ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w17 মার্চ পৃষ্ঠা ২৮-৩১
  • বন্ধুত্ব ধরে রাখুন যখন বন্ধুত্ব ঝুঁকির মুখে থাকে

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বন্ধুত্ব ধরে রাখুন যখন বন্ধুত্ব ঝুঁকির মুখে থাকে
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • কোনো বন্ধু যখন ভুল করে
  • কোনো বন্ধু যখন সমস্যায় পড়ে
  • আপনার কি এমনটা মনে হয়, আপনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে?
  • নাথন বিশুদ্ধ উপাসনার অনুগত সমর্থক
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার অনুগত দাসদের কাছ থেকে শিখুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • ঈশ্বর আপনাকে তাঁর বন্ধু হতে বলেন
    আপনি ঈশ্বরের বন্ধু হতে পারেন!
  • আপনি কি যিহোবার বন্ধু হতে পারেন?
    চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
w17 মার্চ পৃষ্ঠা ২৮-৩১
রাজা দায়ূদকে ঈশ্বরের বার্তা জানানোর আগে ভাববাদী নাথন কিছু ভাবছন

বন্ধুত্ব ধরে রাখুন যখন বন্ধুত্ব ঝুঁকির মুখে থাকে

জিয়ান্নি এবং মাউরিৎসিও প্রায় ৫০ বছর ধরে বন্ধু। কিন্তু একটা সময়ে তাদের বন্ধুত্ব ঝুঁকির মুখে পড়েছিল। “একটা কঠিন পরিস্থিতিতে আমি গুরুতর কিছু ভুল করেছিলাম, যার ফলে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছিল,” মাউরিৎসিও বলেন। সেইসঙ্গে জিয়ান্নি বলেন: “আমি যখন বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করি, তখন মাউরিৎসিও আমার বাইবেল শিক্ষক ছিল। সে আমার আধ্যাত্মিক পরামর্শদাতা হয়ে উঠেছিল। তাই, সে যা করেছে, তা আমার কাছে অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়েছিল। মনে হয়েছিল যেন পুরো পৃথিবী উলটপালট হয়ে গিয়েছে কারণ আমি জানতাম, আমরা আর বন্ধু হিসেবে থাকতে পারব না। আমি একাকিত্ববোধ করেছিলাম।”

উত্তম বন্ধু সত্যিই মূল্যবান আর এক স্থায়ী বন্ধুত্ব হঠাৎ করেই গড়ে ওঠে না। বন্ধুত্ব যখন ঝুঁকির মুখে থাকে, তখন কীভাবে তা টিকিয়ে রাখা যেতে পারে? বাইবেলে উল্লেখিত কয়েক জন ব্যক্তির কাছ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি, যারা প্রকৃত বন্ধু ছিলেন কিন্তু পরে তাদের বন্ধুত্ব ঝুঁকির মুখে পড়েছিল।

কোনো বন্ধু যখন ভুল করে

দায়ূদ একজন মেষপালক ও রাজা ছিলেন আর নিশ্চিতভাবেই তার উত্তম বন্ধুবান্ধব ছিল। তাদের মধ্যে প্রথমেই যার কথা মনে আসে, তিনি হলেন যোনাথন। (১ শমূ. ১৮:১) কিন্তু দায়ূদের আরও বন্ধু ছিল, যেমন ভাববাদী নাথন। তাদের বন্ধুত্ব কখন শুরু হয়েছিল, সেই বিষয়ে বাইবেল নির্দিষ্টভাবে কিছু বলে না। তবে, দায়ূদ একটা সময়ে নাথনের কাছে তার মনের কথা খুলে বলেছিলেন, ঠিক যেভাবে আপনি হয়তো আপনার বন্ধুর কাছে বলেন। দায়ূদ যিহোবার জন্য একটা গৃহ নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। রাজা নিশ্চয়ই বন্ধু হিসেবে এবং যিহোবার আত্মা রয়েছে এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে নাথনের মতামতকে মূল্যবান বলে মনে করেছিলেন।—২ শমূ. ৭:২, ৩.

কিন্তু এমন কিছু ঘটেছিল, যার ফলে তাদের বন্ধুত্ব ঝুঁকির মুখে পড়ে গিয়েছিল। রাজা দায়ূদ বৎশেবার সঙ্গে ব্যভিচার করেছিলেন এবং পরে তার স্বামী ঊরিয়কে হত্যা করিয়েছিলেন। (২ শমূ. ১১:২-২১) অনেক বছর ধরে দায়ূদ যিহোবার প্রতি অনুগত ছিলেন আর তিনি সবসময় ন্যায়বিচার করেছিলেন। কিন্তু এরপর, তিনি এই গুরুতর পাপ করেছিলেন! সেই ভালো রাজার আসলে কী হয়েছিল? তার আচরণ কতটা গুরুতর, সেটা কি তিনি বুঝতে পারেননি? তিনি কি এমনটা চিন্তা করেছিলেন, এই বিষয়টা তিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে লুকাতে পারবেন?

নাথন কী করবেন? তিনি কি অন্য কাউকে বিষয়টা নিয়ে রাজার সঙ্গে কথা বলতে বলবেন? দায়ূদ যেভাবে ঊরিয়কে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন, তা অন্যেরাও জানত। তা হলে, নাথন কেন এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে তাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব নষ্ট করার ঝুঁকি নেবেন? নাথন যদি এই বিষয় নিয়ে কথা বলেন, তা হলে তার জীবন হারানোর ঝুঁকি থাকতে পারে। এটা অস্বাভাবিক ছিল না, কারণ দায়ূদ তো ইতিমধ্যেই নির্দোষ ঊরিয়কে হত্যা করেছিলেন।

কিন্তু নাথন ঈশ্বরের মুখপাত্র ছিলেন। এই ভাববাদী বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি যদি চুপ থাকেন, তা হলে দায়ূদের সঙ্গে তার সম্পর্ক আগের মতো থাকবে না আর তার নিজের বিবেক তাকে দংশন করবে। তার বন্ধু দায়ূদ যে-পথ বেছে নিয়েছিলেন, তাতে যিহোবা অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। সঠিক পথে ফিরে আসার জন্য সেই রাজার সাহায্য প্রয়োজন ছিল। হ্যাঁ, দায়ূদের একজন প্রকৃত বন্ধু প্রয়োজন ছিল। নাথন ছিলেন সেই ধরনের একজন বন্ধু। বিষয়টা নিয়ে আলোচনা শুরু করার জন্য তিনি এমন এক উদাহরণ বেছে নিয়েছিলেন, যা একজন প্রাক্তন মেষপালকের হৃদয় স্পর্শ করবে। নাথন ঈশ্বরের বার্তা জানিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেই বার্তা এমন উপায়ে জানিয়েছিলেন, যা দায়ূদকে তার ভুল যে কতটা গুরুতর, তা বুঝতে এবং পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করেছিল।—২ শমূ. ১২:১-১৪.

আপনার একজন বন্ধু যদি বড়ো কোনো ভুল অথবা গুরুতর কোনো পাপ করত, তা হলে আপনি কী করতেন? আপনি হয়তো এইরকম যুক্তি করার জন্য প্রলোভিত হতেন, তার ভুল দেখিয়ে দিলে আপনার সঙ্গে তার বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিংবা আপনি হয়তো এমনটা চিন্তা করতেন, তার পাপপূর্ণ আচরণ সম্বন্ধে প্রাচীনদের জানালে প্রাচীনরা তাকে আধ্যাত্মিকভাবে সাহায্য করতে পারে, তবে তা করলে সেটা হবে বন্ধুর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। এইরকম পরিস্থিতিতে আপনি কী করতেন?

আগে উল্লেখিত জিয়ান্নি স্মরণ করে বলেন: “আমি বুঝতে পেরেছিলাম, কোনো একটা পরিবর্তন হয়েছে। মাউরিৎসিও আমার সঙ্গে আগের মতো খোলাখুলিভাবে কথা বলত না। আমি তার সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিই, যদিও তা করা আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল। আমি ভেবেছিলাম: ‘আমি তাকে নতুন আর কী বলব? সে তো সবই জানে। সে হয়তো খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে!’ কিন্তু, আমরা একসঙ্গে যা-কিছু অধ্যয়ন করেছিলাম, সেগুলো মনে করার মাধ্যমে আমি তার সঙ্গে কথা বলার জন্য শক্তি লাভ করি। আমার যখন সাহায্য প্রয়োজন হয়েছিল, মাউরিৎসিও ঠিক একই বিষয় করেছিল। আমি তার সঙ্গে বন্ধুত্ব নষ্ট করতে চাইনি, কিন্তু তাকে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম কারণ আমি তার জন্য চিন্তা করতাম।”

মাউরিৎসিও বলেন: “জিয়ান্নি আন্তরিক ছিল আর সে সঠিক ছিল। আমার মন্দ বাছাইয়ের পরিণতির জন্য সে দায়ী নয় এবং যিহোবাও দায়ী নন। তাই, আমি শাসন মেনে নিয়েছিলাম আর একটা সময়ে আমি আধ্যাত্মিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছিলাম।”

কোনো বন্ধু যখন সমস্যায় পড়ে

দায়ূদের এমন আরও সহযোগী ছিলেন, যারা কঠিন সময়েও তার প্রতি অনুগত ছিলেন। এই ধরনের একজন সহযোগী ছিলেন হূশয়। বাইবেল তাকে “দায়ূদের মিত্র” বলে উল্লেখ করে। (২ শমূ. ১৬:১৬; ১ বংশা. ২৭:৩৩) তিনি হয়তো রাজসভার একজন কর্মচারী ছিলেন অর্থাৎ রাজার একজন ব্যক্তিগত বন্ধু ও সহযোগী ছিলেন আর এমনকী তিনি কখনো কখনো গোপনীয় নির্দেশপত্র বহন করতেন।

দায়ূদের পুত্র অবশালোম যখন সিংহাসন দখল করেছিলেন, তখন অনেক ইস্রায়েলীয় অবশালোমের পক্ষ নিলেও হূশয় তার পক্ষ নেননি। দায়ূদ যখন পালিয়ে গিয়েছিলেন, তখন হূশয় তার কাছে গিয়েছিলেন। নিজের পুত্র এবং তার নির্ভরযোগ্য কিছু ব্যক্তি তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল বলে দায়ূদ অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছিলেন। কিন্তু হূশয় অনুগত ছিলেন, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি এমন একটা কার্যভার পালন করতে ইচ্ছুক ছিলেন, যা অবশালোমের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে। হূশয় রাজকর্মচারী হিসেবে কেবল কর্তব্যের খাতিরেই তা করেননি। বরং তিনি নিজেকে একজন অনুগত বন্ধু হিসেবে প্রমাণ করেছিলেন।—২ শমূ. ১৫:১৩-১৭, ৩২-৩৭; ১৬:১৫–১৭:১৬.

বর্তমানে মণ্ডলীতে ভাই-বোনেরা তাদের ভূমিকা ও দায়িত্বকে ছাড়িয়ে যেভাবে একতাবদ্ধ থাকে, তা সত্যিই হৃদয়গ্রাহী। তাদের কাজের মাধ্যমে তারা আসলে বলে, “আমি তোমার বন্ধু, শুধুমাত্র কর্তব্যের খাতিরেই নয় বরং তুমি আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।”

ফেডেরিকো নামে একজন ভাইয়ের এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তার প্রিয় বন্ধু অ্যান্টোনিয়োর সাহায্যে তিনি জীবনের এক কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করেছিলেন। ফেডেরিকো বলেন: “অ্যান্টোনিও আমাদের মণ্ডলীতে আসার পর, আমরা খুব শীঘ্র বন্ধু হয়ে উঠেছিলাম। আমরা দু-জন পরিচারক দাস ছিলাম আর আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করতাম। কিছু সময় পর তাকে একজন প্রাচীন হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। সে শুধু আমার বন্ধুই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে আমার জন্য এক আধ্যাত্মিক আদর্শ ছিল।” এরপর, ফেডেরিকো একটা ভুল পদক্ষেপ নেন। তিনি সঙ্গেসঙ্গে আধ্যাত্মিক সাহায্য খোঁজেন তবে তিনি আর অগ্রগামী কিংবা পরিচারক দাস হিসেবে সেবা করার যোগ্য ছিলেন না। অ্যান্টোনিও কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন?

ফেডেরিকো পাচীনদের সগ দেখা করছন এবং অ্যান্টানিও তার কথা শুনছন ও তাকে উৎসাহিত করছন

ফেডেরিকো যখন কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন, তখন তার বন্ধু অ্যান্টোনিও তার কথা শুনেছিলেন ও তাকে উৎসাহিত করেছিলেন

ফেডেরিকো স্মরণ করে বলেন: “আমি দেখতে পেয়েছিলাম, অ্যান্টোনিও আমার কষ্ট বুঝতে পারছে। সে আমাকে আবেগগতভাবে সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য করেছিল। সে আমার আধ্যাত্মিক আরোগ্যের বিষয়ে গভীর মনোযোগ দিয়েছিল আর সে কখনো আমাকে ছেড়ে চলে যায়নি। সে আমাকে আধ্যাত্মিক শক্তি আবারও ফিরে পেতে এবং হাল ছেড়ে না দিতে উৎসাহিত করেছিল।” অ্যান্টোনিও বলেন: “আমি ফেডেরিকোর সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতাম। আমি চেয়েছিলাম যেন সে স্বচ্ছন্দে যেকোনো কথা, এমনকী তার কষ্টের কথা আমাকে বলতে পারে।” আনন্দের বিষয় হল, একটা সময়ে ফেডেরিকো আধ্যাত্মিকভাবে আবারও শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন এবং তাকে পুনরায় একজন অগ্রগামী ও পরিচারক দাস হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। অ্যান্টোনিও উপসংহারে বলেন: “যদিও আমরা এখন ভিন্ন মণ্ডলীতে সেবা করছি, কিন্তু আমরা আগের চেয়ে আরও বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছি।”

ফেডেরিকো ও অ্যান্টানিও একসগ সময় কাটাচ্ছন

আপনার কি এমনটা মনে হয়, আপনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে?

কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু যদি প্রয়োজনের সময় আপনাকে সাহায্য না করে, তা হলে আপনার কেমন লাগবে? এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না। আপনি কি তাকে ক্ষমা করতে পারবেন? আপনাদের সম্পর্ক কি আগের মতো দৃঢ় থাকবে?

পৃথিবীতে যিশুর জীবনের শেষ দিনগুলোতে তাঁর প্রতি কী ঘটেছিল, সেই বিষয়ে একটু চিন্তা করুন। তিনি তাঁর বিশ্বস্ত প্রেরিতদের সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছিলেন আর তাদের মধ্যে এক ঘনিষ্ঠ বন্ধন ছিল। যিশু তাদের উপযুক্তভাবেই বন্ধু বলেছিলেন। (যোহন ১৫:১৫) কিন্তু তাঁকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তখন কী ঘটেছিল? প্রেরিতরা পালিয়ে গিয়েছিলেন। পিতর সকলের সামনে বলেছিলেন, তিনি তার প্রভুকে কখনো ত্যাগ করবেন না, কিন্তু সেই রাতেই পিতর যিশুকে চিনতে অস্বীকার করেছিলেন!—মথি ২৬:৩১-৩৩, ৫৬, ৬৯-৭৫.

যিশু জানতেন, তাঁকে একাই চূড়ান্ত পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। তা সত্ত্বেও, হতাশ হওয়ার, এমনকী কষ্ট পাওয়ার উপযুক্ত কারণ তাঁর ছিল। কিন্তু পুনরুত্থানের পর তিনি যখন শিষ্যদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন তাঁর কথাবার্তায় হতাশা, তিক্ততা অথবা অনুশোচনার সামান্যতম ইঙ্গিতও পাওয়া যায়নি। যিশু তাঁর শিষ্যদের দুর্বলতা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন অনুভব করেননি আর এর মধ্যে যিশু গ্রেপ্তার হওয়ার রাতে তারা যা করেছিলেন, সেগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এর বিপরীতে, যিশু পিতর ও অন্যান্য প্রেরিতকে আশ্বস্ত করেছিলেন। তিনি মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষামূলক কাজের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়ার মাধ্যমে তাদের উপর আস্থা প্রকাশ করেছিলেন। যিশুর প্রেরিতরা তখনও তাঁর বন্ধু ছিলেন। তাঁর প্রেম তাদের উপর এক দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল। তারা যেন ভবিষ্যতে তাদের প্রভুকে আর নিরাশ না করেন, সেইজন্য তারা যথাসাধ্য করেছিলেন। আসলে, তিনি তাঁর প্রেরিতদের যে-কার্যভার দিয়েছিলেন, তা তারা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছিলেন।—প্রেরিত ১:৮; কল. ১:২৩.

এলভিরা নামে একজন বোনের তার প্রিয় বান্ধবী জুলিয়ানার সঙ্গে একটা বিষয়ে মতপার্থক্য হয়েছিল। তখন কী ঘটেছিল, সেটা তার স্পষ্ট মনে আছে। তিনি বলেন: “সে যখন বলেছিল, আমি যা করেছি সেইজন্য সে অনেক কষ্ট পেয়েছে, তখন আমি প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছিলাম। সে চাইলে উপযুক্ত কারণেই রাগ হতে পারত। কিন্তু যে-বিষয়টা আমাকে অভিভূত করেছিল তা হল, সে আমার জন্য এবং আমার আচরণের ফল কী হবে, তা নিয়ে বেশি চিন্তিত ছিল। তার প্রতি আমি যে-অন্যায় করেছিলাম, সেটাকে বড়ো করে না দেখে বরং আমি নিজের যে-ক্ষতি করছিলাম, সেটার উপর সে মনোযোগ দিয়েছিল। তাই আমি সবসময় তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। আমি যিহোবার কাছে কৃতজ্ঞ যে, আমার এমন একজন বন্ধু আছে, যে নিজের অনুভূতির চেয়ে আমার মঙ্গলের ব্যাপারে বেশি আগ্রহী।”

তাহলে, বন্ধুত্ব যখন ঝুঁকির মুখে থাকে, তখন একজন ভালো বন্ধু কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে? সেই বন্ধু প্রয়োজনের সময়ে সদয়ভাবে ও সেইসঙ্গে খোলাখুলিভাবে কথা বলতে ইচ্ছুক হবে। সে নাথন ও হূশয়ের মতো বন্ধু হবে, যারা কঠিন সময়েও বন্ধুর প্রতি অনুগত ছিলেন এবং যিশুর মতো হবে, যিনি বন্ধুদের ক্ষমা করতে ইচ্ছুক ছিলেন। আপনি কি সেইরকম একজন বন্ধু?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার