ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w16 আগস্ট পৃষ্ঠা ৮-১২
  • বিয়ে​—⁠এর উৎস এবং উদ্দেশ্য

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বিয়ে​—⁠এর উৎস এবং উদ্দেশ্য
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • বিয়ে হল যিহোবার উদ্দেশ্যের এক অংশ
  • বিয়ে—আদমের সময় থেকে জলপ্লাবন পর্যন্ত
  • বিয়ে—জলপ্লাবনের সময় থেকে যিশুর দিন পর্যন্ত
  • আপনার সাথির সঙ্গে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না
  • খ্রিস্টানদের মধ্যে বিয়ে
  • বিয়ে সম্বন্ধে ঈশ্বরের ব্যবস্থার প্রতি সম্মান দেখান
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৮
  • বিয়ে—প্রেমময় ঈশ্বরের কাছ থেকে এক উপহার
    “ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর”
  • খ্রিস্টীয় বিয়েকে যেভাবে সফল করে তোলা যায়
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • বিবাহের মধ্যে “ত্রিগুণ সূত্র” বজায় রাখুন
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
w16 আগস্ট পৃষ্ঠা ৮-১২
এদন উদ্যানে আদম ও হবা

বিয়ে —এর উৎস এবং উদ্দেশ্য

“সদাপ্রভু ঈশ্বর কহিলেন, মনুষ্যের একাকী থাকা ভাল নয়, আমি তাহার জন্য . . . সহকারিণী নির্ম্মাণ করি।”—আদি. ২:১৮.

গান সংখ্যা: ৩৬, ১১

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

  • কেন এটা বলা যেতে পারে, বিয়ে হল ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দান?

  • আদমের সময় থেকে যিশুর দিন পর্যন্ত বিয়ের ইতিহাস সম্বন্ধে আপনি কীভাবে বর্ণনা করবেন?

  • একজন খ্রিস্টান বিয়ে করবেন কি না, তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে কী তাকে সাহায্য করতে পারে?

১, ২. (ক) কীভাবে বৈবাহিক ব্যবস্থা শুরু হয়েছিল? (খ) বিয়ে সম্বন্ধে প্রথম পুরুষ ও নারী কী বুঝতে পেরেছিলেন? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

বিয়ে হচ্ছে লোকেদের জীবনের খুব স্বাভাবিক এক বিষয়। কিন্তু, কীভাবে বৈবাহিক ব্যবস্থা শুরু হয়েছিল আর এর উদ্দেশ্য কী? তা জানা আমাদেরকে বিয়ে ও এর আশীর্বাদ সম্বন্ধে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে সাহায্য করবে। ঈশ্বর প্রথম মানব আদমকে সৃষ্টি করেছিলেন আর এরপর তাকে বিভিন্ন পশুপাখির নাম রাখতে বলেছিলেন। আদম তখন লক্ষ করেছিলেন, সমস্ত পশুপাখির সঙ্গী আছে, “কিন্তু মনুষ্যের জন্য তাঁহার অনুরূপ সহকারিণী পাওয়া গেল না।” তাই, ঈশ্বর আদমকে গভীর ঘুমে মগ্ন করেছিলেন এবং তার পাঁজরের একটা হাড় নিয়ে একজন নারীকে সৃষ্টি করেছিলেন। যিহোবা এরপর সেই নারীকে আদমের কাছে নিয়ে এসেছিলেন আর সেই নারী আদমের স্ত্রী হয়েছিলেন। (পড়ুন, আদিপুস্তক ২:২০-২৪.) তাই আমরা বুঝতে পারি, বিয়ে হল যিহোবার কাছ থেকে এক দান।

২ এর অনেক বছর পর, যিশু এদন উদ্যানে বলা যিহোবার কথাগুলো পুনরাবৃত্তি করেছিলেন: “মনুষ্য পিতা ও মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে, এবং সে দুই জন একাঙ্গ হইবে।” (মথি ১৯:৪, ৫) ঈশ্বর যেহেতু প্রথম নারীকে সৃষ্টি করার জন্য আদমের দেহ থেকে একটা পাঁজর নিয়েছিলেন, তাই সেই দম্পতি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিলেন, তাদের বন্ধন কতটা দৃঢ় হবে। যিহোবা কখনো এটা চাননি, একজন স্বামী ও স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদ করবে অথবা একজন ব্যক্তির একইসময়ে একাধিক সাথি থাকবে।

বিয়ে হল যিহোবার উদ্দেশ্যের এক অংশ

৩. বিয়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য কী ছিল?

৩ আদম তার স্ত্রীকে পেয়ে খুব আনন্দিত ছিলেন আর পরে তিনি তার নাম রেখেছিলেন হবা। হবা তার সহকারিণী ও “অনুরূপ [“পরিপূরক,” NW ]” হয়েছিলেন, যার অর্থ হচ্ছে হবার সেইসমস্ত ক্ষমতা ছিল, যেগুলো আদমের ছিল না আর এক সফল পরিবার গড়ে তোলার জন্য এগুলো প্রয়োজন ছিল। স্বামী ও স্ত্রী হিসেবে একসঙ্গে থাকার মাধ্যমে তারা সুখী হতে পারতেন। (আদি. ২:১৮) বিয়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য ছিল, তাদের সন্তান হবে এবং পৃথিবী জনবসতিতে পরিপূর্ণ হবে। (আদি. ১:২৮) সন্তানরা যদিও তাদের বাবা-মাকে ভালোবাসবে, কিন্তু একটা পর্যায়ে তারাও বিয়ে করবে এবং নিজেদের পরিবার গঠন করবে। এভাবে পৃথিবী মানুষের দ্বারা পরিপূর্ণ হবে এবং পুরো পৃথিবী পরমদেশ হয়ে উঠবে।

৪. প্রথম বৈবাহিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কী ঘটেছিল?

৪ আদম ও হবা যিহোবার অবাধ্য হয়েছিলেন আর তাই প্রথম বৈবাহিক ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। “পুরাতন সর্প” অর্থাৎ শয়তান দিয়াবল হবার সঙ্গে প্রতারণা করেছিল এবং তাকে বলেছিল, ‘সদসদ্‌ জ্ঞানদায়ক বৃক্ষের’ ফল খাওয়ার মাধ্যমে তিনি বিশেষ জ্ঞান লাভ করতে পারবেন। শয়তান দাবি করেছিল, হবা যদি সেই বৃক্ষ থেকে ফল খান, তা হলে তিনি নিজেই ভালো-মন্দ নির্ধারণ করতে পারবেন। হবা তার স্বামী আদমের সঙ্গে কথা না বলে নিজেই সেই ফল খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আর এভাবে তিনি পরিবারের মস্তক আদমের প্রতি সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। আর আদম যখন তার স্ত্রীর কাছ থেকে ফল নিয়ে খেয়েছিলেন, তখন তিনি ঈশ্বরের অবাধ্য হয়েছিলেন।—প্রকা. ১২:৯; আদি. ২:৯, ১৬, ১৭; ৩:১-৬.

৫. আদম ও হবা যিহোবাকে যে-উত্তর দিয়েছিলেন, তা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

৫ যিহোবা যখন তাদের প্রশ্ন করেছিলেন, তখন আদম নিজের স্ত্রীকে দোষারোপ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “তুমি আমার সঙ্গিনী করিয়া যে স্ত্রী দিয়াছ, সে আমাকে ঐ বৃক্ষের ফল দিয়াছিল, তাই খাইয়াছি।” অন্যদিকে, হবা তাকে প্রতারিত করার জন্য শয়তানকে দায়ী করেছিলেন। (আদি. ৩:১২, ১৩) আদম ও হবা তাদের অবাধ্যতার জন্য খোঁড়া যুক্তি দেখিয়েছিলেন আর যিহোবা এই বিদ্রোহীদের বিচার করেছিলেন। নিশ্চিতভাবেই, তারা আমাদের জন্য এক সতর্কবাণীমূলক উদাহরণ! একটা বিয়েকে সুখী করার জন্য, স্বামী ও স্ত্রীকে যিহোবার বাধ্য হতে হবে এবং নিজেদের কাজের দায়ভার বহন করতে হবে।

৬. আদিপুস্তক ৩:১৫ পদ সম্বন্ধে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

৬ এদনে শয়তান যা করেছিল, তা সত্ত্বেও যিহোবা নিশ্চিত করেছিলেন, যেন মানবজাতির জন্য ভবিষ্যতের এক আশা থাকে। বাইবেলের প্রথম ভবিষ্যদ্‌বাণী থেকে এই আশা সম্বন্ধে জানা যায়। (পড়ুন, আদিপুস্তক ৩:১৫.) সেই ভবিষ্যদ্‌বাণী প্রকাশ করেছিল, ‘নারীর বংশের’ মাধ্যমে শয়তান চূর্ণ হবে। স্বর্গে সেবারত ধার্মিক আত্মিক প্রাণীদের সঙ্গে ঈশ্বরের এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তারা রূপক অর্থে যিহোবার স্ত্রীর মতো। তিনি সেই আত্মিক প্রাণীদের মধ্য থেকে কাউকে পাঠাবেন, যেন তিনি দিয়াবলকে “চূর্ণ” করেন। এই বংশের মাধ্যমে বাধ্য মানবজাতির জন্য সেই আশীর্বাদ উপভোগ করা সম্ভবপর হবে, যা প্রথম মানবদম্পতি হারিয়েছিলেন। বাধ্য মানবজাতি পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার সুযোগ লাভ করবে, যেমনটা যিহোবার উদ্দেশ্য ছিল।—যোহন ৩:১৬.

৭. (ক) আদম ও হবার বিদ্রোহের সময় থেকে বৈবাহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কী ঘটেছে? (খ) স্বামী ও স্ত্রীর কাছ থেকে যিহোবা কী চান?

৭ আদম ও হবার বিদ্রোহের কারণে, তাদের বিয়ে আর সেইসঙ্গে তাদের পরে সমস্ত বিয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, এটা বলা হয়েছিল যে, হবা ও তার বংশের সমস্ত নারী সন্তান প্রসব করার সময় প্রচণ্ড যন্ত্রণা ভোগ করবে। স্ত্রীদের মধ্যে তাদের স্বামীর কাছ থেকে প্রেম ও মনোযোগ লাভ করার প্রবল আকাঙ্ক্ষা থাকবে, কিন্তু স্বামীরা তাদের স্ত্রীর উপর কর্তৃত্ব করবে আর এমনকী মাঝে মাঝে তাদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করবে, যেমনটা আমরা বর্তমানে দেখে থাকি। (আদি. ৩:১৬) কিন্তু যিহোবা চান, যেন স্বামীরা পরিবারের প্রেমময় মস্তক হয় আর স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের প্রতি বশীভূত থাকে। (ইফি. ৫:৩৩) খ্রিস্টান সাথিরা যখন একসঙ্গে সহযোগিতা করে, তখন অনেক সমস্যা দূর করা যেতে পারে।

বিয়ে—আদমের সময় থেকে জলপ্লাবন পর্যন্ত

৮. আদমের সময় থেকে জলপ্লাবনের সময় পর্যন্ত বিয়ের ইতিহাস কী?

৮ আদম ও হবা মারা যাওয়ার আগে, তাদের ছেলে-মেয়ে হয়েছিল। (আদি. ৫:৪) তাদের প্রথম সন্তান কয়িন পরে তার এক আত্মীয়াকে বিয়ে করেছিলেন। কয়িনের বংশধর লেমক হলেন বাইবেলে উল্লেখিত প্রথম পুরুষ, যার দু-জন স্ত্রী ছিল। (আদি. ৪:১৭, ১৯) আদমের সময় থেকে নোহের সময় পর্যন্ত কেবল অল্প কয়েক জন ব্যক্তি যিহোবার উপাসনা করেছিলেন। এই বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন হেবল, হনোক, নোহ ও তার পরিবার। বাইবেল বলে, নোহের সময়ে “ঈশ্বরের পুত্ত্রেরা মনুষ্যদের কন্যাগণকে সুন্দরী দেখিয়া, যাহার যাহাকে ইচ্ছা, সে তাহাকে বিবাহ করিতে লাগিল।” কিন্তু, এটা অস্বাভাবিক এক বিষয় ছিল। এইসমস্ত স্বর্গদূত ও নারীদের হিংস্র দৈত্যাকৃতির সন্তান হয়েছিল, যাদের নেফিলিম বলা হতো। সেই সময়ে, “পৃথিবীতে মনুষ্যের দুষ্টতা বড়, এবং তাহার অন্তঃকরণের চিন্তার সমস্ত কল্পনা নিরন্তর কেবল মন্দ” ছিল।—আদি. ৬:১-৫.

৯. নোহের সময়ে দুষ্ট লোকেদের যিহোবা কী করেছিলেন আর সেই সময়ে যা ঘটেছিল, তা থেকে আমাদের কোন শিক্ষা লাভ করা উচিত?

৯ যিহোবা তখন পৃথিবীতে এক জলপ্লাবন নিয়ে আসার মাধ্যমে সমস্ত দুষ্ট মানুষকে করেছিলেন। ‘ধার্ম্মিকতার প্রচারক নোহ’ সেই লোকেদের আসন্ন জলপ্লাবন সম্বন্ধে জানিয়েছিলেন। (২ পিতর ২:৫) কিন্তু, তারা নোহের কথা শোনেনি কারণ তারা রোজকার জীবনযাপনে অত্যন্ত ব্যস্ত ছিল আর বিয়ে করাও এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। যিশু আমাদের সময়কে নোহের সময়ের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। (পড়ুন, মথি ২৪:৩৭-৩৯.) বর্তমানে, অধিকাংশ লোক ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে আমরা যে-বার্তা জানাই, তা শোনে না। বর্তমান দুষ্ট জগৎ ধ্বংস হওয়ার আগে আমরা এই বার্তা প্রচার করছি। জলপ্লাবনের সময়ে যা ঘটেছিল, তা থেকে আমরা কোন শিক্ষা লাভ করতে পারি? আমরা বিভিন্ন বিষয়, যেমন বিয়ে ও সন্তান লাভ করাকে আমাদের জীবনের এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে দেব না, যার কারণে যিহোবার দিন যে নিকটবর্তী, তা আমরা ভুলে যাই।

বিয়ে—জলপ্লাবনের সময় থেকে যিশুর দিন পর্যন্ত

১০. (ক) অনেক সংস্কৃতিতে, কোন ধরনের যৌন অভ্যাস সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছিল? (খ) কীভাবে অব্রাহাম ও সারা তাদের বৈবাহিক জীবনে এক উত্তম উদাহরণস্থাপন করেছিলেন?

১০ নোহ ও তার ছেলেদের একজন করেই স্ত্রী ছিল। কিন্তু, জলপ্লাবনের পর অনেক পুরুষ একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করেছিল। অনেক সংস্কৃতিতে, যৌন অনৈতিকতা সাধারণ বিষয় ছিল আর তা এমনকী ধর্মীয় রীতিনীতির অংশ ছিল। অব্রাহাম ও সারা যখন কনান দেশে চলে গিয়েছিলেন, তখন তাদের আশেপাশে এমন নীতিহীন লোকেরা ছিল, যাদের বিয়ের প্রতি কোনো সম্মান ছিল না। যিহোবা সদোম ও ঘমোরা নগর ধ্বংস করেছিলেন কারণ সেখানকার লোকেরা চরম অনৈতিক জীবনযাপন করত। কিন্তু, অব্রাহাম সেই লোকেদের চেয়ে আলাদা ছিলেন। তিনি পরিবারের একজন উত্তম মস্তক ছিলেন আর সারা একজন বশীভূত স্ত্রী হিসেবে উত্তম উদাহরণস্থাপন করেছিলেন। (পড়ুন, ১ পিতর ৩:৩-৬.) অব্রাহাম নিশ্চিত করেছিলেন, যেন তার ছেলে ইস্‌হাক এমন কোনো মেয়েকে বিয়ে করেন, যিনি যিহোবার একজন উপাসক। আর ইস্‌হাকও তার ছেলে যাকোবের জন্য একই বিষয় করেছিলেন। যাকোবের ছেলেরাই পরে ইস্রায়েলের ১২ বংশের পূর্বপুরুষ হয়েছিলেন।

১১. কীভাবে মোশির ব্যবস্থা ইস্রায়েলীয়দের সুরক্ষা করেছিল?

১১ পরবর্তী সময়ে, যিহোবা ইস্রায়েল জাতির সঙ্গে এক নিয়ম বা চুক্তি করেছিলেন। তিনি মোশির মাধ্যমে তাদের ব্যবস্থা দিয়েছিলেন। এই ব্যবস্থা স্বামীদের ও স্ত্রীদের সুরক্ষিত থাকতে সাহায্য করেছিল, যেন তারা যিহোবার উপাসনা করে যেতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, বহুবিবাহ-সহ বিয়ের বিভিন্ন প্রথা সম্বন্ধে আইন ছিল আর ইস্রায়েলীয়রা মিথ্যা উপাসকদের বিয়ে করতে পারত না। (পড়ুন, দ্বিতীয় বিবরণ ৭:৩, ৪.) যখন বিয়েতে গুরুতর সমস্যা দেখা দিত, তখন প্রাচীনবর্গ সাহায্য করতেন। এ ছাড়া, অবিশ্বস্ত, ঈর্ষান্বিত ও সন্দেহবাতিক হওয়ার বিরুদ্ধেও আইন ছিল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন ব্যক্তি ‘কোন প্রকার অনুপযুক্ত ব্যবহারের’ কারণে তার স্ত্রীকে ত্যাগপত্র দিতে বা তার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারতেন। (দ্বিতীয়. ২৪:১) কোন ধরনের ব্যবহার “অনুপযুক্ত” ছিল, সেই বিষয়ে বাইবেল যদিও কিছু জানায় না, তবে একজন স্বামী ছোটোখাটো কারণের জন্য তার স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারতেন না।—লেবীয়. ১৯:১৮.

আপনার সাথির সঙ্গে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না

১২, ১৩. (ক) মালাখির দিনে কিছু পুরুষ তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করেছিল? (খ) বর্তমানে কোনো বাপ্তাইজিত ব্যক্তি যদি অন্য কোনো ব্যক্তির সাথির সঙ্গে পালিয়ে যান, তা হলে সেটার পরিণতি কী হবে?

১২ ভাববাদী মালাখির দিনে, অনেক যিহুদি স্বামী নিজের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করার জন্য সমস্ত ধরনের অজুহাত ব্যবহার করেছিল। এই ব্যক্তিরা তাদের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেছিল, যাতে তারা আরও কমবয়সি কোনো নারীকে অথবা যিহোবার উপাসক নয় এমন নারীকে বিয়ে করতে পারে। যিশুর সময়েও যিহুদি পুরুষরা “যে সে কারণে” তাদের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেছিল। (মথি ১৯:৩) যিহোবা ঈশ্বর সেইসমস্ত বেআইনি বিবাহবিচ্ছেদ ঘৃণা করেছিলেন।—পড়ুন, মালাখি ২:১৩-১৬.

১৩ বর্তমানে, যিহোবার লোকেদের মধ্যে বিবাহসাথির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা গ্রহণযোগ্য নয় আর তা কদাচিৎ ঘটে থাকে। কিন্তু ধরুন, একজন বাপ্তাইজিত বিবাহিত ব্যক্তি পারদারিকতায় রত হয়েছেন অর্থাৎ অন্য কোনো ব্যক্তির সাথির সঙ্গে ব্যভিচার করেছেন এবং তাকে বিয়ে করার জন্য নিজের সাথির সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেছেন। সেই ব্যক্তি যদি অনুতপ্ত না হন, তা হলে মণ্ডলীকে শুচি ও শুদ্ধ রাখার জন্য তাকে সমাজচ্যুত করা হবে। (১ করি. ৫:১১-১৩) সেই ব্যক্তিকে মণ্ডলী পুনরায় গ্রহণ করে নেওয়ার আগে, তাকে “মনপরিবর্ত্তনের উপযুক্ত ফলে ফলবান্‌” হতে হবে। (লূক ৩:৮; ২ করি. ২:৫-১০) তবে, সেই ব্যক্তিকে মণ্ডলীতে পুনর্বহাল করার আগে কতটা সময় অতিবাহিত হতে হবে, সেই বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সীমা নেই। আসলে, একজন পাপী যে সত্যিই অনুতপ্ত হয়েছেন, তা প্রমাণ করার জন্য এবং তাকে মণ্ডলীতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য এক বা একাধিক বছর লাগতে পারে। তা সত্ত্বেও, সেই ব্যক্তিকে ‘ঈশ্বরের বিচারাসনের সম্মুখে দাঁড়াইতে’ হবে।—রোমীয় ১৪:১০-১২; ১৯৭৯ সালের ১৫ নভেম্বর প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ৩১-৩২ পৃষ্ঠা দেখুন।

খ্রিস্টানদের মধ্যে বিয়ে

১৪. মোশির ব্যবস্থা সার্বিকভাবে কোন উদ্দেশ্যসাধন করেছিল?

১৪ ইস্রায়েল জাতি ১,৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মোশির ব্যবস্থার অধীনে ছিল। এই ব্যবস্থা ঈশ্বরের লোকেদের বিভিন্ন উপায়ে সাহায্য করেছিল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ব্যবস্থার মধ্যে এমন নীতিগুলো ছিল, যেগুলো লোকেদেরকে তাদের পারিবারিক সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করেছিল এবং এই ব্যবস্থা তাদেরকে মশীহের দিকে পরিচালিত করেছিল। (গালা. ৩:২৩, ২৪) যিশু মারা যাওয়ার পর মোশির ব্যবস্থা শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং ঈশ্বর এক নতুন ব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন। (ইব্রীয় ৮:৬) কিন্তু, মোশির ব্যবস্থায় যে-বিষয়গুলোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে কিছু কিছু আর খ্রিস্টানদের জন্য প্রযোজ্য ছিল না।

১৫. (ক) খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে বিয়ের মানদণ্ড কী হবে? (খ) বিবাহবিচ্ছেদের ব্যাপারে চিন্তা করার সময় একজন খ্রিস্টানের কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত?

১৫ একদিন, ফরীশীরা যিশুকে বিয়ে সম্বন্ধে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলেন। যিশু উত্তর দিয়েছিলেন, ঈশ্বর যদিও মোশির ব্যবস্থার মধ্যে ইস্রায়েলীয়দের বিবাহবিচ্ছেদ করার অনুমতি দিয়েছিলেন, কিন্তু আদি থেকে তিনি এমনটা চাননি। (মথি ১৯:৬-৮) যিশুর উত্তর প্রকাশ করেছিল, এখন থেকে বিয়ের ব্যাপারে ঈশ্বরের আদি মানদণ্ডই খ্রিস্টানদের জন্য মানদণ্ড হিসেবে প্রযোজ্য হবে। (১ তীম. ৩:২, ১২) “একাঙ্গ” হিসেবে বিবাহসাথিদের একসঙ্গে থাকতে হবে। ঈশ্বরের প্রতি এবং পরস্পরের প্রতি তাদের ভালোবাসা তাদেরকে একতাবদ্ধ রাখবে। যে-বিবাহসাথিরা যৌন অনৈতিকতা ছাড়া অন্য কোনো কারণে তাদের সাথির সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করে, তারা পুনর্বিবাহ করতে পারবে না। (মথি ১৯:৯) অবশ্য, একজন ব্যক্তি হয়তো তার সেই সাথিকে ক্ষমা করা বেছে নিতে পারেন, যিনি অনৈতিক কাজ করার পর অনুতপ্ত হয়েছেন। যেমন, ভাববাদী হোশেয় তার ব্যভিচারী স্ত্রী গোমরকে ক্ষমা করেছিলেন। একইভাবে, যিহোবা অনুতপ্ত ইস্রায়েলীয়দেরকে ক্ষমা করেছিলেন। (হোশেয় ৩:১-৫) এ ছাড়া, একজন ব্যক্তি যদি জানতে পারেন, তার সাথি অনৈতিক কাজ করেছেন আর তা সত্ত্বেও তিনি যদি দোষী সাথির সঙ্গে পুনরায় যৌন সম্পর্কস্থাপন করা বেছে নেন, তা হলে সেটার অর্থ হল, তিনি তার সাথিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ করার জন্য শাস্ত্রীয় কোনো ভিত্তি নেই।

১৬. অবিবাহিত থাকার বিষয়ে যিশু কী বলেছেন?

১৬ যিশু বলেছিলেন, সত্য খ্রিস্টানদের জন্য যৌন অনৈতিকতা হল বিবাহবিচ্ছেদ করার একমাত্র কারণ। এরপর, তিনি এমন ব্যক্তিদের সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন, “যাহাদিগকে” অবিবাহিত জীবনযাপন করার “ক্ষমতা দত্ত হইয়াছে।” যিশু বলেছিলেন: “যে গ্রহণ করিতে পারে, সে গ্রহণ করুক।” (মথি ১৯:১০-১২) অনেকে অবিবাহিত থাকা বেছে নেয় কারণ তারা কোনো বিক্ষেপ ছাড়া যিহোবাকে সেবা করতে চায় এবং তাদের সেই সিদ্ধান্তের জন্য তাদের প্রশংসা করা উচিত!

১৭. একজন খ্রিস্টান বিয়ে করবেন কি না, তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে কী তাকে সাহায্য করতে পারে?

১৭ একজন ব্যক্তি অবিবাহিত থাকবেন, না কি বিয়ে করবেন, তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে কী তাকে সাহায্য করতে পারে? একজন ব্যক্তি অবিবাহিত থাকার দান গ্রহণ করতে পারবেন কি না, সেই বিষয়ে তাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রেরিত পৌল অবিবাহিত থাকার বিষয়ে সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু তিনি এটাও বলেছিলেন: “ব্যভিচার নিবারণের জন্য প্রত্যেক পুরুষের নিজের নিজের ভার্য্যা থাকুক, এবং প্রত্যেক স্ত্রীর নিজের নিজের স্বামী থাকুক।” পৌল আরও বলেছিলেন: “তাহারা যদি ইন্দ্রিয় দমন করিতে না পারে, তবে বিবাহ করুক; কেননা আগুণে জ্বলা অপেক্ষা বরং বিবাহ করা ভাল।” তাই, একজন ব্যক্তি হয়তো বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যাতে তিনি প্রবল যৌন আকাঙ্ক্ষার কারণে হস্তমৈথুন অথবা যৌন অনৈতিকতায় রত হওয়া এড়িয়ে চলতে পারেন। কিন্তু, অবিবাহিত ব্যক্তিদের এটা বিবেচনা করতে হবে, সত্যিই তাদের বিয়ে করার মতো বয়স হয়েছে কি না। পৌল বলেছিলেন: “যদি কাহারও বোধ হয় যে, সে তাহার কুমারী কন্যার [‘সে নিজের কৌমার্যের,’ NW] প্রতি অশিষ্টাচরণ করিতেছে, যদি সৌকুমার্য্য অতীত হইয়া থাকে, আর এই প্রকার হওয়া আবশ্যক হয়, তবে সে যাহা ইচ্ছা করে, তাহা করুক; ইহাতে তাহার পাপ নাই, বিবাহ হউক।” (১ করি. ৭:২, ৯, ৩৬; ১ তীম. ৪:১-৩) একজন ব্যক্তির শুধুমাত্র প্রবল যৌন আকাঙ্ক্ষার কারণে বিয়ে করতে ইচ্ছুক হওয়া উচিত নয়, যে-আকাঙ্ক্ষা তারুণ্যের সময়ে অনেকেরই থাকে। সেই ব্যক্তি হয়তো বিয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করার মতো যথেষ্ট পরিপক্ব থাকে না।

১৮, ১৯. (ক) খ্রিস্টীয় বিয়ে কাদের মধ্যে হওয়া উচিত? (খ) পরের প্রবন্ধে কী আলোচনা করা হবে?

১৮ খ্রিস্টীয় বিয়ে দু-জন বাপ্তাইজিত পুরুষ ও নারীর মধ্যে হওয়া উচিত, যারা সর্বান্তঃকরণে যিহোবাকে ভালোবাসেন। এ ছাড়া, পরস্পরকে তাদের এতটাই ভালোবাসা উচিত যে, তারা একসঙ্গে সারাজীবন কাটাতে ইচ্ছুক হবেন। তারা “কেবল প্রভুতেই” বিয়ে করার পরামর্শ কাজে লাগিয়েছেন বলে যিহোবা তাদের আশীর্বাদ করবেন। (১ করি. ৭:৩৯) আর তারা যদি ক্রমাগত বাইবেলের পরামর্শ মেনে চলেন, তা হলে তাদের বিয়ে সফল হবে।

১৯ বর্তমানে, আমরা “শেষ কালে” বাস করছি আর এখন অনেক লোকের মধ্যে সেইসমস্ত গুণাবলি নেই, যা একটা বিয়েকে সফল করার জন্য প্রয়োজন। (২ তীম. ৩:১-৫) পরের প্রবন্ধে আমরা বাইবেল থেকে সেই মূল্যবান নীতিগুলো নিয়ে আলোচনা করব, যেগুলো খ্রিস্টানদেরকে তাদের আশেপাশে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা সত্ত্বেও, এক সুখী ও সফল বিবাহিত জীবন উপভোগ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। এটা তাদেরকে ক্রমাগত অনন্তজীবনের পথে চলতে সাহায্য করবে।—মথি ৭:১৩, ১৪.

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার