমি অন্যদের সাহায্য করি এবং নিজের বিষয়ে ততটা ভাবি না। অন্যদের সাহায্য করার মাধ্যমে আমি সবসময় পরিতৃপ্তিবোধ করি।”

একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি ওয়াকার ধরে হাঁটছন এবং একজন অপবয়সি ভাই তাকে সাহায্য করছ

প্রত্যেকের জন্য নিরাপত্তা

উপরোক্ত উপায়গুলো ম্যাজিকের মতো কাজ করে না, যার মাধ্যমে রাতারাতি আপনার সমস্যা চিরকালের জন্য দূর হয়ে যাবে। কিন্তু, এই উপায়গুলো কাজে লাগালে বিরাট পরিবর্তন আসতে পারে। কাজল স্বীকার করেন, ‘মাঝে মাঝে আমি এখনও দুশ্চিন্তায় ভুগি। কিন্তু এখন আমি অযোগ্যতার অনুভূতি কাটিয়ে উঠেছি। আমি জানি ঈশ্বর আমার জন্য চিন্তা করেন। আমার বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব রয়েছে, যাদের মাঝে আমি নিরাপদবোধ করি।’ রত্না একইরকম মনে করেন। তিনি বলেন, “একেক সময় বিষণ্ণতা আমাকে ঘিরে ধরে। কিন্তু আধ্যাত্মিক ভাই-বোনদের মাঝে থাকায় আমি তাদের কাছে পরামর্শ চাইতে পারি। তারা আমাকে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে সাহায্য করে। সবচেয়ে বড়ো কথা হল, আমার একজন স্বর্গীয় পিতা রয়েছেন, যাঁর সঙ্গে আমি প্রত্যেক দিন কথা বলি। আর তা আমাকে বিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।”

বাইবেল এমন এক আসন্ন নতুন জগৎ সম্বন্ধে বর্ণনা করে, যেখানে আমরা প্রত্যেকে নিরাপদবোধ করব

এ ছাড়া, একটা চিরস্থায়ী সমাধানের উপায় রয়েছে। বাইবেল এমন এক আসন্ন নতুন জগৎ সম্বন্ধে বর্ণনা করে, যেখানে আমরা প্রত্যেকে নিরাপদবোধ করব। ঈশ্বরের বাক্য প্রতিজ্ঞা করে, “প্রত্যেকে আপন আপন দ্রাক্ষালতার ও আপন আপন ডুমুরবৃক্ষের তলে বসিবে; কেহ তাহাদিগকে ভয় দেখাইবে না।” (মীখা ৪:৪) সেই সময়, কেউ আমাদের ভয় দেখাবে না কিংবা ক্ষতি করবে না। এমনকী মনের গভীরে থাকা তিক্ত অভিজ্ঞতাগুলোও আর “স্মরণে থাকিবে না।” (যিশাইয় ৬৫:১৭, ২৫) ঈশ্বর ও তাঁর পুত্র খ্রিস্ট যিশু “ধার্ম্মিকতা” প্রতিষ্ঠা করবেন। এর ফলে “চিরকালের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা” থাকবে।—যিশাইয় ৩২:১৭, ইজি-টু-রিড ভারশন। ▪ (w16-E No.1)

a সমস্ত নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

b যিহোবার সাক্ষিরা সেইসমস্ত ব্যক্তিদের বিনা মূল্যে বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়, যারা যিহোবার নিকটবর্তী হতে চায়।

নিরাপত্তাহীনতার বিভিন্ন দিক

“আমার বাবা প্রায়ই অতিরিক্ত মদ খেতেন আর তিনি যখন রেগে যেতেন, তখন তার রূপ পালটে যেত। তিনি হিংস্র পশুর মতো কোনো দয়ামায়া না দেখিয়ে আমাকে আক্রমণ করতেন। আমি ভয়ে কুঁকড়ে গিয়ে লুকানোর চেষ্টা করতাম, যাতে তিনি আমাকে দেখতে না পান। এই দুঃস্বপ্ন প্রতিদিন আমাকে তাড়া করে বেড়াত।”—কাজল তার ছোটোবেলার কথা স্মরণ করে বলেন।

“আমি মনে করতাম, আমি কাউকেই বিশ্বাস করতে পারব না। মনে হতো, আমি যেন পাহাড়ের চূড়ায় হারিয়ে গিয়ে সাহায্যের আশায় চিৎকার করছি কিন্তু সেখানে আমার কথা শোনার মতো কেউ নেই। সেখানে এমন কেউ নেই, যে আমাকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে পারে।”—ইলা, যার সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে।

“আমার বাবা প্রায়ই চিৎকার করে বলতেন, ‘অপদার্থ কোথাকার! তুই কারো কাছ থেকে ভালোবাসা পাবি না।’ আমি যে অপদার্থ নই আর অন্যেরা যে আমাকে সত্যিই পছন্দ করে, তা নিজেকে বিশ্বাস করাতে আমার অনেক বছর সময় লেগেছিল। আমি হীনমন্যতায় ভুগতাম আর এই আশায় থাকতাম, কেউ না কেউ আমাকে ভালোবাসবে কিন্তু সে আশা আমার পূরণ হয়নি।” —মনোজ, যার বাবা তাকে অপমান করতেন।

“কখনো কখনো আমি কোনো মহিলার দিকে তাকিয়ে ভাবি, তিনি কত সুন্দর, ঠিক একটা ফুলের মতো! লোকে এ-রকম সুন্দর ফুলকে তাদের ঘরে রাখতে চায়। কিন্তু আমি ঠিক কোনো আগাছার মতো, এতই সাধারণ যে লোকে আমার দিকে ঘুরেও তাকাতে চাইবে না।”—মেঘা, যিনি অযোগ্যতার অনুভূতির সঙ্গে লড়াই করছেন।

“মাত্র ১২ বছর বয়সে আমার উপর দুই বোনের দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে বাবা-মা আমাদের ছেড়ে বিদেশে চলে যান। আমার নিজেকে খুব একলা লাগত। আমি চাইতাম কেউ আমার যত্ন নেবে, ভালো কাজের জন্য আমার প্রশংসা করবে। আমার মনে হতো, আমি যেন একটা ঘন অন্ধকার জঙ্গলে হারিয়ে গিয়েছি। যদিও আমি দিনের-পর-দিন সংসারের বোঝা টানছিলাম, তবুও আমি সেই জঙ্গল থেকে বের হওয়ার রাস্তা খুঁজছিলাম। আমি নিরাপদবোধ করতে এবং সুখী হতে চেয়েছিলেন।”—রত্না, যারা বাবা-মা বিদেশে কাজ করতেন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার